ঈদের নাটক (নাটক)
ঈদ খুব কাছে চলে এসেছে। আর মাত্র ৭ দিন বাকি। সবখানেই যেন ঈদের আমেজটা পুরোপুুিরই চলছে। তাও আবার কোরবানির ঈদ বলে কথা।
সবাই শপিং নিয়ে ব্যস্ত। এমনি একটি সময়। সে সময় মার্কেট থেকে ঈদের শপিং করে ফিরছে শশী , তমা আর রনক। সাথে রয়েছে তাদের মা।
তারা ঈদের মার্কেট করে বাড়িতে এসেছে। এসে যে যার জামা কাপড় গুলো খুলে খুলে দেখছে। আর রনক তো ঈদের জুতা পড়ে সারা রুম ঘুরছে।
এটা তার সবসময়ের অভ্যাস। মা তাকে সবকিছু খুলে রাখতে বলছেন।
মা ঃ রনক জুতা এনেছো পড়ে দেখেছো ভালো এবার খুলে রাখো।
কে শোনে কার কথা সে তো সব কিছু পড়েই বিছানা বাথরুম সবই একসাথে ঘুরছে। মা ২/৩ বার বলে চুপ থাকেন। পরে
শশী ঃ কি ব্যাপার রনক মা কথা বলতেছে তুমি শুনতেছনা কেন? আর এগুলো তোমারই তো নাকি?
রনক ঃ আমার সেই জন্যই তো আমি পড়তেছি।
শশী ঃ এগুলো তোমার তুমিই পড়বা কিন্তু এখন না সামনে তো ঈদ, ঈদের সময় পড়বা। এগুলোতো ঈদের ড্রেস।
রনক ঃ আজকেই আমার ঈদ। আজকে থেকে ঈদ পর্যন্তই আমার ঈদ বুঝেছ আর চাইলে তোমরাও পড়তে পারো। কোন সমস্যা নাই।
শশী ঃ রাখো যা বলছি তাই কর সব খুলে রাখো যাতে কোন ময়লা না লাগে নষ্ট না হয়।
এ কথা বলতেই রনক চলে যায় অন্য রুমে। এরই মধ্যে তমা পাশের রুম থেকে তার মাকে ডাকে।
তমা ঃ মা ফোন।
তমা ফোন রিসিভ করে।রিসিভ করেই দেখে নানু বাড়ির ফোন। তমা তো অনেক খুশি। কথা বলতে বলতেই মাকে ডাকে সে।মা এসে ফোন ধরে।
ধরতেই দেখতে পায় তার বড় ভাবী ফোন দিয়েছে মানে রনক,তমা, শশী এদের বড় মামী।কথা বলে কুশল বিনিময় করে। কুশল বিনিময় করার পর ঐ
পাশ থেকে বড় ভাবী বলে
ভাবী ঃ তোমরা কোথায় ঈদ করবে বলে ভাবছো?
শশীর মা ঃ ভাবী এবার মনে হয় ঈদ আমাদের ঢাকায়ই করা হচ্ছে।
ভাবী ঃ না না কি বলছো ঢাকায় ঈদে কোন মজা নেই তোমরা আমাদের বাড়িতে চলে এসো। তোমরা সবাই এখানে ঈদ করবে।
তোমার সব বোনদের সাথে কথা হয়েছে ওরা সবাই চলে আসবে। সবাই একসাথে মজা করে ঈদ করবো।
শশীর মা ঃ ভাবী দেখি আমি ওদের সাথে কথা বলে আপনাকে জানাবো।
ভাবী ঃ আলাপ করো আর যাই করো বাপু তোমাদের কে কিন্তু আসতেই হবে বাপু, প্রয়োজনে আমি রনকের বাবা কে ফোন করে বলে দিবো।
শশীর মা ঃ না না লাগবেনা ভাবী আমি ই আপনাকে পরে ফোন দিয়ে জানাচ্ছি। আর ও হ্যা কোরবানীর গরু কেনা হয়েছে?
ভাবী ঃ না এখোনো গরু কেনা হয়নি তোমারা সবাই আগে দেশে এসো তারপর প্রিতম রনক পিয়াল সবাই একসাথে হয়ে হাটে
গিয়ে আনন্দ করে গরু কিনবে।
শশীর মা ঃ আচ্ছা তাই? তো ঠিক আছে এখন রাখি।
কথা শেষ করে ফোন রেখে দেয় সে। রনকের ঘরে রনক জুতা শার্ট প্যান্ট সব পড়েই বসে আছে। আর এ পাশের রুমে শশী আর তমা তাদের ড্রেস
গুলো গুছিয়ে রাখছে।এমন সময় মা তাদের রুমে এসে বললেন
শশীর মা ঃ শোন তোমাদের নানু বাড়ি থেকে তোমার বড় মামী ফোন দিয়েছে। সে আমাদের কে বলেছে দেশে ঈদ করতে যেতে। আমি
না বলেছিলাম কিন্তু তোমাদের মামী খুব করে বলেছেন। তাই আমাদের কে যেতেই হবে।সো তোমরা সবাই তোমাদের সব গুছিয়ে
নাও আমরা দু একদিনের ভিতরেই দেশে চলের যাবো। দেশে যাওয়ার কথা শুনে তমা তো লাফ দিয়ে ওঠে
তমা ঃ ওহঃ ইয়াহু আমরা দেশে যাবো ঈদ করতে? (রনক পাশের রুম থেকে ওঠে চলে আসে)
রনক ঃ হ্যা হ্যা অনেক মজা হবে। প্রীতম পিয়াল ওরা সবাই আসবে আমরা এক সাথে গরু কিনতে যাবো,গরু কে খাওয়াবো ও অনেক মজা হবে।
শশী এতক্ষন সবার কথা শুনছিলো। সবার খুশির অবস্থা চুপচাপ দেখছিলো দেখে তারপর বললো
শশী ঃ তোমরা তো অনেক খুশি তাই না? ভালো। কিন্তু এই খুশি নিয়েই থাকো তাতেই হবে দেশে যাওয়া হবে না।এবারের ঈদ আমরা ঢাকায়ই করবো।
রনক ঃ এর মানে কি?
শশী ঃ এর মানে সহজ বাংলায় আমরা দেশে যাচ্ছি না।
তমা ঃ তুমি বললেই হলো আমরা দেশে যাচ্ছি না? আমরা এমন সুযোগ আর সব সময় পাবো ? সব খালামনিরা আসবে অনেক মজা হবে। সো
আমরা দেশে যাচ্ছি তুমি না গেলে না যাও। মা আমরা যাচ্ছি।
রনক ঃ হ্যা আমরা যাচ্ছি।
শশী ঃ হ্যা যাও না বললে তো আর শুনবানা। তো দেশে যে যাবা ঈদের নাটক দেখবা কভাবে? তোমরা কি ঈদের নাটক দেখবানা?
তমা+ রনক ঃ হ্যা তাইতো ঈদের নাটক দেখবো কোথায়? নানু বাড়িতে তো আর টিভি নাই।
মা ওদের তর্ক শুনে চলে যায় তার নিজের কাজে। তমা আর রনক মাকে গিয়ে বলে মা আমরাও শশী আপুর সাথে একমত।
শশীর মা ঃ মানে কি?
তমা ঃ মানে আমরা দেশে যাচ্ছি না।
শশীর মা ঃ কেনরে তোরাই তো দেশে যাওয়ার জন্য শশীর সাথে ঝগরা করলি আর এখন তোরাই বলছিশ যাবি না।কারন কি?
রনক ঃ মা কোনো কারন নেই যাবো না এটাই শেষ। তুমি গিয়ে ফোন করে মামী কে বলে দাও ঈদে আমরা কেঊ দেশে যাচ্ছি না ব্যাছ।
শশীর মা ঃ সে না হয় বলে দিলাম কিন্তু এখুনি বললি যাবি এখুনি আবার বলছিস যাবি না কারন কি?
তমা ঃ কারন তো অবশ্যই একটা আছে?
শশীর মা ঃ কারনটা কি সেটাই বল।
রনক ঃ আমরা যে দেশে যাবো তা দেশে গেলে ঈদের নাটক দেখবো কোথায়? নানু বাড়ি তো কোন টিভি নেই।
শশীর মা ঃ ও এই কথা? ঈদের নাটক দেখতে না পারার জন্য দেশে যাবি না। ঠিক আছে আমি তোর মামাকে ফোন করে বলে দিচ্ছি।
রনক আর তমা চলে যায় নিজ ঘরে। মা ঘরে গিয়ে বড় ভাবী কে টিএনটি দিয়ে ফোন দেয়। ফোন রিসিভ করেই
ভাবী ঃ কি তোমরা আসতেছো তো? তা কখন আসতেছো?
শশীর মা ঃ না ভাবী ভাবছিলাম আমরা সবাই আসবো কিন্তু ভাবী আমাদের আসা হচ্ছে না।
ভাবী ঃ কেন তোমরা আসবেনা কেন? না না এটা কেমন করে হয় তোমার ভাই বলেছে তোমরা সব বোনেরা মিলে একসাথে সবাই আনন্দ
করে ঈদ করবে আর ওরা সবাই আসছে তোমরা আসবেনা কেন? কি তোমাদের সমস্যাটা কোথায়?
শশীর মা ঃ না ভাবী আমাদের কোনো সমস্যা নেই কিন্তু শশী তমা রনক ওরা আসতে চাচ্ছে না তাই।
ভাবী ঃ কেন কেন ওরা আসতে চাচ্ছে না কেন?
শশীর মা ঃ ভাবী আসলে দেশে আসলে তো ওরা ঈদের নাটক দেখতে পাবে না তাই। আর না হলে ওরা আসার জন্য তো পাগল।
ভাবী ঃ ও এই সমস্যা? তুমি আগে বলবে না তোমরা চলে আসো টিভির ব্যাবস্থা আমি করছি।
শশীর মা ঃ তাই?
ভাবী ঃ হ্যা তাই। আর শশী কে তোমার বলা লাগবেনা আমিই ফোন করে ওকে বলে দিচ্ছি।
ফোন কেটে শশীর বড় মামী সাথে সাথেই শশীর মোবাইলে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে বলে
মামী ঃ শশী তোমরা দেশে চলে আসো তোমাদের ঈদের নাটক দেখার ব্যাবস্থা আমি করছি।
মামীর কথা শুনে শশী তো অনেক খুশি। সে এই খুশির খবরটা রনক আর তমা কে দেয়। তিন ভাই বোন সবাই মিলে অনেক খুশি। রনক তার রুমে যায়
সব গোছ গাছ করে। আর এই দিকে তমা আর শশী একে অন্য কে জড়িয়ে ধরে।
মামী তার ভাগনা ভাগনী দের অনেক ভালো বাসে। তাই সে তাদের খুশির জন্য সব কিছুই করতে পারে। তারই একটা নমুনা দেখিয়ে দিলো টিভির কথা বলে।
সে শশীর সাথে কথা দিয়েছে টিভির ব্যাবস্থা সে করবে তাই মামা বাসায় আসলে
মামী ঃ ওগো আমরা একটা টিভি কিনে নিয়ে আসো না।
মামা ঃ টিভি কেন? টিভি দিয়ে কি হবে এই বয়সে তোমার আবার টিভি দেখার শখ হল নাকি?
মামী ঃ কি বল আমার আবার টিভি দেখার শখ হবে কেন?
মামা ঃ তা হলে টিভি দিয়ে কি করবা সুকেসে সাজিয়ে রাখবানা কি?
মামী ঃ সবই তো তুমি বলছো আমি কি বলবো সেটা শোন আগে আমাকে শেষ করতে দাও।
মামা ঃ ঠিক আছে বাবা বল কি জন্য তোমার টিভি কেনার শখ হল?
মামী ঃ তুমি তো বলছো তোমার সব বোনেরা এই বাড়িতে ঈদ করবে।
মামা ঃ হ্যা অবশ্যই আমার সব বোনেরা এক সাথে আমাদের বাড়িতে ঈদ করবে।
মামী ঃ আর সে জন্যই তো আমি সবাইকে ফোন করে আসতে বলেছি।
মামা ঃ অবশ্যই ফোন করবে ফোন না করলে ওরা কিভাবে বুঝবে যে সবাই আমাদের বাড়িতে ঈদ করবে? কি ভাবে ওরা আমাদের ঈদ
আয়োজন সম্পর্কে জানবে?
মামী ঃ আমাকে শেষ করতে দাও তুমি এই বার একটু চুপ কর।
মামা ঃ ঠিক আছে যাও আমি একদম চুপ বল দেখি তুমি কি বলবা?
মামী ঃ তোমার বড় বোনকে ফোন দিলাম ওদের কে আসার কথা বললাম তারা তো আসতে রাজি হয় না হয় না মানে তারা আসবেনা তখন
আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন আসবেনা? অনেক জিজ্ঞেস করার পর বলে যে সবাই আসতে রাজি কিন্তু আসলে তো তারা আর ঈদের নাটক দেখতে
পারবেনা আর তাদের কাছে ঈদের সবচেয়ে বড় মজা হল ঈদের নাটক। সেই ঈদের নাটক ই যদি দেখতে না পারে তা হলে দেশে এসে কি লাভ?
মামা ঃ আর এ কথা শুনে তুমি কি বললে?
মামী ঃ আমি বললাম তোমরা আসো তোমাদের ঈদের নাটক দেখার ব্যাবস্থা আমি করবো। তার মানে টিভি দেখার ব্যাবস্থা আমি করবো।
এ কথা শুনে তো ওরা অনেক খুশি। আর খুশিতে ওরা আসতে রাজি হয়ে গেলো। এবার তুমি ওদের জন্য টিভি কিনে নিয়ে আসো।
মামা ঃ অবশ্যই আমি ওদের জন্য কালই বাজার থেকে নতুন টিভি কিনে নিয়ে আসবো।
মামার কথা শুনে মামী ও অনেক খুশি। পরের দিন মামা চলে যায় টিভির মার্কেটে টিভি কিনতে। সবাই যখন কোরবানির গরু কিনা নিয়ে ব্যাস্ত তখন মামা
ব্যাস্ত তার ভাগনা ভাগনীর জন্য টিভি কিনা নিয়ে। বাজার থেকে দেখে শুনে একটি বড় টিভি কিনে নিয়ে আসে।
মামী তো অনেক খুশি। টিভি ঘরে আনতেই মামী আবার শশীকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে
মামী ঃ জানো তোমাদের মামা তোমাদের জন্য বড় একটা নতুন টিভি কিনে নিয়ে আসছে।
শশী ঃ ও থ্যাংকস মামী। তা মামী টিভি সাদা কালো না রঙ্গিন?
মামী ঃ দাড়াও আমি তোমার মামার কাছে জিজ্ঞেস করে নেই। ওগো টিভি কি সাদা কালো না রঙ্গিন?
মামা ঃ সাদা কালো।
মামী ঃ সাদা কালো।
শশী ঃ (মুখ একটু বেজাড় করে) সাদা কালো টিভি? ঠিক আছে।
বলেই ফোন রেখে দেয় তারা দুজন।
ফোন রাখার পর মামী মামার কাছে বলে
মামী ঃ তুমি সাদা কালো টিভি আনছো কেন রঙ্গিন টিভি আনতে পারো নাই?
মামা ঃ কেন কি হইছে? সাদা কালো টিভিতে সমস্যা কি?
মামী ঃ সাদা কালো টিভি শুনে শশী কেমন যেন একটু বেজার হয়ে গেলো।
মামা ঃ তাই নাকি? আমি আজই বাজার থেকে গিয়ে রঙ্গিন টিভি কিনে নিয়ে আসবো। তুমি শুধু ওকে ফোন করে বলে দাও ও যেন মন খারাপ না
করে। আর তুমি ওদের কে কালই চলে আসতে বলো।
মামা সাথে সাথেই ভ্যান ডাক দিয়ে নিয়ে টিভি নিয়ে বাজারে চলে যায় সাদা কালো টিভি রেখে রঙ্গিন টিভি আনতে। বাজারে গিয়ে মামাতো
টিভি দোকানদারদের সাথে রাগারাগি
মামা ঃ কি টিভি দিয়েছেন সাদাকালো টিভি কেন? রঙ্গিন টিভি দেন।
দোকানদার ঃ আপনি রেগে যাচ্ছেন কেন? আপনি যা চেয়েছেন আমরা তো তাই দিয়েছি। আর রঙ্গিন টিভি নিলে তো টাকাও বেশি লাগবে।
মামা ঃ টাকা বেশি লাগলে লাগুক টাকার জন্য কি আমার ভাগনা ভাগনীরা সাদাকালো টিভি দেখবে?
মামা সাদাকালো টিভি চেঞ্জ করে রঙ্গিন টিভি নিয়ে আসে। মামী তো আরো খুশি। সে আবার শশীকে ফোন দিয়ে এ খুশির খবর জানিয়ে দেয়।
রঙ্গিন টিভির কথা শুনে শশী তো অনেক খুশি। তারা পরের দিনই চলে আসে মামা বাড়ি। তাদের অন্যান্য খালামনিরা ও চলে এসেছে। সব খালাতো
মামাতো ভাই বোনেরা মিলে পুরো মামা বাড়ি ভরপুর। পরের দিন পিয়াল প্রিতম রনক সবাই মিলে মামার সাথে গরুর হাটে যায় গরু কিনতে। গরুর হাটে
গিয়েও তারা অনেক মজা করে। অবশেষে তারা গরুর হাট থেকে দেখে শুনে বড় একটি গরু কিনে নিয়ে আসে। সব ভাই বোনেরা মিলে গরুকে ঘাস
খাওয়ায় গরুকে বেধে রাখে অনেক মজা করে। রাতে সবাই মিলে টিভি দেখতে বসে। দেখে সবই ঠিক আছে কিন্তু ডিস নেই। এ অবস্থা দেখে সবাই
বেজার হয়ে যায়।
শশী ঃ শুধু বিটিভি দেখে কোন মজা আছে ঈদের নাটক তো ডিসের লাইনেই ভালো দেয় ডিস না থাকলে তাহলে কেমন হলো তাহলে
তো দেশে এসে বিড়াট লস হয়ে গেলো।
তমা ঃ মামী তোমরা ডিস নাও নাই কেনো?
মামী ঃ আমি কি জানি বাপু জানে তো তোমার মামা।
শশী ঃ মামী তাহলে আপনি মামাকে একটু বলেন না যাতে ডিসের ব্যাবস্থা করে।না হলে আমরা ঈদের ভাল নাটক গুলো দেখতে
পারবোনা। প্লিজ মামী বলো না মামাকে?
মামী ঃ ঠিক আছে আমি তোমার মামাকে বলবো যাতে আজই ডিস লাইন লাগিয়ে দেয়।
শশী ঃ ও মাই ডিয়ার সুইট মামী তোমাকে অন্নেক থাংকস।
বলেই মামী মামার ঘরে গিয়ে বলে যাতে ডিস লাইন লাগিয়ে দেয়। নয় তো তারা ঈদের নাটক দেখতে পারবেনা। মামীর কথা শুনে
মামা ঃ কি বলো? আমি কালকে সকালেই বাজারে গিয়ে ডিসের লাইনের জন্য ওদের বলে দিয়ে আসবো তুমি ওদের কোনো চিন্তাই করতে না বলো।
ঠিকই মামা সকালে বাজারে গিয়ে ডিসের লাইনের জন্্য কথা বলে। কিন্তু সমস্্যা হলো ডিস লাইন তো একজনে চাইলে একজনেই নিতে পারবেনা। যে নিবে
সে এলাকার কমপক্ষে কিছু লোককে নিতে হবে। মামা তাতেই রাজি হয়ে গেলো। প্্রয়োজনে সবার লাইনের টাকা সে একলা দিবে। তার পরো যেন
তার ভাইগনা ভাগনীর ঈদের নাটক দেখতে কোনো সমস্্যা না হয় । মামা কথা বলে চলে আসেন । কতক্ষণ পরে যারা ডিস সংযোগ দেয় তারা এসে
পুরো এলাকায় ডিস সংযোগ টেনে দিয়ে যায়। তার টানতে টানতে যখন শশীর মামাদের বাড়ীতে তার টানবে তখন উঠানে শশীর ছোট খালাতো ভাই
বোনেরা খেলছিল। আর পাশেই শশী দাড়িয়ে দাড়িয়ে খেলা দেখছিল। আর তখনি ছেলে গুলো তার টানছিলো আর ডিস মালিকের ছেলে তাদেরকে
দেখিয়ে দিচ্ছিলো। শশীকে দেখে
ডিস মালিকের ছেলে ঃ বলে আপনি মনে হয় আঙ্কেলের ভাগনী।
শশী ঃ আঙ্কেলের ভাগনী মানে কোন আঙ্কেলের ভাগনী আমি।
ডিস মালিকের ছেলে শশীর মামার নাম বলে । তখন শশী বলে জী উনি আমার বড় মামা ।
ডিস মালিকের ছেলে ঃ উনি আপনার কথাই বলেছিলেন।
শশী ঃ মানে?
ডিস মালিকের ছেলে ঃ মানে। আপনাদের কথাই বলেছিলেন যে ওনার ভাগনা ভাগনীরা এসেছে তাদের জন্য টিভি কিনেছে।আবার ডিস
সংযোগ নিচ্ছে তবে আমি কিন্ত ওদের সংঙ্গে ডিস সংযোগ দেই না। এটা আমাদেরই ব্যবসা । মানে আমি মালিকের ছে্েল। আজকে ওদের সাথে দেখতে
বের হয়েছি আর কি । ওরা কি রকম কাজ করে। ঠিকমতন কাজ করে কি না বলেই আবার ধমক মারছে,এই কি করছ, তার গুলো ভাল ভাবে লাগিয়ে দিও
। কেননা তারা ঢাকা থেকে আসছে , কথা গুলো বলেই শশীর দিকে তাকিয়ে বলল আমি কিন্ত এসব কাজ করিনা। আমি পড়া লেখা করি, আর মাঝে
মধ্যে বাবার ব্যবসার দেখা শুনা করি এই আর কি।
শশী ঃ কেন পড়া লেখা না করে কাজ করলেই সমস্যা কি?
ডিস মালিকের ছেলে ঃ না না সমস্যা হবে কেন? আর আমি এসব কাজ করতে যাবো কেন? আমি তো করলে বড় কিছু করবো। আমি তো পড়া
লেখা করি আমি এসব কাজ করলে মানাবে নাকি? আমি তো আমি তো.....
শশী ঃ আর আমি তো আমি তো করে লাভ নেই। যাই করেন আর নাই করেন আমাকে শুনিয়ে কোন লাভ নেই।
এই বলে সেখান থেকে চলে যায় শশী। আর মালিকের ছেলে ওদের কে কাজ করতে বলে সেখান থেকে চলে যায়। ডিস সংযোগ ও চালু হয়ে যায় ।
ঈদের নাটক দেখতে আর কোন সমস্যা নেই। দেখতে দেখতে ঈদের দিন চলে আসে। মামা, রনক,প্রিতম, পিয়াল, সবাই ঈদের নামাজ পরে আসে।
বাসায় সবাই নতুন জামা কাপড় পড়ছে । কতক্ষন পরে গিয়ে সবাই মিলে গরু জবাই করে সবাই একসাথে গরু কাটাকাটি করে।এদিকে ঘরে অনেক
মেহমান চলে আসে সবাইকে সেমাই ফিন্নি দেওয়া হয় সবাই অনেক খাওয়া খায়ি করে। মাম মামী শশী তমা সবাই কে ঘুরতে যেতে বলে কিন্তু কেঊ
যেতে রাজি হয় না। কারন সন্ধ্যায়ই তো আবার ঈদের নাটক আরম্ভ হয়ে যাবে তাই কোথাও গেলে আসতে দেরী হয়ে গেলে তো আর ঈদের নাটক দেখা
যাবে না। তারপরও সবাই মিলে বলে কয়ে তাদের কে ঘুরতে পাঠায়। তবে তারা দুরে কোথাও যায় না। কাছেই তাদের খালামনিদের বাড়ি আছে যেখানে
তারা সবাই মিলে বেড়াতে যায়। তারা সব খালাতো ভাইবোনরা মিলে চারটি রিকশা ভাড়া নেয়। পুরো ঈদের দিন ঘুরে বেড়ায় রাস্তায় তারা মজা
করে সবাই সবার সাথে ছবি তোলে। সারাদিন ঘোরাফেরা করে অনেক খাওয়া দাওয়া হয় বিকেলেই সবাই মামা বাড়িতে চলে আসে দেখতে দেখতে সন্ধ্যা
হয়ে যায়।সবাই চলে যায় টিভির রুমে। যে যার মত পজিশনে বসে পরে। কে কোথায় বসবে কে কার পাশে বসবে এই নিয়ে একে অন্যে ঝগরা করে
তারপর মামা মামী সবাইকে সুন্দর মতো বসিয়ে দেয়। সবাই শান্ত মতো বসে। এতোক্ষন টিভি তে বিভিন্ন এড অন্যান্য অনুষ্ঠান চলছিলো অল্পক্ষনের
মধ্যেই আরম্ভ হবে সবার অধীর আগ্রহের সবার অপেক্ষার ঈদের নাটক অন্যান্য অনুষ্ঠান যখন শেষ তখন উপস্থাপিকা আসছে ঈদের নাটকের ঘোষনা দিতে।
সে বলছে
উপস্থাপিকা ঃ ঈদ মোবারক এখন আপনারা দেখবেন কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে ঈদের বিশেষ নাটক
বলতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। সবাই চুপচাপ বসে ছিলো বিদ্যুৎ চলে যাওয়াতে পুরো হই হুল্লোর বেজে যায়। একএকেকজন একেক ধরনের কমেন্টস করতেছে।
এইটা কি হলো? এইটা একটা হলো? মাত্র ঈদের নাটক শুরু হবে আর মাত্রই কারেন্ট চলে গেলো এটা হলো কোনো? মামা তো রাগে শেষ
মামা ঃ আমার ভাইগনা ভাগনীর জন্য এতো কিছু করলাম তাদের ঈদের নাটক দেখার জন্য এখন এইটা কি হলো?
শশী ঃ ঈদের নাটক (বলেই কেদেঁ ফেলল)।
সবাই তো রাগারাগি চিল্লাচিল্লি করতেছে।কিন্তু টিভির রুম ছেড়ে কেউ যায় না।কারন বাইরে গেলে যদি কারেন্ট চলে আসে কিন্তু কারেন্ট তো আর আসে না।
অপেক্ষা করতে করতে ঈদের নাটক যখন শেষ ঠিক তখন কারেন্ট চলে আসে। তখনো টিভি ছাড়াই ছিলো। উপস্থাপিকা তখন আবার ঘোষনা দেয়
এতক্ষন আপনারা দেখলেন বিশেষ ঈদের নাটক। শশীর হাউমাউ করে কান্না কাটি করা আরো বেড়ে যায়।
তমা ঃ ঈদের নাটক দেখলাম না কচু কিছুই হলো না।
শশী ঃ (কাদতে কাদতে) যদি ঈদের নাটকই না দেখতে পারলাম তা হলে আর এখানে থেকে কি লাভ? কালকেই আমরা এখান থেকে চলে যাবো।
মামী ঃ (অবাক হয়ে) কালকে যাবি কেন? আজকে তো মাত্র ঈদ শেষ হলো
শশী ঃ না আর থাকবোইনা।
মামা ঃ থাকবেনা ভালো কথা ঠিক আছে চলো আমরা সবাই মিলে এখন একসাথে ঈদের স্পেশাল গরুর মাংস দিয়ে খাবো। কিন্তু কে শোনে কার
কথা শশী তো কিছুই খাবে না কেউ তাকে খাবার সাধতে গেলে সে আরো কান্না কাটি করে কেদেই বলে
শশী ঃ যদি ঈদের নাটকই দেখতে না পারলাম তাহলে খেয়ে আর কি লাভ? না খেয়েই কাদতে কাদতে রাতে ঘুমিয়ে পরে।
সকালে সে অনেক তাড়াতাড়ি উঠে তার মা ভাই বোন কে জাগিয়ে তোলে সে কোন মতেই আর দেশে থাকবেনা। মামা মামী সবার কাছে বিদায় নিয়ে চলে
আসে। হাটতে হাটতে এসে বাজারের কাছে বাস স্টান্ডে এসে দাড়ায়। বাজারে আসলে তাদের সাথে দেখা হয় সেই ডিস মালিকের ছেলের সাথে। সে তো
শশী কে দেখেই
ডিস মালিকের ছেলে ঃ ঈদ মোবারক। কি ব্যাপার ঢাকায় চলে যাচ্ছেন নাকি আর ঈদ শেষ হতে না হতেই চলে যাবেন কেনো? আর ও হ্যা
কালকে ঈদের নাটক দেখেছেন? ও হ্যা কালকে তো ঈদের নাটক শুরু হওয়ার আগেই কারেন্ট চলে গেছে আপনি নাটক দেখবেন কিভাবে?
শশী ঃ (কাদতে কাদতে) সে জন্যই তো চলে যাচ্ছি।
ডিস মালিকের ছেলে ঃ আপনি সে জন্য চলে যাচ্ছেন কি বলেন? আরে আপনি আমাকে বললে আমি আপনার জন্য আগে থেকেই আমি
জেনারেটর না হয়তো আই.পি.এস এর ব্যবস্থা করে রাখতাম। আপনি ঈদের নাটক দেখতে পারবেন না একথা জানলে আমি প্রয়োজনে বিদ্যুৎ অফিসে
গিয়ে তাদের কে কারেন্ট নিতে না বলে আসতাম। মালিকের ছেলে চাপা মারতে মারতে এই দিক দিয়ে শশীদের গাড়ী চলে আসে। তারা গাড়ী করে
ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে আসে। এই হলো তাদরে শখের ঈদের নাটক দেখা। পেয়েও বুঝি হইলো না পাওয়। না এটা হবে দেখেও বুঝি হইলো না দেখা।
সবাই শপিং নিয়ে ব্যস্ত। এমনি একটি সময়। সে সময় মার্কেট থেকে ঈদের শপিং করে ফিরছে শশী , তমা আর রনক। সাথে রয়েছে তাদের মা।
তারা ঈদের মার্কেট করে বাড়িতে এসেছে। এসে যে যার জামা কাপড় গুলো খুলে খুলে দেখছে। আর রনক তো ঈদের জুতা পড়ে সারা রুম ঘুরছে।
এটা তার সবসময়ের অভ্যাস। মা তাকে সবকিছু খুলে রাখতে বলছেন।
মা ঃ রনক জুতা এনেছো পড়ে দেখেছো ভালো এবার খুলে রাখো।
কে শোনে কার কথা সে তো সব কিছু পড়েই বিছানা বাথরুম সবই একসাথে ঘুরছে। মা ২/৩ বার বলে চুপ থাকেন। পরে
শশী ঃ কি ব্যাপার রনক মা কথা বলতেছে তুমি শুনতেছনা কেন? আর এগুলো তোমারই তো নাকি?
রনক ঃ আমার সেই জন্যই তো আমি পড়তেছি।
শশী ঃ এগুলো তোমার তুমিই পড়বা কিন্তু এখন না সামনে তো ঈদ, ঈদের সময় পড়বা। এগুলোতো ঈদের ড্রেস।
রনক ঃ আজকেই আমার ঈদ। আজকে থেকে ঈদ পর্যন্তই আমার ঈদ বুঝেছ আর চাইলে তোমরাও পড়তে পারো। কোন সমস্যা নাই।
শশী ঃ রাখো যা বলছি তাই কর সব খুলে রাখো যাতে কোন ময়লা না লাগে নষ্ট না হয়।
এ কথা বলতেই রনক চলে যায় অন্য রুমে। এরই মধ্যে তমা পাশের রুম থেকে তার মাকে ডাকে।
তমা ঃ মা ফোন।
তমা ফোন রিসিভ করে।রিসিভ করেই দেখে নানু বাড়ির ফোন। তমা তো অনেক খুশি। কথা বলতে বলতেই মাকে ডাকে সে।মা এসে ফোন ধরে।
ধরতেই দেখতে পায় তার বড় ভাবী ফোন দিয়েছে মানে রনক,তমা, শশী এদের বড় মামী।কথা বলে কুশল বিনিময় করে। কুশল বিনিময় করার পর ঐ
পাশ থেকে বড় ভাবী বলে
ভাবী ঃ তোমরা কোথায় ঈদ করবে বলে ভাবছো?
শশীর মা ঃ ভাবী এবার মনে হয় ঈদ আমাদের ঢাকায়ই করা হচ্ছে।
ভাবী ঃ না না কি বলছো ঢাকায় ঈদে কোন মজা নেই তোমরা আমাদের বাড়িতে চলে এসো। তোমরা সবাই এখানে ঈদ করবে।
তোমার সব বোনদের সাথে কথা হয়েছে ওরা সবাই চলে আসবে। সবাই একসাথে মজা করে ঈদ করবো।
শশীর মা ঃ ভাবী দেখি আমি ওদের সাথে কথা বলে আপনাকে জানাবো।
ভাবী ঃ আলাপ করো আর যাই করো বাপু তোমাদের কে কিন্তু আসতেই হবে বাপু, প্রয়োজনে আমি রনকের বাবা কে ফোন করে বলে দিবো।
শশীর মা ঃ না না লাগবেনা ভাবী আমি ই আপনাকে পরে ফোন দিয়ে জানাচ্ছি। আর ও হ্যা কোরবানীর গরু কেনা হয়েছে?
ভাবী ঃ না এখোনো গরু কেনা হয়নি তোমারা সবাই আগে দেশে এসো তারপর প্রিতম রনক পিয়াল সবাই একসাথে হয়ে হাটে
গিয়ে আনন্দ করে গরু কিনবে।
শশীর মা ঃ আচ্ছা তাই? তো ঠিক আছে এখন রাখি।
কথা শেষ করে ফোন রেখে দেয় সে। রনকের ঘরে রনক জুতা শার্ট প্যান্ট সব পড়েই বসে আছে। আর এ পাশের রুমে শশী আর তমা তাদের ড্রেস
গুলো গুছিয়ে রাখছে।এমন সময় মা তাদের রুমে এসে বললেন
শশীর মা ঃ শোন তোমাদের নানু বাড়ি থেকে তোমার বড় মামী ফোন দিয়েছে। সে আমাদের কে বলেছে দেশে ঈদ করতে যেতে। আমি
না বলেছিলাম কিন্তু তোমাদের মামী খুব করে বলেছেন। তাই আমাদের কে যেতেই হবে।সো তোমরা সবাই তোমাদের সব গুছিয়ে
নাও আমরা দু একদিনের ভিতরেই দেশে চলের যাবো। দেশে যাওয়ার কথা শুনে তমা তো লাফ দিয়ে ওঠে
তমা ঃ ওহঃ ইয়াহু আমরা দেশে যাবো ঈদ করতে? (রনক পাশের রুম থেকে ওঠে চলে আসে)
রনক ঃ হ্যা হ্যা অনেক মজা হবে। প্রীতম পিয়াল ওরা সবাই আসবে আমরা এক সাথে গরু কিনতে যাবো,গরু কে খাওয়াবো ও অনেক মজা হবে।
শশী এতক্ষন সবার কথা শুনছিলো। সবার খুশির অবস্থা চুপচাপ দেখছিলো দেখে তারপর বললো
শশী ঃ তোমরা তো অনেক খুশি তাই না? ভালো। কিন্তু এই খুশি নিয়েই থাকো তাতেই হবে দেশে যাওয়া হবে না।এবারের ঈদ আমরা ঢাকায়ই করবো।
রনক ঃ এর মানে কি?
শশী ঃ এর মানে সহজ বাংলায় আমরা দেশে যাচ্ছি না।
তমা ঃ তুমি বললেই হলো আমরা দেশে যাচ্ছি না? আমরা এমন সুযোগ আর সব সময় পাবো ? সব খালামনিরা আসবে অনেক মজা হবে। সো
আমরা দেশে যাচ্ছি তুমি না গেলে না যাও। মা আমরা যাচ্ছি।
রনক ঃ হ্যা আমরা যাচ্ছি।
শশী ঃ হ্যা যাও না বললে তো আর শুনবানা। তো দেশে যে যাবা ঈদের নাটক দেখবা কভাবে? তোমরা কি ঈদের নাটক দেখবানা?
তমা+ রনক ঃ হ্যা তাইতো ঈদের নাটক দেখবো কোথায়? নানু বাড়িতে তো আর টিভি নাই।
মা ওদের তর্ক শুনে চলে যায় তার নিজের কাজে। তমা আর রনক মাকে গিয়ে বলে মা আমরাও শশী আপুর সাথে একমত।
শশীর মা ঃ মানে কি?
তমা ঃ মানে আমরা দেশে যাচ্ছি না।
শশীর মা ঃ কেনরে তোরাই তো দেশে যাওয়ার জন্য শশীর সাথে ঝগরা করলি আর এখন তোরাই বলছিশ যাবি না।কারন কি?
রনক ঃ মা কোনো কারন নেই যাবো না এটাই শেষ। তুমি গিয়ে ফোন করে মামী কে বলে দাও ঈদে আমরা কেঊ দেশে যাচ্ছি না ব্যাছ।
শশীর মা ঃ সে না হয় বলে দিলাম কিন্তু এখুনি বললি যাবি এখুনি আবার বলছিস যাবি না কারন কি?
তমা ঃ কারন তো অবশ্যই একটা আছে?
শশীর মা ঃ কারনটা কি সেটাই বল।
রনক ঃ আমরা যে দেশে যাবো তা দেশে গেলে ঈদের নাটক দেখবো কোথায়? নানু বাড়ি তো কোন টিভি নেই।
শশীর মা ঃ ও এই কথা? ঈদের নাটক দেখতে না পারার জন্য দেশে যাবি না। ঠিক আছে আমি তোর মামাকে ফোন করে বলে দিচ্ছি।
রনক আর তমা চলে যায় নিজ ঘরে। মা ঘরে গিয়ে বড় ভাবী কে টিএনটি দিয়ে ফোন দেয়। ফোন রিসিভ করেই
ভাবী ঃ কি তোমরা আসতেছো তো? তা কখন আসতেছো?
শশীর মা ঃ না ভাবী ভাবছিলাম আমরা সবাই আসবো কিন্তু ভাবী আমাদের আসা হচ্ছে না।
ভাবী ঃ কেন তোমরা আসবেনা কেন? না না এটা কেমন করে হয় তোমার ভাই বলেছে তোমরা সব বোনেরা মিলে একসাথে সবাই আনন্দ
করে ঈদ করবে আর ওরা সবাই আসছে তোমরা আসবেনা কেন? কি তোমাদের সমস্যাটা কোথায়?
শশীর মা ঃ না ভাবী আমাদের কোনো সমস্যা নেই কিন্তু শশী তমা রনক ওরা আসতে চাচ্ছে না তাই।
ভাবী ঃ কেন কেন ওরা আসতে চাচ্ছে না কেন?
শশীর মা ঃ ভাবী আসলে দেশে আসলে তো ওরা ঈদের নাটক দেখতে পাবে না তাই। আর না হলে ওরা আসার জন্য তো পাগল।
ভাবী ঃ ও এই সমস্যা? তুমি আগে বলবে না তোমরা চলে আসো টিভির ব্যাবস্থা আমি করছি।
শশীর মা ঃ তাই?
ভাবী ঃ হ্যা তাই। আর শশী কে তোমার বলা লাগবেনা আমিই ফোন করে ওকে বলে দিচ্ছি।
ফোন কেটে শশীর বড় মামী সাথে সাথেই শশীর মোবাইলে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে বলে
মামী ঃ শশী তোমরা দেশে চলে আসো তোমাদের ঈদের নাটক দেখার ব্যাবস্থা আমি করছি।
মামীর কথা শুনে শশী তো অনেক খুশি। সে এই খুশির খবরটা রনক আর তমা কে দেয়। তিন ভাই বোন সবাই মিলে অনেক খুশি। রনক তার রুমে যায়
সব গোছ গাছ করে। আর এই দিকে তমা আর শশী একে অন্য কে জড়িয়ে ধরে।
মামী তার ভাগনা ভাগনী দের অনেক ভালো বাসে। তাই সে তাদের খুশির জন্য সব কিছুই করতে পারে। তারই একটা নমুনা দেখিয়ে দিলো টিভির কথা বলে।
সে শশীর সাথে কথা দিয়েছে টিভির ব্যাবস্থা সে করবে তাই মামা বাসায় আসলে
মামী ঃ ওগো আমরা একটা টিভি কিনে নিয়ে আসো না।
মামা ঃ টিভি কেন? টিভি দিয়ে কি হবে এই বয়সে তোমার আবার টিভি দেখার শখ হল নাকি?
মামী ঃ কি বল আমার আবার টিভি দেখার শখ হবে কেন?
মামা ঃ তা হলে টিভি দিয়ে কি করবা সুকেসে সাজিয়ে রাখবানা কি?
মামী ঃ সবই তো তুমি বলছো আমি কি বলবো সেটা শোন আগে আমাকে শেষ করতে দাও।
মামা ঃ ঠিক আছে বাবা বল কি জন্য তোমার টিভি কেনার শখ হল?
মামী ঃ তুমি তো বলছো তোমার সব বোনেরা এই বাড়িতে ঈদ করবে।
মামা ঃ হ্যা অবশ্যই আমার সব বোনেরা এক সাথে আমাদের বাড়িতে ঈদ করবে।
মামী ঃ আর সে জন্যই তো আমি সবাইকে ফোন করে আসতে বলেছি।
মামা ঃ অবশ্যই ফোন করবে ফোন না করলে ওরা কিভাবে বুঝবে যে সবাই আমাদের বাড়িতে ঈদ করবে? কি ভাবে ওরা আমাদের ঈদ
আয়োজন সম্পর্কে জানবে?
মামী ঃ আমাকে শেষ করতে দাও তুমি এই বার একটু চুপ কর।
মামা ঃ ঠিক আছে যাও আমি একদম চুপ বল দেখি তুমি কি বলবা?
মামী ঃ তোমার বড় বোনকে ফোন দিলাম ওদের কে আসার কথা বললাম তারা তো আসতে রাজি হয় না হয় না মানে তারা আসবেনা তখন
আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন আসবেনা? অনেক জিজ্ঞেস করার পর বলে যে সবাই আসতে রাজি কিন্তু আসলে তো তারা আর ঈদের নাটক দেখতে
পারবেনা আর তাদের কাছে ঈদের সবচেয়ে বড় মজা হল ঈদের নাটক। সেই ঈদের নাটক ই যদি দেখতে না পারে তা হলে দেশে এসে কি লাভ?
মামা ঃ আর এ কথা শুনে তুমি কি বললে?
মামী ঃ আমি বললাম তোমরা আসো তোমাদের ঈদের নাটক দেখার ব্যাবস্থা আমি করবো। তার মানে টিভি দেখার ব্যাবস্থা আমি করবো।
এ কথা শুনে তো ওরা অনেক খুশি। আর খুশিতে ওরা আসতে রাজি হয়ে গেলো। এবার তুমি ওদের জন্য টিভি কিনে নিয়ে আসো।
মামা ঃ অবশ্যই আমি ওদের জন্য কালই বাজার থেকে নতুন টিভি কিনে নিয়ে আসবো।
মামার কথা শুনে মামী ও অনেক খুশি। পরের দিন মামা চলে যায় টিভির মার্কেটে টিভি কিনতে। সবাই যখন কোরবানির গরু কিনা নিয়ে ব্যাস্ত তখন মামা
ব্যাস্ত তার ভাগনা ভাগনীর জন্য টিভি কিনা নিয়ে। বাজার থেকে দেখে শুনে একটি বড় টিভি কিনে নিয়ে আসে।
মামী তো অনেক খুশি। টিভি ঘরে আনতেই মামী আবার শশীকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে
মামী ঃ জানো তোমাদের মামা তোমাদের জন্য বড় একটা নতুন টিভি কিনে নিয়ে আসছে।
শশী ঃ ও থ্যাংকস মামী। তা মামী টিভি সাদা কালো না রঙ্গিন?
মামী ঃ দাড়াও আমি তোমার মামার কাছে জিজ্ঞেস করে নেই। ওগো টিভি কি সাদা কালো না রঙ্গিন?
মামা ঃ সাদা কালো।
মামী ঃ সাদা কালো।
শশী ঃ (মুখ একটু বেজাড় করে) সাদা কালো টিভি? ঠিক আছে।
বলেই ফোন রেখে দেয় তারা দুজন।
ফোন রাখার পর মামী মামার কাছে বলে
মামী ঃ তুমি সাদা কালো টিভি আনছো কেন রঙ্গিন টিভি আনতে পারো নাই?
মামা ঃ কেন কি হইছে? সাদা কালো টিভিতে সমস্যা কি?
মামী ঃ সাদা কালো টিভি শুনে শশী কেমন যেন একটু বেজার হয়ে গেলো।
মামা ঃ তাই নাকি? আমি আজই বাজার থেকে গিয়ে রঙ্গিন টিভি কিনে নিয়ে আসবো। তুমি শুধু ওকে ফোন করে বলে দাও ও যেন মন খারাপ না
করে। আর তুমি ওদের কে কালই চলে আসতে বলো।
মামা সাথে সাথেই ভ্যান ডাক দিয়ে নিয়ে টিভি নিয়ে বাজারে চলে যায় সাদা কালো টিভি রেখে রঙ্গিন টিভি আনতে। বাজারে গিয়ে মামাতো
টিভি দোকানদারদের সাথে রাগারাগি
মামা ঃ কি টিভি দিয়েছেন সাদাকালো টিভি কেন? রঙ্গিন টিভি দেন।
দোকানদার ঃ আপনি রেগে যাচ্ছেন কেন? আপনি যা চেয়েছেন আমরা তো তাই দিয়েছি। আর রঙ্গিন টিভি নিলে তো টাকাও বেশি লাগবে।
মামা ঃ টাকা বেশি লাগলে লাগুক টাকার জন্য কি আমার ভাগনা ভাগনীরা সাদাকালো টিভি দেখবে?
মামা সাদাকালো টিভি চেঞ্জ করে রঙ্গিন টিভি নিয়ে আসে। মামী তো আরো খুশি। সে আবার শশীকে ফোন দিয়ে এ খুশির খবর জানিয়ে দেয়।
রঙ্গিন টিভির কথা শুনে শশী তো অনেক খুশি। তারা পরের দিনই চলে আসে মামা বাড়ি। তাদের অন্যান্য খালামনিরা ও চলে এসেছে। সব খালাতো
মামাতো ভাই বোনেরা মিলে পুরো মামা বাড়ি ভরপুর। পরের দিন পিয়াল প্রিতম রনক সবাই মিলে মামার সাথে গরুর হাটে যায় গরু কিনতে। গরুর হাটে
গিয়েও তারা অনেক মজা করে। অবশেষে তারা গরুর হাট থেকে দেখে শুনে বড় একটি গরু কিনে নিয়ে আসে। সব ভাই বোনেরা মিলে গরুকে ঘাস
খাওয়ায় গরুকে বেধে রাখে অনেক মজা করে। রাতে সবাই মিলে টিভি দেখতে বসে। দেখে সবই ঠিক আছে কিন্তু ডিস নেই। এ অবস্থা দেখে সবাই
বেজার হয়ে যায়।
শশী ঃ শুধু বিটিভি দেখে কোন মজা আছে ঈদের নাটক তো ডিসের লাইনেই ভালো দেয় ডিস না থাকলে তাহলে কেমন হলো তাহলে
তো দেশে এসে বিড়াট লস হয়ে গেলো।
তমা ঃ মামী তোমরা ডিস নাও নাই কেনো?
মামী ঃ আমি কি জানি বাপু জানে তো তোমার মামা।
শশী ঃ মামী তাহলে আপনি মামাকে একটু বলেন না যাতে ডিসের ব্যাবস্থা করে।না হলে আমরা ঈদের ভাল নাটক গুলো দেখতে
পারবোনা। প্লিজ মামী বলো না মামাকে?
মামী ঃ ঠিক আছে আমি তোমার মামাকে বলবো যাতে আজই ডিস লাইন লাগিয়ে দেয়।
শশী ঃ ও মাই ডিয়ার সুইট মামী তোমাকে অন্নেক থাংকস।
বলেই মামী মামার ঘরে গিয়ে বলে যাতে ডিস লাইন লাগিয়ে দেয়। নয় তো তারা ঈদের নাটক দেখতে পারবেনা। মামীর কথা শুনে
মামা ঃ কি বলো? আমি কালকে সকালেই বাজারে গিয়ে ডিসের লাইনের জন্য ওদের বলে দিয়ে আসবো তুমি ওদের কোনো চিন্তাই করতে না বলো।
ঠিকই মামা সকালে বাজারে গিয়ে ডিসের লাইনের জন্্য কথা বলে। কিন্তু সমস্্যা হলো ডিস লাইন তো একজনে চাইলে একজনেই নিতে পারবেনা। যে নিবে
সে এলাকার কমপক্ষে কিছু লোককে নিতে হবে। মামা তাতেই রাজি হয়ে গেলো। প্্রয়োজনে সবার লাইনের টাকা সে একলা দিবে। তার পরো যেন
তার ভাইগনা ভাগনীর ঈদের নাটক দেখতে কোনো সমস্্যা না হয় । মামা কথা বলে চলে আসেন । কতক্ষণ পরে যারা ডিস সংযোগ দেয় তারা এসে
পুরো এলাকায় ডিস সংযোগ টেনে দিয়ে যায়। তার টানতে টানতে যখন শশীর মামাদের বাড়ীতে তার টানবে তখন উঠানে শশীর ছোট খালাতো ভাই
বোনেরা খেলছিল। আর পাশেই শশী দাড়িয়ে দাড়িয়ে খেলা দেখছিল। আর তখনি ছেলে গুলো তার টানছিলো আর ডিস মালিকের ছেলে তাদেরকে
দেখিয়ে দিচ্ছিলো। শশীকে দেখে
ডিস মালিকের ছেলে ঃ বলে আপনি মনে হয় আঙ্কেলের ভাগনী।
শশী ঃ আঙ্কেলের ভাগনী মানে কোন আঙ্কেলের ভাগনী আমি।
ডিস মালিকের ছেলে শশীর মামার নাম বলে । তখন শশী বলে জী উনি আমার বড় মামা ।
ডিস মালিকের ছেলে ঃ উনি আপনার কথাই বলেছিলেন।
শশী ঃ মানে?
ডিস মালিকের ছেলে ঃ মানে। আপনাদের কথাই বলেছিলেন যে ওনার ভাগনা ভাগনীরা এসেছে তাদের জন্য টিভি কিনেছে।আবার ডিস
সংযোগ নিচ্ছে তবে আমি কিন্ত ওদের সংঙ্গে ডিস সংযোগ দেই না। এটা আমাদেরই ব্যবসা । মানে আমি মালিকের ছে্েল। আজকে ওদের সাথে দেখতে
বের হয়েছি আর কি । ওরা কি রকম কাজ করে। ঠিকমতন কাজ করে কি না বলেই আবার ধমক মারছে,এই কি করছ, তার গুলো ভাল ভাবে লাগিয়ে দিও
। কেননা তারা ঢাকা থেকে আসছে , কথা গুলো বলেই শশীর দিকে তাকিয়ে বলল আমি কিন্ত এসব কাজ করিনা। আমি পড়া লেখা করি, আর মাঝে
মধ্যে বাবার ব্যবসার দেখা শুনা করি এই আর কি।
শশী ঃ কেন পড়া লেখা না করে কাজ করলেই সমস্যা কি?
ডিস মালিকের ছেলে ঃ না না সমস্যা হবে কেন? আর আমি এসব কাজ করতে যাবো কেন? আমি তো করলে বড় কিছু করবো। আমি তো পড়া
লেখা করি আমি এসব কাজ করলে মানাবে নাকি? আমি তো আমি তো.....
শশী ঃ আর আমি তো আমি তো করে লাভ নেই। যাই করেন আর নাই করেন আমাকে শুনিয়ে কোন লাভ নেই।
এই বলে সেখান থেকে চলে যায় শশী। আর মালিকের ছেলে ওদের কে কাজ করতে বলে সেখান থেকে চলে যায়। ডিস সংযোগ ও চালু হয়ে যায় ।
ঈদের নাটক দেখতে আর কোন সমস্যা নেই। দেখতে দেখতে ঈদের দিন চলে আসে। মামা, রনক,প্রিতম, পিয়াল, সবাই ঈদের নামাজ পরে আসে।
বাসায় সবাই নতুন জামা কাপড় পড়ছে । কতক্ষন পরে গিয়ে সবাই মিলে গরু জবাই করে সবাই একসাথে গরু কাটাকাটি করে।এদিকে ঘরে অনেক
মেহমান চলে আসে সবাইকে সেমাই ফিন্নি দেওয়া হয় সবাই অনেক খাওয়া খায়ি করে। মাম মামী শশী তমা সবাই কে ঘুরতে যেতে বলে কিন্তু কেঊ
যেতে রাজি হয় না। কারন সন্ধ্যায়ই তো আবার ঈদের নাটক আরম্ভ হয়ে যাবে তাই কোথাও গেলে আসতে দেরী হয়ে গেলে তো আর ঈদের নাটক দেখা
যাবে না। তারপরও সবাই মিলে বলে কয়ে তাদের কে ঘুরতে পাঠায়। তবে তারা দুরে কোথাও যায় না। কাছেই তাদের খালামনিদের বাড়ি আছে যেখানে
তারা সবাই মিলে বেড়াতে যায়। তারা সব খালাতো ভাইবোনরা মিলে চারটি রিকশা ভাড়া নেয়। পুরো ঈদের দিন ঘুরে বেড়ায় রাস্তায় তারা মজা
করে সবাই সবার সাথে ছবি তোলে। সারাদিন ঘোরাফেরা করে অনেক খাওয়া দাওয়া হয় বিকেলেই সবাই মামা বাড়িতে চলে আসে দেখতে দেখতে সন্ধ্যা
হয়ে যায়।সবাই চলে যায় টিভির রুমে। যে যার মত পজিশনে বসে পরে। কে কোথায় বসবে কে কার পাশে বসবে এই নিয়ে একে অন্যে ঝগরা করে
তারপর মামা মামী সবাইকে সুন্দর মতো বসিয়ে দেয়। সবাই শান্ত মতো বসে। এতোক্ষন টিভি তে বিভিন্ন এড অন্যান্য অনুষ্ঠান চলছিলো অল্পক্ষনের
মধ্যেই আরম্ভ হবে সবার অধীর আগ্রহের সবার অপেক্ষার ঈদের নাটক অন্যান্য অনুষ্ঠান যখন শেষ তখন উপস্থাপিকা আসছে ঈদের নাটকের ঘোষনা দিতে।
সে বলছে
উপস্থাপিকা ঃ ঈদ মোবারক এখন আপনারা দেখবেন কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে ঈদের বিশেষ নাটক
বলতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। সবাই চুপচাপ বসে ছিলো বিদ্যুৎ চলে যাওয়াতে পুরো হই হুল্লোর বেজে যায়। একএকেকজন একেক ধরনের কমেন্টস করতেছে।
এইটা কি হলো? এইটা একটা হলো? মাত্র ঈদের নাটক শুরু হবে আর মাত্রই কারেন্ট চলে গেলো এটা হলো কোনো? মামা তো রাগে শেষ
মামা ঃ আমার ভাইগনা ভাগনীর জন্য এতো কিছু করলাম তাদের ঈদের নাটক দেখার জন্য এখন এইটা কি হলো?
শশী ঃ ঈদের নাটক (বলেই কেদেঁ ফেলল)।
সবাই তো রাগারাগি চিল্লাচিল্লি করতেছে।কিন্তু টিভির রুম ছেড়ে কেউ যায় না।কারন বাইরে গেলে যদি কারেন্ট চলে আসে কিন্তু কারেন্ট তো আর আসে না।
অপেক্ষা করতে করতে ঈদের নাটক যখন শেষ ঠিক তখন কারেন্ট চলে আসে। তখনো টিভি ছাড়াই ছিলো। উপস্থাপিকা তখন আবার ঘোষনা দেয়
এতক্ষন আপনারা দেখলেন বিশেষ ঈদের নাটক। শশীর হাউমাউ করে কান্না কাটি করা আরো বেড়ে যায়।
তমা ঃ ঈদের নাটক দেখলাম না কচু কিছুই হলো না।
শশী ঃ (কাদতে কাদতে) যদি ঈদের নাটকই না দেখতে পারলাম তা হলে আর এখানে থেকে কি লাভ? কালকেই আমরা এখান থেকে চলে যাবো।
মামী ঃ (অবাক হয়ে) কালকে যাবি কেন? আজকে তো মাত্র ঈদ শেষ হলো
শশী ঃ না আর থাকবোইনা।
মামা ঃ থাকবেনা ভালো কথা ঠিক আছে চলো আমরা সবাই মিলে এখন একসাথে ঈদের স্পেশাল গরুর মাংস দিয়ে খাবো। কিন্তু কে শোনে কার
কথা শশী তো কিছুই খাবে না কেউ তাকে খাবার সাধতে গেলে সে আরো কান্না কাটি করে কেদেই বলে
শশী ঃ যদি ঈদের নাটকই দেখতে না পারলাম তাহলে খেয়ে আর কি লাভ? না খেয়েই কাদতে কাদতে রাতে ঘুমিয়ে পরে।
সকালে সে অনেক তাড়াতাড়ি উঠে তার মা ভাই বোন কে জাগিয়ে তোলে সে কোন মতেই আর দেশে থাকবেনা। মামা মামী সবার কাছে বিদায় নিয়ে চলে
আসে। হাটতে হাটতে এসে বাজারের কাছে বাস স্টান্ডে এসে দাড়ায়। বাজারে আসলে তাদের সাথে দেখা হয় সেই ডিস মালিকের ছেলের সাথে। সে তো
শশী কে দেখেই
ডিস মালিকের ছেলে ঃ ঈদ মোবারক। কি ব্যাপার ঢাকায় চলে যাচ্ছেন নাকি আর ঈদ শেষ হতে না হতেই চলে যাবেন কেনো? আর ও হ্যা
কালকে ঈদের নাটক দেখেছেন? ও হ্যা কালকে তো ঈদের নাটক শুরু হওয়ার আগেই কারেন্ট চলে গেছে আপনি নাটক দেখবেন কিভাবে?
শশী ঃ (কাদতে কাদতে) সে জন্যই তো চলে যাচ্ছি।
ডিস মালিকের ছেলে ঃ আপনি সে জন্য চলে যাচ্ছেন কি বলেন? আরে আপনি আমাকে বললে আমি আপনার জন্য আগে থেকেই আমি
জেনারেটর না হয়তো আই.পি.এস এর ব্যবস্থা করে রাখতাম। আপনি ঈদের নাটক দেখতে পারবেন না একথা জানলে আমি প্রয়োজনে বিদ্যুৎ অফিসে
গিয়ে তাদের কে কারেন্ট নিতে না বলে আসতাম। মালিকের ছেলে চাপা মারতে মারতে এই দিক দিয়ে শশীদের গাড়ী চলে আসে। তারা গাড়ী করে
ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে আসে। এই হলো তাদরে শখের ঈদের নাটক দেখা। পেয়েও বুঝি হইলো না পাওয়। না এটা হবে দেখেও বুঝি হইলো না দেখা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
তুহিনা সীমা ১৪/০১/২০১৫বাহ কাজিনসদের চমৎকার একটি গল্প। অনেক সুন্দর হয়েছে। সবচেয়ে ভালো হতো নাটকটি টিভিতে দেখতে পারলে।
-
অ ১৮/০৯/২০১৪কোন চ্যানেলে দেখাচ্ছে এবার ?
-
মনিরুজ্জামান শুভ্র ১৮/০৯/২০১৪অনেক হাসি পেল ... । ঈদের নাটক দেখার জন্য এত কিছু , কিন্তু বিধিরাম ... বিদ্যুৎ ...। ভাল লাগলো ।