গোপলার কথা - ৯১
বইমেলা
বইমেলায় কি কি বই বিক্রি হয়? কি কি বইয়ের স্টল বেশি। কবিতা গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ আর সাহিত্যের বই। আর অন্যান্য ক্লাসের পড়াশুনার ও প্রযুক্তি শিক্ষার বইয়ের স্টল খুব সামান্য থাকে।
তার মানে বইমেলায় প্রায় আশি নব্বই ভাগ সাহিত্যের বই থাকে। সাহিত্যিক ও সাহিত্য প্রকাশকরা সেই সব বই বিক্রির জন্য উঠে পড়ে লাগে।
আচ্ছা সাহিত্য কারা পড়ে? যারা স্কুলে কলেজে পড়াশুনা করে? যারা সাহিত্য চর্চা করে? যারা সাহিত্য ভালোবাসে?
এর বাইরে যারা সাহিত্য ছাড়াও অন্য অনেক রকমের বই কেনেন, পড়েন। ধর্মোপলব্ধি জীবনচর্চা বিজ্ঞান স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি আইন চিকিৎসা নলেজ ইত্যাদি বই। এই সব বই কিনতে বইমেলায় খুব কম লোক যায়। কিন্তু এইসব বই সারা বছর সব সময় প্রচুর বিক্রি হয়। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ও জীবনের টানে শিক্ষার জন্য কিনতে হয় এবং বিক্রি হয়।
আবার এইসব বইয়ের বিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকে চার পাঁচজনকে বই হাতে নিয়ে দাঁড়াতে হয় না? বা দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয় না। কিংবা বইমেলাতে এইসব বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করার প্রয়োজন হয় না?
যে যার নিজস্ব তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ, দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ইত্যাদি তো ঠিক আছে তার সাথে বইমেলা হোক জীবনের অঙ্গ, জীবনের বই নিয়ে।
ক'টা প্রবন্ধের বই বের হয়? ক'টা চেতনার ধারাপাতে আলোচনামূলক লেখা বের হয়?
তাছাড়া স্কুলের পড়াশুনা থেকে বিএ বিএসি এম এ, এম এস সি ও পি এইচ ডি পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থী নিজের কঠোর শিক্ষাগত অধ্যয়নের পাশাপাশি রবি শরৎ বঙ্কিম পেরিয়ে কতটাই বা আধুনিক লেখা পড়ে।
ফেসবুক আসার পরে আরো অনেক কবি সাহিত্যিক আসছে। বিখ্যাত তো আছেই তার সাথে আরও কত আরও কত বিখ্যাত আসছে!
যারা শুধু নিজের ওয়ালে শুধু নিজের বইয়ের বিজ্ঞাপন দিয়েই চলেছেন। দিয়েই চলেছেন। গল্প আর কবিতা, কবিতা আর গল্প। এই এত কপি বিক্রি হল, এই দ্বিতীয় সংস্করণ শেষ হল ইত্যাদি ইত্যাদি।
তারপরে ধরুন আমাদের কর্মজীবনে নিজের কাজের বাইরে কিছু জীবন চর্চা কিছু আলোচনা কিছু বিশ্লেষণ তাও ঠিক আছে। যদি সাহিত্য ভালোটালোবাসে তো তাহলে গল্প কবিতা ঠিক আছে। না হলে যদি সে এক দু পিস বই কেনেও তা সে আলমারিতে বা কেজি দরে বিক্রির জন্য রেখে দেয়।
তাহলে বইমেলায় বইপ্রেমীরা বই কিনে জীবন রচনায় কতটা ব্রতী? বইয়ের লেখক পাঠক কি শুধুই কবি সাহিত্যিক? আবার উল্টো দিক করে ভাবছে, যে জীবন সচেতনতার জন্য আমরা কতটা কবিতা গল্প লিখি।
যারা সত্যিকারের জীবন রচনার কাজ করে তাদের কাছে এই লেখা পৌছোয় না। তারা সাহিত্য পড়ে না। সাহিত্য পড়ার সময় পায় না। তাদের কাছে পৌঁছনোর জন্য সাহিত্যের পাশাপাশি কবি সাহিত্যিকরা যেন নিজের কাজে নিজে ফাঁকি না দেয়। তাহলে সাহিত্য রচনা বৃথা হয়ে যাবে।
মাস্টার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার পুলিশ প্রশাসন ক্লারিক্যাল যে যেখানে থাকুন নিজের কাজ, জীবনের কাজ যত করবেন তত আপনার রচনা সাহিত্য জীবনমুখী হবে। বইমেলায় বই বিক্রির হিসেব যে সাহিত্য নয় তা বুঝতে হবে লেখক পাঠক সাহিত্যিককে। তাহলেই বইমেলার সার্থকতা।
তবু বইমেলায় গিয়ে বেশিরভাগ মানুষ বই সংগ্রহ করে। পড়ে খুব কম। অনেকের বাড়ির তাক এ বই সাজানো আছে। দু তিন বছর পরেও গিয়ে দেখেছি একই রকমভাবে সাজানো আছে।
পত্রিকা লিটিল ম্যাগাজিন ইত্যাদি কেজি দরে বিক্রি করলেও বইয়ের এতটা অপমান মনে হয় কেউ করেন না কিন্তু সাজিয়ে রাখাটাও তেমনি। তাই বইমেলায় বিক্রিত বই ও তার পরিসংখ্যানে পাঠক চেনা খুব মুশকিল।
তবে আমরা প্রত্যেকেই একটা নির্দিষ্ট স্তরে অর্থাৎ চাকরি বাকরি ব্যবসা বা আয় উপায়ে আসার পর যে করে হোক বই ছাড়তে পারলে বাঁচি। পেপার টেপার একটু আধটু পড়ি। ব্যাস। বই নৈ নৈ চ। ফলে এই এত ইলেকট্রনিক্সের যুগে বইমেলা প্রাণের হাওয়া। সংগ্রহের জন্য হলেও জমা করতে করতে যদি একদিন পৃষ্ঠা উল্টায় সেজন্য আজও কবি সাহিত্যিকরা আজও লিখে চলেছেন। মন ভাবনার তীর ছুঁড়ে চলেছেন। কোন অক্ষর কার মনে কখন প্রাণের হাওয়া এনে দিতে পারে কেউ জানে না।
বইমেলা সেই এক ঝলক হাওয়া। একসাথে জড় করা জ্ঞান সাগরের ঢেউ। কারো না কারো বালুকাবেলায় তার নিত্য যাতায়াত। সারাদিনের কাজকর্মের মাঝে, স্কুল কলেজের কঠোর অধ্যবসায়ের মাঝে, একাকীত্ব জীবনের মাঝে বই-ই একমাত্র বাঁচার প্রেরণা। সেই প্রেরণার পূর্ণ সম্মেলন এই বইমেলা।
হোক না এক একটা প্রকাশকের একশটা নতুন বই, হোক না প্রতিবছর পাঁচশ হাজার নতুন লেখক, হোক না সেইসব ছাইপাঁশ কাব্য গল্প নামের অখাদ্য লেখা, হোক না একটাও না বিক্রি বইয়ের সমারোহ, হোক না নামীদামী লেখকও বইয়ের বিজ্ঞাপনে স্টলে বসে থাকা এবং নিজের বই ছাড়া অটোগ্রাফ না দেওয়া, হোক না শুধু পাঠকের কম যাতায়াত, হোক না খাবার স্টলে খুব ভিড়, হোক না অক্ষরের নাড়াচাড়া তবু তো বইমেলা মানে বইয়ের মেলা, জ্ঞানের মেলা, অক্ষরের মেলা, বর্ণমালার মেলা।
বইমেলায় কি কি বই বিক্রি হয়? কি কি বইয়ের স্টল বেশি। কবিতা গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ আর সাহিত্যের বই। আর অন্যান্য ক্লাসের পড়াশুনার ও প্রযুক্তি শিক্ষার বইয়ের স্টল খুব সামান্য থাকে।
তার মানে বইমেলায় প্রায় আশি নব্বই ভাগ সাহিত্যের বই থাকে। সাহিত্যিক ও সাহিত্য প্রকাশকরা সেই সব বই বিক্রির জন্য উঠে পড়ে লাগে।
আচ্ছা সাহিত্য কারা পড়ে? যারা স্কুলে কলেজে পড়াশুনা করে? যারা সাহিত্য চর্চা করে? যারা সাহিত্য ভালোবাসে?
এর বাইরে যারা সাহিত্য ছাড়াও অন্য অনেক রকমের বই কেনেন, পড়েন। ধর্মোপলব্ধি জীবনচর্চা বিজ্ঞান স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি আইন চিকিৎসা নলেজ ইত্যাদি বই। এই সব বই কিনতে বইমেলায় খুব কম লোক যায়। কিন্তু এইসব বই সারা বছর সব সময় প্রচুর বিক্রি হয়। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ও জীবনের টানে শিক্ষার জন্য কিনতে হয় এবং বিক্রি হয়।
আবার এইসব বইয়ের বিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকে চার পাঁচজনকে বই হাতে নিয়ে দাঁড়াতে হয় না? বা দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয় না। কিংবা বইমেলাতে এইসব বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করার প্রয়োজন হয় না?
যে যার নিজস্ব তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ, দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ইত্যাদি তো ঠিক আছে তার সাথে বইমেলা হোক জীবনের অঙ্গ, জীবনের বই নিয়ে।
ক'টা প্রবন্ধের বই বের হয়? ক'টা চেতনার ধারাপাতে আলোচনামূলক লেখা বের হয়?
তাছাড়া স্কুলের পড়াশুনা থেকে বিএ বিএসি এম এ, এম এস সি ও পি এইচ ডি পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থী নিজের কঠোর শিক্ষাগত অধ্যয়নের পাশাপাশি রবি শরৎ বঙ্কিম পেরিয়ে কতটাই বা আধুনিক লেখা পড়ে।
ফেসবুক আসার পরে আরো অনেক কবি সাহিত্যিক আসছে। বিখ্যাত তো আছেই তার সাথে আরও কত আরও কত বিখ্যাত আসছে!
যারা শুধু নিজের ওয়ালে শুধু নিজের বইয়ের বিজ্ঞাপন দিয়েই চলেছেন। দিয়েই চলেছেন। গল্প আর কবিতা, কবিতা আর গল্প। এই এত কপি বিক্রি হল, এই দ্বিতীয় সংস্করণ শেষ হল ইত্যাদি ইত্যাদি।
তারপরে ধরুন আমাদের কর্মজীবনে নিজের কাজের বাইরে কিছু জীবন চর্চা কিছু আলোচনা কিছু বিশ্লেষণ তাও ঠিক আছে। যদি সাহিত্য ভালোটালোবাসে তো তাহলে গল্প কবিতা ঠিক আছে। না হলে যদি সে এক দু পিস বই কেনেও তা সে আলমারিতে বা কেজি দরে বিক্রির জন্য রেখে দেয়।
তাহলে বইমেলায় বইপ্রেমীরা বই কিনে জীবন রচনায় কতটা ব্রতী? বইয়ের লেখক পাঠক কি শুধুই কবি সাহিত্যিক? আবার উল্টো দিক করে ভাবছে, যে জীবন সচেতনতার জন্য আমরা কতটা কবিতা গল্প লিখি।
যারা সত্যিকারের জীবন রচনার কাজ করে তাদের কাছে এই লেখা পৌছোয় না। তারা সাহিত্য পড়ে না। সাহিত্য পড়ার সময় পায় না। তাদের কাছে পৌঁছনোর জন্য সাহিত্যের পাশাপাশি কবি সাহিত্যিকরা যেন নিজের কাজে নিজে ফাঁকি না দেয়। তাহলে সাহিত্য রচনা বৃথা হয়ে যাবে।
মাস্টার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার পুলিশ প্রশাসন ক্লারিক্যাল যে যেখানে থাকুন নিজের কাজ, জীবনের কাজ যত করবেন তত আপনার রচনা সাহিত্য জীবনমুখী হবে। বইমেলায় বই বিক্রির হিসেব যে সাহিত্য নয় তা বুঝতে হবে লেখক পাঠক সাহিত্যিককে। তাহলেই বইমেলার সার্থকতা।
তবু বইমেলায় গিয়ে বেশিরভাগ মানুষ বই সংগ্রহ করে। পড়ে খুব কম। অনেকের বাড়ির তাক এ বই সাজানো আছে। দু তিন বছর পরেও গিয়ে দেখেছি একই রকমভাবে সাজানো আছে।
পত্রিকা লিটিল ম্যাগাজিন ইত্যাদি কেজি দরে বিক্রি করলেও বইয়ের এতটা অপমান মনে হয় কেউ করেন না কিন্তু সাজিয়ে রাখাটাও তেমনি। তাই বইমেলায় বিক্রিত বই ও তার পরিসংখ্যানে পাঠক চেনা খুব মুশকিল।
তবে আমরা প্রত্যেকেই একটা নির্দিষ্ট স্তরে অর্থাৎ চাকরি বাকরি ব্যবসা বা আয় উপায়ে আসার পর যে করে হোক বই ছাড়তে পারলে বাঁচি। পেপার টেপার একটু আধটু পড়ি। ব্যাস। বই নৈ নৈ চ। ফলে এই এত ইলেকট্রনিক্সের যুগে বইমেলা প্রাণের হাওয়া। সংগ্রহের জন্য হলেও জমা করতে করতে যদি একদিন পৃষ্ঠা উল্টায় সেজন্য আজও কবি সাহিত্যিকরা আজও লিখে চলেছেন। মন ভাবনার তীর ছুঁড়ে চলেছেন। কোন অক্ষর কার মনে কখন প্রাণের হাওয়া এনে দিতে পারে কেউ জানে না।
বইমেলা সেই এক ঝলক হাওয়া। একসাথে জড় করা জ্ঞান সাগরের ঢেউ। কারো না কারো বালুকাবেলায় তার নিত্য যাতায়াত। সারাদিনের কাজকর্মের মাঝে, স্কুল কলেজের কঠোর অধ্যবসায়ের মাঝে, একাকীত্ব জীবনের মাঝে বই-ই একমাত্র বাঁচার প্রেরণা। সেই প্রেরণার পূর্ণ সম্মেলন এই বইমেলা।
হোক না এক একটা প্রকাশকের একশটা নতুন বই, হোক না প্রতিবছর পাঁচশ হাজার নতুন লেখক, হোক না সেইসব ছাইপাঁশ কাব্য গল্প নামের অখাদ্য লেখা, হোক না একটাও না বিক্রি বইয়ের সমারোহ, হোক না নামীদামী লেখকও বইয়ের বিজ্ঞাপনে স্টলে বসে থাকা এবং নিজের বই ছাড়া অটোগ্রাফ না দেওয়া, হোক না শুধু পাঠকের কম যাতায়াত, হোক না খাবার স্টলে খুব ভিড়, হোক না অক্ষরের নাড়াচাড়া তবু তো বইমেলা মানে বইয়ের মেলা, জ্ঞানের মেলা, অক্ষরের মেলা, বর্ণমালার মেলা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ০৬/০৪/২০২১চমৎকার।
-
Biswanath Banerjee ০৮/০২/২০২১fine
-
ফয়জুল মহী ০৭/০২/২০২১Good post