সাহস
১।
— তোমার ডিসিশান কী?
ফয়সালের কন্ঠে কর্তৃত্ব।
নুসরাত ঘৃণাভরে ফয়সালের দিকে তাকাল। এই পেইন সে আর নিতে পারছেনা। একটা মানুষ এতো নির্লজ্জ হয় কি করে! নুসরাত বলল, আপনার সমস্যাটা কি মি. ফয়সাল? আপনি বাংলা কথা বুঝেন না? আমি কি আপনাকে বলিনি আপনাকে আমার পছন্দ নয়।
— পছন্দ করনা কেন? আমি কি দেখতে খারাপ?
— কি বাচ্চা ছেলেদের মতো সস্তা কথা বলছেন। আপনার মতো রাস্তার গুন্ডাকে কে ভালবাসবে?
কথাটা শুনে ফয়সালের শরীরে প্রচন্ড ক্রোধ জন্ম নিল। "কি বললি তুই" বলে নুসরাতের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল ও, কিন্তু তার সাঙ্গপাঙ্গরা ওকে ধরে ফেলল। টানতে টানতে রুমের বাইরে নিয়ে আসল। যেতে যেতে ফয়সাল অশ্রাব্য গালিগালাজ করছিল।
২।
ফয়সাল আর তার চামচাদের টং এর দোকানে দেখতে পেয়েই চট করে লুকিয়ে গেল মাহমুদ। মানুষ হিসেবে সে খুবই ভীতু, ফয়সালকে দেখলেই তার পা অসাড় হয়ে যায়, মনে হয় ভয়ের একটা স্রোত শরীর হয়ে পা বেয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে।
ফয়সাল তার সাথে খুব একটা খারাপ ব্যবহার যে করেছে তা কিন্তু নয়, কিন্তু ছেলেটা ভারি ডমিনান্ট। সবসময় অর্ডার করে।
ও ভীতু ঠিকই, কিন্তু ফয়সাল যদি বলে 'এই যা তো এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে আয়' তবে তার ইগো হার্ট হয়, কিন্তু চোখে চোখ রেখে না বলার সাহস তার নেই। তাই সে সহজ কৌশল বেছে নিয়েছে। ফয়সালকে সে সবসময় এড়িয়ে চলে। চেষ্টা করে ওর নজরে যেন না পড়ে।
মাহমুদের ব্যাগে গোলাপ ফুলের একটা তোড়া, সে কায়দা করে লুকিয়ে রেখেছে। যাতে ব্যগের চাপে ফুল চ্যাপ্টা হয়ে না যায় আর নুসরাতের মুখোমুখি হওয়ার আগে যেন কারো চোখে না পড়ে।
মাহমুদ আর নুসরাত ক্লাসমেট। বেশ ভালো বন্ধু ওরা। কিন্তু মাহমুদ এ সম্পর্ক আরও একটু এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। সে অনেক ভেবে দেখেছে, নুসরাতের প্রতি তার ফিলিংস বন্ধুত্বের নয়, ভালবাসার। তাই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আজ নুসরাতকে ও প্রপোজ করবে।
ওর বুক ঢিবঢিব করছে, কিন্তু কিছু করার নাই। মনে চেপে রেখে হাহুতাশ করার চেয়ে, প্রকাশ করে প্রত্যাখ্যান হওয়াটাই বরং ভালো।
ক্লাসে ঢুকে দেখে নুসরাত বেশ গম্ভীর। সে ভাবল, সে নিজে নার্ভাস, তাই বোধহয় নুসরাত কে অন্যরকম লাগছে। মন দুর্বল হলে চারপাশ বদলে যায়।
মাথা থেকে সব ভাবনা ঝেড়ে ফেলে, মাহমুদ হাঁটু গেড়ে বসে নাটকীয় ভঙ্গিতে প্রপোজ করলো।
নুসরাতের চোখ লাল হয়ে উঠলো, তার চোখ মুখে ফুটে উঠল প্রচন্ড ঘৃণা। সে কষে থাপ্পড় দিল মাহমুদের গালে। একটু আগে ফয়সালের করা দুর্ব্যবহার এর শোধ সে মাহমুদ এর উপর মেটালো।
নুসরাত বলল, মেয়েদেরকে তোরা কি ভাবিস, হ্যা? যা ইচ্ছা তা করবি? মেয়েরা তোদের খেলার পুতুল?
মাহমুদ অবাক হয়ে চেয়ে রইল। সে প্রত্যাখ্যাত হতে পারে এটা মাথা রেখেই সে প্রপোজ করেছিল। সে ভেবেছিল হয়তো ইনিয়েবিনিয়ে না বলবে নুসরাত। কিন্তু এভাবে রি এক্ট করবে, সে কল্পনাও করতে পারেনি।
মাহমুদ মাথা নিচু করে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেল।
৪।
নুসরাত ফয়সালের বিরুদ্ধে, কো-অর্ডিনেটর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। তিনি বলেছেন, আমার মনে হয় তুমি একটু বেশি রি-এক্ট করছো। ভার্সিটির বড় ভাইরা ওরকম করেই। তোমাকে একটু ট্যাক্টফুলি হ্যান্ডেল করতে হবে।
— আমি বেশি রি এক্ট করছি! ম্যাম আপনার সাথে এরকম করলে, আপনি এ ককথা বলতে পারতেন?
— এই দেখো! আমি কি বলেছি ব্যবস্থা নিবোনা? যথাযথ ব্যবস্থা নেব। কিন্তু তোমার কি মনে হয়না তোমার সেফটি নিয়েই আমার বেশি ভাবা উচিত?
নুসরাত ভালভাবেই বুঝতে পারছে কার সেফটির কথা বলা হচ্ছে। এই মহিলা ভীতুর ডিম। ফয়সালের ভয়ে আধমরা হয়ে থাকে। ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা তিনি হয়তো কল্পনাও করতে পারেন না।
ভার্সিটির টিচারদেরও সে জানিয়েছে, ওরাও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। অবস্থা দেখে মনে হয় কর্তৃপক্ষ এই ছেলেটাকে ভয় পায়। একটা ভার্সিটি যদি, হোক না তা বেসরকারি, একটা মাত্র গুন্ডার জন্য তটস্থ হয়ে থাকে। তাহলে বাংলাদেশ যে কি পরিমাণ কাপুরুষে ভরে গেছে তা বলাই বাহুল্য।
৫।
মাহমুদ ভার্সিটির গেটের কাছাকাছি এসে দেখল ৮/১০ গজ দূরে একটা জটলা। নুসরাতকে টিজ করছে ফয়সাল। তাকে সামনে এগুতে দিচ্ছে না।
ফয়সালের চামচারা দাঁত কেলিয়ে হাসছে।
মাহমুদ এগিয়ে গেল। না নুসরাতের জন্য নয়।সে নিজের জন্যই এগিয়ে গেল। ফয়সাল নিয়ে তার মনের ভিতর যে ভয়টা আছে তা ভাঙা দরকার। আর ও ভাল করে জানে, ভয়কে জয় করার একটাই উপায় - ভয়কে ফেস করতে হয়।
মাহমুদ বলল, ফয়সাল ভাই, ওকে যেতে দিন!
সবাই অবাক হয়ে ওর দিকে তাকাল।
একজন বলল, যেতে না দিলে কি করবি?
— ভাই, ওকে যেতে দিন। আপনি যা করতেসেন, ঠিক করতেসেন না। আপনারও তো নিশ্চয়ই বোন আছে। তার সাথে কেউ এমন করলে আপনি কি তাকে ছেড়ে দিতেন।
এবার ফয়সাল কথা বলে উঠলো, 'কি ব্যাপার? তোর কি হইছে? তোর কি ভয়ডর নাই?
— থাকবেনা কেন ভাই। মানুষ তো কুকুরকেও ভয় পায়।
— শুয়োরের বাচ্চা! কি বললি তুই?
ফয়সাল রেগেমেগে ঘুষি পাকিয়ে মাহমুদ দিকে এগিয়ে গেল। মাহমুদ প্রস্তুত ছিল। ও মাটিতে বসে পড়ে সজোরে ঘুষি মারলো সোলার প্লেক্সাসে। ঘুষি জায়গামতো পড়েনি। তাছাড়া জীবন তেলেগু সিনেমা না যে এক ঘুষিতে ভিলেন উড়ে গিয়ে ইলেক্টিকের থামে গিয়ে বাড়ি খাবে।
চামচারা খুব দ্রুত মাহমুদ ঘিরে ধরলো। শুরু হল এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি আর লাথি। কেউ একজন কোত্থেকে একটা দুই হাত লম্বা লাঠি জোগাড় করে ফেলল। সে মনের সুখে ইচ্ছেমতো মাহমুদকে পেটাতে লাগল।
মাহমুদ চেষ্টা করছে বারবার উঠে দাড়াতে, আর একজনকে হলেও একটা ঘুষি বা লাথি দিতে। কিন্তু সে মাসুদ রানা না, তাই অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই বেহুশ হয়ে পড়ে গেল সে।
নুসরাত হতভম্ব হয়ে চেয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করতে পারলোনা।
৬।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে মাহমুদ। তার প্রায় সমস্ত শরীরে ব্যান্ডেজ। কিন্তু ডাক্তার বলেছে স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার মতো তেমন কিছু ঘটেনি। মাস দেড়েকের মধ্যেই সে স্বাভাবিক হাটাচলা করতে পারবে।
— আসবো?
মাহমুদ দেখল, দরজায় নুসরাত দাড়িয়ে আছে। হাতে ফুলের তোড়া।
— আয়।
নুসরাত এসে বেডে গিয়ে বসল। বলল, ফয়সাল আর তার চামচাদের ভার্সিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে জানো?
— এখন জানলাম।
— শুধু তাই না, তোমাকে যারা মেরেছে এমন ব্যাবস্থা করেছি তারা যেন কিছুদিন হলেও হাজত কাটে।
— কিভাবে করলি?
— আমার মামার মাধ্যমে। ওনি খুব প্রভাবশালী লোক। কিন্তু আমি কখনো চায়নি মামা চাচা ব্যবহার করে কোন সুযোগ-সুবিধা নিই।
— এবার কেন করলি?
— তুই করে বলছো কেন? তোমার না আমাকে তুমি করে বলার কথা?
মাহমুদ কিছু বলল না। নুসরাতের চোখে চোখ রেখে কেবল একটু হাসলো!
— তোমার ডিসিশান কী?
ফয়সালের কন্ঠে কর্তৃত্ব।
নুসরাত ঘৃণাভরে ফয়সালের দিকে তাকাল। এই পেইন সে আর নিতে পারছেনা। একটা মানুষ এতো নির্লজ্জ হয় কি করে! নুসরাত বলল, আপনার সমস্যাটা কি মি. ফয়সাল? আপনি বাংলা কথা বুঝেন না? আমি কি আপনাকে বলিনি আপনাকে আমার পছন্দ নয়।
— পছন্দ করনা কেন? আমি কি দেখতে খারাপ?
— কি বাচ্চা ছেলেদের মতো সস্তা কথা বলছেন। আপনার মতো রাস্তার গুন্ডাকে কে ভালবাসবে?
কথাটা শুনে ফয়সালের শরীরে প্রচন্ড ক্রোধ জন্ম নিল। "কি বললি তুই" বলে নুসরাতের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল ও, কিন্তু তার সাঙ্গপাঙ্গরা ওকে ধরে ফেলল। টানতে টানতে রুমের বাইরে নিয়ে আসল। যেতে যেতে ফয়সাল অশ্রাব্য গালিগালাজ করছিল।
২।
ফয়সাল আর তার চামচাদের টং এর দোকানে দেখতে পেয়েই চট করে লুকিয়ে গেল মাহমুদ। মানুষ হিসেবে সে খুবই ভীতু, ফয়সালকে দেখলেই তার পা অসাড় হয়ে যায়, মনে হয় ভয়ের একটা স্রোত শরীর হয়ে পা বেয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে।
ফয়সাল তার সাথে খুব একটা খারাপ ব্যবহার যে করেছে তা কিন্তু নয়, কিন্তু ছেলেটা ভারি ডমিনান্ট। সবসময় অর্ডার করে।
ও ভীতু ঠিকই, কিন্তু ফয়সাল যদি বলে 'এই যা তো এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে আয়' তবে তার ইগো হার্ট হয়, কিন্তু চোখে চোখ রেখে না বলার সাহস তার নেই। তাই সে সহজ কৌশল বেছে নিয়েছে। ফয়সালকে সে সবসময় এড়িয়ে চলে। চেষ্টা করে ওর নজরে যেন না পড়ে।
মাহমুদের ব্যাগে গোলাপ ফুলের একটা তোড়া, সে কায়দা করে লুকিয়ে রেখেছে। যাতে ব্যগের চাপে ফুল চ্যাপ্টা হয়ে না যায় আর নুসরাতের মুখোমুখি হওয়ার আগে যেন কারো চোখে না পড়ে।
মাহমুদ আর নুসরাত ক্লাসমেট। বেশ ভালো বন্ধু ওরা। কিন্তু মাহমুদ এ সম্পর্ক আরও একটু এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। সে অনেক ভেবে দেখেছে, নুসরাতের প্রতি তার ফিলিংস বন্ধুত্বের নয়, ভালবাসার। তাই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আজ নুসরাতকে ও প্রপোজ করবে।
ওর বুক ঢিবঢিব করছে, কিন্তু কিছু করার নাই। মনে চেপে রেখে হাহুতাশ করার চেয়ে, প্রকাশ করে প্রত্যাখ্যান হওয়াটাই বরং ভালো।
ক্লাসে ঢুকে দেখে নুসরাত বেশ গম্ভীর। সে ভাবল, সে নিজে নার্ভাস, তাই বোধহয় নুসরাত কে অন্যরকম লাগছে। মন দুর্বল হলে চারপাশ বদলে যায়।
মাথা থেকে সব ভাবনা ঝেড়ে ফেলে, মাহমুদ হাঁটু গেড়ে বসে নাটকীয় ভঙ্গিতে প্রপোজ করলো।
নুসরাতের চোখ লাল হয়ে উঠলো, তার চোখ মুখে ফুটে উঠল প্রচন্ড ঘৃণা। সে কষে থাপ্পড় দিল মাহমুদের গালে। একটু আগে ফয়সালের করা দুর্ব্যবহার এর শোধ সে মাহমুদ এর উপর মেটালো।
নুসরাত বলল, মেয়েদেরকে তোরা কি ভাবিস, হ্যা? যা ইচ্ছা তা করবি? মেয়েরা তোদের খেলার পুতুল?
মাহমুদ অবাক হয়ে চেয়ে রইল। সে প্রত্যাখ্যাত হতে পারে এটা মাথা রেখেই সে প্রপোজ করেছিল। সে ভেবেছিল হয়তো ইনিয়েবিনিয়ে না বলবে নুসরাত। কিন্তু এভাবে রি এক্ট করবে, সে কল্পনাও করতে পারেনি।
মাহমুদ মাথা নিচু করে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেল।
৪।
নুসরাত ফয়সালের বিরুদ্ধে, কো-অর্ডিনেটর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। তিনি বলেছেন, আমার মনে হয় তুমি একটু বেশি রি-এক্ট করছো। ভার্সিটির বড় ভাইরা ওরকম করেই। তোমাকে একটু ট্যাক্টফুলি হ্যান্ডেল করতে হবে।
— আমি বেশি রি এক্ট করছি! ম্যাম আপনার সাথে এরকম করলে, আপনি এ ককথা বলতে পারতেন?
— এই দেখো! আমি কি বলেছি ব্যবস্থা নিবোনা? যথাযথ ব্যবস্থা নেব। কিন্তু তোমার কি মনে হয়না তোমার সেফটি নিয়েই আমার বেশি ভাবা উচিত?
নুসরাত ভালভাবেই বুঝতে পারছে কার সেফটির কথা বলা হচ্ছে। এই মহিলা ভীতুর ডিম। ফয়সালের ভয়ে আধমরা হয়ে থাকে। ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা তিনি হয়তো কল্পনাও করতে পারেন না।
ভার্সিটির টিচারদেরও সে জানিয়েছে, ওরাও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। অবস্থা দেখে মনে হয় কর্তৃপক্ষ এই ছেলেটাকে ভয় পায়। একটা ভার্সিটি যদি, হোক না তা বেসরকারি, একটা মাত্র গুন্ডার জন্য তটস্থ হয়ে থাকে। তাহলে বাংলাদেশ যে কি পরিমাণ কাপুরুষে ভরে গেছে তা বলাই বাহুল্য।
৫।
মাহমুদ ভার্সিটির গেটের কাছাকাছি এসে দেখল ৮/১০ গজ দূরে একটা জটলা। নুসরাতকে টিজ করছে ফয়সাল। তাকে সামনে এগুতে দিচ্ছে না।
ফয়সালের চামচারা দাঁত কেলিয়ে হাসছে।
মাহমুদ এগিয়ে গেল। না নুসরাতের জন্য নয়।সে নিজের জন্যই এগিয়ে গেল। ফয়সাল নিয়ে তার মনের ভিতর যে ভয়টা আছে তা ভাঙা দরকার। আর ও ভাল করে জানে, ভয়কে জয় করার একটাই উপায় - ভয়কে ফেস করতে হয়।
মাহমুদ বলল, ফয়সাল ভাই, ওকে যেতে দিন!
সবাই অবাক হয়ে ওর দিকে তাকাল।
একজন বলল, যেতে না দিলে কি করবি?
— ভাই, ওকে যেতে দিন। আপনি যা করতেসেন, ঠিক করতেসেন না। আপনারও তো নিশ্চয়ই বোন আছে। তার সাথে কেউ এমন করলে আপনি কি তাকে ছেড়ে দিতেন।
এবার ফয়সাল কথা বলে উঠলো, 'কি ব্যাপার? তোর কি হইছে? তোর কি ভয়ডর নাই?
— থাকবেনা কেন ভাই। মানুষ তো কুকুরকেও ভয় পায়।
— শুয়োরের বাচ্চা! কি বললি তুই?
ফয়সাল রেগেমেগে ঘুষি পাকিয়ে মাহমুদ দিকে এগিয়ে গেল। মাহমুদ প্রস্তুত ছিল। ও মাটিতে বসে পড়ে সজোরে ঘুষি মারলো সোলার প্লেক্সাসে। ঘুষি জায়গামতো পড়েনি। তাছাড়া জীবন তেলেগু সিনেমা না যে এক ঘুষিতে ভিলেন উড়ে গিয়ে ইলেক্টিকের থামে গিয়ে বাড়ি খাবে।
চামচারা খুব দ্রুত মাহমুদ ঘিরে ধরলো। শুরু হল এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি আর লাথি। কেউ একজন কোত্থেকে একটা দুই হাত লম্বা লাঠি জোগাড় করে ফেলল। সে মনের সুখে ইচ্ছেমতো মাহমুদকে পেটাতে লাগল।
মাহমুদ চেষ্টা করছে বারবার উঠে দাড়াতে, আর একজনকে হলেও একটা ঘুষি বা লাথি দিতে। কিন্তু সে মাসুদ রানা না, তাই অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই বেহুশ হয়ে পড়ে গেল সে।
নুসরাত হতভম্ব হয়ে চেয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করতে পারলোনা।
৬।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে মাহমুদ। তার প্রায় সমস্ত শরীরে ব্যান্ডেজ। কিন্তু ডাক্তার বলেছে স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার মতো তেমন কিছু ঘটেনি। মাস দেড়েকের মধ্যেই সে স্বাভাবিক হাটাচলা করতে পারবে।
— আসবো?
মাহমুদ দেখল, দরজায় নুসরাত দাড়িয়ে আছে। হাতে ফুলের তোড়া।
— আয়।
নুসরাত এসে বেডে গিয়ে বসল। বলল, ফয়সাল আর তার চামচাদের ভার্সিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে জানো?
— এখন জানলাম।
— শুধু তাই না, তোমাকে যারা মেরেছে এমন ব্যাবস্থা করেছি তারা যেন কিছুদিন হলেও হাজত কাটে।
— কিভাবে করলি?
— আমার মামার মাধ্যমে। ওনি খুব প্রভাবশালী লোক। কিন্তু আমি কখনো চায়নি মামা চাচা ব্যবহার করে কোন সুযোগ-সুবিধা নিই।
— এবার কেন করলি?
— তুই করে বলছো কেন? তোমার না আমাকে তুমি করে বলার কথা?
মাহমুদ কিছু বলল না। নুসরাতের চোখে চোখ রেখে কেবল একটু হাসলো!
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আলম সারওয়ার ০১/১১/২০২০অসংখ্য শুভেচ্ছা জানবেন কবি।অসাধারণ লিখনি
-
মোঃআব্দুল্লাহ্ আল মামুন ৩১/১০/২০২০চমৎকার
-
শ.ম.ওয়াহিদুজ্জামান ৩১/১০/২০২০চমৎকার।
-
আব্দুর রহমান আনসারী ৩১/১০/২০২০বাঃ দারুন প্রেমের গল্প
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ৩১/১০/২০২০nice post
-
ফয়জুল মহী ৩০/১০/২০২০সুনিপুন