www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গোপলার কথা - ৪৩

উৎসব
-----

প্রতিটি উৎসব বাঙালী জীবনের সাথে ওতোপ্রতভাবে জড়িয়ে আছে। উৎসবের হাত ধরে জনযাত্রা দুঃখ ব্যথা কষ্টের মাঝেও আনন্দের পরশ পায়। সবার উপরে শরৎকালের দুর্গোপূজো। সারা বাংলাজুড়ে এর আনন্দের রেশ ছড়িয়ে পড়ে। একমাস আগে থেকে সারা বাংলা খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
বৃষ্টির দাপট কমে যায়।আকাশে আগমন ঘটে পেঁজা তুলোর মত মেঘ। ভোরের দিকে শিশির। সকালের ঝরে পড়া শিউলি ফুল। সাদা ভেলার মত দুলতে থাকা কাশফুল। উৎসবের আমেজ বাড়িয়ে দেয়। অন্য যে কোন উৎসবের থেকে দুর্গাপূজো প্রকৃতির সাথে জড়িয়ে বাঙালীর জীবনের শ্রেষ্ঠ উৎসবের আমেজ এনে দেয়।
সবাইয়ের জন্য নতুন জামা, উপরি কিছু বোনাস, ছুটি পেয়ে ( সে কাজের থেকে অথবা পড়া থেকে) ইচ্ছেখুশি মত ঘুরে বেড়ানো, আনন্দের স্রোতে গা ভাসিয়ে দেওয়া হয়তো সবার জন্য সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু প্রতি বছর পূজোর গন্ধে গা ভাসিয়ে দেয় প্রতিটি বাঙালী জনযাত্রা।
এই উৎসব সবার জন্য কিছু না কিছু এনে দেয়। প্রতিমা শিল্পী, প্রতিমার সাজসরঞ্জাম, প্যাণ্ডেলের সাজসরঞ্জাম ইত্যাদির জন্য অনেকেই যুক্ত। যারা এই সময়ের জন্য মুখিয়ে থাকে। এই রকম উৎসবে তাদের আয় উপায় হয়।
যে সমস্ত নতুন জামা কাপড় ঘর সাজানো পাড়া সাজানো ইত্যাদির জন্য প্রচুর কর্মী এক্সট্রা কাজ পায়। আয় উপায় বাড়তে থাকে। যে ক্লাবের খরচ পাঁচ লাখ দশ লাখ তারা তাদের টাকা বিভিন্ন খাতে ব্যয় করে যা এইসব কর্মীদের কাছে পৌঁছে যায়। যে আলোর রোশনাই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে তাতে অনেকের অনেক পরিশ্রম থাকে। এই শ্রমের সঠিক মুনাফা বা মূল্য এই শারদীয়াতে সবচেয়ে বেশি বিলি বণ্টণ হয়।
যে নতুন পোশাক আশাক তৈরি করা হয়, তার থান কাপড় যেখান থেকে আসে, থান কাপড়ের জন্য যে সুতো লাগে সমস্ত ক্ষেত্রে অজস্র মানুষ কাজ করে যারা এই উৎসবের দিকে তাকিয়ে থাকে।
প্রতি উৎসবে কোথাও না কোথাও মেলা হয় সেই মেলা নানান খেলনাবাতি ঘরের টুকিটাকি থেকে রেডিমেট খাওয়ার দোকান বসে। এসব অতি তুচ্ছ অপ্রয়োজনীয় আবার হলে ভাল হয় জিনিসপত্র কেনা ও বিক্রিবাটার সাথে একটা প্রদেশে, শহরীয় ও গ্রাম্য জীবনে অনেক মানুষ যুক্ত থাকে। যারা এই উৎসবের দিকে হাঁ-মুখে তাকিয়ে থাকে।
এই উৎসব হিন্দুর নাকি মুসলমানের নাকি খ্রীষ্টানের এসব ভাবেই না খেটে খাওয়া মানুষরা। দুর্গাপূজার প্যাণ্ডেলের পাশের দোকান থেকে এগরোল খাওয়ার সময় কেউ ভাবেই না যিনি দিচ্ছেন তিনি হিন্দু নাকি মুসলমান। সে রকম ভাবে ঈদে বাইরে বেরিয়ে বিরিয়ানির অর্ডার দেয় অন্য কিছু ভাবে না।
অর্থাৎ এইসব উৎসবে অনেকেই এবং সবাই নানাভাবে অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি উৎসবে সবাই তাই খুশিতে থাকে।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৭৬৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৪/০৯/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast