শত্রুর সাথে বসবাস
ইয়াকুব নবী ইমন::এই নশ্বর পৃথিবী থেকে সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে। থেকে যাবে শুধু তার কর্ম(ভালো-মন্দ)। মানুষ এই দুনিয়ায় বড় জোর গড়ে ৬০-৭০ বছর বেঁচে থাকে। আমার বয়স বর্তমানে ৩২ বছর। গানিতিক হিসেবে জীবণের অর্ধেকেরও বেশি সময় পার করে ফেলেছি। এই ৩২ বছরের মধ্যে কর্ম জীবণ কাটছে প্রায় ১৫ বছর। সেই হিসেবে আমি অনেকটা কিশোর বয়সেই কর্ম জীবণে প্রবেশ করেছি। যেহেতু সাংবাদিকতা করি। স্বভাবত কারনেই সাংবাদিকদের সাথে এই বয়সে বেশি মিশতে হয়েছে। এই পেশায় যতটানা আনন্দ আছে তার ছেয়ে বেশি আছে যাতনা। ইদানিং কালের দু’একটি ঘটনা আমাকে বড়ই অবাক করেছে। সাংবাদিকতা পেশাটি দিন দিন কুলষিত হয়ে যাচ্ছে। গতকালই আমার এলাকার এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফোন করে বললেন জনৈক সাংবাদিক নাকি তার মাদ্রাসায় গেছেন। তার কাছে ভাড়ার টাকা নাই। তাকে ভাড়ার টাকা দিতে হবে। এরা যে কোন অজুহাতে ২ টাকা-৩ টাকা এমনকি একটি সিগারেট হলেও সাধারণ মানুষ থেকে খায়। বুঝুন সাংবাদিকতার কি অবস্থা। আমার এক শ্রদ্ধেয় স্যার সব সময় বলতেন আগে মানুষ বাড়ির সামনে লিখে রাখতো কুকুর থেকে সাবধান, সেদিন আর বেশি দুরে নেই যে দিন মানুষ বাড়ির সামনে লিখে রাখবে সাংবাদিক থেকে সাবধান! তাছাড়া কাকের মাংস কাকে না খেলেও বর্তমানে সাংবাদিকের মাংস সাংবাদিকে খায়। এবার আমার ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতার কথা বলি- আমি সব সময় যে কোন সাংবাদিকদের আড্ডায় বরাবরই বলে আসছি এই ১৫ বছর সাংবাদিকতা না করে গ্রামে হেটে হেটে রাস্তার পাশে কলা গাছ রোপন করলে এখন ভালো ফল পাওয়া যেত। কিন্তু সৎ সাংবাদিকতা করে কি ফল পাচ্ছি আমি এখন। পাচ্ছি চারদিকের অবহেলা, টিটকারী, লাঞ্চনা, হচ্ছি অপমানিত। আর যারা আমার এই পবিত্র পেশাটাকে দিন দিন কুলষিত করছে তারা খুব স্বাচ্ছ্বন্দেই আছে । কোন ঘটনা-ঘটুক না ঘটুক টাকা দিলেই হলো সত্য মিথ্যা একাকার করে লিখে টাকা যায়েজ করতে ওস্তাদ এক শ্রেনীর প্রতারক সাংবাদিক। এ ক্ষেত্রে তারা কারো বিধিনিষেধও মানে না, বা মানার প্রয়োজন বোধ করেনা, অনুরোধ রাখাতো দুরে থাক। এরা টাকার নেশায় এতোই অন্ধ হয়ে যায় যে তাদের লেখার কারণে একটা নিরপরাধ ব্যক্তির ফাঁসি হয়ে গেলেও তাদের কিছুই যায় আসেনা। এসবের প্রতিবাদ করতে গেলেই তাদের সাথে ঘটে বিপত্তি। তাই মাঝে মধ্যে নিজেকে অনেক অসহায় মনে হয়। মনে হয় চার দিকে যেন শত্রু। আমি সব সময় শত্রুর সাথে বসবাস করছি। যাক এবার নিবন্ধের প্রথম লাইনে আসি। বর্তমানে আমি সৎ পথে চলার চেষ্টা করি। হালাল ইনকাম করার চেষ্টা করি। আমি জানি এই চেষ্টাই আমাকে একদিন সফলতা এনে দেবে। কারণ এখন যত দু:খ কষ্ট করিনা কেন আল্লাহকে স্মরণ করলে নিমিষেই সব দুর হয়ে যায়। আজ থেকে দেড় দুই শত বছর আগে আমরা দুনিয়াতে ছিলামনা, ছিল আমাদের দাদা-পিজারা। বর্তমান তারা নেই আছি আমরা-আমাদের বাবা-চাচারা। আবার এক সময় আমরা থাকবো না থাকবে আমাদের সন্তানাদি-নাতি পন্তিরা। দুনিয়ায় যত দিন থাকবে এভাবেই চলবে পৃথিবীর জীবণ চক্র। আমরা আজ অনেকেই জানিনা আমাদের পিজা কে ছিল। তেমনি আজ থেকে দেড়-দুইশ বছর পর আমাদেরও কেউ খবর রাখবেনা কেউ। আমাদের কোন পদচিহৃ দুনিয়াতে থাকবেনা। থাবকে শুধু আমাদের কর্ম সেটি ভালো অথবা মন্দ। আমরা কেউ যদি দুনিয়াতে ভালো কাজ করে যাই তাহলে মানুষ যেমন স্মরণ করবে তেমনি খারাব কাজ করে গেলেও স্মরণ করবে। সুতরাং আমরা যে যেই পেশায় থাকিনা কেন সত্যের পথে থেকে সৎ পথে চলে আল্লাহর সন্তুষ্টি আর্জন করাই হোক আমাদের লক্ষ্য। আমার হাতে যেন আমার আপন গোত্রের ভাইটি থাকে নিরাপদ। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝার জ্ঞান দান করুন(আমিন)। লেখক: ইয়াকুব নবী ইমন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক দৈনিক জাতীয় নিশান। ০১৭১২৫৯৩২৫৪
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ১৪/০৯/২০১৪আসলেই মাঝে মাঝে নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়।
-
মঞ্জুর হোসেন মৃদুল ০৯/০৯/২০১৪অসাধারন লিখেছেন। ভাল লাগল।
-
মল্লিকা রায় ০৯/০৯/২০১৪পড়লাম কাহিনী।
-
একনিষ্ঠ অনুগত ০৯/০৯/২০১৪আল্লাহ আপনার সহায় হউন...