গোপলার কথা - ৬৪
মনের_জানালা
--------------
অর্জুন গাছের যে ডালটা প্রায় জল ছুঁয়েছে সে পর্যন্ত গিয়ে ঝপাং করে জলে পড়লাম লাফিয়ে। শরীরটা জুড়িয়ে গেল। তারপর ডুব সাঁতারে পুকুরের প্রায় তলায় দেখলাম আমি এক মৎস্যপুরুষ।
স্নানটান সেরে পাত পেড়ে সবাই মিলে হৈ হৈ করে খেয়ে চললাম পেছনের আম গাছের তলায়। মাঠ থেকে কুড়িয়ে আনা শীতল বাতাস এখানে বারোমাস। এই গ্রীষ্মের মাঝ দুপুরেও। বাঁশের পাটাতনে বসতে বসতে একটু ঝিমুনি এসে যায়।
দেখি, কানের কাছে প্রাণভ্রমরার সুর - সেই কখন থেকে তোমাকে খুঁজছি। সরষে খেত, সবজি বাগান, বিন্তিমাসির ঘর, ধানগোলা কোথাও পেলাম না। ওই যে দেখো, খাল পাড় ঘেঁষে সূর্য ঝুঁকে আসছে। চলো, প্রাণ ভরে বাঁচা কিনে নিই। চলো।
ঘাসে পা মাড়িয়ে ফড়িংয়ের পেছনে ছুটতে ছুটতে দেখি পিঁপড়ের সারি চলে গেছে পুকুরের ধারে। কলমীশাকের ডাঁটা পর্যন্ত।
সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফিরে দেখি মা তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালিয়েছে। হ্যারিকেনের আলোকে আমার মাকে আমি দেখছি প্রাণের আয়নায়। পাশের বাড়ির কাকীমা হ্যারিকেনের বাতি উসকে দিয়ে বলল - ও দিদি, আমার ছেলেটা এখনো কলেজ থেকে ফিরল না।
বলতে বলতে দূরের বাসস্ট্যাণ্ড থেকে সাইকেল চালিয়ে সেই ছেলে পৌঁছাল। ছেলেকে দেখে আর কাকীমার সে কি উচ্ছ্বাস আমি কোনদিন ভুলব না। সেই ছেলে তার ছোটভাই বোনের চুলে বিলি কেটে হাত পা ধুতে গেল। তারপর তারা হ্যারিকেনের সামনে গোল হয়ে বসে ঝুঁকে ঝুঁকে জোরে জোরে পড়ছে। আর কাকীমা তালপাখায় হাওয়া দিয়ে যাচ্ছে।
এই জীবনের মধ্যে যে জীবন ছিল আজ এই ইনটারনেট ফেসবুক হোয়াটস অ্যাপ্সের যুগে তা অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দ্রূত যোগাযোগেও হৃদয়ের যোগ বিচ্ছিন্ন তা বুদ্ধদেব গুহর "পর্ণমোচী"তে আরো স্পষ্ট করে লেখা আছে। ফেসবুকের চেয়ে ফেস টু ফেস না হলে হৃদয়ের বন্ধন হয় না। মাটির কাছাকাছি না হলে পৃথিবীর মাটি চেনা যায় না।
--------------
অর্জুন গাছের যে ডালটা প্রায় জল ছুঁয়েছে সে পর্যন্ত গিয়ে ঝপাং করে জলে পড়লাম লাফিয়ে। শরীরটা জুড়িয়ে গেল। তারপর ডুব সাঁতারে পুকুরের প্রায় তলায় দেখলাম আমি এক মৎস্যপুরুষ।
স্নানটান সেরে পাত পেড়ে সবাই মিলে হৈ হৈ করে খেয়ে চললাম পেছনের আম গাছের তলায়। মাঠ থেকে কুড়িয়ে আনা শীতল বাতাস এখানে বারোমাস। এই গ্রীষ্মের মাঝ দুপুরেও। বাঁশের পাটাতনে বসতে বসতে একটু ঝিমুনি এসে যায়।
দেখি, কানের কাছে প্রাণভ্রমরার সুর - সেই কখন থেকে তোমাকে খুঁজছি। সরষে খেত, সবজি বাগান, বিন্তিমাসির ঘর, ধানগোলা কোথাও পেলাম না। ওই যে দেখো, খাল পাড় ঘেঁষে সূর্য ঝুঁকে আসছে। চলো, প্রাণ ভরে বাঁচা কিনে নিই। চলো।
ঘাসে পা মাড়িয়ে ফড়িংয়ের পেছনে ছুটতে ছুটতে দেখি পিঁপড়ের সারি চলে গেছে পুকুরের ধারে। কলমীশাকের ডাঁটা পর্যন্ত।
সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফিরে দেখি মা তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালিয়েছে। হ্যারিকেনের আলোকে আমার মাকে আমি দেখছি প্রাণের আয়নায়। পাশের বাড়ির কাকীমা হ্যারিকেনের বাতি উসকে দিয়ে বলল - ও দিদি, আমার ছেলেটা এখনো কলেজ থেকে ফিরল না।
বলতে বলতে দূরের বাসস্ট্যাণ্ড থেকে সাইকেল চালিয়ে সেই ছেলে পৌঁছাল। ছেলেকে দেখে আর কাকীমার সে কি উচ্ছ্বাস আমি কোনদিন ভুলব না। সেই ছেলে তার ছোটভাই বোনের চুলে বিলি কেটে হাত পা ধুতে গেল। তারপর তারা হ্যারিকেনের সামনে গোল হয়ে বসে ঝুঁকে ঝুঁকে জোরে জোরে পড়ছে। আর কাকীমা তালপাখায় হাওয়া দিয়ে যাচ্ছে।
এই জীবনের মধ্যে যে জীবন ছিল আজ এই ইনটারনেট ফেসবুক হোয়াটস অ্যাপ্সের যুগে তা অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দ্রূত যোগাযোগেও হৃদয়ের যোগ বিচ্ছিন্ন তা বুদ্ধদেব গুহর "পর্ণমোচী"তে আরো স্পষ্ট করে লেখা আছে। ফেসবুকের চেয়ে ফেস টু ফেস না হলে হৃদয়ের বন্ধন হয় না। মাটির কাছাকাছি না হলে পৃথিবীর মাটি চেনা যায় না।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ২১/০৭/২০১৮
খুব ভাল লাগল। পাঠে হৃদয় জুড়াল।
অনেক ভালবাসা ও শুভকামনা রেখে গেলাম।
ভাল থাকুন সর্বক্ষণ। পাশে থাকুন। ধন্যবাদ।
!