ভালো থাকুন চোখ ওঠায় ভয় নেই
চোখ ওঠা একটি অতি পরিচিত সমস্যা। মাঝে মাঝেই এই সমস্যা খুব বেশি আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ইদানীং অনেকের চোখ উঠতে দেখা যাচ্ছে। চোখ ওঠা আসলে কী, কেন হয় এবং এর চিকিৎসাই বা কী—আসুন জেনে নেওয়া যাক।
চোখ ওঠা মানে কী?
আমাদের চোখের সাদা অংশটুকু একটা পাতলা পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে—যার নাম কনজাংটিভা। এই কনজাংটিভায় যখন সংক্রমণ বা প্রদাহ হয়, তখন এর সূক্ষ্ম রক্তনালিগুলো লালচে হয়ে ওঠে এবং পুরো চোখের সাদাটুকুই তখন লাল হয়ে যায়। এর সঙ্গে থাকে আরও কিছু উপসর্গ। যেমন চুলকানি, অস্বস্তি, ব্যথা, আলোক সংবেদনশীলতা, ঘন সাদাটে বা হলদেটে নিঃসরণ ইত্যাদি। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই কনজাংটিভাইটিসের কারণ ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস। তবে অ্যালার্জি, ঠান্ডা সর্দি বা চোখ কোনো রাসায়নিক বা ক্ষতিকর পদার্থের সংস্পর্শে এলেও কনজাংটিভায় প্রদাহ হয় ও চোখ লাল দেখায়। ভাইরাসজনিত চোখ ওঠায় পাতলা বর্ণহীন পানি পড়ে বেশি। তবে ব্যাকটেরিয়াজনিত হলে নিঃসরণটি ঘন ও একটু হলদেটে হয়ে থাকে।
চোখ উঠলে কী করা?
ভাইরাসই হোক কি ব্যাকটেরিয়া—চোখ ওঠা অত্যন্ত সংক্রামক। উপসর্গ দেখা দেওয়ার পরবর্তী এক-দুই সপ্তাহ রোগী অন্যকে এই রোগ ছড়াতে পারেন। সে কারণে স্কুল-কলেজ, অফিস বা ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় একসঙ্গে অনেকে এতে আক্রান্ত হন। ভাইরাসজনিত চোখ ওঠার তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। তবে ব্যাকটেরিয়াজনিত সন্দেহ করলে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ বা অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করা হয়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চিকিৎসা নেওয়া হোক আর না হোক, এটি বেশ কয়েক দিন পর এমনিতেই সেরে যায়। ব্যথা-বেদনা ও অস্বস্তি কমাতে কিছু পরামর্শ:
—একটি পাতলা পরিষ্কার কাপড়ের টুকরা বা গজ পরিষ্কার ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে ভালো করে চিপে নিংড়ে নিন, এবার চোখ বন্ধ করে চোখের ওপর চেপে ধরুন। দিনে বেশ কয়েকবার এটি করলে আরাম পাবেন। কখনো একবার ঠান্ডা একবার হালকা কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে নিতে পারেন। চোখের ধারগুলোতে যে ময়লা নিঃসরণ জমে আঠালো হয়ে থাকে, সেটাও এভাবে ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে নিন বারবার।
—অ্যান্টিহিস্টামিন চোখের ড্রপ ব্যবহার করলে চুলকানি ও অস্বস্তি অনেকটাই কমবে। তবে তার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।
—এই সময়টাতে চোখে কনটাক্ট লেন্স এবং যেকোনো ধরনের কসমেটিকস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
—আলোক সংবেদনশীলতার কারণে কালো সানগ্লাস ব্যবহার করলে অস্বস্তিভাব কিছুটা কমবে।
—বাড়িতে অন্যদের চোখ উঠলে একটু সাবধানতা অবলম্বন করলে নিরাপদ থাকতে পারবেন। যেমন বারবার হাত পরিষ্কার করুন, চোখে হাত দেবেন না। অবশ্যই নিজ নিজ ব্যবহার্য জিনিস যেমন তোয়ালে, বালিশের কভার ইত্যাদি আলাদা রাখবেন। চোখে ব্যবহার করা হয় এমন প্রসাধনী কারও সঙ্গে বিনিময় না করাই উচিত। শিশুদের বেলায় এসব সতর্কতা মেনে চলুন।
চোখ ওঠায় ভয় নেই
চোখ ওঠা বিরক্তিকর ও কষ্টকর সমস্যা হলেও এতে ভয়ের কিছু নেই। কয়েক দিন বা এক সপ্তাহ পর এটি আপনাআপনি সেরে যায়। দীর্ঘমেয়াদি হলে বা অন্য কোনো সমস্যা যেমন জ্বর, প্রচণ্ড ব্যথা, দৃষ্টি সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিলে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র:ওয়েবমেড|প্রথম আলো।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
প্রনবেশ ২৩/১২/২০১৪ধন্যবাদ সার ঐ মূল্যবান ইনফরমেশানের জন্যে।
-
তুহিনা সীমা ১১/১১/২০১৪বাহ ডাক্তারি করেন নাকি। আপনার অত্যন্ত্য জরুরী তথ্যটি পড়ে সচেতন হতে চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ এই তথ্যটি শেয়ার করার জন্য।
-
কল্পনা বিলাসী ২৬/১০/২০১৪ধন্যবাদ... গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করার জন্য।
-
আসাদুজ্জামান নূর ২৩/১০/২০১৪স্বাস্থ সম্পর্কে জানতে পারলাম
-
ডাঃ প্রবীর আচার্য নয়ন ২৩/১০/২০১৪ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদানের জন্য
-
মঞ্জুর হোসেন মৃদুল ২২/১০/২০১৪অনেক কিছু জানলাম।
-
অনিরুদ্ধ বুলবুল ২২/১০/২০১৪অন্যসূত্রে প্রাপ্ত হলেও পরিপূর্ণ এই লেখাটা বর্তমান সময়ের জন্য বেশ প্রয়োজনীয়, কোথাও কোথাও চোখ উঠার প্রাদূর্ভাব দেখা দিয়েছে। ভাল একটা পোস্ট, ধন্যবাদ।