গোপলার কথা - ৪৫
হীনমন্যতা
---------
আমি বরাবর হীনমন্যতায় ভুগি। আমি এটা পারার উপযুক্ত নই। আমি ওটা পারব তবে বোধ হয় ভাল হবে না। আমার চেয়ে আরো ভাল পারে এ রকম অনেকেই আছে। আমি হাত লাগালে ওরা আমাকে ডিঙিয়ে চলে যাবে। তাই আমি সেই কাজে হাত লাগালেও একটু কেমন যেন ভয়ে ভয়ে কাজটা করি। কিছুটা আড়াল রেখে কাজটা করি। না জানিয়ে নিজের মত ভেবে করি।
তাতে ভালো হল কি মন্দ হল, দোষ হল নাকি গুণ, পাপ নাকি পুণ্য, আসল নাকি নকল এসব মনের মধ্যে নিরন্তর ঘুরপাক খেতে থাকে। তারপর নিজেকে নিজে যাচাই করি। তারপর আবার সেই কাজে ব্রতী হই অথবা আর কাজটা করি না অথবা আরো বেশি করে মনোযোগ দিয়ে কাজটা করি। আর এগিয়ে যাই অথবা স্থিতবস্থা অবলম্বন করি কিংবা এগোই না।
আর যদি কাজটা করেও ফেলি তাতে একটু আধটু প্রশংসা পেলে সবার মত আমারও ভালই লাগে। আর প্রশংসা না পেলেও খুব একটা ভাবি না।
তবে প্রশংসা পাওয়া উচিত ছিল তাও পেলাম না। নিন্দা করার মত ছিল না, তাও নিন্দা হল। তাহলে যে খারাপ লাগা জড়িয়ে ধরে তাকে আর কিছুতেই মেনে নিতে পারি না। আমি তাই কিছুটা হলেও হীনমন্যতায় ভুগি। সবার মত আমার এচিভ সহজে হয় না। অনেক পরে পেতে পেতে যখন পেয়ে যাই তখন পাওয়ার আনন্দ আমি হারিয়ে ফেলি। কিংবা হারিয়ে যায়। অথবা আমার পাওয়া আর এনজয়ফুল হয় না।
এই এখন যেমন নিজস্ব জীবিকার মাঝে সময় সুযোগ পেলে মাতৃভাষা ভালোবেসে একটু আধটু সাহিত্য চর্চা করি। গল্প লিখি, কবিতা লেখার চেষ্টা করি। প্রবন্ধ লিখি, নিজের কথা লিখি, যা মনে আসে তাই লিখি। তাতে দেখেছি আমার চেয়ে অনেকেই ভাল লেখে, আরও অনেক ভাল ভাল লেখা আছে।
তাও আমি লিখি। নিজেকে নিজে যাচাই করি। হ্যাঁ, ভালই তো পারি?
কিন্তু ভাল লেখায় তেমন প্রশংসা পেলাম না। আর খুব খারাপ ছিল না তাও নিন্দেমন্দ আসছে। তাই তখন আমার সেই হীনমন্যতার কথা ভেবে মনের মধ্যে আলাদা কোন ছাপ পড়ে না। এবং কখনই আমি আপনার লেখা যোগ্যতার সাথে কম্পিটিশন করি না, করব না। আমি শুধু আমার মত লিখি, লিখব।
লেখায় আমার নিজের ছাপ আছে। সবাই বলছে বলে আমি বলি না। সবাই ভাবছে বলে আমি ভাবি না। সবাই দেখতে ছুটছে বলে আমি দেখি না। একটু অন্যভাবে বলি ভাবি দেখি। এই বলা ভাবা বা দেখা অন্যভাবে বলে অন্যজনের মেনে নিতে সময় লাগে। যুক্তির বাইরে যে যুক্তি আছে, যুক্তির মধ্যে যে যুক্তি আছে, যুক্তির মধ্যে তথ্য আছে তাকে সঙ্গে নিয়ে আমি চলি। তাই লিখি। জনমানসকে সেই ভাবনায়, বলায়, দেখায় অভ্যস্ত করে তোলা খুব একটা সহজ না।
তাই আমি লিখি। তোমার মনে হয় হীনমন্য লেখা। আমারও মনে হয় কেন এমন একভাবনা লেখা। তবুও লিখি। হয়তো বা নিজেকে এই হীনমন্য থেকে বের করে আনার জন্য লিখি। তাই লিখি।
প্রথম যৌবনে কোন সুন্দরী মেয়ের সামনে (সে আমার সহপাঠী বা পড়শী বা অন্য কেউ) আমার এই হীনমন্যতা আমাকে পিছিয়ে রাখত। ভাবতাম আমার চেয়ে আরো হ্যাণ্ডসাম বুদ্ধিমান প্রয়োগশীল আছে তাদের কাছে আমি কিছুই না। আবার সেই সুন্দরী সম্পর্কে আমার মনের মধ্যে কুচকুচ হলেও দেখেছি আমাকে তারাও কেমন পাশ কাটিয়ে যাওয়া নজরে দেখত (অবশ্য এ সবই আমার মনের কথা)। ফলে প্রেমে পড়তে পারি নি বা তাদেরকে প্রেমে ফেলতে পারে নি আমার এই হীনমন্যতা।
আমার পাশের জন কি সুন্দর মন ভোলানো গুজগুজ ফুসফুস করে যাচ্ছে। মেয়েটি শুনছে অথবা ছেলেটি আত্মহারা হয়ে যাচ্ছে। তারা যে আমার চেয়ে দারুণ কিছু (রূপে বা গুণে) তা কিন্তু নয়। তবু তাদের মধ্যে বেশ একটা যৌবনের ঝাঁপিয়ে পড়া দেখেছি। যৌবনের প্রাণবন্ত হতে দেখেছি। আর আমি? এই হীনমন্যতায় লুকিয়ে স্বপ্নে দেখেছি, নিজের মনে পাশে পাওয়ার চেষ্টা করেছি। দু এক জায়গায় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। তাতে দেখেছি অন্য আর এক ওভারস্মার্ট জাঁকিয়ে বসে আছে। আমি তো ভাবতেই পারি না - 'আমাকে ডিঙিয়ে যাবে, কে আছে বে?' "এই কলেজের সেরা সুন্দরীকে আমি ঠিক পটিয়ে তুলব।"
ফলে অধরা প্রেম প্রথম যৌবনকে গড়িয়ে দিয়েছে এই হীনমন্যতা। তবে মন খারাপ হত না। কেন পারি নি এমন উদ্ভট ভাবনাও মনে আসে নি। কেন না আমার হীনমন্যতা। আমি তো অতটা যোগ্য নই। এ ভাবনা তো ছিল।
কিন্তু তারপরের সময় পেরিয়ে কর্মক্ষেত্র এবং বিয়ে ও প্রেম। (কিছু হোক না হোক আমাদের দেশে বিয়েতে কোন অসুবিধা নেই।) সবই তো আমার মনের মত। এখনও। প্রেমও বেশ গতিশীল। সেদিনের সেই সব রোমিও এখনও পাল্টে পাল্টে প্রেমের বিচিত্র খুঁজছে। সেদিনের সেই সুন্দরীর পেছন যাত্রা আবার সুন্দরী খুঁজছে। সন্তুষ্টির পরিধি বাড়তে বাড়তে বিড়ম্বনার আকার নিচ্ছে। অনেকেই হারিয়ে গেছে। হারিয়ে ফেলেছে নিজস্ব প্রেম সংস্কার। আবার কিছু প্রেমিক প্রেমে ঝুলছে।
আমার হীনমন্যতায় যা মিলেছে তাতেই আমি পূর্ণ সন্তুষ্ট। পরিপূর্ণ প্রেমের দিশা এককেই নিবিষ্ট। তাহলে ওভার স্মার্টনেশ, দেখানোর ভাবনা, ভুজুংভাজুং, ফিসফাস কেন দরকার? কিছু হীনমন্যতা নিজেকেই বাঁচিয়ে রাখার কিছু মন্ত্র তো বটে।
যৌবনের প্রারম্ভে বিপরীত লিঙ্গের প্রেম হাতছানির সাথে সাথে গুরুত্বপূর্ণ অন্য আর এক অধ্যায় থাকে তা হল অধ্যয়ন, পড়াশুনা। এই টিন এজ সময়ে যৌবনের মধুর হাতছানি পেরিয়ে পড়াশুনায় মনোনিবেশ বেশ কঠিন। আবার গুরুত্বপূর্ণ পাঠ এই সময়। আমার এই প্রথম যৌবন হাতছানিতে আমার হীনমন্যতা আমাকে পড়ার দিকে টেনে নিয়ে গেছে। বড় হতে হবে এত বড় ভাবনা হয়তো ভাবি নি, ঠিক কথা।
কিন্তু আমার ভাবনা, ওই অপরূপার যোগ্য আমি নই, স্কুলের সেরা সুন্দরী আমার সঙ্গে কথা বললে আমার মনে হত 'আমার লগে কথা কইছে' এই আমার বড় পাওয়া। ওর জন্য কোন না কোন উত্তমকুমার তো আছে। আমাকে আমার পড়শুনায় এগিয়ে রেখেছে।
অথবা আমার হীনমন্য স্বভাবের জন্য হয়তো সুন্দরী তো দূরের কথা কেউই আমাকে প্রথম যৌবন কদম ফুল দেয় নি। ফলে যে একটু আধটু যৌবন বিচ্যুতি আমার অধ্যয়নে বিঘ্ন ঘটিয়েছে তাতে আমার নিজের পায়ে দাঁড়াতে অসুবিধা হয় নি। যদিও এ দাঁড়ানো একেবারেই সাধারণ। বলা না বলার মত।
তাই হীনমন্যতা কিছুটা হলেও জীবনপথ। হয়তো হ্যাঁ, আমার ক্ষেত্রে। হয়তো না, তোমার ক্ষেত্রে।
আজকাল গ্রামের বেশিরভাগ গরীব ছেলে মেয়েরা এই কারণে হয়তো পড়াশুনায় ভালো রেজাল্ট করছে। কেন না তারা বাবা মা পাড়া প্রতিবেশীর কষ্টের সাথে নিজেকে মেলায়। এই কষ্ট থেকে নিজেকে রেহাই করার চেষ্টা করে। রাস্তা দেখতে পায় একটাই। পড়াশুনা।
ফলে যেটুকু প্রেম ফষ্টি নষ্টির সুযোগ পায় তা তাদের পড়ায় খুব একটা বিঘ্ন ঘটায় না। এখানেও সেই হীনমন্যতা তাদেরকে পথ দেখায়। আমার মত। এরা পরবর্তীতেও খুব একটা প্রেমে সফল হয় না। দেখাশুনা করে আমার মত তারাও বিয়ে করে।
আবার প্রথম যৌবনের স্রোতে (টিন এজে) সমর্পিত আবার অধ্যয়নেও আদর্শ। এমন হয়তো অনেকেই আছে। তাদের দৃঢ় প্রত্যয়কে হাজার সেলাম। তারা এককদর্শী। আমার মত হীনমন্য নয়।
কলেজ লাইফে দু এক চুমুক মুখে দিয়ে দেখেছি তারপর আর ও পথ মাড়াই নি। কেন না আমার মত এই তো সাধারণ ছেলে মদ খাওয়ার মত বিশাল কেউকেটা হতে কি পারব? কিংবা হওয়া কি উচিত? বউকে লুকিয়ে ছেলের চোখের আড়ালে কিংবা ঘরের দরজা বন্ধ করে পার্টি মুডে থাকার মত থাকতে আমার ধৃষ্টতা আমাকে সায় দেয় না। এই রকম হীনমন্য ভাবনায় আমি আর মদ স্পর্শ করতে পারি নি। তাছাড়া আমার দেখাদেখি আমার প্রজন্ম যাতে মদ না খাওয়া শেখে সেদিকে খেয়াল রেখে আমি এভাবেই বড় হয়েছি। প্রজন্মের ভাবনায় তা হয়তো সফল নাও হতে পারে। কিন্তু আমি আমার নিজের কাছে হীনমন্য সংস্কারে দৃঢ়চেতা হয়ে থাকব এও বা কম কিসে? বলতে পারব, "আমাকে দেখে আমার ছেলে মদ সিগারেট খাওয়া শেখে নি।"
মদ খাওয়া ছাড়াও সেলিব্রেশন করা যায়। এ রকম ভাবনা আমার ক্ষেত্রে, আপনার ক্ষেত্রে অন্য হতেই পারে। কেন না আপনি তো আর আমার মত হীনমন্য নন। তবে যাই হোক, মদ নিশ্চয় জীবনের অপরিহার্য নয়।
ঠিক একই রকমভাবে অন্যান্য নেশা। যেমন সিগারেট পান বিড়ি গুটখা খৈনি ইত্যাদি কোন কিছুর ধারেকাছে আমি নেই। কেন না রাস্তা দিয়ে লম্বা এক খানা সিগারেট টানতে টানতে তোমার/আপনার সামনে দিয়ে চলে যাওয়ার মত লাট সাহেব আমি নই। হতেও পারব না। গুটখা মুখের মধ্যে কচর কচর করে চিবোতে চিবোতে তোমার/আপনার সাথে কথা বলার মত আমার অতটা বুকের পাটা নেই। ফলে এসব থেকে দূরে থেকে গেছি।
কিংবা আমার প্রজন্ম এমন করলে আমার মোটেই ভাল লাগবে না। আমি যেমন লাট সাহেবের মত সিগারেট ফুকতে ফুকতে চলে যেতে পারব না তেমনি আমার প্রজন্ম আমার/আমাদের সামনে দিয়ে গেলে আমারও ভাল লাগবে না। এই ভাবনাতে আমি আমার জীবন এই হীনমন্য করে তুলেছি। এমন কি লুকিয়েও তা করি না। আমি জানি, পৃথিবীতে এই বিশ্ব সংসারে কোন কিছু লুকানো নয়, আজ না হয় কাল তা প্রকাশ্য হবেই।
যদি আমার প্রজন্ম সিগারেট ফুকতে ফুকতে আমার সামনে দিয়ে যায়, যদি মদ খেয়ে বাড়ি ফেরে, যদি প্রেমে বেল্লেলাপনা করে তাহলেও আমি নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারব আমার থেকে এসব শেখে নি। আমার প্রজন্ম আমার দিকে আঙুল তুলতে পারবে না - তুমি করতে পারো, আর আমি করলেই দোষ?
অনেকদিন আগে আমার তখন টিন এজ শেষের পথে। আমি বাস ধরার জন্য বড় রাস্তায় (বাসস্ট্যাণ্ড বলা যেতে পারে) দাঁড়িয়ে আছি। একটা দূরপাল্লার বাস এল। তাতে অতীব সুন্দরী এক জানলার ধারে বসে। আমি নির্বাক দৃষ্টিতে প্রথম ঝলকে মুগ্ধ হয়ে যাই। খুব ভাল লেগে যায়। যেমন ফোটা ফুলকে ভাল লাগে। তাই দেখতেই থাকি আর দেখতেই থাকি। কিন্তু মেয়েটি আমার এ দেখা বুঝতে পেরে হাল্কা মুখ বেঁকিয়ে তাচ্ছিল্য দিয়েছিল। বাস দাঁড়িয়েছিল প্রায় দু মিনিট। সেই অবজ্ঞা আমি হৃদয়ে জমিয়ে রেখেছি।
আমি তো আর আমার চেহারা আর সুন্দর করতে পারব না। টাক মাথায় চুল গজাতে পারব না। বেঁটে হয়ে লম্বা হতে পারব না। দেহ পেশি বহুল করতে পারব না। হিরোদের মত লুকও গড়ে তুলতে পারব না। ক্যাঁ ক্যাঁ করে যেমন বলি তার চেয়ে ভাল বলতে পারব না। অন্যায় হলেও তোমার মন যোগানোর মত মিথ্যে বলতে পারব না। চোখ যে সুন্দর দেখে হাঁ করে সেই দেখা ছেড়ে দিতে পারব না। তাই তাচ্ছিল্য সাথে করেই বয়ে বেড়াতে হবে। কিছুজনের না ভালো লাগাকে মেনে নিতে হবে। এইটুকু মেনে নেওয়া আমার কাছে অনেক সহজ। আমার কোন অসুবিধাই হয় না হবে না। কেন না আমি যে হীনমন্যতায় ভুগি।
তাছাড়া আমার এই টাক মাথার জন্য, বেঁটে হওয়ার জন্য, ভাল দেখতে না হওয়ার জন্য, ক্যাঁ ক্যাঁ গলার জন্য, তোমার মন যোগানো কথা না বলার জন্য আমি কি কি হারিয়েছি? আর এগুলো থাকলে আমি কি কি পেতাম? এই দুই হিসেবে আমার হীনমন্য মানসিকতায় দেখেছি বেশি কিছু পাওয়া যায় না। বরং এগুলোর দিকে নজর দিলে হারাতে হতে পারে অনেককিছু। আপনার মানসিকায় অসীম পাওয়া পেতেই পারেন।
আমি জানি আমার চেয়ে আরো আনেক বেশি সুন্দর আছে, আমার চেয়ে আরো ভাল ছেলে আছে, আমার চেয়ে আরো ভাল বাবা আছে, আমার চেয়ে আরো ভালো দাদা আছে, আমার চেয়ে আরো ভাল স্বামী আছে, আমার চেয়ে তোমার আরো অনেক ভাল বন্ধু আছে তাই আমি যেটুকু সেটুকুই। তার জন্য কোন গর্ব নেই। অনুশোচনাও নেই।
আমাকে সুন্দর হিসেবে, ভাল ছেলে হিসেবে, ভাল বাবা হিসেবে, ভাল স্বামী হিসেবে, ভাল বন্ধু হিসেবে মানতেই হবে এমন কোন বাধ্যবাধ্যকতাও নেই। খুব ভালো আমাকে যদি তুমি বলো, তোমরা বলো, সে বলে, তারা বলে তাহলেও আমি যেমন খুব আহ্লাদিত হই না। তেমনি কেউ নিন্দে মন্দ করলেও হঠাৎ আপসেট হয়ে পড়ি না। আমার হীনমন্যতা আমাকে সেই মাপকাঠি দিয়েছে। তাই আমি সব ব্যাপারে স্বাভাবিক। আমি তো জানি, আমি শুধুই আমি।
আমি কোন তুলনায় থাকি না। তাই কেউ ভাল নিয়ে চলে গেল আমি কেন পেলাম না এটা ভাবি না। আবার কেউ আমাকে সব খারাপ দিয়ে গেল আমি তা নিয়েও ভাবি না। কেন ভাবব? আমার জায়গায় আমি আদৌ ছন্নছাড়া নই।
তবু আমি চাইব প্রত্যেকে নিজস্ব বোধে, নিজস্ব ভাবনায় উজ্জীবিত হোক। নিজেকে নিজে নির্মাণ করুক।
---------
আমি বরাবর হীনমন্যতায় ভুগি। আমি এটা পারার উপযুক্ত নই। আমি ওটা পারব তবে বোধ হয় ভাল হবে না। আমার চেয়ে আরো ভাল পারে এ রকম অনেকেই আছে। আমি হাত লাগালে ওরা আমাকে ডিঙিয়ে চলে যাবে। তাই আমি সেই কাজে হাত লাগালেও একটু কেমন যেন ভয়ে ভয়ে কাজটা করি। কিছুটা আড়াল রেখে কাজটা করি। না জানিয়ে নিজের মত ভেবে করি।
তাতে ভালো হল কি মন্দ হল, দোষ হল নাকি গুণ, পাপ নাকি পুণ্য, আসল নাকি নকল এসব মনের মধ্যে নিরন্তর ঘুরপাক খেতে থাকে। তারপর নিজেকে নিজে যাচাই করি। তারপর আবার সেই কাজে ব্রতী হই অথবা আর কাজটা করি না অথবা আরো বেশি করে মনোযোগ দিয়ে কাজটা করি। আর এগিয়ে যাই অথবা স্থিতবস্থা অবলম্বন করি কিংবা এগোই না।
আর যদি কাজটা করেও ফেলি তাতে একটু আধটু প্রশংসা পেলে সবার মত আমারও ভালই লাগে। আর প্রশংসা না পেলেও খুব একটা ভাবি না।
তবে প্রশংসা পাওয়া উচিত ছিল তাও পেলাম না। নিন্দা করার মত ছিল না, তাও নিন্দা হল। তাহলে যে খারাপ লাগা জড়িয়ে ধরে তাকে আর কিছুতেই মেনে নিতে পারি না। আমি তাই কিছুটা হলেও হীনমন্যতায় ভুগি। সবার মত আমার এচিভ সহজে হয় না। অনেক পরে পেতে পেতে যখন পেয়ে যাই তখন পাওয়ার আনন্দ আমি হারিয়ে ফেলি। কিংবা হারিয়ে যায়। অথবা আমার পাওয়া আর এনজয়ফুল হয় না।
এই এখন যেমন নিজস্ব জীবিকার মাঝে সময় সুযোগ পেলে মাতৃভাষা ভালোবেসে একটু আধটু সাহিত্য চর্চা করি। গল্প লিখি, কবিতা লেখার চেষ্টা করি। প্রবন্ধ লিখি, নিজের কথা লিখি, যা মনে আসে তাই লিখি। তাতে দেখেছি আমার চেয়ে অনেকেই ভাল লেখে, আরও অনেক ভাল ভাল লেখা আছে।
তাও আমি লিখি। নিজেকে নিজে যাচাই করি। হ্যাঁ, ভালই তো পারি?
কিন্তু ভাল লেখায় তেমন প্রশংসা পেলাম না। আর খুব খারাপ ছিল না তাও নিন্দেমন্দ আসছে। তাই তখন আমার সেই হীনমন্যতার কথা ভেবে মনের মধ্যে আলাদা কোন ছাপ পড়ে না। এবং কখনই আমি আপনার লেখা যোগ্যতার সাথে কম্পিটিশন করি না, করব না। আমি শুধু আমার মত লিখি, লিখব।
লেখায় আমার নিজের ছাপ আছে। সবাই বলছে বলে আমি বলি না। সবাই ভাবছে বলে আমি ভাবি না। সবাই দেখতে ছুটছে বলে আমি দেখি না। একটু অন্যভাবে বলি ভাবি দেখি। এই বলা ভাবা বা দেখা অন্যভাবে বলে অন্যজনের মেনে নিতে সময় লাগে। যুক্তির বাইরে যে যুক্তি আছে, যুক্তির মধ্যে যে যুক্তি আছে, যুক্তির মধ্যে তথ্য আছে তাকে সঙ্গে নিয়ে আমি চলি। তাই লিখি। জনমানসকে সেই ভাবনায়, বলায়, দেখায় অভ্যস্ত করে তোলা খুব একটা সহজ না।
তাই আমি লিখি। তোমার মনে হয় হীনমন্য লেখা। আমারও মনে হয় কেন এমন একভাবনা লেখা। তবুও লিখি। হয়তো বা নিজেকে এই হীনমন্য থেকে বের করে আনার জন্য লিখি। তাই লিখি।
প্রথম যৌবনে কোন সুন্দরী মেয়ের সামনে (সে আমার সহপাঠী বা পড়শী বা অন্য কেউ) আমার এই হীনমন্যতা আমাকে পিছিয়ে রাখত। ভাবতাম আমার চেয়ে আরো হ্যাণ্ডসাম বুদ্ধিমান প্রয়োগশীল আছে তাদের কাছে আমি কিছুই না। আবার সেই সুন্দরী সম্পর্কে আমার মনের মধ্যে কুচকুচ হলেও দেখেছি আমাকে তারাও কেমন পাশ কাটিয়ে যাওয়া নজরে দেখত (অবশ্য এ সবই আমার মনের কথা)। ফলে প্রেমে পড়তে পারি নি বা তাদেরকে প্রেমে ফেলতে পারে নি আমার এই হীনমন্যতা।
আমার পাশের জন কি সুন্দর মন ভোলানো গুজগুজ ফুসফুস করে যাচ্ছে। মেয়েটি শুনছে অথবা ছেলেটি আত্মহারা হয়ে যাচ্ছে। তারা যে আমার চেয়ে দারুণ কিছু (রূপে বা গুণে) তা কিন্তু নয়। তবু তাদের মধ্যে বেশ একটা যৌবনের ঝাঁপিয়ে পড়া দেখেছি। যৌবনের প্রাণবন্ত হতে দেখেছি। আর আমি? এই হীনমন্যতায় লুকিয়ে স্বপ্নে দেখেছি, নিজের মনে পাশে পাওয়ার চেষ্টা করেছি। দু এক জায়গায় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। তাতে দেখেছি অন্য আর এক ওভারস্মার্ট জাঁকিয়ে বসে আছে। আমি তো ভাবতেই পারি না - 'আমাকে ডিঙিয়ে যাবে, কে আছে বে?' "এই কলেজের সেরা সুন্দরীকে আমি ঠিক পটিয়ে তুলব।"
ফলে অধরা প্রেম প্রথম যৌবনকে গড়িয়ে দিয়েছে এই হীনমন্যতা। তবে মন খারাপ হত না। কেন পারি নি এমন উদ্ভট ভাবনাও মনে আসে নি। কেন না আমার হীনমন্যতা। আমি তো অতটা যোগ্য নই। এ ভাবনা তো ছিল।
কিন্তু তারপরের সময় পেরিয়ে কর্মক্ষেত্র এবং বিয়ে ও প্রেম। (কিছু হোক না হোক আমাদের দেশে বিয়েতে কোন অসুবিধা নেই।) সবই তো আমার মনের মত। এখনও। প্রেমও বেশ গতিশীল। সেদিনের সেই সব রোমিও এখনও পাল্টে পাল্টে প্রেমের বিচিত্র খুঁজছে। সেদিনের সেই সুন্দরীর পেছন যাত্রা আবার সুন্দরী খুঁজছে। সন্তুষ্টির পরিধি বাড়তে বাড়তে বিড়ম্বনার আকার নিচ্ছে। অনেকেই হারিয়ে গেছে। হারিয়ে ফেলেছে নিজস্ব প্রেম সংস্কার। আবার কিছু প্রেমিক প্রেমে ঝুলছে।
আমার হীনমন্যতায় যা মিলেছে তাতেই আমি পূর্ণ সন্তুষ্ট। পরিপূর্ণ প্রেমের দিশা এককেই নিবিষ্ট। তাহলে ওভার স্মার্টনেশ, দেখানোর ভাবনা, ভুজুংভাজুং, ফিসফাস কেন দরকার? কিছু হীনমন্যতা নিজেকেই বাঁচিয়ে রাখার কিছু মন্ত্র তো বটে।
যৌবনের প্রারম্ভে বিপরীত লিঙ্গের প্রেম হাতছানির সাথে সাথে গুরুত্বপূর্ণ অন্য আর এক অধ্যায় থাকে তা হল অধ্যয়ন, পড়াশুনা। এই টিন এজ সময়ে যৌবনের মধুর হাতছানি পেরিয়ে পড়াশুনায় মনোনিবেশ বেশ কঠিন। আবার গুরুত্বপূর্ণ পাঠ এই সময়। আমার এই প্রথম যৌবন হাতছানিতে আমার হীনমন্যতা আমাকে পড়ার দিকে টেনে নিয়ে গেছে। বড় হতে হবে এত বড় ভাবনা হয়তো ভাবি নি, ঠিক কথা।
কিন্তু আমার ভাবনা, ওই অপরূপার যোগ্য আমি নই, স্কুলের সেরা সুন্দরী আমার সঙ্গে কথা বললে আমার মনে হত 'আমার লগে কথা কইছে' এই আমার বড় পাওয়া। ওর জন্য কোন না কোন উত্তমকুমার তো আছে। আমাকে আমার পড়শুনায় এগিয়ে রেখেছে।
অথবা আমার হীনমন্য স্বভাবের জন্য হয়তো সুন্দরী তো দূরের কথা কেউই আমাকে প্রথম যৌবন কদম ফুল দেয় নি। ফলে যে একটু আধটু যৌবন বিচ্যুতি আমার অধ্যয়নে বিঘ্ন ঘটিয়েছে তাতে আমার নিজের পায়ে দাঁড়াতে অসুবিধা হয় নি। যদিও এ দাঁড়ানো একেবারেই সাধারণ। বলা না বলার মত।
তাই হীনমন্যতা কিছুটা হলেও জীবনপথ। হয়তো হ্যাঁ, আমার ক্ষেত্রে। হয়তো না, তোমার ক্ষেত্রে।
আজকাল গ্রামের বেশিরভাগ গরীব ছেলে মেয়েরা এই কারণে হয়তো পড়াশুনায় ভালো রেজাল্ট করছে। কেন না তারা বাবা মা পাড়া প্রতিবেশীর কষ্টের সাথে নিজেকে মেলায়। এই কষ্ট থেকে নিজেকে রেহাই করার চেষ্টা করে। রাস্তা দেখতে পায় একটাই। পড়াশুনা।
ফলে যেটুকু প্রেম ফষ্টি নষ্টির সুযোগ পায় তা তাদের পড়ায় খুব একটা বিঘ্ন ঘটায় না। এখানেও সেই হীনমন্যতা তাদেরকে পথ দেখায়। আমার মত। এরা পরবর্তীতেও খুব একটা প্রেমে সফল হয় না। দেখাশুনা করে আমার মত তারাও বিয়ে করে।
আবার প্রথম যৌবনের স্রোতে (টিন এজে) সমর্পিত আবার অধ্যয়নেও আদর্শ। এমন হয়তো অনেকেই আছে। তাদের দৃঢ় প্রত্যয়কে হাজার সেলাম। তারা এককদর্শী। আমার মত হীনমন্য নয়।
কলেজ লাইফে দু এক চুমুক মুখে দিয়ে দেখেছি তারপর আর ও পথ মাড়াই নি। কেন না আমার মত এই তো সাধারণ ছেলে মদ খাওয়ার মত বিশাল কেউকেটা হতে কি পারব? কিংবা হওয়া কি উচিত? বউকে লুকিয়ে ছেলের চোখের আড়ালে কিংবা ঘরের দরজা বন্ধ করে পার্টি মুডে থাকার মত থাকতে আমার ধৃষ্টতা আমাকে সায় দেয় না। এই রকম হীনমন্য ভাবনায় আমি আর মদ স্পর্শ করতে পারি নি। তাছাড়া আমার দেখাদেখি আমার প্রজন্ম যাতে মদ না খাওয়া শেখে সেদিকে খেয়াল রেখে আমি এভাবেই বড় হয়েছি। প্রজন্মের ভাবনায় তা হয়তো সফল নাও হতে পারে। কিন্তু আমি আমার নিজের কাছে হীনমন্য সংস্কারে দৃঢ়চেতা হয়ে থাকব এও বা কম কিসে? বলতে পারব, "আমাকে দেখে আমার ছেলে মদ সিগারেট খাওয়া শেখে নি।"
মদ খাওয়া ছাড়াও সেলিব্রেশন করা যায়। এ রকম ভাবনা আমার ক্ষেত্রে, আপনার ক্ষেত্রে অন্য হতেই পারে। কেন না আপনি তো আর আমার মত হীনমন্য নন। তবে যাই হোক, মদ নিশ্চয় জীবনের অপরিহার্য নয়।
ঠিক একই রকমভাবে অন্যান্য নেশা। যেমন সিগারেট পান বিড়ি গুটখা খৈনি ইত্যাদি কোন কিছুর ধারেকাছে আমি নেই। কেন না রাস্তা দিয়ে লম্বা এক খানা সিগারেট টানতে টানতে তোমার/আপনার সামনে দিয়ে চলে যাওয়ার মত লাট সাহেব আমি নই। হতেও পারব না। গুটখা মুখের মধ্যে কচর কচর করে চিবোতে চিবোতে তোমার/আপনার সাথে কথা বলার মত আমার অতটা বুকের পাটা নেই। ফলে এসব থেকে দূরে থেকে গেছি।
কিংবা আমার প্রজন্ম এমন করলে আমার মোটেই ভাল লাগবে না। আমি যেমন লাট সাহেবের মত সিগারেট ফুকতে ফুকতে চলে যেতে পারব না তেমনি আমার প্রজন্ম আমার/আমাদের সামনে দিয়ে গেলে আমারও ভাল লাগবে না। এই ভাবনাতে আমি আমার জীবন এই হীনমন্য করে তুলেছি। এমন কি লুকিয়েও তা করি না। আমি জানি, পৃথিবীতে এই বিশ্ব সংসারে কোন কিছু লুকানো নয়, আজ না হয় কাল তা প্রকাশ্য হবেই।
যদি আমার প্রজন্ম সিগারেট ফুকতে ফুকতে আমার সামনে দিয়ে যায়, যদি মদ খেয়ে বাড়ি ফেরে, যদি প্রেমে বেল্লেলাপনা করে তাহলেও আমি নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারব আমার থেকে এসব শেখে নি। আমার প্রজন্ম আমার দিকে আঙুল তুলতে পারবে না - তুমি করতে পারো, আর আমি করলেই দোষ?
অনেকদিন আগে আমার তখন টিন এজ শেষের পথে। আমি বাস ধরার জন্য বড় রাস্তায় (বাসস্ট্যাণ্ড বলা যেতে পারে) দাঁড়িয়ে আছি। একটা দূরপাল্লার বাস এল। তাতে অতীব সুন্দরী এক জানলার ধারে বসে। আমি নির্বাক দৃষ্টিতে প্রথম ঝলকে মুগ্ধ হয়ে যাই। খুব ভাল লেগে যায়। যেমন ফোটা ফুলকে ভাল লাগে। তাই দেখতেই থাকি আর দেখতেই থাকি। কিন্তু মেয়েটি আমার এ দেখা বুঝতে পেরে হাল্কা মুখ বেঁকিয়ে তাচ্ছিল্য দিয়েছিল। বাস দাঁড়িয়েছিল প্রায় দু মিনিট। সেই অবজ্ঞা আমি হৃদয়ে জমিয়ে রেখেছি।
আমি তো আর আমার চেহারা আর সুন্দর করতে পারব না। টাক মাথায় চুল গজাতে পারব না। বেঁটে হয়ে লম্বা হতে পারব না। দেহ পেশি বহুল করতে পারব না। হিরোদের মত লুকও গড়ে তুলতে পারব না। ক্যাঁ ক্যাঁ করে যেমন বলি তার চেয়ে ভাল বলতে পারব না। অন্যায় হলেও তোমার মন যোগানোর মত মিথ্যে বলতে পারব না। চোখ যে সুন্দর দেখে হাঁ করে সেই দেখা ছেড়ে দিতে পারব না। তাই তাচ্ছিল্য সাথে করেই বয়ে বেড়াতে হবে। কিছুজনের না ভালো লাগাকে মেনে নিতে হবে। এইটুকু মেনে নেওয়া আমার কাছে অনেক সহজ। আমার কোন অসুবিধাই হয় না হবে না। কেন না আমি যে হীনমন্যতায় ভুগি।
তাছাড়া আমার এই টাক মাথার জন্য, বেঁটে হওয়ার জন্য, ভাল দেখতে না হওয়ার জন্য, ক্যাঁ ক্যাঁ গলার জন্য, তোমার মন যোগানো কথা না বলার জন্য আমি কি কি হারিয়েছি? আর এগুলো থাকলে আমি কি কি পেতাম? এই দুই হিসেবে আমার হীনমন্য মানসিকতায় দেখেছি বেশি কিছু পাওয়া যায় না। বরং এগুলোর দিকে নজর দিলে হারাতে হতে পারে অনেককিছু। আপনার মানসিকায় অসীম পাওয়া পেতেই পারেন।
আমি জানি আমার চেয়ে আরো আনেক বেশি সুন্দর আছে, আমার চেয়ে আরো ভাল ছেলে আছে, আমার চেয়ে আরো ভাল বাবা আছে, আমার চেয়ে আরো ভালো দাদা আছে, আমার চেয়ে আরো ভাল স্বামী আছে, আমার চেয়ে তোমার আরো অনেক ভাল বন্ধু আছে তাই আমি যেটুকু সেটুকুই। তার জন্য কোন গর্ব নেই। অনুশোচনাও নেই।
আমাকে সুন্দর হিসেবে, ভাল ছেলে হিসেবে, ভাল বাবা হিসেবে, ভাল স্বামী হিসেবে, ভাল বন্ধু হিসেবে মানতেই হবে এমন কোন বাধ্যবাধ্যকতাও নেই। খুব ভালো আমাকে যদি তুমি বলো, তোমরা বলো, সে বলে, তারা বলে তাহলেও আমি যেমন খুব আহ্লাদিত হই না। তেমনি কেউ নিন্দে মন্দ করলেও হঠাৎ আপসেট হয়ে পড়ি না। আমার হীনমন্যতা আমাকে সেই মাপকাঠি দিয়েছে। তাই আমি সব ব্যাপারে স্বাভাবিক। আমি তো জানি, আমি শুধুই আমি।
আমি কোন তুলনায় থাকি না। তাই কেউ ভাল নিয়ে চলে গেল আমি কেন পেলাম না এটা ভাবি না। আবার কেউ আমাকে সব খারাপ দিয়ে গেল আমি তা নিয়েও ভাবি না। কেন ভাবব? আমার জায়গায় আমি আদৌ ছন্নছাড়া নই।
তবু আমি চাইব প্রত্যেকে নিজস্ব বোধে, নিজস্ব ভাবনায় উজ্জীবিত হোক। নিজেকে নিজে নির্মাণ করুক।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
রায়হান আজিজ ১৫/১০/২০১৭একদিন সুদিন আসবে। একদিন সবার ভাললাগাকে সবার ভাল লাগবে।
-
কালকেতু (দুর্জয় কবি) ১৩/১০/২০১৭ভালো লাগ ল
-
আজাদ আলী ১১/১০/২০১৭Valo