www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মন কাড়া

১লা বৈশাখের সকাল। প্রতিবছরের মতো এবারও সুব্রত আর পৃথা এসেছে মন্দিরে পুজো দিতে। বছরের প্রথম দিনটিতে মায়ের কাছে প্রার্থনা জানিয়ে পুজো না দিলে মনটা ভালো লাগে না। আজ মন্দিরে বেশ ভীড়। হঠাৎ পৃথার আঁচলে টান পড়লো। চমকে পিছন ফিরে তাকালো সে।
দেখে পাঁচ ছ বছরের একটা মেয়ে। একা। পৃথা জিজ্ঞেস করল – কি হল? মাকে হারিয়ে ফেলেছো?
কিছু বলছে না, আঁচলও ছাড়ছে না। পূজোর উপাচার সুব্রতের হাতে ধরিয়ে পৃথা মেয়েটাকে কোলে তুলে নিল। সকালের সূর্যরেখায় মুখটা বেশ উজ্জ্বল। আবার জিজ্ঞেস করল – তোমার নাম কি?
কোন উত্তর না পেয়ে আশেপাশে তাকাল। না, কেউ তো নেই। ওদিকে সুব্রত তাড়া দিল – না আর দেরি করা যাবে না। চলো। ওদিকে দেরি হলে মহীনবাবু রেগে যাবে যে।
পৃথা বলল – চলো, তোমার সবেতেই তাড়া। না আসতেই পারতে। তাছাড়া বন্ধ করো তো তোমার এই পেছন পেছন ঘোরা। তাবেদারি!
মেয়েটিকে মাঝে বসিয়ে পৃথা পূজো সেরে নেয়। এদিকে আরও ভিড় জমতে থাকে। মন্দির চত্বর পবিত্র গন্ধে ম ম করে ওঠে। কিন্তু সুব্রতের হাতে অন্য। তাই বুকের মধ্যে কি যেন একটা ছটপট করে। পৃথা জানে, বোড়ের চালে সুব্রত অসহায়। মন্দিরের বাগানের পাশে মেয়েটিকে নিয়ে দাঁড়ায় পৃথা। বলে - আর একটুক্ষণ দেখি, তারপর চলে যাব।
হঠাৎ প্রায় ছোঁ মেরে মেয়েটিকে কোলে তুলে নেয় একজন। পৃথাকে বলে – কিছু মনে করবেন না। ও এ রকমই। বোবা তো। তাছাড়া সবে মাকে হারিয়েছে তো, তাই।
তারপর সুব্রতকে দেখতে পেয়ে প্রায় আঁৎকে ওঠার মত করে কাঁপতে থাকে। চোখ দুটো লাল হয়ে ওঠে। নিজে নিজেই বিড়বিড় করে বলতে থাকে – চল মামন, চল। এখানে আর নয়। তারপর এক দৌড়ে বাঁক পেরিয়ে হারিয়ে যায়।
সুব্রত নিজের হাত মন্দিরের সিংহ মূর্তিতে মারতে থাকে। পৃথার মনে পড়ে যায় বছর শেষের মহীন হুকুম। মনটা কি ভাল হবেই না?
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৫৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ৩০/০১/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ০।।০ ২০/০৪/২০১৭
    বেশ চমৎকার ভাবনার গল্প ।। ।। শুভ কামনা নিরন্তর...
  • ভাল লাগল ।
  • ভাল লাগলো
  • ফয়জুল মহী ০১/০২/২০১৭
    স্বচ্ছন্দ লেখা
  • আব্দুল হক ০১/০২/২০১৭
    ঠিক আছে; ভালো লিখেন!
 
Quantcast