পুলিশ
গত ২৫ অক্টোবর বুধবার কক্সবাজারের টেকনাফে ১৭ লাখ টাকাসহ ডিবি পুলিশের ৭ সদস্য সেনাসদস্যদের হাতে গ্রেফতার হয়। ফরিদপুর জেলার পুলিশ সুপার সুভাষসিংহ রায়ের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ৮ কোটি টাকা অর্জন করবার অভিযোগের পর পুলিশের ভাবমর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫ অনুযায়ী অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এছাড়া সদর দফতর পুলিশের বিরুদ্ধে আইন- শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যর্থতা, সন্ত্রাসীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগসূত্র, চাঁদাবাজি, দলবাজি ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুলিশ সদর দফতর অভিযুক্ত সদস্যদের গুরুদণ্ড না দিয়ে লঘুদণ্ড দেয়। ফৌজদারি মামলার অপরাধ করলেও বেশিরভাগ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দিয়েই ইতিটানা হয়। অনেক সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার বা সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও একপর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলে সময় নিয়ে কৌশলী তদন্ত রিপোর্টের মাধ্যমে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে রক্ষা করা হয়।
মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নূরজাহান খাতুন বলেন, পুলিশ যেকোনও বিষয় গোপন রাখতে পারে বলে তাদের দ্বারা সংঘটিত অনেক অপরাধমূলক কার্যক্রম বাইরে প্রকাশ পায় না। অপরাধী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হয় না বলেই তাদের অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। তবে পুলিশ সদর দফতরের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, একজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অপকর্মের দায়ভার গোটা পুলিশবাহিনী নেবে না। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সব পুলিশ খারাপ তা আমরাও বলছি না। কিন্তু যখন পত্রিকায় রিপোর্ট বেরোয় যে, দেশের পুলিশবাহিনীতে ১৫ হাজারের অধিক সদস্য অভিযুক্ত বা দুর্নীতিগ্রস্ত তখন দুশ্চিন্তা হয় বৈকি। এই বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত হলে জনগণ নিরাপদ থাকতে পারে কি? অপরাধ বিশেষজ্ঞরা নিশ্চয়ই ভাবছেন এনিয়ে।
পুলিশের সব অভিযোগ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছেও না। সাধারণ মানুষ দূরে থাক অনেক শিক্ষিত লোকও পুলিশকে এড়িয়ে চলেন। কারণ হলো পুলিশ মানেই ঝামেলা। ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ একথা এদেশের মানুষ এখনও ভাবতে পারেন না। সত্যি বলতে কী, পুলিশ জনগণের বন্ধু এমন কালচার চালু হতে আরও অনেক যুগ লাগবে। চোর-ডাকাত, ছেচ্চরতো বটেই সাধারণ নিরপরাধ মানুষও পুলিশ এড়িয়ে চলে। কথায় বলে, ‘বাঘে ধরলে এক ঘা, কিন্তু পুলিশে ধরলে সাত ঘা’। কাজেই পুলিশের কাছে সাধারণ মানুষ এখনও সহজে যায় না। পুলিশ সম্পর্কে আমাদের জনগণের এমন ধারণাই প্রবল। পুলিশ সম্পর্কে মানুষের এমন নেতিবাচক মনোভাব নিরসন করতে হবে পুলিশকেই।
আগে সরকারি কর্মচারীদের মতো পুলিশের বেতনও কম ছিল। এখন যেমন সরকারি সিভিল সার্ভিস কর্মচারীদের বেতন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে, তেমনই পুলিশের বেতনও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই দুর্নীতি না করেও তারা দিব্যি সংসার চালিয়ে নিতে পারেন। তবে বেতনের টাকায় পুলিশ সুপার সুভাষসিংহ রায়ের মতো রাতারাতি ৮ কোটি টাকা ব্যাংক একাউন্টে নিশ্চয়ই জমা হবে না। শুধু সুভাষসিংহ রায় একা নয়, খোঁজ-খবর নিলে দুদক আরও অনেককেই পেয়ে যাবে, যারা সরকারি বেতন ছাড়াও অঢেল অর্থবিত্তের মালিক বনেছেন। করেছেন একাধিক বাড়ি-গাড়িও।
যা হোক, পুলিশ আমাদের নিরাপত্তার জন্য। জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব এই পুলিশের। রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষার ভারও পুলিশেরই। এজন্য পুলিশকে বেতন দেয়া হয়। ঢের সুযোগ-সুবিধাও দেয়া হয় পুলিশকে। এ অর্থ আসে কোত্থেকে? জনগণের দেয়া ট্যাক্স থেকে। কাজেই পুলিশ জনগণের সেবক। জনগণ পুলিশের সেবক নয়। কিন্তু পুলিশের কোনও কোনও সদস্য কখনও কখনও জনগণের সঙ্গে এমন আচরণ করেন যা দেখে মনে হয় পুলিশই যেন জনগণের প্রভু। এটাই দুর্ভাগ্যজনক।
পুলিশ আইনপ্রয়োগকারী। সমাজে অনেকে আছেন যারা আইন-কানুন থোড়াই কেয়ার করেন। 'জোর যার মুল্লুক তার' এমন বর্বর ধারণাও কেউ কেউ পোষণ করেন। শক্তি খাটিয়ে বা কৌশল করে সবকিছু নিজে কুক্ষিগত করবার মানসিকতা অনেকের আছে। এদের দমন করতেই পুলিশ সৃষ্টি হয়। কিন্তু পুলিশ এখন মানুষের ভয়ের কারণ। কেন, পুলিশের তো এমন হবার কথা নয়।
পুলিশ হচ্ছে বেড়া। কৃষকের ক্ষেতরক্ষার জন্য বেড়া দিতে হয়, যাতে গরু-ছাগল খেয়ে না ফেলে। আর বেড়াটা হতে হয় মজবুত। পুলিশবাহিনী হচ্ছে আমাদের জান-মাল রক্ষার বেড়া। তাই এ বেড়া যেন শারীরিক, মানসিক ও চারিত্রিকভাবে মজবুত এবং উপযুক্ত হয় তা নিয়োগের সময়ই যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে। দিতে হবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও। অন্যথায় এখন যেমন পুলিশবাহিনীতে অভিযুক্তের সংখ্যা ১৫ হাজারের অধিক ; ভবিষ্যতে এসংখ্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। কাজেই বেড়া ঠিক না করতে পারলে আমাদের ক্ষেত নিরাপদ থাকবে না। অতএব ক্ষেতখোর বেড়া আগে ঠিকঠাক করে নিতে হবে। তারপর ভালো ফসলের প্রত্যাশা করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫ অনুযায়ী অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এছাড়া সদর দফতর পুলিশের বিরুদ্ধে আইন- শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যর্থতা, সন্ত্রাসীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগসূত্র, চাঁদাবাজি, দলবাজি ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুলিশ সদর দফতর অভিযুক্ত সদস্যদের গুরুদণ্ড না দিয়ে লঘুদণ্ড দেয়। ফৌজদারি মামলার অপরাধ করলেও বেশিরভাগ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দিয়েই ইতিটানা হয়। অনেক সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার বা সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও একপর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলে সময় নিয়ে কৌশলী তদন্ত রিপোর্টের মাধ্যমে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে রক্ষা করা হয়।
মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নূরজাহান খাতুন বলেন, পুলিশ যেকোনও বিষয় গোপন রাখতে পারে বলে তাদের দ্বারা সংঘটিত অনেক অপরাধমূলক কার্যক্রম বাইরে প্রকাশ পায় না। অপরাধী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হয় না বলেই তাদের অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। তবে পুলিশ সদর দফতরের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, একজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অপকর্মের দায়ভার গোটা পুলিশবাহিনী নেবে না। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সব পুলিশ খারাপ তা আমরাও বলছি না। কিন্তু যখন পত্রিকায় রিপোর্ট বেরোয় যে, দেশের পুলিশবাহিনীতে ১৫ হাজারের অধিক সদস্য অভিযুক্ত বা দুর্নীতিগ্রস্ত তখন দুশ্চিন্তা হয় বৈকি। এই বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত হলে জনগণ নিরাপদ থাকতে পারে কি? অপরাধ বিশেষজ্ঞরা নিশ্চয়ই ভাবছেন এনিয়ে।
পুলিশের সব অভিযোগ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছেও না। সাধারণ মানুষ দূরে থাক অনেক শিক্ষিত লোকও পুলিশকে এড়িয়ে চলেন। কারণ হলো পুলিশ মানেই ঝামেলা। ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু’ একথা এদেশের মানুষ এখনও ভাবতে পারেন না। সত্যি বলতে কী, পুলিশ জনগণের বন্ধু এমন কালচার চালু হতে আরও অনেক যুগ লাগবে। চোর-ডাকাত, ছেচ্চরতো বটেই সাধারণ নিরপরাধ মানুষও পুলিশ এড়িয়ে চলে। কথায় বলে, ‘বাঘে ধরলে এক ঘা, কিন্তু পুলিশে ধরলে সাত ঘা’। কাজেই পুলিশের কাছে সাধারণ মানুষ এখনও সহজে যায় না। পুলিশ সম্পর্কে আমাদের জনগণের এমন ধারণাই প্রবল। পুলিশ সম্পর্কে মানুষের এমন নেতিবাচক মনোভাব নিরসন করতে হবে পুলিশকেই।
আগে সরকারি কর্মচারীদের মতো পুলিশের বেতনও কম ছিল। এখন যেমন সরকারি সিভিল সার্ভিস কর্মচারীদের বেতন লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে, তেমনই পুলিশের বেতনও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই দুর্নীতি না করেও তারা দিব্যি সংসার চালিয়ে নিতে পারেন। তবে বেতনের টাকায় পুলিশ সুপার সুভাষসিংহ রায়ের মতো রাতারাতি ৮ কোটি টাকা ব্যাংক একাউন্টে নিশ্চয়ই জমা হবে না। শুধু সুভাষসিংহ রায় একা নয়, খোঁজ-খবর নিলে দুদক আরও অনেককেই পেয়ে যাবে, যারা সরকারি বেতন ছাড়াও অঢেল অর্থবিত্তের মালিক বনেছেন। করেছেন একাধিক বাড়ি-গাড়িও।
যা হোক, পুলিশ আমাদের নিরাপত্তার জন্য। জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব এই পুলিশের। রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষার ভারও পুলিশেরই। এজন্য পুলিশকে বেতন দেয়া হয়। ঢের সুযোগ-সুবিধাও দেয়া হয় পুলিশকে। এ অর্থ আসে কোত্থেকে? জনগণের দেয়া ট্যাক্স থেকে। কাজেই পুলিশ জনগণের সেবক। জনগণ পুলিশের সেবক নয়। কিন্তু পুলিশের কোনও কোনও সদস্য কখনও কখনও জনগণের সঙ্গে এমন আচরণ করেন যা দেখে মনে হয় পুলিশই যেন জনগণের প্রভু। এটাই দুর্ভাগ্যজনক।
পুলিশ আইনপ্রয়োগকারী। সমাজে অনেকে আছেন যারা আইন-কানুন থোড়াই কেয়ার করেন। 'জোর যার মুল্লুক তার' এমন বর্বর ধারণাও কেউ কেউ পোষণ করেন। শক্তি খাটিয়ে বা কৌশল করে সবকিছু নিজে কুক্ষিগত করবার মানসিকতা অনেকের আছে। এদের দমন করতেই পুলিশ সৃষ্টি হয়। কিন্তু পুলিশ এখন মানুষের ভয়ের কারণ। কেন, পুলিশের তো এমন হবার কথা নয়।
পুলিশ হচ্ছে বেড়া। কৃষকের ক্ষেতরক্ষার জন্য বেড়া দিতে হয়, যাতে গরু-ছাগল খেয়ে না ফেলে। আর বেড়াটা হতে হয় মজবুত। পুলিশবাহিনী হচ্ছে আমাদের জান-মাল রক্ষার বেড়া। তাই এ বেড়া যেন শারীরিক, মানসিক ও চারিত্রিকভাবে মজবুত এবং উপযুক্ত হয় তা নিয়োগের সময়ই যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে। দিতে হবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও। অন্যথায় এখন যেমন পুলিশবাহিনীতে অভিযুক্তের সংখ্যা ১৫ হাজারের অধিক ; ভবিষ্যতে এসংখ্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। কাজেই বেড়া ঠিক না করতে পারলে আমাদের ক্ষেত নিরাপদ থাকবে না। অতএব ক্ষেতখোর বেড়া আগে ঠিকঠাক করে নিতে হবে। তারপর ভালো ফসলের প্রত্যাশা করা যেতে পারে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সোলাইমান ০৭/১১/২০১৭বাঃ ।বেশ লিখেছেন কবি বন্ধু।
-
শাহজাদা আল হাবীব ০৬/১১/২০১৭সুন্দর!