পায়রা বন্দনা
আমার এক দুঃসম্পর্কের বন্ধু আমাকে এক জোড়া পায়রা উপহার দিয়েছে আমার জন্মদিনে । সাথে খাচাও দিয়েছে একটা । আমি ঠিক করলাম ১ বছর খাচায় রেখে পরের বছর জন্মদিনে এদের মুক্ত করে দেবো । খাচা রাখা হলো আমার কবিতা লেখার টেবিলের ওপর । আমি যখন কবিতা লেখি তখন তারা কোনো রকম শব্দ করেনা । চুপ করে কবিতার ভাষা বোঝার চেষ্টা করে ।
আমি তাদের নিয়মিত খাবার দেওয়ার সময় লক্ষ্য করি তারা আমার দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে । তাদের চোখের ভাষা আমি পড়তে পারি । তারা মুক্তি চায়, কিন্তু চিৎকার করে বলতে পারেনা । তাদের অশ্রুসজল চোখ নীরবে বিদ্রোহ করে বলে আমার ধারনা । তাদের এ বিদ্রোহ আমার বুকে তীর হয়ে বিধতে শুরু করলো । কিন্তু ১ বছরের আগে আমি তাদের ছাড়তে পারবোনা ।
এভাবে ১ মাস কেটে গেলো । হঠাৎ আমার মনে হলো খাচা কখনো পাখির বাসা হতে পারেনা । তাই আমি শুকনো গাছের লতাপাতা নিয়ে তাদের খাচার ভিতর দিলাম । কিছুদিন পরে দেখি এসব লতাপাতা দিয়ে তারা নিজেদের মত করে সুখের ঘর বানিয়েছে । এটা দেখে নিজেকে কিছুটা নির্দোষ মনে হলো । আর ১১ মাস পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে ।
আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি কবিতা লিখবো । নাম পায়রা বন্দনা । পাখিদের দুঃখ নিয়ে লেখা হবে এই কবিতা । লেখা শুরু করলাম । মানুষের দুঃখ আমরা বুঝি কিন্তু পাখিদের দুঃখ এই ১ মাসে কিই বা বুঝলাম । হঠাৎ একদিন খাচার ভিতরে কুচকাচ আওয়াজ পেলাম কেমন একটা । লক্ষ্য করে দেখলাম পায়রা জোড়ার একটা বাচ্চা হয়েছে । ছেলে কি মেয়ে জানিনা । মানুষের মধ্যে নারী পুরুষের বৈষম্য আছে কিন্তু পাখিদের নেই । তাই নারী পুরুষ নিয়ে পাখিদের ভিতর কোনো মাতামাতি থাকা দরকার বলে মনে হচ্ছেনা । আমি সিদ্ধান্ত নিলাম সামনের জন্মদিনে তিনটা পাখিকেই একত্রে মুক্তি দেওয়া হবে ।
কবিতা লিখেছি ৪ লাইন । আর কিছু মাথায় আসছেনা । ১০ লাইন লেখা হলে, বাচ্চা পাখিটার পায়ে কবিতা বেধে ছেড়ে দেওয়া হবে । কেউ যদি এই বাচ্চা পায়রা টা ধরে ফেলে সে যেনো এই কবিতা পড়ে পাখিদের দুঃখ কস্ট বুঝতে পেরে পাখিটাকে আবার মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেয় ।
একে একে দিন মাস পার হয়ে আমার জন্মদিন এসে উপস্থিত হলো । আজকে পায়রাদের মুক্তি দিবস । খাচার মুখ খুলে দেওয়া হবে একটু পরে । কবিতার ১০ লাইন বেধে দেওয়া হয়েছে বাচ্চা পায়রার পায়ে । ঘড়ির কাটায় ৯:৫৯, আর ১ মিনিট পরে খাচার দরজা উন্মুক্ত করা হবে ।
ঘড়ির কাটায় মুক্তির সময় । দ্বার খুলে দেওয়া হলো । মা আর বাবা পাখিটা এক ডানা ঝাপটা মেরে উড়াল দিলো আকাশে । বাচ্চা পাখিটা খাচার ভিতরে পড়ে রইলো । আমি বাচ্চা পাখিটাকে হাতে নিয়ে আকাশের দিকে ছুড়ে দিলাম । পাখিটা মাটিতে পড়ে গেলো । আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা । হঠাৎ পায়ে বাধা কবিতা কথা বলতে শুরু করলো -
"" হে কবি,
তুমি নিষ্ঠুর কবিতা লিখেছো হেথা
পাখির জন্ম তুমি করিলা বৃথা ।
এ পাখি উড়িবে কোথায়-
তাহার আকাশ তুমি ভরেছো খাচায় ।
এ পাখি উড়িতে শেখে নাই
ঊড়বেনা পাখি আর শত চেষ্টায়
এক নিষ্ঠুর কবিতা কহিছে কথা,
পাখির জন্ম তুমি করিলে বৃথা.....
.......................................................
.......................................................
আমি পাথর হয়ে দাড়িয়ে আছি । আর শত শত খাচায় বন্দী পাখি, যারা উড়তে শেখেনি, তারা আমার কবিতার লাইনগুলো স্লোগান দিচ্ছে আমাকে ঘিড়ে । এ এক কবির বিরুদ্ধে কবিতার বিদ্রোহ ।
আমি তাদের নিয়মিত খাবার দেওয়ার সময় লক্ষ্য করি তারা আমার দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে । তাদের চোখের ভাষা আমি পড়তে পারি । তারা মুক্তি চায়, কিন্তু চিৎকার করে বলতে পারেনা । তাদের অশ্রুসজল চোখ নীরবে বিদ্রোহ করে বলে আমার ধারনা । তাদের এ বিদ্রোহ আমার বুকে তীর হয়ে বিধতে শুরু করলো । কিন্তু ১ বছরের আগে আমি তাদের ছাড়তে পারবোনা ।
এভাবে ১ মাস কেটে গেলো । হঠাৎ আমার মনে হলো খাচা কখনো পাখির বাসা হতে পারেনা । তাই আমি শুকনো গাছের লতাপাতা নিয়ে তাদের খাচার ভিতর দিলাম । কিছুদিন পরে দেখি এসব লতাপাতা দিয়ে তারা নিজেদের মত করে সুখের ঘর বানিয়েছে । এটা দেখে নিজেকে কিছুটা নির্দোষ মনে হলো । আর ১১ মাস পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে ।
আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি কবিতা লিখবো । নাম পায়রা বন্দনা । পাখিদের দুঃখ নিয়ে লেখা হবে এই কবিতা । লেখা শুরু করলাম । মানুষের দুঃখ আমরা বুঝি কিন্তু পাখিদের দুঃখ এই ১ মাসে কিই বা বুঝলাম । হঠাৎ একদিন খাচার ভিতরে কুচকাচ আওয়াজ পেলাম কেমন একটা । লক্ষ্য করে দেখলাম পায়রা জোড়ার একটা বাচ্চা হয়েছে । ছেলে কি মেয়ে জানিনা । মানুষের মধ্যে নারী পুরুষের বৈষম্য আছে কিন্তু পাখিদের নেই । তাই নারী পুরুষ নিয়ে পাখিদের ভিতর কোনো মাতামাতি থাকা দরকার বলে মনে হচ্ছেনা । আমি সিদ্ধান্ত নিলাম সামনের জন্মদিনে তিনটা পাখিকেই একত্রে মুক্তি দেওয়া হবে ।
কবিতা লিখেছি ৪ লাইন । আর কিছু মাথায় আসছেনা । ১০ লাইন লেখা হলে, বাচ্চা পাখিটার পায়ে কবিতা বেধে ছেড়ে দেওয়া হবে । কেউ যদি এই বাচ্চা পায়রা টা ধরে ফেলে সে যেনো এই কবিতা পড়ে পাখিদের দুঃখ কস্ট বুঝতে পেরে পাখিটাকে আবার মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেয় ।
একে একে দিন মাস পার হয়ে আমার জন্মদিন এসে উপস্থিত হলো । আজকে পায়রাদের মুক্তি দিবস । খাচার মুখ খুলে দেওয়া হবে একটু পরে । কবিতার ১০ লাইন বেধে দেওয়া হয়েছে বাচ্চা পায়রার পায়ে । ঘড়ির কাটায় ৯:৫৯, আর ১ মিনিট পরে খাচার দরজা উন্মুক্ত করা হবে ।
ঘড়ির কাটায় মুক্তির সময় । দ্বার খুলে দেওয়া হলো । মা আর বাবা পাখিটা এক ডানা ঝাপটা মেরে উড়াল দিলো আকাশে । বাচ্চা পাখিটা খাচার ভিতরে পড়ে রইলো । আমি বাচ্চা পাখিটাকে হাতে নিয়ে আকাশের দিকে ছুড়ে দিলাম । পাখিটা মাটিতে পড়ে গেলো । আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা । হঠাৎ পায়ে বাধা কবিতা কথা বলতে শুরু করলো -
"" হে কবি,
তুমি নিষ্ঠুর কবিতা লিখেছো হেথা
পাখির জন্ম তুমি করিলা বৃথা ।
এ পাখি উড়িবে কোথায়-
তাহার আকাশ তুমি ভরেছো খাচায় ।
এ পাখি উড়িতে শেখে নাই
ঊড়বেনা পাখি আর শত চেষ্টায়
এক নিষ্ঠুর কবিতা কহিছে কথা,
পাখির জন্ম তুমি করিলে বৃথা.....
.......................................................
.......................................................
আমি পাথর হয়ে দাড়িয়ে আছি । আর শত শত খাচায় বন্দী পাখি, যারা উড়তে শেখেনি, তারা আমার কবিতার লাইনগুলো স্লোগান দিচ্ছে আমাকে ঘিড়ে । এ এক কবির বিরুদ্ধে কবিতার বিদ্রোহ ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
বিজন বেপারী ২৫/০৫/২০২০একদম
-
কে এম শাহ্ রিয়ার ২৪/০৫/২০২০খুব ভালো লাগলো!
-
কুমারেশ সরদার ২৪/০৫/২০২০বলিহারি
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ২৪/০৫/২০২০Very Beautiful
-
ফয়জুল মহী ২৪/০৫/২০২০সব কথা সহজ সরল ও নন্দিত ভাবে উপস্থাপন ।