সভ্যতা কি তাদের ক্ষমা করবে
তাঁর বক্তব্যে কোনো শান্তির বার্তা নেই, আছে উগ্রতা ও বর্ণবাদের উস্কানি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার মন্তব্য করেন, শুধু শ্বেতাঙ্গ ইউরোপীয়দের আমেরিকায় অভিবাসী হিসেবে আসতে দেওয়া উচিত। গত ১১ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে কংগ্রেসের একটি দ্বিপক্ষীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি আরো বলেন, হাইতি ও আফ্রিকার মতো ‘জঘন্য’ (তাঁর ভাষায় ‘শিটহোল’) দেশ থেকে মানুষদের কেন আমরা আমেরিকায় আসতে দিচ্ছি? তিনি আরো যোগ করেন, আমাদের উচিত নরওয়ের মতো দেশ থেকে লোকদের আসতে দেওয়া। এশিয়া থেকে আরও অধিক সংখ্যায় অভিবাসী আগমনের পক্ষেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের এমন বক্তব্য বিশ্ববাসী গ্রহণ করতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেও তার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। কংগ্রেসের ডেমোক্রেট সদস্যরা ট্রাম্পের মন্তব্যকে বর্ণবাদী বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। কংগ্রেসের ‘ব্ল্যাক ককাস’ যা কৃষ্ণকায় সদস্যদের গ্রুপের প্রধান সেড্রিক রিচমন্ড বলেছেন, এখন আর কোনো সন্দেহ নেই যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন বলেন, ‘আমেরিকাকে আবার মহান কর’, তাঁর সে কথার অর্থ, ‘আমেরিকাকে আবার শুধু সাদাদের দেশ কর।’ উল্লেখ্য যে, হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের সত্যতা অস্বীকার করা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের একদল রাজনীতিক যেখানে বিদেশের জন্য লড়তে প্রস্তুত, সেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সবসময় আমেরিকান মানুষদের জন্য লড়াই করছেন। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস থেকে আরো বলা হয়, প্রেসিডেন্ট চান, মার্কিন অভিবাসন ব্যবস্থার সংস্কার, যার অধীনে বিদেশিদের ঢালাও আগমনের অনুমতি প্রদানের বদলে তাদের গুণাবলীর ভিত্তিতে আসতে দেওয়া হবে।
প্রশ্ন জাগে, ট্রাম্পের আগের সরকারগুলোর সময়ও কি আমেরিকায় ঢালাওভাবে অভিবাসীদের যাওয়ার সুযোগ ছিল? ছিল না। নানা বিধি-বিধান ও বাধা-নিষেধ মেনেই কেউ আমেরিকায় যাওয়ার সুযোগ পেত। আর ট্রাম্প যখন গুণাবলীর কথা বলেন এবং নরওয়েবাসীর পক্ষে এবং আফ্রিকাবাসীর বিপক্ষে মত প্রকাশ করেন, তখন তার শ্বেতাঙ্গপ্রিয়তা তথা বর্ণবাদী মানসিকতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এমন মানসিকতা বিশ্বে শান্তি নয়, বরং অশান্তিই সৃষ্টি করতে পারে। আমরা তার মধ্যে শুভ বোধোদয়ের জন্য প্রার্থনা করি।
ভুল কথা ও ভুল আচরণের জন্য ট্রাম্প বেশ বিতর্কিত হয়ে উঠেছেন।
রয়টার্স পরিবেশিত খবরে বলা হয়, নানা আপত্তি ও সমালোচনার পর যুক্তরাজ্য সফর বাতিল করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাজ্যে নতুন মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের লক্ষ্যে আগামী মাসে এই সফর হওয়ার কথা ছিল। উল্লেখ্য যে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর এক বছর পরও এখনো যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে যাননি ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাজ্য গেলে বড় ধরনের বিক্ষোভের আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
যুক্তরাজ্যে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরে বারাক ওবামা প্রশাসনের কথিত সিদ্ধান্তে আগে থেকেই নাশোখ ছিলেন ট্রাম্প। এবার লন্ডন সফর বাতিলের পেছনে সেই কারণই সামনে আনলেন ট্রাম্প। ভালো স্থান থেকে কমদামি স্থানে দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওবামা প্রশাসন, বৃহস্পতিবার রাতে এমন অভিযোগ তুলে টুইট করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি নতুন দূতাবাস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, লন্ডনের গ্রসভেনর এলাকা থেকে টেমস নদীর দক্ষিণ তীর এলাকায় দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে। আর তিনি তো ট্রাম্পের দলের লোক ছিলেন। ফলে ওবামার বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ টিকছে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত জানুয়ারিতে ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য ভ্রমণ বাতিলের দাবি জানিয়ে বৃটিশ সরকারের উদ্দেশে আবেদন করেছিলেন দেশটির সাধারণ জনগণ। এতে সই করেছিলেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিতর্কিত পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় তাঁকে যুক্তরাজ্যে ঢুকতে দিতে নারাজি জানিয়েছিলেন বৃটিশ নাগরিকরা।
এছাড়া গত নবেম্বরের শেষ সপ্তাহে থেরেসা মেকে উদ্দেশ করে টুইটারে ট্রাম্পের সমালোচনামূলক বক্তব্যে বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গন। দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাল্টা টুইট করেন। আসলে ভুল সিদ্ধান্ত ও ভুল আচরণের কারণে ট্রাম্প ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। বিষয়টি তিনি উপলব্ধি করলে মঙ্গল হয়।
শুধু ট্রাম্প নয়, ভুল আচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে ভারতেও। ভারতে বিভিন্ন অভিজাত স্কুলে ও মুসলিম ছেলে-মেয়েরা তাদের ধর্মের কারণে ক্রমবর্ধমান হয়রানির লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে। নাজিয়া ইরাম নামে একজন লেখিকা তার এক গবেষণামূলক গ্রন্থে এ কথা বলেছেন। বিবিসির রিপোর্টে আরও বলা হয়, ভারতের ১২টি শহরে ১৪৫টি পরিবার এবং রাজধানী দিল্লীর ২৫টি অভিজাত স্কুলের ১০০ জন ছাত্র-ছাত্রীর সাথে কথা বলেছেন ওই লেখিকা। তিনি বলেছেন, এমনকি পাঁচ বছরের শিশুও এসব হয়রানির লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে। ভারতে এবং বিশ্বে ইসলাম-ফোবিয়া ক্রমে বাড়তে থাকার পটভূমিতেই এটি ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে। নাজিয়া ইরাম বলেন, তিনি তার গবেষণাতে যা পেয়েছেন তা তাকে স্তম্ভিত করেছে।
নাজিয়া বলেন, যখন পাঁচ-ছয় বছরের বাচ্চারা বলে তাদের ‘পাকিস্তানী’ বা ‘সন্ত্রাসী’ বলে ডাকা হচ্ছে, তখন আপনি তার কী জবাব দেবেন? এটা আসলে উৎপীড়ন। নাজিয়া তার গ্রন্থে যেসব শিশুর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারা বলেছে এমন কিছু মন্তব্য বা প্রশ্ন আছে যা প্রায়ই তাদের দিকে ছুঁড়ে দেয়া হয়। যেমন- ‘তুমি কি একজন মুসলিম?’ ‘আমি মুসলিমদের ঘৃণা করি।’ ‘তোমার বাবা-মা কি বাড়িতে বোমা বানায়?’ ‘তোমার বাবা কি তালেবানের অংশ’। নাজিয়ার বইটি বের হওয়ার পর থেকেই স্কুলগুলোতে ধর্মীয় ঘৃণা এবং বিরূপ ধারণা কতটা আছে তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে। নাজিয়া বলেছেন, তার প্রথম মেয়েশিশু জন্মের পরই তিনি প্রথম ভয় পেলেন। তিনি তাকে কোন পরিচিত মুসলিম নাম দেয়া নিয়েও উদ্বিগ্ন ছিলেন। এরপর থেকে মুসলিম পরিচয় ছাড়া অন্য সব পরিচয়ই যেন গৌন হয়ে গেছে।
ভারতের নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই মুসলমানদের আগ্রাসনকারী, জাতীয়তাবিরোধী এবং জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি বলে চিত্রিত করতে থাকে। টেলিভিশনে নানা তর্ক-বিতর্কে এই বিভেদ আরো গভীর হয়। আর এখন তা বড়দের থেকে ছোট বাচ্চাদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। এমন দৃশ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বর্ণ-জাতি-ধর্ম নিয়ে এমন ঘটনা ঘটলে একে বলা হচ্ছে ‘ট্রাম্প এফেক্ট’। তা হলে ভারতে যা ঘটছে তাকে কি বলা যায় ‘মোদি এফেক্ট’। এমন প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন লেখিকা নাজিয়া ইরাম। ভাবতে অবাক লাগে এ কোন সভ্যতায় এখন আমাদের বসবাস?
ট্রাম্পের এমন বক্তব্য বিশ্ববাসী গ্রহণ করতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেও তার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। কংগ্রেসের ডেমোক্রেট সদস্যরা ট্রাম্পের মন্তব্যকে বর্ণবাদী বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। কংগ্রেসের ‘ব্ল্যাক ককাস’ যা কৃষ্ণকায় সদস্যদের গ্রুপের প্রধান সেড্রিক রিচমন্ড বলেছেন, এখন আর কোনো সন্দেহ নেই যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন বলেন, ‘আমেরিকাকে আবার মহান কর’, তাঁর সে কথার অর্থ, ‘আমেরিকাকে আবার শুধু সাদাদের দেশ কর।’ উল্লেখ্য যে, হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের সত্যতা অস্বীকার করা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের একদল রাজনীতিক যেখানে বিদেশের জন্য লড়তে প্রস্তুত, সেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সবসময় আমেরিকান মানুষদের জন্য লড়াই করছেন। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস থেকে আরো বলা হয়, প্রেসিডেন্ট চান, মার্কিন অভিবাসন ব্যবস্থার সংস্কার, যার অধীনে বিদেশিদের ঢালাও আগমনের অনুমতি প্রদানের বদলে তাদের গুণাবলীর ভিত্তিতে আসতে দেওয়া হবে।
প্রশ্ন জাগে, ট্রাম্পের আগের সরকারগুলোর সময়ও কি আমেরিকায় ঢালাওভাবে অভিবাসীদের যাওয়ার সুযোগ ছিল? ছিল না। নানা বিধি-বিধান ও বাধা-নিষেধ মেনেই কেউ আমেরিকায় যাওয়ার সুযোগ পেত। আর ট্রাম্প যখন গুণাবলীর কথা বলেন এবং নরওয়েবাসীর পক্ষে এবং আফ্রিকাবাসীর বিপক্ষে মত প্রকাশ করেন, তখন তার শ্বেতাঙ্গপ্রিয়তা তথা বর্ণবাদী মানসিকতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এমন মানসিকতা বিশ্বে শান্তি নয়, বরং অশান্তিই সৃষ্টি করতে পারে। আমরা তার মধ্যে শুভ বোধোদয়ের জন্য প্রার্থনা করি।
ভুল কথা ও ভুল আচরণের জন্য ট্রাম্প বেশ বিতর্কিত হয়ে উঠেছেন।
রয়টার্স পরিবেশিত খবরে বলা হয়, নানা আপত্তি ও সমালোচনার পর যুক্তরাজ্য সফর বাতিল করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাজ্যে নতুন মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের লক্ষ্যে আগামী মাসে এই সফর হওয়ার কথা ছিল। উল্লেখ্য যে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর এক বছর পরও এখনো যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে যাননি ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাজ্য গেলে বড় ধরনের বিক্ষোভের আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
যুক্তরাজ্যে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরে বারাক ওবামা প্রশাসনের কথিত সিদ্ধান্তে আগে থেকেই নাশোখ ছিলেন ট্রাম্প। এবার লন্ডন সফর বাতিলের পেছনে সেই কারণই সামনে আনলেন ট্রাম্প। ভালো স্থান থেকে কমদামি স্থানে দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওবামা প্রশাসন, বৃহস্পতিবার রাতে এমন অভিযোগ তুলে টুইট করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি নতুন দূতাবাস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, লন্ডনের গ্রসভেনর এলাকা থেকে টেমস নদীর দক্ষিণ তীর এলাকায় দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে। আর তিনি তো ট্রাম্পের দলের লোক ছিলেন। ফলে ওবামার বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ টিকছে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত জানুয়ারিতে ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য ভ্রমণ বাতিলের দাবি জানিয়ে বৃটিশ সরকারের উদ্দেশে আবেদন করেছিলেন দেশটির সাধারণ জনগণ। এতে সই করেছিলেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিতর্কিত পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় তাঁকে যুক্তরাজ্যে ঢুকতে দিতে নারাজি জানিয়েছিলেন বৃটিশ নাগরিকরা।
এছাড়া গত নবেম্বরের শেষ সপ্তাহে থেরেসা মেকে উদ্দেশ করে টুইটারে ট্রাম্পের সমালোচনামূলক বক্তব্যে বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গন। দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাল্টা টুইট করেন। আসলে ভুল সিদ্ধান্ত ও ভুল আচরণের কারণে ট্রাম্প ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন। বিষয়টি তিনি উপলব্ধি করলে মঙ্গল হয়।
শুধু ট্রাম্প নয়, ভুল আচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে ভারতেও। ভারতে বিভিন্ন অভিজাত স্কুলে ও মুসলিম ছেলে-মেয়েরা তাদের ধর্মের কারণে ক্রমবর্ধমান হয়রানির লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে। নাজিয়া ইরাম নামে একজন লেখিকা তার এক গবেষণামূলক গ্রন্থে এ কথা বলেছেন। বিবিসির রিপোর্টে আরও বলা হয়, ভারতের ১২টি শহরে ১৪৫টি পরিবার এবং রাজধানী দিল্লীর ২৫টি অভিজাত স্কুলের ১০০ জন ছাত্র-ছাত্রীর সাথে কথা বলেছেন ওই লেখিকা। তিনি বলেছেন, এমনকি পাঁচ বছরের শিশুও এসব হয়রানির লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে। ভারতে এবং বিশ্বে ইসলাম-ফোবিয়া ক্রমে বাড়তে থাকার পটভূমিতেই এটি ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে। নাজিয়া ইরাম বলেন, তিনি তার গবেষণাতে যা পেয়েছেন তা তাকে স্তম্ভিত করেছে।
নাজিয়া বলেন, যখন পাঁচ-ছয় বছরের বাচ্চারা বলে তাদের ‘পাকিস্তানী’ বা ‘সন্ত্রাসী’ বলে ডাকা হচ্ছে, তখন আপনি তার কী জবাব দেবেন? এটা আসলে উৎপীড়ন। নাজিয়া তার গ্রন্থে যেসব শিশুর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারা বলেছে এমন কিছু মন্তব্য বা প্রশ্ন আছে যা প্রায়ই তাদের দিকে ছুঁড়ে দেয়া হয়। যেমন- ‘তুমি কি একজন মুসলিম?’ ‘আমি মুসলিমদের ঘৃণা করি।’ ‘তোমার বাবা-মা কি বাড়িতে বোমা বানায়?’ ‘তোমার বাবা কি তালেবানের অংশ’। নাজিয়ার বইটি বের হওয়ার পর থেকেই স্কুলগুলোতে ধর্মীয় ঘৃণা এবং বিরূপ ধারণা কতটা আছে তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়েছে। নাজিয়া বলেছেন, তার প্রথম মেয়েশিশু জন্মের পরই তিনি প্রথম ভয় পেলেন। তিনি তাকে কোন পরিচিত মুসলিম নাম দেয়া নিয়েও উদ্বিগ্ন ছিলেন। এরপর থেকে মুসলিম পরিচয় ছাড়া অন্য সব পরিচয়ই যেন গৌন হয়ে গেছে।
ভারতের নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই মুসলমানদের আগ্রাসনকারী, জাতীয়তাবিরোধী এবং জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি বলে চিত্রিত করতে থাকে। টেলিভিশনে নানা তর্ক-বিতর্কে এই বিভেদ আরো গভীর হয়। আর এখন তা বড়দের থেকে ছোট বাচ্চাদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। এমন দৃশ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বর্ণ-জাতি-ধর্ম নিয়ে এমন ঘটনা ঘটলে একে বলা হচ্ছে ‘ট্রাম্প এফেক্ট’। তা হলে ভারতে যা ঘটছে তাকে কি বলা যায় ‘মোদি এফেক্ট’। এমন প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন লেখিকা নাজিয়া ইরাম। ভাবতে অবাক লাগে এ কোন সভ্যতায় এখন আমাদের বসবাস?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
পবিত্র রায় ০৬/০২/২০১৮চমৎকার
-
দীপঙ্কর বেরা ০২/০২/২০১৮ঠিক কথা
-
কামরুজ্জামান সাদ ২২/০১/২০১৮নগ্ন সভ্যতা ক্ষমা বোঝে তো!