গোপলার কথা - ১০৪
রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথের ভাষা হল সার্বজনীন। সব দেশে সব কালে সব বয়সের মানুষের জন্য। ধনী গরীব শিক্ষিত মূর্খ অফিসার লেবার পদাধিকারী সবার জন্য রবীন্দ্রনাথ।
বুঝতে জানতে শিখতে এত সহজ এত প্রাঞ্জল এত জীবনমুখী যে কোন জায়গায় যে কোন অবস্থানে এবং যে কোন যুগে সহজেই উচ্চারণ করা যায়।
রবীন্দ্রনাথ লেখক কবি সাহিত্যিক হিসেবে সমস্ত রকমের মানুষের অন্তরের কথা অন্তর থেকে অনুধাবন করেছেন এবং তা কবিতায় গল্পে উপন্যাসে প্রবন্ধে গদ্যে গানে প্রকাশ করেছেন।
যে পড়বে যে শুনবে যে বুঝবে যে শিখবে সেইই ভাববে সেইই বলবে সেইই জানবে, আরে এ তো আমার কথা।
সাহিত্য এত জীবনমুখী এত চর্চা বহুল রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আর খুব একটা দেখা যায় নি। প্রতিটি বাক্য প্রতিটি শব্দবন্ধ গূঢ় থেকে গূঢ়তম ভাবধারায় পুষ্ট। আবার এত সহজ সরল ভাষায় বলা যে মন ছুঁয়ে যায় খুব সহজে।
এত প্রাণ আছে প্রতিটি গানে প্রতিটি কবিতায় প্রতিটি শব্দ উচ্চারণে যে বহু নিরাশ মানুষ, হতোদ্যম মানুষ এবং স্বাভাবিক মানুষ বাঁচার প্রেরণা পেয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ বাঙালি জীবন ছাড়িয়ে বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করে ১৯১৩ সালে জয় করেছেন নোবেল। রবীন্দ্রনাথের লেখা 'জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে' ভারতের এবং 'আমার সোনার বাংলা' জাতীয় সঙ্গীত। এবং ভারতের জাতীয় স্তোত্র বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বন্দেমাতরম্ গানটিতে রবীন্দ্রনাথ সুরারোপ করেছিলেন।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়ের সাথে সাথে সাথে সহজ পাঠ আজও শিশু শিক্ষার সবচেয়ে আনন্দময় শিক্ষামূলক বই। প্রথাগত শিক্ষার বাইরে থেকেও শিক্ষা গ্রহণ করা এবং তার যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ।
শিক্ষার পীঠস্থান শান্তিনিকেতন বিশ্বভারতীতে যে অবস্থান রবীন্দ্রনাথ গড়ে দিয়েছেন তা আজও ভাবীকালের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। সাহিত্য যে শিক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং বাংলা ভাষাও যে অনেক সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষার মধ্যে একটি বিশ্বের দরবারে বার বার তা প্রমাণ হয়ে আছে।
পূর্ব রবীন্দ্রনাথ ও পরবর্তী রবীন্দ্রনাথ অনেক লেখক কবি সাহিত্যিক কাব্যে গল্পে উপন্যাসে গানে গদ্যে ভাবনায় অনেক ভাবে উপস্থাপিত করেছেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ অন্যন্য সাধারণ। যার তুলনা একমাত্র রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বাংলা ভাষার অস্তিত্ব কল্পনাই করা যায় না।
ফরাসি কবি, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক গি দ্য মোপাসাঁ পরেই ছোটগল্পের জনক হলেন রবীন্দ্রনাথ। আর শ্রেষ্ঠ গীতিকার। রবীন্দ্রনাথ রচিত গানের সংখ্যা ২২৩২। এই বিশ্বের নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে কিংবা এই বাংলা ভাষাতেই অন্য ভাষাভাষী নাগরিকের দ্বারা গানটি গাওয়া হয়েছে।
আজও বহু অনুষ্ঠানে শুভ সূচনার জন্য জনপ্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত 'আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে' উদ্বোধনী সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হয়। কথায় গল্পে আড্ডায় আহ্বানে আলোচনায় আলাপে বিলাপে মিলনে বিরহে প্রেমে পূজায় রবীন্দ্রনাথ আজও ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক।
এ তো প্রভাতে 'রবির কর' সন্ধ্যেতে 'মন্দিরেতে কাঁসর ঘন্টা বাজল ঢং ঢং' গ্রীষ্মে 'প্রখর দারুণ তাপে আকাশ তৃষ্ণায় কাঁপে' বর্ষায় 'নীল নব ঘনে আষাঢ় গগনে' শরৎ এর 'এসেছে শরৎ হিমের পরশ' ফাল্গুনে 'ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল আর চাষীর 'রাশি রাশি ভারাভারা ধান কাটা হল সারা' শিশুর জন্য 'আমি যেন তোমায় বলছি ডেকে, আমি আছি ভয় কেন মা করো।'
রবীন্দ্রনাথ এভাবেই বাঙালি জীবনে সারা পৃথিবী জুড়ে ছেয়ে আছেন। তাই তো পন্ডিত রোমান ক্যাথলিক ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথকে 'বিশ্বকবি' উপাধিতে ভূষিত করেন। ক্ষিতিমোহন সেন 'কবিগুরু' এবং মহাত্মা গান্ধী রবি ঠাকুরকে 'গুরুদেব' উপাধি দেন।
বর্তমানে ইংলিশ মিডিয়ামের জন্য বাংলা ভাষা কিছুটা পিছিয়ে পড়ছে মনে হলেও রবীন্দ্রনাথ কিন্তু তাদের মধ্যে কোন না কোন ভাবে বাংলা মুখী করে তুলছে। রবীন্দ্রসঙ্গীত রবীন্দ্র কবিতা আবৃত্তি রবীন্দ্রভাবনার আলোচনা বাঙালি মননে সমস্ত মিডিয়ামের মধ্যে জড়িয়ে আছে।
'গুপ্তধন' 'কাদম্বিনী' 'শেষের কবিতা' 'রক্তকরবী' ইত্যাদি যেন জীবন্ত দলিল। যুগ যুগ ধরে উত্তরণের বার্তা বহন করে চলেছে রবীন্দ্র কবিতা।
'আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
কৌতূহলভরে
শত বছর নয়, সহস্র বছর পরেও যার কোন ক্ষয় নেই লয় নেই তিনি রবীন্দ্রনাথ। মানুষও সদর্পে বলতে পারে
'চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর।
রবীন্দ্রনাথের ভাষা হল সার্বজনীন। সব দেশে সব কালে সব বয়সের মানুষের জন্য। ধনী গরীব শিক্ষিত মূর্খ অফিসার লেবার পদাধিকারী সবার জন্য রবীন্দ্রনাথ।
বুঝতে জানতে শিখতে এত সহজ এত প্রাঞ্জল এত জীবনমুখী যে কোন জায়গায় যে কোন অবস্থানে এবং যে কোন যুগে সহজেই উচ্চারণ করা যায়।
রবীন্দ্রনাথ লেখক কবি সাহিত্যিক হিসেবে সমস্ত রকমের মানুষের অন্তরের কথা অন্তর থেকে অনুধাবন করেছেন এবং তা কবিতায় গল্পে উপন্যাসে প্রবন্ধে গদ্যে গানে প্রকাশ করেছেন।
যে পড়বে যে শুনবে যে বুঝবে যে শিখবে সেইই ভাববে সেইই বলবে সেইই জানবে, আরে এ তো আমার কথা।
সাহিত্য এত জীবনমুখী এত চর্চা বহুল রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আর খুব একটা দেখা যায় নি। প্রতিটি বাক্য প্রতিটি শব্দবন্ধ গূঢ় থেকে গূঢ়তম ভাবধারায় পুষ্ট। আবার এত সহজ সরল ভাষায় বলা যে মন ছুঁয়ে যায় খুব সহজে।
এত প্রাণ আছে প্রতিটি গানে প্রতিটি কবিতায় প্রতিটি শব্দ উচ্চারণে যে বহু নিরাশ মানুষ, হতোদ্যম মানুষ এবং স্বাভাবিক মানুষ বাঁচার প্রেরণা পেয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ বাঙালি জীবন ছাড়িয়ে বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করে ১৯১৩ সালে জয় করেছেন নোবেল। রবীন্দ্রনাথের লেখা 'জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে' ভারতের এবং 'আমার সোনার বাংলা' জাতীয় সঙ্গীত। এবং ভারতের জাতীয় স্তোত্র বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বন্দেমাতরম্ গানটিতে রবীন্দ্রনাথ সুরারোপ করেছিলেন।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়ের সাথে সাথে সাথে সহজ পাঠ আজও শিশু শিক্ষার সবচেয়ে আনন্দময় শিক্ষামূলক বই। প্রথাগত শিক্ষার বাইরে থেকেও শিক্ষা গ্রহণ করা এবং তার যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ।
শিক্ষার পীঠস্থান শান্তিনিকেতন বিশ্বভারতীতে যে অবস্থান রবীন্দ্রনাথ গড়ে দিয়েছেন তা আজও ভাবীকালের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। সাহিত্য যে শিক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং বাংলা ভাষাও যে অনেক সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষার মধ্যে একটি বিশ্বের দরবারে বার বার তা প্রমাণ হয়ে আছে।
পূর্ব রবীন্দ্রনাথ ও পরবর্তী রবীন্দ্রনাথ অনেক লেখক কবি সাহিত্যিক কাব্যে গল্পে উপন্যাসে গানে গদ্যে ভাবনায় অনেক ভাবে উপস্থাপিত করেছেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ অন্যন্য সাধারণ। যার তুলনা একমাত্র রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ ছাড়া বাংলা ভাষার অস্তিত্ব কল্পনাই করা যায় না।
ফরাসি কবি, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক গি দ্য মোপাসাঁ পরেই ছোটগল্পের জনক হলেন রবীন্দ্রনাথ। আর শ্রেষ্ঠ গীতিকার। রবীন্দ্রনাথ রচিত গানের সংখ্যা ২২৩২। এই বিশ্বের নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে কিংবা এই বাংলা ভাষাতেই অন্য ভাষাভাষী নাগরিকের দ্বারা গানটি গাওয়া হয়েছে।
আজও বহু অনুষ্ঠানে শুভ সূচনার জন্য জনপ্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত 'আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে' উদ্বোধনী সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হয়। কথায় গল্পে আড্ডায় আহ্বানে আলোচনায় আলাপে বিলাপে মিলনে বিরহে প্রেমে পূজায় রবীন্দ্রনাথ আজও ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক।
এ তো প্রভাতে 'রবির কর' সন্ধ্যেতে 'মন্দিরেতে কাঁসর ঘন্টা বাজল ঢং ঢং' গ্রীষ্মে 'প্রখর দারুণ তাপে আকাশ তৃষ্ণায় কাঁপে' বর্ষায় 'নীল নব ঘনে আষাঢ় গগনে' শরৎ এর 'এসেছে শরৎ হিমের পরশ' ফাল্গুনে 'ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল আর চাষীর 'রাশি রাশি ভারাভারা ধান কাটা হল সারা' শিশুর জন্য 'আমি যেন তোমায় বলছি ডেকে, আমি আছি ভয় কেন মা করো।'
রবীন্দ্রনাথ এভাবেই বাঙালি জীবনে সারা পৃথিবী জুড়ে ছেয়ে আছেন। তাই তো পন্ডিত রোমান ক্যাথলিক ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথকে 'বিশ্বকবি' উপাধিতে ভূষিত করেন। ক্ষিতিমোহন সেন 'কবিগুরু' এবং মহাত্মা গান্ধী রবি ঠাকুরকে 'গুরুদেব' উপাধি দেন।
বর্তমানে ইংলিশ মিডিয়ামের জন্য বাংলা ভাষা কিছুটা পিছিয়ে পড়ছে মনে হলেও রবীন্দ্রনাথ কিন্তু তাদের মধ্যে কোন না কোন ভাবে বাংলা মুখী করে তুলছে। রবীন্দ্রসঙ্গীত রবীন্দ্র কবিতা আবৃত্তি রবীন্দ্রভাবনার আলোচনা বাঙালি মননে সমস্ত মিডিয়ামের মধ্যে জড়িয়ে আছে।
'গুপ্তধন' 'কাদম্বিনী' 'শেষের কবিতা' 'রক্তকরবী' ইত্যাদি যেন জীবন্ত দলিল। যুগ যুগ ধরে উত্তরণের বার্তা বহন করে চলেছে রবীন্দ্র কবিতা।
'আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
কৌতূহলভরে
শত বছর নয়, সহস্র বছর পরেও যার কোন ক্ষয় নেই লয় নেই তিনি রবীন্দ্রনাথ। মানুষও সদর্পে বলতে পারে
'চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
অর্ঘ্যদীপ চক্রবর্তী ৩০/০৪/২০২৩ভালো
-
ফয়জুল মহী ২৯/০৪/২০২৩জানা হলো। ধন্যবাদ