গোপলার কথা - ৯৪
নিজের মত বাঁচা
-------------
কারো কথায় কান না দিয়ে নিজের মত বাঁচা উচিত। কিন্তু নিজের মত বাঁচা অত সোজা না।
নিজের মত যা মনে হবে তাই করব, যা বলতে ইচ্ছে করবে তাই বলব, যা দেখতে ইচ্ছে হবে তাই দেখব, যা শুনতে ইচ্ছে হবে তাই শুনব, যা করতে ইচ্ছে হবে তাই করব তা কিন্তু নয়।
মানুষ মাত্রেই সমাজবদ্ধ জীব। সমাজের সঙ্গে মানিয়ে বলা দেখা শোনা বা করা উচিত। তবে সমাজের মধ্যে অনেক সংস্কার কুসংস্কার বাসা বেঁধে বসে আছে। সে সব কিছুকে পরোয়া না করে বাঁচা যায়।
তবে তার জন্য একটা পর্যায় পর্যন্ত আপনাকে যেতে হবে। নিজের মধ্যে সেই পর্যায় তৈরি করতে হবে। শিক্ষা দীক্ষা জ্ঞান বোধ বুদ্ধি ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে নিজেকে উন্নীত করতে হয়। তারপর আপনি বলতেই পারেন ‘আমি আমার মত চলব।’
না হলে কারো কথা না শুনে নিজের মত চলতে গিয়ে সেই যদি পিছলে পড়েন তখন কিন্তু আপনার পাশে কেউ থাকবে না।
কেন না মানুষের জীবন এমনই প্রতি পদে পদে নিজে পিছলে পড়ে কিংবা পেছন থেকে কেউ আপনাকে পিছলে ফেলে দিতে পারে। সে সব কিন্তু পার করার এবিলিটি যদি আপনি নিজের মধ্যে প্রস্তুত করতে পারেন তাহলে কারো কথায় কান না দিয়ে আপনি আপনার মত চলতেই পারে।
কিন্তু আমাদের সমাজে বহু মানুষকে দেখেছি শুধু সমাজকে লণ্ডভণ্ড করার জন্য, সমাজের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য, সামগ্রিক জীবন যাত্রা বাদ দিয়ে নিজেকে নিজে উপভোগ করার জন্য নিজের মত বাঁচে।
তাই নিজের মত বাঁচা বর্তমানে অনেকটা উশৃঙ্খল জীবন যাপনের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। কিছুটি না জেনে না বুঝে নিজের মত বাঁচতে গিয়ে নিজের এবং সমাজের পতন ডেকে আনছে। লোকের কথায় কান দেওয়া যেমন উচিত নয় তেমনই চোখ কান খোলা রেখে জীবন যাত্রায় এগিয়ে যাওয়া উচিত।
তুমি বলছ তাই মানব না, লোকে চলছে তাই চলব না অতএব আমি নিজের মত চলব তাহলে তা এক তরফা জীবন যাত্রায় একক চলা হয়ে যায়।
সেখানে কেউ বাধা দেবে না কিংবা বাধা দিলে আপনি শুনবেন না। তাতে কি চরম কিছু হলে তখনও কেউ থাকবে না। আজকে এই বেশিরভাগ মানুষ মানুষের সাহায্য করে না, বেশিরভাগ মানুষ অমানুষ হয়ে গেছে, বেশিরভাগ মানুষ পরের দুঃখ কষ্ট বোঝে না ইত্যাদি নানান কথা শুনি তার জন্য দায়ী কে? দায়ী এই নিজের মত বাঁচা।
যখন তোমার সুখের দিন তখন তুমি কাওকে পরোয়া করলে না। নিজের মত যা ইচ্ছে খুশি করলে। কে কি বলল, কার কি অসুবিধা হল, কার দৃষ্টিকটু লাগল ইত্যাদি কিছু খেয়াল করলে না অথচ যেই তুমি বিপদে পড়লে অমনি তোমার পাশে কেউ নেই বলে চিৎকার করলে। আরে বাবা, সুখে কাওকে চাও নি তাই দুঃখে কাওকে পাও নি। এ তো সহজ সমীকরণ।
নিজের মত যখন বাঁচতে পারো তখন বাঁচো। আবার লোককে ডাকা কেন? মানুষ মাত্রে বিপথে যায় বিপদে পড়ে। তাই মানুষকে মিলেমিশে চলতে হয়। সেখানে সবার কথা একটু বিবেচনা করে নিজের পজিশনে নিজের মত চলতে হবে।
আমি এরকম পোশাক পরব কে কি ভাবল বয়েই গেল।
আমি আমার ফ্ল্যাটে রাতে হল্লা করব কার কি অসুবিধা হল আমার বয়েই গেল।
আমি তোমার মত ছোটলোকের সঙ্গে কথা বলব না বেশ করব।
আমি খুল্লমখুল্লা প্রেম করব তাতে তোমার কি হে?
আমি রাত জেগে সকালে পড়ে পড়ে ঘুমবো তাতে কার কি এসে যায়?
আমি পার্টি করব, প্রকাশ্য সিগারেট টানব, মদ খাব, জোরে জোরে লাউড স্পীকার বাজাব, ঘরে ঘরে পারিবারিক হিংসা করব, মারধর করব, পাড়ার মোড়ে রাস্তার উপরে প্যাণ্ডেল করব, প্রতিমা বিসর্জনে মিউজিকের তালে তালে ড্যান্স করব, গুটখা চিবিয়ে পিচিক পিচিক করে থুতু ফেলব, মেয়েরা এ রাস্তা দিয়ে গেলে একটু আধটু ইভটিজিং করব, কারো না কারো পেছনে কাঠি দেব ইত্যাদি ইত্যাদি করে আমি আমার লাইফ এনজয় করব। না হলে আর জীবনে থাকল কি?
এই যদি জীবন হয় তাহলে এর পরের জীবনও জীবনও জীবন। যেখানে কেউ রাস্তায় অসুস্থ হলে মুখ ফিরিয়ে চলে যাবে, সবাই মিলে মারলে কেউ বাঁচাতে আসবে না, পরীক্ষার ফি দিতে না পারলে সাহায্য করবে না, ঘরের চালা উড়ে গেলে সেই ঘর কেউ সারাইয়ে কেউ এগিয়ে আসবে না, অফিসিয়াল কোন দরকার হলেও মুখ ফিরিয়ে চলে যাবে, আর্থিক সংকটও নিজেকে সামলাতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি জীবনচর্চায় আমরা আমাদের থেকে এই 'নিজের মত বাঁচার' জন্য সরে সরে যাচ্ছি।
-------------
কারো কথায় কান না দিয়ে নিজের মত বাঁচা উচিত। কিন্তু নিজের মত বাঁচা অত সোজা না।
নিজের মত যা মনে হবে তাই করব, যা বলতে ইচ্ছে করবে তাই বলব, যা দেখতে ইচ্ছে হবে তাই দেখব, যা শুনতে ইচ্ছে হবে তাই শুনব, যা করতে ইচ্ছে হবে তাই করব তা কিন্তু নয়।
মানুষ মাত্রেই সমাজবদ্ধ জীব। সমাজের সঙ্গে মানিয়ে বলা দেখা শোনা বা করা উচিত। তবে সমাজের মধ্যে অনেক সংস্কার কুসংস্কার বাসা বেঁধে বসে আছে। সে সব কিছুকে পরোয়া না করে বাঁচা যায়।
তবে তার জন্য একটা পর্যায় পর্যন্ত আপনাকে যেতে হবে। নিজের মধ্যে সেই পর্যায় তৈরি করতে হবে। শিক্ষা দীক্ষা জ্ঞান বোধ বুদ্ধি ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে নিজেকে উন্নীত করতে হয়। তারপর আপনি বলতেই পারেন ‘আমি আমার মত চলব।’
না হলে কারো কথা না শুনে নিজের মত চলতে গিয়ে সেই যদি পিছলে পড়েন তখন কিন্তু আপনার পাশে কেউ থাকবে না।
কেন না মানুষের জীবন এমনই প্রতি পদে পদে নিজে পিছলে পড়ে কিংবা পেছন থেকে কেউ আপনাকে পিছলে ফেলে দিতে পারে। সে সব কিন্তু পার করার এবিলিটি যদি আপনি নিজের মধ্যে প্রস্তুত করতে পারেন তাহলে কারো কথায় কান না দিয়ে আপনি আপনার মত চলতেই পারে।
কিন্তু আমাদের সমাজে বহু মানুষকে দেখেছি শুধু সমাজকে লণ্ডভণ্ড করার জন্য, সমাজের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য, সামগ্রিক জীবন যাত্রা বাদ দিয়ে নিজেকে নিজে উপভোগ করার জন্য নিজের মত বাঁচে।
তাই নিজের মত বাঁচা বর্তমানে অনেকটা উশৃঙ্খল জীবন যাপনের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। কিছুটি না জেনে না বুঝে নিজের মত বাঁচতে গিয়ে নিজের এবং সমাজের পতন ডেকে আনছে। লোকের কথায় কান দেওয়া যেমন উচিত নয় তেমনই চোখ কান খোলা রেখে জীবন যাত্রায় এগিয়ে যাওয়া উচিত।
তুমি বলছ তাই মানব না, লোকে চলছে তাই চলব না অতএব আমি নিজের মত চলব তাহলে তা এক তরফা জীবন যাত্রায় একক চলা হয়ে যায়।
সেখানে কেউ বাধা দেবে না কিংবা বাধা দিলে আপনি শুনবেন না। তাতে কি চরম কিছু হলে তখনও কেউ থাকবে না। আজকে এই বেশিরভাগ মানুষ মানুষের সাহায্য করে না, বেশিরভাগ মানুষ অমানুষ হয়ে গেছে, বেশিরভাগ মানুষ পরের দুঃখ কষ্ট বোঝে না ইত্যাদি নানান কথা শুনি তার জন্য দায়ী কে? দায়ী এই নিজের মত বাঁচা।
যখন তোমার সুখের দিন তখন তুমি কাওকে পরোয়া করলে না। নিজের মত যা ইচ্ছে খুশি করলে। কে কি বলল, কার কি অসুবিধা হল, কার দৃষ্টিকটু লাগল ইত্যাদি কিছু খেয়াল করলে না অথচ যেই তুমি বিপদে পড়লে অমনি তোমার পাশে কেউ নেই বলে চিৎকার করলে। আরে বাবা, সুখে কাওকে চাও নি তাই দুঃখে কাওকে পাও নি। এ তো সহজ সমীকরণ।
নিজের মত যখন বাঁচতে পারো তখন বাঁচো। আবার লোককে ডাকা কেন? মানুষ মাত্রে বিপথে যায় বিপদে পড়ে। তাই মানুষকে মিলেমিশে চলতে হয়। সেখানে সবার কথা একটু বিবেচনা করে নিজের পজিশনে নিজের মত চলতে হবে।
আমি এরকম পোশাক পরব কে কি ভাবল বয়েই গেল।
আমি আমার ফ্ল্যাটে রাতে হল্লা করব কার কি অসুবিধা হল আমার বয়েই গেল।
আমি তোমার মত ছোটলোকের সঙ্গে কথা বলব না বেশ করব।
আমি খুল্লমখুল্লা প্রেম করব তাতে তোমার কি হে?
আমি রাত জেগে সকালে পড়ে পড়ে ঘুমবো তাতে কার কি এসে যায়?
আমি পার্টি করব, প্রকাশ্য সিগারেট টানব, মদ খাব, জোরে জোরে লাউড স্পীকার বাজাব, ঘরে ঘরে পারিবারিক হিংসা করব, মারধর করব, পাড়ার মোড়ে রাস্তার উপরে প্যাণ্ডেল করব, প্রতিমা বিসর্জনে মিউজিকের তালে তালে ড্যান্স করব, গুটখা চিবিয়ে পিচিক পিচিক করে থুতু ফেলব, মেয়েরা এ রাস্তা দিয়ে গেলে একটু আধটু ইভটিজিং করব, কারো না কারো পেছনে কাঠি দেব ইত্যাদি ইত্যাদি করে আমি আমার লাইফ এনজয় করব। না হলে আর জীবনে থাকল কি?
এই যদি জীবন হয় তাহলে এর পরের জীবনও জীবনও জীবন। যেখানে কেউ রাস্তায় অসুস্থ হলে মুখ ফিরিয়ে চলে যাবে, সবাই মিলে মারলে কেউ বাঁচাতে আসবে না, পরীক্ষার ফি দিতে না পারলে সাহায্য করবে না, ঘরের চালা উড়ে গেলে সেই ঘর কেউ সারাইয়ে কেউ এগিয়ে আসবে না, অফিসিয়াল কোন দরকার হলেও মুখ ফিরিয়ে চলে যাবে, আর্থিক সংকটও নিজেকে সামলাতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি জীবনচর্চায় আমরা আমাদের থেকে এই 'নিজের মত বাঁচার' জন্য সরে সরে যাচ্ছি।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আমিনুল ইসলাম সৈকত ০৯/০৬/২০২১সুন্দর হয়েছে
-
মিঠুন দত্ত (বাবু) ২৩/০৫/২০২১অনেক সুন্দর
-
মোহাম্মদ মাইনুল ১৫/০৫/২০২১সুন্দর উপদেশ।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৫/০৪/২০২১ভালো।
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ২৫/০৪/২০২১নিজের মত বাঁচা
নয় যে স্বাধীনতা। -
ফয়জুল মহী ২৫/০৪/২০২১লেখা অপরূপ।
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২৫/০৪/২০২১সুন্দর