গোপলার কথা - ৩১
এবার আসা যাক। লিখব কেন, লিখি কেন? প্রতিটি ভাষায় অজস্র মণি মুক্তো। বাংলাতে আছে এ রকমই সীমাহীন প্রাচুর্য। তাহলে লেখক আরও কেন লিখছে?
যদিও এর চেয়ে সহজ উত্তর আর হয় না যে ভাবাতে ভাবতে লেখক লিখে যায়। আমি ভাবি আর ভাবনা লিখি।
সে গল্প কবিতা গান নাটক উপন্যাস প্রবন্ধ ইত্যাদি যাই লেখা হোক না কেন তার প্রধান লক্ষ্য হল নিজস্ব উপলব্ধি তুলে ধরা। সঠিক সিধান্তে লেখা এবং পাঠককে পৌঁছে দেওয়া। অনেক রহস্য কাহিনীর শেষে রহস্যভেদ করা। এই উপলব্ধি যদি পাঠকের থই না পায় তাহলে লেখার সার্থকতা আসে না।
তাই লেখার আগে অথবা লিখতে লিখতে অথবা লেখনীতে সেই উপলব্ধি লেখককে নিজস্ব আত্ম বিশ্লেষণে তৈরি করে নিতে হয়।
এই উপলব্ধিতে পৌঁছানোর সবচেয়ে সহজ অথচ কঠিন রাস্তা হল জীবন নিরীক্ষণ। যতটা সম্ভব পারপার্শ্বিকে চেনা যায় চিনে নিতে হবে। চিনতে চাইলেই চেনা যায় না, তাই জীবনকে চেনার জন্য পূর্ববর্তী বা সমসাময়িক চিহ্নিতকরণীকগণের সহযোগিতা নিতে হয়। অর্থাৎ বই পড়তে হবে। তথ্যের সাথে তত্ত্বের মেলবন্ধন ঘটাতে হবে। তবেই না উপলব্ধি তৈরি হয়।
যেমন ধরুন একটা খুন হল। এখানে তিনটে পরিস্থিতি। প্রথম যে খুন হয়েছে। দ্বিতীয় যে খুন করেছে। তৃতীয় যে সামনাসামনি দেখেছে। লেখক বা ভাবানু কোন পথ নেবে? কেউ হঠাৎ খুন হয় না। কেউ হঠাৎ খুন করে না। সামনে যা দেখা যায় তা সহজে বুঝে ওঠা যায় না। তাহলে সমস্ত দিক বিশ্লেষণে লেখক চাইবে গোলাপ ফোটাতে। এই গোলাপ ফোটানোর উপলব্ধি উপদেশ নির্দেশক হলে তা কেউ শুনবে না।
তাই চেনা ছকে অথচ অচেনা আঙিনায় তাকে তুলে ধরতে হবে।
এই তুলে ধরার উপস্থাপনাটাই আসল মুন্সিয়ানা। সেখানে ভাবুকের ভাবনার কেরামতি।
উপলব্ধির অপার আকাশ সংস্থান। সেটুকু বোঝাতে কেউ গল্পের আকারে, কেউ কবিতার আকারে, কেউ উপন্যাসের আকারে, কেউ প্রবন্ধের আকারে লেখে। বা অন্য অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে।
বর্তমানে শুরু হয়েছে অণু আকারে এই আত্ম উপলব্ধি তুলে ধরা। আসলে উপলব্ধি বহুরাস্তা পেরিয়ে আরও সাবলীল সঙ্গত অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। টু দি পয়েণ্ট হয়ে উঠছে। তাই অণু অবস্থান এক পেরিয়ে অনেকের হাত ধরে এগিয়ে চলেছে।
শ্রদ্ধেয় বনফুল এরকম সঠিক উপলব্ধি কয়েকটা বাক্যেই ছোট ছোট গল্পের আকারে তুলে ধরেছেন। যা সর্বাংশে অফুরন্ত বার্তাবাহী। অণুকবিতায় তাও আভাষবিহীন অন্ধকার থাকে। কিন্তু সঠিক মুন্সিয়ানায় অণুগল্প বুকের ভেতরে আত্মপ্রসাদ দান করে।
এবার ধরা যাক আমি কেন লিখি? আমি কি সে রকম পারি? আমার প্রথম উত্তর - না। একটুও পারি না। তাও কেন লিখি? আমি কি কবি, সাহিত্যিক, লেখক, বিশারদ, জ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী? না, আমি কিছুই না। তাও লিখি। কেন না আমি নিজেকে নিজে ভাবি। বিচার করি। ভুল করা বিশ্লেষণ করি। আবার ভুল করি। না জানা জানতে চেষ্টা করি। জানাতে চেষ্টা করি।
অবসর এলে মানুষ কি করে? আড্ডা মারে। যে যার বৃত্তে নিজস্ব তৈরি করে অবসর কাটায়। আমি সে সময়টা লিখি। আগে কাগজ নষ্ট করতাম, এখন নেট খরচ করি আর লিখি। ভুল ঠিক যাই হোক লিখি। অন্য অনেক কাজের মত এটা করি। হয়তো ভাল করতে পারি নি। কিন্তু খারাপ হয়ে যায় কি? সেটাও ভাবি লিখি।
রবীন্দ্রনাথ নজরুল সুকান্ত শীর্ষেন্দু জয় সুনীল এঁরা কেউ অনেক জানি অনেক ভাবি ভাবাব ভেবে লেখা শুরু করে নি। উপলব্ধির মাত্রায় নিজেরা নিজেদেরকে উচ্চতায় তুলে নিয়ে গেছেন। সে উচ্চতায় আমি উঠতে পারব না তাকাবও না। কিন্তু চেষ্টার মধ্যে আর যাই থাক কোন অমঙ্গল নেই। তাই লিখি। লিখতে শুরু করে পড়ি। পড়ার মাঝে নিজেকে নিজে বুঝাই। ভাঙি গড়ি। তাই আবার লিখি।
এই ভাবনার মধ্যে অন্তত একজনকেও যদি ভাবাতে পারি তাহলেও তা হবে সামাজিক মঙ্গল। যাই করি না তার মধ্যে ভাবনা আছে। ভাবানো আছে। ভাবানু আছে। তাই যে কোন কর্মের অবস্থান পারে লেখা আছে। লেখায় উপলব্ধি মিশিয়ে দেওয়া আছে। আর সেই উপলব্ধির উপস্থাপনাই আসল লেখনী। কেউ তাকে প্রকাশ করতে পারে কেউ পারে না।
তাহলে হিসেবে দাঁড়াল সবাই লেখক। তাই আমিও লেখক।
যদিও এর চেয়ে সহজ উত্তর আর হয় না যে ভাবাতে ভাবতে লেখক লিখে যায়। আমি ভাবি আর ভাবনা লিখি।
সে গল্প কবিতা গান নাটক উপন্যাস প্রবন্ধ ইত্যাদি যাই লেখা হোক না কেন তার প্রধান লক্ষ্য হল নিজস্ব উপলব্ধি তুলে ধরা। সঠিক সিধান্তে লেখা এবং পাঠককে পৌঁছে দেওয়া। অনেক রহস্য কাহিনীর শেষে রহস্যভেদ করা। এই উপলব্ধি যদি পাঠকের থই না পায় তাহলে লেখার সার্থকতা আসে না।
তাই লেখার আগে অথবা লিখতে লিখতে অথবা লেখনীতে সেই উপলব্ধি লেখককে নিজস্ব আত্ম বিশ্লেষণে তৈরি করে নিতে হয়।
এই উপলব্ধিতে পৌঁছানোর সবচেয়ে সহজ অথচ কঠিন রাস্তা হল জীবন নিরীক্ষণ। যতটা সম্ভব পারপার্শ্বিকে চেনা যায় চিনে নিতে হবে। চিনতে চাইলেই চেনা যায় না, তাই জীবনকে চেনার জন্য পূর্ববর্তী বা সমসাময়িক চিহ্নিতকরণীকগণের সহযোগিতা নিতে হয়। অর্থাৎ বই পড়তে হবে। তথ্যের সাথে তত্ত্বের মেলবন্ধন ঘটাতে হবে। তবেই না উপলব্ধি তৈরি হয়।
যেমন ধরুন একটা খুন হল। এখানে তিনটে পরিস্থিতি। প্রথম যে খুন হয়েছে। দ্বিতীয় যে খুন করেছে। তৃতীয় যে সামনাসামনি দেখেছে। লেখক বা ভাবানু কোন পথ নেবে? কেউ হঠাৎ খুন হয় না। কেউ হঠাৎ খুন করে না। সামনে যা দেখা যায় তা সহজে বুঝে ওঠা যায় না। তাহলে সমস্ত দিক বিশ্লেষণে লেখক চাইবে গোলাপ ফোটাতে। এই গোলাপ ফোটানোর উপলব্ধি উপদেশ নির্দেশক হলে তা কেউ শুনবে না।
তাই চেনা ছকে অথচ অচেনা আঙিনায় তাকে তুলে ধরতে হবে।
এই তুলে ধরার উপস্থাপনাটাই আসল মুন্সিয়ানা। সেখানে ভাবুকের ভাবনার কেরামতি।
উপলব্ধির অপার আকাশ সংস্থান। সেটুকু বোঝাতে কেউ গল্পের আকারে, কেউ কবিতার আকারে, কেউ উপন্যাসের আকারে, কেউ প্রবন্ধের আকারে লেখে। বা অন্য অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে।
বর্তমানে শুরু হয়েছে অণু আকারে এই আত্ম উপলব্ধি তুলে ধরা। আসলে উপলব্ধি বহুরাস্তা পেরিয়ে আরও সাবলীল সঙ্গত অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। টু দি পয়েণ্ট হয়ে উঠছে। তাই অণু অবস্থান এক পেরিয়ে অনেকের হাত ধরে এগিয়ে চলেছে।
শ্রদ্ধেয় বনফুল এরকম সঠিক উপলব্ধি কয়েকটা বাক্যেই ছোট ছোট গল্পের আকারে তুলে ধরেছেন। যা সর্বাংশে অফুরন্ত বার্তাবাহী। অণুকবিতায় তাও আভাষবিহীন অন্ধকার থাকে। কিন্তু সঠিক মুন্সিয়ানায় অণুগল্প বুকের ভেতরে আত্মপ্রসাদ দান করে।
এবার ধরা যাক আমি কেন লিখি? আমি কি সে রকম পারি? আমার প্রথম উত্তর - না। একটুও পারি না। তাও কেন লিখি? আমি কি কবি, সাহিত্যিক, লেখক, বিশারদ, জ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী? না, আমি কিছুই না। তাও লিখি। কেন না আমি নিজেকে নিজে ভাবি। বিচার করি। ভুল করা বিশ্লেষণ করি। আবার ভুল করি। না জানা জানতে চেষ্টা করি। জানাতে চেষ্টা করি।
অবসর এলে মানুষ কি করে? আড্ডা মারে। যে যার বৃত্তে নিজস্ব তৈরি করে অবসর কাটায়। আমি সে সময়টা লিখি। আগে কাগজ নষ্ট করতাম, এখন নেট খরচ করি আর লিখি। ভুল ঠিক যাই হোক লিখি। অন্য অনেক কাজের মত এটা করি। হয়তো ভাল করতে পারি নি। কিন্তু খারাপ হয়ে যায় কি? সেটাও ভাবি লিখি।
রবীন্দ্রনাথ নজরুল সুকান্ত শীর্ষেন্দু জয় সুনীল এঁরা কেউ অনেক জানি অনেক ভাবি ভাবাব ভেবে লেখা শুরু করে নি। উপলব্ধির মাত্রায় নিজেরা নিজেদেরকে উচ্চতায় তুলে নিয়ে গেছেন। সে উচ্চতায় আমি উঠতে পারব না তাকাবও না। কিন্তু চেষ্টার মধ্যে আর যাই থাক কোন অমঙ্গল নেই। তাই লিখি। লিখতে শুরু করে পড়ি। পড়ার মাঝে নিজেকে নিজে বুঝাই। ভাঙি গড়ি। তাই আবার লিখি।
এই ভাবনার মধ্যে অন্তত একজনকেও যদি ভাবাতে পারি তাহলেও তা হবে সামাজিক মঙ্গল। যাই করি না তার মধ্যে ভাবনা আছে। ভাবানো আছে। ভাবানু আছে। তাই যে কোন কর্মের অবস্থান পারে লেখা আছে। লেখায় উপলব্ধি মিশিয়ে দেওয়া আছে। আর সেই উপলব্ধির উপস্থাপনাই আসল লেখনী। কেউ তাকে প্রকাশ করতে পারে কেউ পারে না।
তাহলে হিসেবে দাঁড়াল সবাই লেখক। তাই আমিও লেখক।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
পরশ ২৭/০১/২০১৭ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য
-
মোহাম্মদ সফিউল হক ২৬/০১/২০১৭বাহ্
-
সোলাইমান ২৫/০১/২০১৭বাহ খুব সুন্দর কবি