গোপলার কথা - ৭৯
লক ডাউনের দিনগুলি
-------------------
ধরো যে সারাদিন ফোনে ব্যস্ত থাকে, ফেসবুক করে, চ্যাট করে, হোয়াটস অ্যাপ্সে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয় , গুগুলে আপগ্রেড হয়, অনলাইনে জোরে জোরে হাসে, খুব গম্ভীর হয়, কান্না কান্না হয়ে পড়ে তাদের এই লক ডাউনে কোন অসুবিধা হবার কথা নয়।
কেন না তারা বাড়ির লোকের সঙ্গে খুব মেপে কথা বলে, হো হো করে ইচ্ছাকৃত হাসে না, আত্মীয়ের কোন খবর এলে ছোট্ট দু একটা টিপ্পনী কাটে, ভাল খারাপ কিছু ঘটে গেলে দায়সারাভাবে ও তো হবার ছিল কিংবা ছাড়ো তো যতসব বলে, কোন কিছু খারাপ ভালো ভাবনা চিন্তা আদান প্রদান করে না, পাড়া প্রতিবেশীদের চেনে অথবা চেনে না অথবা না চেনার ভান করে পাশ কাটিয়ে যায় তাদের এই লক ডাউনে কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
তাছাড়া বেশিরভাগ সময় অনলাইনে এরা কানে গুঁজে গান শোনে। ঘরে বাইরে রাস্তা ঘাটে বাসে ট্রেনে অফিসে আদালতে খেতে বসতে শুতে জাগতে এরা কখনও পাশের জনের কোন কথা শোনে না। ফেসবুকে হোয়াটস অ্যাপে গুগুলে এবং অন্য অ্যাপে কে কি বলছে তার খবর রাখে। ফলে লক ডাউনে এদের কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
এরা শুয়ে বসে ঘন্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে পারে। দিনের পর দিন একভাবে একই জায়গায় থাকতে পারে। কেন না অনলাইন চালু থাকলে কানে ইয়ারফোন গুঁজা থাকলে মোবাইলে সব সময় চোখ থাকলে বাদবাকি সে কোথায় থাকল, কখন থাকল, দিন না রাত, মাঠ না জঙ্গল, বাড়ি না শ্মশান, খাচ্ছে না ঘুমোচ্ছে, দেখছে না বলছে, শুয়ে আছে না বসে আছে সেটা বড় কথা নয়।
এদের জন্য ঘর যা বাইরেও তা। মল যা বাসও তা । ট্রেন যা আত্মীয় বাড়ি তা। টুর যা ট্রাভেলিং যা ড্রয়িং রুমও তাই।
যেখানে থাকল সেখানেই শুরু করে দিল গেম খেলা। সে বসে দাঁড়িয়ে শুয়ে যেভাবেই হোক না কেন। দুঃখেও অনলাইন সুখেও অনলাইন হাসিতেও অনলাইন কান্নাতেও অনলাইন।
এদের জগতে এদের বিচরণ আমার আপনার সামনে যা ঘটমান তার সঙ্গে মিলবে না। ফলে লক ডাউনে এদের কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
এদের কাছে বই পত্তরও আছে তবে তার সঙ্গে বিচরণ ওই অনলাইনে আপডেটের সাথে সাথে। এরা খুব এক্সপার্ট। একসাথে বই পড়ে হোয়াটস অ্যাপ্স করে ফেসবুক দেখে গুগুলে কি হচ্ছে খবর রাখে, গেম আপডেট করে আবার ঘরে বাইরে কে কি এদের নামে বলছে তারও খবর রাখে। সেই সাথে অন্য কাওকে তোয়াক্কা না করার প্রবণতাও পুষে রাখে। এমন কি সে যদি তার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ও তাহলেও তাকে নজরে রাখে। তবে লাইনে এবং অনলাইনে।
অন্য একটা সুবিধাও আছে। এদের চাহিদা কম। এটা দাও ওটা দাও এটা খাব ওটা খাব এরকম করো ওরকম করো ইত্যাদি এরা করে তবে তা খুব কম। লিমিট রেখে। তাই লক ডাউনের বাজারে আপনার আমার একঘেয়েমি ডিপ্রেশন আপসেট ইত্যাদি হলেও এদের কোন অসুবিধা নেই।
ভালই বুঝেছে। তাই কোম্পানিগুলো লক ডাউনের বাজারে একই পয়সায় নেট ডবল করে দিয়েছে।
ফলে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত হয়ে উঠছে জীবন। সবাই আপগ্রেট। বড়রা কিছু বারণ করার কথা বললেই বলবে প্রমাণ দেখাও। কিছু কিছু অনুভূতি যার প্রত্যক্ষ ফল (সে খারাপ হোক কিংবা ভাল) সঙ্গে সঙ্গে মেলে না। সুদূর প্রসারী সেই অবস্থান বোঝানো যায় না। অনুভব করতে হয়। কিন্তু অনলাইন আপগ্রেডেশন তাৎক্ষণিকতা চায়। সবাই ব্যস্ত থাকে। ফলে জীবনের চলমানে হয়তো এগিয়ে কিংবা হয়তো এক্কেবারে পিছিয়ে তা বুঝতে সময় লেগে যায়।
ফলে বর্তমান সময়ের মত এরা এবং আমরা পাশাপাশি কিন্তু সামাজিক দূরত্বে মননে মানসিকতায় একা একা। একার বাঁচার পথে এরা অনেকটাই এগিয়ে চলেছে।
হয় জিতবে নয়তো হেরে যাবে কিন্তু পাশের জনকে সাহায্যের অনলাইন খুলে দেবে অথবা চিরতরে বন্ধই রাখবে। ফলে লক ডাউনে এদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
এরা পড়াশুনা করে এগিয়ে যায়। তবে যতটা না করলে নয় ঠিক ততটা। তার চেয়ে কম হতে পারে কিন্তু কিছুতেই বেশি হবার জো নেই। ক্রিয়েটিভ চিন্তা ভাবনা এদের মধ্যে থাকে তবে তা খুব কম।
কারণ ক্রিয়েটিভিটি করতে হলে যেমন বুদ্ধি লাগবে তেমন শ্রম লাগবে। এদের সে সময় নেই। এরা বিন্দাস বসে বসে র্যা লা মারছে তা কিন্তু নয়। গেম চ্যাট ফ্ল্যাট অ্যাপ্স ইত্যাদিতে কেটে যাচ্ছে সময়। কাটিয়ে দিচ্ছে সময়।
-------------------
ধরো যে সারাদিন ফোনে ব্যস্ত থাকে, ফেসবুক করে, চ্যাট করে, হোয়াটস অ্যাপ্সে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয় , গুগুলে আপগ্রেড হয়, অনলাইনে জোরে জোরে হাসে, খুব গম্ভীর হয়, কান্না কান্না হয়ে পড়ে তাদের এই লক ডাউনে কোন অসুবিধা হবার কথা নয়।
কেন না তারা বাড়ির লোকের সঙ্গে খুব মেপে কথা বলে, হো হো করে ইচ্ছাকৃত হাসে না, আত্মীয়ের কোন খবর এলে ছোট্ট দু একটা টিপ্পনী কাটে, ভাল খারাপ কিছু ঘটে গেলে দায়সারাভাবে ও তো হবার ছিল কিংবা ছাড়ো তো যতসব বলে, কোন কিছু খারাপ ভালো ভাবনা চিন্তা আদান প্রদান করে না, পাড়া প্রতিবেশীদের চেনে অথবা চেনে না অথবা না চেনার ভান করে পাশ কাটিয়ে যায় তাদের এই লক ডাউনে কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
তাছাড়া বেশিরভাগ সময় অনলাইনে এরা কানে গুঁজে গান শোনে। ঘরে বাইরে রাস্তা ঘাটে বাসে ট্রেনে অফিসে আদালতে খেতে বসতে শুতে জাগতে এরা কখনও পাশের জনের কোন কথা শোনে না। ফেসবুকে হোয়াটস অ্যাপে গুগুলে এবং অন্য অ্যাপে কে কি বলছে তার খবর রাখে। ফলে লক ডাউনে এদের কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
এরা শুয়ে বসে ঘন্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে পারে। দিনের পর দিন একভাবে একই জায়গায় থাকতে পারে। কেন না অনলাইন চালু থাকলে কানে ইয়ারফোন গুঁজা থাকলে মোবাইলে সব সময় চোখ থাকলে বাদবাকি সে কোথায় থাকল, কখন থাকল, দিন না রাত, মাঠ না জঙ্গল, বাড়ি না শ্মশান, খাচ্ছে না ঘুমোচ্ছে, দেখছে না বলছে, শুয়ে আছে না বসে আছে সেটা বড় কথা নয়।
এদের জন্য ঘর যা বাইরেও তা। মল যা বাসও তা । ট্রেন যা আত্মীয় বাড়ি তা। টুর যা ট্রাভেলিং যা ড্রয়িং রুমও তাই।
যেখানে থাকল সেখানেই শুরু করে দিল গেম খেলা। সে বসে দাঁড়িয়ে শুয়ে যেভাবেই হোক না কেন। দুঃখেও অনলাইন সুখেও অনলাইন হাসিতেও অনলাইন কান্নাতেও অনলাইন।
এদের জগতে এদের বিচরণ আমার আপনার সামনে যা ঘটমান তার সঙ্গে মিলবে না। ফলে লক ডাউনে এদের কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
এদের কাছে বই পত্তরও আছে তবে তার সঙ্গে বিচরণ ওই অনলাইনে আপডেটের সাথে সাথে। এরা খুব এক্সপার্ট। একসাথে বই পড়ে হোয়াটস অ্যাপ্স করে ফেসবুক দেখে গুগুলে কি হচ্ছে খবর রাখে, গেম আপডেট করে আবার ঘরে বাইরে কে কি এদের নামে বলছে তারও খবর রাখে। সেই সাথে অন্য কাওকে তোয়াক্কা না করার প্রবণতাও পুষে রাখে। এমন কি সে যদি তার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ও তাহলেও তাকে নজরে রাখে। তবে লাইনে এবং অনলাইনে।
অন্য একটা সুবিধাও আছে। এদের চাহিদা কম। এটা দাও ওটা দাও এটা খাব ওটা খাব এরকম করো ওরকম করো ইত্যাদি এরা করে তবে তা খুব কম। লিমিট রেখে। তাই লক ডাউনের বাজারে আপনার আমার একঘেয়েমি ডিপ্রেশন আপসেট ইত্যাদি হলেও এদের কোন অসুবিধা নেই।
ভালই বুঝেছে। তাই কোম্পানিগুলো লক ডাউনের বাজারে একই পয়সায় নেট ডবল করে দিয়েছে।
ফলে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত হয়ে উঠছে জীবন। সবাই আপগ্রেট। বড়রা কিছু বারণ করার কথা বললেই বলবে প্রমাণ দেখাও। কিছু কিছু অনুভূতি যার প্রত্যক্ষ ফল (সে খারাপ হোক কিংবা ভাল) সঙ্গে সঙ্গে মেলে না। সুদূর প্রসারী সেই অবস্থান বোঝানো যায় না। অনুভব করতে হয়। কিন্তু অনলাইন আপগ্রেডেশন তাৎক্ষণিকতা চায়। সবাই ব্যস্ত থাকে। ফলে জীবনের চলমানে হয়তো এগিয়ে কিংবা হয়তো এক্কেবারে পিছিয়ে তা বুঝতে সময় লেগে যায়।
ফলে বর্তমান সময়ের মত এরা এবং আমরা পাশাপাশি কিন্তু সামাজিক দূরত্বে মননে মানসিকতায় একা একা। একার বাঁচার পথে এরা অনেকটাই এগিয়ে চলেছে।
হয় জিতবে নয়তো হেরে যাবে কিন্তু পাশের জনকে সাহায্যের অনলাইন খুলে দেবে অথবা চিরতরে বন্ধই রাখবে। ফলে লক ডাউনে এদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
এরা পড়াশুনা করে এগিয়ে যায়। তবে যতটা না করলে নয় ঠিক ততটা। তার চেয়ে কম হতে পারে কিন্তু কিছুতেই বেশি হবার জো নেই। ক্রিয়েটিভ চিন্তা ভাবনা এদের মধ্যে থাকে তবে তা খুব কম।
কারণ ক্রিয়েটিভিটি করতে হলে যেমন বুদ্ধি লাগবে তেমন শ্রম লাগবে। এদের সে সময় নেই। এরা বিন্দাস বসে বসে র্যা লা মারছে তা কিন্তু নয়। গেম চ্যাট ফ্ল্যাট অ্যাপ্স ইত্যাদিতে কেটে যাচ্ছে সময়। কাটিয়ে দিচ্ছে সময়।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মৌমিতা পাল ০৪/০৬/২০২০ভালো লিখেছেন
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ০৯/০৫/২০২০লকডাউনে লেখালেখি করে সময় কাটাই।
-
ফয়জুল মহী ০৯/০৫/২০২০Excellent
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৯/০৫/২০২০ভালো।