হাসি ঠাকুমার গপ্পো
"তখন আমার বয়স কুড়ি বাইশ হবে "। হাসি ঠাকুমা গল্প শুরু করল ।
"প্রতি দিনের মত মাছ ধরতে গেছি । আকাশে মেঘ না থাকলেও , খুব হাওয়া দিচ্ছে । নদীর জল টু বু টু বু --- "
"টু বু টু বু মানে কি ঠাম্মা " বিশু গল্পের মাঝে চেঁচিয়ে উঠল ।
আমি বললাম , "কেন জানিস না । টু বু টু বু মানে এত জল যে তাতে হাবুডুবু খেতে পারিস । একটা ডিকশনারি অ্যাপ ডাউন লোড করে রাখতে পারিস তো !"
বিশু আমার দিকে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে বলল , "হু বুঝলাম " ।
ঠাকুমা বলতে থাকল "একটা হাত জাল নিয়েছি সাথে ...। " বিশু আবার কি একটা বলতে যাচ্ছিল , আমি কটমট করে তাকাতে চুপ মেরে গেল ।
"নদীর ওপারে রিসার্ভ ফরেস্টে । হলুদ জাল দিয়ে ঘেরা । এপারে আমাদের গ্রাম । আমি কোমর জলে নেবে বাগদা ধরছি ।
"অনেকবার জাল ফেলেও মাছ উঠল না । মাছের লোভে গ্রাম পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলুম । অনেক টা দুরে চলে এসেছি । গ্রামের বাঁধ শেষ হয়ে গেছে ।
নদীর পাড়ে খোঁচা খোঁচা গাছের শেকড় আর কাদা একাকার । গাছ গুলো সব নদীর উপর ঝুলে ঝুলে পরেছে । "
হাসি ঠাকুমার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে উঠল ।
"খাঁড়ির মুখে জায়গায় জায়গায় জাল ফেলতেই এত এত মাছ উঠল । মন খুশ হয়ে গেল । বেশ জানি , বাকী যারা নদীতে মাছ ধরছিল তাদের কপাল আজ কেমন । গর্বে বুক ফুলে উঠল । আরও বেশ কয়েকবার জাল ফেলে ... । " ঠাকমা অশোকের এনে দেওয়া বিনোদের পান মুখে চালান দিল ।
তারপর বেশ খানিকক্ষণ পান চিবিয়ে আবার শুরু করল -- " কি বলছিলাম যেন ? " ।
অমনি অনি চেঁচিয়ে উঠল "মাছ ধরেছিলে খুব , সেই জায়গাটা " ।
ঠাকুমা ভুরু দুটো কপালে তুলে শুরু করল -- " অ । --- মাছ নিয়ে গ্রামের দিকে ফিরতি পথ ধরলুম । এক কোমর জল দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি
হটাত কে যেন আমার ডান পা টা ধরে হ্যাঁচকা টান মারল । আমার হাত থেকে মাছের ঝোলাটা গেল পড়ে । আমি মুখ থুবরে সটান কাদা জলে ।
কোনমতে মাথা ঘুরিয়ে দেখলু ম , ওরে বাবা । " ঠাকুমা শিউরে উঠলেন ।
আমারা চেঁচিয়ে উঠলাম , "কি দেখলে , কি দেখলে " ।
"দেখলাম একটা মাঝারি কুমির , মাথা জলে ডোবান ,পিঠ আর ন্যাজ টা দেখা যাচ্ছে , জলের ওপরে । কি জানি বনবিবির দয়ায় সংজ্ঞা হারালুম না । "
"কুমীর আমাকে গভীর জলে টেনে নিয়ে চলল । কি অসুরের মত শক্তি । আমার তখন হয়ে গেছে । মনে মনে হরি নাম করছি । রণ বিরের বাবার বয়স তখন
আট কি নয় মাস । ছেলের মুখটা চোখে ভেসে উঠল । মরিয়া হয়ে পা হাত ছুঁড়তে লাগলু ম । "
"কুমির টা আমাকে তখন গভীর জলে টেনে নিয়ে যাচ্ছে । আর কিছুক্ষণের পর দম বন্ধ হয়ে যাবে । আমি ঠাকুরকে ডাকছি । "
"হটাত মনে এল কোমরে আমার দা আছে বাঁধা । কোমর থেকে এক টানে দা টা খুলে নিয়ে হাতে নিলু ম । শরীরের সব শক্তি নিংড়ে কুমিরের মাথা লক্ষ্য করে
এলোপাথাড়ি দা চালাতে লাগলুম । দেখলু ম চার দিকের জল লাল হয়ে উঠছে রক্তে । আমি তখনও নাছোড় বান্ধা । মরি যদি মেরে মরব ।
কোপের পর কোপ কোপ খেতে খেতে একসময় কুমির টা আমার পা ছেড়ে দিল । পালাল ।
পা ছেড়ে দিতেই আমি হাতের দা ফেলে সাঁতার দিয়ে কোনমতে পাড়ে পৌঁছলু ম । দেখলুম পা রক্তে ভেসে যাচ্ছে । অসহ্য যন্ত্রণা । একটা ডাল যোগাড় করে পাড় দিয়ে হাঁটতে লাগলু ম । মাথায় উঠেছে তখন মাছ ধরা । যন্ত্রণায় কাঁদতে কাঁদতে একটু করে যাচ্ছি আর দাঁড়াচ্ছি । এভাবে কোনমতে গ্রামের আলে পোঁছে , আর
পারলুম না । সংজ্ঞা হারিয়ে পড়ে গেলুম । "
ঠাকুমা থামলেন । ঘরে কারুর মুখে কথা নেই । শুধু বিশু জিগ্যেস করল "তারপর ? "
"সংজ্ঞা ফিরে এলে দেখলুম , ঘর ভর্তি লোক । তোদের ঠাকুরদা মাথায় হাত রেখে বসে আছে । পাশের বাড়ির অলকার কোলে রণবির । গৌরবের বাবা
লাফাচ্ছে আর ইংরাজিতে যত গাল আছে রণবিরের বাবাকে দিচ্ছে । কেন জানি না খুব হাসি পেল , হেসে উঠলু ম । " ঠাকুমা আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল , "কি বুঝলি ?" তারপর খানিক থেমে বলল "লুচি ভাজছি , তোরা সব খেয়ে যাস । "
বিশু চেঁচিয়ে উঠল "থ্রি চিয়ার্স ফর হাসি ঠাকুমা " । আমরা গলা মেলালাম "হিপ হিপ হুররে । "
"প্রতি দিনের মত মাছ ধরতে গেছি । আকাশে মেঘ না থাকলেও , খুব হাওয়া দিচ্ছে । নদীর জল টু বু টু বু --- "
"টু বু টু বু মানে কি ঠাম্মা " বিশু গল্পের মাঝে চেঁচিয়ে উঠল ।
আমি বললাম , "কেন জানিস না । টু বু টু বু মানে এত জল যে তাতে হাবুডুবু খেতে পারিস । একটা ডিকশনারি অ্যাপ ডাউন লোড করে রাখতে পারিস তো !"
বিশু আমার দিকে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে বলল , "হু বুঝলাম " ।
ঠাকুমা বলতে থাকল "একটা হাত জাল নিয়েছি সাথে ...। " বিশু আবার কি একটা বলতে যাচ্ছিল , আমি কটমট করে তাকাতে চুপ মেরে গেল ।
"নদীর ওপারে রিসার্ভ ফরেস্টে । হলুদ জাল দিয়ে ঘেরা । এপারে আমাদের গ্রাম । আমি কোমর জলে নেবে বাগদা ধরছি ।
"অনেকবার জাল ফেলেও মাছ উঠল না । মাছের লোভে গ্রাম পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলুম । অনেক টা দুরে চলে এসেছি । গ্রামের বাঁধ শেষ হয়ে গেছে ।
নদীর পাড়ে খোঁচা খোঁচা গাছের শেকড় আর কাদা একাকার । গাছ গুলো সব নদীর উপর ঝুলে ঝুলে পরেছে । "
হাসি ঠাকুমার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে উঠল ।
"খাঁড়ির মুখে জায়গায় জায়গায় জাল ফেলতেই এত এত মাছ উঠল । মন খুশ হয়ে গেল । বেশ জানি , বাকী যারা নদীতে মাছ ধরছিল তাদের কপাল আজ কেমন । গর্বে বুক ফুলে উঠল । আরও বেশ কয়েকবার জাল ফেলে ... । " ঠাকমা অশোকের এনে দেওয়া বিনোদের পান মুখে চালান দিল ।
তারপর বেশ খানিকক্ষণ পান চিবিয়ে আবার শুরু করল -- " কি বলছিলাম যেন ? " ।
অমনি অনি চেঁচিয়ে উঠল "মাছ ধরেছিলে খুব , সেই জায়গাটা " ।
ঠাকুমা ভুরু দুটো কপালে তুলে শুরু করল -- " অ । --- মাছ নিয়ে গ্রামের দিকে ফিরতি পথ ধরলুম । এক কোমর জল দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি
হটাত কে যেন আমার ডান পা টা ধরে হ্যাঁচকা টান মারল । আমার হাত থেকে মাছের ঝোলাটা গেল পড়ে । আমি মুখ থুবরে সটান কাদা জলে ।
কোনমতে মাথা ঘুরিয়ে দেখলু ম , ওরে বাবা । " ঠাকুমা শিউরে উঠলেন ।
আমারা চেঁচিয়ে উঠলাম , "কি দেখলে , কি দেখলে " ।
"দেখলাম একটা মাঝারি কুমির , মাথা জলে ডোবান ,পিঠ আর ন্যাজ টা দেখা যাচ্ছে , জলের ওপরে । কি জানি বনবিবির দয়ায় সংজ্ঞা হারালুম না । "
"কুমীর আমাকে গভীর জলে টেনে নিয়ে চলল । কি অসুরের মত শক্তি । আমার তখন হয়ে গেছে । মনে মনে হরি নাম করছি । রণ বিরের বাবার বয়স তখন
আট কি নয় মাস । ছেলের মুখটা চোখে ভেসে উঠল । মরিয়া হয়ে পা হাত ছুঁড়তে লাগলু ম । "
"কুমির টা আমাকে তখন গভীর জলে টেনে নিয়ে যাচ্ছে । আর কিছুক্ষণের পর দম বন্ধ হয়ে যাবে । আমি ঠাকুরকে ডাকছি । "
"হটাত মনে এল কোমরে আমার দা আছে বাঁধা । কোমর থেকে এক টানে দা টা খুলে নিয়ে হাতে নিলু ম । শরীরের সব শক্তি নিংড়ে কুমিরের মাথা লক্ষ্য করে
এলোপাথাড়ি দা চালাতে লাগলুম । দেখলু ম চার দিকের জল লাল হয়ে উঠছে রক্তে । আমি তখনও নাছোড় বান্ধা । মরি যদি মেরে মরব ।
কোপের পর কোপ কোপ খেতে খেতে একসময় কুমির টা আমার পা ছেড়ে দিল । পালাল ।
পা ছেড়ে দিতেই আমি হাতের দা ফেলে সাঁতার দিয়ে কোনমতে পাড়ে পৌঁছলু ম । দেখলুম পা রক্তে ভেসে যাচ্ছে । অসহ্য যন্ত্রণা । একটা ডাল যোগাড় করে পাড় দিয়ে হাঁটতে লাগলু ম । মাথায় উঠেছে তখন মাছ ধরা । যন্ত্রণায় কাঁদতে কাঁদতে একটু করে যাচ্ছি আর দাঁড়াচ্ছি । এভাবে কোনমতে গ্রামের আলে পোঁছে , আর
পারলুম না । সংজ্ঞা হারিয়ে পড়ে গেলুম । "
ঠাকুমা থামলেন । ঘরে কারুর মুখে কথা নেই । শুধু বিশু জিগ্যেস করল "তারপর ? "
"সংজ্ঞা ফিরে এলে দেখলুম , ঘর ভর্তি লোক । তোদের ঠাকুরদা মাথায় হাত রেখে বসে আছে । পাশের বাড়ির অলকার কোলে রণবির । গৌরবের বাবা
লাফাচ্ছে আর ইংরাজিতে যত গাল আছে রণবিরের বাবাকে দিচ্ছে । কেন জানি না খুব হাসি পেল , হেসে উঠলু ম । " ঠাকুমা আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল , "কি বুঝলি ?" তারপর খানিক থেমে বলল "লুচি ভাজছি , তোরা সব খেয়ে যাস । "
বিশু চেঁচিয়ে উঠল "থ্রি চিয়ার্স ফর হাসি ঠাকুমা " । আমরা গলা মেলালাম "হিপ হিপ হুররে । "
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
অঙ্কুর মজুমদার ১৮/০৬/২০১৬khub vlo
-
পরশ ১২/০৬/২০১৬অসাধারন
-
পরশ ১১/০৬/২০১৬অসাধারন
-
আজকের চাকরির বাজার বিডি.কম ১০/০৬/২০১৬''হাঁসতে নাকি জানে না কেউ
কে বলেছে ভাই?''
হাসানোর জন্য ধন্যবা।।। -
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ১০/০৬/২০১৬Funny !!
-
গোপেশ দে ০৯/০৬/২০১৬ভাল লাগল
-
আজকের চাকরির বাজার বিডি.কম ০৯/০৬/২০১৬''খোকন হাসে ফোকলা দাঁতে'' ;;;;;;;;;;;;;;;
-
পরশ ০৯/০৬/২০১৬দারুন
-
সালাম আলী আহসান ০৯/০৬/২০১৬মজার