ছাত্র সংগ্রাম
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির একটি আলোক মশাল, তরুণদের হৃদয়ে আন্দোলিত তীব্র হাওয়া। ছাত্রশিবির একটি ইতিহাসের নাম। হাটি হাটি পা পা করে ৩৮ টি বছর অতিক্রম করে ৩৯ বছরে প্রবেশ করেছে ছাত্রশিবির নামক এ আদর্শিক সংগঠনটি। তরুণদের সৎ যোগ্য,দেশ প্রেমিক ও হেরার দ্যুতিতে উদ্ভাসিত নির্ভিক মানুষ গড়ার অদম্যস্পৃহা নিয়ে যার পদযাত্রা। এই কাফেলার চলার পরতে পরতে আল্লাহদ্রোহীদের পর্বতসম ষড়যন্ত্র এর যাত্রাকে দুমড়ে মুচড়ে নিঃশেষ করার ভয়বহ ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে বহুবার। কিন্তু আল্লাহর অশেষ কৃপায় ও কাফেলার সাথে সম্পৃক্ত যুবকদের দৃঢ়পথ চলা সকল ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়ে ছুটে চলছে আপন মানজিলে। যে পথ সত্যাশ্রয়ীদের, প্রকৃত কল্যাণের ও দুনিয়া-আখেরাতের সফলতার। পৃথিবির সুচনা থেকেই হক ও বাতিলের প্রচন্ড লড়াই চলছে। যেখানে হক সেখানে বাতিলের তীব্র অপঘাত। যেখানে বাতিলের বটবৃক্ষ সেখানে হককে বিজয়ী করার তীব্র বাসনা নিয়ে মুহাম্মদ বিন কাসিম,তারিক বিন জিয়াদ, তিতুমীর খানজাহানালীর মত আল্লাহ প্রেমীরা কাজ করে চলছে। এ লড়াই থামবার নয়। সত্যের ছোয়ায় মিথ্যার অপমৃত্যু ঘটবে অথবা মিথ্যার তিব্রতায় আলো আধাঁরের অববয়বে লুকিয়ে থাকা সত্যের অপমৃত্যু ঘটবে,যদিনা সত্যাশ্রয়ীরা না হয় দুর্বার,নির্ভীক,আপোষহীন ও র্নিলোভা। ছাত্রশিবির এখনো সেই তিব্র লড়াইয়ে অবর্তীণ। প্রতিষ্টার সে বাসনা নিয়ে যুব-তরুণদের মাঝে যদি কাফেলা নির্ঘূম পথচলা অব্যাহত রাখতে পারে ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপর নানামুখী ষড়যন্ত্রের অক্টোপাশে জড়িয়েও এই কাফেলার যাত্রাকে স্তব্দ করতে পারা দুঃসাধ্য।
৫২,৬৯,৭১ও,৯০ এ ছাত্রসমাজের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছিল জগৎজোড়া। ছাত্র ও ছাত্রনেতাদের প্রতি সবার ছিল অগাদ ভালবাসা আর স্নেহ ভরা শ্রদ্ধা। ৭১ পরবর্তী ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে যেসকল ছাত্রসংগঠন নেতেৃত্ব দিয়ে আসছিল তাদের ভূমিকা সমগ্রদেশবাসিকে প্রচন্ড হতাশ করেছিল। মাত্র কয়েক বছর আগে যেসকল ছাত্র নেতাদের নিয়ে সমাজের সর্বস্তরে আশার বানী শুনা যেত, নিমিষে যেন নিঃশেষে তলিয়ে যেতে থাকল। স্নেহ ভালবাসার পরশ মাখা সে আস্তা ও বিশ্বাসের মিনার ভেঙ্গে চৌচির হয়ে তাদের ব্যাপারে অভিযোগ আসল ওরা ডাকাত,খুনি,নারীর সম্ভ্রম লুন্ঠনকারী,মাদকসেবী ও আইনের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল। এমন এক আমানিশা ঘন মুহুর্তে একদল তরুণের নেতৃত্বে ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে শুরু হয় এক ঐতিহাসিক পথ পরিক্রমা। বঞ্চিত,নিপিড়িত মানুষের প্রত্যাশিত ও আল্লাহর রঙ্গে রঙ্গিন মানুষ গড়াই ছাত্রশিবিরের মূখ্য উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ছাত্রশিবির প্রত্যাশিত কিছু মানুষ তৈরী করেছে। হয়তবা এ সমাজের কিছু ব্যক্তির কাছে তারা অপছন্দনীয়। কিন্তু আসল সত্য হল এই যে তাদের অধিকাংশই ছাত্রশিবিরের সাথে জড়িতদের মনের গহিন থেকে পছন্দ করে ,শুধুমাত্র এরা বিরোধীতার কারণে বিরোধীতা করে। তারা জানে ছাত্রশিবিরই কেবল দিকভ্রান্ত যুবকদেরকে পরিবার,সমাজ ও দেশের প্রত্যাশিত মানুষ হিসেবে গড়তে কাজ করে চলছে। যেখানে সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে যুবকরা অবক্ষয়ের তীব্র স্রোতে ভেসে যাচ্ছে সেখানে এই স্রোতের বিপরীতে ভিন্ন স্রোত সৃষ্টি করে সামনে এগিয়ে চলা মামুলি কোন ব্যাপার নয়। তাই এসকল প্রকাশ্য মঞ্চে বিরোধীতাকারীরা নিজেরা মুখে বিরোধীতা ও এর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করলেও তারা প্রত্যাশা করে “এমন যদি আমার প্রিয় সন্তানটিও হত”!
ছাত্রশিবিরের অন্যতম কর্মসূচী হল তরুণ ছাত্রসমাজের মাঝে ইসলামের সুমহান আহবান পৌঁছে দেয়া । যেসকল ছাত্ররা এ আহবানে ঐক্যমত পোশন করে তাদেরকে সংগঠনের অর্ন্তভূক্ত করা। সংগঠনের আওতাধীন ছাত্রদেরকে তানজিমও তরবিয়াতের মাধ্যমে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধে দৃঢ় করা। শিক্ষাপ্রতিষ্টানে ছাত্রদের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখা । গরীব ও মেধাবী ছাত্রদের সমস্যা সমাধানে সহযোগীতা করা। দেশ জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরী করা, যারা পরিবার,সমাজ ও দেশ জাতির জন্য রাহাবার হিসাবে কাজ করবে। যারা হতাশার তিমিরেও আলোক বর্তিকা হয়ে কাজ করবে। ছাত্রশিবির মেধাবী ছাত্রদেরকে সত্য ও সুন্দরের সহযাত্রী হতে অনুপ্রাণিত করতে মেধাবী সংবর্ধনা, ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম, গরীব মেধাবী ছাত্রদের জন্য স্টাইপেন্ট চালুর পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিবছর সাপ্তাহ ও পক্ষকালব্যাপী ‘পরীক্ষায় নকলকে না’, মাদক ও ইভটিজিং বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও বিনামূল্যে গরীব মেধাবী ছাত্রদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ,শীতবস্ত্র বিতরণ, ব্লাড ডোনেশন,ব্লাড গ্রুপিং, ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প,পথ শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমান শিক্ষা কার্যক্রম চালু, কুরআন প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়ে থাকে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বৃক্ষরোপন কর্মসূচী ,উম্মুক্ত জলাশয়ে ও নদী-নালায় মাছের পোনা ছাড়া, প্রাকৃতিক দূর্যোগে ছাত্রশিবিরের ভূমিকা সমগ্র দেশবাসীর কাছে অনন্য বিস্ময়। বিশেষ করে জাতির ক্রান্তি লঘ্নে সকল স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়।
আদর্শবাদী দল পাহাড়সম ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারেও স্বীয় আদর্শের ভিত্তির উপর ঠিকে থাকাতে পারলে এর যাত্রাকে যারা অবরুদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালায় তাদের অপ্রচেষ্টা সময়ের পরিক্রমায় ভূল প্রমানিত হয়। আদর্শবাদীদল ষড়যন্ত্র,নির্মম নির্যাতন ও ঘৃন্য অপপ্রচারে সাময়িক অসুবিধায় থাকলেও চুড়ান্তভাবে এর যাত্রা অব্যাহত থাকে মঞ্জিলের দিকে। ছাত্রশিবিরকে তার যাত্রা পথে এ পর্যন্ত হাজারো বাঁধা মাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হয়েছে । ছাত্রশিবিরের পথপরিক্রমায় নানামুখী ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র, যুলম নির্যাতন ও অপপ্রচার অন্যতম। ছাত্রশিবির দেশের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্টান গুলোতে আদর্শিক সৌন্দর্য্যরে মাধ্যমে দেশের জনপ্রিয় ছাত্রসংগঠনে হিসেবে স্বীকৃত লাভ করে চলছিল ঠিক তখনই আদর্শিক লড়াইয়ে পরাজিতরা ঘৃণ্য পথে শিবিরের নেতা কর্মীদের উপর নানামুখী নির্যাতন চালিয়ে তাদের বুলন্দ আওয়াজকে স্তিমিত করতে চায়।
যখন খুন,গুম ও নির্যাতন করে এর গতিপথ স্লথ করা যাচ্ছেনা ঠিক তখন অপপ্রচারকে অন্যতম হাতিয়ার হিসাবে অবলম্বন করে নিয়েছে পরাজিতরা। শিবিরকে বলা হয়েছে চেতনায় রাজাকার, রগকাটা, মৌলবাদী, অআধুনিক ও স্বাধীনতা বিরোধী। সন্ত্রাসী,নশকতাকারী! ইত্যাদি। এসব অপপ্রচার চালাতে গণমাধ্যম ও প্রশাসনকে সবচেয়ে বেশী অপব্যবহার করেছে সরকার ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। ছাত্রশিবিরের দুর্দমনীয় উত্থানে ভীত হয়ে ছাত্রশিবিরের নিরপরাধ নেতা কর্মীদেরকে নাশকতার অভিযোগে অহরহ গ্রেপ্তার করে বোমা নাটক, অস্ত্র উদ্ধার নাটক সাজানো হয়েছে, যা ইতিহাসের এক জঘন্যতম মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়। এমন অপপ্রচার অভিযুক্ত দলের পক্ষে প্রচারের সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কারণ এমন ঘটনা যখন সাজানো হয় তখন ভূক্তভূগীদের আদর্শিক দৃঢ়তা আরো বেড়ে যায়,তারা তাদের যাত্রাপথে এগিয়ে যেতে আরো তীব্র শক্তি অনুভব করে। যারা এমন হট টক নিউজপায় তারা উৎসুকের সাথে এমন খবেরর আসল সত্য জানতে চেষ্টা করে, এক্ষেত্রে যুবকরাই উৎসূকি হয়ে থাকে। শিবিরেরর বিরুদ্ধে প্রচারিত ঘৃণ্য ঘটনার অন্তরালে ডুবে আসল সত্য জানতে গিয়ে উৎসূকিরা নিজেরা ছাত্রশিবিরের সমর্থক হয়ে যায়, তারা বুঝতে পারে এমন অসত্য প্রচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আর যারা অসত্য ঘটনাকে রং রস মিশিয়ে প্রচার করার কাজে ব্যস্ত তারাও জানে এটি মিথ্যা, এ কাজ করা তাদের জন্য ঠিক নয়।কিন্তু তাদের বিবেক বোঁধ লোপ পেয়েছে, তাই তারা মিথ্যাকে সত্যের প্রলেপে প্রচার চালাতে মোটেও দ্বীধা বোধ করেনা। এসব মিথ্যা অভিযোগে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা মোকাদ্দমায় ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদেও গ্রেপ্তার কওে জেলে পুড়েছে। ছাত্রশিবিরকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে অসংখ্য সন্দেহ ভাজন সাধারণ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা কখনো শিবিরও করেনি বা শিবির সম্পর্কে জানেনা তারা মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করে। সময়ের ব্যবধানে ভিন্নমতের ছাত্ররাও ছাত্রশিবির সম্পর্কে অবগত হয় এবং অনেকে শিবিরে যোগ দিতেও দেখা গেছে। আলহামদুলিল্লাহ! ছাত্রশিবিরের ব্যাপারে যেসকল অভিযোগ এনেছে, প্রতিপক্ষরা অপপ্রচার করেছে তা বারবার মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
ছাত্রশিবিরের দৃঢ় প্রত্যয়ী পথপরিক্রমায় সরকার ও ইসলাম বিদ্বেষীদের নির্মম আঘাতে শহীদ হয়েছেন ছাত্রশিবিরের ২১৬ জন তাজা প্রাণ। যারা ছিল তাদের পরিবার,সহপাঠি,শিক্ষক ও প্রতিবেশীদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়। বৃহৎ প্রয়োজনে বাতিলের কাছে পরাস্ত হতে এরা শিখেনি। এমন দৃঢ়পদে পথচলতে গিয়ে শতশত তরুন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। কারো পা নেই,কারো হাত নেই কারো বা নেই চোখ । কেউ কেউ হারিয়েছেন শরীর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ।যারা হক বাতিলের লড়াইয়ে জীবন্ত সাক্ষি। যারা আমৃত্যু সামনে এগিয়ে যেতে সাহস যোগাবে এ পথের যাত্রীদেরকে। তারা এই কাফেলার জীবন্ত শহীদ।
যেখানে মজলুমানের শরীরের রক্তে রাজপথ ,ক্যাম্পাস ,জনপদ রঞ্জিত হয়েছে সেখান থেকেই নারায়ে তাকবিরের আওয়াজ বুলন্দ হয়েছে। যারা ছাত্রশিবিরকে নিঃশেষ করতে চেয়েছে তারাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। মজলুমদের পক্ষে লাখো বনি আদম তাদের জীবন সম্পদ স্বপ্নস্বাধ বিলিয়ে দেয়ার জন্য তৈরী হয়েছে। এটি আল্লাহর অশেষ করুনা ছাড়া আর কিছু নয়। সেকারণেই আল্লাহর অশেষ রহমতে ইসলামী ছাত্রশিবির ৩৮ বছরের পথ পরিক্রমায় নিজের অবস্থানে করেছে সুসংহত। শিক্ষাপ্রতিষ্টানের গন্ডি পেরিয়ে শহর, নগর, বন্দর পেরিয়ে এখন এর অবস্থান পাড়ায় মহল্লার ঘরে ঘরে। আগামীর সম্ভাবনাময়ী তরুণ সমাজকে প্রকৃত মানুষ গড়তে ছাত্রশিবির প্রতিটি জনপদে কাজ করে চলছে নির্ঘুম নিরলস ভাবে।
ঘুনেধরা সমাজে দ্বিকভান্ত্র যুবকদের পথের সন্ধান দিতে ছাত্রশিবির একটি ব্যাতিক্রমধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্টান হিসাবে কাজ করে চলছে। দুনিয়ার দক্ষতার পাশাপাশি অহীর জ্ঞানে আলোকিত মানুষ হিসেবে তৈরী করাই এই শিক্ষাপ্রতিষ্টানের অন্যতম কাজ। মাদক আসক্ত,নৈতিক অবক্ষয়সহ নানা অপরাধে জড়িত যুবকদের মাঝে সাহস,মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার দৃঢ়তা নিয়ে তৈরীতে ছাত্রশিবিরের কর্মীরা আপন বন্ধু হিসেবে কাজ করার অতুলনীয় মানসিকতা সত্যিই প্রশংনীয়। এমন কাফেলার বিরুদ্ধে অপ্রপ্রচার চালাতে যারা সিদ্ধহস্ত তারা মূলত নিজের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারে। কারণ তাদের ভাল কাজে অসহযোগীতার কারণে আগামীপ্রজন্ম মরিচিকা সঙ্কুল চোরা পথে সত্যপথ খুঁজে না পেয়ে ভিন্ন পথে যাত্রা শুরু করে। যা ধ্বংসের ,অপ্রত্যাশিত।
ইসলামী ছাত্রশিবির একটি সুশৃংখ ছাত্রসংগঠনের নাম। এ সংগঠন একজন ছাত্রকে যেভাবে ব্যক্তিগত ভাবে আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্ব গঠন করার ক্ষেত্রে সহযোগীতা করে ঠিক সংগঠনের প্রতিটি পর্যায়ে শৃংখলা প্রতিষ্টাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কর্মী গঠন,নৈতিক প্রশিক্ষণ ও আদর্শ সংগঠন পরিচালনা পদ্ধতি শিক্ষণ কর্মসূচী গুলো একটি আদর্শ সংগঠন প্রতিষ্টার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইসলামী ছাত্রশিবির তার সর্বস্তরের জনশক্তিকে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । আলহামদুলিল্লাহ! ইসলামী ছাত্রশিবির এখন দেশের সবচেয়ে সুশৃংখল ও বৃহৎ সংগঠন হিসেবে আতœপ্রকাশ লাভ করেছে। এই সংগঠনে কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নেতৃত্ব নির্বাচনে নেই কোন অন্তকোন্দল,দলাদলি, মারামারি। যারা নেতৃত্বের জন্য লোভাতুর তারা এ সংগঠনে নেতৃত্বেও জন্য অনুপযুক্ত। যেখানে এসব ঘটনা অন্য ছাত্রসংগঠনের মাঝে ঘটছে অহরহ। তাই দেশে বিদেশে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিয়ে বিবেকবান ব্যক্তি বর্গের কাছে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। তাদের স্বপ্ন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সৎ দক্ষ তরুণরাই আগামীতে দেশ জাতির নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে তার প্রত্যাশিত মঞ্জিলে উন্নিত করতে সক্ষম হবে। আর ছাত্রশিবিরের এই কাফেলা থেকে অন্যন্য ছাত্র সংগঠন গুলোর শিখার আছে অনেক কিছু। ছাত্রশিবির আজ হলফ করে বলতে পারে ছাত্রশিবিরের নেতা কর্মীরা পরিবার সমাজের বোঝা হবেনা, তারা মাদক মুক্ত,ইভটিজিং মুক্ত,মা-বোনদের সম্ভ্রম রক্ষাকারী, ভাল ছাত্রদের অনন্য, পরোপকারী, সন্ত্রাসও টেন্ডারবাজী মক্ত।
বহুমুখী সন্ত্রাসের শিকার ইসলামী ছাত্রশিবির। প্রতিটি সরকার তাদের ইসলাম বিদ্বেষী চেতনা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের উদ্দেশ্যে বারবার আঘাত করেছে ছাত্রসংগঠনটির উপর। ইসলাম বিদ্বেষী দলগুলো আদর্শিক লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে অপপ্রচার , গুম,খুম ও জুলুম নির্যাতনকে পুজিঁ করে এর যাত্রাকে নিঃশেষ করতে মরিয়া হয়ে লড়াই করছে। দেশের সিংহভাগ মানুষের চেতনা বোধ ইসলামের পক্ষে থাকলেও গুটি কতেক আবু লাহাবের ষড়যন্ত্রে সকল প্রচার মাধ্যম সমূহ ও সরকার সম্মিলিত দেশকে ধর্মনিরেপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্টা করার অপপ্রয়াশ চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরণের ঘৃণ্য সম্মিলিত হামলার ভয়াবহ অক্টোপাশে আবদ্ধ হয়ে সত্য মিথ্যার আসল স্বরুপ নিরুপন করা আমজনতার জন্য দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। ছাত্রশিবির এমন বৈরী হাওয়ায় আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল ও সমাজ ব্যবস্থার প্রকৃত স্বরুপ নিশ্চিত করার প্রয়াসে একবুক আশা নিয়ে নির্ঘূম পথ চলছে। আল্লাহ চাহেনতো ছাত্রশিবির তার প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে।
দেশকে যখন ফেইল এষ্টেট,তলাবিহীন ঝুড়ি,মাঝি বিহীন তরী ও দূর্ণিতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে উন্নত দেশের কর্তাব্যক্তিরা আক্ষেপ করে বলে, আমাদের দেশের কর্তাব্যক্তিরা ও হীনমন্যতায় ভোগেন তখন ছাত্রশিবির বলতে পারে, এমন নিরাশার করালগ্রাস থেকে উম্মাহকে রক্ষার তাগিদে কিছু সৎ দক্ষ ব্যক্তি তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে ছাত্রশিবির। যারা দুনিয়ার চাওয়া পাওয়ার কাছে পরাস্ত হবার নয় বরং দুনিয়া তাদের কাছে পরাস্ত হবে ইনশাআল্লাহ। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিকেই জীবণের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে ধরে সম্মুখে এগিয়ে চলছে। এই কাফেলার ভাইয়েরা তাদের চাকুরী,ব্যাবসা ও বিভিন্ন পেশায় সততা ও কর্মনিষ্টার মাধ্যমে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। নিজেকে সৎ দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা এমন কাজটি একজন মু’মিনের জন্য কৃত্রিম কোন বিষয় নয় বরং এটি তার অন্যতম নৈতিক দায়িত্ব। দক্ষতার্জন, কর্মনিষ্ট হওয়া এসব শারিরীক ভাবে সুস্থ মু’মিনের জবিনের অন্যতম গুনাবলী বলেই রাসুল (সঃ) তার সাহাবীদের নসিহত করেছেন। ঠিক সেভাবেই এগিয়ে যাওয়ার জন্য, যাত্রাকে আরো সুদৃঢ় করার জন্য হিতাকাঙ্খীদের যৌক্তিক দিক নির্দেশনা দেয়ার পথ খোলা রেখেছে ছাত্রশিবির।
ইসলামী ছাত্রশিবির ৩৮ বছরের পথ পরিক্রমায় তাদের কথা রেখেছে। সত্য ও সুন্দরের পক্ষে জীবন উৎসর্গ করেছে তার নেতা-কর্মীরা। দুনিয়ার লোভ লালসার কাছে তারা নিজেদের জলাঞ্জলী না দিয়ে পাহাড় বিপদ সঙ্কুলসম পথ মাড়ি দিয়ে সম্মুখে এগিয়ে যেতে তারা এখনো দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তারা শুধুমাত্র দুনিয়ার ভোগের সাগরে নিজেদের ভাসিয়ে না দিয়ে দুনিয়াকে আখেরাতের পরীক্ষালয় হিসেবে গ্রহন করে সকল রক্ত চক্ষুকে মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে চলছে দূর্বার গতিতে। সরকার ও ইসলাম বিদ্বেষীরা যদি বুঝতে সক্ষম হত ইসলামী ছাত্রশিবিরের অন্তরালের অভাবনীয় দ্যুতিময় কল্যাণ ও সমৃদ্ধি তাহলে তারা তাদের ঘৃণ্যতম পত পরিহার করে এর পৃষ্টপোষন করত। কিন্তু যারা অন্ধ,বধির ,যারা ক্ষমতার স্পর্শে দ্বীগবিদিক জ্ঞানশূণ্য তাদের কাছে পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবনই আসল জীবন। এরা পুজিঁবাদী ভোগের সাগরে ভাসতে পারলেই জীবনকে সফল ও সার্থক করা যায় বলে ধারণা করে । তাদের জন্য এ ক্ষণস্থায়ী জীবনের চাইতে প্রিয় আর কি হতে পারে? তাই তারা পৃথিবীতে মৃত্যু শঙ্কায় মরার আগে বহুবার মরে। এককথায় এরা যেন জীবন্ত লাশ। তারা জীবনকে ভোগ করার চেষ্টা করলেও প্রকৃত পক্ষে এরা জীবণকে উপভোগ করতে পারেনা। প্রকৃতি উপভোগ্য জীবন হল প্রশান্তিময় আত্নার জীবন, যা শুধু বস্তুদিয়ে দিয়ে উপভোগ করা যায়না।
আমাদের প্রত্যাশিত সোনালী সমাজের লোক তৈরীর কাজ আরো অনেক বাকী। হয়রত ওমর, আলী খোবায়েব ও খাব্বাবের মত যুবকরা ছাত্রশিবিরের পতাকা তলে সংঘবদ্ধ হয়ে সে ঐতিহাসিক কাজের অংশিদার হতে পারে। ছাত্রশিবির যুবক,তরুণদের মাঝে ঘুণে ধরা সমাজ পরিবর্তণের একটি প্রচন্ড ঝাকুনি দিতে সক্ষম হয়েছে। আজকের জাহেলিয়াত পূর্ণ সমাজব্যবস্থার প্রতিটি রন্দ্রে রন্দ্রে একটি প্রচন্ড ঝাকুনি প্রয়োজন,এজন্য প্রয়োজন সৎ দক্ষ যোগ্য নেতৃত্ব। যারা সমাজের সকল জাহেলিয়াত উপড়ে ফেলে উম্মাহকে মুক্ত করবে। যারা হককে হক বলবে। কৌশলের নামে অপকৌশল করে সত্যকে কখনো এড়িয়ে যাবেনা। ছাত্রশিবিরের ৩৮ বছরের পথ চলা আল্লাহ যেন কবুল করেন,তার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে কায়োমানো বাক্যে প্রার্থনা করছি। সামনের সকল কন্টাকীর্ণ পথ মাড়ি দিয়ে ছাত্রশিবির যেন শহীদের রক্তের সিড়ি বেড়ে প্রত্যাশিত মঞ্জিলে এগিয়ে যেতে পারে। আমীন।
৫২,৬৯,৭১ও,৯০ এ ছাত্রসমাজের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছিল জগৎজোড়া। ছাত্র ও ছাত্রনেতাদের প্রতি সবার ছিল অগাদ ভালবাসা আর স্নেহ ভরা শ্রদ্ধা। ৭১ পরবর্তী ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে যেসকল ছাত্রসংগঠন নেতেৃত্ব দিয়ে আসছিল তাদের ভূমিকা সমগ্রদেশবাসিকে প্রচন্ড হতাশ করেছিল। মাত্র কয়েক বছর আগে যেসকল ছাত্র নেতাদের নিয়ে সমাজের সর্বস্তরে আশার বানী শুনা যেত, নিমিষে যেন নিঃশেষে তলিয়ে যেতে থাকল। স্নেহ ভালবাসার পরশ মাখা সে আস্তা ও বিশ্বাসের মিনার ভেঙ্গে চৌচির হয়ে তাদের ব্যাপারে অভিযোগ আসল ওরা ডাকাত,খুনি,নারীর সম্ভ্রম লুন্ঠনকারী,মাদকসেবী ও আইনের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল। এমন এক আমানিশা ঘন মুহুর্তে একদল তরুণের নেতৃত্বে ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে শুরু হয় এক ঐতিহাসিক পথ পরিক্রমা। বঞ্চিত,নিপিড়িত মানুষের প্রত্যাশিত ও আল্লাহর রঙ্গে রঙ্গিন মানুষ গড়াই ছাত্রশিবিরের মূখ্য উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ছাত্রশিবির প্রত্যাশিত কিছু মানুষ তৈরী করেছে। হয়তবা এ সমাজের কিছু ব্যক্তির কাছে তারা অপছন্দনীয়। কিন্তু আসল সত্য হল এই যে তাদের অধিকাংশই ছাত্রশিবিরের সাথে জড়িতদের মনের গহিন থেকে পছন্দ করে ,শুধুমাত্র এরা বিরোধীতার কারণে বিরোধীতা করে। তারা জানে ছাত্রশিবিরই কেবল দিকভ্রান্ত যুবকদেরকে পরিবার,সমাজ ও দেশের প্রত্যাশিত মানুষ হিসেবে গড়তে কাজ করে চলছে। যেখানে সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে যুবকরা অবক্ষয়ের তীব্র স্রোতে ভেসে যাচ্ছে সেখানে এই স্রোতের বিপরীতে ভিন্ন স্রোত সৃষ্টি করে সামনে এগিয়ে চলা মামুলি কোন ব্যাপার নয়। তাই এসকল প্রকাশ্য মঞ্চে বিরোধীতাকারীরা নিজেরা মুখে বিরোধীতা ও এর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করলেও তারা প্রত্যাশা করে “এমন যদি আমার প্রিয় সন্তানটিও হত”!
ছাত্রশিবিরের অন্যতম কর্মসূচী হল তরুণ ছাত্রসমাজের মাঝে ইসলামের সুমহান আহবান পৌঁছে দেয়া । যেসকল ছাত্ররা এ আহবানে ঐক্যমত পোশন করে তাদেরকে সংগঠনের অর্ন্তভূক্ত করা। সংগঠনের আওতাধীন ছাত্রদেরকে তানজিমও তরবিয়াতের মাধ্যমে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধে দৃঢ় করা। শিক্ষাপ্রতিষ্টানে ছাত্রদের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখা । গরীব ও মেধাবী ছাত্রদের সমস্যা সমাধানে সহযোগীতা করা। দেশ জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরী করা, যারা পরিবার,সমাজ ও দেশ জাতির জন্য রাহাবার হিসাবে কাজ করবে। যারা হতাশার তিমিরেও আলোক বর্তিকা হয়ে কাজ করবে। ছাত্রশিবির মেধাবী ছাত্রদেরকে সত্য ও সুন্দরের সহযাত্রী হতে অনুপ্রাণিত করতে মেধাবী সংবর্ধনা, ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম, গরীব মেধাবী ছাত্রদের জন্য স্টাইপেন্ট চালুর পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিবছর সাপ্তাহ ও পক্ষকালব্যাপী ‘পরীক্ষায় নকলকে না’, মাদক ও ইভটিজিং বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও বিনামূল্যে গরীব মেধাবী ছাত্রদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ,শীতবস্ত্র বিতরণ, ব্লাড ডোনেশন,ব্লাড গ্রুপিং, ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প,পথ শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমান শিক্ষা কার্যক্রম চালু, কুরআন প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়ে থাকে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বৃক্ষরোপন কর্মসূচী ,উম্মুক্ত জলাশয়ে ও নদী-নালায় মাছের পোনা ছাড়া, প্রাকৃতিক দূর্যোগে ছাত্রশিবিরের ভূমিকা সমগ্র দেশবাসীর কাছে অনন্য বিস্ময়। বিশেষ করে জাতির ক্রান্তি লঘ্নে সকল স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়।
আদর্শবাদী দল পাহাড়সম ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারেও স্বীয় আদর্শের ভিত্তির উপর ঠিকে থাকাতে পারলে এর যাত্রাকে যারা অবরুদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালায় তাদের অপ্রচেষ্টা সময়ের পরিক্রমায় ভূল প্রমানিত হয়। আদর্শবাদীদল ষড়যন্ত্র,নির্মম নির্যাতন ও ঘৃন্য অপপ্রচারে সাময়িক অসুবিধায় থাকলেও চুড়ান্তভাবে এর যাত্রা অব্যাহত থাকে মঞ্জিলের দিকে। ছাত্রশিবিরকে তার যাত্রা পথে এ পর্যন্ত হাজারো বাঁধা মাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হয়েছে । ছাত্রশিবিরের পথপরিক্রমায় নানামুখী ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র, যুলম নির্যাতন ও অপপ্রচার অন্যতম। ছাত্রশিবির দেশের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্টান গুলোতে আদর্শিক সৌন্দর্য্যরে মাধ্যমে দেশের জনপ্রিয় ছাত্রসংগঠনে হিসেবে স্বীকৃত লাভ করে চলছিল ঠিক তখনই আদর্শিক লড়াইয়ে পরাজিতরা ঘৃণ্য পথে শিবিরের নেতা কর্মীদের উপর নানামুখী নির্যাতন চালিয়ে তাদের বুলন্দ আওয়াজকে স্তিমিত করতে চায়।
যখন খুন,গুম ও নির্যাতন করে এর গতিপথ স্লথ করা যাচ্ছেনা ঠিক তখন অপপ্রচারকে অন্যতম হাতিয়ার হিসাবে অবলম্বন করে নিয়েছে পরাজিতরা। শিবিরকে বলা হয়েছে চেতনায় রাজাকার, রগকাটা, মৌলবাদী, অআধুনিক ও স্বাধীনতা বিরোধী। সন্ত্রাসী,নশকতাকারী! ইত্যাদি। এসব অপপ্রচার চালাতে গণমাধ্যম ও প্রশাসনকে সবচেয়ে বেশী অপব্যবহার করেছে সরকার ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। ছাত্রশিবিরের দুর্দমনীয় উত্থানে ভীত হয়ে ছাত্রশিবিরের নিরপরাধ নেতা কর্মীদেরকে নাশকতার অভিযোগে অহরহ গ্রেপ্তার করে বোমা নাটক, অস্ত্র উদ্ধার নাটক সাজানো হয়েছে, যা ইতিহাসের এক জঘন্যতম মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়। এমন অপপ্রচার অভিযুক্ত দলের পক্ষে প্রচারের সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কারণ এমন ঘটনা যখন সাজানো হয় তখন ভূক্তভূগীদের আদর্শিক দৃঢ়তা আরো বেড়ে যায়,তারা তাদের যাত্রাপথে এগিয়ে যেতে আরো তীব্র শক্তি অনুভব করে। যারা এমন হট টক নিউজপায় তারা উৎসুকের সাথে এমন খবেরর আসল সত্য জানতে চেষ্টা করে, এক্ষেত্রে যুবকরাই উৎসূকি হয়ে থাকে। শিবিরেরর বিরুদ্ধে প্রচারিত ঘৃণ্য ঘটনার অন্তরালে ডুবে আসল সত্য জানতে গিয়ে উৎসূকিরা নিজেরা ছাত্রশিবিরের সমর্থক হয়ে যায়, তারা বুঝতে পারে এমন অসত্য প্রচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আর যারা অসত্য ঘটনাকে রং রস মিশিয়ে প্রচার করার কাজে ব্যস্ত তারাও জানে এটি মিথ্যা, এ কাজ করা তাদের জন্য ঠিক নয়।কিন্তু তাদের বিবেক বোঁধ লোপ পেয়েছে, তাই তারা মিথ্যাকে সত্যের প্রলেপে প্রচার চালাতে মোটেও দ্বীধা বোধ করেনা। এসব মিথ্যা অভিযোগে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা মোকাদ্দমায় ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদেও গ্রেপ্তার কওে জেলে পুড়েছে। ছাত্রশিবিরকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে অসংখ্য সন্দেহ ভাজন সাধারণ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা কখনো শিবিরও করেনি বা শিবির সম্পর্কে জানেনা তারা মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করে। সময়ের ব্যবধানে ভিন্নমতের ছাত্ররাও ছাত্রশিবির সম্পর্কে অবগত হয় এবং অনেকে শিবিরে যোগ দিতেও দেখা গেছে। আলহামদুলিল্লাহ! ছাত্রশিবিরের ব্যাপারে যেসকল অভিযোগ এনেছে, প্রতিপক্ষরা অপপ্রচার করেছে তা বারবার মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
ছাত্রশিবিরের দৃঢ় প্রত্যয়ী পথপরিক্রমায় সরকার ও ইসলাম বিদ্বেষীদের নির্মম আঘাতে শহীদ হয়েছেন ছাত্রশিবিরের ২১৬ জন তাজা প্রাণ। যারা ছিল তাদের পরিবার,সহপাঠি,শিক্ষক ও প্রতিবেশীদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়। বৃহৎ প্রয়োজনে বাতিলের কাছে পরাস্ত হতে এরা শিখেনি। এমন দৃঢ়পদে পথচলতে গিয়ে শতশত তরুন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। কারো পা নেই,কারো হাত নেই কারো বা নেই চোখ । কেউ কেউ হারিয়েছেন শরীর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ।যারা হক বাতিলের লড়াইয়ে জীবন্ত সাক্ষি। যারা আমৃত্যু সামনে এগিয়ে যেতে সাহস যোগাবে এ পথের যাত্রীদেরকে। তারা এই কাফেলার জীবন্ত শহীদ।
যেখানে মজলুমানের শরীরের রক্তে রাজপথ ,ক্যাম্পাস ,জনপদ রঞ্জিত হয়েছে সেখান থেকেই নারায়ে তাকবিরের আওয়াজ বুলন্দ হয়েছে। যারা ছাত্রশিবিরকে নিঃশেষ করতে চেয়েছে তারাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। মজলুমদের পক্ষে লাখো বনি আদম তাদের জীবন সম্পদ স্বপ্নস্বাধ বিলিয়ে দেয়ার জন্য তৈরী হয়েছে। এটি আল্লাহর অশেষ করুনা ছাড়া আর কিছু নয়। সেকারণেই আল্লাহর অশেষ রহমতে ইসলামী ছাত্রশিবির ৩৮ বছরের পথ পরিক্রমায় নিজের অবস্থানে করেছে সুসংহত। শিক্ষাপ্রতিষ্টানের গন্ডি পেরিয়ে শহর, নগর, বন্দর পেরিয়ে এখন এর অবস্থান পাড়ায় মহল্লার ঘরে ঘরে। আগামীর সম্ভাবনাময়ী তরুণ সমাজকে প্রকৃত মানুষ গড়তে ছাত্রশিবির প্রতিটি জনপদে কাজ করে চলছে নির্ঘুম নিরলস ভাবে।
ঘুনেধরা সমাজে দ্বিকভান্ত্র যুবকদের পথের সন্ধান দিতে ছাত্রশিবির একটি ব্যাতিক্রমধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্টান হিসাবে কাজ করে চলছে। দুনিয়ার দক্ষতার পাশাপাশি অহীর জ্ঞানে আলোকিত মানুষ হিসেবে তৈরী করাই এই শিক্ষাপ্রতিষ্টানের অন্যতম কাজ। মাদক আসক্ত,নৈতিক অবক্ষয়সহ নানা অপরাধে জড়িত যুবকদের মাঝে সাহস,মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার দৃঢ়তা নিয়ে তৈরীতে ছাত্রশিবিরের কর্মীরা আপন বন্ধু হিসেবে কাজ করার অতুলনীয় মানসিকতা সত্যিই প্রশংনীয়। এমন কাফেলার বিরুদ্ধে অপ্রপ্রচার চালাতে যারা সিদ্ধহস্ত তারা মূলত নিজের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারে। কারণ তাদের ভাল কাজে অসহযোগীতার কারণে আগামীপ্রজন্ম মরিচিকা সঙ্কুল চোরা পথে সত্যপথ খুঁজে না পেয়ে ভিন্ন পথে যাত্রা শুরু করে। যা ধ্বংসের ,অপ্রত্যাশিত।
ইসলামী ছাত্রশিবির একটি সুশৃংখ ছাত্রসংগঠনের নাম। এ সংগঠন একজন ছাত্রকে যেভাবে ব্যক্তিগত ভাবে আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্ব গঠন করার ক্ষেত্রে সহযোগীতা করে ঠিক সংগঠনের প্রতিটি পর্যায়ে শৃংখলা প্রতিষ্টাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কর্মী গঠন,নৈতিক প্রশিক্ষণ ও আদর্শ সংগঠন পরিচালনা পদ্ধতি শিক্ষণ কর্মসূচী গুলো একটি আদর্শ সংগঠন প্রতিষ্টার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইসলামী ছাত্রশিবির তার সর্বস্তরের জনশক্তিকে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । আলহামদুলিল্লাহ! ইসলামী ছাত্রশিবির এখন দেশের সবচেয়ে সুশৃংখল ও বৃহৎ সংগঠন হিসেবে আতœপ্রকাশ লাভ করেছে। এই সংগঠনে কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নেতৃত্ব নির্বাচনে নেই কোন অন্তকোন্দল,দলাদলি, মারামারি। যারা নেতৃত্বের জন্য লোভাতুর তারা এ সংগঠনে নেতৃত্বেও জন্য অনুপযুক্ত। যেখানে এসব ঘটনা অন্য ছাত্রসংগঠনের মাঝে ঘটছে অহরহ। তাই দেশে বিদেশে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিয়ে বিবেকবান ব্যক্তি বর্গের কাছে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। তাদের স্বপ্ন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সৎ দক্ষ তরুণরাই আগামীতে দেশ জাতির নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে তার প্রত্যাশিত মঞ্জিলে উন্নিত করতে সক্ষম হবে। আর ছাত্রশিবিরের এই কাফেলা থেকে অন্যন্য ছাত্র সংগঠন গুলোর শিখার আছে অনেক কিছু। ছাত্রশিবির আজ হলফ করে বলতে পারে ছাত্রশিবিরের নেতা কর্মীরা পরিবার সমাজের বোঝা হবেনা, তারা মাদক মুক্ত,ইভটিজিং মুক্ত,মা-বোনদের সম্ভ্রম রক্ষাকারী, ভাল ছাত্রদের অনন্য, পরোপকারী, সন্ত্রাসও টেন্ডারবাজী মক্ত।
বহুমুখী সন্ত্রাসের শিকার ইসলামী ছাত্রশিবির। প্রতিটি সরকার তাদের ইসলাম বিদ্বেষী চেতনা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের উদ্দেশ্যে বারবার আঘাত করেছে ছাত্রসংগঠনটির উপর। ইসলাম বিদ্বেষী দলগুলো আদর্শিক লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে অপপ্রচার , গুম,খুম ও জুলুম নির্যাতনকে পুজিঁ করে এর যাত্রাকে নিঃশেষ করতে মরিয়া হয়ে লড়াই করছে। দেশের সিংহভাগ মানুষের চেতনা বোধ ইসলামের পক্ষে থাকলেও গুটি কতেক আবু লাহাবের ষড়যন্ত্রে সকল প্রচার মাধ্যম সমূহ ও সরকার সম্মিলিত দেশকে ধর্মনিরেপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্টা করার অপপ্রয়াশ চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরণের ঘৃণ্য সম্মিলিত হামলার ভয়াবহ অক্টোপাশে আবদ্ধ হয়ে সত্য মিথ্যার আসল স্বরুপ নিরুপন করা আমজনতার জন্য দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। ছাত্রশিবির এমন বৈরী হাওয়ায় আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল ও সমাজ ব্যবস্থার প্রকৃত স্বরুপ নিশ্চিত করার প্রয়াসে একবুক আশা নিয়ে নির্ঘূম পথ চলছে। আল্লাহ চাহেনতো ছাত্রশিবির তার প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে।
দেশকে যখন ফেইল এষ্টেট,তলাবিহীন ঝুড়ি,মাঝি বিহীন তরী ও দূর্ণিতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে উন্নত দেশের কর্তাব্যক্তিরা আক্ষেপ করে বলে, আমাদের দেশের কর্তাব্যক্তিরা ও হীনমন্যতায় ভোগেন তখন ছাত্রশিবির বলতে পারে, এমন নিরাশার করালগ্রাস থেকে উম্মাহকে রক্ষার তাগিদে কিছু সৎ দক্ষ ব্যক্তি তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে ছাত্রশিবির। যারা দুনিয়ার চাওয়া পাওয়ার কাছে পরাস্ত হবার নয় বরং দুনিয়া তাদের কাছে পরাস্ত হবে ইনশাআল্লাহ। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিকেই জীবণের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে ধরে সম্মুখে এগিয়ে চলছে। এই কাফেলার ভাইয়েরা তাদের চাকুরী,ব্যাবসা ও বিভিন্ন পেশায় সততা ও কর্মনিষ্টার মাধ্যমে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। নিজেকে সৎ দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা এমন কাজটি একজন মু’মিনের জন্য কৃত্রিম কোন বিষয় নয় বরং এটি তার অন্যতম নৈতিক দায়িত্ব। দক্ষতার্জন, কর্মনিষ্ট হওয়া এসব শারিরীক ভাবে সুস্থ মু’মিনের জবিনের অন্যতম গুনাবলী বলেই রাসুল (সঃ) তার সাহাবীদের নসিহত করেছেন। ঠিক সেভাবেই এগিয়ে যাওয়ার জন্য, যাত্রাকে আরো সুদৃঢ় করার জন্য হিতাকাঙ্খীদের যৌক্তিক দিক নির্দেশনা দেয়ার পথ খোলা রেখেছে ছাত্রশিবির।
ইসলামী ছাত্রশিবির ৩৮ বছরের পথ পরিক্রমায় তাদের কথা রেখেছে। সত্য ও সুন্দরের পক্ষে জীবন উৎসর্গ করেছে তার নেতা-কর্মীরা। দুনিয়ার লোভ লালসার কাছে তারা নিজেদের জলাঞ্জলী না দিয়ে পাহাড় বিপদ সঙ্কুলসম পথ মাড়ি দিয়ে সম্মুখে এগিয়ে যেতে তারা এখনো দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তারা শুধুমাত্র দুনিয়ার ভোগের সাগরে নিজেদের ভাসিয়ে না দিয়ে দুনিয়াকে আখেরাতের পরীক্ষালয় হিসেবে গ্রহন করে সকল রক্ত চক্ষুকে মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে চলছে দূর্বার গতিতে। সরকার ও ইসলাম বিদ্বেষীরা যদি বুঝতে সক্ষম হত ইসলামী ছাত্রশিবিরের অন্তরালের অভাবনীয় দ্যুতিময় কল্যাণ ও সমৃদ্ধি তাহলে তারা তাদের ঘৃণ্যতম পত পরিহার করে এর পৃষ্টপোষন করত। কিন্তু যারা অন্ধ,বধির ,যারা ক্ষমতার স্পর্শে দ্বীগবিদিক জ্ঞানশূণ্য তাদের কাছে পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবনই আসল জীবন। এরা পুজিঁবাদী ভোগের সাগরে ভাসতে পারলেই জীবনকে সফল ও সার্থক করা যায় বলে ধারণা করে । তাদের জন্য এ ক্ষণস্থায়ী জীবনের চাইতে প্রিয় আর কি হতে পারে? তাই তারা পৃথিবীতে মৃত্যু শঙ্কায় মরার আগে বহুবার মরে। এককথায় এরা যেন জীবন্ত লাশ। তারা জীবনকে ভোগ করার চেষ্টা করলেও প্রকৃত পক্ষে এরা জীবণকে উপভোগ করতে পারেনা। প্রকৃতি উপভোগ্য জীবন হল প্রশান্তিময় আত্নার জীবন, যা শুধু বস্তুদিয়ে দিয়ে উপভোগ করা যায়না।
আমাদের প্রত্যাশিত সোনালী সমাজের লোক তৈরীর কাজ আরো অনেক বাকী। হয়রত ওমর, আলী খোবায়েব ও খাব্বাবের মত যুবকরা ছাত্রশিবিরের পতাকা তলে সংঘবদ্ধ হয়ে সে ঐতিহাসিক কাজের অংশিদার হতে পারে। ছাত্রশিবির যুবক,তরুণদের মাঝে ঘুণে ধরা সমাজ পরিবর্তণের একটি প্রচন্ড ঝাকুনি দিতে সক্ষম হয়েছে। আজকের জাহেলিয়াত পূর্ণ সমাজব্যবস্থার প্রতিটি রন্দ্রে রন্দ্রে একটি প্রচন্ড ঝাকুনি প্রয়োজন,এজন্য প্রয়োজন সৎ দক্ষ যোগ্য নেতৃত্ব। যারা সমাজের সকল জাহেলিয়াত উপড়ে ফেলে উম্মাহকে মুক্ত করবে। যারা হককে হক বলবে। কৌশলের নামে অপকৌশল করে সত্যকে কখনো এড়িয়ে যাবেনা। ছাত্রশিবিরের ৩৮ বছরের পথ চলা আল্লাহ যেন কবুল করেন,তার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে কায়োমানো বাক্যে প্রার্থনা করছি। সামনের সকল কন্টাকীর্ণ পথ মাড়ি দিয়ে ছাত্রশিবির যেন শহীদের রক্তের সিড়ি বেড়ে প্রত্যাশিত মঞ্জিলে এগিয়ে যেতে পারে। আমীন।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোনালিসা ২০/১১/২০১৬ভাল লাগল
-
জহির রহমান ১৯/১১/২০১৬আপনি যতই গুণগান করেন, শুধু আমার এলাকার শিবিরই ভালো, অন্য এলাকার শিবির ভালো না।