খুনোখুনি
পত্রিকার পাতায় চোখ বুলালেই দেখা যাবে খুনোখুনির নির্মমতার চিত্র। ব্যক্তিস্বার্থ আর ক্ষমতার দ্বন্দ্বে খুনের মতো জঘন্যতম অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে দলটির নেতা-কর্মীরা। আধিপত্য বিস্তারের লড়াই ও অন্তর্দলীয় কোন্দলে আওয়ামী লীগের রক্ত আওয়ামী লীগই ভক্ষণ করছে। ক্ষমতার রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ যে মোস্ট আনফিট এটা প্রমাণিত। আওয়ামী লীগ এর অবস্থা হলো সেই স্ত্রীলোকটির মত যে তার সতীনের ছেলেটিকে অত্যাধিক আদর করতো। অর্থাৎ সেই স্ত্রী লোকটির দুইটি ছেলে ছিল। একটি নিজের ছেলে অপরটি সতীনের ছেলে। সে সতীনের ছেলেটিকে সব সময় কোলে রাখতো। উঠতে-বসতে, চলতে ফিরতে ছেলেটিকে সব সময় কোল থেকে নামাতো না। এমনকি কোলেকাঁধে নিয়েই সংসারের কাজ-কাম করতো। পাড়ায় বেড়াতে গেলে সতীনের ছেলেটিকে কোলে এবং নিজের ছেলেটিকে হাত ধরে হাঁটিয়ে নিয়ে যেতো। পাড়ার মেয়েরা সবাই তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলো। সবাই বলতে লাগলো, ‘মেয়েটির মনে একটুও হিংসা নাই। সতীনের ছেলেকে কোলে আর নিজের ছেলেকে হাঁটিয়ে নিয়ে বেড়ায়। সতীনের ছেলেকে এত আদর করতে আর কোথাও দেখা যায় না। এরূপ সতী-সাধ্বী নারী আর হয় না। কিন্তু একদিন পাড়ার একটি মেয়েলোক এসে গোপনে সহানুভূতি স্বরূপ বললো, ‘আপা! নিজের ছেলেকে অবহেলা করে সতীনের ছেলেকে এত আদর করা ঠিক হবে না। তাতে নিজেরই ক্ষতি হবে। মেয়েলোকটি বলল, না বুবু’ এটা আমার ছেলের প্রতি অবহেলা নয়। নিজের ছেলেকে হাঁটিয়ে নিয়ে বেড়াই যেন তার পা শক্ত হয় এবং স্বাবলম্বী হয়ে সমাজে মজবুত হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর সতীনের ছেলেকে কোলে নিয়ে বেড়াই যেন সে কোন দিন হাঁটতে না শেখে। কোলে থাকতে থাকতে অচল এবং পঙ্গু হয়ে কোনদিন সে সমাজে মুখ তুলে দাঁড়াতে পারবে না। এটা সতীনের ছেলের প্রতি আদর নয়। কিন্তু মানুষ বুঝতে না পেরে আমার প্রশংসা করছে তা আমি কি করবো? ঠিক সেইরূপ আওয়ামী লীগের উন্নয়ন আর আইনের শাসন। যে কারণে আওয়ামী লীগের হাতে আওয়ামী লীগ খুন হচ্ছে। এই বিষয়টি ক্ষমতাসীনদের ভেবে দেখা প্রয়োজন। ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ছাড়াও খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ছে তারা। আধিপত্য বিস্তারের লড়াই অন্তর্দলীয় কোন্দলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শক্র এখন আওয়ামী লীগই। তাদের আন্তঃকোন্দলের কারণে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সাংবাদিকও নিরাপদ নন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে শাসক দলের নেতা-নেত্রীরা তাদের সহযোগী সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। কিছুতেই থামছে না মাঠ পর্যায়ের মারামারি, খুনোখুনি, সংঘাত সহিংসতা ও সংঘর্ষ। যে খুন করে কিংবা শারীরিকভাবে আঘাত করে, সে যদি শত্রু বলে বিবেচিত হয়, তাহলে বলা যায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শত্রু এখন আওয়ামী লীগ নিজেই।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আ'বিরু সাবীল ৩০/০৭/২০১৭জুদা হুঁ দ্বীন সিয়াসাত ছে তু রেহ জাতি হ্যায় চেঙ্গিসী...!!
-
কামরুজ্জামান সাদ ২২/০৭/২০১৭সুস্থ রাজনীতি বলে কিছু নাই