একটি বই এবং কিছু কথা
"বেডে শুয়ে থাকা লোকটির দিকে তাকালো। তার দু'চোখ খোলা।
"কে?" ফ্যাসফ্যাসে কণ্ঠে অসুস্থ লোকটি বললো।
কালো পোশাকের লোকটি একটুও চমকালো না। তার নার্ভ বেশ শক্ত। অপেক্ষা করলো সে। তার হাতে অনেক সময় আছে, তাড়াহুড়ার কোনো দরকার নেই। অসুস্থ লোকটি আর কিছু বলছে না। আরেকটু সময় নিল সে, তারপর বেডের কাছে গিয়ে একহাতে অসুস্থ লোকটার মুখ চেপে ধরে তার বুকের বাম পাশে সজোরে ঘুষি চালালো।
পর পর তিনটি।..."
[নেমেসিস : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন]
.
টানটান উত্তেজনার একটা থ্রিলার পড়ে শেষ করলাম! 'নেমেসিস' বইটি ঠাণ্ডামাথার দুর্ধর্ষ এক পেশাদার খুনির কাহিনি। এটা একজন লেখকের খুন হওয়ার কাহিনিও বটে।
সেই লেখক নিয়েই আমার কথা। আমরা জানি, গল্প উপন্যাস বাস্তব হয় না। লেখকের কল্পনাশক্তির আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বেড়ে ওঠে একেকটা গল্প উপন্যাস। কিন্তু আমরা এও জানি, অনেক গল্প উপন্যাস সত্যাশ্রিত হয়ে থাকে। সত্য কাহিনি অবলম্বনেই লেখা হয় তা। শুধু পাঠকের রুচির জন্য নুন মরিচ আর মশলা মেশানো হয় তাতে।
এই গল্পের মূল প্লট বাংলাদেশের নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে গড়ে ওঠেছে— একথা আমি বলব না। তবে বলব, হুমায়ূন আহমেদের জীবন এবং এই বইয়ের চরিত্র লেখক জায়েদ রেহমানের জীবন অধিকাংশ বিষয়েই মিলে যাচ্ছে! সেই থেকেই প্রশ্ন ওঠতে পারে— লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এখানে লেখক জায়েদ রেহমান নামের চরিত্র দ্বারা রূপকার্থে হুমায়ূন আহমেদেরই জীবনের চিত্র আঁকলেন না তো?
আসুন দেখে নিই এই বইয়ের চরিত্র লেখক জায়েদ রেহমান এবং বাংলাদেশের নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মধ্যে মিল কোথায়:
১. দুজনেই প্রথম জীবনে চাকরি করতেন। পরে লেখালেখিকে একমাত্র পেশা হিসেবে বেছে নেন।
২. উভয় লেখকই চাকরি ছেড়ে দিয়ে যখন আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন, তখন তাদের প্রথম স্ত্রী এগিয়ে আসেন। নিজের সব বিলিয়ে দেন। সাংসারিক সব ঝামেলা থেকে লেখককে মুক্ত রাখেন।
৩. উভয়ই দেশের সেরা লেখক। উভয় লেখকের বইই লাখ লাখ কপি বিক্রি হয়।
৪. দুজনেই স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও এবং সেই স্ত্রী লেখককে অত্যধিক ভালোবাসা সত্ত্বেও মেয়ের বয়সী রূপসী একজনের সঙ্গে লিভ টুগেদার করেন এবং পরবর্তীতে সেই মেয়েকে বিয়ে করেন।
৫. উভয়ই একসময় লেখালেখির পাশাপাশি সিনেমা বানানো শুরু করেন।
৬. শেষ জীবনে উভয়ই কঠিন রোগে আক্রান্ত হন।
৭. উভয়ের প্রথম স্ত্রীর নাম গ বর্ণ দিয়ে শুরু।
৮. উভয়ই শেষ জীবনে আত্মজীবনী লেখা শুরু করেন।
৯. উভয়েরই শ্রেষ্ঠ কিছু চরিত্র আছে। তন্মধ্যে জায়েদ রেহমানের 'নীলকণ্ঠ মানব' এবং হুমায়ূন আহমেদের 'হিমু' চরিত্র একই ধরনের। এরা থাকে বেকার এবং রাস্তায় রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করে। আর নিজেকে মহাপুরুষ ভেবে থাকে।
এগুলো হল উভয় লেখকের হুবহু মিল। এছাড়া আরো কিছু মিল আছে, যেগুলো হুবহু নয়। যেমন:
১০. লেখক জায়েদ রেহমান খুন হন। আর হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কেও খুনের অভিযোগ ওঠে।
১১. জায়েদ রেহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর পরকীয়া প্রেম সম্পর্কে জানা যায়। হুমায়ূন আহমেদেরও দ্বিতীয় স্ত্রী সম্পর্কে এরকম কানাঘুষা শোনা গেছে।
১২. জায়েদ রেহমানের চরিত্র খারাপ ছিল, কিন্তু সাধু সেজে থাকত। হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কেও অনেকে 'সাধু সাজার' অভিযোগ করেছেন।...
এতসব মিল থাকার পরও একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে আমি কেন বলব না, এ বইয়ে হুমায়ূন আহমেদেরই মুখোশ উন্মোচন করা হয়েছে? কেন বলব না, এ বই হুমায়ূন আহমেদেরই জীবনের গল্প?
"কে?" ফ্যাসফ্যাসে কণ্ঠে অসুস্থ লোকটি বললো।
কালো পোশাকের লোকটি একটুও চমকালো না। তার নার্ভ বেশ শক্ত। অপেক্ষা করলো সে। তার হাতে অনেক সময় আছে, তাড়াহুড়ার কোনো দরকার নেই। অসুস্থ লোকটি আর কিছু বলছে না। আরেকটু সময় নিল সে, তারপর বেডের কাছে গিয়ে একহাতে অসুস্থ লোকটার মুখ চেপে ধরে তার বুকের বাম পাশে সজোরে ঘুষি চালালো।
পর পর তিনটি।..."
[নেমেসিস : মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন]
.
টানটান উত্তেজনার একটা থ্রিলার পড়ে শেষ করলাম! 'নেমেসিস' বইটি ঠাণ্ডামাথার দুর্ধর্ষ এক পেশাদার খুনির কাহিনি। এটা একজন লেখকের খুন হওয়ার কাহিনিও বটে।
সেই লেখক নিয়েই আমার কথা। আমরা জানি, গল্প উপন্যাস বাস্তব হয় না। লেখকের কল্পনাশক্তির আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বেড়ে ওঠে একেকটা গল্প উপন্যাস। কিন্তু আমরা এও জানি, অনেক গল্প উপন্যাস সত্যাশ্রিত হয়ে থাকে। সত্য কাহিনি অবলম্বনেই লেখা হয় তা। শুধু পাঠকের রুচির জন্য নুন মরিচ আর মশলা মেশানো হয় তাতে।
এই গল্পের মূল প্লট বাংলাদেশের নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে গড়ে ওঠেছে— একথা আমি বলব না। তবে বলব, হুমায়ূন আহমেদের জীবন এবং এই বইয়ের চরিত্র লেখক জায়েদ রেহমানের জীবন অধিকাংশ বিষয়েই মিলে যাচ্ছে! সেই থেকেই প্রশ্ন ওঠতে পারে— লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এখানে লেখক জায়েদ রেহমান নামের চরিত্র দ্বারা রূপকার্থে হুমায়ূন আহমেদেরই জীবনের চিত্র আঁকলেন না তো?
আসুন দেখে নিই এই বইয়ের চরিত্র লেখক জায়েদ রেহমান এবং বাংলাদেশের নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মধ্যে মিল কোথায়:
১. দুজনেই প্রথম জীবনে চাকরি করতেন। পরে লেখালেখিকে একমাত্র পেশা হিসেবে বেছে নেন।
২. উভয় লেখকই চাকরি ছেড়ে দিয়ে যখন আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন, তখন তাদের প্রথম স্ত্রী এগিয়ে আসেন। নিজের সব বিলিয়ে দেন। সাংসারিক সব ঝামেলা থেকে লেখককে মুক্ত রাখেন।
৩. উভয়ই দেশের সেরা লেখক। উভয় লেখকের বইই লাখ লাখ কপি বিক্রি হয়।
৪. দুজনেই স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও এবং সেই স্ত্রী লেখককে অত্যধিক ভালোবাসা সত্ত্বেও মেয়ের বয়সী রূপসী একজনের সঙ্গে লিভ টুগেদার করেন এবং পরবর্তীতে সেই মেয়েকে বিয়ে করেন।
৫. উভয়ই একসময় লেখালেখির পাশাপাশি সিনেমা বানানো শুরু করেন।
৬. শেষ জীবনে উভয়ই কঠিন রোগে আক্রান্ত হন।
৭. উভয়ের প্রথম স্ত্রীর নাম গ বর্ণ দিয়ে শুরু।
৮. উভয়ই শেষ জীবনে আত্মজীবনী লেখা শুরু করেন।
৯. উভয়েরই শ্রেষ্ঠ কিছু চরিত্র আছে। তন্মধ্যে জায়েদ রেহমানের 'নীলকণ্ঠ মানব' এবং হুমায়ূন আহমেদের 'হিমু' চরিত্র একই ধরনের। এরা থাকে বেকার এবং রাস্তায় রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করে। আর নিজেকে মহাপুরুষ ভেবে থাকে।
এগুলো হল উভয় লেখকের হুবহু মিল। এছাড়া আরো কিছু মিল আছে, যেগুলো হুবহু নয়। যেমন:
১০. লেখক জায়েদ রেহমান খুন হন। আর হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কেও খুনের অভিযোগ ওঠে।
১১. জায়েদ রেহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর পরকীয়া প্রেম সম্পর্কে জানা যায়। হুমায়ূন আহমেদেরও দ্বিতীয় স্ত্রী সম্পর্কে এরকম কানাঘুষা শোনা গেছে।
১২. জায়েদ রেহমানের চরিত্র খারাপ ছিল, কিন্তু সাধু সেজে থাকত। হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কেও অনেকে 'সাধু সাজার' অভিযোগ করেছেন।...
এতসব মিল থাকার পরও একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে আমি কেন বলব না, এ বইয়ে হুমায়ূন আহমেদেরই মুখোশ উন্মোচন করা হয়েছে? কেন বলব না, এ বই হুমায়ূন আহমেদেরই জীবনের গল্প?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সোলাইমান ১৪/১২/২০১৬বেশ পড়লাম,খুব ভাল হয়েছে।