বিতর্কিত ধারা আইনে আসছে
বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের পক্ষে শক্তিশালী জনমত গড়ে উঠলেও আলোচিত বিষয়গুলো নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৯ ও ২০ ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
আইনের খসড়ায় ৫৭ ধারার আদলে বিতর্কিত ইস্যুগুলো সংযুক্ত হওয়ায় নতুন করে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ইন্টারনেটে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অপরাধের দমন, প্রতিরোধ ও বিচারের জন্য ২০০৬ সালের আইসিটি আইন ২০১৩ সালে সংশোধন করে ৫৭ ধারা যুক্ত করা হয়। আর সার্বিকভাবে ডিজিটাল অপরাধগুলোর প্রতিকার, প্রতিরোধ, দমন ও বিচারের জন্য সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের কাজ চলছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দ্বিতীয় খসড়ায় দেখা যাচ্ছে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় আলোচিত 'মানহানি', 'মিথ্যা-অশ্লীল', 'আইন শৃঙ্খলার অবনতি' ও 'ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত' এই বিষয়গুলো আইনের ১৯ ও ২০ ধারায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এছাড়া আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় যেখানে 'নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ' এবং 'রাষ্ট্র ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন' এই শব্দগুলি ছিল, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সেটি 'মনকে বিকৃত ও দূষিত করা' এবং 'মর্যাদাহানি ও হেয় প্রতিপন্ন'- এভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
আর্টিকেল ১৯-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক তাহমিনা রহমান
বেসরকারি সংস্থা আর্টিকেল ১৯-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক তাহমিনা রহমান বলেন,
"৫৭ ধারার সমস্যা দুটি সমস্যা। প্রথমত সাবসট্যান্স নিয়ে (বিষয়বস্তু) এবং অপরেশনালি যা হচ্ছে সেটার সমস্যা। বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে ৫৭ ধারায় যে আটটি গ্রাউন্ডের কথা বলা হয়েছে যে এসব বিষয়ে যদি কোনো বক্তব্য হয় তাহলে সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে দেখা হবে।''
''কিন্তু এই সিমিলার যেসব গ্রাউন্ডগুলি দেয়া হয়েছে সেগুলি আমাদের অন্যান্য আইনে এর থেকে বেশি প্রটেকশন (সুরক্ষা) দিয়ে আছে এবং বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে দেয়া আছে। ৫৭ ধারায় যখন এসেছে তখন কিন্তু এগুলো সুস্পষ্ট করে সংজ্ঞায়ন হয়নি। আর অপারেশনালি আগের আইনে এসব অপরাধগুলি ননকগনিজেবল ছিল অর্থাৎ পুলিশের আমলে নেয়ার ক্ষমতা ছিলনা, কিন্তু ৫৭ ধারায় উল্লিখিত অপরাধ পুলিশ আমলে নিতে পারে," বলছেন তাহমিনা রহমান।
খসড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৯ ও ২০ ধারা পর্যালোচনা করে তাহমিনা রহমান বলেন, "বাক স্বাধীনতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি অধিকার । সেই অধিকারকে ক্রিমিনালাইজড(শাস্তিযোগ্য অপরাধ) করা উচিৎ নয়। কিন্তু ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়ায় দেখতে পাচ্ছি এখনো ৫৭ ধারার মতো ক্রিমিনালাইজড করা হচ্ছে। আবার ডেফিনেশনগুলো এখনো সুস্পষ্ট করে এখানে দেয়া হয়নি, আর পেনাল কোডে যেসব সুরক্ষা রয়েছে সেগুলো আমরা যে খসড়াগুলো দেখেছি সেখানে এখানো আসেনি।তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক
"সাইবার জগতটাকে নিরাপদ রাখার জন্য আমার একদিকে যেরকম সকল অপরাধীকেও আইনের আওতায় আনতে চাই অপরদিকে নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি যেন কোনোভাবে হয়রানির শিকার না হয় সেটাকে নিশ্চিত করার জন্যই সকল প্রচেষ্টা আমরা চালাচ্ছি।"
তবে তবে বিদ্যমান আইনের ৫৭ ধারা অপব্যবহার হচ্ছে অভিযোগ করে এটি বাতিলে সোচ্চার সাংবাদিকরা।
সাংবাদিক নেতারা বলছেন, ৫৭ ধারার অপব্যবহারের সুযোগ নিয়ে এরকম মামলার কারণে সাংবাদিকদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় এ বছর জুলাই পর্যন্ত ৩৫টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ২২টি মামলাই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, "এখন যে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সরকার করতে যাচ্ছে এর ১৯ ধারাও ৫৭ ধারার মতো একটি কালো ধারা। সাংবাদিকদের অধিকার হরণের জন্য বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করার জন্য যে নামেই যে ধারা প্রবর্তন করা হোক সেটা আমাদের দৃষ্টিতে কালো আইন। আমরা এ কালো আইনের বিরোধী।"
আইনের খসড়ায় ৫৭ ধারার আদলে বিতর্কিত ইস্যুগুলো সংযুক্ত হওয়ায় নতুন করে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ইন্টারনেটে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অপরাধের দমন, প্রতিরোধ ও বিচারের জন্য ২০০৬ সালের আইসিটি আইন ২০১৩ সালে সংশোধন করে ৫৭ ধারা যুক্ত করা হয়। আর সার্বিকভাবে ডিজিটাল অপরাধগুলোর প্রতিকার, প্রতিরোধ, দমন ও বিচারের জন্য সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের কাজ চলছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দ্বিতীয় খসড়ায় দেখা যাচ্ছে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় আলোচিত 'মানহানি', 'মিথ্যা-অশ্লীল', 'আইন শৃঙ্খলার অবনতি' ও 'ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত' এই বিষয়গুলো আইনের ১৯ ও ২০ ধারায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এছাড়া আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় যেখানে 'নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ' এবং 'রাষ্ট্র ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন' এই শব্দগুলি ছিল, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সেটি 'মনকে বিকৃত ও দূষিত করা' এবং 'মর্যাদাহানি ও হেয় প্রতিপন্ন'- এভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
আর্টিকেল ১৯-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক তাহমিনা রহমান
বেসরকারি সংস্থা আর্টিকেল ১৯-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক তাহমিনা রহমান বলেন,
"৫৭ ধারার সমস্যা দুটি সমস্যা। প্রথমত সাবসট্যান্স নিয়ে (বিষয়বস্তু) এবং অপরেশনালি যা হচ্ছে সেটার সমস্যা। বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে ৫৭ ধারায় যে আটটি গ্রাউন্ডের কথা বলা হয়েছে যে এসব বিষয়ে যদি কোনো বক্তব্য হয় তাহলে সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে দেখা হবে।''
''কিন্তু এই সিমিলার যেসব গ্রাউন্ডগুলি দেয়া হয়েছে সেগুলি আমাদের অন্যান্য আইনে এর থেকে বেশি প্রটেকশন (সুরক্ষা) দিয়ে আছে এবং বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে দেয়া আছে। ৫৭ ধারায় যখন এসেছে তখন কিন্তু এগুলো সুস্পষ্ট করে সংজ্ঞায়ন হয়নি। আর অপারেশনালি আগের আইনে এসব অপরাধগুলি ননকগনিজেবল ছিল অর্থাৎ পুলিশের আমলে নেয়ার ক্ষমতা ছিলনা, কিন্তু ৫৭ ধারায় উল্লিখিত অপরাধ পুলিশ আমলে নিতে পারে," বলছেন তাহমিনা রহমান।
খসড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৯ ও ২০ ধারা পর্যালোচনা করে তাহমিনা রহমান বলেন, "বাক স্বাধীনতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি অধিকার । সেই অধিকারকে ক্রিমিনালাইজড(শাস্তিযোগ্য অপরাধ) করা উচিৎ নয়। কিন্তু ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়ায় দেখতে পাচ্ছি এখনো ৫৭ ধারার মতো ক্রিমিনালাইজড করা হচ্ছে। আবার ডেফিনেশনগুলো এখনো সুস্পষ্ট করে এখানে দেয়া হয়নি, আর পেনাল কোডে যেসব সুরক্ষা রয়েছে সেগুলো আমরা যে খসড়াগুলো দেখেছি সেখানে এখানো আসেনি।তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক
"সাইবার জগতটাকে নিরাপদ রাখার জন্য আমার একদিকে যেরকম সকল অপরাধীকেও আইনের আওতায় আনতে চাই অপরদিকে নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি যেন কোনোভাবে হয়রানির শিকার না হয় সেটাকে নিশ্চিত করার জন্যই সকল প্রচেষ্টা আমরা চালাচ্ছি।"
তবে তবে বিদ্যমান আইনের ৫৭ ধারা অপব্যবহার হচ্ছে অভিযোগ করে এটি বাতিলে সোচ্চার সাংবাদিকরা।
সাংবাদিক নেতারা বলছেন, ৫৭ ধারার অপব্যবহারের সুযোগ নিয়ে এরকম মামলার কারণে সাংবাদিকদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় এ বছর জুলাই পর্যন্ত ৩৫টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ২২টি মামলাই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, "এখন যে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সরকার করতে যাচ্ছে এর ১৯ ধারাও ৫৭ ধারার মতো একটি কালো ধারা। সাংবাদিকদের অধিকার হরণের জন্য বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করার জন্য যে নামেই যে ধারা প্রবর্তন করা হোক সেটা আমাদের দৃষ্টিতে কালো আইন। আমরা এ কালো আইনের বিরোধী।"
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কামরুজ্জামান সাদ ১৬/০৭/২০১৭এই ধারাটি গণমাধ্যমের মুখে চপেটাঘাত।