দুঃস্বপ্ন
কি করতে পারি কি করা যায়? আপাদত ভাবনা এটাই। কোনো ভাবেই যেনো কিচ্ছুই হচ্ছিল না। জীবনটাকে আর জীবন মনে হচ্ছিল না। জীবনের কোনো মানে খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ভাবনা আর ভাবনা কোনো ফলাফল ছাড়াই ভাবনা। ভাবতে ভাবতে কেনো যেনো এক প্রকার ক্লান্তি এসে গেছে। আর সেই ক্লান্তির রেশ ধরেই সব চিন্তা ভাবনার অবসান ঘটিয়ে ঘরের মেঝেতে শুইয়ে আছে সায়েম। অন্যান্য দিনের মত ব্যাস্ত থাকলেও আজ তার দিনটা শুরু হয়েছে একেবারেই অন্য ভাবে। সকালে তার বাসার অন্য সবার ঘুম ভেঙ্গেছে তার কান্না আর কান্নার চিৎকার চেচামেচি তে। কেনো কেদেছিলো সে? বাসার সবার একটাই প্রশ্ন। সে নির্বাক সবাইর দিকে তাকিয়ে। সবাই আছে পাশে। কিন্তু কে যেনো নেই। আবারো হাউমাউ করে কান্না শুরু। বাবা কোথায় ? বাব কোথায়? তাহলে কি সত্যি বাব..? এর মধ্যেই বাবা গোসলখানা থেকে গামছা হাতে বেড়িয়ে এসছে। কি হয়েছে? এরকম করছিস কেনো? আর তৎক্ষনাত ই বাবাকে জড়িয়ে ধরে সেকি কান্না তার। এবার বাবা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন। সে শান্ত কিন্তু ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না যেনো তার আসছেই। এবার সবাই জানতে চাইলো আসলে কি হয়েছে? এবার কাদো কাদো কন্ঠেই বলতে শুরু করলো সায়েম। তাদের জীবনকে নিয়েই সে একটা স্বপ্ন দেখছে। স্বপ্নেও তাদের সংসারের এই দুরঅবস্থা। কোনো মতে তাদের পরিবারটি চলছে বাবা অসুস্থ মাও অসুস্থ কোনো ভাবেই মা আর বাবার ঔষধের টাকা যোগার করতে পারতে ছিলো না সায়েম। এদিকে বড় ভাইয়েরা ও যে যার সংসার নিয়ে ব্যাস্ত। তারা এক প্রকার সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন। কার কাছে যাবে কার কাছে চাইবে কোনো কিছুই যেনো বুঝে উঠতে পারছিলো না সে। আর এই ভাবেই টাকার অভাবে ঔষধের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যায় বাবা। আর এই স্বপ্ন দেখেই চিৎকার করে ঘুম থেকে উঠেছে। এ কথা শুনে অনেকে হাসতে চাইলেও মা আর বাবা ঠিকই তাদের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। সাত সন্তানের মধ্যে সায়েম তাদের সবচেয়ে ছোট সন্তান। বড় ছয়জন যে যতখানি পেরেছে বাবা মার স্বপ্ন কে ভেঙ্গে দিয়ে যে যার মত করে নিজেদের কে নিয়ে ব্যাস্ত আছে। আর এই ছেলেটি যে নিজের জিবনের ভালো লাগা মন্দ লাগা সব কিছু কে বিসর্জন দিয়ে শরীরে সাথে মনের ও সকল শক্তিটুকু দিয়ে চেষ্টা করছে বাবা মায়ের মুখে সুখের হাসিটুকু না পারুক দু বেলা দু মুঠো খাবার আর ঔষধের যোগার করতে। আর পারিপার্শ্বিক সবকিছু কে সামাল দিয়ে নিজের লেখা পড়ার খরচ যোগাড় করে কাজটি সব মিলিয়ে খুব একটা সহজ মনে হচ্ছে না। আর জীবনের এ যুদ্ধে সে তার বাবা মায়ের দোয়া ছাড়া সাহায্য হিসেবে আর কিছুই পাচ্ছে না। আল্লাহ সাহায্য করলে হয়তো সফল ভাবে এগিয়ে যেতে পারবে সায়েম অথবা হয়তো একদিন স্বপ্নে না নিজের চোখের সামনেই দেখতে হবে বাবা মায়ের লাঞ্ছনার মৃত্যু আর অসহায়ের মত নিজের হেরে যাওয়া।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
তুহিনা সীমা ১১/১১/২০১৪মা বাবা কে নিয়ে যারা ভাবেন আল্লাহ অবশ্যই তাদের কে সাহায্য করবে। আপনার লেখাটি চমৎকার হয়েছে। শুভেচ্ছা নিবেন।
-
একনিষ্ঠ অনুগত ১৩/০৯/২০১৪ভালো লাগলো।
-
অ ১২/০৯/২০১৪অনেক ভালো হয়েছে ইমাম ভাই ।
ভালো থাকবেন । -
শিমুল শুভ্র ১২/০৯/২০১৪আসরে অভিনন্দন
বাহ!!! চমৎকার