চালাকি
রোহিঙ্গা সংকট প্রশ্নে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার জন্য গত ২ অক্টোবর একদিনের সফরে ঢাকায় এসেছিলেন মিয়ানমারের মন্ত্রী খিও টিন্ট সোয়ে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করে গেছেন তিনি। প্রচলিত নিয়মানুযায়ী বৈঠক শেষে যৌথ কোনো সংবাদ সম্মেলন করা বা সাংবাদিকদের কোনো ব্রিফিং দেয়ার পরিবর্তে মন্ত্রী সোয়ে তার দেশে ফিরে গেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী। বৈঠক সফল হয়েছে কিনা- এ ধরনের জিজ্ঞাসার জবাব এড়িয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, মিয়ানমার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু সকলকে নয়, সাম্প্রতিক সংকটের সময়ে আশ্রয় গ্রহণকারীদের মধ্য থেকে দেশটি শুধু সেই সব রোহিঙ্গাকে ফেরৎ নেবে, যাদের কাছে মিয়ানমারের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। মন্ত্রী সোয়ে আরো বলে গেছেন, এসব রোহিঙ্গাকেও ‘যাচাই ও প্রমাণ সাপেক্ষে’ ফিরিয়ে নেয়া হবে। তাদের প্রমাণ করতে হবে, তারা মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ‘প্রকৃত’ নাগরিক।
বিষয়টি নিয়ে সঙ্গত কারণেই গভীর সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, ১৯৮০-র দশকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সামরিক শাসকরা কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ রোহিঙ্গাদের অবার্মিজ হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল। সেই থেকে পর্যায়ক্রমে রোহিঙ্গাদের ওপর নানামুখী নির্যাতন বেড়েছে এবং হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে গত ২৫ আগস্টের পর। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভিযোগ তুলেছে, গত বছরের অক্টোবরে সশস্ত্র রোহিঙ্গারা নাকি বেশ কিছু সামরিক চৌকিতে হামলা চালিয়ে দেশটির অনেক সেনাকে হত্যা করেছে। সেই থেকে শুরু হয়েছে নতুন পর্যায়ের নির্যাতন ও হত্যাকান্ড। এ বছরের আগস্টে তা ভয়ংকর গণহত্যায় রূপ নিয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা একে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এমন অবস্থায় হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের মুখে যে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে তাদের কারো পক্ষেই পরিচয়পত্র ধরনের কোনো কিছু আনা সম্ভব হয়নি, যা দিয়ে প্রমাণ করা যাবে যে, তারা রাখাইন প্রদেশের ‘প্রকৃত’ নাগরিক। অর্থাৎ মিয়ানমার যদি ‘যাচাই ও প্রমাণ সাপেক্ষে’ ফেরৎ নেয়ও তাহলেও নেবে খুব স্বল্পসংখ্যক রোহিঙ্গাকে। অন্যদিকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে থেকে যাবে। তাদের আর কখনো ফেরৎ পাঠানো যাবে না।
একই কারণে রাখাইন প্রদেশের ‘প্রকৃত’ নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার যে আশ্বাস মন্ত্রী টিন্ট সোয়ে দিয়ে গেছেন, সে আশ্বাসের মধ্যে সংকটের স্থায়ী সমাধানের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। বিষয়টিকে বরং মিয়ানমারের প্রতারণাপূর্ণ নতুন কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কথা শুধু এটুকুই নয়। দু’ দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে একটি ‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাকেও যথেষ্ট সন্দেহের চোখেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওয়ার্কিং গ্রুপটি গঠন করবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার এবং পরিকল্পিত এই গ্রুপে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ছাড়া অন্য কোনো দেশ বা আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিকে রাখা যাবে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের কথা এসেছে সুনির্দিষ্টভাবে। অর্থাৎ গ্রুপটিতে জাতিসংঘের কোনো প্রতিনিধিকে রাখা চলবে না। বিশ্বের দেশে দেশে রোহিঙ্গা সংকট যখন প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে এবং নিরাপত্তা পরিষদসহ সম্পূর্ণ জাতিসংঘই যখন বিষয়টিতে সর্বাত্মকভাবে জড়িয়ে পড়েছে, তেমন এক জটিল সময়ে জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে রাখার ব্যাপারে মিয়ানমারের আপত্তি এবং সে প্রস্তাবে বাংলাদেশের সম্মতি নিঃসন্দেহে প্রশ্ন ও সংশয়ের সৃষ্টি করবে। বাস্তবে এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা শুরুও হয়ে গেছে। দেশের ব্যাপকভাবে জনসমর্থিত দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সেদিনই বলেছেন, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। মির্জা আলমগীর একে সরকারের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত করে রোহিঙ্গা প্রশ্নে এখনই জোর কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
আমরাও মনে করি না যে, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনতে পারবে। কারণ, সবে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরপর এ ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘খুব শিগগিরই’ মিয়ানমার সফরে যাবেন। ফলে আরো সময় নষ্ট হতে থাকবে। এ সময়ের মধ্যে প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আসতে থাকবে- যেমনটি আসছে আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে, যেমন এসেছে ওই মন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক চলাকালেও। সুতরাং ধরে নেয়া যায়, দু’ দেশের সরকার যখন ওয়ার্কিং গ্রুপ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে তখন রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা ও নির্যাতনের অভিযান আরো ভয়ংকর হয়ে উঠবে। ফলে ওই গ্রুপের পক্ষে ইতিবাচক কোনো ভূমিকা পালন করাই সম্ভব হবে না। ওদিকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পাশাপাশি তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়ার মতো কোনো দেশকেও বিষয়টিতে জড়িত হতে দেয়া হবে না। তেমন অবস্থায় সকল বিষয়ে শুধু মিয়ানমারের কথাই মেনে নিতে হবে। আর মিয়ানমারের ইচ্ছা ও পরিকল্পনা যে রোহিঙ্গাদেরই জাতিগতভাবে নির্মূল করে ফেলা সে কথা তো এরই মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে।
এ ধরনের সকল কারণেই আমরা মনে করি, মিয়ানমারের মন্ত্রী খিও টিন্ট সোয়ের সঙ্গে দু’জন মন্ত্রীর বৈঠক আসলে কোনো সম্ভাবনার সৃষ্টি করতে পারেনি। মন্ত্রী খিও টিন্ট সোয়ের সফরকালেও সরকার নিজেদের অবস্থানকে ধরে রাখতে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থার সুযোগ নিয়েই মিয়ানমার প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে ঠেলে পাঠাচ্ছে, দেশটির সামরিক হেলিকপ্টার যখন-তখন বাংলাদেশের আকাশ সীমা লংঘন করার ধৃষ্ঠতা দেখাচ্ছে।
আমরা মনে করি, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ৫ দফা সমাধান প্রস্তাব করেছেন। সেটাই সব আলোচনার শর্ত ও ভিত্তি হওয়া প্রয়োজন। আমাদের মন্ত্রী যারা মিয়ানমারের সাথে আলোচনা করেছেন তারা প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফার কথা বোধ হয় ভুলেই গিয়েছিলেন। তাদের আলোচনা ও কথাবার্তায় ৫ দফার প্রসঙ্গ আসেনি।
বিষয়টি নিয়ে সঙ্গত কারণেই গভীর সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, ১৯৮০-র দশকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সামরিক শাসকরা কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ রোহিঙ্গাদের অবার্মিজ হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল। সেই থেকে পর্যায়ক্রমে রোহিঙ্গাদের ওপর নানামুখী নির্যাতন বেড়েছে এবং হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে গত ২৫ আগস্টের পর। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভিযোগ তুলেছে, গত বছরের অক্টোবরে সশস্ত্র রোহিঙ্গারা নাকি বেশ কিছু সামরিক চৌকিতে হামলা চালিয়ে দেশটির অনেক সেনাকে হত্যা করেছে। সেই থেকে শুরু হয়েছে নতুন পর্যায়ের নির্যাতন ও হত্যাকান্ড। এ বছরের আগস্টে তা ভয়ংকর গণহত্যায় রূপ নিয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা একে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এমন অবস্থায় হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের মুখে যে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে তাদের কারো পক্ষেই পরিচয়পত্র ধরনের কোনো কিছু আনা সম্ভব হয়নি, যা দিয়ে প্রমাণ করা যাবে যে, তারা রাখাইন প্রদেশের ‘প্রকৃত’ নাগরিক। অর্থাৎ মিয়ানমার যদি ‘যাচাই ও প্রমাণ সাপেক্ষে’ ফেরৎ নেয়ও তাহলেও নেবে খুব স্বল্পসংখ্যক রোহিঙ্গাকে। অন্যদিকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে থেকে যাবে। তাদের আর কখনো ফেরৎ পাঠানো যাবে না।
একই কারণে রাখাইন প্রদেশের ‘প্রকৃত’ নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার যে আশ্বাস মন্ত্রী টিন্ট সোয়ে দিয়ে গেছেন, সে আশ্বাসের মধ্যে সংকটের স্থায়ী সমাধানের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। বিষয়টিকে বরং মিয়ানমারের প্রতারণাপূর্ণ নতুন কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কথা শুধু এটুকুই নয়। দু’ দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে একটি ‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাকেও যথেষ্ট সন্দেহের চোখেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওয়ার্কিং গ্রুপটি গঠন করবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার এবং পরিকল্পিত এই গ্রুপে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ছাড়া অন্য কোনো দেশ বা আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিকে রাখা যাবে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের কথা এসেছে সুনির্দিষ্টভাবে। অর্থাৎ গ্রুপটিতে জাতিসংঘের কোনো প্রতিনিধিকে রাখা চলবে না। বিশ্বের দেশে দেশে রোহিঙ্গা সংকট যখন প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে এবং নিরাপত্তা পরিষদসহ সম্পূর্ণ জাতিসংঘই যখন বিষয়টিতে সর্বাত্মকভাবে জড়িয়ে পড়েছে, তেমন এক জটিল সময়ে জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে রাখার ব্যাপারে মিয়ানমারের আপত্তি এবং সে প্রস্তাবে বাংলাদেশের সম্মতি নিঃসন্দেহে প্রশ্ন ও সংশয়ের সৃষ্টি করবে। বাস্তবে এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা শুরুও হয়ে গেছে। দেশের ব্যাপকভাবে জনসমর্থিত দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সেদিনই বলেছেন, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। মির্জা আলমগীর একে সরকারের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত করে রোহিঙ্গা প্রশ্নে এখনই জোর কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
আমরাও মনে করি না যে, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনতে পারবে। কারণ, সবে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরপর এ ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘খুব শিগগিরই’ মিয়ানমার সফরে যাবেন। ফলে আরো সময় নষ্ট হতে থাকবে। এ সময়ের মধ্যে প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আসতে থাকবে- যেমনটি আসছে আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে, যেমন এসেছে ওই মন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক চলাকালেও। সুতরাং ধরে নেয়া যায়, দু’ দেশের সরকার যখন ওয়ার্কিং গ্রুপ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে তখন রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা ও নির্যাতনের অভিযান আরো ভয়ংকর হয়ে উঠবে। ফলে ওই গ্রুপের পক্ষে ইতিবাচক কোনো ভূমিকা পালন করাই সম্ভব হবে না। ওদিকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পাশাপাশি তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়ার মতো কোনো দেশকেও বিষয়টিতে জড়িত হতে দেয়া হবে না। তেমন অবস্থায় সকল বিষয়ে শুধু মিয়ানমারের কথাই মেনে নিতে হবে। আর মিয়ানমারের ইচ্ছা ও পরিকল্পনা যে রোহিঙ্গাদেরই জাতিগতভাবে নির্মূল করে ফেলা সে কথা তো এরই মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে।
এ ধরনের সকল কারণেই আমরা মনে করি, মিয়ানমারের মন্ত্রী খিও টিন্ট সোয়ের সঙ্গে দু’জন মন্ত্রীর বৈঠক আসলে কোনো সম্ভাবনার সৃষ্টি করতে পারেনি। মন্ত্রী খিও টিন্ট সোয়ের সফরকালেও সরকার নিজেদের অবস্থানকে ধরে রাখতে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থার সুযোগ নিয়েই মিয়ানমার প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে ঠেলে পাঠাচ্ছে, দেশটির সামরিক হেলিকপ্টার যখন-তখন বাংলাদেশের আকাশ সীমা লংঘন করার ধৃষ্ঠতা দেখাচ্ছে।
আমরা মনে করি, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ৫ দফা সমাধান প্রস্তাব করেছেন। সেটাই সব আলোচনার শর্ত ও ভিত্তি হওয়া প্রয়োজন। আমাদের মন্ত্রী যারা মিয়ানমারের সাথে আলোচনা করেছেন তারা প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফার কথা বোধ হয় ভুলেই গিয়েছিলেন। তাদের আলোচনা ও কথাবার্তায় ৫ দফার প্রসঙ্গ আসেনি।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মৃধা মোহাম্মাদ বেলাল ০৭/১০/২০১৭চমৎকার বিশ্লেষণ!
-
মধু মঙ্গল সিনহা ০৬/১০/২০১৭মানুষের সচেতনা বোধের দরকার।
-
কামরুজ্জামান সাদ ০৬/১০/২০১৭এটা জাতিকে ভোগাবে।
-
আজাদ আলী ০৬/১০/২০১৭Good discussion