যুদ্ধের গান
গতরে খাইটা বড় হইছে আমার বাজান
দাদাজান নিখোঁজ আছিলেন ওই ক'বছর
আমিও একবার গঞ্জে যাইয়া যাত্রাপালার নাচন দেখছিলাম
মায়ে আমারে খুঁইজা না পাইয়া হেইযে কি কান্দন
চক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করান যাইবো না
আইজ মা নাই...
দিয়া গেছে দ্যাশ!
দ্যাশ দিয়া কি অইবো?
বাড়িত এক রাইতে বাজান আছিল না
মিলিটারি আইয়া মায়রে তুইল্লা লইয়া গ্যালো কেম্পে
দাদিজান তো চোক্ষে দেখত না
কিছু বুইঝা উঠার আগেই রাজাকারের দল চইলা গেল
আমি দাদিজানরে ধইরা কান্দি
দাদিজান আমারে ধইরা কান্দে
দাদাজান গেল বছর মইরা দাদিরে রাঁই কইরা গেছে
হেই থেইক্কা দাদিজানের কাছে আইয়া নাকি দাদাজান কান্দে
আর দাদিরে নিবার চায়
আমাগো পরিবারের কোন দুখ আছিল না
হারামজাদা মিলিটারি আমার মায়রে মাইরা তেমুয়নীর মোড়ে যে ঠাড়া পড়া গাছটা আছিল হেইয়ানে ঝুলাইয়া রাখছে
গাছটারও বহুত লম্বা হিস্টরি আছে
বাজান কইছিল-
এক রাইতে রাস্তা দিয়া আওনের সমায় দেহে এক বুড়ি বাপজানের নাম ধইরা ডাকে
বাপজান পিছন ফিরা দেখে উদাম গতরে দাদিজান কান্দে
বাপজান কতো কইরা কইলো বাড়িত চল মা
দাদিজান আইলো না
বাপজান রাগে গোস্বায় বাড়ি ফিরা আইল
আইয়া দেখে দাদিজান ঘরে বেঘোরে ঘুমায়
বাপজান ডরাইয়া আচানক যায়
কারোরে কিছু কয় না
খালি নিজে নিজে কি জানি কয়
তার্পর থেইক্কা বাপজান শীত আইলে আউলাইয়া যায়
তয় মায়ের লাশ নিয়া অইলো আরেক রাজনীতি
গেরামের মাতব্বর আছিল কঠিন রাজাকার
গেরামের জোয়ান মাইয়া ছাওয়ালগো ধইরা ধইরা কেম্পে নিয়া মিলিটারিগো কাছে তুইলা দিয়া তামাশা দেখত
বেগানা মাইয়ার লাশের নাকি জানাজা দেওন যায়না
হারামির বাচ্চা কইলো কি মায় নাকি বেগানা নারী
লাশ নাকি পোড়াইয়া ফেলতে অইবো নাইলে বানের জলে ভাসাইয়া দিতে অইবো
আর আমরারে সমাজ থেইক্কাও বাইর কইরা দেছিলে
আমি গঞ্জে গিয়া কুলির কাম নিছি
চাইরডা বছর বাপ-দাদার ভিটিতে আইতে পারি নাই ভয়ে
শেষমেষ গত বছর ইলেকশনের আগে গেরামে ঢুইক্যা দেহি তাজ্জব কারবার
গেরামের কত উন্নতি
ছোড ছোড পোলা মাইয়ারা ইস্কুলে যায়
গর্ভে আমার বুকটা ভইরা গেল
আইজ কৃতি শিক্ষার্থীগো পুরুষ্কার দিব ইস্কুল থেইক্কা
আমারে হেড মাষ্টার চিন্না কইলো থাকতে
হজ্ঞলে আমারে লইয়া সে কি লাফালাফি
আমিও আনন্দে আত্মহারা হইয়া গেলাম
ফিরা গেলাম অই বয়সে
মুহুর্তেই আমার হাসিডা মলিন অইয়া গেল
এক পুলিশ আমারে ধাক্কা দিয়া কইল ওই ব্যাডা সর মন্ত্রীর গাড়ি আইছে
আমিও মন্ত্রীরে দেখমু কইয়া হাসি হাসি মুখ কইরা খাড়াইছি
দেহি ওই মন্ত্রীর লগে
মায়রে যে মিলিটারিগো আতে তুইলা দিছিলো বাচ্চু রাজাকারও গাড়িতে
পতাকা লাগানো গাড়িটা থাইমল
ও আল্লা আমি কি দেখলাম
এইয়া তো আরো বড় রাজাকার
এই সিনারি দেখনের আগে আমি মইরা গেলাম না কেন!
আমার দুই চোখ অন্ধ হইল না কেন!
আমি বেরকেড ভাইঙ্গা গিয়া ওই শালা মন্ত্রির গালে ছেপ মাইরা দিছিলাম
আমারে পুলিশ ধইরা নিয়া হজতে পাডাইল
হাজত থেইক্কা ছাড়া পাইয়া আইজ নিজেরে ধিক্কার দিতে ইচ্ছা অয়
আমি বীরাঙ্গনার পোলা!
দাদাজান নিখোঁজ আছিলেন ওই ক'বছর
আমিও একবার গঞ্জে যাইয়া যাত্রাপালার নাচন দেখছিলাম
মায়ে আমারে খুঁইজা না পাইয়া হেইযে কি কান্দন
চক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করান যাইবো না
আইজ মা নাই...
দিয়া গেছে দ্যাশ!
দ্যাশ দিয়া কি অইবো?
বাড়িত এক রাইতে বাজান আছিল না
মিলিটারি আইয়া মায়রে তুইল্লা লইয়া গ্যালো কেম্পে
দাদিজান তো চোক্ষে দেখত না
কিছু বুইঝা উঠার আগেই রাজাকারের দল চইলা গেল
আমি দাদিজানরে ধইরা কান্দি
দাদিজান আমারে ধইরা কান্দে
দাদাজান গেল বছর মইরা দাদিরে রাঁই কইরা গেছে
হেই থেইক্কা দাদিজানের কাছে আইয়া নাকি দাদাজান কান্দে
আর দাদিরে নিবার চায়
আমাগো পরিবারের কোন দুখ আছিল না
হারামজাদা মিলিটারি আমার মায়রে মাইরা তেমুয়নীর মোড়ে যে ঠাড়া পড়া গাছটা আছিল হেইয়ানে ঝুলাইয়া রাখছে
গাছটারও বহুত লম্বা হিস্টরি আছে
বাজান কইছিল-
এক রাইতে রাস্তা দিয়া আওনের সমায় দেহে এক বুড়ি বাপজানের নাম ধইরা ডাকে
বাপজান পিছন ফিরা দেখে উদাম গতরে দাদিজান কান্দে
বাপজান কতো কইরা কইলো বাড়িত চল মা
দাদিজান আইলো না
বাপজান রাগে গোস্বায় বাড়ি ফিরা আইল
আইয়া দেখে দাদিজান ঘরে বেঘোরে ঘুমায়
বাপজান ডরাইয়া আচানক যায়
কারোরে কিছু কয় না
খালি নিজে নিজে কি জানি কয়
তার্পর থেইক্কা বাপজান শীত আইলে আউলাইয়া যায়
তয় মায়ের লাশ নিয়া অইলো আরেক রাজনীতি
গেরামের মাতব্বর আছিল কঠিন রাজাকার
গেরামের জোয়ান মাইয়া ছাওয়ালগো ধইরা ধইরা কেম্পে নিয়া মিলিটারিগো কাছে তুইলা দিয়া তামাশা দেখত
বেগানা মাইয়ার লাশের নাকি জানাজা দেওন যায়না
হারামির বাচ্চা কইলো কি মায় নাকি বেগানা নারী
লাশ নাকি পোড়াইয়া ফেলতে অইবো নাইলে বানের জলে ভাসাইয়া দিতে অইবো
আর আমরারে সমাজ থেইক্কাও বাইর কইরা দেছিলে
আমি গঞ্জে গিয়া কুলির কাম নিছি
চাইরডা বছর বাপ-দাদার ভিটিতে আইতে পারি নাই ভয়ে
শেষমেষ গত বছর ইলেকশনের আগে গেরামে ঢুইক্যা দেহি তাজ্জব কারবার
গেরামের কত উন্নতি
ছোড ছোড পোলা মাইয়ারা ইস্কুলে যায়
গর্ভে আমার বুকটা ভইরা গেল
আইজ কৃতি শিক্ষার্থীগো পুরুষ্কার দিব ইস্কুল থেইক্কা
আমারে হেড মাষ্টার চিন্না কইলো থাকতে
হজ্ঞলে আমারে লইয়া সে কি লাফালাফি
আমিও আনন্দে আত্মহারা হইয়া গেলাম
ফিরা গেলাম অই বয়সে
মুহুর্তেই আমার হাসিডা মলিন অইয়া গেল
এক পুলিশ আমারে ধাক্কা দিয়া কইল ওই ব্যাডা সর মন্ত্রীর গাড়ি আইছে
আমিও মন্ত্রীরে দেখমু কইয়া হাসি হাসি মুখ কইরা খাড়াইছি
দেহি ওই মন্ত্রীর লগে
মায়রে যে মিলিটারিগো আতে তুইলা দিছিলো বাচ্চু রাজাকারও গাড়িতে
পতাকা লাগানো গাড়িটা থাইমল
ও আল্লা আমি কি দেখলাম
এইয়া তো আরো বড় রাজাকার
এই সিনারি দেখনের আগে আমি মইরা গেলাম না কেন!
আমার দুই চোখ অন্ধ হইল না কেন!
আমি বেরকেড ভাইঙ্গা গিয়া ওই শালা মন্ত্রির গালে ছেপ মাইরা দিছিলাম
আমারে পুলিশ ধইরা নিয়া হজতে পাডাইল
হাজত থেইক্কা ছাড়া পাইয়া আইজ নিজেরে ধিক্কার দিতে ইচ্ছা অয়
আমি বীরাঙ্গনার পোলা!
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ডাঃ প্রবীর আচার্য নয়ন ৩০/০৯/২০১৩
-
বিশ্বজিৎ বণিক ৩০/০৯/২০১৩অসাধারণ মানচিত্র । বেশ ভালো হয়েছে ।
-
Înšigniã Āvî ৩০/০৯/২০১৩ঘৃণা বর্ষণে কবিতা হয়েছে তীব্র....
-
ইব্রাহীম রাসেল ৩০/০৯/২০১৩--ভেতরের ক্ষোভ থেকে উদ্ভাসিত চরণাবলি--
-
সহিদুল হক ৩০/০৯/২০১৩রাজাকারদের প্রতি চরম ঘৃণা প্রকাশ পেয়েছে কবিতাটিতে।
তবে সেদিন খুব দূরে নয় যখন সত্যের জয় হবে দেশটাকে যারা সন্দেশ বানিয়ে খাবার পাঁয়তারা করছে তারা তখন লজ্জায় তাদের বিবর্ণ মুখ লুকাবে
রক্ত টগবগ করছে কবিতা পড়ে খুব ভালো