www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

একটি স্বপ্ন এবং আমি (নাটক)

এপার ওপার দুই গ্রামের খেলা। অল্পকয়েক বলে অনেক রান লাগবে এপারের দলের । এপারের দল যদি এই প্রয়োজনীয় রান না করতে পারলে এপারের আর মান সম্মান থাকবেনা। এমন মুহুর্তে ব্যাটিং এ আছে দূর্জয় সে ব্যাটিংয়ে তাই সবাই তার উপর ভরসা করছে। আর সবার ভরসাকে সত্যি করার জন্য দূর্জয় ও চেষ্টা করছে। মাঠের গ্লারীতে  দর্শকদের ও যথেষ্ট উত্তেজনা আর হাততালি । দুর্দান্ত ব্যাটিং করে সবার স্বপ্ন কে সত্যি করে দেয় দুর্জয়। অপরাজিত হয়ে ব্যাট হাতে নিয়ে ম্ঠা থেকে গ্লারীতে আসেন দূর্জয়। আজকে যেহেতু ফাইনাল তাই আজকেই পুরুস্কার দেয়া হবে বিজয়ীদেরকে । অনুষ্ঠানে দূর্জয়কে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ এবং ম্যান অব দ্যা সিরিজ ঘোষনা করে পুরুস্কার দেয়া হয় এবং যেহেতু সে এপারের দলনেতা তাই তার হাতেই প্রথম পুরুস্কার দেওয়া হয়। তাদের দলের সব খেলোয়াররা কাপ হাতে নিয়ে অনেক মাতা মাতি করে।
সবাই এক সাথে পুরুস্কার নিয়ে মাঠ থেকে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে । আর সবাই দূর্জয় কে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কমেন্টস করছে..
কেউ ঃ আজকে দূর্জয় ভাই যা দেখাইলো  এলাকার মানুষ জীবনে ও ভুলবেনা ?
কেউ ঃ শুধু এই এলাকা কেন ওপারের ওরা ও কোন দিন ভুলবেনা।
কেউ ঃ আরে বেটা এই এলাকার লোকজন, ঐ এলাকার লোকজন কি দূর্জয় ভাই এমন খেলা দেখাইছে যা এই মাঠ ও ভুলবো না
দূর্জয় ঃ ভোলা লাগবেনা । এখন শোন এতদিন ধরে খেলা হইতেছে আমাগো গ্রামের মানুষ প্রতিদিন আমাগো খেলা দেখছে তারা আমাগোর খেলার জন্য টাকাও দিছে। তাই বলছি কি অনেকেই হয়তো জানেনা যে আমরা ফাইনালে কাপ জিতেছি? চল সবাই মিলে কাপ নিয়ে পুরা এলাকায় ঘুরাইয়া দেখাই ।
কেউ ঃ গুড আইডিয়া .
কেউ ঃ চলেন সবাই তাই করি...
কেউ ঃ তা কোন দিক থেকে শুরু করা যায়....
দূর্জয় ঃ আসলেই তো কোন দিক থেকে শুরু করা যায়...
কেউ ঃ চলেন সবার আগে আমাগো মন্ত্রীর বাড়ি যাই। হেয় যদি শোনে আমরা ফাইনালে জিতেছি হের এলাকা জিতেছে তাইলে অনেক খুশি হইবে।  
দূর্জয় ঃ হ চল হেয় খুশি হইলে আমাগো ক্লাবের ও উন্নতি হইবে সবাই চল আগে তার বাড়িতে ই যাই। কিন্তু....
কেউ ঃ আবার কিন্তু কি?
দূর্জয় ঃ মন্ত্রীকে এখন বাসায পাবো কি?
কেউ ঃ চলেন হেয় তো দেশেই ,বাসায়ই থাকতে পারে ।পাইমু..
দূর্জয় ঃ চল সবাই।
সবাই কাপ মাথায় নিয়ে হই হুল্লোর করে মন্ত্রীর নামে এবং এলাকার ক্লাবের নামে মিছিল করতে করতে যায় মন্ত্রীর বাড়ির দিকে...
সবাই পৌছে যায় মন্ত্রীর বাড়ি। সেখানে পৌছতে ই মন্ত্রীর ঘরের সামনে দাড়িয়ে সবাই মন্ত্রীর নামে মিছিল করে । সবার মিছিলের
শব্দ শুনতে পেয়ে মন্ত্রী ঘরের ভিতর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে। মন্ত্রী বাইরে আসতেই সবাই তাদের মিছিল থামিয়ে দেয়। দূর্জয় মন্ত্রীকে সালাম দেয....
মন্ত্রী ঃ ( ছালামের জববা দিয়ে ) কি ব্যাপার তোমরা কাপ হাতে । খেলায় কি তোমরা জিতেছ নাকি ?
দূর্জয় ঃ হ্যা আঙ্কেল খেলায় আমাদের এপারের ক্লাব জিতেছে। আমরা এই কাপ পাইছি। খেলাতে আপনি যাননি তো তাই ভাবলাম কাপটা আপনাকে দেখিয়ে নিয়ে যাই।
মন্ত্রী ঃ বাহ্ বেশ ভালোতো তোমরা এলাকার মান রেখেছ।আমাকে অবশ্য খেলায় যাওয়ার জন্য দাওয়াত করা হয়েছে । কিন্ত ব্যস্ততার কারনে যেতে পারিনি ।
কেউ ঃ জানেন না স্যার আজকে দূর্জয় ভাই না থাকলে তো আমরা হাইরাই গিয়েছিলাম।শেষ মেষ দূর্জয় ভাই আমাগো দলেরে জিতাইছে।
মন্ত্রী ঃ তাই নাকি ? বেশ ভালোতো । কিন্তু দূর্জয় তো তোমাদের চেয়ে বড় ও তোমাদের সাথে খেললো কিভাবে?
কেউ ঃ স্যার প্রত্যেক দলে একজন বড় খেলতে পারে ।আর তাই আমাদের দলে বড় খেলেছে দূর্জয় ভাই।
মন্ত্রী ঃ তাই ভালো বড় বড়র মান রেখেছে।যা হোক তোমরা এসেছো তোমাদের কে ধন্যবাদ। নাও তোমরা এই ৫০০/= তোমরা কিছু খেয়ে নিও।
সবাই টাকা নিয়ে আর কাপ মাথায় করে আবার দৌড়াদৌড়ি  লাফালাফি করতে করতে চলে আসে সেখান থেকে । সবাই মন্ত্রীর বাড়ি থেকে শুরু করে পুরো এলাকা কাপ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
এসে দাড়ায় তাদের ক্লাবের সামনে । ক্লাবের সামনে এসে সবাই মন্ত্রীর দেয়া টাকা দিয়ে খাবার কিনে খায়। খাওয়ার পর্ব শেষ করে সবাই যে যার বাড়ি চলে যাবে ,তখন
দূর্জয় ঃ এই তোরা সবাই বিকালে তাড়াতাড়ি চলে আসবি ।কাউকে যেন ডাকতে না হয়।বিকালে প্রাক্টিস করতে হবে, সবাই চলে যায় যে যার বাড়ি
এদিকে দূর্জয়ের মা পাকের ঘরে রান্না বান্নার কাজ করেতেছে এমন সময় দূর্জয় তার খেলার জিতা মেন অব দ্যা ম্যাচ . ম্যান অব দ্যা সিরিজ এবং বড় কাপ নিয়ে এসে মাকে দেখায় ..
দূর্জয় ঃ মা মা দেখো আমি কত গুলো পুরুস্কার নিয়ে এসেছি ।মা আজকে ফাইনাল খেলায় আমাদের এপার জিতেছে।
মা ঃ তাই নাকি তাইলে তো ভালোই । তা এতো গুলো পুরুস্কার কেন ?
দূর্জয় ঃ মা এই কাপটা আমাদের দলের প্রথম পুরুস্কার আর সবার ছোট যেটা সেটা আমার ম্যান অব দ্যা ম্যাচ .আর মেঝটা হলো আমার ম্যান অব দ্যা সিরিজ.
মা ঃ তাই নাকি । তাহলে তো মনে হয় আমার ছেলে কয়েক দিন পরে টিভিতে খেলবে । কি খেলবে ?
দূর্জয় ঃ মা খেলবে মানে অবশ্যই খেলবে। কিন্তু এখন না এখন আমি গোসল করতে যাই তুমি আমার জন্য খাবার বারো আমি আসতেছি।
বলে দূর্জয় চলে যায় গোসল করতে আর মা চলে যায় রান্না ঘরে ...
খেয়ে দেয়ে দূর্জয় শুয়ে আছে । মা আর বাবা ও ঘরে আছেন, দূর্জয় ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে অলরেডি সাড়েতিনটা বেজে গেছে। তাই সে শোয়া থেকে উঠে ব্যাট হাতে নিয়ে বেরিয়ে যেতে নেয়। তখন দূর্জয়ের মা দেখে ফেলে। দেখে  
মা ঃ কিরে তুই না শুয়েছিলি ,উঠলি কখন আবার? আর ব্যাট নিয়ে কোথায় যাস ?
দূর্জয় ঃ মা বাবাকে বলোনা আমাকে যেতে হবে মাঠে প্রাক্টিস এ . ওরা সবাই আসবে ওদের কে একটু শিখাতে হবে যাই।
বলে ই দূর্জয় চলে যায়...
এতক্ষণ সবাই মাঠে প্রাক্টিস করছিলো। প্রাক্টিস করতে করতে  বিকাল হয়ে গেছে। তাই এখন সবাই চলে যাবে যার যার বাড়ি। যাওয়ার সময় দূর্জয় বলে ...
দূর্জয় ঃ সবাই শোন কালকে আমি আসতে পারবোনা । কালকে আমি পাশের জেলায় হায়ারে যাবো সাত দিনের জন্য। তোরা কিন্তু সবাই প্রাক্টিস করিস। আর কেউ কোন টিম রাখতে চাইলে সাত দিনের আগে বড় কোন টিম রাখিস না , পারলে ছোট খাটো গুলো খেলিস। ঠিক আছে সন্ধা হয়ে আসছে সবাই চলে যা আর বাড়িতে গিয়ে সবাই পড়ালেখা করিস। বলে দূর্জয় ক্লাব বন্ধ করে চলে যায় যে যার বাড়ি....
সন্ধাবেলা দূর্জয় বাড়িতে এসে হাত পা ধুয়ে পড়তে বসে। কতক্ষণ পড়ে তারপর মাকে বলে
দূর্জয় ঃ মা অনেকক্ষণ তো পড়লাম এখন এক কাপ চা দিবে
মা ঃ দিবোনা কেনো ? তোমাকে আদর যতœ কওে খাওয়াই আর তুমি এই জেলা থেকে ঐ জেলা থেকে ঐ জেলা এই গ্রাম থেকে ঐ গ্রাম ক্রিকেট খেলে বেড়াইবা আর কি? তোমার তো আর কোন কাজ কর্ম নেই?
দূর্জয় ঃ মা এই ভাবে বলছো কেন?
মা ঃ তোমাকে কি ভাবে বলবো ? আচ্ছা বলিকি এই ক্রিকেট ফ্রিকেট খেলা দিয়ে কি হবে । ছোট থাকতে না হয় খেলছিলি এখন বড় হয়েছিস না? আর তুই আমাদের একমাত্র সন্তান পড়ালেখা করে ভালো কিছু করবি তা না । আর তুই কি না ,আচ্ছা তোর সমস্যা কোথায় পড়ালেখায় তো খারাপ না তাইলে সমস্যা কি?
দূর্জয় ঃ মা আমি তো পড়ালেখা করছি।
মা ঃ পড়ালেখা করিস কথাটা ঠিক আছে । ঠিক আছে তুই পড় আমি তোর জন্য চা বানিয়ে নিয়ে আসছি। আর  ও শোন বিকালে তোর বাশার আঙ্গেলের মেয়ে মিম আসছিল তোর কাছে ।
দূর্জয় ঃ মিম. আমার কাছে কেন ?
মা ঃ ও নাকি কি পড়া  পারে না বলেছে তোকে গিয়ে একটু দেখিয়ে দিয়ে আসতে।
দূর্জয় ঃ ও না হয় পারে না ছোট ক্লাশে পড়ে কিন্তু ওর ভাই আর আমি তো একই ক্লাশে পড়ি সে তো বুঝিয়ে দিতে পারেন।
মা ঃ সে থাকলে তো করবে সে গেছে ওর মামা বাড়ি বেড়াইতে।
দূর্জয় ঃ (মনে মনে ) যাক তাইলে ভালোই হলো । ঠিক  আছে মা আমি কালকেই যাবো।
মা চলে যান চা বানাতে , আর দূর্জয় পড়তে থাকে ....
সকাল বেলা মীম তার পড়ার টেবিলে বসে পড়তেছে । এমন সময় দূর্জয় যায় তাদের বাড়িতে । গিয়ে
দূর্জয় ঃ কি ব্যাপার মীম পড়তেছো ভালো পড়। তা তোমাদের ঘরের লোকজন কোথায় কাউকে  দেখছিনা যে  
মীম ঃ আরে দূর্জয় ভাই আসেন আসেন ঘরে আর কেউ নেই বাবা বাজারে গেছে মা আর ভাইয়া মামা বাড়ি গেছে ।
দূর্জয় ঃ তার মানে ঘরে তুমি একাই যাক ভালোই হলো।
মীম ঃ কি ভালো হলো ?
দূর্জয় ঃ না মানে ভালো হলো বলতে তুমি নাকি কি পড়া বোঝনা সেটা বোঝাতে ভালোই হবে আর কি?
মীম ঃ ও তাই।
দূর্জয় ঃ হ্যা তাই । তা বলো কি পড়া বোঝনা ।
মীম ঃ সেটা না হয় পরেই বললাম । তার আগে আপনি বলুন ,আপনি  এই যে এলাকায় এলাকায় ক্রিকেট খেলে বেড়ান আর ঠিক মতো কলেজে যান না
চলতে থাকে তাদের দুজনের পড়াসহ আরো নানা বিষয়ে আলাপ, আলাপ কালে মীমের বাবা চলে আসেন ।
বাবা ঃ কইরে মা ধর বাজার এনেছি বলতেই দূর্জয়কে দেখে ফেলে
দূর্জয় ঃ ছালাম আঙ্কেল । আঙ্কেল ভালো আছেন ?
বাবা ঃ হ্যা ভালো আছি তা তুমি কখন এলে বাবা ?
দূর্জয় ঃ আঙ্কেল এই আধাঘন্টা হবে মীম নাকি অংক বোঝেনা তাই আর কি এলাম। তো হয়েছে আমি এখন চলে যাবো
বাবা ঃ ও বেশ ভালো । ও হ্যা তোমার ক্রিকেট খেলার খবর কি চারিদিকে তো তোমার নামের বেশ ছড়াছড়ি। ভালো চালিয়ে যাও চালিয়ে যাও।
দূর্জয় ঃ জ্বী আঙ্কেল দোয়া করবেন।
বলে সেখান থেকে চলে আসে দূর্জয়.সাত দিন দূর্জয় বাড়ির বাইরে ছিলো খেলার কারনে। সাত দিন খেলে বাড়ি ফিরছে । ফিরে
দূর্জয় ঃ মা আমি চলে এসেছি ।
মা ঃ কেন আরো কয়েক দিন খেলে তারপর আসতে পারতি সমস্যাতো নাই । না আসলে ও সমস্যা নেই । (রেগে )
দূর্জয় ঃ মা তুমি রেগে যাচ্ছ কেন? তুমি জানো ঐ জেলায় খেলায় আমাকে যে দল হায়ার করে নিয়েছে সেই দল জিতেছে। আর আমি প্রত্যেক ম্যাচে ম্যাচে সেরা। আর ফাইনালে সিরিজ । সেরা হয়েছি মা...
মা ঃ (খুশি হয়ে) ভালো বাবা জিতিস আর যাই  করিস বাড়ির বাইরে থাকিস না ।
দূর্জয় ঃ মা আমি আমাদের জেলার শ্রেষ্ঠ প্লিয়ার আর পাশের জেলার ও শ্রেষ্ঠ প্লিয়ার আমি তো জাতিয় দলে খেলতে পারি।
মা ঃ ও তাইলে তো ভালো । তো খেল জাতিয় দলে।
দূর্জয়   ঃ মা বললেই কি হয়ে গেলো সেখানে যেতে হলে আগে ঢাকায় যেতে হবে তারপর সেখান কার খেলায় টিকতে হবে তারপর না হয় খেলবো।
মা ঃ যা করা লাগে কর।
দূর্জয় ঃ মা ঢাকায় যেতে হবে আগে । কিন্তু মা ঢাকায় আমাদের ঘনিষ্ট কে আছে । যে সব কিছু চেনে যানে
মা ঃ আমাদের এমন কেউ তো থাকেনা তবে মীমের বাবার তো ঢাকায় যাওয় আসা আছে সে ঢাকা সম্পর্কে ভালো জানে । তুই তাকে বলে দেখতে পারিস ।
দূর্জয় ঃ ঠিক আছে মা তাই করবো।
মীম ঘরে সাজগোজ করতেছে। এমন সময় দূর্জয় যায় মীমদের বাসায়। গিয়ে দেখে কেউ নেই। দেখে
দূর্জয় ঃ কি আজকে ও কি কেউ বাড়িতে নেই?
মীম ঃ বাবা পুকুরে গেছে গোসল করতে এখনি চলে আসবে
দূর্জয় ঃ মীম একটা খুশির খবর আছে ।
মীম ঃ কি দূর্জয় ভাই কি খবর ?
দূর্জয় ঃ আমি তোমার আব্বার সাথে ঢাকা যাবো। তারপর সেখানে গিয়ে ঐযে টিভিতে যারা ক্রিকেট খেলায় তাদের সাথে ক্রিকেট খেলবো।
মীম       ঃ (লাফিয়ে)ও দূর্জয় ভাই তোমারে টিভিতে দেখতে পারমু ।
বলতেই মীমের বাবা গোসল করে লুঙ্গি হাতে নিয়ে আসে। এসে মেয়ের কথা শুনে জিসেজ্ঞ করে...
বাবা ঃ কিরে মা তুই কার সঙ্গে কথা বলিস ?
মীম ঃ বাবা দূর্জয় ভাই এসেছে ।
বলতেই দূর্জয় ও কাছে আসে । এসে
দূর্জয় ঃ সালাম আঙ্গেল ।
বাবা ঃ সালামের জবাব দিয়ে কি ব্যাপার বাবা দূর্জয়?
দূর্জয় ঃ আঙ্কেল আপনি কি শীঘ্রই ঢাকা যাবেন ?
বাবা ঃ হ্যা আমি তো বিকালেই ঢাকা যাবো কেন বলোতো?
দূর্জয় ঃ আঙ্কেল আমি ও ঢাকা যাবো আমি জাতিয় দলে ভর্তি হবো এই জন্য যেখানে যেখানে যেতে হবে আপনি তো সব চিনেন আপনি যদি আমাকে নিয়ে জান ?
বাবা ঃ নিশ্চয়ই নিয়ে যাবো । নিবো না কেন বলো ? তুমি বিকাল চলে আসো।
দূর্জয় ঃ ঠিক আছে আঙ্কেল আমি তাহলে যাই ।বলে সে চলে যায় তার বাড়ির দিকে আর বাবা ও মীম যায় ঘরে
বিকালে ব্যাগে করে জামা কাপড় নিয়ে আর যা যা দরকার সব কিছু নিয়ে দূর্জয় চলে আসে মীমদের বাড়ি। এসে দেখে মীমের বাবা ও রেডি ।
মীমের বাবা তাকে বলে ....
বাবা ঃ চলো বাবা চলো যা যা দরকার সব কিছু এনেছো  তো?
দূর্জয় ঃ হ্যা আঙ্গেল সব কিছু এনেছি । চলুন ...
বাবা ঃ হ্যা চলো।
তারা যখন যেতে নেয় তখন
মীম ঃ বাবা তুমি একটু হাট আমি একটা অংক পারিনা দূর্জয় ভাইকে দিয়ে করিয়ে রাখি ।আবার কবে আসে
বাবা ঃ ঠিক আছে বাবা । যাও তুমি আমি হাটছি তাড়াতাড়ি এসো ।
বাবা হাটতে থাকে আর দূর্জয় মীমের ঘরে যায় । গেলে
মীম ঃ তুমি আবার কবে আসবা ঢাকা থেকে । ঢাকা গিয়ে কিন্তু আবার আমারে ভুইলা যাইও না ।
দূর্জয় ঃ আরে না তোমারে ভুলতে যাবো কোন দুঃখে ? মনে কোন দুঃখ আছে নাকি ?
মীম ঃ দুঃখ না থাকলেই ভালো , আর যদি শুনি তুমি আমারে ভুইল্লা গেছো তাইলে কিন্তু আমি মইরাযামু।
দূর্জয় ঃ আরে কি বলছো আবোল তাবোল তোমারে ভুলতেই যামু কেন আর তুমি মরতেই যাবা কেন?
তাদের কথা শেষে দূর্জয় বেড়িয়ে পরে ঘরের ভিতর থেকে....
তারা পৌছে যায় ঢাকায় । তারা যায় (বি সি বি) তে । সেখানে তারা বি সি বির অফিসে গিয়ে
বাবা ঃ বলে যে এই ছেলেটির নাম দূর্জয় সে ক্রিকেট খেলতে খুব ভালো পারে , সে কয়েক জেলায় শ্রেষ্ঠ খেলোয়ার হিসেবে পরিচিত। তাই সে জাতীয় দলে
খেলতে ইচ্ছুক । এখন আমাদের কি করতে হবে ? তখন
বিসিবির লোক ঃ দেখুন আপনারা তো প্রথমেই ঢুকতে পারবেন না জাতীয় দলে। তবে আপনাদের কে (বিস্তারিত বলে দেয়)....
বিসিবি র লোকদের কথামতে মীমের বাবা আর দূর্জয় যে কোন একটি লিগের ক্লাবে যায়।  সেখানে গিয়ে মীমের বাবা দূর্জয় কে ভর্তি করে দেয়।
লিগের নিয়ম অনুযায়ি সে খেলে যায় প্রত্যেক দিন। প্রত্যেক দিন তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। সকাল বেলা খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হয় সে তাদের নিয়ম মোতাবেক চলতে থাকে। যত ব্যায়াম করা দরকার তাই করে । যত প্রাক্টিস করা দরকার সকল কিছু সে করতে থাকে।
অবশেষে লীগের খেলা পরে । সেখানে সে খেলে । যেখানে তার দল কখনো সেমি ফাইনালে যেতে পারেনি সেই বার তার দল চেম্পিয়ান হয়। সে হয় ম্যাচ সেরা এবং টুর্নামেন্ট সেরা। তাকে অনেক পুরুস্কার করা হয়।
লিগের খেলা গুলো সরাসরি  টিভিতে সম্প্রচার করা হয়। যা তার এলাকাবাসি সবাই দেখে এবং ক্লাবের সবাই দেখে একসাথে ।তার
জয়ে তার ক্লাবের পক্ষ থেকে পুরো এলাকায় মিষ্টি খাওয়ানো হয়। তার বাবা মা  ও অনেক খুশি হয়।
এবার সে তার লিগের সভাপতি কে নিয়ে যায় বি সি বি র কাছে। বি সি বি তাকে জানায় তারা পারফামেন্স দেখেছে। সে অত্যান্ত ভালো খেলেছে এবং সে অত্যান্ত একজন ভালো মানের খেলোয়ার । সে জাতীয় দলে খেলার যোগ্য। তাই তাকে জাতীয় দলে নিতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু
দূর্জয় ঃ কিন্তু কি? টাকা পয়সা লাগবে?
বিসিবি ঃ না টাকা পয়সা বা ঘুস কিচ্ছু লাগবেনা । লাগবে শুধু আপনাদের ডিস্টিকে যে মন্ত্রী রয়েছে তার সিগনেসার ।
দূর্জয় ঃ এটা কোন সমস্যা ই না আমার বাড়ির পাশে মন্ত্রীর বাড়ি। যে কোন সময় গিয়ে সিগনেসার আনা যাবে।
চলে আসে তারা ...
দূর্জয় মন্ত্রী সাহেবের সিগনেসার নেয়ার জন্যে ঢাকা থেকে সরাসরি দেশে চলে আসেন ।এসেই প্রথমে নামেন তাদের ক্লাবের সামনে । ক্লাবের সামনে আসতেই তাকে সবাই ফুল দিয়ে বরণ করে ,সবাই তাকে ক্লাবের পক্ষ থেকে সমমাননা ম্যাডেল প্রদান করেন । বিভিন্ন জনে তার কাছে বিভিন্ন ধরনের কথা জিজ্ঞেস করে। তাদের সাথে কথা)শেষ কওে সে চলে যায় তাদের বাড়িতে...
বাড়িতে আসলে ছেলেকে দেখে মাও অনেক খুশি হয়। মা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে নানান কথা জিজ্ঞেস করেন।
মা ঃ বাবা তুই এতদিনে কেমন ছিলি? ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করেছিস তো ।কোন সমস্যা হয়নি তো তোর
দূর্জয়      ঃ না মা আমার কোন সমস্যা হয়নি । আমি অনেক ভালো ছিলাম, শুধু মাঝে মধ্যে তোমার আর বাবার কথা মনে পরলে খুব খারাপ লাগতো।
মা ঃ তা কি খবর তুই কি টিভিতে খেলতে পারবি?
দূর্জয় ঃ পারবো মা আমি অবশ্যই খেলকে পারবো। জানো মা আমি সব পরীক্ষায় পাশ। ইভেন এই যে কয়েক দিন আগে লিগের যে খেলা গেলো তাতেও আমি শ্রেষ্ঠ প্লেয়ার হয়েছি।
মা ঃ আমরা সবাই মিলে এক সাথে তোর খেলা দেখেছি। তোর খেলা দেখেতো পুরো এলাকাবাসি অনেক খুশি। তোর বাবা যে এতো রাগি সেও পর্যন্ত খেলা দেখে আনন্দে হাততালি দিয়েছে। আর তোর ক্লাবের পক্ষ থেকে পুরো এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছে।
দূর্জয় ঃ মা এসেই শুনেছি। মা আমার সব রেডি এখন শুধু আমাদের মন্ত্রী সাহেবের একটা স্বাক্ষর দরকার। তাইলে আমি জাতীয় দলে খেলতে পারবো।
মা ঃ মন্ত্রী সাহেবের স্বাক্ষর কেন?
দূর্জয় ঃ লাগবে মা লাগবে । আমি তার এলাকার সন্তান । আমি জাতীয় দলে খেলবো তার একটা পারমিশন এর ব্যাপার আছেনা।যাই হোক এখন বল মন্ত্রী সাহেবের কাছ থেকে স্বাক্ষর আনবো কিভাবে?
মা ঃ তোর বাবাতো ভোটের সময় মন্ত্রী সাহেবের বিরোধিতা করেছে। তোর বাবা তো গেলে আর মন্ত্রী স্বাক্ষর দিবেন না। তার চেয়ে বরং এক কাজ করলে কেমন হয়?
দূর্জয় ঃ কি কাজ?
মা ঃ মীমের বাবা তো তোর অনেক উপকার করলো ।
দূর্জয় ঃ হ্যা মা বাশার আঙ্কেলের জন্য আমি এতো দুর যেতে পেরেছি।
মা ঃ তাই বলছি কি তার সাথে মন্ত্রী সাহেবের খুব ভালো জানা শুনা আছে । সে যদি একটু বলে দেয় তাইলে হইতে পারে। তুই তারে একটু বলে দেখবি দূর্জয় ঃ মা আমি অবশ্যই বলবো আর আমি জানি আঙ্কেলরে বললে সে মন্ত্রীর কাছে গিয়ে আমার জন্য স্বাক্ষর এনে দিবেন। মা তাহলে আমি এক্ষুনি যাচ্ছি তাদের বাড়ি। বলে দূর্জয় চলে যায় মীমের বাবার কাছে....
মা ঃ এই শুনে যা পরে যাস।
দূর্জয় ঃ (দৌড় দিয়ে) না মা আমি গেলাম।
বলতে বলতেই সে বাসার আঙ্কেলের উদ্দ্যেশে মীমদের বাড়ির দিকে রওয়ানা হয়।
দূর্জয় হাটে আর হালকা দৌড়ে যায় মীমদের বাড়িতে। মীমদের বাড়ির ঘাটে যেতেই তার দেখা হয়ে যায় মীমের সাথে । মীম তাকে দেখেই খুশিতে
মীম ঃ আরে দূর্জয় ভাই তুমি আইছো ?
দূর্জয় ঃ হ আমি আইছি । তুই কেমন আছিস?
মীম ঃ কেমন আছি আর তুমি কেমন আছো সেইটা পরে হইবো তুমি এহন এহেনে দাড়াও । ঘরে মা আছে তাই ঘরে যাওয়ার দরকার নেই। আমি একটু ঘর থেকে আসতেছি।
বলেই মীম দৌড়ে চলে যায় বাড়ির ভিতরে। ঘরে গিয়ে সে দূর্জয়ের জন্য বকুল ফুলের মালা নিয়ে আসে । আর দূর্জয় মীমের আদেশ মতে জায়গায় দাড়িয়ে থাকে। মীম মালাটি নিয়ে এসে দূজ য়ের গলায় পরিয়ে দেয় আর বলে ...
মীম ঃ জানো দূর্জয় ভাই তুমি যহন টিভিতে খেলছো আর অনেক গুলো পুরুস্কার পাইছো তহন এলাকার সবাই কি যে খুশি হইছে। আর ক্লাবের পক্ষের তনে পুরো এলাকায় মিষ্টি বিলাইছে।
দূর্জয় ঃ কেন তুই খুশি হস নাই?
মীম ঃ সেটা জানিনা তবে অনেক ভয় পাইছি । টিভিতে তোমারে সবাই দেখতাছে তোমার উপর যদি কারো নজর লাগে সেই জন্য।
দূর্জয় ঃ ভয় ও পাওয়া লাগবেনা আর নজর ও লাগাও লাগবেনা এহন বল আঙ্কেল কই? আঙ্কেলের কাছে আমার কাজ আছে।
মীম ঃ আব্বায় তো থানার বাজারে গেছে। কেন আব্বার কাছে কেন? ও তুমি তাইলে আমার লগে দেখা করতে আহনাই তুমি আইছো আব্বার লগে দেহা করতে। দূর্জয় ঃ আমি তো তোমার লগে দেহা করতে আসুম স্পেশাল ভাবে । এখন আমি গেলাম আঙ্কেলের কাছে পরে আসুম জরুরী কথা আছে।
বলেই দূর্জয় সেখান থেকে ও দৌড়ে চলে যায় তাদের থানার বাজারের দিকে আঙ্কেলের উদ্দ্যেশে  
বাজারে গিয়ে সে খুজতে খুজতে বাশার আঙ্কেলকে পায়। পেলে...
দূর্জয় ঃ আঙ্কেল ছালাম । আঙ্কেল আপনি এখানে । আমি আরো এদিক ওদিক আপনাকে খুজে এলাম। প্রথমে অবশ্য আপনাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম । কিন্তু মীমেরকাছে শুনলাম আপনি বাজারে তাই ...
আঙ্কেল ঃ কি ব্যাপার বলোতো বাড়িতে না পেয়ে একদম বাজারে চলে এলে ?
দূর্জয় ঃ একটা জরুরী ব্যাপার আঙ্কেল তাই বাড়িতে না পেয়ে সোজা এখানে চলে এলাম ।
আঙ্কেল ঃ বিষয়টা যে জরুরী সেটা তোমাকে দেখেই আমি বুঝতে পেরেছি। তা বল বিষয়টা কি?
দূর্জয় ঃ আপনিতো আমার ক্রিকেট এর ব্যাপারে সবই জানেন ।
আঙ্কেল ঃ হ্যা তা ক্রিকেটের কি হয়েছে? তোমার জাতীয় দলে খেলার খবর কি?
দূর্জয় ঃ হ্যা আঙ্কেল জাতীয় দলে খেলার জন্য সবই রেডি এখন শুধু আমাদের মন্ত্রী সাহেবের কাছ থেকে একটা প্রশংসা পত্র নিলেই আমি জাতীয় দলে খেলতে পারবো। আর সে জন্য আমি আপনাকে খুজতেছি।
আঙ্কেল ঃ ওরে বোকা এই সহজ ব্যাপারটার জন্য তোমার ব্যস্ত হওয়ার কি আছে ? সময় করে বিকালে একবার বাড়িতে আইসো । তোমাকে নিয়ে মন্ত্রী সাহেবের বাড়ি গিয়ে যা দরকার সব কিছু নিয়ে আসবো। আর তোমার কথা শুনলে মন্ত্রী সাহেব ও খুশি হবেন। তুমি তার এলাকার সন্তান ।
দূর্জয় ঃ ঠিক আছে আঙ্কেল তাহলে আমি বিকাল চারটার দিকে চলে আসবো। আমি এখন যাই...
আঙ্কেল ঃ বিকালে ছাড়া আবার মন্ত্রীকে পাবেনা কিন্তু।
দূর্জয় সেখান থেকে চলে আসে আর আঙ্কেল বাজার করতে থাকে
দূর্জয় চলে আসে বাড়িতে । বাড়ি আসতে ই মা তাকে জিজ্ঞেস করে ..
মা ঃ কিরে কি খবর মীমের বাবাকে পাইছিলি ? সে কি বললো...
দূর্জয় ঃ হ্যা মা পাইছি । থানার বাজারে গিয়ে পাইছি। আঙ্কেল বলে এটা তো একটা সহজ কাজ। বিকালে আমারে যাইতে বলেছে। বিকালে আমারে নিয়ে মন্ত্রীর কাছে গিয়ে যা যা দরকার সবই আইনাদিবো।  
মা ঃ যাক ভালোই হলো। যা তাইলে তাড়াতাড়ি গোসল কইরা আয়। খাইয়া তাড়াতাড়ি যাবি। মায়ের কথা শুনে দূর্জয় চলে যায় গোসল করতে । আর মা খাবার রেডি করতে থাকে....
বিকাল  বেলা দূর্জয় আর বাশার আঙ্কেল যায় মন্ত্রীর বাড়িতে । গিয়ে দেখেন মন্ত্রী সাহেব দুপুরের খানা খেয়ে ঘুমাচ্ছেন । তাই তার পি এ এসে বলেন...
পি এ ঃ স্যার এখন ঘুমাইতেছে তাই কারো সাথে দেখা করতে পারবোনা । স্যার বলেছে যদি কোন কাগজ পত্র স্বাক্ষর করাইতে হয় তাহলে রেখে যেতে । আর যদি বেশি দরকার হয় তাহলে কালকে সকালে আসতে বলেছে।  
আঙ্কেল ঃ ঠিক আছে মন্ত্রী সাহেবকে বলবেন এই কাগজ গুলো বাশার সরদার রেখে গেছে একটু সিগনেচার করতে হবে। আরো কথা আছে আমরা কালকে এসে তার সঙ্গে কথা বলবো আর কাগজ গুলো নিয়ে যাবো । বলে তারা কাগজ গুলো রেখে সেখানে থেকে চলে আসে।
রাতের বেলা দূর্জয় যায় মীমের কাছে। গিয়ে জানালা দিয়ে দেখে মীম হারিকেন জ্বালিয়ে পড়তেছে। সে জানালা দিয়ে মীমকে ডাকে। বাহির থেকে শব্দ শুনতে পেয়ে মীম প্রথমে ভয় পেয়ে যায়। আস্তে চিৎকার দিয়ে উঠে । চিৎকার শুনে তার বাবা ...
বাবা ঃ কিরে মা কি হয়েছে ?
মীম ঃ না বাবা বইয়ের উপর টিকটিকি পরছিলো তাই ভয় পাইছিলাম।
বাবা ঃ না ভয় পাসনে পড় আমি এখনো ঘুমাইনি।
মীম ঃ (বাবাকে ) ঠিক আছে বাবা । (দূর্জয় কে আস্তে ) তুমি রাইতের বেলা এহেনে আসছো কেন ?
দূর্জয় ঃ (আস্তে) বলছিলাম না পরে আসবো, জরুরি কথা আছে তুমি বাইরে আসো।
মীম ঃ প্রথমে ইতস্ত করে , পরে আস্তে আস্তে এক পা দু পা করে বাইরে আসে। এসে..
মীম ঃ এই রাইতের বেলা আপনের কি জরুরি কথা।
দূর্জয় ঃ আছে। না থাকলে কি আর অন্ধকারে তোমাকে ডাকছি?
মীম ঃ ঠিক আছে বলো তোমার জরুরি কথা।  
দূর্জয় ঃ আমি যদি তোমারে ছাইড়া অনেক দুরে চইলা যাই তাইলে কি তুমি আমারে ভুইল্লা যাইবা?
মীম ঃ ভুইলা যাওয়ার কথা পরে আসুক আগে বলো দুরে যাইবা কেন?
দূর্জয় ঃ আমি তো টিভিতে খেলবো তখন তো আমাকে ঢাকায় থাকতে হবে আর অনেক দিন পরে দেশে আসা হবে।
মীম ঃ তুমি এই  তোমার জরুরি কথা বলার জন্য আমাকে ডেকেছো।চলতে থাকে অনেকক্ষণ তাদের মান অভিমানের কথা। কথা শেষে
মীম চলে যায় তার রুমে আর দূর্জয় চলে যায় তার বাড়িতে...
সকাল বেলা দূর্জয় ও বাশার আঙ্কেল গেছে মন্ত্রী সাহেবের বাসায়। সেখানে গিয়ে তারা মন্ত্রী সাহেবের সাথে কথা বলে ....
আঙ্কেল ঃ মন্ত্রী সাহেব সবই তো শুনলেন নিশ্চয়ই আপনার অনেক গর্ব হচ্ছে। আর ও হ্যা ওর কাগজ পত্র গুলো রেখে গিয়েছিলাম আপনার স্বাক্ষর লাগবে সে জন্য । স্বাক্ষর কি করেছেন ?
মন্ত্রী ঃ নিশ্চয়ই আমি অনেক গর্বিত দূর্জয়কে নিয়ে । কিন্তু সরি আমি ওর কাগজ পত্রে স্বাক্ষর করিনি। আর করবো ও না
দূর্জয় ঃ কেন স্যার?
মন্ত্রী ঃ আসলে এটা যেমন তেমন ব্যাপার না এক দুই দিন ভালো খেলেই জ্তীয় দলে যাওয়া যায় না। আর গেলে ও দুই দিন পরে বহিস্কার হয়ে চলে আসতে হবে। তার চেয়ে  না যাওয়াই ভালো না ?
দূর্জয় ঃ স্যার ...
মন্ত্রী ঃ কোন রিকোয়েস্ট না। বাশার সাহেব জানেন যে আমি যেটা একবার না করি সেটা আর হ্যা হয় না। আরো ভালো ভাবে খেলে শিখে তারপর যাও।
বাশার সাহেব আর দূর্জয় দু চোখ ভরা অশ্র“ নিয়ে বেরিয়ে আসে। এতক্ষণ দাড়িয়ে দাড়িয়ে মন্ত্রীর পি এ তাদের সব কথা শুনছিলো। তারা চলে আসার পর পি এ মন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করে
পি এ ঃ স্যার কি হতো একটা সিগনেচার দিলে। ও জাতীয় দলে খেলতে পারলে আপনারও তো সুনাম।
মন্ত্রী ঃ গাধাঁ। আমি মন্ত্রী আমাকে আর কয়টা রাষ্টের লোকজন চিনে । আর ও যখন বাংলাদেশের দলে খেলবে তখন সারা বিশ্বের লোকজন ওকে চিনবে জানবে। তাইলে ও আমার চেয়ে বড় হয়ে গেলোনা।
পি এ ঃ ও বুঝতে পেরেছি স্যার।
দূর্জয়ও তার মা দুজন মিলে আবার যায় মীমদের বাড়ি মীমের বাবার কাছে । দূর্জয় ও তার মা কাদো কাদো অবস্থায় মীমের বাবাকে জিজ্ঞেস করে ...
মা ঃ ভাইজান কোন মতে কি মন্ত্রীকে একটু রাজি করানো যায় না।
আঙ্কেল ঃ ভাবি আমাদের মন্ত্রী একবার যা না বলে তা কখনো আর হ্যা  হয়না। আর এটাও হবেনা।
মীম ঃ বাবা তাইলে কি দূর্জয় ভাই টিভিতে খেলতে পারবোনা। কি দূর্জয় ভাই তুমি টিভিতে খেলবা না।
দূর্জয় ঃ মন্ত্রী কয় আমি নাকি এক দুই দিন ধরে ক্রিকেট খেলাই । তাই আমার জন্য হেয় সুপারিশ করবো না। ঠিক আছে আমি ও ক্রিকেট খেলে ছাড়মু  জাতীয় দলে । দেখাইয়া দিম মন্ত্রীরে ...সবাই মিলে আরো অনেক কথা বলতে থাকেন...
অবশেষে সব চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে দূর্জয় রওয়ানা হয় বিদেশের উদ্দ্যেশে । সে চলে যাবে অস্ট্রেলিয়ায় । তাই বিদায় নিতে আসছে মীমের কাছে। দূর্জয়কে দেখে ...
মীম ঃ দূর্জয় ভাই তুমি কই যাইতাছো । টিভিতে ক্রিকেট খেলতে ঢাকায়?
দূর্জয় ঃ না মীম আমার মনে হয় টিভিতে খেলা আর হইলনা।
মীম ঃ কেন তুমি না কইলা মন্ত্রীরে দেখাইয়া দিবা।
দূর্জয় ঃ মন্ত্রীর তো লজ্জা নাই । আমি হেরে গত ম্যাচে দেহাইয়া দিছি না। ঐ যে গত ফাইনালকে আন্তঃ জেলার খেলা হইলো। সেইখানে আমি এক ওভারে ব্যাট কইরা ছয়টা ছয় মাইরা এবং বল কইরা উইকেটে হাট্্িরক কইরা দেহাইয়া দিছি। তার পর ও হেয় আমারে ফিরাইয়া দিছে। তাই আমি চলে যাচ্ছি বাহিরে। এ দেশে আর থাকবো না।
মীম ঃ (কেদেই ফেলে ) দূর্জয় ভাই তুমি চলে গেলে আমার কি অইবো? আমি কেমনে থাকুম  ..
দূর্জয় ঃ আমি আজকে চলে যাবো । আর তুমি আজকে কাদলে আমার খারাপ লাগবেনা? আর তুমি আজকে ও আমাকে ভাই বলে ডাকবে একটু নাম ধরে ডাকবেনা...যাওয়ার সময় একটু নাম ধরে ডাকো...
মীম ঃ দূর্জয় বলে আরো কেদে ফেলে।
তারপর দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে। কথা বার্তা শেষ করে দূর্জয় বিদায় নিয়ে চলে যায় ..অস্ট্রেলিয়ার উদ্দ্যেশে...
দূর্জয়কে এতক্ষণ বাংলাদেশের এক টিভি চ্যানেল স্বাক্ষাত নিচ্ছিলেন।
দূর্জয় ঃ এই তো তারপর চলে গেলাম অস্ট্রেলিয়ায়। তবে সেখানে গিয়ে ও আমি ক্রিকেট খেলা কে ছাড়িনি । একদিন একটি ক্লাবে গিয়ে ভর্তি হলাম। কয়েক দিন খুব ভালো পার্ফামেন্স করার পর ন্যাশনাল টিম এ খেললাম । তারপর এক সময় সেই টিমের কাপ্টেন এবং সবশেষে আজকের এই আমি।
উপস্থাপক ঃ ওসাম দূর্জয় ভাই। আসলেই আপনি একজন গ্রেট। বিদেশের বিভিন্ন চ্যানেল গুলোতে বহুবার আমরা আপনার স্বাক্ষাতকার দেখেছি। আজকে আমাদের টিভি চ্যানেলে স্বাক্ষাতকার নিতে পেরে আমরা আসলেই অনেক গর্বিত।
দূর্জয় ঃ আপনাদেরকে ও অনেক থ্যাংকস। আমাকে ইনভাইট করার  জন্য।
উপস্থাপক ঃ আপনি আপনার মূল্যবান সময় থেকে অনেক সময় আমাদের কে দিলেন সে জন্য ধন্যবাদ।এখন যেতে হবে ..
দূর্জয় ঃ যেতে তো হবে বাবা মা আরো অনেকেই তো আমার পথ চেয়ে বসে আছে...
উপস্থাপক ঃ ও হ্যা হ্যা অনেকেই অনেকেই। ঠিক আছে আল্লাহহাফেজ ...বাই..
বাড়িতে এসে মায়ের কাছে শোনে মীমের আজ বিয়ে । শুনে তো দূর্জয় অবাক...
দূর্জয় ঃ মা মীমের বিয়ে? কার সাথে? কেনো?
মা ঃ কেনো মানে মেয়ে বড় হয়েছে বিয়ে দিতে হবেনা।আর কার সাথে মানে যার জন্য এই কটি বছর চোখের  জলে নির্দাহীনতায় রাত কাটিয়েছে তার সাথে । যা গোসল করে আয় । আর ঘরে বিয়ের পাগরী শেড়ওয়ানি সব কিছু পরে রেডি হয়ে চল । দেরি হলে মীম কিন্তু আবার কান্না কাটি করবে।
দূর্জয় ঃ ও মাই ডিয়ার গ্রেট মাম...
মীমের আর দূর্জয়ের বাসর ঘর। তবে মীম বধূ সেজে বসে থাকলেও দুর্জয় এসছে একজন পাক্কা ক্রিকেটার সেজে।

সম্পূর্ণ কাল্পনিক এবং মনগড়া কাহীনি। কেউ নিজের সাথে মেলাবেন না।

রচনাকালঃ- ২০০৯ সালের শেষের দিকে।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৭৭১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৪/০৯/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • মাসুম মুনাওয়ার ২৫/০৯/২০১৪
    ভালো লাগল
  • একনিষ্ঠ অনুগত ২৪/০৯/২০১৪
    পারস্পারিক সংলাপ আঞ্চলিক রীতিতে বেশ ভালো হয়েছে ।

    তবে কাহিনীর বর্ণনায় অনেক স্থানে এলোমেলো হয়ে গেছে। যেমনঃ কাহিনীর শুরুতেই খেলা। দুর্জয়ের চরিত্রটি আসলো মাঠে দাঁড়ানো অবস্থায়, এরপর বলা হল এটা ছিল ফাইনাল ম্যাচ যা আগেই বলা হলে ভালো হতো। এর পর অবাক করে দিয়েই দুর্জয় কে ঘোষণা করা হল অধিনায়ক, ম্যাচ সেরা সিরিজ সেরা ইত্যাদি ইত্যাদি...

    আসলে বলতে চাচ্ছি ঠিক আছে, কিন্তু একটু ধারাবাহিকতা থাকলে পাঠকরা হোঁচটটা কম খেত।

    মোটকথাঃ গল্পের ভাব অনেক সুন্দর, গাঁথুনি ও বচন ভঙ্গী আরও উন্নত হতে হবে।
    • পুঙ্খানু রুপে চুল ছেড়া বিশ্লেশনের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে নাটকটি কে স্ক্রিপ্ট রুপে একটু অন্যভাবে লিখেছি আর গল্পের আকারে এখানে প্রকাশটা একটু কঠিন। তবু ও চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ।
  • আবিদ আল আহসান ২৪/০৯/২০১৪
    নাইস
 
Quantcast