www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

নাটোরের বনলতা সেন (নাটক)

সকাল বেলা ভার্সিটির ঊদ্দেশে বের হলেন তানবীর। তবে পড়তে নন পড়াতে। সে একটি প্রাইভেট ভার্সিটিতে চাকরি করেন। গত বছর পড়ালেখা শেষ
করে এবার ই চাকরি পেয়েছেন। তাও আবার ভার্সিটির টিচার। ইয়ং ছেলে ভার্সিটির টিচার। তার পরিবারের লোকজন সহ অন্য সবাই তাকে
অনেক ভালোবাসে এবং সম্মান ও করে। দেখতে শুনতে বেশ ইয়ং স্মার্ট ভার্সিটির স্টুডেন্টরাও তাকে খুব পছন্দ করে, ভালো জানে এবং শ্রদ্ধা করে।
বাসা থেকে বের হয়ে ভার্সিটির বাসে ঊঠতে তাকে খানিকটা পথ হাটতে হয়। সে পথটাই সে হাটতে ছিল। হাটতে তার বাড়িওয়ালার সাথে দেখা। সে সকাল
বেলা জকিং করতে বের হয়েছিল। তানবীর বাড়িওয়ালা আঙ্কেল কে দেখে
তানবীর ঃ আঙ্কেল আসসালামুয়ালাইকুম।আঙ্কেল কেমন আছেন?
বাড়িওয়ালা ঃ (তানবিরের সালামের জবাব দিয়ে) আমি ভালো আছি তা তুমি কেমন আছো?
তানবীর ঃ হ্যা আঙ্কেল আমি ভালো আছি
বাড়িওয়ালা ঃ তা তুমি এতো সকালে কোথায় যাচ্ছো?
তানবীর ঃ আঙ্কেল আমি তো গত মাসে একটা চাকরি পেয়েছি।
বাড়িওয়ালা ঃ ভালো তা কি চাকরি বাবা?
তানবীর ঃ আঙ্কেল একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে কম্পিঊটার সাবজেক্টের টিচার।
বাড়িওয়ালা ঃ বেশ ভালো চাকরি তো বাবা। ও তোমার সাথে কথা বলে খামাখা তোমার জরুরি সময় নস্ট করছি। তার চেয়ে বরং সময়
করে এক সময় বাসায় এসো তোমার সাথে কথা বলবো।
তানবীর ঃ ঠিক আছে আঙ্কেল আমি এখন তা হলে যাই পড়ে আপনার সাথে কথা হবে।
সালাম দিয়ে তানবীর চলে যায় তার ভার্সিটির ঊদ্দেশে।
তানবীরের চাকরির বয়স একমাস হলেও আজ সে প্রথম ক্লাশ নিতে যাচ্ছে। ক্লাশে গিয়ে প্রথমে হোয়াইট বোর্ডে লিখে এবং মুখে বলে নিজের পরিচয় দেয়
তানবীর এবং তার কন্টাক নাম্বার ও দিয়ে দেয় সবাইকে।তারপর এক এক করে সব স্টুডেন্ট দের পরিচয় ও নেয় সে। সকলের সাথে পরিচয় পর্ব দিয়েই প্রথম
ক্লাশ শেষ করে সে। ভার্সিটি শেষে সোজা বাসায় চলে আসে।বাসায় এসে মা আর ছোট বোনের সাথে ভার্সিটির গল্প কর্-ে
তানবীর ঃ জানো মা ভার্সিটির ছেলে মেয়ে গুলো অনেক ভালো।ওরা সবাই আমাকে স্যার স্যার বলে কথা বলে। শুনতে তো আমার ভালোই লাগে।
মা ঃ তোকে যেমন ওরা স্যার স্যার বলে তুই ও ওদের সাথে স্যারের মত থাকিস। ওদের সাথে আবার সমবয়সি ভেবে বেশি মিশতে যাসনে।
তাহলে ওরা তোকে আর ভয় পাবে না আর সম্মান ও করবেনা।
তানবীর ঃ মা কোন সমস্যা নেই আমি সেটা জানি আমাকে কি করতে হবে।
মা ঃ জানলেই ভালো।আর জানলেই হবে না। মানতেও হবে। আর শোন ভার্সিটির মেয়েরা অনেক ফাজিল হয় তোমার সাথে ফাজলামি
করার চেস্টা করবে কিন্তু তুমি সাবধান।ওদের সাথে বেশি কথা বলার দরকার নেই। আর পড়া ছাড়া অন্য কোন ব্যাপারে কোন আলাপ করবি না।
তানবীর ঃ আচ্ছা মা তুমি যা বলবে তাই হবে।
তানবিরের বোন তুলি এতক্ষন মনযোগ দিয়ে ভাইয়া আর মায়ের কথা শুনছিলো। এখন মূখ খুলে
তুলি ঃ ভাইয়া আমাকে একদিন তোমাদের ভার্সিটিতে নিয়ে যাবে?।
মা ঃ তুমি মাত্র স্কুলে পড় তুমি ভার্সিটিতে গিয়ে কি করবে?
তুলি ঃ স্কুলে পড়ি দেখেই তো ভার্সিটিতে যাবো কারন আমি কখনো কোন ভার্সিটিতে যাইনি।
তানবীর ঃ(হেসে দিয়ে)তাই নাকি ভার্সিটিতে যাবি? যা তোকে একদিন নিয়ে যাবো।যেদিন তোর স্কুল বন্ধ সেদিন আমাকে বলিস আমি তোকে নিয়ে যাবো।
তুলি ঃ তোমাকে অনেক থ্যাংকস।
তানবীর ঃ তোকে ও অনেক ওয়েলকাম।
চলতে থাকে তাদের গল্প।
রাতে মা ঘরের কাজ করেন তানবীর ভার্সিটিতে পড়ানোর জন্য নিজে অধ্যায়ন করেন আর তুলি তার স্কুলের পড়া শেষ করে। তুলি সকাল বেলা স্কুলে
যায়। তানবীর তাকে স্কুলে দিয়ে ৯টার দিকে চলে যায় ভার্সিটির ঊদ্দেশ্যে।মা থাকেন বাড়িতে। ভার্সিটিতে গিয়ে তানবীর ভালোই পড়াচ্ছিলেন কিন্তু
সবটা যেন তার ভালো হচ্ছিল না ভার্সিটির মেয়ে গুলোর জন্য ইয়ং আর হ্যান্ডসাম  টিচার কে পেয়ে সবাই যেন পড়ালেখার চেয়ে আড্ডাটাই বেশি দিতে চায়।
অপ্রাসঙ্গিক গল্পই করতে চায় বেশি।কিন্তু তানবীর  অতো বোকা নন সে সবি বুঝতে পারেন। তাই কেঊ অপ্রাসঙ্গিক গল্প করতে চাইলে সে বলে যায় হ্যা
আমরা এই প্রসঙ্গে পড়ে আসছি। আগে পড়াটা শেষ হোক। এভাবেই এড়িয়ে যায় প্রতি দিন। সে তার সব ছাত্র ছাত্রী কে তার ফোন নাম্বার দিয়েও যেন
করেছে এক মহা ভূল। মাঝে মধ্যেই মেয়েদের ফোন পাওয়া যায় কিন্তু কোন মেয়েই তাকে কোন পরিচয় দেয় না। আর যখনই কেঊ পরিচয় দিতে চায়না
তখনই রেগে যায় তানবীর রাগ করে বলে পরিচয় না দিলে আমি কথা বলবনা। তখনই আবার ফোন রেখে দেয়। তবে ফোনে রাগ করলেও এমনিতে খুব
মিশুক প্রকৃতির টিচার সে। তার মুখে বেশিরভাগ সময় হাসি লেগে থাকে। সে নিয়মিত ভার্সিটির ক্লাশ নিতে থাকে। ক্লাশ নিতে নিতে একদিন হঠাৎ তার
চোখে পড়ে সব মেয়েরা তার সাথে দুষ্টুমি করলেও একটি মেয়ে অতি প্রয়োজন ছাড়া কোন কথাই বলেনা। তানবীর একাই মেয়েটির প্রশংসা করে।
তানবীরঃ বেশ ভদ্র নম্র কোন ফাজলামিতে নেই।
ঐ মেয়ের নাম লতা। লতার ভদ্রতা তানবীর স্যারকে আর্কষন করলো, তবে একজন ভাল ছাত্ররীর প্রতি একজন স্যারের যেমনটা হওয়া প্রয়োজন সেটুকুই।
ক্লাশে এসে তানবীর মাঝে মধ্যে তাকে জিজ্ঞেস করে তোমার পড়া ঠিকমত হয়েছে কিনা, পড়ালেখা ঠিকমত চলছে কিনা ইত্যাদি। কয়েকদিন পর তানবীর
লক্ষ করলো লতা তার সাথে শুধু ফাজলামি করাই না তার সাথে কেউ ফাজলামি করলে লতা তাও সহ্য করতে পারেনা। এ কান্ড দেখে তানবীরের আরো
ভালো লাগলো। এভাবে চলতে থাকে কয়েকদিন। র্ভাসিটির ঐ মেয়েটির কথা খেতে বসে তানবীর তার মায়ের সাথে শেয়ার করে
তানবীর ঃ জানো মা বেশির ভাগ মেয়েই আমার সাথে দুষ্টুমি করে গল্প করতে চায় আর একটা মেয়েকে দেখলাম যে আমার সাথে এবং কলেজের
কারো সাথেই কোন ফালতু অর্থ্যাৎ পড়ালেখা ছাড়া কোন কথা বলে না। আর মা আমি অবাক হলাম সেতো কখনো আমার সাথে ফাজলামি করেই না
আবার কেউ যদি ফাজলামি করে সে একদম সহ্যই করতে পারেনা। মাঝে মধ্যে যারা দুষ্টুমি করে তাদেরকে একেকটা কথা বলে একদম জব্দ করে দেয়। খুব
বুদ্ধিমতি।
মা এতক্ষণ ছেলের কথা শুনছিলেন আর হাসছিলেন। ছেলের কথা শুনে এবার বললেন
মা ঃ কিরে তোর পছন্দ হয়েছে নাকিরে ?
তানবীর ঃ (লজ্জা পেয়ে) মা। আমার ওকে পছন্দ হতে যাবে কেন? জাস্ট মেয়েটা ভাল সবার চেয়ে আলাদা সেটাই বললাম। আর তুমি কি  বলো?
মা ঃ কই আমিও তো অন্য কিছু বলিনি। আমি তো সেটাই বললাম আমার ছেলের বঊ হবে বুদ্ধিমতি এবং সবার  চেয়ে আলাদা।
তানবীর ঃ যাও মা আমি তোমাকে আর কোন মেয়ের কথা বলবো না। বললেই তুমি কি ভাবো।
মা ঃ হ্যা তাইতো অন্য মেয়ের কথা বলবি কেন? শুধু ঐ মেয়ের কথা বললেই হবে।
তানবীর এবার বুঝতে পারলো মা তাকে খেপাচ্ছে। তাই সে কথা না বাড়িয়ে বলে
তানবীর ঃ মা তুমি যা ইচ্ছা তাই বল আমার খাওয়া শেষ আমি গেলাম।
সোজা চলে যায় নিজের ঘরে। নিজের ঘরে গিয়ে কতক্ষন বিশ্রাম নিয়ে একটি ইন্টারভিঊ দেওয়ার প্রস্তুতি স্বরুপ একটা বই পড়ছে। কারন ভার্সিটি থেকে
সে ছুটি নিয়ে এসেছে কালকে অন্য একটি চাকরির জন্য ইন্টারভিঊ দিতে যাবে। পড়তে পড়তে এক পর্যায় সে ঘুমিয়ে পড়ে। প্রত্যেক দিনের মত আজো
সকালে ঘুম থেকে ঊঠে তানবীর ফ্রেশ হয়ে সেই বইটি পড়ে। এমন সময় মা নাস্তার টেবিলে তানবীর কে ডাকলেন। নাস্তা করার জন্য নাস্তার টেবিলে চলে
আসে সে। মাকে বলে  
তানবীর ঃ মা তোমাকে বলেছিলাম না একটা সফটওয়ার কোম্পানিতে ছিভি ড্রপ করেছি তারা আমাকে ডেকেছে ইন্টারভিঊর জন্য। তাই সেখানে যাচ্ছি।
মা ঃ সেকিরে তাহলে ভার্সিটিতে যাবি কখন?
তানবীর ঃ মা সেই জন্য কালকেই আমি ছুটি নিয়ে এসেছি।
নাস্তা শেষে মা কে ছালাম করে বের হয়ে যায় তানবীর। এদিকে ভার্সিটিতে তানবীর এর ছাত্রছাত্রীরা তাদের স্যার কে খুজে পায়না। স্যার কে খুজে না
পেয়ে কেঊ যায লাইব্রেরি তে আবার কেঊ কেঊ যায় স্যারের রুমে কেঊ বা আবার স্যার কে ফোন দেয় কিন্তু কারো ফোনই ধরতে পারে না সে
কারন তখন তার ইন্টারভিঊ চলছিল। অবশেষে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে তারা জানতে পারে যে তাদের তানবীর স্যার আজ কে আসবে না।
ইন্টারভিঊ দিয়ে তানবীর সোজা বাড়িতে চলে আসে।বাড়িতে আসতেই
মা ঃ কিরে বাবা তোর পরীক্ষা কেমন হল? ভালো হয়েছেতো?
তানবীর ঃ হ্যা মা।অনেক ভালে হয়েছে রিটেন ভাইবা দুইটাই অনেক ভালো হয়েছে চাকরি হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ ।
মা ঃ আবার কবে যেতে হবে সেটা কিছু বলেছে?
তানবীর ঃ হ্যা আগামি সপ্তাহে আবার যেতে হবে।
মা ঃ এই সপ্তাহে ছুটি নিলি আবার আগামি সপ্তাহে ছুটি নিবি তাহলে ভার্সিটিতে সমস্যা হবে না?
তানবীর ঃ না মা সমস্যা হবেনা ভার্সিটি থেকে ছুটি না দিলেও কোন সমস্য নেই আমি আমার স্টুডেন্টদের কাছ থেকে ছুটি
নিয়ে নিবো। আর সমস্যা হলেই কি চাকরি হয়ে গেলে ভার্সিটি দিয়ে আর কি করবো। যা হোক আমাকে নিয়ে তুমি এতো ভেবে না তো
মা। আমি তো এখনো আর অনেক ছোট নেই। আর কথা নয় আমার খুব ক্ষিদে পেয়েছে আমাক খেতে দাও।
মা ঃ যা হাত মুখ ধুয়ে আয় আজ তোর জন্য তোর সবচেয়ে প্রিয় কই মাছ পাকিয়েছে।
তানবীর ঃ তাই নাকি মা আমি তাড়াতাড়ি হাত মুখ ধুয়ে আসছি।
অন্যান্য দিনের মত তানবীর আজো সকাল বেলা ভাসিটিতে চলে যায়। ভার্সিটিতে ক্লাশে যেতেই তার সব ছাত্র ছাত্রীদের প্রশ্ন আর প্রশ্ন স্যার কাল কে
আসেন নি কেন? কোথায় গেছিলেন? এই সেই বিভিন্ন প্রশ্ন। এবার তানবীর সবাই কে বললো
তানবীর ঃ তোমরা সবাই আমার জন্য দোয়া কর। আমি একটা  চাকরির জন্য এপ্লাই করে ছিলাম সেখান থেকে তারা আমাকে ডেকেছে
ইন্টারভিঊর জন্য আর কালকে আমি সেখানেই গিয়েছিলাম। সবার কথার পরে লতা জিজ্ঞেস করলো
লতা ঃ স্যার আপনার ইন্টারভিঊ কেমন হয়েছে?
তানবীর ঃ হ্যা ভালো হয়েছে খুবই ভালা।
লতা ঃ খুবই ভালো ?তার মানে আপনি আমাদের কে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।
তানবীর ঃ (হাসি দিয়ে) আমি তোমাদের কে ছেড়ে কোথাও যাবো না। এর কারন হলো তোমাদের আমি প্রচন্ড ভালোবাসি আর তোমাদের
কে প্রচন্ড ভালোবাসার কারন হলো তোমরা আমার জীবনের প্রথম স্টুডেন্ট আর তোমরা তো শুধু আমার স্টুডেন্টই নও আমার বন্ধু ও বটে। সো তোমাদের
কে ভূলতে হলে আমার নিজেকেই ভুলে যেতে হবে। কথাটা বলতেই তানবীর এর হাসি মুখটা মলিন হয়ে যায়।অন্যান্য ছাত্রছাত্রী রাও মলিন হয়ে যায় আর
লতার চোখ দিয়ে তো পানিই বেরিয়ে যায়। সবার এই অবস্থা দেখে তানবীর হেসে দেয় দিয়ে বলে
তানবীর ঃ আমি মনে হয় একটু বেশি সিরিয়াস হয়ে গেছি ইট ডাসেন্ট মেটার, টেক ইট ইজি। চাকরি যখন হবে তখন না হয় দেখা যাবে।
এবার আমরা আমাদের পড়ায় চলে আসি। ক্লাশ নিয়ে চলে আসে সে। কয়েকদিন পর তার এপয়েন্টমেন্ট লেটার চলে আসে।তার চাকরি হয়ে যায়। সে
ভার্সিটির চাকরি ছেড়ে চলে আসে তবে কোন স্টুডেন্টদের কাছে বিদায় নেয় না। প্রিন্সিপালের কাছে বিদায় নেয়ার জন্য সে যায়। প্রিন্সিপাল স্যার
তানবীরের বিদায় ঊপলক্ষে একটা বিদায় অনুষ্ঠান করতে চায় একথা শুনে তানবীর স্যারকে নো থ্যাংকস জানায় কারন জানতে চাইলে বলে
তানবীর ঃ আসলে আমার বিদায় আমার স্টুডেন্টরা সহজ ভাবে নিতে পারবে না। অনেকেই অনেক কষ্ট পাবে।আর আমি চাই না আমার জন্য
কেঊ কোন কষ্ট পাক। আর যখন আমি চলে যাবো তখন ওরা ওদের কে নিজেরাই মানিয়ে নিতে পারবে। তানবীরের কথায় প্রিন্সিপাল মুগ্ধ হয়ে যায়।
প্রিন্সিপাল ঃ তানবীর সাহেব সত্যিই আপনি একজন মহৎ এবং আদর্শ টিচার।
প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলে মনটা অনেক খারাপ করে সেখান থেকে চলে আসে সে।
তানবীর নতুন কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছে। ভালোই চাকরি করছে সকাল ৯-৫টা অফিস। বাসায় এসে সন্ধ্যায় নেট ব্রাঊজ করে মাঝে মধ্যে বিকালে
ঘুরতে বের হয় ভার্সিটি থেকে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর মাঝে মধ্যে তাকে অনেক মেয়েরা ফোন দেয় তবে কেঊ তাকে পরিচয় দেয় না পরিচয় না দিলে
তানবীর রেগে যায় আর রেগে গিয়ে ফোন রেখে দেয়। মাঝে মধ্যে খুব বিরক্ত হয় তানবীর। এভাবেই চলতে থাকে। ভার্সিটি থেকে চাকরি ছেড়ে
দেওয়ার ঠিক একমাস পর মাঝ রাতে তানবীর ঘুমাচ্ছিল তখন তার মোবাইলে একটি আননোঊন নাম্বার থেকে একটা মিস কল আসে। মোবাইলের
আওয়াজে তার গুম ভেঙ্গে যায়। মোবাইল ধরে দেখে আননোঊন নাম্বার সে বিরক্ত হয়ে ফোনটা রেখে দেয় তার কয়েক মিনিট পরে তার ফোনে সেই নাম্বার
থেকে একটা মেসেজ আসে। তানবীর মেসেজটি পরে
তানবীর ঃ আর ইউ ফরগেট মি? আই উইল নেভার ফরগেট ইউ.
মেসেজটি পরে তানবীরের মনে প্রচন্ড কৌতুহল জাগে
তানবীর ঃ কে এতো রাতে তাকে মেসেজ দিলো।
তাই সাথে সাথে সে ফোন ব্যাক করে কিন্তু নাম্বার টা বন্ধ পায়। সে আরো অনেক বার ট্রাই করে কিন্তু কোন লাভ হয় না। কৌতুহল থেকেই যায়। দিনে
আরো কয়েকবার ট্রাই করে। তাতে ও কোন লাভ হয় না। পরের দিন রাতে যখন আবার সে সেই নাম্বারে ফোন দিবে ঠিক সেই সময় ঐ নাম্বার
থেকে তানবীরের মোবাইলে ফোন আসে।তানবীর তো মহা খুশি সে সাথে সাথেই ফোন টা রিসিভ করে। ফোন রিসিভ করে কিছু না বলতেই সেখান থেকে
মেয়ে মানুষের কন্ঠ শুনতে পাওয়া যায়্।
মেয়ে ঃ আপনি ভালো আছেন?
তানবীর ঃ হ্যা আমি ভালো কিন্তু আপনি কে?
মেয়েটি ঃ আসলে আপনি আমাকে চিনবেন না তাই আমার নামটা বললাম না
তানবীর ঃ আমি আপনাকে চিনবো না আপনি আমাকে চিনেন?
মেয়েটি ঃ হ্যা আমি আপনাকে চিনি শুধু তাই না আপনি আমার একজন প্রিয় মানুষ ও বট্।ে
তানবীর ঃ তাই নাকি ? তা হলে তো খুব ই ভালো। তা আপনি কোথা থেকে ফোন করেছেন আমাকে তা একটু বলবেন? বলতেই
মেয়েটি ঃ (তাড়াহুরা করে) বলবো আপনাকে সবই বলবো তবে এখন না পরে।
বলেই লাইনটা কেটে দেয়। তানবীর কি করবে বোকাসোকার মত সেও মোবাইলটা রেখে ঘুমিয়ে পরে।
পরের দিন আবার অফিস চলে যায় সে। অফিস চলাকালিন সময় সেই নাম্বার থেকে আবার ফোন আসে। কিন্তু সেখানে ফোন রিসিভ করা সম্ভব হয়না তার।
পরে লাঞ্চের সময় তানবীর সেই নাম্বারে ফোন দেয়। কিন্তু সে সেই নাম্বার বন্ধ পায়।এবার তানবীর ঠিকই বুঝতে পারে যে তার সাথে কেঊ ফাজলাম
করতেছে। তাই সে আর ফোন দেয় না। সে সোজা বাসায় চলে আসে।
রাতে বসে বসে নেট ব্রাঊজ করে এমন সময় তার মোবাইলে ঐ নাম্বার থেকে ফোন আসে। তানবীর একটু বিরক্ত হয়ে ফোন রিসিভ করে
তানবীর ঃ হ্যালা কে আপনি? কেনই বা আমাকে ফোন দিচ্ছেন?
মেয়েটি ঃ আপনি রেগে যাচ্ছেন কেন? প্লিজ রাগ করবেন না। আমি আপনাকে যেহেতু ফোন দিয়েছি সেহেতু অবশ্যই আপনাকে আমার পরিচয়
দিবো। তবে হ্যা আপনাকে আমার সাথে কথা দিতে হবে আপনি আমার পরিচয় শুনে আমাকে রাগ করতে পারবেন না।
তানবীর ঃ হ্যা আমি কথা দিচ্ছি আমি আপনার সাথে রাগ করবো না।তবে যা বলবেন অবশ্যই তা সত্য বলবেন তাহলে আমি খুব খুিশ হবো।
আর আপনি তো আমাকে চিনেন তা হলে নিশ্চই জানেন যে আমার মিথ্যা বলা বা শোনার অভ্যাস নেই।
মেয়েটি ঃ হ্যা আমি সেটা জানি।
মেয়েটি যখন বললো আমি জানি তখন কথার আওয়াজ টা খুব পরিচিত মনে হল।
তানবীর ঃ আসলে আপনি কে? বলুন তো। আপনাকে আমার খুব পরিচিত মনে হচ্ছে।
মেয়েটি ঃ হ্যা আমি অনেক পরিচিত একজন মানুষই। যাই হোক এতদিন তো আমি তো আপনাকে আমার বন্ধ সিম দিয়ে ফোন দিয়েছি আজ
আমি আপনাকে আমার সবসময় চালু নাম্বার দিযে ফোন দিচ্ছি ।
তানবীর ঃ একটু খুশি হয়ে বললো ঠিক আছে।
বলতেই মেয়েটি ফোনটি কেটে দেয় পরে সাথে সাথেই সে তার নাম্বার থেকে ফোন দেয়।
তানবীর ঃ (ফোন রিসিভ করে) আসলে বুঝতে পারলামনা আপনি কে। প্লিজ আপনার পরিচয়টা দিন।
মেয়েটি ঃ শুনুন আপনি বলেছেন আমাকে আপনার পরিচিত চেনা মনে হচ্ছে। এখন আমাকে নিয়ে একটু ভাবেন।আর ভেবে যদি পান তাহলে
এই নাম্বারে ফোন দিয়ে আমাকে জানাবেন।
বলেই ফোন রেখে দেয়। তানবীরও ফোন রেখে দেয়। ফোন রেখে সে ভাবতে থাকে। বারবার ফোনের ভয়েসটা কল্পনা করতে থাকে। এতে করে সে
মোটামুটি কনর্ফাম হয় যে এটা তার কোন স্টুডেন্ট। ভাবতেই মোটামুটি খুশি হয়ে গেল তানবীর। সে চিনতে পারলেও ফোন দেয়না মেয়েটিকে।
রাতের খওয়া শেষে সে ঘুমাতে যাবে এমন সময় সেই নাম্বার থেকে ফোন আসে। ফোন রিসিভ করে
তানবীর ঃ হ্যা আমি আপনাকে নিয়ে ভবছি। আর কিছুটা হলেও বুঝতে পারছি।
মেয়েটি ঃ কি বুঝলেন কে আমি?
তানবীর ঃ আপনি কে সেটা বলতে না পারলেও এটুকু বলতে পারিযে আপনি আমার র্ভাসিটির স্টুডেন্ট।এম আই কারেক্ট?
মেয়েটি ঃ জানিনা আমি কোথাকার। যা হোক আপনাকে আর কনফিউশনে রাখবনা। বলেই দিচ্ছি আমি কে। আমি হলাম নাটোরের বনলতা সেন।
তানবীর ঃ কে?
মেয়েটি ঃ আমি নাটোরের বনলতা সেন,কি আবার বলবো?
তানবীর ঃ লাগবেনা আমি বুঝতে পারছি তুমি লতা অবশ্যই লতা।
লতা ঃ হ্যা আমি লতা। সরি স্যার আপানার সাথে এমন করার জন্য।
তানবীর ঃ ইট্স ওকে,তা কি অবস্থা কেমন আছ?
লতা ঃ হ্যা স্যার আমি ভাল আছি,স্যার আপনি কেমন আছেন?
তানবীর ঃ ভালো। বলতেই
লতা ঃ স্যার আপনাকে একটা রিকুয়েস্ট করবো রাখবেন?
তানবীর ঃ কি বলো?
লতা ঃ স্যার আমি আপনার বন্ধু হতে চাই। আপনি আমাকে বন্ধু হিসেবে নিবেন তো?
তানবীর ঃ আরে তোমরা তো আমার বন্ধু আছই।
লতা ঃ না স্যার তোমরা না স্যার শুধু আমি আপনার খুব কাছের একজন র্পাসোনাল বন্ধু হতে চাই।
তানবীর ঃ র্পাসোনাল বন্ধু। হ্যা ঠিক আছে কিন্তু।
লতা ঃ স্যার কোন কিন্তু নয় প্লিজ।
তানবীর ঃ ঠিক আছে আমি তোমাকে আমার বন্ধু হিসেবে নিলাম।
লতা ঃ থ্যাকংস স্যার। স্যার আসুন না আমরা একদিন দেখা করি। অনেকদিন আপনাকে দেখিনা।
তানবীর ঃ ঠিক আছে দেখা করা যাক। তা কোথায় দেখা করবে?
লতা ঃ স্যার আপনি যখন যেখানে বলবেন আমি সেখানে চলে আসবো।
তানবীর ঃ ঠিক আছে।
পরের দিন তারা পার্কে এসে দেখা করলো। লতা আগেই চলে আসে তানবীরের আসতে একটু দেরি হয় তানবীর কে আসতে দেখেই লতা তো লজ্জায়
শেষ । লতা তানবীর কে কি সম্মোধন করবে তাই নিয়ে সে কনফিঊসনে পরে যায় ব্যাপারটা তানবীর বুঝতে পারে। সে লতা কে বলে
তানবীর ঃ আমি বুঝতে পারছি তোমার খুব লজ্জা হচ্ছে। শোন লজ্জা পাওয়ার কিছুই নেই কারন এখন আর আমি তোমার টিচার নেই এখন
আমি শুধু তোমার বন্ধু আর বন্ধুর সামনে তো কোন লজ্জা থাকতে নেই। সো নো স্যার তুমি আমাকে তুমি এবং তানবীর বলে ডাকবে।
লতা আরো লজ্জা পায়। লজ্জা পেলে কি হবে তানবীরের কথা মতো তাকে তুমি করে বলতেই হবে। তাদের মধ্যে কথোপকোথন হয় কুশল বিনিময় হয়
তারা অনেকক্ষন জমিয়ে আড্ডা দিয়ে চলে যায়। বাসায় এসে তানবীর নেট ব্রাঊজ করে।
লতা তার ভাই আর ভাবির সাথে থাকে। লতা বাসায় গিয়ে পরার টেবিলে বই নিয়ে বসে কিন্তু পড়া তো আর হয় না সে আছে এক মহা বিপদে কাকে নিয়ে
ভাববে সে কারন তানবীরের আগেই তার আর এক ছেলের সাথে রিলেশন ছিলো। পড়তে বসলে তার প্রাক্তন বয় ফ্রেন্ড তাকে ফোন দেয়। লতার বয়
ফ্রেন্ডের নাম লিংকন। সে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি না করে রাজনীতি করে। আর ভব ঘুরের মত ঘুরে বেড়ায়। যা লতার একদম পছন্দ না আর তাই
সম্পর্ক বাদ দিয়ে দেওয়ার কথা লিংকন কে জানিয়ে দিয়েছে। টেবিলে বসে লতা যখন এসব কথা ভাবতে ছিলো ঠিক তখনই লিংকন লতাকে ফোন দেয়।
ফোন দিলে  
লতা ঃ তুমি আমাকে ফোন দিয়েছো কেনো? আমি তোমাকে না বলছি আমাকে আর ফোন দিবে না?
লিংকন ঃ দেখো তুমি আমাকে কি বলছো আর আমি তোমাকে কি বলছি সেগুলো বাদ দাও প্লিজ রাগ করো না আসো আমরা দেখা করি?
লতা ঃ না তুমি যা বলছো তা বাদ দেও বা যা খুশি করো কিন্তু আমি তো বলেছি তুমি যেদিন আমার কন্ডিশন গুলো মানতে পারবে সেদিন
ঠিকই আমি তোমাকে ভালোবাসবো।কিন্তু কই নাতো তুমি তো আমার একটা কথাও রাখো নাই। আমি তোমাকে বলছি তুমি নেশা করবে না তুমি
রাজনীতি করতে পারবে না। তোমাকে চাকরি করতে হবে। তোমাকে দেওয়া তিনটা শর্তের একটাও তুমি রাখতে পারো নাই তুমি ভাবলে কিভাবে যে আমি
তোমার সাথে দেখা করবো। যাই আমি আজকেও তোমাকে ভালোভাবে বলছি তুমি নেক্সটে কখনো আর আমাকে ফোন দেওয়ার কথা কোনো চিন্তাও করো না
তাহলে খুব খারাপ হবে।আর একটা কথা বলে রাখি আমি একজন কে ভালোবাসি।
লিংকন ঃ কে সে?
লতা ঃ আর যেই হোক নিশ্চই তুমি না।
ঊল্টা পাল্টা কথা বলে লতা লিংকনের ফোন কেটে দেয়।
এদিকে লিংকনের সাথে লতার ভাবীর খুব ভালো সস্পর্ক লিংকন ইদানিং লতা কে ম্যানেজ করার চেয়ে লতার ভাবীকেই বেশি ম্যানেজ করে কারন সে জানে
কান টানলে মাথা আসে। আর সে আরো জানে লতা তার ভাই ভাবীর কথা ছাড়া কিছুই করতে পারে না।
এদিকে তানবীর অল্প টাকায় বিদেশ যাওয়ার প্যাকেজ পায় সে বিদেশ চলে যাবে বলে তার মাকে জানায়।
মা ঃ কেনরে এখন যে বেতনপাচ্ছিস তাতে খারাপ কি? আবার বিদেশ যাওয়ার কি দরকার?
তানবীর ঃ মা বিদেসের টাকা বিদেশিই। বাংলা দেশী টাকা দিয়ে কি হবে?
মা ঃ বাবা বিদেশ যাও আর যাই কর আগে আমার ঘরে বঊ আনো তারপর কথা।
মায়ের কথা শুনে তানবীর চুপ হয়ে যায় সে কিছুই বলে না।
ঐদিকে লতা আর লিংকনের ঝগড়া আরো তীব্র হয়ে ওঠে। লিংকন লতা কে ফোন দেয়। লতা ফোন রিসিভ করে বলে  
লতা ঃ আমি বলেছিনা আমাদের মাঝে আর কোনো সম্পকর্ নেই। আমি তোমার সাথে আমার সব সম্পর্কের বিসর্জন দিয়ে দিছি। লতা লিংকনের
ফোন কেটে তানবীর কে ফোন দেয়।
লতার মাথা পুরো একশো তে একশো ফোন দিয়েই
লতা ঃ তানবীর আমি সরি আমি তোমাকে আর আমার ফ্রেইন্ড হিসেবে রাখতে পারলাম না।
তানবীর ঃ কেন আমি আবার কি দোষ করলাম?
লতা ঃ তুমি কিছুই কর নাই তবুও আমি তোমাকে আমার ফ্রেইন্ড হিসেবে রাখতে পারবো না।
তানবীর ঃ কেন? কমছে কম কারনটা তো বলবা?
লতা ঃ কারন হলো আমি তোমাকে ভালো বাসি।
তানবীর ঃ কি?
লতা ঃ আমি তোমাকে ভালবাসি আমি তোমাকে ভালোবাসি আমি তোমাকে ভালো বাসি। কি আর বলতে হবে?
তানবীর ঃ না আর বলতে হবে না। কিন্তু...
লতা ঃ কোন কিন্তু নাই আর হ্যা শুধু আমি ই তোমাকে ভালোবাসি না বল তুমি ও আমাকে ভালোবাসো। কি বলো বাসো?
তানবীর ঃ আহা পাগলামি করতেছো কেন?কি হয়েছে সেটা আমাকে খুলে বল।
লতা ঃ আমি পাগলামি করি আর যাই করি তুমি আমাকে বলো তুমি আমাকে ভালাবাসো কিনা? হ্যা অথবা না একটা বল।
তানবীর ঃ হ্যা ঠিক আছে বলতেই ফোনটা কেটে দেয় লতা।
লতার মাথা গরম এখনো কমেনি তাই মাথা গরম কমানোর জন্য সে বাথরুমে গিয়ে ঝরনা ছেড়ে  বসে থাকে।
এদিকে রাতে খাবার টেবিলে মা তানবীর কে বিয়ের জন্য খুব জোর করে ধরে ছোট বোন তুলি ও ভাইয়া কে ভাবী নিয়ে আনার জন্য রিকোয়েস্ট করে।
তানবীর ও বিষয় টা নিয়ে ভেবে দেখেছে। তাই  
তানবীর ঃ ঠিক আছে আমার জন্য মেয়ে দেখ।
মা ঃ আমি তোর জন্য কি মেয়ে দেখব? তুই পছন্দ কর পছন্দ করে আমাকে বল আমি গিয়ে দেখে নিয়ে আসবো।
তানবীর ঃ মা তারপর ও তোমার একটা পছন্দ অপছন্দ আছে না?
মা ঃ হ্যা তাতো অবশ্যই। আমার ছেলের বউ অবশ্যই অনেক বুদ্ধি মতি সুন্দর ফুটফুটে এক কথায় বিধাতার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মেয়েটা হবে আমার
ছেলের বউ। শোন তুই এমন মেয়ে কে পছন্দ কর আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো তাকে যে কোনো মূল্যে তোকে এন দেওয়ার জন্যে।
তানবীর ঃ মা আমি যদি তোমার পছন্দ ঠিকই একটি মেয়েকে পছন্দ করলাম কিন্তু সে যদি অনেক গরীবের মেয়ে হয়?
মা ঃ তাতে কোনো সমস্যা নেই।
তানবীর ঃ আর মেয়েটি যদি অনেক বড়লোকের মেয়ে হয় যাকে আমার কাছে বিয়ে দিবে না তাহলে?
মা ঃ সে নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না প্রয়োজনে আমি আমার একমাত্র ছেলের জন্য সেই মেয়েকে তার বাবা মায়ের কাছে ভিক্ষা চেয়ে
তোকে এনে দেবো। এক কথায় যে কোন মূল্যে তাকে এনে দিবে।
মায়ের কথা শেষে তানবীর খাওয়া শেষ করে চলে যায় তার নিজের ঘরের দিকে। নিজের ঘরে এসে তানবীর লতা কে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে
তানবীর ঃ লতা সত্যি কি তুমি আমাকে ভালোবাসো?
লতা ঃ হ্যা সত্যি এবং অবশ্যই একশো পারসেন্ট সত্যি।
তানবীর ঃ আমি কিন্তু সিরিয়াস।
লতা ঃ আমি ও সিরিয়াস।
তানবীর ঃ তা হলে আমাকে বিয়ে করার জন্য মানসিক শারিরিক যত প্রকার প্রিপারেশন নেওয়ার দরকার তাই নেও। আমি শীঘ্রই তোমাকে বিয়ে করবো।
লতা ঃ তানবীর হ্যা অবশ্যই আমরা বিয়ে করবো কিন্তু তার আগে তোমাকে আমার কিছু ব্যক্তিগত অতীতের কথা বলতে চাই
তানবীর ঃ ও সিঊর।
লতা ঃ তোমার সাথে রিলেশনের আগে আমার আর একটি  ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিলো তার নাম লিংকন  সে...........।
লতা তানবীরের কাছে লিংকনের ব্যাপারে সব খুলে বলে। তানবীর লতার কাছে সব কিছু শুনে বড় একটি নিঃশ্বাষ ছেড়ে বলে
তানবীর ঃ লতা পাস্ট ইজ পাস্ট। এখন তুমি ডিছিশন নাও তুমি কি করবে? তুমি কার সাথে যাবে তুমি কাকে তোমার জীবন সাথি করে নেবে?
আর যদি আমাকে তোমার জীবন সাথি করে নিতে হয় তা হলে তোমার অতীত তোমার বয় ফ্রেন্ড সব কিছু তোমাকে ভূলে যেতে হবে। এখন তোমার ভুবন
জুরে থাকবো শুধু আমি।কি তুমি রাজি?
লতা ঃ হ্যা আমি রাজি।
লতার কথা গুলো তার ভাবী আড়ালে দাড়িয়ে সব শুনে ফেলে। সে বুঝতে পারে লতা লিংকন কে ছেড়ে অন্য কাঊকে বিয়ে করতে যাচ্ছে।
ভাবী ব্যাপারটা লিংকন কে জানানোর জন্যে লিংকন কে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে
ভাবী ঃ লিংকন কি খবর কি অবস্থা?
লিংকন ঃ হ্যা ভাবী ভালো আপনি কেমন আছেন কি খবর আপনার?
ভাবী ঃ আশ্চর্য তুমি ভালো বলতেছো কেমনে? আমার মনে হয ভালো না।
লিংকন ঃ (হেসে) কেনো ভাবী কি হয়েছে?
ভাবী ঃ লতার খবর কি?
লিংকন ঃ ভাবী আসলে কয়েকদিন যাবৎ ওর আমার সম্পর্কটা বেশ ভালো যাচ্ছে না। ও ঠিকমত আমার সাথে কথা বলছে না আমি ফোন
দিলে কেটে দেয় কখনো বা রিসিভ করে উল্টা পাল্টা বলে।
ভাবী ঃ তুমি আসলে কি বলোতো এতো কিছু ঘটে যাচ্ছে, গেলো অথচ তুমি আমাকে কিছু জানাও নি?
লিংকন ঃ কি বলবো ভাবী ভেবে ছিলাম আমি নিজেই ওকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ব্যাপারটা মানিয়ে নিবো। কিন্তু
ভাবী ঃ কিন্তু কিছু হচ্ছে না এইতো নিজেকে খুব পন্ডিত মনে হয় তাই না।
লিংকন ঃ ভাবী এখন কি করবো কিছু একটা বলেন?
ভাবী ঃ লতা ইদানিং যে একটি ছেলের সাথে কথা বলে তাকি তুমি জানো?
লিংকন ঃ না?
ভাবী ঃ শুধু কথাই বলে না আমি শুনলাম তারা নাকি বিয়ে করবে এমন কিছু প্লান করতেছে।
লিংকন ঃ কি বলেন ভাবী? কার সাথে কথা বলে কার সাথে ওর সম্পর্ক আপনি কি তাকে চিনেন?
ভাবী ঃ না আমি আজকেই কথা বলতে শুনেছি। দেখি আমি কি করতে পারি।
লিংকন ঃ ভাবী আপানি যা পারেন করেন। লতা যাকে বিয়ে করতে চায় তার ফোন নাম্বার অথবা ঠিকানা থাকলে ঠিকানা যোগার করে আমাকে দেন।
লতার বাসায় লতা তার মোবাইল রেখে বাথরুমে যায়। আর ভাবী চুরি করে লতার মোবাইল থেকে তানবীর  এর নাস্বার নিয়ে তার মোবইিলে সেভ করে         নেয়। এবং সাথেই সাথেই ফোন করে নাম্বার টি লিংকন কে দিয়ে দেয়।
এদিকে তানবীর তার মায়ের কাছে তার পছন্দের মেয়ে কে নিয়ে আসার কথা বলে।
তানবীর ঃ মা তুমি আমাকে তোমার বউ পছন্দ করতে বলছিলেনা।
মা ঃ হ্যা কি খবর আমার বউয়ের?
তানবীর ঃ খবর অনেক ভালো আমি ভাবছি তোমার বউকে একদিন বাসায় নিয়ে আসবো তোমাকে দেখানোর জন্যে। তুমি যদি অনুমতি দাও।
মা ঃ ওকে। যত তাড়াতাড়ি নিয়ে আসিস।
চলতে থাকে তাদের কথা।
তানবীর একদিন লতাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে তার মাকে দেখাতে। বাড়িতে এনে মায়ের সাথে পরিচয় করে দেয়। তবে তার প্রেমিকা হিসেবে
নয় শুধু বন্ধু হিসেবে। মায়ের সাথে লতা পুরো দিন থেকে সন্ধ্যার দিকে চলে যায়। তানবীরের কাছে মা লতার খুব প্রশংসা করে। তানবীর অনেক খুশি হয়।
এদিকে লিংকন তানবীর কে ফোন দেয়।  ফোন দিয়েই লিংকন তানবীর এর সাথে খারাপ ব্যাবহার করে তানবীর রেগে যায়।
তানবীর ঃ আপনার পরিচয় দিন আর ভদ্র ভাবে কথা বলুন। কারন আমি নিজেও কোন অভদ্র লোক না আর আমি কোন অভদ্র লোকের সাথে কথা ও বলি না।
বলে তানবীর ফোনটা কেটে দেয়। তানবীর  খুব বিরক্ত হয়।
পরের দিন লিংকন আবার তানবীর  কে ফোন দেয়। এবার লিংকন তানবীর এর সাথে ভালা ভাবে কথা বলে। ভালো ভাবে অনেকক্ষন কথা বলার পর
লিংকন তানবীর এর সাথে দেখা করতে চায়। তানবীর ও রাজি হয়। পরের দিন তারা দেখা করে। তানবীর এর সাথে দেখা হলে লিংকন তানবীর এর
সাথে খুব ভালো ব্যাবহার করে। সে তানবীরের কাছে তার ভালা বাসা ভিক্ষা চায়। তানবীর এটা দিতে কোন মতেই রাজি হয় না। সে লিংকন কে বলে
তানবীর ঃ আপনি লতা কে আমার কাছে চাইছেন কেন? লতার কাছে লতা কে চান।তাহলে ব্যাপারটা আরো সহজ হয়ে যায়।
লিংকন তারপর ও তানবীর এর কাছে কড়োজড়ো রিকোয়েস্ট করে। এক পর্যায়ে লিংকন কেদেই ফেলে। তারপর তানবীর লিংক কে সান্তনা দিয়ে বলে
তানবীর ঃ দেখি আমি আপনার জন্য কি করতে পারি।
এদিকে লতার ভাবী লতার কাছে লিংকন এর কথা জানতে চায়। তাদের সম্পর্ক কেমন চলতেছে সে কথা জানতে চায়।
লতা ঃ ভাবী তুমি তো লিংকন কে  জানোই ও একটা বাজে ছেলে। ও রাজনীতিতে খুব বেশী জরিত যে কোন মূহুর্তে জেলে যেতে পারে। ওর
জীবনের কোন গ্যারান্টি নেই আর এসব বিভিন্ন দিক চিন্তা করে আমি ওর সাথে আমার সব সম্পর্ক ভেঙ্গে দিয়েছি আমি ওকে আর ফোন দিতে না
বলেছি। আর তাই ওর সাথে আমার আর কোন সম্পর্ক নেই।
ভাবী ঃ ও কি রকম ছেলে তুমি তা নতুন করে জানো নাকি?ওকি রকম সেটা জেনেই তুমি ওর সাথে সম্পর্ক করেছ।সো বিয়ে যদি তোমাকে করতে
হয় তা হলে লিংকন কেই করতে হবে।
লতা ঃ ভাবী ।
ভাবী ঃ হ্যা এটাই আমার শেষ কথা।
লতা কাদতে কাদতে নিজের ঘরে চলে যায়। ঘরে গিয়ে খাটের ওপর টেবিলের সাথে হেলান দিয়ে বসে থাকে। কতক্ষন পরে চোখ মুছতে মুছতে
তানবীর কে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে
লতা ঃ তানবীর প্লিজ তুমি এসে আমাকে নিয়ে যাও। আমরা কালই বিয়ে করে ফেলবো।
তানবীর ঃ কেন কি হয়েছে?
লতা ঃ তানবীর আমি আর পারছি না। ভাবী আমার সাথে লিংকনের জন্য যাতা ব্যাবহার করেছে ।
তানবীর ঃ ও তাই কোন সমস্যা নেই তুমি মাথা ঠান্ডা রাখো আমি কালই তোমার সাথে দেখা করবো।তারপর আমরা আমাদের ফাইনাল ডিছিশন নিয়ে নিবো।
তানবীর  লতা কে আর ও অনেক সান্তনা দিয়ে ফোন রেখে দেয়। তানবীরের কথা মতো লতা নিজের ঘরে শান্ত ভাবে থাকে।
পরের দিন সকাল বেলা তানবীরের মোবাইলে একটি আন নোঊন নাম্বার থেকে ফোন আসে। তানবীর ফোন রিসিভ করেই দেখে মেয়ে মানুষের কন্ঠ।
কে জিজ্ঞেস করতেই ঐ পাশ থেকে আওয়াজ ভেসে আসে
আননোউন ঃ কে তানবীর?
তানবীর ঃ হ্যা কিন্তু আপনি?
আননোউন ঃ আমি তোমার এক ভাবী।
তানবীর ঃ (অবাক হয়ে)ভাবী?কোন ভাবী ?
ভাবী ঃ আমি লতার ভাবী বলছি।
তখন তানবীর তাকে ছালাম দেয়।
তানবীর ঃ ভাবী কেমন আছেন?
ভাবী ঃ আমি ভালো তা তুমি কেমন আছো?
তানবীর ঃ ভালো তা ভাবী কি মনে করে আমাকে ফোন দিলেন?
ভাবী ঃ কিছু একটা কারন তো আছেই। আসলে আমি লতারকাছে তোমার কথা শুনেছি আর তুমি হয়তো লতার কাছে লিংকনের কথা শুনেছো?
আর যদি না শুনে থাকো তাহলে আমার কাছে শোন।
তানবীর ঃ না ভাবী আপনার কাছে শোনার আগেই আমি লতার কাছে শুনেছি। তো এখন আমি কি করতে পারি?
ভাবী ঃ তুমি অনেক কিছুই করতে পারো যা করলে তোমার লতার আর আমাদের সবারই ভালো হবে।
তানবীর ঃ যেমন?
ভাবী ঃ আসলে আমি কোন ঘোর পেচ পছন্দ করি না।তাই তোমাকে সরাসরি বলছি তুমি লতাকে ভূলে যাবে। আজকের পর থেকে লতার সাথে
তোমার আর কোন সম্পর্ক থাকবে না।
তানবীর ঃ ভাবি দেখুন ফোনে হোক আর যেভাবেই হোক আজকেই আপনার সাথে আমার প্রথম পরিচয়। আর আমাদের প্রথম পরিচয়ে আপনি
আমাকে এমন কোন কথা বলবেন না যা আমি রাখতে পারবোনা।
ভাবী ঃ তুমি কি বলতে চাচ্ছ?
তানবীর ঃ যেহেতু সরাসরি বললে আপনি ভালো বোঝেন সেহেতু আপনাকে আমি সরাসরিই বলি আমার পক্ষে আপনার কথায় লতাকে ভূলে
যাওয়া সম্ভব না। কারন আমি লতাকে অনেক বেশি ভালোবাসি আর সেও কিনতু কম নয়। সো তাকে ভুলে যাওয়ার প্রশ্নই ঊঠে না।
ভাবী ঃ (হেসে দিয়ে বাহঃ তোমাদের ভালোবাসায় আমি মূগ্ধ আমার ননদের পছন্দ আছে বলতে হবে। যাই হোক ভাই তোমার সাথে কথা
বলে আমার খুব ভালো লেগেছে। আর তাই আমি তোমার সথে দেখা করতে চাই। আর তুমি ও নিশ্চই আমার সাথে দেখা করবে।
তানবীর ঃ হ্যা কেন নয়?
ভাবী ঃ কখন কোথায় আসবো বলো?
তানবীর ঃ (আস্তে আস্তে) আপনি দেখা করলেও হয়তো লাভ হবে না।
ভাবী ঃ বুঝলাম না।
তানবীর ঃ না এমনি ঠিক আছে আপনি বলুন কোথায় আসবেন?
তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলে স্থান ঠিক করে দেখা করার জায়গা ঠিক করে নেয়।
পরের দিন বিকেলে ঠিকই একটি পার্কে তারা দেখা করে। তানবীর আগেই এসে সেখানে এসে বসে থাকে। তানবীর আসার কতক্ষন পরে ভাবী লিংকন
কে নিয়ে চলে আসে তানবীরের কাছে। তানবীর লিংকন কে দেখে অবাক হয়ে যায়। দু জন কে একসাথে দেখে তানবীর বুঝতে পারে তারা অবশ্যই কোন
মতলব নিয়ে এখানে এসেছে। তানবীর ও লিংকন একে অন্য কে আগে থেকেই চিনতো তাই এসেই লিংকন তানবীরের সাথে হাত মিলায়। আর তাতেই
ভাবী বূঝতে পারে এই তানবীর। তাই
ভাবী ঃ তুমিই তানবীর এম আই কারেক্ট?
তানবীর ঃ হ্যা। আপনি ঠিকই ধরেছেন।
ভাবী ঃ তা তুমি কেমন আছো?
তানবীর ঃ আপনি ফোন দেওয়ার আগ পর্যন্ত  ভালো ছিলাম কিন্তু এখন নেই।
ভাবী ঃ কি বলো তোমার মতো একটা হ্যান্ডসাম ছেলে লতার মতো একটি আনস্মার্ট মেয়ের জন্য খারাপ থাকবে বলে আমার মনে হয় না।
আরে তুমি তো চাইলে যে কোন বড়লোকের অনেক সুন্দরি মেয়ের সাথে সম্পর্ক করতে পারো। কেন খামাখা লতার মতো একটি মেয়ের সাথে তুমি
সম্পর্ক রেখে নিজেকে নিজে ছোট করছো?
তানবীর ঃ ভাবী আপনি কি বলতে চাচ্ছেন?
ভাবী ঃ এইতো লাইনে এসেছো।আমি যা বলতো চাচ্ছি তাতো তোমাকে কাল ফোনেই আমি বলে দিয়েছে এতে তোমার বোঝার কথা
আমি কি বলতে চাচ্ছি?
তানবীর ঃ আর আমি ও তো কাল আপনাকে বলে দিয়েছি লতাকে ভূলে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।
লিংকন ঃ দেখুন আমি আপনার কাছে অনেক রিকোয়েস্ট করেছি আপনার পায়ে পর্যন্ত ধরেছি এতো কিছু করার পর ও আপনি রাজি হচ্ছেন না।এর
পরিনাম কিন্তু বেশি ভালো হবে না। আর তাই আমি বলছি ভাবী যা বলছে তা সহজ ভাবে আপনি মেনে নিন।
তানবীর ঃ এর পরিনাম কি হবে? আপনি আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন আপনি হয়তো জানেন না আমি আপনার মতো ভীরু কা পুরূষ না যে
কেঊ আমাকে ভয় দেখালে আমি ভয় পেয়ে যাবো আর আপনি আমাকে কি ম্যানেজ করবেন কি ভয় দেখাবেন আপনি তো একটা মেয়েকেই ম্যানেজ করতে
পারেন নাই। সো আমি যা বলি মনোযোগ দিয়ে তাই শুনুন তা না হলে আপনার পরিনাম ও খুব একটা ভালো হবে না।
ভাবী ঃ তুমি হয়তো ভুলে গেছো যে লিংকন বিভিন্ন রাজনৈতিক সংস্থার সাথে জড়িত।আর ওর রাজনৈতিক হাতও অনেক লম্বা। আর সেই লম্বা
হাত দিয়ে ও যেকোন সময় যে কোন কিছু করতে পারে। তুমি যদি তোমার সিদ্ধান্ত  পাল্টে না নেও তাহলে তুমি  আমরা লতাকে  চিরদিনের জন্য
হারাবো আর তুমি নিশ্চই চাইবে না তোমার প্রিয়তমা কোন কু চক্রির হতে খুন হবে?
তনবীর ঃ ভাবী?
ভাবী ঃ হ্যা ভাই আমরা যদি লতাকে লিংকনের কাছে বিয়ে না দেই তা হলে ও লতা আমাদের কাঊকে বাচতে দিবেনা।
তনবীর ঃ (একটু ভেবে) ভাবী আমি আপনাদের প্রস্তাবে রাজি।
বাড়িতে এসে তানবীর তার মোবাইল বন্ধ করে রাখে। যাতে লতা তাকে ফোন দিতে না পারে। লতা তানবীরের মোবাইলে ট্রাই করে মোবাইল বন্ধ পায়।
তানবীরের লন্ডন যাওয়ার সব ব্যাবস্থা হয়ে যায়।
আর ঐ দিকে লতার ভাবী লিংকনের সাথে লতার বিয়ে ঠিক করে ফেলে। লতার হাতে মাত্র তিন দিন সময় এর মধ্যে কিছু একটা করতে না পারলে তাকে
লিংকন কেই বিয়ে করতে হবে।আর লতা তানবীরের সাথে ও কোন যোগাযোগ করতে পারে না কারন তানবীরের নাম্বার বন্ধ। তাই লতা সারাসরি তানভীর
দের বাড়িতে চলে আসে। কিন্তু সেখানে এসে ও সে তানবীর কে পায় না কারন সে বিদেশে চলে যাচ্ছে তাই সব আতœীয় স্বজনদের বাড়ী গিয়ে দেখা করে।
তাই বাড়িতে থাকা হয় খুব কম সময়। লতা চলে যায় নিজের বাসায়।
এদিকে মা তানবীর কে বিয়ের কথা বললে
তানবীর ঃ মা বলছিলাম না আমি আমার পছন্দের মেয়ে তোমাকে দেখাবো? কিন্তু আমি তো কোন মেয়ে এখনো পছন্দ করতেই পারি নাই। আর তাই
এখন আর সময় নাই তাই চিন্তা করছি বাংলাদেশে এসে তারপর বিয়ে করবো।
মা ঃ সে কিরে তুই এখন মেয়ে পছন্দ করবি কেন এতো বছর কি করছিস? আমি তো ভাবছি তোর প্রেমিকার কোন অভাবই নেই আর
এখন বলছিস তোর কোন মেয়েই পছন্দ হয় নাই। মায়ের কথায় তানবীর লজ্জা পেয়ে চলে যায়।
এদিকে তানবীরের যে দিন ফ্লাইট লতার ঠিক সেই দিনই লিংকনের সাথে বিয়ে। লতা তার বান্ধবি কে দিয়ে তানবীরদের বাড়ি বিয়ের কার্ড পাঠিয়ে দেয়।
তানবীরের ফ্লাইট দুপুর ১টায়। তাই বাড়ি থেকে তারা ১০ টার দিকেই বেড়িয়ে গেছে আর আজ তানবীর তাই মোবাইল অন করে লতাকে ফোন দিয়েছে।
লতা যখন তানবীরের সাথে কথা বলছিলো তার কিছুক্ষন পর তাকে গায়ে হলুদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু লতার মুখে কোন হাসি ছিলো না ছিলো
শুধু দু চোখের জল। গায়ে হলুদ শেষ হতে না হতেই বাইরে থেকে খবর আসে লিংকন র‌্যাবের ক্রস ফায়ারে রাতে নিহত হয়েছে। এখবর শুনে লতার ভাবী
সহ সবাই ভেঙ্গে পড়ে আর লতা চোখের জল মুছে তানবীর কে ফোন দেয়। তানবীরের নাম্বারে ফোন দিলে ফোন রিসিভ করে তানবীরের মা ফোন রিসিভ
করে
মা ঃ কিছুক্ষন আগেই তানবীর সবাইকে ছেড়ে ভিতরে চলে গেছে এবং মাত্র ২ ঘন্টা পরেই তার ফ্লাইট।
একথা শুনে থ হয়ে দাড়িয়ে থাকে নাটোরের বনলতা সেন।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১৫৫১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২০/০৯/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • জয়শ্রী রায় ২৫/০৯/২০১৪
    গল্পটা বেশ বড় । নাটোরের বনলতা সেন । খুব ভালো । লেখাতে আধুনিকতার ছোঁয়া রয়েছে ।
  • চমৎকার
  • একনিষ্ঠ অনুগত ২২/০৯/২০১৪
    শেষটায় সাময়িক বিরহী ভাব খেলা করল মনে। তবে তা জানি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। ওই যে তানভীর ফিরল বলে...
    • সত্যি যেনো তাই হয়। কারন তানভীর লতা কে প্রচুর লাভ করে। আর লতা সে তো বলার অপেক্ষা রাখে না। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
  • রূপক বিধৌত সাধু ২১/০৯/২০১৪
    শব্দ চয়ন, বানাণে একটু সমস্যা । এছাড়া ভাল লেগেছে ।
  • ২০/০৯/২০১৪
    হুম ভালই হয়েছেন ।
  • অনেক বড়
    • নাটক তো তাই একটু বড়। কেমন হয়েছে বললে একটু খুশি হতাম।
      • খুব ভাল লেগেছে।
 
Quantcast