বাকশাল ও বহুদলীয় ধারণা
১৯৭৯ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী পাস হয়। পঞ্চম সংশোধনীটি নিজে কোনো আইনের সংশোধনী নয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক সরকারের অধীনে যেসব আইন ও আইনের সংশোধনী প্রবর্তীত হয় সেসব কিছুর সাংবিধানিক বৈধতা দেয়া হয় সংবিধানের এই পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে। পঞ্চম সংশোধনীর মূলকথা হইল, “১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট হইতে ১৯৭৯ সালের ৯ই এপ্রিল তারিখের (উভয় দিনসহ) মধ্যে প্রণীত সকল ফরমান, ফরমান আদেশ, সামরিক আইন প্রবিধান, সামরিক আইন আদেশ ও অন্যান্য আইন এবং উক্ত মেয়াদের মধ্যে অনুরূপ কোনো ফরমান দ্বারা এই সংবিধানে যেই সকল সংশোধন, সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন ও বিলোপসাধন করা হহয়াছে তাহা এবং অনুরূপ কোনো ফরমান, সামরিক আইন, প্রবিধান, সামরিক আইন আদেশ বা অন্য কোনো আইন হইতে আহরিত বা আহরিত বলিয়া বিবেচিত ক্ষমতাবলে অথবা অনুরূপ কোনো ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে গিয়া বা অনুরূপ বিবেচনায় কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত কোনো আদেশ কিংবা প্রদত্ত কোনো দ-াদেশ কার্যকর বা পালন করিবার জন্য উক্ত মেয়াদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত আদেশ, কৃত কাজকর্ম, গৃহীত ব্যবস্থা বা কার্যধারাসমূহ এতদ্বারা অনুমোদিত ও সমর্থিত হইল এবং ঐ সকল আদেশ, কাজকর্ম, ব্যবস্থা বা কার্যধারাসমূহ বৈধভাবে প্রণীত, কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া ঘোষিত হইল এবং তৎসম্পর্কে কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা কর্তৃপক্ষের নিকট কোনো কারণেই কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।” পঞ্চম সংশোধনীর প্রধান অবদান হলো সংবিধানকে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থায় নিয়ে আসা এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলকে বৈধতা দান। আজকের যে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা তা পঞ্চম সংশোধনীর অবদান। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশকে যে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার অধীনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং বিচারকদের নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণকে দেশের প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দিয়ে বিচার ব্যবস্থার যে দলীয়করণ করা হয়েছিলো পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে তার অবসান ঘটে। পরবর্তীকালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করা হয়। পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করলেও পঞ্চম সংশোধনীর বহুদলীয় ব্যবস্থাসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মধু মঙ্গল সিনহা ২০/০৪/২০১৭সুন্দর উপস্থাপন।অভিনন্দন !
-
জাফর পাঠান ০৭/০৪/২০১৭সত্য ইতিহাস সবার জানা থাকা দরকার , তাহলে ভবিষ্যতে সঠিক স্বীদ্ধান্ত নিতে নির্ভুল থাকা যায় । সবাইকেই ইতিহাসের পিছনের ইতিহাস পড়া উচিৎ । ভালো থাকুন নিরন্তর । এমন একটি উপস্থাপনার জন্য শুভাশীর্বাদ ।
-
আশুতোষ দালাল ০৬/০৪/২০১৭অসাধরণ
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ০৬/০৪/২০১৭ধন্যবাদ
-
রাবেয়া মৌসুমী ০৬/০৪/২০১৭সুন্দর তথ্য,ধন্যবাদ।