প্রবাদ ব্রিটিশ বুদ্ধি এবং তার ভূত
ছোট বেলায় গ্রামে কোথাও কারো আম, নারকেল, পেঁপে চুরি হলেই একজন বা একদল এই কাজটি করেছে তা জানার পর সবাই বলতো “এই ছেলেটা বা ছেলে গুলো বড় ব্রিটিশ!” তখন ভাবতাম দুষ্ট প্রকৃতির ছেলেদের ব্রিটিশ বলা হয়ে থাকে। কিছু দিন পর যখন গ্রামের কে যেন কুবুদ্ধিতে দিয়ে নিজের ফায়দা লুটে নিল আর প্রতিপক্ষ্য ক্ষতি হলো, তখন মুরব্বীদের মুখে শুনি “ওর ব্রিটিশ বুদ্ধির কাছে হেরে গেল”। তখন আমি ভাবতাম ‘না শুধু ছোটরা নয় বড়রাও ব্রিটিশ হতে পারে’। তখনই এই ব্রিটিশ শব্দটার সাথে পরিচয়।
উপমহাদেশে ব্যবসা করতে এসে ব্রিটিশ বুদ্ধি ও ষড়যন্ত্র করে উপমহাদেশ শাসন করে গেল ২০০ বছর, ক্ষমতায় এসে ব্রিটিশ ভাবতে লাগলো কি ভাবে বেশি দিন আমাদের উপর শাসন করবে। তখনই তাদের রাজনীতির এক র্ফমূলা আবিস্কার করলো-'ডিভাইড অ্যান্ড রুল' ('ভাগ করো এবং শাসন করো)
ইংরেজ চলে যাওয়ার আগেই তাদের ব্রিটিশ বুদ্ধির ছাপ রেখে গেছে ১৫০০ কিলো এর এই পাশে এবং অন্য পাশে এক রাষ্ট্র পাকিস্তান (মাঝখানে অন্য একটি দেশ ভারত) আমার মনে হয় পৃথিবীতে এমন দেশের নজির আর নেই। যদি ‘ব্রিটিশ বুদ্ধি’ না খাটাতো তাহলে তখনই ৩ টি দেশ ভাগ করা যেত, পাকিস্তান, ভারত আর বাংলা ভাষীদের নিয়ে বাংলাদেশ।
তেমনই রেখে গেল কাশ্মীর ইস্যু! যার যন্ত্রনা সয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর সাধারণ কাশ্মীরি জনগণ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রোহিঙ্গাদের স্বাধীনতা দেবে এই মর্মে কথা দেয়ায় রোহিঙ্গারা ইংরেজদের সমর্থন করে, কিন্তু যুদ্ধে ইংরেজরা জাপানীরদের কাছে আত্মসমর্পণ করলে রোহিঙ্গাদের উপর নির্মম অত্যাচার চলে। কিন্তু ১৯৪৮ সালে মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিয়ে আরাকানকে/রোঙ্গিগাদের এই ভাবে মার খাওয়ার জন্য চেড়ে দিয়ে যান। এখানেও সেই ব্রিটিশ বুদ্ধির ছাপ চেড়ে যান। ইংরেজদের এই ব্রিটিশ বুদ্ধির খেসারত লাখ-লাখ জীবন দিয়ে আমরা শোধ করতেছি।
পৃথিবীর কোথাও যদি একজন মুসলমান একজন হিন্দু দ্বারা নির্যাতিত হয় তখনই আমাদের দেশের মুসলমানরা বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দুদের ভালো চোখে দেখেনা বা কোথাও-কোথাও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে। আর যদি অন্য কোথাও একজন হিন্দু মুসলমান দ্বারা আক্রান্ত হয় তখনই ভারতের ধর্ম প্রাণ হিন্দুরা সে দেশের মুসলমানদের উপর আক্রমণ করে, সেই ভাবে সংখ্যালঘুরা সংখ্যাগুরু দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আসতেছে। তার প্রমাণ রোহিঙ্গা মুসলমানসহ সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত।
৭০ বছর আগে ইংরেজ আমাদের দেশ থেকে চলে গেছে কিন্তু তাদের র্ফমূলা আর আইন এখন আমাদের শাসন ব্যবস্থায় বিদ্যমান। তাদের সেই র্ফমূলা 'ডিভাইড অ্যান্ড রুল' ('ভাগ করো এবং শাসন করো';) ব্রিটিশ ভূত আমাদের মাঝে আজও রয়ে গেছে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কামরুজ্জামান সাদ ২৭/০৯/২০১৭বৃটিশ ভূত এখনো রয়ে গেছে।
-
আজাদ আলী ২৭/০৯/২০১৭Valo
-
আব্দুল হক ২৬/০৯/২০১৭আশা করি সবার ভালো লাগবে।