বুড়ো মাছরাঙ্গা
মাঝারি আকৃতির একটা পুকুর। পুকুরটা প্রচুর গাছগাছালিতে ঘেরা। কোন কোন গাছের ডাল পুকুরে পানিতে এসে পড়েছে। অজু-গোসল থেকে শুরু করে থালাবাসন ধোয়া, সব করা হয় এ পুকুরের পানি দিয়ে।
.
কাঠাল গাছের একটা শাখা পানির ৫/৬ হাত উপরে এসে থেমেছে। এই শাখায় প্রায়ই একটা বুড়ো মাছরাঙ্গা পাখি পানির তলায় তীক্ষ্ণ চোখ রেখে বসে থাকে। বুড়ো মাছরাঙা বলে, "শান্তি! শান্তি!!"
.
আজ এ পুকুরটাতে জাল ফেলা হবে। মোট চার ঘর এ পুকুরটার মালিক। জালে যা মাছ পাওয়া যাবে তা সমান চার ভাগে ভাগ করে বণ্টন করা হবে।
.
সকাল থেকেই মাছ ধরা নিয়ে একটা উৎসব উৎসব ভাব। জাল নিয়ে পানিতে নেমে পড়েছে শক্ত-সমর্থ কিশোর আর যুবক। দুপুরের আযান পর্যন্ত চলবে মাছ ধরা। পুকুরপাড়ে নানা বয়সের উৎসুক নর-নারীর ভীড়।
.
কারো জালে একের পর এক মাছ উঠছে - হৈ হৈ করে উঠছে দর্শক। কারো জালে প্লাস্টিকের বোতল ছাড়া কিছুই জুটছেনা - রসিক কেউ বলে উঠে "এ হালায় একটা টোকাই! নইলে এত বোতল পায় ক্যারে? কারো জালে আবার উঠে আসছে বিষধর সাপ! - শিউরে উঠছে কেউ কেউ।
.
যোহরের আযান হচ্ছে।
যতো ইচ্ছেই হোক কেউ আর জাল ছুড়তে পারবেনা। পুকুর ছেড়ে একে একে উঠে আসতে হবে সবাইকে।
।
।
মাছের ভাগবাটোয়ারা শেষ। মাছ ভাগাভাগির সময় প্রত্যেকবারই কেউ না কেউ, কোন না কোন আপত্তি তুলবেই। মাছের ভাগে কম বেশি যদি হয়ও, হয়তো সেটা দু তিনটা টুকরো, কিন্তু তাই নিয়েই ফিসফাস, কানাঘুষা চলবে দু একটা দিন।
.
এবারও তার ব্যতিক্রম হলনা। বরং একটু বাড়াবাড়িই হল ভাগাভাগি নিয়ে। জাল ছুড়ে মাছ ধরার কাজটা ছেলেরা করলেও ভাগ-বাটোয়ারা বৌ-ঝিরাই করে। সাধারণত বড় বউই ঠিক করে, কে কোন ভাগটা পাবে।
.
ছোট একটা মাছের হিসেব নিয়ে একটু গোলমাল হচ্ছে দেখে, বড় বৌ বলল, "ছোট বৌই নিক মাছটা।" কিন্তু মেঝ আর সেঝ বৌ পছন্দ করলনা ব্যাপারটা।
.
মেঝ বৌ বলল, "এমুন হইব ক্যান? ওইটারে চাইর টুকরো করে চাইর জনেরে দ্যান।"
.
বড় বৌ বলল, "তখন ল্যজের ভাগটা নিব কেডা? এইটা লইয়া দিগদারি অইবো না? ও সবার ছোড; একটা ছোড মাছ সে যদি বেশিই পায় তাতে এমুন করনের কি আছে?"
.
তারপর কথার পিঠে কথা চলতে চলতে কখন যে সেগুলো অকথ্য অশ্রাব্য গালাগালিতে পৌছে গেছে, তা আর তাদের নিজেদেরই খেয়াল নেই।
।
।
বিকেলবেলা।
পুকুরের পানির ঘোলাটে ভাব কমে এসেছে। পুরো একটা দিন কোন কাজে আর ব্যবহার করা যাবেনা এ পুকুরের পানি। আশেপাশে তাই কোথাও কেউ নেই। চারদিকে শান্ত নিস্তব্ধতা।
.
বুড়ো মাছরাঙ্গা ফিরে এসেছে তার প্রিয় কাঠাল শাখায়। চুপচাপ বসে আছে। পানির তলায় তীক্ষ্ণ চোখ রেখে বুড়ো মাছরাঙ্গা বলছে, "শান্তি! শান্তি!!"
.
কাঠাল গাছের একটা শাখা পানির ৫/৬ হাত উপরে এসে থেমেছে। এই শাখায় প্রায়ই একটা বুড়ো মাছরাঙ্গা পাখি পানির তলায় তীক্ষ্ণ চোখ রেখে বসে থাকে। বুড়ো মাছরাঙা বলে, "শান্তি! শান্তি!!"
.
আজ এ পুকুরটাতে জাল ফেলা হবে। মোট চার ঘর এ পুকুরটার মালিক। জালে যা মাছ পাওয়া যাবে তা সমান চার ভাগে ভাগ করে বণ্টন করা হবে।
.
সকাল থেকেই মাছ ধরা নিয়ে একটা উৎসব উৎসব ভাব। জাল নিয়ে পানিতে নেমে পড়েছে শক্ত-সমর্থ কিশোর আর যুবক। দুপুরের আযান পর্যন্ত চলবে মাছ ধরা। পুকুরপাড়ে নানা বয়সের উৎসুক নর-নারীর ভীড়।
.
কারো জালে একের পর এক মাছ উঠছে - হৈ হৈ করে উঠছে দর্শক। কারো জালে প্লাস্টিকের বোতল ছাড়া কিছুই জুটছেনা - রসিক কেউ বলে উঠে "এ হালায় একটা টোকাই! নইলে এত বোতল পায় ক্যারে? কারো জালে আবার উঠে আসছে বিষধর সাপ! - শিউরে উঠছে কেউ কেউ।
.
যোহরের আযান হচ্ছে।
যতো ইচ্ছেই হোক কেউ আর জাল ছুড়তে পারবেনা। পুকুর ছেড়ে একে একে উঠে আসতে হবে সবাইকে।
।
।
মাছের ভাগবাটোয়ারা শেষ। মাছ ভাগাভাগির সময় প্রত্যেকবারই কেউ না কেউ, কোন না কোন আপত্তি তুলবেই। মাছের ভাগে কম বেশি যদি হয়ও, হয়তো সেটা দু তিনটা টুকরো, কিন্তু তাই নিয়েই ফিসফাস, কানাঘুষা চলবে দু একটা দিন।
.
এবারও তার ব্যতিক্রম হলনা। বরং একটু বাড়াবাড়িই হল ভাগাভাগি নিয়ে। জাল ছুড়ে মাছ ধরার কাজটা ছেলেরা করলেও ভাগ-বাটোয়ারা বৌ-ঝিরাই করে। সাধারণত বড় বউই ঠিক করে, কে কোন ভাগটা পাবে।
.
ছোট একটা মাছের হিসেব নিয়ে একটু গোলমাল হচ্ছে দেখে, বড় বৌ বলল, "ছোট বৌই নিক মাছটা।" কিন্তু মেঝ আর সেঝ বৌ পছন্দ করলনা ব্যাপারটা।
.
মেঝ বৌ বলল, "এমুন হইব ক্যান? ওইটারে চাইর টুকরো করে চাইর জনেরে দ্যান।"
.
বড় বৌ বলল, "তখন ল্যজের ভাগটা নিব কেডা? এইটা লইয়া দিগদারি অইবো না? ও সবার ছোড; একটা ছোড মাছ সে যদি বেশিই পায় তাতে এমুন করনের কি আছে?"
.
তারপর কথার পিঠে কথা চলতে চলতে কখন যে সেগুলো অকথ্য অশ্রাব্য গালাগালিতে পৌছে গেছে, তা আর তাদের নিজেদেরই খেয়াল নেই।
।
।
বিকেলবেলা।
পুকুরের পানির ঘোলাটে ভাব কমে এসেছে। পুরো একটা দিন কোন কাজে আর ব্যবহার করা যাবেনা এ পুকুরের পানি। আশেপাশে তাই কোথাও কেউ নেই। চারদিকে শান্ত নিস্তব্ধতা।
.
বুড়ো মাছরাঙ্গা ফিরে এসেছে তার প্রিয় কাঠাল শাখায়। চুপচাপ বসে আছে। পানির তলায় তীক্ষ্ণ চোখ রেখে বুড়ো মাছরাঙ্গা বলছে, "শান্তি! শান্তি!!"
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
রাকিব ইমতিয়াজ. ২৬/০৯/২০১৮ভালো ছিলো
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৪/০৯/২০১৮শান্তি! শান্তি!
-
রাকিব ইমতিয়াজ. ২৪/০৯/২০১৮বেশ