গোপলা কথা - ২৯
লেখকের লেখ্য বৃত্তি
----------------
আপনি লিখতেই পারেন। যা আপনার লেখা। কিন্তু সেই লেখা যখন অন্যকে পড়তে দেবেন তখন আপনাকে খেয়াল করতে হবে তাকে ঠিক বোঝাতে পারছেন তো। যে পড়ছে সে কি বুঝেছে সেটাই আসল ব্যাপার। সে যতটা বুঝতে পারবে অর্থাৎ আপনি তাকে যতটা বোঝাতে পারবেন সেটুকুই আপনার সার্থক লেখা। বাদ বাকী আপনি লিখতেই পারেন তা আপনার কাছে প্রয়োজনীয় হলেও পাঠকের জন্য পাঠ হবে কি না বলা মুশকিল।
এ তো গেল একটা দিক। আর একটা দিক হল পাঠককে আপনি শুধু পাঠ করালেন না কি ভাবালেন সেটাও ভাবা দরকার। শুধু পাঠ করালাম এক আর ভাবালাম আর এক। শুধু পাঠেরও সরল বিন্দু থাকে। তার চারপাশে মাঝে মাঝে ঘুরতে বেশ লাগে। আর ভাবাতে গেলে কিছু রহস্যময়তা ছেড়ে দিতে হয়। সেখানে পাঠক তার নিজস্ব কৌশলে ভাববে। ডান না বাম। কিংবা একবারে সোজা না কি কঠিন। কিংবা কোথাও না, যেমন আছি তেমন।
এই জায়গাতে লেখকের মুন্সিয়ানা। লেখা খুবই সহজ। যা দেখলাম পটাপট লিখে ফেললাম। শুধু দেখা, শুধু ভাবা লিখে পাঠককে কিছু দেওয়া যায় না। দেখার মধ্যে না-দেখা, ভাবার মধ্যে না-ভাবার উপলব্ধিকে লিখতে শেখাটাই আসল ব্যাপার। এই উপলব্ধি ব্যাপারটাই আসল ব্যাপার। উপলব্ধিতে খামতি থাকলে লেখা প্রায় অসম্ভব।
যে কোন ঘটনা আপনি যত সহজে বুঝে উপলদ্ধি করতে পারবেন ততটাই তার উপলব্ধ সমীকরণ আপনার লেখায় যদি ফুটিয়ে তুলতে পারেন তাহলেই সার্থক লেখা হয়ে উঠবে। লিখতে গেলে এটুকু অন্তত আপনাকে রপ্ত করতে হবে। জীবনের সরল উপলব্ধি যে কোন সাধারণকে কবি করে তুলতে পারে। উপলব্ধিতেই পলাশ রাঙা আগুন ঝরানো যায়।
এবার পাঠকের দিক বিবেচনা করলে দেখবেন। বই পড়ার নেশা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। বইয়ের মজা হারিয়ে যাচ্ছে। তা কিন্তু নয়। বই বা লেখা পাঠককে কতটা টানছে, সেই ব্যাপারটা ভাবা দরকার।
এই তো বইমেলায় গিয়ে নামকরা সব বই পাবলিশার্সের স্টলে গিয়ে দেখছি সেই একই লেখক। পাঁচ সাত দশ বছর আগে যারা লিখতেন সেরা লেখা তাদের বই এবং আরো পুরোন লেখকের বই দেখা যায়। নতুন লেখকের তেমন ভাবনার বই কোথায়? যদিও কেউ অন্য স্টল থেকে কেনে তাও দু চার লাইন পড়ার পরে আর পড়া যায় না? ফলে তারা আর কেনে না এবং আর কত পড়ব সুনীল শীর্ষেন্দু সুচিত্রা শঙ্খ। ফলে বই পড়ার ইচ্ছে চলে যাচ্ছে বলা যায় কি?
কেন আপনি লেখক হিসেবে চ্যাট ফেসবুক হোয়াটস অ্যাপ্স নেট থেকে পাঠকের চোখ পারছেন না? লেখক হিসেবে আপনি তার উত্তর খুঁজবেন না? আগে এ সব ছিল না ঠিকই কিন্তু অন্য অনেক কিছুই ছিল। যে যার সময়কে যে যার মত ব্যাখ্যা করে। প্রত্যেকের বাধ্য বাধ্যকতা ছিল, আছে। তাকে অতিক্রম করে প্রত্যেকে যে যার দিকে আপ্রাণ টানার চেষ্টা করে। আগের লেখকরা যেমন করতেন। কেবল মাত্র ভাবনার গুণে। সে কবিতা গল্প উপন্যাস যাই হোক না কেন। এই জন্য লোকে পড়ছে না, বই খুঁজছে না এসব দুর্বলের বাহানামাত্র।
এই ভাবনার রাজত্বে শাসন শুরু করতে আসছে অণুকবিতা অণুগল্প। একটা দোহাই থেকেই যায়, সময় কম যা বলার তাড়াতাড়ি বলতো বাপু। যদি অল্প কথার মধ্যে কল্প থাকে তাহলে তাকে টানতে বাধ্য। কোন মেদ কোন আকডুম কোন উপদেশ কোন ফিরিস্তি কোন অযাচিত কোন দোষারোপ কোন গুণকীর্তন কেউ শুনতে চায় না। স্বচ্ছ অথচ কিছু বলব না বলব করেও বলতে চাওয়া বা বলিয়ে নেওয়া পাঠককে দাঁড় করিয়ে রাখবে। তাহলে অল্পে কল্প আঁকতে বলতে লিখতে দেখাতে শেখাতে যে মুন্সিয়ানা দরকার সেটা আমরা রবীন্দ্র সুনীল শক্তি জয় শ্রীজাতের পরে কতটা শিখেছি সেটা ভাবা দরকার।
সাহিত্য আসলে একটা ধারা তাকে প্রবাহিত করাতে হয়। বাটন ধরার মত হাত বদল করে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। হাজার দৌড়বে দু একজন সামনের মুখ হয়ে উঠবে। কিন্তু সবাইকে দৌড়তে হবে। চেষ্টা চালিয়ে যেতে ভাষা মর্যাদায়, আপন গরিমায়। পেছনের জন সামনের জনের এক অংশীদার। সবার ক্ষেত্রে একটাই ভাবনা হওয়া উচিত সঠিক উপলব্ধি। ভাবনার জগতে পাঠককে টেনে ঢুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা আমাদেরকেই করতে হবে। ভাল শিক্ষক তিনি যিনি ছাত্র ফ্রেণ্ডলি। অর্থাৎ ছাত্র কতটা শিখল তার উপরে শিক্ষকের মর্যাদা। না হলে বড় ডিগ্রী বিশাল পণ্ডিত কোন কাজেই লাগবে না। কারন ছাত্রের মনন উপলব্ধি করেই বিষয়ের পাঠাভ্যাস ভাল শিক্ষার অগ্রবর্তী।
তাই যারা ভাষা চর্চা করছে, যারা লেখে, ভেবে ভেবে লেখে, লিখতে লিখতে ভাবে, লেখায় ব্রতী হতে চায় হয়তো আপনার মত পারে না, হয়তো আপনার মনে ধরছে না। তাদেরকে দূরে না সরিয়ে মাঝে মাঝে সুযোগ দেওয়া উচিত। তাদেরকে এডিট করে পাশে রাখা উচিত। ভালো যে সে তার জায়গা করে নেবে। এখানে কেউ খারাপ হতে পারে না। হয়তো আপনার মত ভালো নয়। হয়তো আপনার মত অতটা ভাবনা মনষ্ক নয় তা বলে তাদের সরিয়ে দিলে, অবহেলার পাত্র করলে সাহিত্যের বাটন হারিয়ে যাবে। ধারার বিচ্ছেদ ঘটবে।
মনে রাখবেন, যারা তত ভালো লিখছে না, যাদের লেখা কিছুতেই পছন্দমত নয়, ভাবনা অতটা স্বচ্ছ নয়, যারা আমার লেখাটা ছাপাবেন ইত্যাদি আবদার করে তারাই কিন্তু আপনার লেখার সবচেয়ে বড় পাঠক। সাহিত্য ধারার অন্যতম পেছন সারি। তার জন্যই যে সামনের সারি দামী তা হয়তো নয়। কিন্তু পেছন সারিও একটা সারি ভুলে গেলে চলবে না।
তাছাড়া শুধু পাঠক আর ক'জন? বেশির ভাগ পাঠক এই ধরনের। লেখক কাম পাঠক। তাই' আমরা শুধু ভালো লেখা ও লেখক ছাপি' এ ধরনের অ-সাহিত্য ভাবনা ভাবা বা বলে নিজের চর্চার ভাষাকে, নিজের ভাবনাকে ছোট করা উচিত নয়।
আগেই বলেছি, ভাবনায় কেউ সাধারণ, কেউ অসাধারণ, কেউ একেবারে সাদামাঠা কিন্তু কেউ কোনোমতেই খারাপ নয়। তাছাড়া ভাবনার কোন ভালো মন্দ হয় না, হতে পারে না।
আবার লেখক নিজের জন্য লিখতেই পারেন। লেখা নিজস্ব উপলব্ধিতে রাঙা হতেই পারে। সব পাঠক যে তাতে সম্পৃক্ত হবেন তা নাও হতে পারে। কিন্তু লেখার বৈশিষ্ট্য যে সীমা পেরিয়ে সীমাতে সীমাবদ্ধ থাকে। মন উড়ানের পাখনায় কোন বাঁধন নয় কিন্তু জীবনের ছোঁয়া অপরূপ হয়ে যেন থাকে।
অণুগল্প লেখা তেমনি একটি ধারা। অণুসন্ধানে একক থেকে ভিন্নতরের দিকে উৎক্ষেপন হল অণুগল্প। বিষয়ের মাঝে সহজ সংক্ষেপ স্বতন্ত্র স্বরক্ষেপন করার বিস্তৃত আকাঙ্ক্ষা।
যেটা বলতে চাই সেটা না বলেও বলার বিন্দু উল্লেখ করার মুন্সিয়ানা, সঠিক উপলব্ধির পাঠক করবে ভাবানুবাদ, সঠিক উপলব্ধির জারিত রসবিন্দু, যা দেখছি বা যা দেখেছি তা তোমাকে দেখিয়েও কিছু না-দেখা চেনানোর আপ্রাণ প্রয়াস, অনেক ভাবানার জারিত সমগ্রের সংক্ষেপ অথচ স্পষ্ট বৃত্তের কেন্দ্র আঁকাই হল অণুগল্প।
লেখা ছোট কি বড় সেটা বড় কথা নয়। লেখাটি আপনি লিখলেন কেন? অথবা লেখাটি আপনি পড়লেন কেন? ছোট হোক কিংবা বড় হোক তা যদি আপনি বুঝতে পারেন তাহলে আর ছোট বড় গল্প7অণুগল্প নিয়ে আলাদা কোন কথা থাকে না। অণুগল্পের নাম দিয়ে আপনি তেমন লিখছেন তো? আবার ভাবুন। তাহলে আর অণুগল্প নিয়ে আপনাকে কিছু বলব না।
আর আপনি যদি তেমন ভাবনা না পান তাহলে পাঠককে মিছিমিছি দোষ দিয়ে লাভ কী?
----------------
আপনি লিখতেই পারেন। যা আপনার লেখা। কিন্তু সেই লেখা যখন অন্যকে পড়তে দেবেন তখন আপনাকে খেয়াল করতে হবে তাকে ঠিক বোঝাতে পারছেন তো। যে পড়ছে সে কি বুঝেছে সেটাই আসল ব্যাপার। সে যতটা বুঝতে পারবে অর্থাৎ আপনি তাকে যতটা বোঝাতে পারবেন সেটুকুই আপনার সার্থক লেখা। বাদ বাকী আপনি লিখতেই পারেন তা আপনার কাছে প্রয়োজনীয় হলেও পাঠকের জন্য পাঠ হবে কি না বলা মুশকিল।
এ তো গেল একটা দিক। আর একটা দিক হল পাঠককে আপনি শুধু পাঠ করালেন না কি ভাবালেন সেটাও ভাবা দরকার। শুধু পাঠ করালাম এক আর ভাবালাম আর এক। শুধু পাঠেরও সরল বিন্দু থাকে। তার চারপাশে মাঝে মাঝে ঘুরতে বেশ লাগে। আর ভাবাতে গেলে কিছু রহস্যময়তা ছেড়ে দিতে হয়। সেখানে পাঠক তার নিজস্ব কৌশলে ভাববে। ডান না বাম। কিংবা একবারে সোজা না কি কঠিন। কিংবা কোথাও না, যেমন আছি তেমন।
এই জায়গাতে লেখকের মুন্সিয়ানা। লেখা খুবই সহজ। যা দেখলাম পটাপট লিখে ফেললাম। শুধু দেখা, শুধু ভাবা লিখে পাঠককে কিছু দেওয়া যায় না। দেখার মধ্যে না-দেখা, ভাবার মধ্যে না-ভাবার উপলব্ধিকে লিখতে শেখাটাই আসল ব্যাপার। এই উপলব্ধি ব্যাপারটাই আসল ব্যাপার। উপলব্ধিতে খামতি থাকলে লেখা প্রায় অসম্ভব।
যে কোন ঘটনা আপনি যত সহজে বুঝে উপলদ্ধি করতে পারবেন ততটাই তার উপলব্ধ সমীকরণ আপনার লেখায় যদি ফুটিয়ে তুলতে পারেন তাহলেই সার্থক লেখা হয়ে উঠবে। লিখতে গেলে এটুকু অন্তত আপনাকে রপ্ত করতে হবে। জীবনের সরল উপলব্ধি যে কোন সাধারণকে কবি করে তুলতে পারে। উপলব্ধিতেই পলাশ রাঙা আগুন ঝরানো যায়।
এবার পাঠকের দিক বিবেচনা করলে দেখবেন। বই পড়ার নেশা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। বইয়ের মজা হারিয়ে যাচ্ছে। তা কিন্তু নয়। বই বা লেখা পাঠককে কতটা টানছে, সেই ব্যাপারটা ভাবা দরকার।
এই তো বইমেলায় গিয়ে নামকরা সব বই পাবলিশার্সের স্টলে গিয়ে দেখছি সেই একই লেখক। পাঁচ সাত দশ বছর আগে যারা লিখতেন সেরা লেখা তাদের বই এবং আরো পুরোন লেখকের বই দেখা যায়। নতুন লেখকের তেমন ভাবনার বই কোথায়? যদিও কেউ অন্য স্টল থেকে কেনে তাও দু চার লাইন পড়ার পরে আর পড়া যায় না? ফলে তারা আর কেনে না এবং আর কত পড়ব সুনীল শীর্ষেন্দু সুচিত্রা শঙ্খ। ফলে বই পড়ার ইচ্ছে চলে যাচ্ছে বলা যায় কি?
কেন আপনি লেখক হিসেবে চ্যাট ফেসবুক হোয়াটস অ্যাপ্স নেট থেকে পাঠকের চোখ পারছেন না? লেখক হিসেবে আপনি তার উত্তর খুঁজবেন না? আগে এ সব ছিল না ঠিকই কিন্তু অন্য অনেক কিছুই ছিল। যে যার সময়কে যে যার মত ব্যাখ্যা করে। প্রত্যেকের বাধ্য বাধ্যকতা ছিল, আছে। তাকে অতিক্রম করে প্রত্যেকে যে যার দিকে আপ্রাণ টানার চেষ্টা করে। আগের লেখকরা যেমন করতেন। কেবল মাত্র ভাবনার গুণে। সে কবিতা গল্প উপন্যাস যাই হোক না কেন। এই জন্য লোকে পড়ছে না, বই খুঁজছে না এসব দুর্বলের বাহানামাত্র।
এই ভাবনার রাজত্বে শাসন শুরু করতে আসছে অণুকবিতা অণুগল্প। একটা দোহাই থেকেই যায়, সময় কম যা বলার তাড়াতাড়ি বলতো বাপু। যদি অল্প কথার মধ্যে কল্প থাকে তাহলে তাকে টানতে বাধ্য। কোন মেদ কোন আকডুম কোন উপদেশ কোন ফিরিস্তি কোন অযাচিত কোন দোষারোপ কোন গুণকীর্তন কেউ শুনতে চায় না। স্বচ্ছ অথচ কিছু বলব না বলব করেও বলতে চাওয়া বা বলিয়ে নেওয়া পাঠককে দাঁড় করিয়ে রাখবে। তাহলে অল্পে কল্প আঁকতে বলতে লিখতে দেখাতে শেখাতে যে মুন্সিয়ানা দরকার সেটা আমরা রবীন্দ্র সুনীল শক্তি জয় শ্রীজাতের পরে কতটা শিখেছি সেটা ভাবা দরকার।
সাহিত্য আসলে একটা ধারা তাকে প্রবাহিত করাতে হয়। বাটন ধরার মত হাত বদল করে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। হাজার দৌড়বে দু একজন সামনের মুখ হয়ে উঠবে। কিন্তু সবাইকে দৌড়তে হবে। চেষ্টা চালিয়ে যেতে ভাষা মর্যাদায়, আপন গরিমায়। পেছনের জন সামনের জনের এক অংশীদার। সবার ক্ষেত্রে একটাই ভাবনা হওয়া উচিত সঠিক উপলব্ধি। ভাবনার জগতে পাঠককে টেনে ঢুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা আমাদেরকেই করতে হবে। ভাল শিক্ষক তিনি যিনি ছাত্র ফ্রেণ্ডলি। অর্থাৎ ছাত্র কতটা শিখল তার উপরে শিক্ষকের মর্যাদা। না হলে বড় ডিগ্রী বিশাল পণ্ডিত কোন কাজেই লাগবে না। কারন ছাত্রের মনন উপলব্ধি করেই বিষয়ের পাঠাভ্যাস ভাল শিক্ষার অগ্রবর্তী।
তাই যারা ভাষা চর্চা করছে, যারা লেখে, ভেবে ভেবে লেখে, লিখতে লিখতে ভাবে, লেখায় ব্রতী হতে চায় হয়তো আপনার মত পারে না, হয়তো আপনার মনে ধরছে না। তাদেরকে দূরে না সরিয়ে মাঝে মাঝে সুযোগ দেওয়া উচিত। তাদেরকে এডিট করে পাশে রাখা উচিত। ভালো যে সে তার জায়গা করে নেবে। এখানে কেউ খারাপ হতে পারে না। হয়তো আপনার মত ভালো নয়। হয়তো আপনার মত অতটা ভাবনা মনষ্ক নয় তা বলে তাদের সরিয়ে দিলে, অবহেলার পাত্র করলে সাহিত্যের বাটন হারিয়ে যাবে। ধারার বিচ্ছেদ ঘটবে।
মনে রাখবেন, যারা তত ভালো লিখছে না, যাদের লেখা কিছুতেই পছন্দমত নয়, ভাবনা অতটা স্বচ্ছ নয়, যারা আমার লেখাটা ছাপাবেন ইত্যাদি আবদার করে তারাই কিন্তু আপনার লেখার সবচেয়ে বড় পাঠক। সাহিত্য ধারার অন্যতম পেছন সারি। তার জন্যই যে সামনের সারি দামী তা হয়তো নয়। কিন্তু পেছন সারিও একটা সারি ভুলে গেলে চলবে না।
তাছাড়া শুধু পাঠক আর ক'জন? বেশির ভাগ পাঠক এই ধরনের। লেখক কাম পাঠক। তাই' আমরা শুধু ভালো লেখা ও লেখক ছাপি' এ ধরনের অ-সাহিত্য ভাবনা ভাবা বা বলে নিজের চর্চার ভাষাকে, নিজের ভাবনাকে ছোট করা উচিত নয়।
আগেই বলেছি, ভাবনায় কেউ সাধারণ, কেউ অসাধারণ, কেউ একেবারে সাদামাঠা কিন্তু কেউ কোনোমতেই খারাপ নয়। তাছাড়া ভাবনার কোন ভালো মন্দ হয় না, হতে পারে না।
আবার লেখক নিজের জন্য লিখতেই পারেন। লেখা নিজস্ব উপলব্ধিতে রাঙা হতেই পারে। সব পাঠক যে তাতে সম্পৃক্ত হবেন তা নাও হতে পারে। কিন্তু লেখার বৈশিষ্ট্য যে সীমা পেরিয়ে সীমাতে সীমাবদ্ধ থাকে। মন উড়ানের পাখনায় কোন বাঁধন নয় কিন্তু জীবনের ছোঁয়া অপরূপ হয়ে যেন থাকে।
অণুগল্প লেখা তেমনি একটি ধারা। অণুসন্ধানে একক থেকে ভিন্নতরের দিকে উৎক্ষেপন হল অণুগল্প। বিষয়ের মাঝে সহজ সংক্ষেপ স্বতন্ত্র স্বরক্ষেপন করার বিস্তৃত আকাঙ্ক্ষা।
যেটা বলতে চাই সেটা না বলেও বলার বিন্দু উল্লেখ করার মুন্সিয়ানা, সঠিক উপলব্ধির পাঠক করবে ভাবানুবাদ, সঠিক উপলব্ধির জারিত রসবিন্দু, যা দেখছি বা যা দেখেছি তা তোমাকে দেখিয়েও কিছু না-দেখা চেনানোর আপ্রাণ প্রয়াস, অনেক ভাবানার জারিত সমগ্রের সংক্ষেপ অথচ স্পষ্ট বৃত্তের কেন্দ্র আঁকাই হল অণুগল্প।
লেখা ছোট কি বড় সেটা বড় কথা নয়। লেখাটি আপনি লিখলেন কেন? অথবা লেখাটি আপনি পড়লেন কেন? ছোট হোক কিংবা বড় হোক তা যদি আপনি বুঝতে পারেন তাহলে আর ছোট বড় গল্প7অণুগল্প নিয়ে আলাদা কোন কথা থাকে না। অণুগল্পের নাম দিয়ে আপনি তেমন লিখছেন তো? আবার ভাবুন। তাহলে আর অণুগল্প নিয়ে আপনাকে কিছু বলব না।
আর আপনি যদি তেমন ভাবনা না পান তাহলে পাঠককে মিছিমিছি দোষ দিয়ে লাভ কী?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
জয় নারায়ণ ভট্টাচার্য্য ০২/০৩/২০১৭লেখায় কেবল রস নয়, চিরতও থাকা চাই।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২১/০১/২০১৭বাংলা সাহিত্যে শুধু ছোটগল্প চাই।
-
সোলাইমান ২১/০১/২০১৭অনন্য ভাবনা বলতে গেলে অদ্ভুত রকমের ।
পাঠে বেশ ঘনঘটা ডেকে আনলো ।
শুভেচ্ছা জানবেন প্রিয়কবি...।