গোপলার কথা - ৮৭
উৎস
----
প্রতিটি অবস্থানের উৎস থাকে। আমরা সবাই অবস্থান নিয়ে মাতামাতি করি। তাতে উৎফল্লিত হই। কিংবা বন্ধ করার চেষ্টা করি। কিন্তু সেই অবস্থানের উৎস রোধ করার জন্য কোন ব্যবস্থা নিই না। সবাই বলে Prevention is better than cure. কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যায় না।
বিড়ি সিগারেট গুটখা খাওয়া নিষেধ করা হয়। প্যাকেটে ক্যানসারের ছবি পর্যন্ত দেওয়া আছে। ক্যানসার হতে পারে বলে রাহুল দ্রাবিড়ের বিজ্ঞাপন চলছে। আরো হাসপাতাল গড়া হচ্ছে। কোটি কোটি টাকার কেমো থেরাপির কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু বিড়ি সিগারেটের উৎপাদন বন্ধ করার কোন চেষ্টা বা পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে না।
মদের ক্ষেত্রেও তাই।
দিনকে দিন পলিথিনের ব্যবহার হরদম বেড়ে গেছে। গ্রামে বা শহরের যে কোন রাস্তায় হেঁটে যাবেন দেখবেন গুটখার প্যাকেট বিস্কুটের প্যাকেট সিগারেটের প্যাকেট ড্রাই ফুডের প্যাকেট ড্রাইপার ন্যাপকিন থার্মোকল পলিথিন জলের বোতল সফট ড্রিংসের বোতল বিন্দাস পড়ে আছে। ঘাসের ফাঁক দিয়ে, ড্রেনের মুখে, মাঝ রাস্তায়, ঘরের পাশে, রকের বেঞ্চির নিচে ডাঁই হয়ে পড়ে আছে। পলিথিনের জন্য ড্রেন পরিস্কার করতে কালঘাম ছুটছে মানুষের। এই পলিথিনের জন্য নানান রোগের উৎপাত বেড়ে গেছে। স্বচ্ছতা অভিযান চলছে। কিন্তু পলিথিনের এই উৎস বন্ধ করার কোন চেষ্টা নেই।
আবার বেশিরভাগ রোগ সৃষ্টির মূল কারণ অতিরিক্ত নেশা, অনিয়মিত জীবন যাপন, অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া ও অপরিস্কার থাকা। সবাই জানি তবু আমরা ও একটুতে কিছু হবে না। এই একটু একটু কোন না কোন সময় অতিরিক্ত হয়ে যায় আমরা টের পাই না। অর্থাৎ উৎসকে আহ্বান করা। আর তারপর অবস্থান (রোগ) নিয়ে মেতে থাকা।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হল গরীবী। গরীব মানুষের দুর্দশার শেষ নেই। এই গরীব মানুষদের জন্য সরকার এনজিও সাধারণ মানুষ নানান কিছু করে। তাও গরীবী কিছুতেই যায় না। অর্থাৎ আমরা গরীব মানুষদের অবস্থান নিয়ে নানান পরিকল্পনা করছি। কিন্তু গরীবী আর যাতে না হয় সেই উৎস নিয়ে খুব একটা চিন্তা ভাবনা করি না। কিংবা তার পরিকল্পনাও নেওয়া হয় না।
আমি খুব ছোটবেলায় দুবেলা দুমুঠো খেতে পেতাম না। তারপর পড়াশুনা করে নিজের যোগ্যতায় আজ দুবেলা দুমুঠো খেতে পাই। আমরা ছয় ভাইবোন। আমার ভাইবোনেদের প্রত্যেকের একটি বা দুটি ছেলে মেয়ে। আমার এক বোনের তিন মেয়ে দুই ছেলে। শুধু তার অভাব কিছুতেই যাচ্ছে না। আমরা অন্য ভাইবোনেরা সাহায্য করি। চাষবাস ব্যবসার জন্য টাকা পয়সা দিই কিন্তু তাতে তার কিছুই হয় না। তবু দুবেলা খেতে পায় না। পরতে পায় না। ছেলেমেয়েকে শিক্ষা দিতে পারে না। কিন্তু আমরা বাদ বাকী ভাই বোন ছেলে মেয়েকে পড়িয়েছি। কাজের ব্যবস্থা করেছি। নিজেদের যোগতায় নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়েছি। অর্থাৎ আমরা গরীবী হঠানোর উৎস বন্ধ করেছি। কিন্তু আমার সেই দিদি জামাইবাবু পারে নি তাই আজও গরীব। তার ছেলে মেয়েও গরীব।
পথশিশুর সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। কিছুদিন আমি একটা রাস্তা দিয়ে প্রায়ই যেতাম। সেখানকার প্রতিটা ঝুপড়ি আমি চিনতাম। ওরা কত কষ্ট করে। তারপর সেই রাস্তায় প্রায় বছর দুই যাওয়া হয় নি। এ বছর সেই রাস্তায় গিয়ে দেখি আরো অনেক ঝুপড়ি বেড়ে গেছে। প্রতিটি ঝুপড়িতে মানুষ জনের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। যে কোন এনজিও জানে ওরা প্রতি বছর যেখানে অনাথদের নিয়ে কাজ করে সেখানে অনাথের সংখ্যা দিন কে দিন বাড়ছে। কেন অনাথের অবস্থান পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে না? পৃথিবীতে এই অনাথ কিভাবে তৈরি হয়? কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না দায়িত্ব জ্ঞানহীন মানুষদের ব্যভিচার?
----
প্রতিটি অবস্থানের উৎস থাকে। আমরা সবাই অবস্থান নিয়ে মাতামাতি করি। তাতে উৎফল্লিত হই। কিংবা বন্ধ করার চেষ্টা করি। কিন্তু সেই অবস্থানের উৎস রোধ করার জন্য কোন ব্যবস্থা নিই না। সবাই বলে Prevention is better than cure. কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যায় না।
বিড়ি সিগারেট গুটখা খাওয়া নিষেধ করা হয়। প্যাকেটে ক্যানসারের ছবি পর্যন্ত দেওয়া আছে। ক্যানসার হতে পারে বলে রাহুল দ্রাবিড়ের বিজ্ঞাপন চলছে। আরো হাসপাতাল গড়া হচ্ছে। কোটি কোটি টাকার কেমো থেরাপির কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু বিড়ি সিগারেটের উৎপাদন বন্ধ করার কোন চেষ্টা বা পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে না।
মদের ক্ষেত্রেও তাই।
দিনকে দিন পলিথিনের ব্যবহার হরদম বেড়ে গেছে। গ্রামে বা শহরের যে কোন রাস্তায় হেঁটে যাবেন দেখবেন গুটখার প্যাকেট বিস্কুটের প্যাকেট সিগারেটের প্যাকেট ড্রাই ফুডের প্যাকেট ড্রাইপার ন্যাপকিন থার্মোকল পলিথিন জলের বোতল সফট ড্রিংসের বোতল বিন্দাস পড়ে আছে। ঘাসের ফাঁক দিয়ে, ড্রেনের মুখে, মাঝ রাস্তায়, ঘরের পাশে, রকের বেঞ্চির নিচে ডাঁই হয়ে পড়ে আছে। পলিথিনের জন্য ড্রেন পরিস্কার করতে কালঘাম ছুটছে মানুষের। এই পলিথিনের জন্য নানান রোগের উৎপাত বেড়ে গেছে। স্বচ্ছতা অভিযান চলছে। কিন্তু পলিথিনের এই উৎস বন্ধ করার কোন চেষ্টা নেই।
আবার বেশিরভাগ রোগ সৃষ্টির মূল কারণ অতিরিক্ত নেশা, অনিয়মিত জীবন যাপন, অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া ও অপরিস্কার থাকা। সবাই জানি তবু আমরা ও একটুতে কিছু হবে না। এই একটু একটু কোন না কোন সময় অতিরিক্ত হয়ে যায় আমরা টের পাই না। অর্থাৎ উৎসকে আহ্বান করা। আর তারপর অবস্থান (রোগ) নিয়ে মেতে থাকা।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হল গরীবী। গরীব মানুষের দুর্দশার শেষ নেই। এই গরীব মানুষদের জন্য সরকার এনজিও সাধারণ মানুষ নানান কিছু করে। তাও গরীবী কিছুতেই যায় না। অর্থাৎ আমরা গরীব মানুষদের অবস্থান নিয়ে নানান পরিকল্পনা করছি। কিন্তু গরীবী আর যাতে না হয় সেই উৎস নিয়ে খুব একটা চিন্তা ভাবনা করি না। কিংবা তার পরিকল্পনাও নেওয়া হয় না।
আমি খুব ছোটবেলায় দুবেলা দুমুঠো খেতে পেতাম না। তারপর পড়াশুনা করে নিজের যোগ্যতায় আজ দুবেলা দুমুঠো খেতে পাই। আমরা ছয় ভাইবোন। আমার ভাইবোনেদের প্রত্যেকের একটি বা দুটি ছেলে মেয়ে। আমার এক বোনের তিন মেয়ে দুই ছেলে। শুধু তার অভাব কিছুতেই যাচ্ছে না। আমরা অন্য ভাইবোনেরা সাহায্য করি। চাষবাস ব্যবসার জন্য টাকা পয়সা দিই কিন্তু তাতে তার কিছুই হয় না। তবু দুবেলা খেতে পায় না। পরতে পায় না। ছেলেমেয়েকে শিক্ষা দিতে পারে না। কিন্তু আমরা বাদ বাকী ভাই বোন ছেলে মেয়েকে পড়িয়েছি। কাজের ব্যবস্থা করেছি। নিজেদের যোগতায় নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়েছি। অর্থাৎ আমরা গরীবী হঠানোর উৎস বন্ধ করেছি। কিন্তু আমার সেই দিদি জামাইবাবু পারে নি তাই আজও গরীব। তার ছেলে মেয়েও গরীব।
পথশিশুর সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। কিছুদিন আমি একটা রাস্তা দিয়ে প্রায়ই যেতাম। সেখানকার প্রতিটা ঝুপড়ি আমি চিনতাম। ওরা কত কষ্ট করে। তারপর সেই রাস্তায় প্রায় বছর দুই যাওয়া হয় নি। এ বছর সেই রাস্তায় গিয়ে দেখি আরো অনেক ঝুপড়ি বেড়ে গেছে। প্রতিটি ঝুপড়িতে মানুষ জনের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। যে কোন এনজিও জানে ওরা প্রতি বছর যেখানে অনাথদের নিয়ে কাজ করে সেখানে অনাথের সংখ্যা দিন কে দিন বাড়ছে। কেন অনাথের অবস্থান পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে না? পৃথিবীতে এই অনাথ কিভাবে তৈরি হয়? কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না দায়িত্ব জ্ঞানহীন মানুষদের ব্যভিচার?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ১৩/০৫/২০২১চমৎকার।
-
মোঃ শফিকুল ইসলাম স্বজীব ২২/১১/২০২০সম্পদের সুষম বন্টনের অভাবে পথ শিশুর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। তাদের দুঃখ কমানোর পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেই। আপনার লিখা খুব ভালো লেগেছে।
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২০/১১/২০২০অতীব সুন্দর
-
Biswanath Banerjee ১৪/১১/২০২০fav
-
আব্দুর রহমান আনসারী ০৭/১১/২০২০অতীব ভালো
-
ফয়জুল মহী ০৫/১১/২০২০Good
-
মোঃ অমিত হাসান ০৫/১১/২০২০কিভাবে আর কে বা নিবে এর দায়ভার!