নিষ্ঠুরতার নতুন উদাহরণ
এবারের ঘটনাস্থল সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউরা গ্রাম। গত ১৪ অক্টোবর সেখানে পাঁচ-সাত বছর বয়সী শিশু তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। গণমাধ্যমে এর যে বর্ণনা প্রকাশিত হয়েছে তা যে কোনো বিচারে ভয়াবহ। জেনে শিউরে উঠতে হয়। রিপোর্টে জানা গেছে, শিশু তুহিনকে শুধু হত্যা করা হয়নি, লিঙ্গ ও কানসহ তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলেছে খুনি-দুর্বৃত্তরা। এরপর শিশুর পেটে দুটি ছুরি ঢুকিয়ে সে অবস্থাতেই তাকে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। পরদিন সকালে শিশুর ঝুলন্ত লাশ পাওয়ার পর গ্রামবাসীর মধ্যে একই সঙ্গে ক্ষোভ ও দুঃখ ছড়িয়ে পড়েছিল।
প্রাথমিক অনুসন্ধানকালে শিশুর পিতা আবদুল বাছির জানিয়েছিল, রাতে তারা এক সঙ্গেই ঘুমিয়েছিল। কিন্তু সকালে উঠে তুহিনকে বিছানায় না পেয়ে তারা আশপাশে খুঁজতে বের হয় এবং গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পায়। তুহিনের মা মনিরা বেগম অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে। এতে গ্রামের এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়, যাদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে তুহিনের বাবা ও চাচাদের আগে থেকে গন্ডগোল ও শত্রুতা ছিল। শুধু তা-ই নয়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে শত্রুতা রয়েছে এমন দু’জনের নাম লেখা ছুরিও পাওয়া গিয়েছিল। ডাঁটে নাম লেখা রয়েছে তেমন দুটি ছুরিই শিশু তুহিনের বুকে ও পেটে বিদ্ধ অবস্থায় ছিল। এর ফলে সন্দেহ ঘনীভ’ত হয়েছিল ওই দু’জনসহ তুহিনের পিতার শত্রুদের সম্পর্কে। তাদের বিরুদ্ধে প্রবল জনমতও তৈরি হয়েছিল।
অন্যদিকে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আরো ভয়াবহ তথ্য। মামলা দায়েরকারী হিসেবে বক্তব্য গ্রহণের জন্য তুহিনের বাবা-মা এবং চাচা নাসির উদ্দিন ও চাচাত ভাই শাহরিয়ারকে থানায় ডেকে নেয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, জমিজমা নিয়ে শত্রুতার জের ধরে শত্রুদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে তুহিনের বাবা বাসির এবং চাচা নাসির ও তার ছেলে শাহরিয়ারই আসলে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। বাবা বাসির উদ্দিন নিজেই ঘুমন্ত শিশু তুহিনকে কোলে করে বাইরে নিয়ে এসেছিল। তারপর তার সহযোগিতায় চাচা নাসির ও চাচাত ভাই শাহরিয়ার তুহিনকে হত্যা করেছে। শিশুর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও তারাই কেটে ফেলছে। সবশেষে শত্রু পক্ষকে ফাঁসিয়ে দেয়ার জন্য আগে থেকে তৈরি রাখা এমন দুটি ছুরি তার বুকে ও পেটে বিদ্ধ করেছে, যে দুটিতে তারা নিজেরাই কলম দিয়ে দু’জন শত্রুর নাম লিখেছিল।
বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করেছিল। কারণ, যত বোকা ও মুর্খই হোক, কারো পক্ষেই নিজের নাম লেখা ছুরি দিয়ে হত্যা করা এবং তার প্রমাণ রেখে আসা সম্ভব নয়। মূলত এমন এক চিন্তা ও সন্দেহের ভিত্তিতেই পুলিশ তুহিনের বাবা-মা ও চাচাকে সন্দেহ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারাও সত্য স্বীকার না করে পারেনি। সেই সাথে বেরিয়ে এসেছে চাচাত ভাই শাহরিয়ারের নামও। তারা জানিয়েছে, চাচা ও চাচাত ভাই হত্যা করলেও বাবা বাসির এবং মা মনিরা বেগমও সম্পূর্ণ ঘটনায় জড়িত ছিল। সকলে নিজেদের দোষ স্বীকার করে সুনামগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, জমিজমার জন্য শত্রুতার কারণে এ ধরনের হত্যাকান্ড ভয়াবহ শুধু নয়, সকল মূল্যায়নে অগ্রহণযোগ্যও। সুনামগঞ্জের গ্রামে সংঘটিত হত্যাকান্ডটি সারাদেশেই জনগণকে স্তম্ভিত করেছে। বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, মধ্যযুগের নিষ্ঠুরতাকে হার মানানো এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আরো একবার প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশে এখন আর মানবিকতা ও মূল্যবোধ বলে কিছুই অবশিষ্ট নেই এবং এদেশের মানুষ নির্মমতার চরম সীমায় পৌঁছে গেছে। এমন মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক সন্দেহ নেই, কিন্তু আমরাও বিশিষ্টজনদের মূলকথার সঙ্গে একমত পোষণ না করে পারি না। স্বীকার করতেই হবে, আসলেও সমাজের প্রতিটি স্তরে মারাত্মক পচন ধরেছে। এই পচন প্রতিরোধের জন্য এখনই ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা শুরু করা দরকার। সে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই শিশু তুহিনের হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য আমরা দাবি জানাই।
প্রাথমিক অনুসন্ধানকালে শিশুর পিতা আবদুল বাছির জানিয়েছিল, রাতে তারা এক সঙ্গেই ঘুমিয়েছিল। কিন্তু সকালে উঠে তুহিনকে বিছানায় না পেয়ে তারা আশপাশে খুঁজতে বের হয় এবং গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পায়। তুহিনের মা মনিরা বেগম অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে। এতে গ্রামের এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়, যাদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে তুহিনের বাবা ও চাচাদের আগে থেকে গন্ডগোল ও শত্রুতা ছিল। শুধু তা-ই নয়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে শত্রুতা রয়েছে এমন দু’জনের নাম লেখা ছুরিও পাওয়া গিয়েছিল। ডাঁটে নাম লেখা রয়েছে তেমন দুটি ছুরিই শিশু তুহিনের বুকে ও পেটে বিদ্ধ অবস্থায় ছিল। এর ফলে সন্দেহ ঘনীভ’ত হয়েছিল ওই দু’জনসহ তুহিনের পিতার শত্রুদের সম্পর্কে। তাদের বিরুদ্ধে প্রবল জনমতও তৈরি হয়েছিল।
অন্যদিকে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আরো ভয়াবহ তথ্য। মামলা দায়েরকারী হিসেবে বক্তব্য গ্রহণের জন্য তুহিনের বাবা-মা এবং চাচা নাসির উদ্দিন ও চাচাত ভাই শাহরিয়ারকে থানায় ডেকে নেয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, জমিজমা নিয়ে শত্রুতার জের ধরে শত্রুদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে তুহিনের বাবা বাসির এবং চাচা নাসির ও তার ছেলে শাহরিয়ারই আসলে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। বাবা বাসির উদ্দিন নিজেই ঘুমন্ত শিশু তুহিনকে কোলে করে বাইরে নিয়ে এসেছিল। তারপর তার সহযোগিতায় চাচা নাসির ও চাচাত ভাই শাহরিয়ার তুহিনকে হত্যা করেছে। শিশুর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও তারাই কেটে ফেলছে। সবশেষে শত্রু পক্ষকে ফাঁসিয়ে দেয়ার জন্য আগে থেকে তৈরি রাখা এমন দুটি ছুরি তার বুকে ও পেটে বিদ্ধ করেছে, যে দুটিতে তারা নিজেরাই কলম দিয়ে দু’জন শত্রুর নাম লিখেছিল।
বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করেছিল। কারণ, যত বোকা ও মুর্খই হোক, কারো পক্ষেই নিজের নাম লেখা ছুরি দিয়ে হত্যা করা এবং তার প্রমাণ রেখে আসা সম্ভব নয়। মূলত এমন এক চিন্তা ও সন্দেহের ভিত্তিতেই পুলিশ তুহিনের বাবা-মা ও চাচাকে সন্দেহ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারাও সত্য স্বীকার না করে পারেনি। সেই সাথে বেরিয়ে এসেছে চাচাত ভাই শাহরিয়ারের নামও। তারা জানিয়েছে, চাচা ও চাচাত ভাই হত্যা করলেও বাবা বাসির এবং মা মনিরা বেগমও সম্পূর্ণ ঘটনায় জড়িত ছিল। সকলে নিজেদের দোষ স্বীকার করে সুনামগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, জমিজমার জন্য শত্রুতার কারণে এ ধরনের হত্যাকান্ড ভয়াবহ শুধু নয়, সকল মূল্যায়নে অগ্রহণযোগ্যও। সুনামগঞ্জের গ্রামে সংঘটিত হত্যাকান্ডটি সারাদেশেই জনগণকে স্তম্ভিত করেছে। বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, মধ্যযুগের নিষ্ঠুরতাকে হার মানানো এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আরো একবার প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশে এখন আর মানবিকতা ও মূল্যবোধ বলে কিছুই অবশিষ্ট নেই এবং এদেশের মানুষ নির্মমতার চরম সীমায় পৌঁছে গেছে। এমন মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক সন্দেহ নেই, কিন্তু আমরাও বিশিষ্টজনদের মূলকথার সঙ্গে একমত পোষণ না করে পারি না। স্বীকার করতেই হবে, আসলেও সমাজের প্রতিটি স্তরে মারাত্মক পচন ধরেছে। এই পচন প্রতিরোধের জন্য এখনই ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা শুরু করা দরকার। সে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই শিশু তুহিনের হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য আমরা দাবি জানাই।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
নাসরীন আক্তার রুবি ০১/১২/২০১৯দুঃখজনক
-
জাহিরুল মিলন ২৪/১০/২০১৯হুম
-
মোঃআব্দুল্লাহ্ আল মামুন ২২/১০/২০১৯এরকম হত্যাকাণ্ড জাতি কোনদিন চায়না। এদের বিচার হওয়া দরকার। সেটা দৃষ্টান্তমূলক
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২০/১০/২০১৯মানুষ পশু হচ্ছে।
-
তৈয়বা মনির ১৮/১০/২০১৯চরম নির্মমতা
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ১৮/১০/২০১৯গায়ে কাঁটা দিচ্ছে