www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

যাত্রা নাস্তি (দ্বিতীয় পর্ব)

নিজের কামরায় ফিরে এসে আকাশবাবু স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করলো। ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। পাগলা বুড়ো আর চাওয়ালাকে পেছনে ফেলে তা ছুটে যাচ্ছে তার পিসির বাড়িতে। পেছনের দালানগুলো যেন দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে অসীম শূন্যতায়।

কামরায় এখন মাত্র তিনজন মানুষ। আকাশবাবু, সেই কৌতূহলী শিশু যার নজর আকাশবাবুর দিকে সর্বক্ষণ লেগে আছে এক অজানা প্রশ্নের সন্ধানে। আর সেই শিশুর মা। যার মুখ আচল দিয়ে ঢেকে রাখা। মহিলা আকাশবাবুকে দেখে সামান্য লজ্জা পেয়ে গেলেন বোধহয়। এই তরুণের সাথে একই কামরায় অবস্থান করাটা মোটামুটি সুবিধাজনক লাগার কথা না। তাই আকাশবাবু উঠে পড়লো।
তার আসনের থলেটা সে হাতে নিয়ে সেখান থেকে একটা কাগজ বের করলো। এক মাস আগের পত্রিকা হবে। কিন্তু আপাতত তার পড়ার জন্য কিছু একটা দরকার। সেক্ষেত্রে কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া বিভীষিকা থেকে খানিকটা পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
ট্রেন শহুরে আবেশ কাটিয়ে তখন পুনরায় ক্ষেতে ঘেরা রেলপথে প্রবেশ করেছে। তাই পাথুরে শব্দের পরিবর্তে এখন শ্রান্ত ঝাঁকুনি এবং কু ঝিক ঝিকের ঐকতান জুড়েছে।

আকাশবাবু ধীরে ধীরে কামরার দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসলো। করিডোর তখন ফাঁকা। নতুন করে ট্রেনে উঠা মানুষদের টিকেট চেকের জন্য টিটিকে করিডোরের বিপরীত মাথায় আবিষ্কার করা গেলো।
আকাশবাবু পত্রিকাখানা মেলে ধরলো।

কিন্তু ঝড়ের বেগে ছুটে চলা ট্রেনের সাথে বাতাসের যে বোঝাপড়া চলছে, তার পাল্লায় পড়ে পত্রিকাখানা ঠিকমতো মেলে ধরা যাচ্ছিলো না।
কী মুশকিল! জিহবা দিয়ে বেশ বিরক্তিকর শব্দ করে সে করিডোর ধরে এগিয়ে যেতে থাকে খাবার বগির দিকে। সেখানে চারটি চেয়ার রাখা থাকে। এর আগে একবার সে খাবার বগিতে গিয়েছিলো। তখন চেয়ার সবগুলো ফাঁকা ছিল। এবার ফাঁকা পেলেই হবে।

চেয়ার ফাঁকাই ছিল। খাবার বগির দোকানটার ঢালা লাগানো বাইরে থেকে। তার মানে এদিকে কেউ আসছেও না। সে নিশ্চিন্ত মনে বসে পড়লো। পত্রিকার কাগজ ভাঁজ করে সে পড়তে থাকলো। তবে পড়া বলতে গেলে শুধু চোখ বুলানোই সই।

এভাবে প্রায় পনের মিনিট এই পাতা ওই পাতা উল্টালো সে। তারপর মাথা হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো সে। তখন খাবার বগিতে টি টি প্রবেশ করলো।

সে আকাশবাবুর টিকেট চাইলো। হঠাৎ খাবার বগিতে একজন অনাখাংক্ষিত মানুষের উপস্থিতিতে আকাশবাবু ভড়কে গেলো। টি টি ভেবেছিলো আকাশবাবু টিকেট ছাড়া ট্রেনে উঠায় এখন এখানে লুকিয়ে আছে। তাই সে নিয়ম মাফিক টিকেট চেয়ে বসলো।

আকাশাবাবু পকেটে হাত দিয়ে টিকেট বের করার চেষ্টা করলো। কিন্তু পকেট থেকে একটি দেশলাই বাক্স ছাড়া কিছুই বের হলো না। টি টি এবার জরিমানা চেয়ে বসলো। সে দ্রুত জরিমানার পাতা ছিঁড়তে লাগলো। কিন্তু আকাশবাবু তো টিকেট করেছে।
তাই সে টিটিকে বুঝিয়ে বললো,
“দেখুন আমার টিকেট করা হয়েছে। আমি সেই নন্দিপাড়া স্টেশন থেকে উঠেছি। প্রথম চেকের সময় আপনি এসে টিকেট সাইন করে দিয়েছেন।”
টি টি জরিমানা টিকেট ছিঁড়ে তার হাতে ধরিয়ে বললো, “এরকম ঢের মানুষ বলে। টিকেট দেখাও। নয়তো জরিমানা দেও।”

আকাশবাবু নিতান্ত অনিচ্ছা স্বত্বেও উঠে পড়লো। নিজের কামরার দিকে যেতে যেতে সে পত্রিকাখানা ভাঁজ করে ফেললো। টি টি তখন তার পাঞ্জাবির ছেঁড়া অংশের দিকে তাকিয়ে ছিল। তার চোখে তখন সন্দেহজনক দৃষ্টি।

আকাশবাবু কামরার দরজা খুলে রীতিমতো পিলে চমকে উঠলো। তার আসনে বসে আছেন ৩ জন বুড়ো মানুষ। সে তাদের সামনে গিয়ে এদিকে ওদিকে উঁকি দিলো। তার থলেটা দেখা যাচ্ছে না। পাশের বেঞ্চে বসা মহিলা তখন ঢুলে ঢুলে ঘুমোচ্ছে ঘোমটার আড়ালে। কোলের শিশুটা তখনও জেগে আছে।
আকাশবাবু শিশুর দিকে তাকিয়ে কাষ্ঠ হাসি হেসে বুড়োদের জিজ্ঞাসা করলো, “আজ্ঞে আমার থলেটা দেখেছেন। এই সিটেই ছিল। আসলে এটা আমারই সিট। থলেটা খুব দরকারি ছিল।”

বুড়োরা একে অপরের দিকে কয়েকবার তাকালো। না। তারা কোনো থলে দেখেনি এখানে। কিন্তু সেটা কী করে সম্ভব? আকাশবাবু মাথা নাড়ে। ঠিক এই কামরাতেই সে ছিল।

“বিশ্বাস না করলে আপনারা এই মহিলাকে জিজ্ঞাসা করুন।” এই বলে আকাশবাবু নিচুস্বরে মহিলাকে ডাকতে থাকলো। “এই যে শুনছেন। জনাবা শুনছেন।”
আকাশবাবুর ডাকে মহিলা লাফিয়ে উঠলো। কোলের শিশু ভয় পেয়ে কাঁদা শুরু করে দিলো।

বুড়োরা সবাই রেগে গেলো। এ কেমন আপদ রে বাবা। তারা আকাশবাবুকে তিরস্কার করতে থাকলো। টি টি এতক্ষণ কাহিনী দেখছিলো। তার সময় নেই এতো। তাই সে আকাশবাবুকে ভদ্রমানুষের মতো জরিমানা দিতে বললো।

আকাশবাবুও তাই সমীচীন মনে করলো। তাই সে জরিমানা দিয়ে দিবে বলে ধার্য করলো। কিন্তু জরিমানা দিতেও তো থলেটা লাগবে। সেখানে তার টাকার কাপড় রাখা।
তাই সে নতুন করে কাহিনী শুরু করে দিলো। এমনকি বুড়োদের উঠে দাঁড়াতেও বাধ্য করলো। ওদিকে মহিলা নিজেও কান্না শুরু করে দিলো।

আর যাই হোক, সবকিছু সহ্য করা গেলেও মহিলা মানুষের কান্না সহ্য করা দায়। টি টি কোমরে ঝুলানো হুইসেলখানা মুখে লাগিয়ে জোরে ফুঁ দিয়ে উঠলো।

শ্রান্ত গ্রাম্য পরিবেশে ছুটে চলা ট্রেনের মাঝে টি টির হুইসেলের মতো কর্কশ অত্যাচার বুঝি আর নেই। আকাশাবাবুর কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গেলো।

ওদিকে করিডরে পুলিশের একজন হাবিলদারের আবির্ভাব হলো। হাতের হলুদ লাঠির দিকে তাকিয়ে আকাশবাবু আৎকে উঠলো। মুখ দিয়ে আস্তে করে বেরিয়ে আসলো একটি শব্দ- ‘ভগবান’!

ট্রেনের এই কামরাটা একটু ছোট।
এখানে কোনো বেঞ্চ নেই।
সামান্য একটি ভাঙা চেয়ারে আকাশবাবু বসা।
তার সামনে বসে আছে হাবিলদার।
মাথার উপর একটি মাছি বার বার ছু মেরে যাচ্ছে। যেন ভৎসনা করছে তাকে। ইচ্ছে হচ্ছে দুহাত দিয়ে ঠাস করে একটা উচিত শিক্ষা দিয়ে দিবে। কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। খাদি পাঞ্জাবির ছেঁড়া অংশের দিকে হাতখানা একটা শক্ত দড়ি দিয়ে যারপরনাই নির্দয়ভাবে বেঁধে দিয়েছে হতচ্ছাড়া হাবিলদার।
ট্রেনের শব্দ শুনে ঠাহর করা যাচ্ছে তারা এখন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।
হাজারো গাছের মাঝে বাতাসের গর্জন যেন জঙ্গলের একাকীত্বের তীব্র বহিঃপ্রকাশ।


“আপনের ভাগ্য খারাপ।” এই বলে আকাশবাবুর পত্রিকাখানা ভাঁজ করে বানানো অস্থায়ী পাখা দিয়ে নিজেকে বাতাস করলো হাবিলদার সাহেব। তার বুকের নাম ট্যাগটা অর্ধেক ভাঙা। তাই তার পুরো নাম জানা যাচ্ছে না। ভাঙা অংশে শুধু “রামা” লেখা আছে।
আকাশবাবু কোনো উত্তর করলো না। তার ভাগ্য খারাপ সেটা সে ছাড়া ভালো কেউ জানে না। কই এখন পিসির বাড়ি গিয়ে লুচি মাংস খাবে, এখানে সে আটকে আছে রেল জরিমানা না দেয়ার অপরাধে। তাও টিকেট কেটে উঠা যাত্রী সে।
“কথা কান দিয়া যায় না নাকি সাহেবের? আপনের ভাগ্য খারাপ।” আকাশবাবু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো। এর মানে কী?
“কেনো? ভাগ্য খারাপ কেন হবে? অত্যন্ত সুপ্রসন্ন ভাগ্য নিয়ে ট্রেনে উঠেছি।” ব্যঙ্গ করে উঠলো সে।
“আরে ভাগ্য খারাপ কারণ অন্যান্য দিন দশ বারোডা চোর ধরা পড়ে পুরা ট্রেনে। আর আজ আপনে একলা। আর বাদ বাকি সবাই টিকিট কাটছে।” এই বলে খিল খিল করে হাসে সে। হাসির শব্দে আকাশবাবুর ঘা ঘিন ঘিন করে উঠে। হাবিলদারের কটাক্ষ তার গায়ে লাগছে না। তার মাথা এখন ঝিম ধরে আছে।
হাবিলদার কথা বলেই চলেছে, “সারাদিন এদিক ওদিক কাম কইরা এখন চোর দেখলেই বুঝি। বাঙ্গাল মুলুক ভর্তি চোর। আর চোরগুলান দেখতে আপনের মতো ভদ্র বেশ। চুরির টাকা খাইয়া সুন্দর হইয়া গেছে সব।”
আকাশবাবু পারলে নিজের কান হাত দিয়ে বন্ধ করে রাখে। কিন্তু সামান্য ধ্বস্তাধস্তির মতো দড়ি টান দেয়া ছাড়া কিছুই করতে পারলো না সে।
হাবিলদার হাই তুলতে তুলতে উঠে পড়লো। তার ডিউটি আছে নাকি। তাই সে বাইরে যাচ্ছে। যাওয়ার আগে ঘাড় ঘুরিয়ে বললো, “শুনেন সাহেব। চোর আছেন ভালা কথা। আমি বাইরেই আছি। পলানের চেষ্টা কইরা কোনো লাভ হইবো না। তাও যদি পলান, চেষ্টা করতে পারেন। নোটিশ লাগাইয়া দিলে ফিরিঙ্গিরা মিল্লা আপনেরে বাইর কইরা আমাদের কাছে দিয়া যাইবো।”

এই বলে দরজাখানা সজোরে খুলে বেরিয়ে গেলো সে। দরজার কোনো খিল ছিল না। টয়লেটের করুণ দরজার মতো এখানেও অবস্থা বেহাল। তাই দরজাখানা একবার খোলার পর সেটা পুনরায় শক্ত করে না ধরে রাখলে আর আটকানো যায় না। ট্রেনের জানালা দিয়ে আসা দমকা হাওয়ায় তাই দরজাটা পুরো খুলে গেলো।
আকাশবাবু মাথা তুলে তাকালো সেদিকে। আর সাথে সাথে তার রক্ত হিম হয়ে গেলো। বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে রইলো সে বাইরের দেয়ালে।
সেখানে হলুদ নীল রঙের মার্জিনে একটি আয়তাকার পোস্টার টানানো। ঠিক সেই দেয়ালে সাঁটা অলুক্ষুণে পোস্টারের মতো, যার উপরে মোটা অক্ষরে স্পষ্ট ভাষায় লেখা, ‘একে ধরিয়ে দিন।’

আর নিচে শোভা পাচ্ছে সেই পেন্সিল স্কেচ। অবাক করা ব্যাপার হলো, এখন আকাশবাবুর নিজের কাছেও এই অজ্ঞাতনামা লোকটিকে খুব পরিচিত লাগছে। একদম নিজের চেহারার মতো আঁকা এই লোকটি আর যেই হয়ে থাকুক, যে কেউ ইচ্ছে করলেই তার সাথে মিলিয়ে দিতে পারবে নির্দ্বিধায়।

সে অস্থির হয়ে পড়লো। খুব শীঘ্রই এখান থেকে বেরিয়ে পড়তে হবে। কিন্তু তার হাত পিছমোড়া করে শক্ত করে বাঁধা। ইচ্ছে করলেই এই বাঁধন খোলা যাচ্ছে না। “শালা শুয়োর!” মনে মনে হাবিলদারকে গালি দিলো সে। তার মাথায় একটাই ভয়। এখন নাহয় পরের স্টেশনে পিসির বদৌলতে জামিন পেয়ে যাবে, কিন্তু এই পোস্টারের সাথে বদ হাবিলদার তার কোনো সূত্র বের করতে পারলে আর রক্ষে নেই। সোজা শ্রীঘর!
পুরো ঘটনা কল্পনা করতেই তার শিরদাঁড়া বেয়ে এক শীতল স্রোত বয়ে গেলো।

সে হাতবাঁধা অবস্থায় উঠে দাঁড়ালো। কোনোমতে উঁকি দিয়ে সে বাইরে তাকালো। করিডরে হাবিলদার তখনো দাঁড়িয়ে আছে। তার হাতে আকাশবাবুর সেই কাগজ। এই বেটা এখান থেকে না সরলে সে বেরোবে কীভাবে?

যদি এখন অপর প্রান্তে কোনো কিছু ঘটে, তাহলেই এই বেটা সরবে। নাহলে কিছুই করা যাচ্ছে না। ঠিক তখন হাবিলদার তার হাতের কাগজখানা ফেলে দিলো। সেটা ট্রেনের গতির কারণে পেছনে ছুটে গেলো। হাবিলদার তারপর তার লাঠি ঘোরাতে ঘোরাতে পুনরায় কামরার দিকে চলে আসলো। আকাশবাবু আগেই নিজের স্থানে ফিরে যায়। তাই সে কিছু বুঝতে পারলো না। তার এক চোখ বেশ সতর্কতার সাথে পোস্টারটির দিকে তাকিয়ে আছে। আরেক চোখে সে হাবিলদারকে খেয়াল করছে।

সে লাঠিটা পাশের বেঞ্চে রেখে বসে পুনরায় গল্প করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। ঠিক তখন কর্কশ শব্দে ট্রেন থেমে গেলো। বেশ জোরে সামনের দিকে মুখ থুবড়ে পড়লো আকাশবাবু। দুহাত বাঁধা থাকায় সে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলো।
কোনোমতে মেঝে থেকে উঠে সে জিহবা দিয়ে মুখের ভেতরটা ভিজিয়ে নিলো। সেখানে নোনতা একটা স্বাদ বোঝা গেলো। হাবিলদার বেচারা আকাশবাবুকে কোনোমতে সিটে বসিয়ে দিয়ে ছুটে গেলো বাইরে। কী হচ্ছে বোঝা দরকার।
ট্রেন এখনও গুরগাও স্টেশনে এসে পৌঁছায়নি। বাইরের দিকে তাকিয়ে সেটা নিশ্চিত হলো সে। ঠিক তখন দিরিম দিরিম শব্দে ট্রেনের অপর প্রান্তে দুটো গুলির শব্দ শোনা গেলো।
এই রে! ডাকাত পড়েছে ট্রেনে।

আকাশবাবু দ্রুত ঘরের ভেতর ঢুকে গেলো। মানুষের হৈ হুল্লোড় চেচামেচিতে তখন ট্রেন সয়লাব। আকাশবাবু ঘরের ভেতর ঢুকে কোনায় লুকিয়ে থাকলো। তার হৃদপিণ্ডখানা পারলে ছুটে বেরিয়ে গুরগাও পর্যন্ত লাফ দেয়।

দূরের কোনো এক কামরায় গুলাগুলির শব্দ পাওয়া গেলো। না! আর এক মুহূর্ত থাকা যাবে না এখানে। চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়া যায় না। কিন্তু থেমে থাকা ট্রেন থেকে যায়। সেই কথা ভেবে আকাশবাবু হাত বাঁধা অবস্থায় বেরিয়ে আসলো করিডরে। বের হয়েই সে পিলে চমকে উঠলো।
পাশের কামরার সামনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে সেই হাবিলদার। তার লাঠিটা দূরে রক্তমাখা হয়ে পড়ে আছে।
চোখ বড় বড় করে সে তাকিয়ে থাকলো এক মুহূর্ত।
এরপর সোজা দরজা দিয়ে লাফ দিয়ে পাশের ক্ষেতে গড়িয়ে পড়লো সে। ধানক্ষেতের কাদায় তার দেহ মেখে একাকার। এবার জিহবায় নোনতা স্বাদের সাথে মেটে স্বাদটা যোগ হলো।

গুরগাও স্টেশন থেকে দুই ক্রোশ পথ দূরে ট্রেনে ডাকাতি হলো। সরকারি কোনো এক সাপ্লাইএর কথা জানতে পেরেই ডাকাতদের আগমন। সাপ্লাইয়ের বগির ১৫ জন পুলিশের সাথে ডাকাতদের বন্দুকযুদ্ধ তখনও চলছে। কিন্তু আকাশবাবুর তা দেখার সময় কই? সে ক্ষেতের আইল ধরে উত্তর দিকে দৌড় দিলো।

এতক্ষণ ধরে মেঘ জমা আকাশ ফেটে এবার মুষলধারে বৃষ্টি নেমে আসলো। (চলবে)
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৭৮৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/০৫/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast