দোদুল্যমান প্রাণ
ছেলেটির দু'চোখে তৃষ্ণা, শকুনের মতো তৃষ্ণার্ত চোখে সে তাকাচ্ছিল চারদিকে। বয়স তার কতই বা হবে ষোল থেকে সতের। নাম না জানা ছেলেটির গায়ের বহুদিনের অধৌত শার্ট থেকে ভেসে আসছিল দৈহিক পারফিউমের ঘ্রাণ। কাউকে কিছু জানতে না দিয়েই সে হঠাৎ ছুটে পালায় আমাদের দৃষ্টি রেখার সামনে থেকে।
কয়েক সেকেন্ড পরই ছেলেটির পেছন পেছন "চোর চোর, মোবাইল নিছে" বলে দৌড়াতে থাকে চুরি যাওয়া মোবাইলের মালিক। দুজনই দৌড়াচ্ছে, এ যেন অঘোষিত এক দৌড় প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতার নির্দিষ্ট কোন সীমা নেই, কোন পদক নেই।
তারা দৌড়াচ্ছে, দৌড়াতে দৌড়াতে দুজনই চলে আসে পাকা রাস্তায়। এ রাস্তায় দু'চাকা, তিন চাকা, চার চাকা, ছয় চাকা, আট চাকা সমৃদ্ধ যানবাহনে নিত্য যাতায়াত। যানবাহন গুলো্ও অঘোষিত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।
আবারও কাউকে বুঝতে দেওয়ার আগেই দৃশ্যপটে একটি সি এন জি চিৎপটাং। সি এন জি'র ধাক্কায় দুরে পরে কাতরাচ্ছে মোবাইলের প্রকৃত মালিক। চিৎপটাং সি এন জি থেকে ভেসে আসছে আরোহী ও চালকের চিৎকার। জনতা দৌড়িয়ে সেখানে যাওয়ার পর সবাইকে উদ্ধার করার পর দেখা গেল সিএনজি ব্যতীত সকলেই মোটামোটি সুস্থ। এ উদ্ধার কাজে পুলিশও সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
ঘটনার ক্রম এখানেই শেষ হয়নি..................
মোবাইল চোর ছেলেটি নির্বিঘ্নেই রাস্তা পার হয়। বুঝা যায় এভাবে রাস্তা পার হওয়ায় সে সিদ্ধহস্ত।
রাস্তা পার হওয়ার পর ঐ ছেলেটি জনতার হাতে ধৃত হয়। জনতা তখন তীব্র আক্রোশে পিঠুনীর নিচে ফেলে ঐ ছেলেটিকে। ছেলেটির হাত দুটো এমন ভাবে টেনে ধরা হলো যেন সে ব্যথা পায়। ছেলেটি ব্যথার তীব্রতায় চিৎকার করে অশ্রু ঝরাতে থাকে। তখন কান্নারত চোখে সে মাফ চাইলেও উদ্ধত জনতা মাফ করতে নারাজ। অবশেষে এখানেও পুলিশের হস্তক্ষেপ ও চোর ছেলেটি তাদের কুক্ষিগত করে থানায় নিয়ে চলা।
রয়ে যাওয়া কিছু কথা:
শুধু মাত্র একটি মোবাইলের কারণে আজ অকালেই ঝরে যেতে পারত দুটি সজীব প্রাণ। ঘটনার তদন্তে জানা যায় ছেলেটি নেশার টাকা জোগাড় করতেই মোবাইল চুরি করেছিল, কিন্তু কেন সে ছেলেটি নেশা নেয় তা তদন্ত করবে না কেউ।
মোবাইলের মালিক কেন জীবন বিপন্ন করে রাস্তা পার হতে গেল, উনাকে আঘাত-কৃত যানবাহন যদি সি এন জি না হয়ে বাস বা ট্রাক হতো তাহলে কি সে জীবনটুকু ফেরত পেত?
আসলে আমরা ছাড় দিতে রাজি নই, নিজের সম্পদ অন্য কেউ নিয়ে যাবে ঐটা আমরা ভাবতেও পারিনা এবং যে সে সম্পদ নিতে চাইবে তাকে কোনভাবেই ছাড় দিতে আমরা রাজি নই। অথচ আমরা অন্যের সম্পদের দিকে তাকিয়ে বলি "আহ! আমার যদি থাকত এমন"।
আমাদের রাজনীতিবিদ নামক নষ্ট গোষ্ঠির সদস্যরা চুরি করে নিয়ে যায় আমাদের অস্তিত্ব, অথচ আমরা কখনোই তাদের পেছন থেকে তাড়া করিনা বরঞ্চ তোষামোদের সাথে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিই। ঐসব রাঘব বোয়ালদের আমরা কিছুই করতে পারিনা কিন্তু দুর্বল ঐসব মোবাইল চোরদের দেখলেই আমাদের বল বেড়ে যায়।
---------------------------
-মহাখালী বাসস্ট্যান্ড
-১১ আষাঢ় ১৪২০ - মঙ্গলবার
কয়েক সেকেন্ড পরই ছেলেটির পেছন পেছন "চোর চোর, মোবাইল নিছে" বলে দৌড়াতে থাকে চুরি যাওয়া মোবাইলের মালিক। দুজনই দৌড়াচ্ছে, এ যেন অঘোষিত এক দৌড় প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতার নির্দিষ্ট কোন সীমা নেই, কোন পদক নেই।
তারা দৌড়াচ্ছে, দৌড়াতে দৌড়াতে দুজনই চলে আসে পাকা রাস্তায়। এ রাস্তায় দু'চাকা, তিন চাকা, চার চাকা, ছয় চাকা, আট চাকা সমৃদ্ধ যানবাহনে নিত্য যাতায়াত। যানবাহন গুলো্ও অঘোষিত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।
আবারও কাউকে বুঝতে দেওয়ার আগেই দৃশ্যপটে একটি সি এন জি চিৎপটাং। সি এন জি'র ধাক্কায় দুরে পরে কাতরাচ্ছে মোবাইলের প্রকৃত মালিক। চিৎপটাং সি এন জি থেকে ভেসে আসছে আরোহী ও চালকের চিৎকার। জনতা দৌড়িয়ে সেখানে যাওয়ার পর সবাইকে উদ্ধার করার পর দেখা গেল সিএনজি ব্যতীত সকলেই মোটামোটি সুস্থ। এ উদ্ধার কাজে পুলিশও সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
ঘটনার ক্রম এখানেই শেষ হয়নি..................
মোবাইল চোর ছেলেটি নির্বিঘ্নেই রাস্তা পার হয়। বুঝা যায় এভাবে রাস্তা পার হওয়ায় সে সিদ্ধহস্ত।
রাস্তা পার হওয়ার পর ঐ ছেলেটি জনতার হাতে ধৃত হয়। জনতা তখন তীব্র আক্রোশে পিঠুনীর নিচে ফেলে ঐ ছেলেটিকে। ছেলেটির হাত দুটো এমন ভাবে টেনে ধরা হলো যেন সে ব্যথা পায়। ছেলেটি ব্যথার তীব্রতায় চিৎকার করে অশ্রু ঝরাতে থাকে। তখন কান্নারত চোখে সে মাফ চাইলেও উদ্ধত জনতা মাফ করতে নারাজ। অবশেষে এখানেও পুলিশের হস্তক্ষেপ ও চোর ছেলেটি তাদের কুক্ষিগত করে থানায় নিয়ে চলা।
রয়ে যাওয়া কিছু কথা:
শুধু মাত্র একটি মোবাইলের কারণে আজ অকালেই ঝরে যেতে পারত দুটি সজীব প্রাণ। ঘটনার তদন্তে জানা যায় ছেলেটি নেশার টাকা জোগাড় করতেই মোবাইল চুরি করেছিল, কিন্তু কেন সে ছেলেটি নেশা নেয় তা তদন্ত করবে না কেউ।
মোবাইলের মালিক কেন জীবন বিপন্ন করে রাস্তা পার হতে গেল, উনাকে আঘাত-কৃত যানবাহন যদি সি এন জি না হয়ে বাস বা ট্রাক হতো তাহলে কি সে জীবনটুকু ফেরত পেত?
আসলে আমরা ছাড় দিতে রাজি নই, নিজের সম্পদ অন্য কেউ নিয়ে যাবে ঐটা আমরা ভাবতেও পারিনা এবং যে সে সম্পদ নিতে চাইবে তাকে কোনভাবেই ছাড় দিতে আমরা রাজি নই। অথচ আমরা অন্যের সম্পদের দিকে তাকিয়ে বলি "আহ! আমার যদি থাকত এমন"।
আমাদের রাজনীতিবিদ নামক নষ্ট গোষ্ঠির সদস্যরা চুরি করে নিয়ে যায় আমাদের অস্তিত্ব, অথচ আমরা কখনোই তাদের পেছন থেকে তাড়া করিনা বরঞ্চ তোষামোদের সাথে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিই। ঐসব রাঘব বোয়ালদের আমরা কিছুই করতে পারিনা কিন্তু দুর্বল ঐসব মোবাইল চোরদের দেখলেই আমাদের বল বেড়ে যায়।
---------------------------
-মহাখালী বাসস্ট্যান্ড
-১১ আষাঢ় ১৪২০ - মঙ্গলবার
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ১৫/০৯/২০১৩খুবই সুন্দর পটভূমিতে রচিত এই প্রবন্ধ।আমার অসম্ভব ভালোো লাগলো।আশা করি লেখক তার গভীরে থাকা অনুচ্চারিত সত্য গুলো তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
-
মোকসেদুল ইসলাম ১৫/০৯/২০১৩ভাল লাগল
-
রাসেল আল মাসুদ ১৪/০৯/২০১৩খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লেখক আলোকপাত করেছেন। এবং যা বলেছেন, বিশেষ করে শেষ বাক্যটায়, তা একেবারেই খাঁটি সত্য কথা।
-
ডাঃ দাউদ ১৪/০৯/২০১৩অনেক ভালো লাগলো
এতে ফুটে ওঠেছে বর্তমান সমাজের এমন কিছু চিত্র
যা কখনও কেউ অস্বীকার করতে পারবে না