যদু পাগলা
এই শালা না রোজ এসে আমাকে ডিস্টার্ব করবে।
হে হে দাদাবাবু।দিননা একটুস খানি টানি।
নে ধর।সিগারেট টাও ঠিকমত টানতে দিবিনা।
এই বাক্যালাপ গুলো অমিতাভ মিত্র আর যদু পাগলার সাথে হল।
অমিতাভ মিত্র রোজ সকালে সিগারেট খেতে তারাপদর এই চায়ের দোকানটায় আসলেই যদু পাগলা এসে হাজির হয়।অমিতাভ বাবু একটু আয়েশ করে সিগারেট মুখে গুজলেই দাঁত কেলিয়ে দাঁড়ায় যদু পাগলা।অমিতাভ বাবু আর কী করে মুখের সিগারেট খানা ওকে দিয়ে উঠে পড়ে সেখান থেকে।চায়ের দোকান দার অবশ্য যদু পাগলাকে মাঝেমাঝে দোকান থেকে তাড়াতে যায় কিন্তু অমিতাভ মিত্র বলে,না না থাক না।আরে সিগারেট খাবে খাক না।কিন্তু সেদিনকার ঘটনায় অমিটাভ বাবুর চক্ষু চড়কগাছ।অবশ্য পাগলে অনেক কিছুই বলে সেটা একটা পাঁচ বছরের বাচ্চাও বুঝে।সেদিন সকালে যদু পাগলা খালি পায়ে এই বৈশাখের গরমে সুয়েটার গায় দিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে চায়ের দোকানের সামনে।
অমিতাভ বাবু কেবল সিগারেটে টান মেরেছে।যদু হাঁ করে তাকিয়ে আছে।কখন সিগারেট ওকে দেবে।
অমিতাভ বাবুর এই ভাবে তাকিয়ে থাকাটা ভালো লাগেনি তাই তারাপদকে বলেছে,ওকে এক প্যাকেট বিড়ি দেতো।যত ইচ্ছে খাক।
যদু সঙ্গে সঙ্গে বলেছে,খবরদার,বিড়ি দিবিনা।আমি উচ্চ বংশের ছেলে।আমি বিড়ি খাইনা।
আমিতাভ সহ দোকানে উপস্থিত আর সবাই হো হো করে হাসে।এর মাঝে একজন বলে,তা টাকা ঢাল,সিগারেট খা।মাগনা পাচ্ছিস বিড়ি এটাই বা কম কী।কে দেয় তোকে এসব।শালা গান্ডু কোথাকার।
এই খিস্তি পারবিনা।আমি তোর সিগারেট খাইনা।আমি অমিতাভ বচ্চনের সিগারেট খাই।যদু পাগলা অমিতাভ বাবু কে মাঝে সাঝে বচ্চন বলে।যদু অমিতাভ বাবুর টানা সিগারেটই খাবে।আর কারো কাছে সিগারেট খাবেনা।দুপুরে ভাত খাবে ষ্টেশনের পেছনের শংকরের হোটেলে।শংকর ওকে ভাত খাওয়ায়।তবে পেট পুরে নয়।যা খাওয়ায় তাতেই যদু খুশি।
অমিতাভ বাবু যদুর মুখে বিড়ির বদলে সিগারেট খাওয়ার কথা শুনে বেশ অবাক হয়েছেন।ইনিও এই কথার পর থেকে মাঝে সাঝে যদুকে গাল মন্দ পারেন।পাগলের আবার বাছ বিচার!যদু অবশ্য কিছু বলেনা তাকে।গাঁজা খাওয়ার মত করে সিগারেট টেনে যায় যদু।যেভাবে টানে তাতে মনে হয় কলজে শুদ্ধ ধরে আসছে।
এখন প্রথম বাক্যালাপে ফিরে আসি।যদু বেশ আয়েশ করে সিগারেট টানছে।বেশ খানিক সিগারেট দিয়েছে ওকে অমিতাভ বাবু।
হ্যাঁরে যদু।সিগারেট খেয়ে কোথায় যাবিরে?
ক্যানো দাদাবাবু।আপনার কোনো কাজ করে দিতে হবে?মাথায় বাড়ি কিংবা গু খাওয়াতে হবে কাউকে?
অমিতাব জিভ কেটে বলে,আরে না না এমনি বলছি।তুই রোজরোজ সকালে আমার কাছে সিগারেট খেতে আসিস।তারপর আর তোকে দেখিনা।বিকেলেও তোর টিকি টাও দ্যাখা যায়না তাই বললাম।
ও তাই বল।ওই যে ট্রেনে চেপে পুকুরে ডুবোতে যাই।সারাদিন ডুব মারি।
কোথায়?
ওই তো ট্রেনে চেপে যাই।
সেটা কোথায়?
তাতো জানিনা।
অমিতাভ বাবু হাতে সময় পেলে ওর সাথে এক আধটু কথাও বলেন।পৌরসভায় চাকরি করেন অমিতাভ বাবু।রোজ ট্রেনে চেপে যায়।ট্রেন আসার দশ বারো মিনিট আগে আপ প্ল্যাটফরমের তারাপদর চায়ের দোকানে একটু বসে চা খায়।তারপর বিকেল সন্ধ্যায়ও আসেন চা খেতে।কিন্তু যদু তখন সেখানটায় থাকেনা।সে অন্যকোথাও ঘুরে ফিরে বেড়ায়।
এখন বেশ সকাল।অমিতাভ বাবুর আজ ছুটির দিন।অফিস নেই।তাই আজ আর ট্রেন ধরার তাড়া নেই।একটু দেরি করেই আজ তারাপদর দোকানে যাবে।এখনো বিছানায় শুয়ে আছে সে।তার একটাই ছেলে।ক্লাশ টুতে পড়ে ও।তার স্ত্রী সোহিনী ছেলেকে এই মুহূর্তে পড়াচ্ছেন।প্রত্যেকদিন সকালেই মা ছেলেকে নিয়ে পড়াতে বসে।অমিতাভ বাবু খুব সুখী মানুষ।তার স্ত্রী কয়েকবার তাকে বাজারে যেতে তাড়া দিয়েছে।সে শুয়েই আছে এখনো।
কিগো বাজারে যাচ্ছো না ক্যানো?
অমিতাভ বাবু এবার না উঠে আর পারবেনা।এমনিতেই সিগারেটের তৃষ্ণা পেয়েছে তার।তারাপদর দোকান থেকে সিগারেট খেয়ে তারপর বাজারে যাবে।ইচ্ছে আছে আজ ছোট মাছ কেনার।তারপর পুরো সপ্তাহের জন্য একটা লিস্ট গিন্নি করে দিয়েছে।তিনি উঠে দাঁড়িয়ে আলমারির সাথে সংযুক্ত আয়নার সামনে গেলেন।ভাল করে নিজেকে দেখলেন।চুলে হালকা পাঁক ধরেছে।বুকের লোমগুলোও হালকা সাদা সাদা হয়ে গেছে।বয়স তার খুব একটা বেশি হয়নি।চল্লিশ ছুঁই ছুঁই।তিনি ফ্রেশ হয়ে বাজারের ব্যাগ নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলেন।হাঁটতে হাঁটতে একটু ভাবলেন যদুর কথা।যদু কি এখনো আছে দোকানটায়?
যদুর এই নামটা এই খানের মানুষগুলো দিয়েছে।গত চারমাস ধরে ওকে এখানটায় সবাই দেখছে।ওর আসল বাড়ি কোথায় সেটা কেউ জানেনা।আসলে কেউ ঘাটায়ও নি ব্যাপারটা।অনেকের ধারণা ট্রেনে চেপে হয়ত এখানটায় এসেছে ও।
হাঁটতে হাঁটতে চায়ের দোকানটায় চলে এসেছে অমিতাভ মিত্র।যদু হাত পা ছড়িয়ে বসে আছে।আজ অমিতাভ বাবু ওকে আস্ত একটা সিগারেট খাওয়াবে।
এই তারাপদ ওকে একটা সিগারেট দাওতো।
তারাপদ চায়ের জলে চিনি দিতে দিতে বলল,পুরো একটা খাইয়ে দিবেন?
হ্যাঁ।দাও একটা আর আমাকেও একটা দিও।
যদু হাত পা ছড়িয়ে সুয়েটার পড়ে বিড়বিড় করে কথা বলছে।কি বলছে ঠিক বোঝা যাচ্ছেনা।
এই যদু চা খাবি?অমিতাভ বাবু যদুর দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটি করল।
আজ্ঞে হ্যাঁ দাদাবাবু খাব।
যদু চা আর সিগারেট দুটোই খাচ্ছে।অমিতাভ বাবু সিগারেট খেয়ে বাজারের দিকে চলে গেছে।
এখন সন্ধ্যে।অমিতাভ বাবুর স্টেশন থেকে বাড়ি যেতে বেশ খানিকটা পথ হাঁটতে হয়।সামনে ছোটোখাটো একটা জঙ্গল ধরা পড়ে।যায়গাটা বেশ নির্জন থাকে সন্ধ্যের সময়।অমিতাভ বাবু এই মুহূর্তে জঙ্গলের কাছে চলে এসেছেন।হঠাৎ জঙ্গলের ভেতরে একটা মানুষকে আবিষ্কার করলেন।শুধু মানুষ নয় রীতিমতো কবিতা আবৃত্তি সহ একটা মানুষকে আবিষ্কার করলেন অমিতাভ বাবু।যদু নয় কী?যদুর কণ্ঠ মনে হচ্ছে।অমিতাভ বাবু জঙ্গলের দিকে খানিকটা এগিয়ে গেলেন।হ্যাঁ যদুই তো।ময়লার ভেতরে শুয়ে চোখ বুজে কবিতা আবৃত্তি করছে
" I wandered lonely as a cloud
That floats on high o'er vales and hills,
When all at once I saw a crowd,
A host, of golden daffodils;
Beside the lake, beneath the trees,
Fluttering and dancing in the breeze"
আরে এতো সুন্দর করে আবৃত্তি করছে যদু পাগলা!কী সুন্দর!কী সুন্দর!অমিতাভ বাবু বিস্মিত নয়নে তাকিয়ে আছে যদুর দিকে।তিনি নিজেও ইংরাজিতে অনার্স করেছেন।কত কবিতা পড়েছেন।শেলি,কীটসের কত কবিতাই না পড়েছেন।তারপর এই কবিতার কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থ।তার কবিতা কি কম পড়েছেন?কিন্তু একটি কবিতারও দুটো লাইন বলতে পারবেন না তিনি।
কিন্তু যদু এতো সুন্দর করে আবৃত্তি করল কিভাবে?রহস্য টা কী!তিনি দ্রুত হেঁটে বাড়ি চলে গেলেন।
অমিতাভ বাবুর মাথায় শুধুই যদুর আবৃত্তি ভেসে আসছে।ব্যালকনিতে বসে চা খাচ্ছেন আর ভাবছেন ছেলেটার অতীত কাহিনি কী হতে পারে?তিনি মোটামুটি একটা সিদ্ধান্ত নিলেন যদুর ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড খুঁজে বের করতে হবে।তারাপদর দোকানে গেলে কিছু তথ্য হয়ত পেতেও পারেন।এমন কি তারাপদ নিজেও হয়ত জানে ছেলেটির সম্পর্কে, কাওকে হয়ত বলেনি।তারাপদর দোকান তো অনেক রাত অবধি খোলা থাকে।এখন কত বাজে?অমিতাভ বাবু ঘড়ি দেখলেন।মাত্র ন'টা পঁচিশ বাজে।তিনি দ্রুত প্যান্ট পড়ে চটিটা গলিয়ে নেমে এলেন রাস্তায়।
দূর থেকে দেখলেন তারাপদর দোকানে কেউ নেই।যাক ভাল হল নিরিবিলি কথা বলা যাবে।
তারাপদ!
স্যার আপনি এই সময়।বসেন।তারাপদ অমিতাভ বাবুকে স্যার বলেই ডাকে।
কিছু কথা বলব তোমার সাথে?
তারাপদ সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট দিয়ে বলল,কি কথা?
অমিতাভ বাবু সিগারেট টানতে টানতে বললেন,আচ্ছা তুমি তো অনেক পুরোনো লোক এ পাড়ায়।আমি তো মাত্র চার বছর হল এসেছি।
তারাপদ উৎকণ্ঠা নিয়ে বলল,কোনো সমস্যা কি স্যার।বলুন তো কি হয়েছে?
না ওই যদু পাগলার ব্যাপারে কিছু বলব।
ও কি উল্টোপাল্টা কিছু বলেছে আপনাকে।ও নিয়ে ভাববেন না।মাথায় ছিট থাকলে যা হয়।
আরে না না।তা নয়
তাহলে?
আচ্ছা ওর বাবা মাকে চেনো তুমি?
না স্যার।
ওর বাড়ি ঘর চেনো তুমি?
না তাও নয়।কি হয়েছে বলুন তো।যদু পাগলার সম্পর্কে এতো কিছু জানতে চাইছেন।তারাপদর চোখে বিস্ময়।
আচ্ছা তুমি ওর সম্পর্কে কি কি জানো?
ও একটা পাগল।এটুকুই শুধু জানি।
তাহলে তুমি কিছুই জানোনা?
না স্যার কিছুই জানিনা।
অমিতাভ মিত্র সিগারেটের দিকে তাকিয়ে দেখলেন সিগারেটের আগুন ফিল্টার অবধি চলে এসেছে।তিনি সিগারেটে কয়েকটা টান মেরে তারাপদকে দাম দিয়ে বেড়িয়ে আসলেন।রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে তিনি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেবেন বলে ঠিক করলেন।
কিছুদিন পরের ঘটনা।অমিতাভ মিত্রের বাড়িতে দুজন অতিথি এসেছে।অমিতাভ বাবু কৌতুহলী চোখে তাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।ওনারা গেস্ট রুমে বসে আসে।
বলুন কি ব্যাপার?
অতিথির একজন মহিলা একজন পুরুষ।মহিলাটির বয়েস বেশ ভালই হবে।পুরুষ লোকটির চুল দাড়ি সব পেকে গেছে।বেশ বয়স্ক হবে।
মহিলাটি বললেন,আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে এসেছি।
অমিতাভ বাবুর চোখ চকচক করে উঠল,হ্যাঁ হ্যাঁ বলুন।খুব ভাল করেছেন।আপনারা ওর বাবা মা বুঝি?
পুরুষ লোকটি বলল,আমি রিপনের কাকা।মানে আপনারা যাকে যদু বলে ডাকেন।পত্রিকায় ছবি দেখেই ওকে চিনে ফেলেছি।ভদ্রলোকটি একটানে কথাগুলো বলে গেল।
আপনি ওর কাকি?
হ্যাঁ।মহিলাটি বলল।
ওর বাবা মা আসলো না যে?
রিপনের কাকা একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে বললেন,এই জন্যই তো ওর মাথায় গন্ডগোল হয়ে গেলো।
অমিতাভ বাবু বললেন,কিভাবে?
ওর উচ্চমাধ্যমিক রেজাল্ট বেরুনোর দু দিন পরে রোড এক্সিডেন্ট.....পুরোটা বলতে পারলেন না ভদ্রলোকটি।নিজের ভাই,ভাই বৌ বলে কথা।
মানে তারা এক্সিডেন্টে কি হল?অমিতাভ বাবুর চোখে উৎকণ্ঠা।
ভদ্রলোকটি বললেন,রিপনের বাবা মা মারা যায় আর ও এটা সহ্য করতে পারেনি তাই হঠাৎ মাথায় চাপ নিতে না পেরে গন্ডগোল হয়ে গেল মাথায়।
এই ঘটনাটি কতদিন আগের?
তা প্রায় দু বছর হল।
অমিতাভ বাবু বললেন,ও বাড়ি থেকে বের হয়েছে কতদিন?
ভদ্রলোকটি বললেন,দু'বছর ধরেই বাড়িতে নেই।মাথায় গন্ডগোল হওয়ার কদিন পর থেকেই ওকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না।
অমিতাভ বাবুর স্ত্রী একটা ট্রে তে চা,বিস্কিট দিয়ে গেছে।
অমিতাভ বাবু নিজেও এককাপ নিলেন।চা হাতে নিয়ে বললেন,ওকে খোঁজার জন্য কোনো ব্যবস্থা করেন নি?
এবার ভদ্র মহিলাটি বললেন,আশেপাশে খোঁজ নিয়েছিলাম।কিন্তু পাইনি।
হারানো বিজ্ঞপ্তি দ্যাননি?
এবার দুজনেই চুপ।
অমিতাভ বাবু বললেন,ও এই এলাকায় আছে প্রায় চার পাঁচ মাস হল।আগে যে কোথায় ছিল তা কেউ জানেনা।
ভদ্রলোকটি বললেন,রিপন কোথায় আছে?
আছে।প্ল্যাটফর্মের ওদিকটাই খোঁজ করলেই পাওয়া যাবে।
অমিতাভ বাবু নিজ থেকেই বললেন,যদু মানে রিপন পড়ালেখায় খুব ভাল তাইনা?
রিপনের কাকা বললেন,খুব ভাল।মাধ্যমিকে সব সাবজেক্টে লেটার আর উচ্চমাধ্যমিকেও তাই।ক্লাশের মধ্যে ফার্স্ট বয় ছিল ও।
অমিতাভ বাবু যদুর কবিতা আবৃত্তি শুনেই বুঝতে পেরেছিলেন সেদিন খুব ব্রিলিয়্যান্ট ছেলে যদু।না হলে এতো আগ্রহ করে বিজ্ঞাপন কেন?
অমিতাভ বাবু যদুর কাকা কাকিকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লেন যদুর খোঁজে।কিন্তু কেউ যদুর খোঁজ আর দিতে পারলনা।যদুর কাকা কাকি দু দিন দু রাত ছিল অমিতাভ বাবুর বাড়িতে।কিন্তু ওর খোঁজ কেউ পেলনা।অমিতাভ বাবু তাদের আশ্বস্থ করে পাঠিয়ে দিলেন।বললেন,খোঁজ পেলে জানিয়ে দেওয়া হবে।অমিতাভ বাবু আশায় আশায় পথ চেয়ে রইলেন,যদু তুই কোথায়?
হে হে দাদাবাবু।দিননা একটুস খানি টানি।
নে ধর।সিগারেট টাও ঠিকমত টানতে দিবিনা।
এই বাক্যালাপ গুলো অমিতাভ মিত্র আর যদু পাগলার সাথে হল।
অমিতাভ মিত্র রোজ সকালে সিগারেট খেতে তারাপদর এই চায়ের দোকানটায় আসলেই যদু পাগলা এসে হাজির হয়।অমিতাভ বাবু একটু আয়েশ করে সিগারেট মুখে গুজলেই দাঁত কেলিয়ে দাঁড়ায় যদু পাগলা।অমিতাভ বাবু আর কী করে মুখের সিগারেট খানা ওকে দিয়ে উঠে পড়ে সেখান থেকে।চায়ের দোকান দার অবশ্য যদু পাগলাকে মাঝেমাঝে দোকান থেকে তাড়াতে যায় কিন্তু অমিতাভ মিত্র বলে,না না থাক না।আরে সিগারেট খাবে খাক না।কিন্তু সেদিনকার ঘটনায় অমিটাভ বাবুর চক্ষু চড়কগাছ।অবশ্য পাগলে অনেক কিছুই বলে সেটা একটা পাঁচ বছরের বাচ্চাও বুঝে।সেদিন সকালে যদু পাগলা খালি পায়ে এই বৈশাখের গরমে সুয়েটার গায় দিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে চায়ের দোকানের সামনে।
অমিতাভ বাবু কেবল সিগারেটে টান মেরেছে।যদু হাঁ করে তাকিয়ে আছে।কখন সিগারেট ওকে দেবে।
অমিতাভ বাবুর এই ভাবে তাকিয়ে থাকাটা ভালো লাগেনি তাই তারাপদকে বলেছে,ওকে এক প্যাকেট বিড়ি দেতো।যত ইচ্ছে খাক।
যদু সঙ্গে সঙ্গে বলেছে,খবরদার,বিড়ি দিবিনা।আমি উচ্চ বংশের ছেলে।আমি বিড়ি খাইনা।
আমিতাভ সহ দোকানে উপস্থিত আর সবাই হো হো করে হাসে।এর মাঝে একজন বলে,তা টাকা ঢাল,সিগারেট খা।মাগনা পাচ্ছিস বিড়ি এটাই বা কম কী।কে দেয় তোকে এসব।শালা গান্ডু কোথাকার।
এই খিস্তি পারবিনা।আমি তোর সিগারেট খাইনা।আমি অমিতাভ বচ্চনের সিগারেট খাই।যদু পাগলা অমিতাভ বাবু কে মাঝে সাঝে বচ্চন বলে।যদু অমিতাভ বাবুর টানা সিগারেটই খাবে।আর কারো কাছে সিগারেট খাবেনা।দুপুরে ভাত খাবে ষ্টেশনের পেছনের শংকরের হোটেলে।শংকর ওকে ভাত খাওয়ায়।তবে পেট পুরে নয়।যা খাওয়ায় তাতেই যদু খুশি।
অমিতাভ বাবু যদুর মুখে বিড়ির বদলে সিগারেট খাওয়ার কথা শুনে বেশ অবাক হয়েছেন।ইনিও এই কথার পর থেকে মাঝে সাঝে যদুকে গাল মন্দ পারেন।পাগলের আবার বাছ বিচার!যদু অবশ্য কিছু বলেনা তাকে।গাঁজা খাওয়ার মত করে সিগারেট টেনে যায় যদু।যেভাবে টানে তাতে মনে হয় কলজে শুদ্ধ ধরে আসছে।
এখন প্রথম বাক্যালাপে ফিরে আসি।যদু বেশ আয়েশ করে সিগারেট টানছে।বেশ খানিক সিগারেট দিয়েছে ওকে অমিতাভ বাবু।
হ্যাঁরে যদু।সিগারেট খেয়ে কোথায় যাবিরে?
ক্যানো দাদাবাবু।আপনার কোনো কাজ করে দিতে হবে?মাথায় বাড়ি কিংবা গু খাওয়াতে হবে কাউকে?
অমিতাব জিভ কেটে বলে,আরে না না এমনি বলছি।তুই রোজরোজ সকালে আমার কাছে সিগারেট খেতে আসিস।তারপর আর তোকে দেখিনা।বিকেলেও তোর টিকি টাও দ্যাখা যায়না তাই বললাম।
ও তাই বল।ওই যে ট্রেনে চেপে পুকুরে ডুবোতে যাই।সারাদিন ডুব মারি।
কোথায়?
ওই তো ট্রেনে চেপে যাই।
সেটা কোথায়?
তাতো জানিনা।
অমিতাভ বাবু হাতে সময় পেলে ওর সাথে এক আধটু কথাও বলেন।পৌরসভায় চাকরি করেন অমিতাভ বাবু।রোজ ট্রেনে চেপে যায়।ট্রেন আসার দশ বারো মিনিট আগে আপ প্ল্যাটফরমের তারাপদর চায়ের দোকানে একটু বসে চা খায়।তারপর বিকেল সন্ধ্যায়ও আসেন চা খেতে।কিন্তু যদু তখন সেখানটায় থাকেনা।সে অন্যকোথাও ঘুরে ফিরে বেড়ায়।
এখন বেশ সকাল।অমিতাভ বাবুর আজ ছুটির দিন।অফিস নেই।তাই আজ আর ট্রেন ধরার তাড়া নেই।একটু দেরি করেই আজ তারাপদর দোকানে যাবে।এখনো বিছানায় শুয়ে আছে সে।তার একটাই ছেলে।ক্লাশ টুতে পড়ে ও।তার স্ত্রী সোহিনী ছেলেকে এই মুহূর্তে পড়াচ্ছেন।প্রত্যেকদিন সকালেই মা ছেলেকে নিয়ে পড়াতে বসে।অমিতাভ বাবু খুব সুখী মানুষ।তার স্ত্রী কয়েকবার তাকে বাজারে যেতে তাড়া দিয়েছে।সে শুয়েই আছে এখনো।
কিগো বাজারে যাচ্ছো না ক্যানো?
অমিতাভ বাবু এবার না উঠে আর পারবেনা।এমনিতেই সিগারেটের তৃষ্ণা পেয়েছে তার।তারাপদর দোকান থেকে সিগারেট খেয়ে তারপর বাজারে যাবে।ইচ্ছে আছে আজ ছোট মাছ কেনার।তারপর পুরো সপ্তাহের জন্য একটা লিস্ট গিন্নি করে দিয়েছে।তিনি উঠে দাঁড়িয়ে আলমারির সাথে সংযুক্ত আয়নার সামনে গেলেন।ভাল করে নিজেকে দেখলেন।চুলে হালকা পাঁক ধরেছে।বুকের লোমগুলোও হালকা সাদা সাদা হয়ে গেছে।বয়স তার খুব একটা বেশি হয়নি।চল্লিশ ছুঁই ছুঁই।তিনি ফ্রেশ হয়ে বাজারের ব্যাগ নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলেন।হাঁটতে হাঁটতে একটু ভাবলেন যদুর কথা।যদু কি এখনো আছে দোকানটায়?
যদুর এই নামটা এই খানের মানুষগুলো দিয়েছে।গত চারমাস ধরে ওকে এখানটায় সবাই দেখছে।ওর আসল বাড়ি কোথায় সেটা কেউ জানেনা।আসলে কেউ ঘাটায়ও নি ব্যাপারটা।অনেকের ধারণা ট্রেনে চেপে হয়ত এখানটায় এসেছে ও।
হাঁটতে হাঁটতে চায়ের দোকানটায় চলে এসেছে অমিতাভ মিত্র।যদু হাত পা ছড়িয়ে বসে আছে।আজ অমিতাভ বাবু ওকে আস্ত একটা সিগারেট খাওয়াবে।
এই তারাপদ ওকে একটা সিগারেট দাওতো।
তারাপদ চায়ের জলে চিনি দিতে দিতে বলল,পুরো একটা খাইয়ে দিবেন?
হ্যাঁ।দাও একটা আর আমাকেও একটা দিও।
যদু হাত পা ছড়িয়ে সুয়েটার পড়ে বিড়বিড় করে কথা বলছে।কি বলছে ঠিক বোঝা যাচ্ছেনা।
এই যদু চা খাবি?অমিতাভ বাবু যদুর দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটি করল।
আজ্ঞে হ্যাঁ দাদাবাবু খাব।
যদু চা আর সিগারেট দুটোই খাচ্ছে।অমিতাভ বাবু সিগারেট খেয়ে বাজারের দিকে চলে গেছে।
এখন সন্ধ্যে।অমিতাভ বাবুর স্টেশন থেকে বাড়ি যেতে বেশ খানিকটা পথ হাঁটতে হয়।সামনে ছোটোখাটো একটা জঙ্গল ধরা পড়ে।যায়গাটা বেশ নির্জন থাকে সন্ধ্যের সময়।অমিতাভ বাবু এই মুহূর্তে জঙ্গলের কাছে চলে এসেছেন।হঠাৎ জঙ্গলের ভেতরে একটা মানুষকে আবিষ্কার করলেন।শুধু মানুষ নয় রীতিমতো কবিতা আবৃত্তি সহ একটা মানুষকে আবিষ্কার করলেন অমিতাভ বাবু।যদু নয় কী?যদুর কণ্ঠ মনে হচ্ছে।অমিতাভ বাবু জঙ্গলের দিকে খানিকটা এগিয়ে গেলেন।হ্যাঁ যদুই তো।ময়লার ভেতরে শুয়ে চোখ বুজে কবিতা আবৃত্তি করছে
" I wandered lonely as a cloud
That floats on high o'er vales and hills,
When all at once I saw a crowd,
A host, of golden daffodils;
Beside the lake, beneath the trees,
Fluttering and dancing in the breeze"
আরে এতো সুন্দর করে আবৃত্তি করছে যদু পাগলা!কী সুন্দর!কী সুন্দর!অমিতাভ বাবু বিস্মিত নয়নে তাকিয়ে আছে যদুর দিকে।তিনি নিজেও ইংরাজিতে অনার্স করেছেন।কত কবিতা পড়েছেন।শেলি,কীটসের কত কবিতাই না পড়েছেন।তারপর এই কবিতার কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থ।তার কবিতা কি কম পড়েছেন?কিন্তু একটি কবিতারও দুটো লাইন বলতে পারবেন না তিনি।
কিন্তু যদু এতো সুন্দর করে আবৃত্তি করল কিভাবে?রহস্য টা কী!তিনি দ্রুত হেঁটে বাড়ি চলে গেলেন।
অমিতাভ বাবুর মাথায় শুধুই যদুর আবৃত্তি ভেসে আসছে।ব্যালকনিতে বসে চা খাচ্ছেন আর ভাবছেন ছেলেটার অতীত কাহিনি কী হতে পারে?তিনি মোটামুটি একটা সিদ্ধান্ত নিলেন যদুর ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড খুঁজে বের করতে হবে।তারাপদর দোকানে গেলে কিছু তথ্য হয়ত পেতেও পারেন।এমন কি তারাপদ নিজেও হয়ত জানে ছেলেটির সম্পর্কে, কাওকে হয়ত বলেনি।তারাপদর দোকান তো অনেক রাত অবধি খোলা থাকে।এখন কত বাজে?অমিতাভ বাবু ঘড়ি দেখলেন।মাত্র ন'টা পঁচিশ বাজে।তিনি দ্রুত প্যান্ট পড়ে চটিটা গলিয়ে নেমে এলেন রাস্তায়।
দূর থেকে দেখলেন তারাপদর দোকানে কেউ নেই।যাক ভাল হল নিরিবিলি কথা বলা যাবে।
তারাপদ!
স্যার আপনি এই সময়।বসেন।তারাপদ অমিতাভ বাবুকে স্যার বলেই ডাকে।
কিছু কথা বলব তোমার সাথে?
তারাপদ সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট দিয়ে বলল,কি কথা?
অমিতাভ বাবু সিগারেট টানতে টানতে বললেন,আচ্ছা তুমি তো অনেক পুরোনো লোক এ পাড়ায়।আমি তো মাত্র চার বছর হল এসেছি।
তারাপদ উৎকণ্ঠা নিয়ে বলল,কোনো সমস্যা কি স্যার।বলুন তো কি হয়েছে?
না ওই যদু পাগলার ব্যাপারে কিছু বলব।
ও কি উল্টোপাল্টা কিছু বলেছে আপনাকে।ও নিয়ে ভাববেন না।মাথায় ছিট থাকলে যা হয়।
আরে না না।তা নয়
তাহলে?
আচ্ছা ওর বাবা মাকে চেনো তুমি?
না স্যার।
ওর বাড়ি ঘর চেনো তুমি?
না তাও নয়।কি হয়েছে বলুন তো।যদু পাগলার সম্পর্কে এতো কিছু জানতে চাইছেন।তারাপদর চোখে বিস্ময়।
আচ্ছা তুমি ওর সম্পর্কে কি কি জানো?
ও একটা পাগল।এটুকুই শুধু জানি।
তাহলে তুমি কিছুই জানোনা?
না স্যার কিছুই জানিনা।
অমিতাভ মিত্র সিগারেটের দিকে তাকিয়ে দেখলেন সিগারেটের আগুন ফিল্টার অবধি চলে এসেছে।তিনি সিগারেটে কয়েকটা টান মেরে তারাপদকে দাম দিয়ে বেড়িয়ে আসলেন।রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে তিনি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেবেন বলে ঠিক করলেন।
কিছুদিন পরের ঘটনা।অমিতাভ মিত্রের বাড়িতে দুজন অতিথি এসেছে।অমিতাভ বাবু কৌতুহলী চোখে তাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।ওনারা গেস্ট রুমে বসে আসে।
বলুন কি ব্যাপার?
অতিথির একজন মহিলা একজন পুরুষ।মহিলাটির বয়েস বেশ ভালই হবে।পুরুষ লোকটির চুল দাড়ি সব পেকে গেছে।বেশ বয়স্ক হবে।
মহিলাটি বললেন,আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে এসেছি।
অমিতাভ বাবুর চোখ চকচক করে উঠল,হ্যাঁ হ্যাঁ বলুন।খুব ভাল করেছেন।আপনারা ওর বাবা মা বুঝি?
পুরুষ লোকটি বলল,আমি রিপনের কাকা।মানে আপনারা যাকে যদু বলে ডাকেন।পত্রিকায় ছবি দেখেই ওকে চিনে ফেলেছি।ভদ্রলোকটি একটানে কথাগুলো বলে গেল।
আপনি ওর কাকি?
হ্যাঁ।মহিলাটি বলল।
ওর বাবা মা আসলো না যে?
রিপনের কাকা একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে বললেন,এই জন্যই তো ওর মাথায় গন্ডগোল হয়ে গেলো।
অমিতাভ বাবু বললেন,কিভাবে?
ওর উচ্চমাধ্যমিক রেজাল্ট বেরুনোর দু দিন পরে রোড এক্সিডেন্ট.....পুরোটা বলতে পারলেন না ভদ্রলোকটি।নিজের ভাই,ভাই বৌ বলে কথা।
মানে তারা এক্সিডেন্টে কি হল?অমিতাভ বাবুর চোখে উৎকণ্ঠা।
ভদ্রলোকটি বললেন,রিপনের বাবা মা মারা যায় আর ও এটা সহ্য করতে পারেনি তাই হঠাৎ মাথায় চাপ নিতে না পেরে গন্ডগোল হয়ে গেল মাথায়।
এই ঘটনাটি কতদিন আগের?
তা প্রায় দু বছর হল।
অমিতাভ বাবু বললেন,ও বাড়ি থেকে বের হয়েছে কতদিন?
ভদ্রলোকটি বললেন,দু'বছর ধরেই বাড়িতে নেই।মাথায় গন্ডগোল হওয়ার কদিন পর থেকেই ওকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না।
অমিতাভ বাবুর স্ত্রী একটা ট্রে তে চা,বিস্কিট দিয়ে গেছে।
অমিতাভ বাবু নিজেও এককাপ নিলেন।চা হাতে নিয়ে বললেন,ওকে খোঁজার জন্য কোনো ব্যবস্থা করেন নি?
এবার ভদ্র মহিলাটি বললেন,আশেপাশে খোঁজ নিয়েছিলাম।কিন্তু পাইনি।
হারানো বিজ্ঞপ্তি দ্যাননি?
এবার দুজনেই চুপ।
অমিতাভ বাবু বললেন,ও এই এলাকায় আছে প্রায় চার পাঁচ মাস হল।আগে যে কোথায় ছিল তা কেউ জানেনা।
ভদ্রলোকটি বললেন,রিপন কোথায় আছে?
আছে।প্ল্যাটফর্মের ওদিকটাই খোঁজ করলেই পাওয়া যাবে।
অমিতাভ বাবু নিজ থেকেই বললেন,যদু মানে রিপন পড়ালেখায় খুব ভাল তাইনা?
রিপনের কাকা বললেন,খুব ভাল।মাধ্যমিকে সব সাবজেক্টে লেটার আর উচ্চমাধ্যমিকেও তাই।ক্লাশের মধ্যে ফার্স্ট বয় ছিল ও।
অমিতাভ বাবু যদুর কবিতা আবৃত্তি শুনেই বুঝতে পেরেছিলেন সেদিন খুব ব্রিলিয়্যান্ট ছেলে যদু।না হলে এতো আগ্রহ করে বিজ্ঞাপন কেন?
অমিতাভ বাবু যদুর কাকা কাকিকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়লেন যদুর খোঁজে।কিন্তু কেউ যদুর খোঁজ আর দিতে পারলনা।যদুর কাকা কাকি দু দিন দু রাত ছিল অমিতাভ বাবুর বাড়িতে।কিন্তু ওর খোঁজ কেউ পেলনা।অমিতাভ বাবু তাদের আশ্বস্থ করে পাঠিয়ে দিলেন।বললেন,খোঁজ পেলে জানিয়ে দেওয়া হবে।অমিতাভ বাবু আশায় আশায় পথ চেয়ে রইলেন,যদু তুই কোথায়?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সালাম আলী আহসান ২৮/০৬/২০১৬দারুন।
-
পরশ ২৭/০৬/২০১৬অসাধারন
-
ফয়জুল মহী ২৬/০৬/২০১৬তৃপ্তিকর সাহিত্য
-
পরশ ২৩/০৬/২০১৬ভাল
-
আকাশ চট্টোপাধ্যায় ২২/০৬/২০১৬আচ্ছা লেখক, আপনি বাঃ কথাটা ষোলো পয়েন্টে পড়বেন, ও.কে? আর অভিযোগটাও জানাই। এতবার অমিতাভকে বাবু বানাবেন না। মহিলাকেও বার বার ভদ্র বলার দরকার নেই। ওটা আমরা জানি। এখনও এডিটিং হয়েছে কিনা জানি না, তবে বানানের পরিমার্জন দরকার। আর অন্য একটা ইস্যু শেয়ার করছিঃ
"না" শব্দটা বাক্যছুট হবে, যেমন, "থাকে না, বলবি না, যাবি না"
আরও ভালো হোক। নমস্কার -
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ২২/০৬/২০১৬দীর্ঘ পথ :::.......
-
অঙ্কুর মজুমদার ২১/০৬/২০১৬vlo