গোপলার কথা - ৩৪
ছেলে নাকি মেয়ে
ভাবনা এভাবে শুরু করা যেতে পারে। ছেলে না মেয়ে। নারী না পুরুষ। সমান তালে দুজনেই সমরেখ কি?
যদিও প্রথম পার্থক্য। নারী এবং পুরুষ।
কিন্তু শিশু বলতে উভয়কেই বোঝায়। আর তাদের মানুষ হিসেবে মানুষ করার দায়িত্ব থাকে বাবা মায়ের এবং সমাজের। এই মানুষ করা ভাবনা থেকে ছেলে মেয়ে বিভাজন শুরু হয়ে যায়।
মেয়ে মানুষ করার ক্ষেত্রে পর পর ভাবনা থাকে। আর ছেলে আপন আপন। অর্থাৎ নিজের বা নিজেদের কাছে কাছাকাছি রাখা বা রাখা যাবে এই ভাবনায় শিশুটির খাওয়া পরা দেখাশোনা আদব কায়দা ও পড়াশোনা ইত্যাদি নির্ধারিত হয়।
যেমন, মেয়ে অন্যের বাড়িতে চলে যাবে তাই যতটা শিখে শিখুক না হলেও ক্ষতি নেই। কেন না মেয়ে মানেই অন্যের ভরসায় ভাল থাকবে। ভাল পাত্র দেখে বিয়ে দেব। ভাল সংসার পাবে। তাদের সাথে তাদের ভরসায় মিলে মিশে থাকবে। ফলে সেও সেই মানসিকতায় বড় হয়। হয়তো বাড়ির কেউ সেভাবে ভাবে না। অনেক পরিবার এই ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু সমাজকে দেখে শিশুটিও মনে প্রাণে তাই শিখে যায় বা সেভাবে বড় হয়। অর্থাৎ ফাঁকির রাস্তা সেখান থেকে শুরু।
অন্যদিকে ছেলের ক্ষেত্রে একটা কিছু করতেই হবে। কিংবা করে দিতে হবে। তার মানে সেভাবে চাপ তৈরি করা। আবার সেই চাপের জন্য সেই চাপে সেই শিশু কিছুটা এগোনো রাস্তায় ফাঁক খুঁজতে থাকে। তার মানে, ছেলেকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো মানসিকতা, না হলে বাবা মায়ের ব্যর্থতা প্রকট। আবার মেয়ের ক্ষেত্রে সেই মানসিকতা হল, কিছু করা গেল তো ঠিক আছে, না হলে ভাল ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দেব ওখানে ভাল থাকবেই। নিজে নিজে ভাল না থাকলেও হবে।
তাহলে কি দাঁড়াল? ছেলে মানুষ করা কঠিন। মেয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা সহজ। আপনাকে যদি দায়িত্ব দেওয়া হয় আপনি কি চাইবেন? ছেলে না মেয়ে? ভাবুন।
এবার ছেলের ক্ষেত্রে আপনি টিন এজের পর আর তার যৌবন আগমন জনিত কাজকর্মের অনেককিছুই টের পাবেন না। দেখবেন বাবা মায়ের নানান ঘেরাটোপের বাইরে সেও ঠিক চালাকি অনায়াসে বেছে নেয়। এই যেমন নেশা করা। প্রেম করা। ইত্যাদি।
কিছুতেই মনের খারাপ ভাল ইত্যাদির হদিশ পাবেন না। বাবা মা যতই বন্ধুর মত ব্যবহার করুক, তার সম বয়সী বন্ধুরা পড়াশুনার বাইরে যে হাতছানিকে ডাক দেবে, প্রশয় দেবে তা বাবা মা কিছুতেই মেনে নেবে না। অর্থাৎ সে কিছুতেই আপনার সাথে পড়াশুনার বাইরের সে সব শেয়ার করবেই না। এই হাতছানি থেকে অনেক ছেলে বেরতেই পারে না। অনেক সময় সে সব বাবা মা জানতে পারলেও তখন অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। ছেলে চলে যায় বাবা মায়ের শাসনের নাগালের বাইরে।
সে তুলনায় মেয়ে আপনার সীমানার মধ্যেই থাকবে বা থাকে। যেহেতু আপনি জানেন মেয়ে মানেই অনেকটাই বেশি মান সম্মান জড়ানো। সেও নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক সম্পর্কে সমাজের ভিন্ন মানসিকতায় ওয়াকিবহাল। তাকে সেই মর্যাদার বিবেচনায় বড় হতে দিলে খুব একটা অসুবিধা হবে না। সে তার সমস্ত হয়তো মাকে কিংবা বাবাকে বলবে না বা বলতে চাইবে না। কিন্তু ঠিক মত ওয়াচ করলে হয়তো বোঝা যেতেই পারে। বাইরের অনধিকার হাতছানিতে মেয়েরা চট করে সাড়া দেয় না। সে তার সীমানায় একটা বেড়া খুঁজে পায়। বাবা মায়ের অনেকবেশি না-নজরে সে বেরিয়ে যেতে পারে। না হলে সম্ভাবনা কম।
আবার ঠিক একই রকমভাবে নেশার ক্ষেত্রে মেয়েদের মধ্যে যতটা ছড়ায় ছেলেদের ক্ষেত্রে তা পুরো শতাংশই ছড়িয়ে যায়। এই নেশা করা পান বিড়ি সিগারেট খৈনি গুটখা মদ ভাঙ ড্রাগ ইত্যাদি কিছুতেই ছেলেদের ক্ষেত্রে ওয়াচ করেও ধরতে পারবেন না। যেদিকে বাঁধন দেবেন তার ঠিক অন্য দিকে দিয়ে অন্য রাস্তা খুঁজে ছেলেরা বেরিয়ে যাবে। ঠিক এই কারনে সমস্ত নেশা সামগ্রী বেশিরভাগ ছেলেদের হাত ধরে ছড়িয়ে পড়ছে।
মেয়েরা যদিও বা করে আপনি এলার্ট থাকলে তা সহজেই ধরতে পারবেন। বাবা মায়ের দায়িত্বশীল ভাবনায় সহজেই ফিরিয়ে আনা যায়।
এই বিপথে যাওয়া ছেলে মেয়ের মধ্যে মেয়েকে যত সহজে ফিরিয়ে আনতে পারবেন ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। যদি না ছেলে নিজে ফিরতে চায়। ছেলেদের মধ্যে একটা জেদি একগুঁয়ে ভাব কাজ করে।
এই একগুঁয়ে মনোভাব মেয়ের ক্ষেত্রে যতটা পরিবর্তনশীল ছেলের ক্ষেত্রে ততটা নয়। তাই বিপথে যাওয়া থেকে ফেরাতে ছেলের ক্ষেত্রে খুব সাবধানে মেপে এগোতে হয়। কখন কি করে বসে কিংবা আরও বেশি কিছু না হয়ে যায়। মেয়ের ক্ষেত্রে এই ফেরানো জন্য একটু রূঢ় হওয়া যেতেই পারে। আর একটু বেশি নিরাপত্তা নির্ভরতার আশ্বাস দিলে সহজেই মানানো যায়।
এবার যদিও আপন তবুও যদি এ রকম ভাবনা ভাবি যে এই শিশুটি শুধু ছেলে, এই শিশুটি শুধু মেয়ে। তাহলে দুজনকে যদি সমানভাবে মানুষ করি তাহলে মেয়েরা বিয়ের পরে যার ঘরে যাবে তার ঘর থেকেও তো মেয়ে বেরিয়ে আসবে ফলে সবার ঘরে এই মানুষ করা মানসিকতায় জোর থাকবে। ছেলেও এই বিভাজন থেকে বেরিয়ে আপনাআপনি দৃঢ় চেতা হতে শিখবে।
এই মানুষ করা ব্যাপারটা ছেলে মেয়ের বোধ তৈরি পর্যন্ত সম্ভব। এই বোধ যেমন মেরুকরণে গড়ে উঠবে তেমনভাবেই তা রূপায়িত হবে। আর সবাই যে দেখে শেখে তা তো নয়।
পাড়া প্রতিবেশী আশেপাশে কেউ এত পড়াশোনায় মশগুল নয় কিন্তু ছেলেটি বা মেয়েটি সবসময় পড়াশুনায় লেগে থেকে অনেক দূর এগিয়ে চলে। আবার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়র প্রফেসর কবি সাহিত্যিকের ছড়াছড়ি কিন্তু ছেলেটি বা মেয়েটি বিন্দাস বখে গেল। আসলে বোধ তৈরির পদক্ষেপ ছেলের ক্ষেত্রে আপনি কিছুটা প্রভাবিত করতে পারবেন কিন্তু মেয়ের ক্ষেত্রে দেখা গেছে পুরোটাই প্রভাবিত।
তার মানে আপনি ভাল থাকলে অর্থাৎ আপনি মদ বিড়ি সিগারেট গুটখা বা পরকীয়াতে না থাকলেও আপনার ছেলে এসব বিন্দাস ধরতে পারে। আবার আপনি সমাজসেবা বা যতই ভাল কাজ করুন তা সে নাও গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু মেয়ে এসবের মধ্যে হয়তো যায় বা যাবে কিন্তু শতাংশে খুবই কম।
তার মানে বাবা মায়ের আদর্শকে আজকাল ছেলেরা যতটা বস্তাপচা ভাবে ততটা কিন্তু মেয়েরা ভাবে না। ফলে ছেলেরা বাবা মায়ের সেই সব আদর্শ সদর্পে ছুঁড়ে ফেলে দেয় ফলে ফলো করার কোন প্রকার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু মেয়েরা হয়তো ফলো করে না কিন্তু আদর্শকে এতটা অবহেলার চোখে দেখে না। ফলে ছেলের তুলনায় মেয়ের গা ঘেঁষে আপনি নিজেকে কিছুটা মানুষ করেছেন এই মানসিকতায় জ্বল জ্বল করতে পারবেন। যেমন শ্বশুরবাড়িতে কোন মেয়ে বাপের বাড়ির অপমান সহ্য করে না।
কিন্তু ছেলে সুযোগ পেলে নিজেকে নিজেই ছাড়ে না বা নিজের বাড়ির সম্পর্কে অন্য কেউ অপমান করলে প্রতিবাদ হয়তো করে তবে তা অনেকটাই মৃদু। উল্টে মাকে বা বাবাকেই দোষ পেতে হয়। কেন না ছেলের প্রেস্টিজ চলে যায়।
কেউ কি চায় আমার ছেলে বা মেয়ে অন্যকে মাড়িয়ে এগিয়ে যাক? সবাই চায় নিজস্ব বুদ্ধিমত্তায় এগিয়ে যাক। এই বুদ্ধিমত্তা তৈরি হয় অনুশীলনে। অনুশীলন ছাড়া কোনমতেই বুদ্ধির বিকাশ সম্ভব নয়। আর এই অনুশীলনে কঠিন থেকে কঠিনতর বিষয় আরও সহজ রূপে বুদ্ধির বিকাশ ঘটায়। ফলে যে কোন ছেলে বা মেয়ে কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে বুদ্ধিমত্তার শিখরে পৌঁছায়।
তাহলে ভাবনার কিছু নেই। আমার ছেলে বা মেয়ে বোকা আর ওর ছেলে বা ওর মেয়ে দারুণ বুদ্ধিমান - এ রকম ভাবার।
যে ব্যাপারটায় আপনি ছেলে বা মেয়েকে বোকা ভাবছেন সেই ব্যাপারটাতে সে কতটা অনুশীলিত হচ্ছে দেখুন। বুদ্ধিকে নির্দ্ধাধায় অন্য কাজে লাগাচ্ছে সেটা খেয়াল করেছেন কি?
নিজের বুদ্ধি পড়াশোনায় ব্যয় না করে, অনুশীলন না করে অন্য কাজে অনুশীলন করছে। ফলে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ার উপর দোষ চাপছে। পরীক্ষায় একই রকম লেখায় কেউ কম পায় কেউ বেশি পায়, এর অন্যতম কারণ এই ছাত্র বা ছাত্রী সাপেক্ষে অনুশীলনের পার্থক্য।যা শিক্ষকের জহুরী চোখে সহজে ধরা পড়ে যায়। মেধা বা বুদ্ধির অপচয় অর্থাৎ পড়াশোনা বাদে অন্য জায়গায় অনুশীলন ছেলের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যাচ্ছে ইদানিং। মেয়েরা বুদ্ধি বা মেধার অপচয়ের পরিসর ততটা পায় না। ফলে না চাইলেও পড়াশোনাতে লাগাতে বাধ্য হয় বা লাগায়।
ছেলে বা মেয়ে মানুষ করার ক্ষেত্রে আপনার আসল পরীক্ষা তার টিন এজ সময়ে। ছেলে মেয়ের এই টিন এজ সময়ে আপনি তাকে কতটা গাইড করলেন তার উপরে আপনার ছেলে বা মেয়ে মানুষ করার কৃতিত্ব।
কেন না তার আগে ছেলে বা মেয়েকে পড়ালেন, খাওয়া পরার খেয়াল রাখলেন, নিরাপত্তার দিকটা ভাল করে দেখলেন, সব জায়গায় সাথে সাথে গেলেন এই পর্যন্ত। তারপরে তার যখন আপনাকে বাদ দিয়ে পড়া শুরু হবে, খাওয়া দাওয়ার মর্জি শুরু হবে, আপনার 'সাবধানে যাবি' আর ঠিক শুনছে না, আপনাকে কোথাও সাথে নিয়ে যেতে চাইছে না - তখন কিভাবে সামাল দেবেন তাতেই বাবা মায়ের ছেলে মেয়ে মানুষ করার সঠিক অবস্থান। অর্থাৎ সবদিক দিয়ে তখনই বাবা মায়ের সঠিক টেনশন।
বাইরে থেকে দাঁড়িয়ে অনেকেই বলে থাকেন - তোর ছেলে মেয়ে তো বড় হয়ে গেল। আর পড়া দেখতে হয় না। যেখানে যখন দরকার একা চলে যেতে পারে। তোর আর ভাবনা কি?
কিন্তু সেই বাবা মা যদি ছেলে মেয়ে মানুষ করার ভাবনার মধ্যে থাকে তাহলে সে জানে কঠিন সময় সবে শুরু। নজর আরো তীক্ষ্ণ করতে হয়। আগে যা দেখা যেত তাই দেখলে চলবে কিন্তু এই টিন এজে যা দেখার নয় বা দেখা যাচ্ছে না বা কেমন যেন উল্টো পথ এ সমস্ত দেখতে হয়। দেখা শিখতে হয়।
যা মেয়েদের ক্ষেত্রে খুব সহজ কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে খুব কঠিন। একটু নজরের বাইরে গেলে পা ফস্কে কোথায় যে হারিয়ে যাবে তা ভাবনার অতীত। শুধু পড়াশুনা বা মানুষ হওয়া থেকে হারিয়ে যায় তা তো নয়, জীবন থেকেও হারিয়ে যাচ্ছে।
এই অবস্থানে যে বাবা মা সফল তাদের ছেলে বা মেয়ে সমাজের বুকে মানুষের মত কিছু একটা করেছে। এই টিন এজ সামাল দিতে আপনাকে তার আগের অবস্থার দিকে নজর দিতে হবে।
এই টিন এজ সময় বা প্রথম যৌবনের হাতছানি সব সময় নিষিদ্ধের দিকে হাত বাড়ায়। লুকিয়ে করার চেষ্টা করে। এই সময়ে পা ফস্কে অবৈধে জড়িয়ে পড়া, চাই না চাই না করেও নিষিদ্ধে চুমুক দেওয়া, সেণ্টিমেণ্টের একেবারে উত্তুঙ্গ শীর্ষে থাকা, পড়াশুনা থেকে হারিয়ে যাওয়া কিংবা চরম পথ বেছে নেওয়া ইত্যাদি এই টিন এজের বিশিষ্ট ধর্ম।
এসব থেকে লক্ষ্য নজরের মাধ্যমে, নিয়মিত নিরীক্ষণের মাধ্যমে রোধ করা বাবা মায়ের ধর্ম। এই অবস্থানে আপনি ছেলে বা মেয়েকে কতটা আগলে রাখতে পারলেন তার উপরে ছেলে বা মেয়েটির যেমন ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে। তেমনি সে মানুষের মত মানুষ হয়।
টিন এজের আগে আপনি তাকে জোর করে যতটা করাতে পারবেন এই টিন এজে তা পারবেন না। এই টিন এজের জোর জবরদস্তি ছেলে বা মেয়েকে বিপথে অথবা নাই পথে (মৃত্যু) ঠেলে দেয়।
তাই পড়ার মাঝে আঁকা গান আবৃত্তি নাচ এবং অবশ্যই বই পড়া এবং বই পড়ানো ইত্যাদি ইত্যাদি যত রকমের ভাল অভ্যাসের জন্য জোর করা যেতেই পারে। অর্থাৎ শিক্ষা ও শিক্ষা সম্পর্কিত একটা বৃত্ত রচনা করতে হবে যাতে টিন এজ এই বৃত্তের পরিধির বাইরে কোনমতে যেতে না পারে। শিক্ষা ও শিক্ষা সংক্রান্ত বৃত্তে মশগুল থাকলে তাকে আর কোন প্রকার নিষিদ্ধ টেনে নিয়ে যেতে পারবে না। এই ভাল অভ্যাসের মধ্যে অনেক জাদু আছে যেখানে ছেলে বা মেয়ে টিন এজেও সঠিক অবস্থানে থাকতে পারে।
এই জোর করার ক্ষেত্রে ছেলের ক্ষেত্রে যতটা কঠিন মেয়ের ক্ষেত্রে ততটাই সহজ। আবার এই জোর করা ছেলে বা মেয়ে যে কেউ যদি এই ভাল অভ্যাস আত্মস্থ করে ফেলে তাহলে কোন চিন্তাই থাকে না। এখানে দেখা গেছে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে এই ভাবনায় ছেলেরা আত্মস্থ করে সহজে। মেয়েরাও আজকাল সেই ভাবনায় ঢুকে পড়ছে তাই জীবনে এগিয়ে চলছে।
ছেলে এবং মেয়ে।
ভাবনা এভাবে শুরু করা যেতে পারে। ছেলে না মেয়ে। নারী না পুরুষ। সমান তালে দুজনেই সমরেখ কি?
যদিও প্রথম পার্থক্য। নারী এবং পুরুষ।
কিন্তু শিশু বলতে উভয়কেই বোঝায়। আর তাদের মানুষ হিসেবে মানুষ করার দায়িত্ব থাকে বাবা মায়ের এবং সমাজের। এই মানুষ করা ভাবনা থেকে ছেলে মেয়ে বিভাজন শুরু হয়ে যায়।
মেয়ে মানুষ করার ক্ষেত্রে পর পর ভাবনা থাকে। আর ছেলে আপন আপন। অর্থাৎ নিজের বা নিজেদের কাছে কাছাকাছি রাখা বা রাখা যাবে এই ভাবনায় শিশুটির খাওয়া পরা দেখাশোনা আদব কায়দা ও পড়াশোনা ইত্যাদি নির্ধারিত হয়।
যেমন, মেয়ে অন্যের বাড়িতে চলে যাবে তাই যতটা শিখে শিখুক না হলেও ক্ষতি নেই। কেন না মেয়ে মানেই অন্যের ভরসায় ভাল থাকবে। ভাল পাত্র দেখে বিয়ে দেব। ভাল সংসার পাবে। তাদের সাথে তাদের ভরসায় মিলে মিশে থাকবে। ফলে সেও সেই মানসিকতায় বড় হয়। হয়তো বাড়ির কেউ সেভাবে ভাবে না। অনেক পরিবার এই ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু সমাজকে দেখে শিশুটিও মনে প্রাণে তাই শিখে যায় বা সেভাবে বড় হয়। অর্থাৎ ফাঁকির রাস্তা সেখান থেকে শুরু।
অন্যদিকে ছেলের ক্ষেত্রে একটা কিছু করতেই হবে। কিংবা করে দিতে হবে। তার মানে সেভাবে চাপ তৈরি করা। আবার সেই চাপের জন্য সেই চাপে সেই শিশু কিছুটা এগোনো রাস্তায় ফাঁক খুঁজতে থাকে। তার মানে, ছেলেকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো মানসিকতা, না হলে বাবা মায়ের ব্যর্থতা প্রকট। আবার মেয়ের ক্ষেত্রে সেই মানসিকতা হল, কিছু করা গেল তো ঠিক আছে, না হলে ভাল ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দেব ওখানে ভাল থাকবেই। নিজে নিজে ভাল না থাকলেও হবে।
তাহলে কি দাঁড়াল? ছেলে মানুষ করা কঠিন। মেয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা সহজ। আপনাকে যদি দায়িত্ব দেওয়া হয় আপনি কি চাইবেন? ছেলে না মেয়ে? ভাবুন।
এবার ছেলের ক্ষেত্রে আপনি টিন এজের পর আর তার যৌবন আগমন জনিত কাজকর্মের অনেককিছুই টের পাবেন না। দেখবেন বাবা মায়ের নানান ঘেরাটোপের বাইরে সেও ঠিক চালাকি অনায়াসে বেছে নেয়। এই যেমন নেশা করা। প্রেম করা। ইত্যাদি।
কিছুতেই মনের খারাপ ভাল ইত্যাদির হদিশ পাবেন না। বাবা মা যতই বন্ধুর মত ব্যবহার করুক, তার সম বয়সী বন্ধুরা পড়াশুনার বাইরে যে হাতছানিকে ডাক দেবে, প্রশয় দেবে তা বাবা মা কিছুতেই মেনে নেবে না। অর্থাৎ সে কিছুতেই আপনার সাথে পড়াশুনার বাইরের সে সব শেয়ার করবেই না। এই হাতছানি থেকে অনেক ছেলে বেরতেই পারে না। অনেক সময় সে সব বাবা মা জানতে পারলেও তখন অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। ছেলে চলে যায় বাবা মায়ের শাসনের নাগালের বাইরে।
সে তুলনায় মেয়ে আপনার সীমানার মধ্যেই থাকবে বা থাকে। যেহেতু আপনি জানেন মেয়ে মানেই অনেকটাই বেশি মান সম্মান জড়ানো। সেও নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক সম্পর্কে সমাজের ভিন্ন মানসিকতায় ওয়াকিবহাল। তাকে সেই মর্যাদার বিবেচনায় বড় হতে দিলে খুব একটা অসুবিধা হবে না। সে তার সমস্ত হয়তো মাকে কিংবা বাবাকে বলবে না বা বলতে চাইবে না। কিন্তু ঠিক মত ওয়াচ করলে হয়তো বোঝা যেতেই পারে। বাইরের অনধিকার হাতছানিতে মেয়েরা চট করে সাড়া দেয় না। সে তার সীমানায় একটা বেড়া খুঁজে পায়। বাবা মায়ের অনেকবেশি না-নজরে সে বেরিয়ে যেতে পারে। না হলে সম্ভাবনা কম।
আবার ঠিক একই রকমভাবে নেশার ক্ষেত্রে মেয়েদের মধ্যে যতটা ছড়ায় ছেলেদের ক্ষেত্রে তা পুরো শতাংশই ছড়িয়ে যায়। এই নেশা করা পান বিড়ি সিগারেট খৈনি গুটখা মদ ভাঙ ড্রাগ ইত্যাদি কিছুতেই ছেলেদের ক্ষেত্রে ওয়াচ করেও ধরতে পারবেন না। যেদিকে বাঁধন দেবেন তার ঠিক অন্য দিকে দিয়ে অন্য রাস্তা খুঁজে ছেলেরা বেরিয়ে যাবে। ঠিক এই কারনে সমস্ত নেশা সামগ্রী বেশিরভাগ ছেলেদের হাত ধরে ছড়িয়ে পড়ছে।
মেয়েরা যদিও বা করে আপনি এলার্ট থাকলে তা সহজেই ধরতে পারবেন। বাবা মায়ের দায়িত্বশীল ভাবনায় সহজেই ফিরিয়ে আনা যায়।
এই বিপথে যাওয়া ছেলে মেয়ের মধ্যে মেয়েকে যত সহজে ফিরিয়ে আনতে পারবেন ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। যদি না ছেলে নিজে ফিরতে চায়। ছেলেদের মধ্যে একটা জেদি একগুঁয়ে ভাব কাজ করে।
এই একগুঁয়ে মনোভাব মেয়ের ক্ষেত্রে যতটা পরিবর্তনশীল ছেলের ক্ষেত্রে ততটা নয়। তাই বিপথে যাওয়া থেকে ফেরাতে ছেলের ক্ষেত্রে খুব সাবধানে মেপে এগোতে হয়। কখন কি করে বসে কিংবা আরও বেশি কিছু না হয়ে যায়। মেয়ের ক্ষেত্রে এই ফেরানো জন্য একটু রূঢ় হওয়া যেতেই পারে। আর একটু বেশি নিরাপত্তা নির্ভরতার আশ্বাস দিলে সহজেই মানানো যায়।
এবার যদিও আপন তবুও যদি এ রকম ভাবনা ভাবি যে এই শিশুটি শুধু ছেলে, এই শিশুটি শুধু মেয়ে। তাহলে দুজনকে যদি সমানভাবে মানুষ করি তাহলে মেয়েরা বিয়ের পরে যার ঘরে যাবে তার ঘর থেকেও তো মেয়ে বেরিয়ে আসবে ফলে সবার ঘরে এই মানুষ করা মানসিকতায় জোর থাকবে। ছেলেও এই বিভাজন থেকে বেরিয়ে আপনাআপনি দৃঢ় চেতা হতে শিখবে।
এই মানুষ করা ব্যাপারটা ছেলে মেয়ের বোধ তৈরি পর্যন্ত সম্ভব। এই বোধ যেমন মেরুকরণে গড়ে উঠবে তেমনভাবেই তা রূপায়িত হবে। আর সবাই যে দেখে শেখে তা তো নয়।
পাড়া প্রতিবেশী আশেপাশে কেউ এত পড়াশোনায় মশগুল নয় কিন্তু ছেলেটি বা মেয়েটি সবসময় পড়াশুনায় লেগে থেকে অনেক দূর এগিয়ে চলে। আবার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়র প্রফেসর কবি সাহিত্যিকের ছড়াছড়ি কিন্তু ছেলেটি বা মেয়েটি বিন্দাস বখে গেল। আসলে বোধ তৈরির পদক্ষেপ ছেলের ক্ষেত্রে আপনি কিছুটা প্রভাবিত করতে পারবেন কিন্তু মেয়ের ক্ষেত্রে দেখা গেছে পুরোটাই প্রভাবিত।
তার মানে আপনি ভাল থাকলে অর্থাৎ আপনি মদ বিড়ি সিগারেট গুটখা বা পরকীয়াতে না থাকলেও আপনার ছেলে এসব বিন্দাস ধরতে পারে। আবার আপনি সমাজসেবা বা যতই ভাল কাজ করুন তা সে নাও গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু মেয়ে এসবের মধ্যে হয়তো যায় বা যাবে কিন্তু শতাংশে খুবই কম।
তার মানে বাবা মায়ের আদর্শকে আজকাল ছেলেরা যতটা বস্তাপচা ভাবে ততটা কিন্তু মেয়েরা ভাবে না। ফলে ছেলেরা বাবা মায়ের সেই সব আদর্শ সদর্পে ছুঁড়ে ফেলে দেয় ফলে ফলো করার কোন প্রকার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু মেয়েরা হয়তো ফলো করে না কিন্তু আদর্শকে এতটা অবহেলার চোখে দেখে না। ফলে ছেলের তুলনায় মেয়ের গা ঘেঁষে আপনি নিজেকে কিছুটা মানুষ করেছেন এই মানসিকতায় জ্বল জ্বল করতে পারবেন। যেমন শ্বশুরবাড়িতে কোন মেয়ে বাপের বাড়ির অপমান সহ্য করে না।
কিন্তু ছেলে সুযোগ পেলে নিজেকে নিজেই ছাড়ে না বা নিজের বাড়ির সম্পর্কে অন্য কেউ অপমান করলে প্রতিবাদ হয়তো করে তবে তা অনেকটাই মৃদু। উল্টে মাকে বা বাবাকেই দোষ পেতে হয়। কেন না ছেলের প্রেস্টিজ চলে যায়।
কেউ কি চায় আমার ছেলে বা মেয়ে অন্যকে মাড়িয়ে এগিয়ে যাক? সবাই চায় নিজস্ব বুদ্ধিমত্তায় এগিয়ে যাক। এই বুদ্ধিমত্তা তৈরি হয় অনুশীলনে। অনুশীলন ছাড়া কোনমতেই বুদ্ধির বিকাশ সম্ভব নয়। আর এই অনুশীলনে কঠিন থেকে কঠিনতর বিষয় আরও সহজ রূপে বুদ্ধির বিকাশ ঘটায়। ফলে যে কোন ছেলে বা মেয়ে কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে বুদ্ধিমত্তার শিখরে পৌঁছায়।
তাহলে ভাবনার কিছু নেই। আমার ছেলে বা মেয়ে বোকা আর ওর ছেলে বা ওর মেয়ে দারুণ বুদ্ধিমান - এ রকম ভাবার।
যে ব্যাপারটায় আপনি ছেলে বা মেয়েকে বোকা ভাবছেন সেই ব্যাপারটাতে সে কতটা অনুশীলিত হচ্ছে দেখুন। বুদ্ধিকে নির্দ্ধাধায় অন্য কাজে লাগাচ্ছে সেটা খেয়াল করেছেন কি?
নিজের বুদ্ধি পড়াশোনায় ব্যয় না করে, অনুশীলন না করে অন্য কাজে অনুশীলন করছে। ফলে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ার উপর দোষ চাপছে। পরীক্ষায় একই রকম লেখায় কেউ কম পায় কেউ বেশি পায়, এর অন্যতম কারণ এই ছাত্র বা ছাত্রী সাপেক্ষে অনুশীলনের পার্থক্য।যা শিক্ষকের জহুরী চোখে সহজে ধরা পড়ে যায়। মেধা বা বুদ্ধির অপচয় অর্থাৎ পড়াশোনা বাদে অন্য জায়গায় অনুশীলন ছেলের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যাচ্ছে ইদানিং। মেয়েরা বুদ্ধি বা মেধার অপচয়ের পরিসর ততটা পায় না। ফলে না চাইলেও পড়াশোনাতে লাগাতে বাধ্য হয় বা লাগায়।
ছেলে বা মেয়ে মানুষ করার ক্ষেত্রে আপনার আসল পরীক্ষা তার টিন এজ সময়ে। ছেলে মেয়ের এই টিন এজ সময়ে আপনি তাকে কতটা গাইড করলেন তার উপরে আপনার ছেলে বা মেয়ে মানুষ করার কৃতিত্ব।
কেন না তার আগে ছেলে বা মেয়েকে পড়ালেন, খাওয়া পরার খেয়াল রাখলেন, নিরাপত্তার দিকটা ভাল করে দেখলেন, সব জায়গায় সাথে সাথে গেলেন এই পর্যন্ত। তারপরে তার যখন আপনাকে বাদ দিয়ে পড়া শুরু হবে, খাওয়া দাওয়ার মর্জি শুরু হবে, আপনার 'সাবধানে যাবি' আর ঠিক শুনছে না, আপনাকে কোথাও সাথে নিয়ে যেতে চাইছে না - তখন কিভাবে সামাল দেবেন তাতেই বাবা মায়ের ছেলে মেয়ে মানুষ করার সঠিক অবস্থান। অর্থাৎ সবদিক দিয়ে তখনই বাবা মায়ের সঠিক টেনশন।
বাইরে থেকে দাঁড়িয়ে অনেকেই বলে থাকেন - তোর ছেলে মেয়ে তো বড় হয়ে গেল। আর পড়া দেখতে হয় না। যেখানে যখন দরকার একা চলে যেতে পারে। তোর আর ভাবনা কি?
কিন্তু সেই বাবা মা যদি ছেলে মেয়ে মানুষ করার ভাবনার মধ্যে থাকে তাহলে সে জানে কঠিন সময় সবে শুরু। নজর আরো তীক্ষ্ণ করতে হয়। আগে যা দেখা যেত তাই দেখলে চলবে কিন্তু এই টিন এজে যা দেখার নয় বা দেখা যাচ্ছে না বা কেমন যেন উল্টো পথ এ সমস্ত দেখতে হয়। দেখা শিখতে হয়।
যা মেয়েদের ক্ষেত্রে খুব সহজ কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে খুব কঠিন। একটু নজরের বাইরে গেলে পা ফস্কে কোথায় যে হারিয়ে যাবে তা ভাবনার অতীত। শুধু পড়াশুনা বা মানুষ হওয়া থেকে হারিয়ে যায় তা তো নয়, জীবন থেকেও হারিয়ে যাচ্ছে।
এই অবস্থানে যে বাবা মা সফল তাদের ছেলে বা মেয়ে সমাজের বুকে মানুষের মত কিছু একটা করেছে। এই টিন এজ সামাল দিতে আপনাকে তার আগের অবস্থার দিকে নজর দিতে হবে।
এই টিন এজ সময় বা প্রথম যৌবনের হাতছানি সব সময় নিষিদ্ধের দিকে হাত বাড়ায়। লুকিয়ে করার চেষ্টা করে। এই সময়ে পা ফস্কে অবৈধে জড়িয়ে পড়া, চাই না চাই না করেও নিষিদ্ধে চুমুক দেওয়া, সেণ্টিমেণ্টের একেবারে উত্তুঙ্গ শীর্ষে থাকা, পড়াশুনা থেকে হারিয়ে যাওয়া কিংবা চরম পথ বেছে নেওয়া ইত্যাদি এই টিন এজের বিশিষ্ট ধর্ম।
এসব থেকে লক্ষ্য নজরের মাধ্যমে, নিয়মিত নিরীক্ষণের মাধ্যমে রোধ করা বাবা মায়ের ধর্ম। এই অবস্থানে আপনি ছেলে বা মেয়েকে কতটা আগলে রাখতে পারলেন তার উপরে ছেলে বা মেয়েটির যেমন ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে। তেমনি সে মানুষের মত মানুষ হয়।
টিন এজের আগে আপনি তাকে জোর করে যতটা করাতে পারবেন এই টিন এজে তা পারবেন না। এই টিন এজের জোর জবরদস্তি ছেলে বা মেয়েকে বিপথে অথবা নাই পথে (মৃত্যু) ঠেলে দেয়।
তাই পড়ার মাঝে আঁকা গান আবৃত্তি নাচ এবং অবশ্যই বই পড়া এবং বই পড়ানো ইত্যাদি ইত্যাদি যত রকমের ভাল অভ্যাসের জন্য জোর করা যেতেই পারে। অর্থাৎ শিক্ষা ও শিক্ষা সম্পর্কিত একটা বৃত্ত রচনা করতে হবে যাতে টিন এজ এই বৃত্তের পরিধির বাইরে কোনমতে যেতে না পারে। শিক্ষা ও শিক্ষা সংক্রান্ত বৃত্তে মশগুল থাকলে তাকে আর কোন প্রকার নিষিদ্ধ টেনে নিয়ে যেতে পারবে না। এই ভাল অভ্যাসের মধ্যে অনেক জাদু আছে যেখানে ছেলে বা মেয়ে টিন এজেও সঠিক অবস্থানে থাকতে পারে।
এই জোর করার ক্ষেত্রে ছেলের ক্ষেত্রে যতটা কঠিন মেয়ের ক্ষেত্রে ততটাই সহজ। আবার এই জোর করা ছেলে বা মেয়ে যে কেউ যদি এই ভাল অভ্যাস আত্মস্থ করে ফেলে তাহলে কোন চিন্তাই থাকে না। এখানে দেখা গেছে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে এই ভাবনায় ছেলেরা আত্মস্থ করে সহজে। মেয়েরাও আজকাল সেই ভাবনায় ঢুকে পড়ছে তাই জীবনে এগিয়ে চলছে।
ছেলে এবং মেয়ে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ARUNABHA MUKHERJEE ১৬/০৬/২০১৭খুব সত্যি কথা লিখেছেন ।
-
জয় নারায়ণ ভট্টাচার্য্য ১৬/০৪/২০১৭ভাবনার খোরাক
-
মধু মঙ্গল সিনহা ১৫/০৪/২০১৭ধন্যবাদ