ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হলো দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষায় হাতিয়ার
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ প্রণয়নের দ্বারা সরকার আসলে মন্ত্রী-এমপি এবং দুর্নীতিবাজ আমলা, সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের দোষত্রুটি জনগণের কাছে থেকে লুকানোর পায়তারা খুঁজেছে বলেই মনে হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এরই মধ্যে বলেছেন, " আপনারা (সাংবাদিকরা) গণমাধ্যমে যেভাবে মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ে রিপোর্ট করেন তাতে তাদের মান-ইজ্জত থাকেনা। তাদের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়। তারা তো জনপ্রতিনিধি। তাই এগুলো ঠেকাতেই এ আইন করা হয়েছে।"
তোফায়েল আহমেদের এই বক্তব্য বিশ্লেষণ করলেই খুব সহজে বুঝে নেয়া সম্ভব যে, ৩২ নং ধারা মন্ত্রী-এমপিদের পাপ লুকোনোর প্রচেষ্টা মাত্র। কেননা, গণমাধ্যমে এমনকি সংবাদ তাদের নামে প্রকাশিত হয় যার জন্য তাদের মান ইজ্জত থাকেনা? নিশ্চয়ই তা তাদের অপকর্মের খবর? তাদের ভালো কাজের সংবাদ প্রকাশে তো তাদের ইজ্জত যাওয়ার কথা না কিংবা একজন সাংবাদিক তো আর কোন মন্ত্রী-এমপিদের নামে মিথ্যে সংবাদ প্রকাশ করে তার কর্মজীবন বিপদগ্রস্ত করে তুলবেন না।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে–‘যদি কোনও ব্যক্তি বে-আইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনও সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ কোনও সংস্থার কোনও ধরনের অতি গোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত, কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনও ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে কম্পিউটার বা ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ।’
সাধারণত, যেকোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানগত গোপনীয়তা রক্ষা করার অধিকার আছে, এটা আইন দ্বারা সিদ্ধ। কিন্তু যখন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি, ঘুষ, অন্যায় কোন কর্মে লিপ্ত হয় তখন তাদের গোপনীয়তা রক্ষা নাও হতে পারে। তখন আমরা অনেক সময়ই দেখি কোন সাংবাদিক অথবা স্ব-উদ্যোগী কোন ব্যক্তি গোপনে ঐ অন্যায়কর্মের প্রমাণ সংগ্রহ করে তা গণমাধ্যম/সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন,যাতে অন্যায়কারীর শাস্তি হয় সেজন্যই।
কিন্তু ৩২ ধারা প্রণয়নের পরে কোন সাংবাদিকের বা ব্যক্তির ঐরুপ কোন ঘুষ, দুর্নীতির গোপন তথ্য সংগ্রহ করা বে-আইনি বলে বিবেচিত হবে এবং এর জন্য তথ্য সংগ্রহকারীর জেলও হবে।
কথা হলো, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন '১৮ এর ৩২ ধারাতে অনুমতি ব্যতিরেকে তথ্য সংগ্রহ করাকে গুপ্তচরবৃত্তি বলা হয়েছে আর এই গুপ্তচরবৃত্তি রুখতেই এই আইন। কিন্তু গুপ্তচরবৃত্তি রোখার জন্য তো পূর্ব থেকেই একটি আইন ছিলো। তাহলে আবার নতুন করে এই আইন কেনো? গণমাধ্যমকর্মীদের কাজের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার জন্যই এই আইন কি? যাতে সংবাদকর্মীরা স্বাধীনভাবে ঘুষ, দুর্নীতি, অন্যায়ের দলিল সংগ্রহ করতে না পারে?
সাংবাদিক, বিশ্লেষক, বিরোধীদল, সচেতন মহল মনে করছেন এই আইন বিলুপ্ত ৫৭ ধারার চেয়েও ভয়ংকর এবং মন্ত্রী-এমপি, আমলা, সরকারী কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সুরুক্ষায় এই আইন করা হয়েছে। যাতে কোন সাংবাদিক আর গোপনে কারও ঘুষ খাওয়ার তথ্য রেকর্ড করতে না পারে, কিংবা গোপনে কেউ যাতে মন্ত্রী-এমপিদের পাপকে ডিভাইসে ধারণ করে জনসম্মুখে আনতে না পারে।
কেনোনা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী দেখা যায় যে, মন্ত্রী-এমপি, পুলিশ প্রশাসন, আমলা, ব্যাংক কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, অনাচার, অন্যায়মুলক কর্মকাণ্ড কোনভাবে যেন গণমাধ্যমে প্রকাশ করে তাদের বিপাকে ফেলে দেয়া না হয় তারই জন্য এই আইন সাজানো।
অনেকে মনে করেন, যেহেতু সামনে নির্বাচন, তাই নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিদের কোন খারাপ খবর প্রকাশ পাওয়া আত্মহত্যার শামিল, তাই ৩২ নং ধারার দ্বারা ফাঁক খোঁজা হয়েছে।
তোফায়েল আহমেদের এই বক্তব্য বিশ্লেষণ করলেই খুব সহজে বুঝে নেয়া সম্ভব যে, ৩২ নং ধারা মন্ত্রী-এমপিদের পাপ লুকোনোর প্রচেষ্টা মাত্র। কেননা, গণমাধ্যমে এমনকি সংবাদ তাদের নামে প্রকাশিত হয় যার জন্য তাদের মান ইজ্জত থাকেনা? নিশ্চয়ই তা তাদের অপকর্মের খবর? তাদের ভালো কাজের সংবাদ প্রকাশে তো তাদের ইজ্জত যাওয়ার কথা না কিংবা একজন সাংবাদিক তো আর কোন মন্ত্রী-এমপিদের নামে মিথ্যে সংবাদ প্রকাশ করে তার কর্মজীবন বিপদগ্রস্ত করে তুলবেন না।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে–‘যদি কোনও ব্যক্তি বে-আইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনও সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ কোনও সংস্থার কোনও ধরনের অতি গোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত, কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনও ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে কম্পিউটার বা ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ।’
সাধারণত, যেকোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানগত গোপনীয়তা রক্ষা করার অধিকার আছে, এটা আইন দ্বারা সিদ্ধ। কিন্তু যখন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি, ঘুষ, অন্যায় কোন কর্মে লিপ্ত হয় তখন তাদের গোপনীয়তা রক্ষা নাও হতে পারে। তখন আমরা অনেক সময়ই দেখি কোন সাংবাদিক অথবা স্ব-উদ্যোগী কোন ব্যক্তি গোপনে ঐ অন্যায়কর্মের প্রমাণ সংগ্রহ করে তা গণমাধ্যম/সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন,যাতে অন্যায়কারীর শাস্তি হয় সেজন্যই।
কিন্তু ৩২ ধারা প্রণয়নের পরে কোন সাংবাদিকের বা ব্যক্তির ঐরুপ কোন ঘুষ, দুর্নীতির গোপন তথ্য সংগ্রহ করা বে-আইনি বলে বিবেচিত হবে এবং এর জন্য তথ্য সংগ্রহকারীর জেলও হবে।
কথা হলো, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন '১৮ এর ৩২ ধারাতে অনুমতি ব্যতিরেকে তথ্য সংগ্রহ করাকে গুপ্তচরবৃত্তি বলা হয়েছে আর এই গুপ্তচরবৃত্তি রুখতেই এই আইন। কিন্তু গুপ্তচরবৃত্তি রোখার জন্য তো পূর্ব থেকেই একটি আইন ছিলো। তাহলে আবার নতুন করে এই আইন কেনো? গণমাধ্যমকর্মীদের কাজের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার জন্যই এই আইন কি? যাতে সংবাদকর্মীরা স্বাধীনভাবে ঘুষ, দুর্নীতি, অন্যায়ের দলিল সংগ্রহ করতে না পারে?
সাংবাদিক, বিশ্লেষক, বিরোধীদল, সচেতন মহল মনে করছেন এই আইন বিলুপ্ত ৫৭ ধারার চেয়েও ভয়ংকর এবং মন্ত্রী-এমপি, আমলা, সরকারী কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সুরুক্ষায় এই আইন করা হয়েছে। যাতে কোন সাংবাদিক আর গোপনে কারও ঘুষ খাওয়ার তথ্য রেকর্ড করতে না পারে, কিংবা গোপনে কেউ যাতে মন্ত্রী-এমপিদের পাপকে ডিভাইসে ধারণ করে জনসম্মুখে আনতে না পারে।
কেনোনা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী দেখা যায় যে, মন্ত্রী-এমপি, পুলিশ প্রশাসন, আমলা, ব্যাংক কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, অনাচার, অন্যায়মুলক কর্মকাণ্ড কোনভাবে যেন গণমাধ্যমে প্রকাশ করে তাদের বিপাকে ফেলে দেয়া না হয় তারই জন্য এই আইন সাজানো।
অনেকে মনে করেন, যেহেতু সামনে নির্বাচন, তাই নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিদের কোন খারাপ খবর প্রকাশ পাওয়া আত্মহত্যার শামিল, তাই ৩২ নং ধারার দ্বারা ফাঁক খোঁজা হয়েছে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কামরুজ্জামান সাদ ০৭/০২/২০১৮ভিআইপিদের ইজ্জ্বত রক্ষার হাতিয়ার
-
মোঃআব্দুল্লাহ্ আল মামুন ৩১/০১/২০১৮সুন্দর বলেছেন।।
একটা বিষয় লক্ষ করলাম।
।কয়দিন ধরে
তারুণ্য ব্লগে লেখন কমে যাচ্ছে।
লেখা প্রকাশ করেনা কেউ।
আগে
বাংলা কবিতা তে
যারা কবিতা দিতো
তারা সবাই
এইখানে লিখতো।
এখন দিনে ৩, বা ৪টি জমা হয় -
আসাদ ৩১/০১/২০১৮অবিলম্বে এই আইন বাতিলের দাবী জানাই। সাংবাদিকতা হুমকির মুখে এখন।