ফেসবুক আমি এবং একজন প্রিন্সেস আদিয়াতঃ প্রথম পর্ব
প্রেক্ষাপটঃ
ফেসবুক যোগাযোগের অন্যতম একটি হাতিয়ার হল ফেসবুক
চ্যাট । চ্যাটের অন্যতম তিনটি মাধ্যম হল, টেক্সট চ্যাট, ভয়েস
চ্যাট ও ভিডিও চ্যাট । ব্যক্তিভেদে ভিন্ন এর ব্যবহারের উদ্দেশ্য ।
কেউ যোগাযোগের জন্য, কেউ নিছক সামাজিকতার আকর্ষণে,
কেউ সময় কাটাতে, কেউ নতুন বন্ধু বান্ধবীর খোঁজে, কেউ বা
আবার প্রেমিক প্রেমিকার প্রত্যাশায় ব্যবহার করে ফেসবুক চ্যাট ।
সময় কালঃ
এপ্রিল, ২০০৮ ইং
স্থানঃ
ঢাকা, বাংলাদেশ ।
ভূমিকাঃ
ফেসবুক ২০০৪ সালে শুরু হলেও এটি বাংলাদেশে জনপ্রিয় হতে
শুরু করে ২০০৮ সালের দিক থেকে, এর আগের ফেসবুক ছিল
কিন্তু ব্যবহার ছিল সীমিত পর্যায়ে । তখন ২০০৮ ইং এ প্রথম
প্রথম ফেসবুক ব্যবহার করছি তাই কৌতুহল স্বভাবতই বেশী ।
চারপাশে এতো এতো নতুন মুখ, সেই কৌতুহল থেকে আজানাকে
জানতে শুরু হল নতুন বন্ধু বানানো ও আলাপচারিতা ।
ফেসবুক কথনঃ পর্ব ০৩ ফেসবুক ও নতুন সম্পর্ক
প্রথম কিস্তিঃ খেলা শুরু
একটু সময় পেলে আমি সোজা গিয়ে ফেসবুকে ঢুকি,
ঢুকেই খোঁজ নেই অনলাইনে কেউ আছে নাকি?
একদিন ফেসবুকে ঢুকেই হয়ে গেলাম পুরা টাস্কিত,
দেখি অনলাইনে আছেন সুন্দরী প্রিন্সেস আদিয়াত।
আমিঃ হাই প্রিন্সেস, কেমন আছেন ?
(এই প্রিন্সেসের সুন্দর আবেদনময়ী প্রোফাইল পিকচার
খানা দেখে মুগ্ধ হয়ে দিন পনের আগে আমি ফ্রেন্ড
রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম, আমাকে অপেক্ষার মূল্য
বুঝিয়ে দু সপ্তাহ ঝুলিয়ে রেখে গতকাল সদ্য উনি আমার
ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট রিসিভ করেছন। আমি চ্যাট মেসেজ
পাঠানোতে সুন্দরী প্রিন্সেসের চ্যাট মেসেজ উইন্ডোতে
হলুদ বাতি জ্বলে জানান দিলো একটি বার্তা এসেছে,
প্রিন্সেস পাঁচ মিনিট দেরী করিয়ে বার্তাটি খুলে দেখলেন
কিন্তু তখনই কোন উত্তর দিলেন না । প্রিন্সেস বলে কথা
সাথে সাথে উত্তর দিলে মান থাকে নাকি ! তাই আরও পাঁচ
মিনিট অপেক্ষা করিয়ে উনি আমার মেসেজের উত্তর দিলেন। )
প্রিন্সেসঃ Hello There, Ke Apni ?
( উনি প্রিন্সেস, বাংলা বললে কি উনার আভিজাত্য
থাকে ? তাই চ্যাট উইন্ডোতে ও ফ্রেন্ড লিস্টে আমার
নাম থাকা সত্ত্বেও উনি কিছুটা অবজ্ঞার সাথে শুরু
করলেন ইংরেজি দিয়ে, Hello There, তারপরের
শব্দটা অবশ্য বাংলায় বললেন কিন্তু তাও ইংরেজি
লেটার দিয়ে আমার প্রশ্নের উত্তর নয় এবং যথারীতি
অবজ্ঞার সাথে পাল্টা প্রশ্ন, Ke Apni ?)
আমিঃ বনি আদম ।
(এমনিতেই দশ মিনিট পর উত্তর তাও আবার
এমন চাঁছাছোলা ঢঙে, আমার রোম্যান্টিক মুড
ততক্ষণে উধাও, তাই এই হেঁয়ালিপূর্ণ উত্তর।)
প্রিন্সেসঃ Mane Ki?
(এইবার উনি কিঞ্চিৎ টাস্কিত তাই স্ট্যাটাসের কথা ভেবে
আর সময় নষ্ট না করে সাথে সাথেই উত্তর দিয়ে দিলেন ।)
আমিঃ বনি আদম মানে আদমের বংশধর ।
( আমি হেঁয়ালি অব্যাহত রাখি, মুড এখনো খারাপ।)
প্রিন্সেসঃ Apnar poricoy Din, Kajer kono kotha
Thakle bolen, Shudhu Shudhu Ulta Palta
Kotha Bole Somoy Nosto Korchen Keno?
(এবার উনি বিরক্ত, উনি গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, উনার সময়ের অনেক দাম)
আমিঃ আমার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার জন্য আপনাকে
অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
(আমি একটু তেল দিলাম তাপমাত্রা স্বাভাবিক করার জন্য)
প্রিন্সেসঃ Welcome, Ami Sadharonoto Ocena
Karo Friend Request Receive Kori Na,
Asole Ato Friend Request ase, Kal Kichu
Korlam Karon Eto Friend Request Joma
Hoyeche Ze Amar Ek Friend Bollo Amar
Accounte Notun kono Friend Request
Zacche Na.
(আমার মত একজন অপরিচিত মানুষের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করায়
আমি যাতে উনাকে সহজলভ্য না ভাবি তাই একটু ভাব নিলেন, সাথে
আমাকে একটু অবজ্ঞাও করে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হল, সত্য মিথ্যা
আল্লাহ মালুম, তবে কিছু আবাল পোলাপানের কারনে এক্ষেত্রে পুরুষ জাতির
মান্সন্মান ফেসবুকের মাঠে মারা যাবার ঘটনা বিরল নয় ।)
আমিঃ I am Lucky, Then.
(আমিও একটু ভাব নিয়ে ইংরেজিতে উত্তর দিলাম সাথে একটু তৈল মর্দন ।)
প্রিন্সেসঃ হুম......।
(আমি ইংরেজি বলাতে উনি বাংলায় ফিরলেন কারন এখন আর ইংরেজি দিয়ে
ভাব হচ্ছে না । )
আমিঃ হুম ২......।
প্রিন্সেসঃ কোথায় থাকেন আপনি ?
( উনি আমার ওজন যাচাই করতে চাইছেন।)
আমিঃ পৃথিবীতে ।
( আমি আবার স্বভাবজাত হেঁয়ালিপূর্ণ ফ্লার্ট শুরু করি। )
প্রিন্সেসঃ হুম......। পৃথিবীতে কোথায় ?
( উনি আমার এই ফ্লার্ট একটু একটু পছন্দ করছেন।)
আমিঃ কোথায় হলে আপনি খুশী হন ?
(আমি আবারও একটু হেঁয়ালিপূর্ণ ফ্লার্ট করলাম।)
প্রিন্সেসঃ আপনি কোথায় থাকেন তার সাথে আমার খুশী হবার সম্পর্ক
কি ? আপনাকে তো আমি চিনিই না । তাই নয় কি ?
(কেউ আমারে মাইরালা, আমার ফ্লার্ট এবার আর কাজে আসলো না,
উনি আমাকে সপাটে মাথার উপর দিয়ে ওভার বাউন্ডারী হাঁকালেন। )
আমিঃ আমরা কি জন্ম থেকে সবাই সবাইকে চিনি, এই ৭০০ কোটি
মানুষের পৃথিবীতে ঠিক কত জনকে আমরা চিনি বলুন,তারা পৃথিবীর
মোট জনসংখ্যার শতকরা কত ভাগ? পৃথিবীর বেশীর ভাগ মানুষই
তো আমাদের অপরিচিত রয়ে গেছে। কে জানে এই বিশাল মানব গোষ্ঠীর
ভেতরই হয়ত আছে আমাদের কোন পছন্দের মানুষ । আমাদের ইচ্ছা বা
চেষ্টার অভাবে তার সাথে কোনদিন হয়তো পরিচয়ই হল না । তার সাথে
পরিচয় না হয়েই হয়তো আমাদের জীবন কেটে গেলো । আজ যারা আপনার
জীবনে আছে তারাই কি আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষ ? এমনতো হতে
পারে আপনার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটির সাথে আপনার এখনো দেখাই হয়নি ?
( তার সপাট ওভার বাউন্ডারী খেয়ে আমি একটু দার্শনিক হয়ে যাই,
বল সুইং করা শুরু করি কারন এছাড়া আমার সামনে আর কোন পথ খোলা
নেই এই খেলা চালিয়ে যেতে হলে ।)
প্রিন্সেসঃ হুম...... দার্শনিক ? নতুন মানুষ তো নতুন ঝামেলাও হতে
পারে ?
(উনি আবার আমার কথা উপভোগ করছেন তবে ব্যাটিং অব্যহত।)
আমিঃ পকেটে পয়সা না থাকলে, কোথাও মাইনক্যা চিপায় ধরা খাইলে বা
আপনার মতো কারো কাছ থেকে আজকের মতো ঝাড়ি খাইলে দার্শনিক হয়ে
যাই এই আর কি। ঝামেলা ... হতে পারে, তবে আমি পজিটিভলি ভাবি ।
প্রিন্সেসঃ হুম... একটা মেয়ে আর একটা ছেলের প্রেক্ষাপট এক নয় । এখন
দার্শনিক তাহলে এমনিতে বা অন্য সময় কি ?
( উনি আমার প্রতি কিঞ্চিত আগ্রহ বোধ করছেন তাই আমার ওজন যাচাই
ও হাড়ির খবর জানতে চাচ্ছেন, মূল প্রশ্নটি হল আমি কি করি।)
আমিঃ তা ঠিক ... কখন কি হব সেটা সময়, প্রেক্ষাপট ও সহ
চরিত্রের উপর নির্ভর করে ।
(আমি নৈব্যক্তিক থাকি কোন বিশেষ কিছু বলে ধরা খাওয়ার ভয়ে,
এতে আবার গিরগিটির মত রং বদলানোর সুযোগও হাতে থাকে। )
প্রিন্সেসঃ হুম... এখনো কি দার্শনিকই আছেন ?
আমিঃ নাহ ... এখন কবি হয়ে গেছি, আপনি একটু লাই দিলেই
প্রেমিক হয়ে যাবো । তাই ভুলেও কিন্তু আর আমাকে লাই দেবেন না
একদম, আমাকে লাই দ্নিয়ে জের বিপদ ডেকে আনবেন না ।
(আমি ঝোপ বুঝে কোপ মেরে দেই, প্রিন্সেস টোপ গিলেছেন, এখন
আমার কাজ শুধু সুতা ছেড়ে যাওয়া, সময় মত সুতা গুটিয়ে নিলেই হবে ।)
প্রিন্সেসঃ কবি, কবি কেন ?
(আমার কথায় প্রিন্সেস কিঞ্চিৎ টাঙ্কিত, “কবি” বলে যদিও উনি থেমে
গেছেন কিন্তু উনি আসলে পুরো বিষয়টাই জানতে চাচ্ছেন,প্রেমিক শব্দটি
উনি উচ্চারণ করছেন না কিন্তু উনি চাচ্ছেন আমি যেন নিজে থেকেই পুরোটা
বলি। উনি এখন আমাকে অখণ্ড মনোযোগ দিচ্ছেন। এখন আমার কাজ শুধু
ঠিকঠাক টাইমিং করে যাওয়া ।)
আমিঃ আপনি সাথে আছেন তাই ।
(আমার কাজ এখন শুধু ফ্লার্ট চালিয়ে যাওয়া, অবস্থা বুঝে মাত্রা কমানো
বাড়ানো । সব গুলো সুযোগ কাজে লাগানো সুযোগ না পেলে তৈরি করে নেয়া । )
প্রিন্সেসঃ আপনি কি সব সময়ই মেয়েদের সাথে এমন ফ্লার্ট করেন ?
(উনি ভেসে যাওয়ার মুহূর্তে আবার বাস্তবে ফিরে এলেন, লাগাম টানলেন।
ঠাণ্ডা জল ঢেলে আমাকে ভিজিয়ে দিলেন ।)
আমিঃ সব মেয়েদের সাথে না, শুধু প্রিন্সেসদের সাথে ।
( আমি সুইং বজায় রাখি, যেন উনার স্কোয়ার কাটটা আমি
অবলীলায় লুফে নিয়েছি, উনাকে কোন রানের সুযোগ না দিয়ে।)
প্রিন্সেসঃ হুম... এর আগে কয়জনের সাথে করেছেন ?
(উনি আমাকে বাজিয়ে দেখতে চাচ্ছেন ।)
আমিঃ ঐটার হিসাব তো আমার ম্যানেজার রাখে, তার কাছে
হয়তো এর হিসাব থাকলেও থাকতে পারে ।
( আমি উনাকে কথার খেলায় জড়াই, এই খেলায় আমি
রীতিমত বিস্ময়কর একজন প্রতিভা, আমার সাথে খেলতে
থাকলে আমি নিশ্চিন্ত যত কঠিন চিজই হন না কেন উনি
এক সময় ঠিকই ফেঁসে যাবেন, কোন ভুল নেই ।পরীক্ষিত ।)
প্রিন্সেসঃ আপনার ম্যানেজার আছে ? আপনি কি করেন ?
( উনি আবার আমার ওজন মাপতে ও আমার হাড়ির
খবর জানতে চাচ্ছেন। )
আমিঃ আমার ম্যানেজারের নাম মিঃ ল্যাপি । যখন মন যা চায়
তাই করি, যেমন এখন একটা প্রোজেক্ট শুরু করেছি, আকাশের সব
তারা, যেগুলো খালি চোখে দেখা যায়, সব গুনে ফেলব । তারপর
শুরু করবো ঢাকা শহরের সবগুলো দাঁড়কাক গোনার কাজ । এরপর
ফকির...
( আমি কথার ফাঁদ পাতা অব্যাহত রাখি, হেঁয়ালিপূর্ণ ফ্লার্ট
চালাতে থাকি, আমি উনাকে ঝুলিয়ে রাখি, ধরা দেই না।)
বিদ্রঃ এটি মূলত ফেসবুক নির্ভর নতুন ঘরানার একটি গদ্য কবিতা । তালমিল বা ছন্দের ভেতর নয়, কাব্যিকতা খুঁজতে বলবো ভাষার ব্যবহার, উত্তর প্রতি উত্তর ও স্বগতোক্তির ছন্দের ভেতর। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না যেন । ধন্যবাদ ।
(চলমান)
ফেসবুক যোগাযোগের অন্যতম একটি হাতিয়ার হল ফেসবুক
চ্যাট । চ্যাটের অন্যতম তিনটি মাধ্যম হল, টেক্সট চ্যাট, ভয়েস
চ্যাট ও ভিডিও চ্যাট । ব্যক্তিভেদে ভিন্ন এর ব্যবহারের উদ্দেশ্য ।
কেউ যোগাযোগের জন্য, কেউ নিছক সামাজিকতার আকর্ষণে,
কেউ সময় কাটাতে, কেউ নতুন বন্ধু বান্ধবীর খোঁজে, কেউ বা
আবার প্রেমিক প্রেমিকার প্রত্যাশায় ব্যবহার করে ফেসবুক চ্যাট ।
সময় কালঃ
এপ্রিল, ২০০৮ ইং
স্থানঃ
ঢাকা, বাংলাদেশ ।
ভূমিকাঃ
ফেসবুক ২০০৪ সালে শুরু হলেও এটি বাংলাদেশে জনপ্রিয় হতে
শুরু করে ২০০৮ সালের দিক থেকে, এর আগের ফেসবুক ছিল
কিন্তু ব্যবহার ছিল সীমিত পর্যায়ে । তখন ২০০৮ ইং এ প্রথম
প্রথম ফেসবুক ব্যবহার করছি তাই কৌতুহল স্বভাবতই বেশী ।
চারপাশে এতো এতো নতুন মুখ, সেই কৌতুহল থেকে আজানাকে
জানতে শুরু হল নতুন বন্ধু বানানো ও আলাপচারিতা ।
ফেসবুক কথনঃ পর্ব ০৩ ফেসবুক ও নতুন সম্পর্ক
প্রথম কিস্তিঃ খেলা শুরু
একটু সময় পেলে আমি সোজা গিয়ে ফেসবুকে ঢুকি,
ঢুকেই খোঁজ নেই অনলাইনে কেউ আছে নাকি?
একদিন ফেসবুকে ঢুকেই হয়ে গেলাম পুরা টাস্কিত,
দেখি অনলাইনে আছেন সুন্দরী প্রিন্সেস আদিয়াত।
আমিঃ হাই প্রিন্সেস, কেমন আছেন ?
(এই প্রিন্সেসের সুন্দর আবেদনময়ী প্রোফাইল পিকচার
খানা দেখে মুগ্ধ হয়ে দিন পনের আগে আমি ফ্রেন্ড
রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম, আমাকে অপেক্ষার মূল্য
বুঝিয়ে দু সপ্তাহ ঝুলিয়ে রেখে গতকাল সদ্য উনি আমার
ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট রিসিভ করেছন। আমি চ্যাট মেসেজ
পাঠানোতে সুন্দরী প্রিন্সেসের চ্যাট মেসেজ উইন্ডোতে
হলুদ বাতি জ্বলে জানান দিলো একটি বার্তা এসেছে,
প্রিন্সেস পাঁচ মিনিট দেরী করিয়ে বার্তাটি খুলে দেখলেন
কিন্তু তখনই কোন উত্তর দিলেন না । প্রিন্সেস বলে কথা
সাথে সাথে উত্তর দিলে মান থাকে নাকি ! তাই আরও পাঁচ
মিনিট অপেক্ষা করিয়ে উনি আমার মেসেজের উত্তর দিলেন। )
প্রিন্সেসঃ Hello There, Ke Apni ?
( উনি প্রিন্সেস, বাংলা বললে কি উনার আভিজাত্য
থাকে ? তাই চ্যাট উইন্ডোতে ও ফ্রেন্ড লিস্টে আমার
নাম থাকা সত্ত্বেও উনি কিছুটা অবজ্ঞার সাথে শুরু
করলেন ইংরেজি দিয়ে, Hello There, তারপরের
শব্দটা অবশ্য বাংলায় বললেন কিন্তু তাও ইংরেজি
লেটার দিয়ে আমার প্রশ্নের উত্তর নয় এবং যথারীতি
অবজ্ঞার সাথে পাল্টা প্রশ্ন, Ke Apni ?)
আমিঃ বনি আদম ।
(এমনিতেই দশ মিনিট পর উত্তর তাও আবার
এমন চাঁছাছোলা ঢঙে, আমার রোম্যান্টিক মুড
ততক্ষণে উধাও, তাই এই হেঁয়ালিপূর্ণ উত্তর।)
প্রিন্সেসঃ Mane Ki?
(এইবার উনি কিঞ্চিৎ টাস্কিত তাই স্ট্যাটাসের কথা ভেবে
আর সময় নষ্ট না করে সাথে সাথেই উত্তর দিয়ে দিলেন ।)
আমিঃ বনি আদম মানে আদমের বংশধর ।
( আমি হেঁয়ালি অব্যাহত রাখি, মুড এখনো খারাপ।)
প্রিন্সেসঃ Apnar poricoy Din, Kajer kono kotha
Thakle bolen, Shudhu Shudhu Ulta Palta
Kotha Bole Somoy Nosto Korchen Keno?
(এবার উনি বিরক্ত, উনি গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, উনার সময়ের অনেক দাম)
আমিঃ আমার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার জন্য আপনাকে
অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
(আমি একটু তেল দিলাম তাপমাত্রা স্বাভাবিক করার জন্য)
প্রিন্সেসঃ Welcome, Ami Sadharonoto Ocena
Karo Friend Request Receive Kori Na,
Asole Ato Friend Request ase, Kal Kichu
Korlam Karon Eto Friend Request Joma
Hoyeche Ze Amar Ek Friend Bollo Amar
Accounte Notun kono Friend Request
Zacche Na.
(আমার মত একজন অপরিচিত মানুষের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করায়
আমি যাতে উনাকে সহজলভ্য না ভাবি তাই একটু ভাব নিলেন, সাথে
আমাকে একটু অবজ্ঞাও করে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হল, সত্য মিথ্যা
আল্লাহ মালুম, তবে কিছু আবাল পোলাপানের কারনে এক্ষেত্রে পুরুষ জাতির
মান্সন্মান ফেসবুকের মাঠে মারা যাবার ঘটনা বিরল নয় ।)
আমিঃ I am Lucky, Then.
(আমিও একটু ভাব নিয়ে ইংরেজিতে উত্তর দিলাম সাথে একটু তৈল মর্দন ।)
প্রিন্সেসঃ হুম......।
(আমি ইংরেজি বলাতে উনি বাংলায় ফিরলেন কারন এখন আর ইংরেজি দিয়ে
ভাব হচ্ছে না । )
আমিঃ হুম ২......।
প্রিন্সেসঃ কোথায় থাকেন আপনি ?
( উনি আমার ওজন যাচাই করতে চাইছেন।)
আমিঃ পৃথিবীতে ।
( আমি আবার স্বভাবজাত হেঁয়ালিপূর্ণ ফ্লার্ট শুরু করি। )
প্রিন্সেসঃ হুম......। পৃথিবীতে কোথায় ?
( উনি আমার এই ফ্লার্ট একটু একটু পছন্দ করছেন।)
আমিঃ কোথায় হলে আপনি খুশী হন ?
(আমি আবারও একটু হেঁয়ালিপূর্ণ ফ্লার্ট করলাম।)
প্রিন্সেসঃ আপনি কোথায় থাকেন তার সাথে আমার খুশী হবার সম্পর্ক
কি ? আপনাকে তো আমি চিনিই না । তাই নয় কি ?
(কেউ আমারে মাইরালা, আমার ফ্লার্ট এবার আর কাজে আসলো না,
উনি আমাকে সপাটে মাথার উপর দিয়ে ওভার বাউন্ডারী হাঁকালেন। )
আমিঃ আমরা কি জন্ম থেকে সবাই সবাইকে চিনি, এই ৭০০ কোটি
মানুষের পৃথিবীতে ঠিক কত জনকে আমরা চিনি বলুন,তারা পৃথিবীর
মোট জনসংখ্যার শতকরা কত ভাগ? পৃথিবীর বেশীর ভাগ মানুষই
তো আমাদের অপরিচিত রয়ে গেছে। কে জানে এই বিশাল মানব গোষ্ঠীর
ভেতরই হয়ত আছে আমাদের কোন পছন্দের মানুষ । আমাদের ইচ্ছা বা
চেষ্টার অভাবে তার সাথে কোনদিন হয়তো পরিচয়ই হল না । তার সাথে
পরিচয় না হয়েই হয়তো আমাদের জীবন কেটে গেলো । আজ যারা আপনার
জীবনে আছে তারাই কি আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষ ? এমনতো হতে
পারে আপনার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটির সাথে আপনার এখনো দেখাই হয়নি ?
( তার সপাট ওভার বাউন্ডারী খেয়ে আমি একটু দার্শনিক হয়ে যাই,
বল সুইং করা শুরু করি কারন এছাড়া আমার সামনে আর কোন পথ খোলা
নেই এই খেলা চালিয়ে যেতে হলে ।)
প্রিন্সেসঃ হুম...... দার্শনিক ? নতুন মানুষ তো নতুন ঝামেলাও হতে
পারে ?
(উনি আবার আমার কথা উপভোগ করছেন তবে ব্যাটিং অব্যহত।)
আমিঃ পকেটে পয়সা না থাকলে, কোথাও মাইনক্যা চিপায় ধরা খাইলে বা
আপনার মতো কারো কাছ থেকে আজকের মতো ঝাড়ি খাইলে দার্শনিক হয়ে
যাই এই আর কি। ঝামেলা ... হতে পারে, তবে আমি পজিটিভলি ভাবি ।
প্রিন্সেসঃ হুম... একটা মেয়ে আর একটা ছেলের প্রেক্ষাপট এক নয় । এখন
দার্শনিক তাহলে এমনিতে বা অন্য সময় কি ?
( উনি আমার প্রতি কিঞ্চিত আগ্রহ বোধ করছেন তাই আমার ওজন যাচাই
ও হাড়ির খবর জানতে চাচ্ছেন, মূল প্রশ্নটি হল আমি কি করি।)
আমিঃ তা ঠিক ... কখন কি হব সেটা সময়, প্রেক্ষাপট ও সহ
চরিত্রের উপর নির্ভর করে ।
(আমি নৈব্যক্তিক থাকি কোন বিশেষ কিছু বলে ধরা খাওয়ার ভয়ে,
এতে আবার গিরগিটির মত রং বদলানোর সুযোগও হাতে থাকে। )
প্রিন্সেসঃ হুম... এখনো কি দার্শনিকই আছেন ?
আমিঃ নাহ ... এখন কবি হয়ে গেছি, আপনি একটু লাই দিলেই
প্রেমিক হয়ে যাবো । তাই ভুলেও কিন্তু আর আমাকে লাই দেবেন না
একদম, আমাকে লাই দ্নিয়ে জের বিপদ ডেকে আনবেন না ।
(আমি ঝোপ বুঝে কোপ মেরে দেই, প্রিন্সেস টোপ গিলেছেন, এখন
আমার কাজ শুধু সুতা ছেড়ে যাওয়া, সময় মত সুতা গুটিয়ে নিলেই হবে ।)
প্রিন্সেসঃ কবি, কবি কেন ?
(আমার কথায় প্রিন্সেস কিঞ্চিৎ টাঙ্কিত, “কবি” বলে যদিও উনি থেমে
গেছেন কিন্তু উনি আসলে পুরো বিষয়টাই জানতে চাচ্ছেন,প্রেমিক শব্দটি
উনি উচ্চারণ করছেন না কিন্তু উনি চাচ্ছেন আমি যেন নিজে থেকেই পুরোটা
বলি। উনি এখন আমাকে অখণ্ড মনোযোগ দিচ্ছেন। এখন আমার কাজ শুধু
ঠিকঠাক টাইমিং করে যাওয়া ।)
আমিঃ আপনি সাথে আছেন তাই ।
(আমার কাজ এখন শুধু ফ্লার্ট চালিয়ে যাওয়া, অবস্থা বুঝে মাত্রা কমানো
বাড়ানো । সব গুলো সুযোগ কাজে লাগানো সুযোগ না পেলে তৈরি করে নেয়া । )
প্রিন্সেসঃ আপনি কি সব সময়ই মেয়েদের সাথে এমন ফ্লার্ট করেন ?
(উনি ভেসে যাওয়ার মুহূর্তে আবার বাস্তবে ফিরে এলেন, লাগাম টানলেন।
ঠাণ্ডা জল ঢেলে আমাকে ভিজিয়ে দিলেন ।)
আমিঃ সব মেয়েদের সাথে না, শুধু প্রিন্সেসদের সাথে ।
( আমি সুইং বজায় রাখি, যেন উনার স্কোয়ার কাটটা আমি
অবলীলায় লুফে নিয়েছি, উনাকে কোন রানের সুযোগ না দিয়ে।)
প্রিন্সেসঃ হুম... এর আগে কয়জনের সাথে করেছেন ?
(উনি আমাকে বাজিয়ে দেখতে চাচ্ছেন ।)
আমিঃ ঐটার হিসাব তো আমার ম্যানেজার রাখে, তার কাছে
হয়তো এর হিসাব থাকলেও থাকতে পারে ।
( আমি উনাকে কথার খেলায় জড়াই, এই খেলায় আমি
রীতিমত বিস্ময়কর একজন প্রতিভা, আমার সাথে খেলতে
থাকলে আমি নিশ্চিন্ত যত কঠিন চিজই হন না কেন উনি
এক সময় ঠিকই ফেঁসে যাবেন, কোন ভুল নেই ।পরীক্ষিত ।)
প্রিন্সেসঃ আপনার ম্যানেজার আছে ? আপনি কি করেন ?
( উনি আবার আমার ওজন মাপতে ও আমার হাড়ির
খবর জানতে চাচ্ছেন। )
আমিঃ আমার ম্যানেজারের নাম মিঃ ল্যাপি । যখন মন যা চায়
তাই করি, যেমন এখন একটা প্রোজেক্ট শুরু করেছি, আকাশের সব
তারা, যেগুলো খালি চোখে দেখা যায়, সব গুনে ফেলব । তারপর
শুরু করবো ঢাকা শহরের সবগুলো দাঁড়কাক গোনার কাজ । এরপর
ফকির...
( আমি কথার ফাঁদ পাতা অব্যাহত রাখি, হেঁয়ালিপূর্ণ ফ্লার্ট
চালাতে থাকি, আমি উনাকে ঝুলিয়ে রাখি, ধরা দেই না।)
বিদ্রঃ এটি মূলত ফেসবুক নির্ভর নতুন ঘরানার একটি গদ্য কবিতা । তালমিল বা ছন্দের ভেতর নয়, কাব্যিকতা খুঁজতে বলবো ভাষার ব্যবহার, উত্তর প্রতি উত্তর ও স্বগতোক্তির ছন্দের ভেতর। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না যেন । ধন্যবাদ ।
(চলমান)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সবুজ আহমেদ কক্স ০৮/০২/২০১৫darun @@@ so nice boss
-
নিহাল নাফিস ০৮/০২/২০১৫
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ০৮/০২/২০১৫চলুক ভালো লেগেছে।