গন্ধ
" গন্ধটা পাচ্ছেন ? "
নাকে হাত চাপা দিয়ে বলল নচিকেতা । আমি কিন্তু কোন গন্ধ পেলুম না । তবু বললাম "হু" ।
"ইস , চাষা দুটো নিশ্চ ই কিছু বস্তার ভেতরে করে নিয়ে যাচ্ছিল । " ও বলল ।
একটু আগে দু জন গ্রাম্য চাষা সাইকেলে বস্তা বেঁধে এসে দাঁড়িয়েছিল । বাইরে বৃষ্টি পরছে । এখন খানিকটা
ধরেছে । ডিসেম্বরের জল যাতে মাথায় না লাগে , তাই আমি আর নচিকেতা টিনের শেডের নিচে দাঁড়িয়ে আছি । রাস্তার পাশের গাছ , বিচুলির গাদা ভিজে জবজবে । যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি , সেই রাস্তায় গরম কালে সাপ বেড়িয়ে আসে । আমার ভয় করছিল , জল পেয়ে কোন সাপ যদি বেড়িয়ে আসে , তাহলেই
সোনায় সোহাগা ।
"দেখুন দেখুন " নচিকেতা উত্তেজনায় চেঁচিয়ে উঠল । "একটা বউ , খরের গাদার ওখানে এদিকে
তাকিয়ে হাসছে " । আমি ভাল করে দেখেও কিছু ঠাওর করতে পারলাম না । কি উত্তর দেব ভেবে পেলাম না । নচিকেতা পাগলামি করার মত ছেলে নয় । কিন্তু , আমি তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না । চশমাটা খুলে গেঞ্জিটা দিয়ে ভাল করে মুছতে লাগলাম । বললাম , "বেরোনো যাক তাহলে , বৃষ্টিটা ও খানিকটা ধরেছ এখন । যেতে যেতে বেলা তিনটে বেজে যাবে । "
"চলুন চলুন , উফ কি বাজে গন্ধ এখানে , দাঁড়াতে পারছি না " , নচিকেতা ছটফট করে উঠল ।
ব্যাপারটা আমার একটু অন্যরকম ঠেকল । নচিকেতা বৃষ্টি ভেজবার ছেলে নয় । যতক্ষণ না বৃষ্টি পুরো থামছে , সে নড়ে না । তা ওর যতই কাজ থাক না কেন , লাখ অসুবিধা হোক না কেন । কিন্তু ,
আজ এ কি দেখছি । বাইকটা বার করতে করতে একবার নচিকেতার দিকে তাকালাম । নচিকেতা নাক হাতে চেপে এসে বসল ।
একটু যেতেই বৃষ্টির বেগ বাড়ল । ভিজে গাছগুল থেকে টপ টপ করে জল মাথায় পরছে । অদ্ভুত একটা শীতলতা চারদিকের নির্জনতা যেন বাড়িয়ে তুলেছে ।
চাষের জমি গুলো ঘিরে আছে কুয়াশার পর্দা । এখন থেকে দিল্লী রোড প্রায় তিরিশ কিলো মিটার । রাস্তাটা নির্জন বলে , আমি ষাটের কাছাকাছি স্পীড তুলে দিলাম ।
"আচ্ছা আপনি কি বাইকটা চাষাদের বস্তাটার সাথে ঠেকিয়ে ছিলেন ? " নচিকেতা সন্দেহের সুরে বলল ।
"হবে হয়ত , গাড়ি তো ওদের সাইকেলের পাশেই রে খেছিলাম । ঠেকলে ঠে কতে পারে । কেন , কি হয়েছে । " আমি বললাম ।
"কি আবার হবে , এখানেও সেই পচা গন্ধ " , নচিকেতা বলল ।
আমি নাক টেনে শুঁকলাম , কই কিছু তো পাচ্ছি না । বললাম "কেমন গন্ধ " ।
নচিকেতা চেঁচিয়ে উঠল "আরে , বাসী মড়া পচার গন্ধ , না না তার সাথে যেন আলু পচে গেলে যে গন্ধ হয় " ।
বৃষ্টির মধ্যে বাইক চালাতে চালাতে আর্গুমেন্ট দেবার ইচ্ছা তখন ছিল না । শুধু বললাম , "কি সেই থেকে গন্ধ গন্ধ করছ । নকশা কোর না আর । "
"আপনার নাক বোচা আর বাজে । এজন্যই আপনি রাতে এত নাক ডাকেন " নচিকেতা বলে বসল ।
"এত গন্ধ হলে তার কিছু তো আমি পাব " আমি বললাম ।
নচিকেতা হটাত আমার গেঞ্জিটা তুলে নাকে ধরে শুঁকে বলল , " না আপনার ঘামের গন্ধ নয় । "
আমি লজ্জিত হলাম , তারপরেই রেগে গিয়ে বললাম "তোমারটা দেখ " । বলার সাথে সাথে নচিকেতা নিজের জামাটা একবার শুঁকে নিল ।
আমি নচিকেতাকে আর ঘাঁটালাম না । কুয়াশায় আর বৃষ্টিতে নাজেহাল হয়ে আমি গাড়ি চালাতে লাগলাম । নির্জন রাস্তায় বৃষ্টি আদিম আর বন্য । দমকা হাওয়া গাছ গুল থেকে
জল নিংড়ে ফেলছে । সারা শরীর ভিজে গেছে । কনকনে ঠাণ্ডা এই দুপুরেই । মেঘের চাদরে ডেকে গেছে গরম সূর্য । পেছন থেকে ত্রমাগত শুনতে পাচ্ছি নচিকেতা থেকে থেকে বিরক্তি সূচক আওয়াজ করছে । এরকম প্রায় কুড়ি মিনিট যাওয়ার পরে , হটাত বাইকটা বাম দিকে প্রচণ্ড টাল খেল । আমি সামলাতে সামলাতে শুনলাম নচিকেতা ওয়াক ওয়াক করে বমি করছে।
আমি কোনমতে সামলে নিয়ে নিচিকেতা কে নিয়ে পড়লাম ।
"কি ব্যাপার " আমি জিজ্ঞেস করতে নচিকেতা নাক চেপে বলল , "কিঁ পচাঁ বাসঁ , কিঁ পচাঁ বাসঁ " ।
তারপর থুতু ফেলতে লাগল , ভাব দেখে মনে হল আবার বমি করবে । আমি প্রমোদ গুনলাম । এই শুনশান রাস্তায় কি করে কি করব । তার উপর মাথার উপর এক নাগারে বৃষ্টি ।
আমি বললাম , " ন চি , একটু কষ্ট করে বস , সামনেই কোন দাঁড়াবার জায়গা পেলে দাঁড়িয়ে যাব । "
নচিকেতা আমার কথায় ভ্রুক্ষেপ না করে , ডি কি চাবির লকের কাছে নাক নিয়ে গিয়ে পেট্রলের গন্ধ শুঁকতে লাগল । "আহ , পেট্রলের গন্ধ এর কাছে ভাল । "
আমি নচিকেতাকে ঝাঁকিয়ে বললাম , "চলো এখানে দাঁড়িয়ে লাভ নেই " । আমার কথায় নচিকেতার ঘোর যেন কেটে গেল । বলল "চলুন চলুন , গিয়ে স্নান করতে হবে । "
আমি নচিকেতার কাছে নাক নিয়ে গিয়ে গন্ধ শুঁকতে লাগলাম । কিন্তু কিছু অনুভব করতে পারলাম না । আমার সর্দি হয় নি যে নাক বুজে যাবে । তাহলে নচিকেতা একা কি এই গন্ধ পাচ্ছে ?
সে আবার হয় না কি । আমি আলতু ফালতু ভাবনা তখনকার মত ঝেরে ফেলে বাইকে বসে স্টার্ট দিলাম । আর কিছুক্ষণ গেলে , মান কুণ্ডুর স্টেশন । স্টেশন পেরলেই জমজমাট শহর ।
স্টেশনটি যেন গ্রাম্য এলাকা আর আধুনিক শহরের মাঝে একটা সীমানার মত । তখন প্রায় স্টেশনের কাছে এসে পরেছি , নচিকেতা দু হাত দিয়ে সবলে আমার কাঁধ ঝাঁকাতে লাগল ।
"উফ গন্ধে আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে , থামান থামান । আপনি তো বেশ সামনে বসে আছেন । " নচিকেতা চেঁচিয়ে বলল । আমি গাড়ি থামাতেই হটাত আমার নাকে একটা পচা দুর্গন্ধ এল । কি
ভয়ঙ্কর গন্ধ । অনেকটা বাসী পচা মড়ার গা থেকে রাইগার মরটি স হলে যে গন্ধটা বেরোয় , এই গন্ধটা তার চাইতে অনেক বেশি উগ্র । কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার গন্ধটা আমার নাকে এসেই মিলিয়ে
গেল । নচিকেতা নাকে রুমাল চেপে হন হন করে পেছনের দিকে ছুটতে শুরু করল ।
"কোথায় যাচ্ছ ? " আমি ওর পেছনে ছুটতে ছুটতে বললাম ।
"ওহ আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে , যত সামনের দিকে যাচ্ছেন তত গন্ধটা যেন বাড়ছে , আমি মনে হচ্ছে সেন্স হারিয়ে ফেলব " নচিকেতা বলল ।
আমি নচিকেতাকে জাপটে ধরে বললাম , "সমনেই মান কুণ্ডু , শহরে ঢুকে কিছু ব্যাবস্থা করব । "
নচিকেতা সজোরে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলল , "না আমি সামনে যাব না , গন্ধে আমার প্রচণ্ড গা গুলচ্ছে । সামনে গেলে গন্ধ আরও বাড়লে আমি সহ্য কোরতে পারব না আর " ।
আমি নচিকেতাকে চেপে ধরে বললাম , "মাত্র দু মিনিট আর । শহরে গেলে কিছু না হোক ডাক্তার তো পাব , এখানে কি পাবে তুমি ?"
এই বলাতে নচিকেতা বিকৃত মুখে বাইকে এসে বসল । ওর প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে । আমি ঝড়ের গতিতে বাইক চালালাম ।
স্টেশন পেরিয়ে শহরে এসে ধুকতেই নচিকেতা চেঁচিয়ে উঠল , "মান কুণ্ডু ঢুকতেই গন্ধটা কমে গেল , বিজন দা " ।
আমি বাইক থামালাম না যতক্ষণ না শহরের তেমাথা বাজারে এলাম । বাইকটা সুরদের ওষুধের দেকানের সামনে দাঁড় করিয়ে আমি , নচিকেতা কে জিগ্যেস করলাম , " এখন গন্ধটা পাচ্ছ ? " ।
ক্লান্ত বিধধস্ত নচিকেতা সস্তির নিশ্বাস ফেলে বলল "না " । আমিও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে আকাশের দিকে তাকালাম । শহরের আকাশে তখন ভেজা কাকদের ওড়া উড়ি শুরু হয়েছে ।
নাকে হাত চাপা দিয়ে বলল নচিকেতা । আমি কিন্তু কোন গন্ধ পেলুম না । তবু বললাম "হু" ।
"ইস , চাষা দুটো নিশ্চ ই কিছু বস্তার ভেতরে করে নিয়ে যাচ্ছিল । " ও বলল ।
একটু আগে দু জন গ্রাম্য চাষা সাইকেলে বস্তা বেঁধে এসে দাঁড়িয়েছিল । বাইরে বৃষ্টি পরছে । এখন খানিকটা
ধরেছে । ডিসেম্বরের জল যাতে মাথায় না লাগে , তাই আমি আর নচিকেতা টিনের শেডের নিচে দাঁড়িয়ে আছি । রাস্তার পাশের গাছ , বিচুলির গাদা ভিজে জবজবে । যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি , সেই রাস্তায় গরম কালে সাপ বেড়িয়ে আসে । আমার ভয় করছিল , জল পেয়ে কোন সাপ যদি বেড়িয়ে আসে , তাহলেই
সোনায় সোহাগা ।
"দেখুন দেখুন " নচিকেতা উত্তেজনায় চেঁচিয়ে উঠল । "একটা বউ , খরের গাদার ওখানে এদিকে
তাকিয়ে হাসছে " । আমি ভাল করে দেখেও কিছু ঠাওর করতে পারলাম না । কি উত্তর দেব ভেবে পেলাম না । নচিকেতা পাগলামি করার মত ছেলে নয় । কিন্তু , আমি তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না । চশমাটা খুলে গেঞ্জিটা দিয়ে ভাল করে মুছতে লাগলাম । বললাম , "বেরোনো যাক তাহলে , বৃষ্টিটা ও খানিকটা ধরেছ এখন । যেতে যেতে বেলা তিনটে বেজে যাবে । "
"চলুন চলুন , উফ কি বাজে গন্ধ এখানে , দাঁড়াতে পারছি না " , নচিকেতা ছটফট করে উঠল ।
ব্যাপারটা আমার একটু অন্যরকম ঠেকল । নচিকেতা বৃষ্টি ভেজবার ছেলে নয় । যতক্ষণ না বৃষ্টি পুরো থামছে , সে নড়ে না । তা ওর যতই কাজ থাক না কেন , লাখ অসুবিধা হোক না কেন । কিন্তু ,
আজ এ কি দেখছি । বাইকটা বার করতে করতে একবার নচিকেতার দিকে তাকালাম । নচিকেতা নাক হাতে চেপে এসে বসল ।
একটু যেতেই বৃষ্টির বেগ বাড়ল । ভিজে গাছগুল থেকে টপ টপ করে জল মাথায় পরছে । অদ্ভুত একটা শীতলতা চারদিকের নির্জনতা যেন বাড়িয়ে তুলেছে ।
চাষের জমি গুলো ঘিরে আছে কুয়াশার পর্দা । এখন থেকে দিল্লী রোড প্রায় তিরিশ কিলো মিটার । রাস্তাটা নির্জন বলে , আমি ষাটের কাছাকাছি স্পীড তুলে দিলাম ।
"আচ্ছা আপনি কি বাইকটা চাষাদের বস্তাটার সাথে ঠেকিয়ে ছিলেন ? " নচিকেতা সন্দেহের সুরে বলল ।
"হবে হয়ত , গাড়ি তো ওদের সাইকেলের পাশেই রে খেছিলাম । ঠেকলে ঠে কতে পারে । কেন , কি হয়েছে । " আমি বললাম ।
"কি আবার হবে , এখানেও সেই পচা গন্ধ " , নচিকেতা বলল ।
আমি নাক টেনে শুঁকলাম , কই কিছু তো পাচ্ছি না । বললাম "কেমন গন্ধ " ।
নচিকেতা চেঁচিয়ে উঠল "আরে , বাসী মড়া পচার গন্ধ , না না তার সাথে যেন আলু পচে গেলে যে গন্ধ হয় " ।
বৃষ্টির মধ্যে বাইক চালাতে চালাতে আর্গুমেন্ট দেবার ইচ্ছা তখন ছিল না । শুধু বললাম , "কি সেই থেকে গন্ধ গন্ধ করছ । নকশা কোর না আর । "
"আপনার নাক বোচা আর বাজে । এজন্যই আপনি রাতে এত নাক ডাকেন " নচিকেতা বলে বসল ।
"এত গন্ধ হলে তার কিছু তো আমি পাব " আমি বললাম ।
নচিকেতা হটাত আমার গেঞ্জিটা তুলে নাকে ধরে শুঁকে বলল , " না আপনার ঘামের গন্ধ নয় । "
আমি লজ্জিত হলাম , তারপরেই রেগে গিয়ে বললাম "তোমারটা দেখ " । বলার সাথে সাথে নচিকেতা নিজের জামাটা একবার শুঁকে নিল ।
আমি নচিকেতাকে আর ঘাঁটালাম না । কুয়াশায় আর বৃষ্টিতে নাজেহাল হয়ে আমি গাড়ি চালাতে লাগলাম । নির্জন রাস্তায় বৃষ্টি আদিম আর বন্য । দমকা হাওয়া গাছ গুল থেকে
জল নিংড়ে ফেলছে । সারা শরীর ভিজে গেছে । কনকনে ঠাণ্ডা এই দুপুরেই । মেঘের চাদরে ডেকে গেছে গরম সূর্য । পেছন থেকে ত্রমাগত শুনতে পাচ্ছি নচিকেতা থেকে থেকে বিরক্তি সূচক আওয়াজ করছে । এরকম প্রায় কুড়ি মিনিট যাওয়ার পরে , হটাত বাইকটা বাম দিকে প্রচণ্ড টাল খেল । আমি সামলাতে সামলাতে শুনলাম নচিকেতা ওয়াক ওয়াক করে বমি করছে।
আমি কোনমতে সামলে নিয়ে নিচিকেতা কে নিয়ে পড়লাম ।
"কি ব্যাপার " আমি জিজ্ঞেস করতে নচিকেতা নাক চেপে বলল , "কিঁ পচাঁ বাসঁ , কিঁ পচাঁ বাসঁ " ।
তারপর থুতু ফেলতে লাগল , ভাব দেখে মনে হল আবার বমি করবে । আমি প্রমোদ গুনলাম । এই শুনশান রাস্তায় কি করে কি করব । তার উপর মাথার উপর এক নাগারে বৃষ্টি ।
আমি বললাম , " ন চি , একটু কষ্ট করে বস , সামনেই কোন দাঁড়াবার জায়গা পেলে দাঁড়িয়ে যাব । "
নচিকেতা আমার কথায় ভ্রুক্ষেপ না করে , ডি কি চাবির লকের কাছে নাক নিয়ে গিয়ে পেট্রলের গন্ধ শুঁকতে লাগল । "আহ , পেট্রলের গন্ধ এর কাছে ভাল । "
আমি নচিকেতাকে ঝাঁকিয়ে বললাম , "চলো এখানে দাঁড়িয়ে লাভ নেই " । আমার কথায় নচিকেতার ঘোর যেন কেটে গেল । বলল "চলুন চলুন , গিয়ে স্নান করতে হবে । "
আমি নচিকেতার কাছে নাক নিয়ে গিয়ে গন্ধ শুঁকতে লাগলাম । কিন্তু কিছু অনুভব করতে পারলাম না । আমার সর্দি হয় নি যে নাক বুজে যাবে । তাহলে নচিকেতা একা কি এই গন্ধ পাচ্ছে ?
সে আবার হয় না কি । আমি আলতু ফালতু ভাবনা তখনকার মত ঝেরে ফেলে বাইকে বসে স্টার্ট দিলাম । আর কিছুক্ষণ গেলে , মান কুণ্ডুর স্টেশন । স্টেশন পেরলেই জমজমাট শহর ।
স্টেশনটি যেন গ্রাম্য এলাকা আর আধুনিক শহরের মাঝে একটা সীমানার মত । তখন প্রায় স্টেশনের কাছে এসে পরেছি , নচিকেতা দু হাত দিয়ে সবলে আমার কাঁধ ঝাঁকাতে লাগল ।
"উফ গন্ধে আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে , থামান থামান । আপনি তো বেশ সামনে বসে আছেন । " নচিকেতা চেঁচিয়ে বলল । আমি গাড়ি থামাতেই হটাত আমার নাকে একটা পচা দুর্গন্ধ এল । কি
ভয়ঙ্কর গন্ধ । অনেকটা বাসী পচা মড়ার গা থেকে রাইগার মরটি স হলে যে গন্ধটা বেরোয় , এই গন্ধটা তার চাইতে অনেক বেশি উগ্র । কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার গন্ধটা আমার নাকে এসেই মিলিয়ে
গেল । নচিকেতা নাকে রুমাল চেপে হন হন করে পেছনের দিকে ছুটতে শুরু করল ।
"কোথায় যাচ্ছ ? " আমি ওর পেছনে ছুটতে ছুটতে বললাম ।
"ওহ আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে , যত সামনের দিকে যাচ্ছেন তত গন্ধটা যেন বাড়ছে , আমি মনে হচ্ছে সেন্স হারিয়ে ফেলব " নচিকেতা বলল ।
আমি নচিকেতাকে জাপটে ধরে বললাম , "সমনেই মান কুণ্ডু , শহরে ঢুকে কিছু ব্যাবস্থা করব । "
নচিকেতা সজোরে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলল , "না আমি সামনে যাব না , গন্ধে আমার প্রচণ্ড গা গুলচ্ছে । সামনে গেলে গন্ধ আরও বাড়লে আমি সহ্য কোরতে পারব না আর " ।
আমি নচিকেতাকে চেপে ধরে বললাম , "মাত্র দু মিনিট আর । শহরে গেলে কিছু না হোক ডাক্তার তো পাব , এখানে কি পাবে তুমি ?"
এই বলাতে নচিকেতা বিকৃত মুখে বাইকে এসে বসল । ওর প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে । আমি ঝড়ের গতিতে বাইক চালালাম ।
স্টেশন পেরিয়ে শহরে এসে ধুকতেই নচিকেতা চেঁচিয়ে উঠল , "মান কুণ্ডু ঢুকতেই গন্ধটা কমে গেল , বিজন দা " ।
আমি বাইক থামালাম না যতক্ষণ না শহরের তেমাথা বাজারে এলাম । বাইকটা সুরদের ওষুধের দেকানের সামনে দাঁড় করিয়ে আমি , নচিকেতা কে জিগ্যেস করলাম , " এখন গন্ধটা পাচ্ছ ? " ।
ক্লান্ত বিধধস্ত নচিকেতা সস্তির নিশ্বাস ফেলে বলল "না " । আমিও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে আকাশের দিকে তাকালাম । শহরের আকাশে তখন ভেজা কাকদের ওড়া উড়ি শুরু হয়েছে ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
প্রিয় ১৩/০৭/২০১৬গল্প পড়তে আমার ভালো লাগে না তবে নামটা এত রহস্যকর যে পড়েই হল এবং পড়ে ভালো লাগল।
-
Saurav Goswami ২৪/০১/২০১৬মন্তব্যকারি আর পাঠকদের অসংখ্য অভিনন্দন । এবং পরের গল্পের জন্য আগাম আমন্ত্রণ ।
-
শান্তনু ব্যানার্জ্জী ১৫/১২/২০১৫ভালো লাগল ।
-
শাহানাজ সুলতানা (শাহানাজ) ০৯/১২/২০১৫ভালো লাগলো
-
পরিতোষ ভৌমিক ২ ০৭/১২/২০১৫গল্পটা পড়তে মন্দ লাগেনি বটে, কিন্তু শেষের দিকে গিয়ে গল্পটা কি গল্প রইল ! কেননা গন্ধটা কিষের সেতো জানা গেলনা, তাছাড়া কিছু বানান ভুল রয়েছে যেমন প্রমোদ>প্রমাদ , ঠিক করে নিতে পারেন ।
-
মনিরুজ্জামান শুভ্র ০৭/১২/২০১৫ভাল লাগলো।
-
জুনায়েদ বি রাহমান ০৭/১২/২০১৫গল্পে ভূতের গন্ধ পাচ্ছি!
-
দেবব্রত সান্যাল ০৭/১২/২০১৫গল্পতে একটা কৌতুহল বজায় রাখার সফল চেষ্টা আছে। পাঠক কিছু ব্যাখ্যার আশা করবে হয়ত। এটাও একটা স্টাইল। একটু এডিট করে নেবেন।