অসহায় মানবতা ২
সূত্রে প্রকাশ, শত শত বছর আগে থেকে রোহিঙ্গারা বার্মায় নাগরিকত্ব সমেত বসবাস করে আসছে। হঠাৎ করে ১৯৮২ সালে এক বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদেরকে বার্মার নাগরিকত্ব থেকে বাদ দেওয়া হয়। তখন থেকেই রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ববিহীন বার্মায় বসবাস করে আসছে। এই আইনের বদৌলতে রোহিঙ্গাদেরকে স্টেটলেস বা ভাসমান জনগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। এই আইনের আগে রোহিঙ্গাদের ইতিহাস ছিল খুবই সমৃদ্ধ। অনেক রোহিঙ্গা মুসলমান সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ পদে আসীন ছিল। এমনকি সু চির বাবা জেনারেল অং সানের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক সহযোগী ছিলেন একজন মুসলমান, যার নাম আবদুর রাজ্জাক। রাজ্জাক তখন বার্মা মুসলিম লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন। জেনারেল অং সানের গঠিত বার্মার স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী অন্তবর্তীকালীণ মন্ত্রিসভার শিক্ষা ও পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন রাজ্জাক এবং ১৯৪৭-এর ১৯ জুলাই জেনারেল অং সানের সঙ্গে যে ছয়জন মন্ত্রী খুন হয়েছিলেন, তাদের অন্যতম ছিলেন তিনি। আজও বার্মা ১৯ জুলাই রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘শহীদ দিবস’ হিসেবেই পালন করে থাকে। সু চি কীভাবে শহীদ দিবসের স্মৃতিগাথা থেকে রাজ্জাকের নাম মুছবেন?
কেবল আবদুল রাজ্জাকই নন, সু চির বাবা জেনারেল অং সানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগীদের মধ্যে আরও অনেকেই রোহিঙ্গা মুসলিম ছিলেন। তাছাড়া সেসময়ের ছাত্র রাজনীতির নিয়ন্ত্রক তথা অল বর্মা স্টুডেন্ট ইউনিয়ন আর রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র-ছাত্রী সংসদকে সংক্ষেপে বলা হতো আরইউএসইউ। আরইউএসইউ প্রতিষ্ঠার বছরই (১৯৩০) তাতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এম এ রাশিদ নামে এক মুসলিম রাজনীতিবিদ। যিনি ছিলেন জেনারেল অং সান এর ঘনিষ্ট বন্ধু এবং রাজনৈতিক সহযোদ্ধা। অং সান আরইউএসইউতে ১৯৩৬ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন আর সে বছর তাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন এম এ রাশিদ। উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে বার্মার সংবিধানের অন্যতম খসড়াকারীও ছিলেন রাশিদ। পরবর্তীকালে তিনি দেশটির শ্রমমন্ত্রীও হন।
অথচ আজ সেই অংসানের কন্যা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব এবং বার্মাতে রোহিঙ্গাদের অস্থিত্ব অস্বীকার করছেন। যে সামরিক সরকার তাকে দীর্ঘদিন গৃহবন্দী করে রেখেছিল আজ সেই সামরিক সরকারের সুরেই তিনি কথা বলছেন। রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা নামে না ডাকতে অন্যকে অনুরোধ করছেন। পরিচালনা করছেন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস হত্যাকান্ড।
এরমাধ্যমে অংসান সুচি শুধুমাত্র রোহিঙ্গা জাতীকে বিনষ্ট করছেনা, সম্মানহানী করছেন তার পিতাকে। রোহিঙ্গাদেরকে নানা উপায়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে এনভিসি নিতে। বর্তমানে যারা বার্মা থেকে বাংলাদেশে যাচ্ছে তারা একপ্রকার নিরুপায় হয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করছে। আর যারা এখনো শত অত্যাচার সহ্য করে স্বদেশে থেকে গেছে তারাও এক ধরনের অসহায় আত্মসমর্পণ করে এনভিসি নিতে বাধ্য হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে, তাদেরকে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে না দেওয়া। নিজ এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় যাওয়ার জন্য রয়েছে অনেক বিধি-নিষেধ। চাষাবাদ করতে দেওয়া হচ্ছেনা এমনকি চাষকৃত জমি থেকে শষ্য সংগ্রহও করতে দিচ্ছেনা প্রশাসন। কিছুদিন আগে সরকার নির্দেশ দিয়েছে যে রোহিঙ্গাদের আবাদকৃত শষ্য কেটে নিতে। খাদ্য অবরোধ করে রেখে রোহিঙ্গাদের ভাতে মারা হচ্ছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় কোন খাদ্য পণ্য আসতে দেওয়া হচ্ছেনা এবং অন্য এলাকায় গিয়েও খাদ্যপণ্য সংগ্রহ করতে দিচ্ছেনা প্রশাসন। জেলে পেশার রোহিঙ্গাদের জাল, বোট কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সাগরে যেতে দিচ্ছেনা। বাড়ি থেকে ধরে এনে একপ্রকার অস্ত্রের মুখে ছবি তুলে এনভিসি ধরিয়ে দিচ্ছে। এমনও বলছে যে, হয় এনভিসি নাও না হয় বাংলাদেশে যাও। অনেকেই এ কারণে বাংলাদেশে চলে যাচ্ছেন আবার অনেকেই স্বদেশে থেকে এনভিসি নিয়ে নিচ্ছেন।
রোহিঙ্গাদেরকে এনভিসি ধরিয়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে তাদেরকে বার্মার নাগরিক নয় বরং অভিবাসী হিসেবে সাব্যস্ত করা। বার্মা সরকার তাদের দেশীয় নিউজ চ্যানেলে এমনও প্রচার করছে যে, রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় এনভিসি নিচ্ছে এতে করে তারা নিজেরাই স্বীকার করছে যে তারা বার্মার নাগরিক নয় বরং অভিবাসী হিসেবে বার্মায় বসবাস করছে।
এর ফলে বার্মা সরকার এবং সামরিক বাহিনীর দীর্ঘদিনের যে পরিকল্পনা, রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত রাখা তাকে দৃঢ়তার সাথে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্যই মূলত রোহিঙ্গাদেরকে এনভিসি নিতে এত বাধ্যবাধকতা করছে সরকার এবং প্রশাসন।
এ কারণে যারা বর্তমানে আরাকানে অবস্থান করছেন তাদেরকে হতে হবে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তাদেরকে সরকারের চলছাতুরি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেন বার্মা সরকার কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে না পারে।
কেবল আবদুল রাজ্জাকই নন, সু চির বাবা জেনারেল অং সানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগীদের মধ্যে আরও অনেকেই রোহিঙ্গা মুসলিম ছিলেন। তাছাড়া সেসময়ের ছাত্র রাজনীতির নিয়ন্ত্রক তথা অল বর্মা স্টুডেন্ট ইউনিয়ন আর রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র-ছাত্রী সংসদকে সংক্ষেপে বলা হতো আরইউএসইউ। আরইউএসইউ প্রতিষ্ঠার বছরই (১৯৩০) তাতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এম এ রাশিদ নামে এক মুসলিম রাজনীতিবিদ। যিনি ছিলেন জেনারেল অং সান এর ঘনিষ্ট বন্ধু এবং রাজনৈতিক সহযোদ্ধা। অং সান আরইউএসইউতে ১৯৩৬ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন আর সে বছর তাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন এম এ রাশিদ। উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে বার্মার সংবিধানের অন্যতম খসড়াকারীও ছিলেন রাশিদ। পরবর্তীকালে তিনি দেশটির শ্রমমন্ত্রীও হন।
অথচ আজ সেই অংসানের কন্যা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব এবং বার্মাতে রোহিঙ্গাদের অস্থিত্ব অস্বীকার করছেন। যে সামরিক সরকার তাকে দীর্ঘদিন গৃহবন্দী করে রেখেছিল আজ সেই সামরিক সরকারের সুরেই তিনি কথা বলছেন। রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা নামে না ডাকতে অন্যকে অনুরোধ করছেন। পরিচালনা করছেন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস হত্যাকান্ড।
এরমাধ্যমে অংসান সুচি শুধুমাত্র রোহিঙ্গা জাতীকে বিনষ্ট করছেনা, সম্মানহানী করছেন তার পিতাকে। রোহিঙ্গাদেরকে নানা উপায়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে এনভিসি নিতে। বর্তমানে যারা বার্মা থেকে বাংলাদেশে যাচ্ছে তারা একপ্রকার নিরুপায় হয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করছে। আর যারা এখনো শত অত্যাচার সহ্য করে স্বদেশে থেকে গেছে তারাও এক ধরনের অসহায় আত্মসমর্পণ করে এনভিসি নিতে বাধ্য হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে, তাদেরকে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে না দেওয়া। নিজ এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় যাওয়ার জন্য রয়েছে অনেক বিধি-নিষেধ। চাষাবাদ করতে দেওয়া হচ্ছেনা এমনকি চাষকৃত জমি থেকে শষ্য সংগ্রহও করতে দিচ্ছেনা প্রশাসন। কিছুদিন আগে সরকার নির্দেশ দিয়েছে যে রোহিঙ্গাদের আবাদকৃত শষ্য কেটে নিতে। খাদ্য অবরোধ করে রেখে রোহিঙ্গাদের ভাতে মারা হচ্ছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় কোন খাদ্য পণ্য আসতে দেওয়া হচ্ছেনা এবং অন্য এলাকায় গিয়েও খাদ্যপণ্য সংগ্রহ করতে দিচ্ছেনা প্রশাসন। জেলে পেশার রোহিঙ্গাদের জাল, বোট কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সাগরে যেতে দিচ্ছেনা। বাড়ি থেকে ধরে এনে একপ্রকার অস্ত্রের মুখে ছবি তুলে এনভিসি ধরিয়ে দিচ্ছে। এমনও বলছে যে, হয় এনভিসি নাও না হয় বাংলাদেশে যাও। অনেকেই এ কারণে বাংলাদেশে চলে যাচ্ছেন আবার অনেকেই স্বদেশে থেকে এনভিসি নিয়ে নিচ্ছেন।
রোহিঙ্গাদেরকে এনভিসি ধরিয়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে তাদেরকে বার্মার নাগরিক নয় বরং অভিবাসী হিসেবে সাব্যস্ত করা। বার্মা সরকার তাদের দেশীয় নিউজ চ্যানেলে এমনও প্রচার করছে যে, রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় এনভিসি নিচ্ছে এতে করে তারা নিজেরাই স্বীকার করছে যে তারা বার্মার নাগরিক নয় বরং অভিবাসী হিসেবে বার্মায় বসবাস করছে।
এর ফলে বার্মা সরকার এবং সামরিক বাহিনীর দীর্ঘদিনের যে পরিকল্পনা, রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত রাখা তাকে দৃঢ়তার সাথে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্যই মূলত রোহিঙ্গাদেরকে এনভিসি নিতে এত বাধ্যবাধকতা করছে সরকার এবং প্রশাসন।
এ কারণে যারা বর্তমানে আরাকানে অবস্থান করছেন তাদেরকে হতে হবে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তাদেরকে সরকারের চলছাতুরি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেন বার্মা সরকার কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে না পারে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
তনুর ভাই ১৬/১১/২০১৭মানুষের মানবতা সবকালেই ছিল,কেবল এই কালেই নাই।
-
Mahbubur Rahman ১২/১১/২০১৭ভালো লেগেছে । আরো কিছু তথ্য দরকার
-
Mahbubur Rahman ১০/১১/২০১৭Very informative
-
সাঁঝের তারা ০৯/১১/২০১৭তথ্যপূর্ণ ...
-
সুজয় সরকার ০৮/১১/২০১৭সু চি-র শান্তির নোবেলে রোহিঙ্গাদের রক্তের ছিটে।
-
সোলাইমান ০৮/১১/২০১৭হুম।।
-
কামরুজ্জামান সাদ ০৮/১১/২০১৭রোহিঙ্গা সমস্যা গলার কাঁটা না হলেই হলো