এক টাকা ও একটি জীবন।
দুর্গাপুজোর পর যার সাথেই দেখা হয় আমরা শুভ বিজয়ার পর একটা কথা বলতে ভুলিনা। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। কারণ ভালো থাকতে গেলে যে সুস্থ থাকাটা জরুরী তা আমরা অল্প বিস্তর সবাই মানি। লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, ইন্ডীগো বা বেগুনী – সরকার রামধনুর যে রঙ্গেরই হোক, কারুরই তেমন সুস্থ থাকার বা রাখার ব্যাপারে আগ্রহ থাকলেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে তেমন দেখা যায় না। এ বড় আক্ষেপের বিষয়। অথচ এই সুস্থ রাখার ব্যবস্থা আজকের অর্থনৈতিক কাঠামোতে একদম অসম্ভব নয়। এখানে এই নিয়ে আলোচনা যা করছি তা একদিকে যেমন তথ্য-নির্ভর অন্যদিকে ব্যক্তি সাপেক্ষের ক্ষমতা ও ব্যাপ্তি নির্ভর। সরকার এগিয়ে এলে এসব কিছুই দরকার হয়না। সেক্ষেত্রে এ প্রবন্ধ মূল্যহীন হলে আমিই সবচেয়ে শান্তি পাব।
২০১২ সালে ভারতে প্রতি ১৭০০ জন লোকের জন্য একজন ফিজিসিয়ান থাকতে পেরেছে। ২০১১ সালে প্রতি ১৭০০ জনের জন্য একটি হাসপাতাল-বেড কুলানো গেছে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানায়জেসন এ ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১০০০ জনের জন্য একটি করে হাসপাতাল-বেড এবং ১০০০ জনের জন্য একটি করে ফিজিসিয়ান থাকা উচিত মনে করে। এখানে উল্লেখ্য যে এটা বলাই বাহুল্য ১৭০০ জনে ১ জন ডাক্তার বা বেড শুধু সংখ্যার খাতিরে খুব খারাপ একটা অবস্থা। কিন্তু এইখানে যেটা বোঝান গেলনা তা হল এই ১ জন ডাক্তারের হদিসই পাওয়া যায় না অনেক অঞ্চলে। এমনও আছে সারা গ্রামের লোক পাশের গ্রামে যায় যেখানে হয়ত একজন ফিজিসিয়ান উপস্থিত। অর্থাৎ এখানে ১৭০০ না হয়ত ৫০০০ লোকের জন্য ১ জন ফিজিসিয়ান । মুল কথাটা হল তাই সংখ্যাটা যত বেশি নিম্ন অবস্থা সূচিত করে তার থেকেও নিম্নতর অবস্থা দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে না থাকা চিকিৎসা ব্যবস্থা।
আর একটা বিষয় আমরা সবাই হয়ত জানি তাও একটু আলোকপাত করি তা হল যে মানুষটা চিকিৎসার আওতায় এলেন তার যে সব সময় সুচিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে তাও না। কারন মূলত দুটো। এক পর্যাপ্ত পরি-কাঠামোর অভাব দুই পর্যাপ্ত অর্থ পেশেণ্টের পরিবারের কাছে না থাকা। এই দুটি ক্ষেত্রেই আমার মনে হয় সরকারের একটা বিপুল ভূমিকা আছে এবং স্বাধীনতার গত সাতষট্টি বছরে এ আমাদের অন্যতম প্রধান ব্যর্থতা।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য এরকম করলে কেমন হয় যে আমরা সবাই এক টাকা করে প্রতিদিন জমা করি। তাহলে প্রতি পরিবার পিছু আমরা কমপক্ষে তিন টাকা পাব। এখন আমাদের দেশের মোট লোক সংখ্যা হল ১২১ কোটি। আহলে আমরা হাতে পাচ্ছি ১২১ কোটি একদিনে। তাহলে তিন মাসে আমাদের হাতে আসছে ১০ হাজার কোটির বেশী। এই দশ হাজার কোটি টাকা দিয়ে শুরু হতে পারে ১২১ কোটি লোকের মেডিকেল ইন্সিওরেন্স।
উদাহরন স্বরূপ এবারে ধরা যাক ডেংগি রোগাক্রান্ত পেশেন্ট। প্রতি বছরে ২০২৭৪ জন আক্রান্ত হয়েছে এই রোগে ২০০৬ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে। তাহলে এই সংখ্যক লোকের মধ্যে অর্থ যোগান টা কোন কঠিন কাজ হবার কথা নয়। কিন্তু এখানে আর একটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। তা হল অনেক পেশেন্ট আছে যা হিসাবের মধ্যে নেই এবং এই সংখ্যাটা ডেংগির ক্ষেত্রে ভয়ানক। যা হল ৫৭ লাখের বেশি। অর্থাৎ আসলে ৫৭ লাখ লোকের ডেঙ্গি হয়েছে বছরে আমরা জানতে পেরেছি মাত্র ২০ হাজার লোকের। এত গেল পেশেন্টের সংখ্যা নির্ণয়।
এবার আমাদের তিন মাসে তোলা ১০ হাজার কোটি টাকা যদি সারা বছরের ডেঙ্গি পেশেন্ট কে সেবা করা যায় তাহলে প্রায় আমরা ২০ হাজার টাকা প্রতি জনের জন্য খরচা করতে পারি। এইভাবে আমরা মাত্র তিন মাসের মধ্যেই ১২১ কোটি মানুষ কে সারা বছরের ডেঙ্গি রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচাতে পারলাম।
সুতরাং বাকি নয় মাসের টাকা দিয়ে আমরা কোন আলাদা টাকা বৃদ্ধির কথা না ভেবেই কম পক্ষে আর ও তিনটি খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়া মারাত্মক রোগের মোকাবিলা করতে পারি গোটা দেশের মানুষের জন্য। আর যদি এর থেকে কিছু টাকা টাকার বাজারে বিনিয়োগ করে দীর্ঘ মেয়াদি টাকা বৃদ্ধি করে পরের কিছু বছরের টাকা আগাম যোগান করে নিতে পারি তাহলে ত আর ও নিশ্চিত অবস্থা।
এবারে এটা কিভাবে করা যায়। বলাই বাহুল্য সরকারের উপর হা-পিত্যেশ করে বসে থাকলে পরিণতি হবে কাঁচকলা। আবার এটাও ঠিক সরকার সাথে না থাকলে এই বিপুল কর্মকাণ্ড সফল করা যাবে না। টাকা কালেকশানের কাজটা করতে হবে ব্যাঙ্ক কে। একটা কথা বলি এই ব্যাপারটা পুরোটাই হবে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। নাহলে এই বিপল অর্থ লিকুইড ক্যাশ হিসাবে যার হাতেই যাবে সেই এর শ্রাধ্য করে তবে ছাড়বে।
তাই যদি হয় তাহলে প্রতিদিন যত ব্যাঙ্কে যত আকাউন্ট আছে সবার থেকে এক টাকা করে কেটে একটি নির্দিষ্ট আকাউন্টে জমা করা হবে। এখন যেহেতু ভারতে মোট ব্যাঙ্কের মোট আকাউন্টের সংখ্যাটা নেহাত কম নয় তাই এই পদ্ধতিতে অনেক টাকাই খুব সহজে একীভূত করা যাবে। এখানে উল্লেখ্য যে কোন পরিবারে তিনজন মেম্বার আর আকাউন্ট একটা সেক্ষেত্রে মোট তিন টাকা করে সেখান থেকে ট্রান্সফার হবে।
এইবার আসা যাক সবথেকে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটা। ভারতে মোটামুটি ৫০ শতাংশ লোক সেভিংস আকাউন্টের আওতায় পড়েনা। আমরা কিভাবে তাহলে তাদের কাছ থেকে প্রতিদিন এক টাকা করে সংগ্রহ করব যারা এর আওতায় আসছেন না।
এইখানে সরকারেরে একটা ভুমিকা আছে। পঞ্চায়েত ও করপরেশনের মাধ্যমে প্রতি ব্লকে গ্রামীন ব্যাঙ্কে বা সমবায় ব্যাঙ্কে আকাউন্ট তৈরি ও তাতে প্রতিদিনের এক টাকা কাটার প্রয়োজনিয়তা বোঝাতে হবে। এখানে যে কোন রকমের সংস্থা সরকারকে লোক বল দিয়ে সাহাজ্য করতে পারে। এমন কি ব্যক্তি বিশেষ ও নেমে পড়তে পারেন। সরকার যদি এখানে সহযোগিতার হাত না বাড়ায় তাহলে এই কাজটা করতে হবে ছোট ছোট পাড়ার ক্লাব গুলোকে। বলাই বাহুল্য এক্ষেত্রে সরকারের সমস্ত রকম প্রশাসনিক সাহায্য ক্লাবগুলকে পেতেই হবে। আর পাড়ার ক্লাব ও যদি এগিয়ে না আসে তাহলে এই কাজের জন্য আমাদেরকে একটা ক্লাব তৈরিতে হাত দিতেই হবে। তার আলোচনা প্রয়োজনে করা যাবে।
এই ভাবে আমরা এক বছরের মদ্ধ্যেই আমাদের সামান্য এক টাকা করে তুলতে পারি চুয়াল্লিশ হাজার কোটি টাকা। আর এই টাকা দিয়ে ১২১ কোটি মানুষের কম পক্ষে চারটি মহামারি রোগ মোকাবিলা হতে পারে।
(এই আলোচনাতে অনেক কিছুই বিস্তারিত লেখা হল না। এটা আমার একটা ভাবনার কাঠামো মাত্র। পরে পুরো প্রতিমা গড়ার একটা ইচ্ছা রয়ে গেল। যদিও এই ভাবনা বাস্তবে রূপ দেবার উপকরণ লাগে অনেক কিছু তবে অবাস্তব ত মনে হয়না। আবার এসবের কিছুই দরকার হত না যদি সরকার ন্যুনতম সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করত। কবে যে এমন হবে। আমার শরীর অসুস্থ। কাছের হাসপাতাল গেলাম। পাসপোর্ট বা আধার কার্ড বা রেশন কার্ড বা ভোটার কার্ড দেখালাম। রেজিস্ট্রেশনের পর ডাক্তার পরীক্ষা করলেন। আমার মনে কোন সংশয় ই হচ্ছে না যে ডাক্তার পরীক্ষা করলেন না শুধুমাত্র ব্যবসা করলেন। আমার টাকা পয়সার চিন্তা ই করতে হল না। চিকিৎসা ও হয়ে গেল। ট্যাক্স পেয়ার হিসাবে, শহুরে হিসাবে, গ্রামের মানুষ হিসাবে, চাকুরে হিসাবে, কৃষক হিসাবে, ব্যবসায়ী হিসাবে আর ও কত কিছু হিসাবে - নাগরিক হিসাবে হাসি মুখে খুশী হয়ে বাড়ি চলে এলাম। কবে...। যাই হোক এসব নিয়ে আলোচনার ইচ্ছা রইল।)
**তথ্য গুলো ইন্টারনেট থেকে নেওয়া হয়েছে। নিচে রেফারেন্স দেওয়া হল কেউ যদি আর ও বিশদ জানতে চায়:-
১। http://search.worldbank.org/
২। http://www.newindianexpress.com/ Published 22nd Sep 2013
৩। http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4257651/
৪। http://www.business-standard.com/article/economy-policy/just-half-of-indians-have-a-savings-bank-account-113062800037_1.html
৫। http://www.ndtv.com/india-news/why-pm-modis-bank-accounts-for-all-project-is-a-huge-challenge-654692
২০১২ সালে ভারতে প্রতি ১৭০০ জন লোকের জন্য একজন ফিজিসিয়ান থাকতে পেরেছে। ২০১১ সালে প্রতি ১৭০০ জনের জন্য একটি হাসপাতাল-বেড কুলানো গেছে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানায়জেসন এ ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১০০০ জনের জন্য একটি করে হাসপাতাল-বেড এবং ১০০০ জনের জন্য একটি করে ফিজিসিয়ান থাকা উচিত মনে করে। এখানে উল্লেখ্য যে এটা বলাই বাহুল্য ১৭০০ জনে ১ জন ডাক্তার বা বেড শুধু সংখ্যার খাতিরে খুব খারাপ একটা অবস্থা। কিন্তু এইখানে যেটা বোঝান গেলনা তা হল এই ১ জন ডাক্তারের হদিসই পাওয়া যায় না অনেক অঞ্চলে। এমনও আছে সারা গ্রামের লোক পাশের গ্রামে যায় যেখানে হয়ত একজন ফিজিসিয়ান উপস্থিত। অর্থাৎ এখানে ১৭০০ না হয়ত ৫০০০ লোকের জন্য ১ জন ফিজিসিয়ান । মুল কথাটা হল তাই সংখ্যাটা যত বেশি নিম্ন অবস্থা সূচিত করে তার থেকেও নিম্নতর অবস্থা দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে না থাকা চিকিৎসা ব্যবস্থা।
আর একটা বিষয় আমরা সবাই হয়ত জানি তাও একটু আলোকপাত করি তা হল যে মানুষটা চিকিৎসার আওতায় এলেন তার যে সব সময় সুচিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে তাও না। কারন মূলত দুটো। এক পর্যাপ্ত পরি-কাঠামোর অভাব দুই পর্যাপ্ত অর্থ পেশেণ্টের পরিবারের কাছে না থাকা। এই দুটি ক্ষেত্রেই আমার মনে হয় সরকারের একটা বিপুল ভূমিকা আছে এবং স্বাধীনতার গত সাতষট্টি বছরে এ আমাদের অন্যতম প্রধান ব্যর্থতা।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য এরকম করলে কেমন হয় যে আমরা সবাই এক টাকা করে প্রতিদিন জমা করি। তাহলে প্রতি পরিবার পিছু আমরা কমপক্ষে তিন টাকা পাব। এখন আমাদের দেশের মোট লোক সংখ্যা হল ১২১ কোটি। আহলে আমরা হাতে পাচ্ছি ১২১ কোটি একদিনে। তাহলে তিন মাসে আমাদের হাতে আসছে ১০ হাজার কোটির বেশী। এই দশ হাজার কোটি টাকা দিয়ে শুরু হতে পারে ১২১ কোটি লোকের মেডিকেল ইন্সিওরেন্স।
উদাহরন স্বরূপ এবারে ধরা যাক ডেংগি রোগাক্রান্ত পেশেন্ট। প্রতি বছরে ২০২৭৪ জন আক্রান্ত হয়েছে এই রোগে ২০০৬ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে। তাহলে এই সংখ্যক লোকের মধ্যে অর্থ যোগান টা কোন কঠিন কাজ হবার কথা নয়। কিন্তু এখানে আর একটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। তা হল অনেক পেশেন্ট আছে যা হিসাবের মধ্যে নেই এবং এই সংখ্যাটা ডেংগির ক্ষেত্রে ভয়ানক। যা হল ৫৭ লাখের বেশি। অর্থাৎ আসলে ৫৭ লাখ লোকের ডেঙ্গি হয়েছে বছরে আমরা জানতে পেরেছি মাত্র ২০ হাজার লোকের। এত গেল পেশেন্টের সংখ্যা নির্ণয়।
এবার আমাদের তিন মাসে তোলা ১০ হাজার কোটি টাকা যদি সারা বছরের ডেঙ্গি পেশেন্ট কে সেবা করা যায় তাহলে প্রায় আমরা ২০ হাজার টাকা প্রতি জনের জন্য খরচা করতে পারি। এইভাবে আমরা মাত্র তিন মাসের মধ্যেই ১২১ কোটি মানুষ কে সারা বছরের ডেঙ্গি রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচাতে পারলাম।
সুতরাং বাকি নয় মাসের টাকা দিয়ে আমরা কোন আলাদা টাকা বৃদ্ধির কথা না ভেবেই কম পক্ষে আর ও তিনটি খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়া মারাত্মক রোগের মোকাবিলা করতে পারি গোটা দেশের মানুষের জন্য। আর যদি এর থেকে কিছু টাকা টাকার বাজারে বিনিয়োগ করে দীর্ঘ মেয়াদি টাকা বৃদ্ধি করে পরের কিছু বছরের টাকা আগাম যোগান করে নিতে পারি তাহলে ত আর ও নিশ্চিত অবস্থা।
এবারে এটা কিভাবে করা যায়। বলাই বাহুল্য সরকারের উপর হা-পিত্যেশ করে বসে থাকলে পরিণতি হবে কাঁচকলা। আবার এটাও ঠিক সরকার সাথে না থাকলে এই বিপুল কর্মকাণ্ড সফল করা যাবে না। টাকা কালেকশানের কাজটা করতে হবে ব্যাঙ্ক কে। একটা কথা বলি এই ব্যাপারটা পুরোটাই হবে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। নাহলে এই বিপল অর্থ লিকুইড ক্যাশ হিসাবে যার হাতেই যাবে সেই এর শ্রাধ্য করে তবে ছাড়বে।
তাই যদি হয় তাহলে প্রতিদিন যত ব্যাঙ্কে যত আকাউন্ট আছে সবার থেকে এক টাকা করে কেটে একটি নির্দিষ্ট আকাউন্টে জমা করা হবে। এখন যেহেতু ভারতে মোট ব্যাঙ্কের মোট আকাউন্টের সংখ্যাটা নেহাত কম নয় তাই এই পদ্ধতিতে অনেক টাকাই খুব সহজে একীভূত করা যাবে। এখানে উল্লেখ্য যে কোন পরিবারে তিনজন মেম্বার আর আকাউন্ট একটা সেক্ষেত্রে মোট তিন টাকা করে সেখান থেকে ট্রান্সফার হবে।
এইবার আসা যাক সবথেকে কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটা। ভারতে মোটামুটি ৫০ শতাংশ লোক সেভিংস আকাউন্টের আওতায় পড়েনা। আমরা কিভাবে তাহলে তাদের কাছ থেকে প্রতিদিন এক টাকা করে সংগ্রহ করব যারা এর আওতায় আসছেন না।
এইখানে সরকারেরে একটা ভুমিকা আছে। পঞ্চায়েত ও করপরেশনের মাধ্যমে প্রতি ব্লকে গ্রামীন ব্যাঙ্কে বা সমবায় ব্যাঙ্কে আকাউন্ট তৈরি ও তাতে প্রতিদিনের এক টাকা কাটার প্রয়োজনিয়তা বোঝাতে হবে। এখানে যে কোন রকমের সংস্থা সরকারকে লোক বল দিয়ে সাহাজ্য করতে পারে। এমন কি ব্যক্তি বিশেষ ও নেমে পড়তে পারেন। সরকার যদি এখানে সহযোগিতার হাত না বাড়ায় তাহলে এই কাজটা করতে হবে ছোট ছোট পাড়ার ক্লাব গুলোকে। বলাই বাহুল্য এক্ষেত্রে সরকারের সমস্ত রকম প্রশাসনিক সাহায্য ক্লাবগুলকে পেতেই হবে। আর পাড়ার ক্লাব ও যদি এগিয়ে না আসে তাহলে এই কাজের জন্য আমাদেরকে একটা ক্লাব তৈরিতে হাত দিতেই হবে। তার আলোচনা প্রয়োজনে করা যাবে।
এই ভাবে আমরা এক বছরের মদ্ধ্যেই আমাদের সামান্য এক টাকা করে তুলতে পারি চুয়াল্লিশ হাজার কোটি টাকা। আর এই টাকা দিয়ে ১২১ কোটি মানুষের কম পক্ষে চারটি মহামারি রোগ মোকাবিলা হতে পারে।
(এই আলোচনাতে অনেক কিছুই বিস্তারিত লেখা হল না। এটা আমার একটা ভাবনার কাঠামো মাত্র। পরে পুরো প্রতিমা গড়ার একটা ইচ্ছা রয়ে গেল। যদিও এই ভাবনা বাস্তবে রূপ দেবার উপকরণ লাগে অনেক কিছু তবে অবাস্তব ত মনে হয়না। আবার এসবের কিছুই দরকার হত না যদি সরকার ন্যুনতম সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করত। কবে যে এমন হবে। আমার শরীর অসুস্থ। কাছের হাসপাতাল গেলাম। পাসপোর্ট বা আধার কার্ড বা রেশন কার্ড বা ভোটার কার্ড দেখালাম। রেজিস্ট্রেশনের পর ডাক্তার পরীক্ষা করলেন। আমার মনে কোন সংশয় ই হচ্ছে না যে ডাক্তার পরীক্ষা করলেন না শুধুমাত্র ব্যবসা করলেন। আমার টাকা পয়সার চিন্তা ই করতে হল না। চিকিৎসা ও হয়ে গেল। ট্যাক্স পেয়ার হিসাবে, শহুরে হিসাবে, গ্রামের মানুষ হিসাবে, চাকুরে হিসাবে, কৃষক হিসাবে, ব্যবসায়ী হিসাবে আর ও কত কিছু হিসাবে - নাগরিক হিসাবে হাসি মুখে খুশী হয়ে বাড়ি চলে এলাম। কবে...। যাই হোক এসব নিয়ে আলোচনার ইচ্ছা রইল।)
**তথ্য গুলো ইন্টারনেট থেকে নেওয়া হয়েছে। নিচে রেফারেন্স দেওয়া হল কেউ যদি আর ও বিশদ জানতে চায়:-
১। http://search.worldbank.org/
২। http://www.newindianexpress.com/ Published 22nd Sep 2013
৩। http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4257651/
৪। http://www.business-standard.com/article/economy-policy/just-half-of-indians-have-a-savings-bank-account-113062800037_1.html
৫। http://www.ndtv.com/india-news/why-pm-modis-bank-accounts-for-all-project-is-a-huge-challenge-654692
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
নির্ঝর ০৬/১২/২০১৫সুন্দর হিসাব।
-
জুনায়েদ বি রাহমান ০৪/১২/২০১৫সুন্দর লেখনী
-
নির্ঝর ২৯/১১/২০১৫চালিয়ে যাও
-
নির্ঝর ০২/১১/২০১৫সুন্দর
-
আশিস চৌধুরী ৩১/১০/২০১৫পড়লাম, ভাল লাগলো । আসলে আমাদের সদিচ্ছার অভাব আছে। শুধু সরকার একা এ কাজ করতে পারবে না। আমাদেরও এগিয়ে আসতে হবে। তবে সরকার আমাদের উদ্বুদ্ধ করে নেতৃত্ব তো অবশ্যই দিতে পারে। ব্যাপারটা তা নয় যে সরকারই আসুক না কেন তাদের লোকজন সাধারণ মানুষের কথা ভুলে বিলাস ব্যসনে থাকতেই ভালোবাসে তার।
আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বিষয়টি নিয়ে ভাবার জন্য। ভালো থাকুন নিরন্তর। -
সমরেশ সুবোধ পড়্যা ৩০/১০/২০১৫ভীষণ ভীষণ সুন্দর ভাবনা। প্রতিটি কাজের পূর্বে পরিকল্পনার প্রয়োজন। এই পৃথিবীর অনেকে আকাশে উড়ার / চলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন রাইট ভাতৃদ্বয়। আজ দেখি তার বহু রূপান্তর (মহাকাশ যান > জেট > উড়োজাহাজ > গ্লাইডার> ঝুলন্ত গ্লাইডার> প্যারাগ্লাইডার> বেলুন > ঘুড়ি) আরো বৈজ্ঞানিক নতুন নতুন ভাবনা।
লড়াই করে ১৮৫৭ থেকে ১৯৪৭ প্রায় ৯০ বছর (প্রথম ১০০ বছর / ১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ বাদ দিয়ে) লেগে গিয়েছিল আমাদের ভারতবর্ষের স্বাধীনতা প্রাপ্তিতে। অর্থাত তখন এতবড় আন্দোলন করার লোকবল / মানসিকতা / সমাজ দর্শন / যোগাযোগ আর নেতৃত্ব এর ঘাটতি ছিল, তাই দীর্ঘ্ সময় লেগে গিয়েছিল! আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যের জন্য ভারতকে এখনো কত চেষ্টা করতে হচ্ছে !
অর্থাত প্রথমে ভাবনা - পরিকল্পনা ও যথাযথ / সঠিক রুপায়ন এর প্রয়োজন। আপনার এই ভাবনার জন্য আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। কিন্তু এইখানে থেমে থাকলে চলবে না। আপনার এই ভাবনাটি প্রথমে ছড়িয়ে দিতে হবে সকল স্তরে - সামাজিক ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি ভঙ্গি দিয়ে । যেটা আপনি শুরু করে দিয়েছেন। কি হবে ? কিভাবে হবে ! কি করে হবে ! কার দ্বারা হবে ! কারা যুক্ত, কারা বিযুক্ত হবে ! কারা সেবা প্রদানকারী, কারা গ্রহনকারী ! এর যুক্তিযুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি ও পদক্ষেপ ঠিক করতে হবে।
মনে রাখা দরকার - সরকারী সেবাপ্রদান কাজে ৭০% খরচ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় (আমলা তান্ত্রিক পরিকাঠামো উন্নয়ন থেকে অন্তিম পরিষেবাগ্রাহী পর্যন্ত), এছাড়া বেহাত হওয়ার ও আশংকা রয়েছে।
প্রথমে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ গঠন, পরিচালন, প্রক্রিয়াকরণ / পদ্ধতি নির্দ্ধারণ / সেবা গ্রহণকারী অন্বেষণ এবং সেবাপ্রদান এর সমস্ত ব্যাপারে এক সুচিন্তিত রূপরেখা গড়ে তুলুন। এতে অনেকের সাহায্য পেতে পারেন। অনেক বাধাও আসবে। লড়াই করতে হবে। সময় লাগবে। কিন্তু দারুন কাজের ভাবনা। আমি সাথে আছি।
সমাজের জয় হোক আপনার জয় হোক। আমরা হই জয়ী, এই কামনা, বাসনা ও প্রার্থনা করি। এই ব্যাপারে ন্যুনতম যদি কোনো প্রয়োজনে লাগতে পারি, আমি নিজেকে ধন্য মনে করবো । আমি ভলান্টারিলি সাহায্য করতে প্রস্তুত।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো। -
তপন দাস ২৯/১০/২০১৫বাহ! খুব ভালো তথ্য নির্ভর প্রবন্ধ। দাদা আরো লিখুন, একটু ছোট করে সমাজ সচেতনতা মূলক প্রবন্ধ লিখুন ।আমি আমার পত্রিকায় ছাপাবো।
-
দীপঙ্কর বেরা ২৯/১০/২০১৫ভাল ভাবনা
-
রেনেসাঁ সাহা ২৯/১০/২০১৫ভালো লেখা। অনেক গবেষণা, অনেক পরিশ্রমের লেখা।
-
মাহফুজুর রহমান ২৮/১০/২০১৫দাদা , দেশের প্রতি ভালোবাসার ফসল এটা । লাল সালাম !!!
-
মৌলী দাস ২৭/১০/২০১৫ভালো লিখেছো দাদা
-
অভিষেক মিত্র ২৬/১০/২০১৫দারুন লাগলো
-
রুমা ঢ্যাং ২৬/১০/২০১৫ভাল লাগলো। পরের লেখার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
-
দেবব্রত সান্যাল ২৬/১০/২০১৫ভালো লেখা।