গোপলার কথা - ৭২
প্রেম সম্পূর্ণরূপে শারীরিক। শরীর বা অবয়ব নেই তো প্রেম নেই। অস্তিত্ব থাকতেই হবে এবং তা পরস্পরের কাছাকাছি আকর্ষিত হওয়ার মাধ্যমেই প্রেম।
রামের সঙ্গে রাধিকার প্রেম। মানে তারা পরস্পরের প্রতি শরীরগতভাবে আকর্ষিত। তাই প্রেম। তা যদি না হত, যদি মনের ব্যাপার হত তাহলে লুকিয়ে দেখা করার ইচ্ছে হয় কেন? শুধু তো মনের মিল তাহলে ব্যাপারটা প্রকাশ্যই হোক। শরীর বাদ দিয়ে যদি প্রেম হতো তাহলে রামের সঙ্গে ফতিমার প্রেম তাদের ফ্যামিলি কিংবা সবাই মেনে নিত। বিবাহিত স্বপ্না তার স্বামীর পরকীয়া প্রেম মেনে নিত।
কিন্তু মানে না বা মানা যায় না তার কারণ ফতিমার ফ্যামিলি জানে এবং স্বপ্নাও জানে, আজ না হোক কাল ওরা শারীরিক মিলনে লিপ্ত হবেই হবে।
যে কোন প্রেমিক বা প্রেমিকা তার দয়িতার বিয়েতে আপত্তি করবে না। ভাববে অন্য কারো সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে তো কি হয়েছে প্রেম তো আমাকেই করে। তা কিন্তু হয় না। বরং প্রেমিক প্রেমিকা ভাবে আমি ছাড়া আমার দয়িতার শরীর আর করো যেন না হয়। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
মনে মনে প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে ওঠে 'কি আমার সঙ্গে প্রেম আর অন্যলোককে বিয়ে, এ আমি কিছুতেই মেনে নেব না।' কেন না প্রেম শারীরিক। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রেম করার আসল উদ্দেশ্য হল বিয়ে করা। অর্থাৎ শারীরিক সম্পর্কের ছাড়পত্র পাওয়া। প্রায়ই শোনা যায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস। তার আগে প্রেমের মাধ্যমে সেই সহবাসের পথ প্রশস্ত করা।
প্রেম বাদ দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক আকছার ঘটে। কিন্তু শরীর বাদ দিয়ে প্রেম একটাও নেই। শরীর বাদ দিয়ে প্রেম যদি হতো তাহলে পৃথিবীতে প্রায় আশি নব্বই শতাংশ মারামারি হানাহানি কমে যেত।
আমাদের সামাজিক পরিকাঠামোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখাশুনা করে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন হয়। সেই শারীরিক সম্পর্ক থেকে গড়ে ওঠে প্রেম। কিন্তু কোন অসুবিধা নেই। হাজার হাজার লাখো লাখো এরকম বিয়ে করে। তারপর তাদের প্রেম হয়। গভীর প্রেম। কোনভাবেই তা নষ্ট হয় নি। কেন না প্রেম শারীরিক।
কলেজের সেরা সুন্দরী মেয়েটি এক একজনের সঙ্গে প্রেম করে আর তাদের ছেড়ে দেয়। কিংবা অনেকেই তার পেছনে ঘুর ঘুর করে। কিন্তু খারাপ দেখতে কালো মেয়েটির অনেক গুণ। ভালো গান পারে। আবৃত্তি করে। কথাবার্তা কি মিষ্টি। হাসলে কি সুন্দর লাগে। তবু কেউ তাকে প্রেমের অফার দিচ্ছে না। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
বেশ্যাখানায় বারবার যেতে যেতে মেয়েটির সাথে রামুদাদার গভীর প্রেম হয়ে গেল। কিন্তু পাশের বাড়ির গুণবতী সুন্দরী মেয়েটি রামুদাদাকে পাত্তা দিত না। কথা বলতে চাইত না। এড়িয়ে যেত। কাছে ঘেঁষতে দিত না। তাই তার সাথে আমাদের অত ভাল হ্যান্ডসাম ছেলে রামুদাদার প্রেম হল না। কিন্তু বেশ্যাখানার মেয়েটির সাথে গভির পেরম হয়ে গেল। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
গল্পে উপন্যাসে গানে কাহিনীতে কবিতায় সিনেমায় প্রেম দেখতে লিখতে পড়তে এবং ভাবতে বেশ ভালই লাগে। কিন্তু ওই পর্যন্ত। বাস্তবের সাথে যার কোন মিল নাই। শরীর চাই, না হলে প্রেমের কোন মূল্য নাই। পরিণতিও নাই। কিংবা প্রেম নাই।
টিন এজে কত ছেলে কত মেয়ে শুধু প্রেম করে নষ্ট হয়ে যায়। পড়াশুনায় পিছিয়ে পরে। কেন না প্রেম শারীরিক তাই। যদি মনের ব্যাপার হতো তাহলে সহজ সরল সুন্দর টিন এজ মনে সুন্দরের ছাপ ফেলত। সে পড়াশুনায় এবং পড়াশুনা সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ে আরো বেশি এগিয়ে যেত। আরও বেশি মনোনিবেশ করতে পারত। তা কিন্তু হয় না। কেন না প্রেম করা মানে তার মনের মধ্যে শুধু দয়িতার শরীর ভাবনা ঢুকে যায়। ধীরে ধীরে উন্মোচিত হতে থাকে বিপরীত সেক্স, শরীর। এই শরীরের নেশা তাকে আর পড়াশুনা গান বাজনা আঁকা খেলাধূলা ইত্যাদি কোথাও কোনভাবে গভীর মনোযোগ দিতে দেয় না। ফলে টিন এজ শুধুমাত্র প্রেম করার জন্য পিছিয়ে পড়ে। কেননা প্রেম শারীরিক তাই।
আমাদের পাড়ার বলরাম দাদা বহুবার সোনাইয়ের কাছে শরীর পাওয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি। চোখে চোখ মিলিয়েছে। অনেকবার একা একা পার্কে ডেকেছে। কিন্তু সোনাই বড্ড সেকেলে। যাকে বিয়ে করবে তার জন্য তার শরীর গুছিয়ে রেখেছে। বলরাম অনেকবার বলেছে - চিন্তা করছ কেন? আমি তো তোমাকেই বিয়ে করব। তাতে সোনাই বলেছে - তুমিও এত চিন্তা করছ কেন? তাহলে এসব বিয়ের পরেই হবে। এখন নয়। তোমার এত শরীর শরীর বাই কেন? তাহলে কি তুমি আমাকে ভালোবাসো না?
ফলে সোনাইয়ের সঙ্গে বলরামের প্রেম গড়ে ওঠেই নি। অনিন্দিতার সঙ্গে এখন বলরামের ভালোই প্রেম। বেশ জোরালো। তাকেই বলরাম বিয়ে করবে। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
আচ্ছা আপনাকে বলছি, আপনি কি কোন দেখতে শুনতে খারাপ, পঙ্গু কিংবা কোন তৃতীয় লিঙ্গ কারো সাথে প্রেম করবেন? সে তো শারীরিক গঠনে পিছিয়ে থাকলেও তার মন তো আছে। সেই মন সুন্দর থেকে সুন্দরতর সুন্দরতম অবশ্যই। বলছি, আপনি কি তাদের সাথে প্রেম করবেন? আমি নিশ্চিত আপনি তার সাথে প্রেম করবেন না। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
একসাথে পড়াশুনা খেলাধূলা টিফিন ভাগ করে খাওয়া হাত ধরাধরি করে হাঁটা মলয় মিতুকে বলল - চলো, আমরা বিয়ে করে ফেলি।
সেই কথা শুনে মিতু মলয়কে বলে ফেলল - আয়নায় তুই তোর নিজের মুখ দেখেছিস? বিয়ের কথা বলতে চলে এসেছিস? নিজেকে ভাবিস কি?
বাড়ি ফিরে মুখে দাগ নাক উঁচু দাঁত ওঠা মলয় অনেক অনেক বার আয়নায় নিজেকে দেখেছে কিন্তু তার মনের মুখ সে নিজেও দেখতে পায় নি। তাই তার মনের মুখের কোন বিকৃতি সে খুঁজে পায় নি। তবু মলয়ের সাথে মিতুর বিয়ে হয় নি। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
রামের সঙ্গে রাধিকার প্রেম। মানে তারা পরস্পরের প্রতি শরীরগতভাবে আকর্ষিত। তাই প্রেম। তা যদি না হত, যদি মনের ব্যাপার হত তাহলে লুকিয়ে দেখা করার ইচ্ছে হয় কেন? শুধু তো মনের মিল তাহলে ব্যাপারটা প্রকাশ্যই হোক। শরীর বাদ দিয়ে যদি প্রেম হতো তাহলে রামের সঙ্গে ফতিমার প্রেম তাদের ফ্যামিলি কিংবা সবাই মেনে নিত। বিবাহিত স্বপ্না তার স্বামীর পরকীয়া প্রেম মেনে নিত।
কিন্তু মানে না বা মানা যায় না তার কারণ ফতিমার ফ্যামিলি জানে এবং স্বপ্নাও জানে, আজ না হোক কাল ওরা শারীরিক মিলনে লিপ্ত হবেই হবে।
যে কোন প্রেমিক বা প্রেমিকা তার দয়িতার বিয়েতে আপত্তি করবে না। ভাববে অন্য কারো সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে তো কি হয়েছে প্রেম তো আমাকেই করে। তা কিন্তু হয় না। বরং প্রেমিক প্রেমিকা ভাবে আমি ছাড়া আমার দয়িতার শরীর আর করো যেন না হয়। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
মনে মনে প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে ওঠে 'কি আমার সঙ্গে প্রেম আর অন্যলোককে বিয়ে, এ আমি কিছুতেই মেনে নেব না।' কেন না প্রেম শারীরিক। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রেম করার আসল উদ্দেশ্য হল বিয়ে করা। অর্থাৎ শারীরিক সম্পর্কের ছাড়পত্র পাওয়া। প্রায়ই শোনা যায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস। তার আগে প্রেমের মাধ্যমে সেই সহবাসের পথ প্রশস্ত করা।
প্রেম বাদ দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক আকছার ঘটে। কিন্তু শরীর বাদ দিয়ে প্রেম একটাও নেই। শরীর বাদ দিয়ে প্রেম যদি হতো তাহলে পৃথিবীতে প্রায় আশি নব্বই শতাংশ মারামারি হানাহানি কমে যেত।
আমাদের সামাজিক পরিকাঠামোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখাশুনা করে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন হয়। সেই শারীরিক সম্পর্ক থেকে গড়ে ওঠে প্রেম। কিন্তু কোন অসুবিধা নেই। হাজার হাজার লাখো লাখো এরকম বিয়ে করে। তারপর তাদের প্রেম হয়। গভীর প্রেম। কোনভাবেই তা নষ্ট হয় নি। কেন না প্রেম শারীরিক।
কলেজের সেরা সুন্দরী মেয়েটি এক একজনের সঙ্গে প্রেম করে আর তাদের ছেড়ে দেয়। কিংবা অনেকেই তার পেছনে ঘুর ঘুর করে। কিন্তু খারাপ দেখতে কালো মেয়েটির অনেক গুণ। ভালো গান পারে। আবৃত্তি করে। কথাবার্তা কি মিষ্টি। হাসলে কি সুন্দর লাগে। তবু কেউ তাকে প্রেমের অফার দিচ্ছে না। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
বেশ্যাখানায় বারবার যেতে যেতে মেয়েটির সাথে রামুদাদার গভীর প্রেম হয়ে গেল। কিন্তু পাশের বাড়ির গুণবতী সুন্দরী মেয়েটি রামুদাদাকে পাত্তা দিত না। কথা বলতে চাইত না। এড়িয়ে যেত। কাছে ঘেঁষতে দিত না। তাই তার সাথে আমাদের অত ভাল হ্যান্ডসাম ছেলে রামুদাদার প্রেম হল না। কিন্তু বেশ্যাখানার মেয়েটির সাথে গভির পেরম হয়ে গেল। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
গল্পে উপন্যাসে গানে কাহিনীতে কবিতায় সিনেমায় প্রেম দেখতে লিখতে পড়তে এবং ভাবতে বেশ ভালই লাগে। কিন্তু ওই পর্যন্ত। বাস্তবের সাথে যার কোন মিল নাই। শরীর চাই, না হলে প্রেমের কোন মূল্য নাই। পরিণতিও নাই। কিংবা প্রেম নাই।
টিন এজে কত ছেলে কত মেয়ে শুধু প্রেম করে নষ্ট হয়ে যায়। পড়াশুনায় পিছিয়ে পরে। কেন না প্রেম শারীরিক তাই। যদি মনের ব্যাপার হতো তাহলে সহজ সরল সুন্দর টিন এজ মনে সুন্দরের ছাপ ফেলত। সে পড়াশুনায় এবং পড়াশুনা সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ে আরো বেশি এগিয়ে যেত। আরও বেশি মনোনিবেশ করতে পারত। তা কিন্তু হয় না। কেন না প্রেম করা মানে তার মনের মধ্যে শুধু দয়িতার শরীর ভাবনা ঢুকে যায়। ধীরে ধীরে উন্মোচিত হতে থাকে বিপরীত সেক্স, শরীর। এই শরীরের নেশা তাকে আর পড়াশুনা গান বাজনা আঁকা খেলাধূলা ইত্যাদি কোথাও কোনভাবে গভীর মনোযোগ দিতে দেয় না। ফলে টিন এজ শুধুমাত্র প্রেম করার জন্য পিছিয়ে পড়ে। কেননা প্রেম শারীরিক তাই।
আমাদের পাড়ার বলরাম দাদা বহুবার সোনাইয়ের কাছে শরীর পাওয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি। চোখে চোখ মিলিয়েছে। অনেকবার একা একা পার্কে ডেকেছে। কিন্তু সোনাই বড্ড সেকেলে। যাকে বিয়ে করবে তার জন্য তার শরীর গুছিয়ে রেখেছে। বলরাম অনেকবার বলেছে - চিন্তা করছ কেন? আমি তো তোমাকেই বিয়ে করব। তাতে সোনাই বলেছে - তুমিও এত চিন্তা করছ কেন? তাহলে এসব বিয়ের পরেই হবে। এখন নয়। তোমার এত শরীর শরীর বাই কেন? তাহলে কি তুমি আমাকে ভালোবাসো না?
ফলে সোনাইয়ের সঙ্গে বলরামের প্রেম গড়ে ওঠেই নি। অনিন্দিতার সঙ্গে এখন বলরামের ভালোই প্রেম। বেশ জোরালো। তাকেই বলরাম বিয়ে করবে। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
আচ্ছা আপনাকে বলছি, আপনি কি কোন দেখতে শুনতে খারাপ, পঙ্গু কিংবা কোন তৃতীয় লিঙ্গ কারো সাথে প্রেম করবেন? সে তো শারীরিক গঠনে পিছিয়ে থাকলেও তার মন তো আছে। সেই মন সুন্দর থেকে সুন্দরতর সুন্দরতম অবশ্যই। বলছি, আপনি কি তাদের সাথে প্রেম করবেন? আমি নিশ্চিত আপনি তার সাথে প্রেম করবেন না। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
একসাথে পড়াশুনা খেলাধূলা টিফিন ভাগ করে খাওয়া হাত ধরাধরি করে হাঁটা মলয় মিতুকে বলল - চলো, আমরা বিয়ে করে ফেলি।
সেই কথা শুনে মিতু মলয়কে বলে ফেলল - আয়নায় তুই তোর নিজের মুখ দেখেছিস? বিয়ের কথা বলতে চলে এসেছিস? নিজেকে ভাবিস কি?
বাড়ি ফিরে মুখে দাগ নাক উঁচু দাঁত ওঠা মলয় অনেক অনেক বার আয়নায় নিজেকে দেখেছে কিন্তু তার মনের মুখ সে নিজেও দেখতে পায় নি। তাই তার মনের মুখের কোন বিকৃতি সে খুঁজে পায় নি। তবু মলয়ের সাথে মিতুর বিয়ে হয় নি। কেন না প্রেম শারীরিক তাই।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মুঃ আবু-আল মোর্শেদ রায়হান ০৬/০৮/২০১৯thanks
-
শান্ত চৌধুরী ০২/০৭/২০১৯বাহ্ চমৎকার
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ৩০/০৬/২০১৯দেহবর্জিত প্রেমই আসল প্রেম।