www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গোপলার কথা - ২৪

জয় পরাজয়
======
(১)
যেখানেই গিয়েছি আমি কখনও পরাজিত হই নি । কেন না কেউ ফিরিয়ে দিলে আমি সেই ফেরান মুখ থেকে সহজেই সরে আসি ।

কখনই দেখে নেব – এ মনোভাব আমার মধ্যে কাজ করে না । আমাকে তার ভাল নাও লাগতে পারে তাই বলে তাকে দেখানোর মত করে তার ভাল লাগা আমি হতে চাই নি । আমি সব সময় চেষ্টা করি যেটা ঠিক তার সাথে থাকার । এখন কোনটা ঠিক তাও ভাবা দরকার ।

আমারটাই যে ঠিক হবে তারও তো ঠিক নেই । তবুও নিজের মনে যেটা ঠিক তাকেই সায় দিয়ে চলতে থাকি । তাতে দেখা যায় আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া আবার আমার দিকে মুখ করে দাঁড়ায় ।

সেই জয় অবশ্য অনেকটা পথ চলার পরে সেই পথের সীমানায় দেখা যায়। আবার দেখা যায় না । আমাকে যে ঠকাচ্ছে বা পরাজয় এনে দিচ্ছে সে যে আরো বেশি পরাজিত সেই ভেবে জয় পাই বলে আমার মনে হয় । সবাই নিজেকে কেবল এই পরাজয়ের ভাবনায় ডুবিয়ে রেখে ক্ষমতার নির্যাস তৈরি করে। একজন অপরজনকে ধ্বংস করতে কেবল অস্ত্র তুলে নেয়।  ফলে চারিদিকে বিশৃঙ্খলা।

সে বা তারা কি চায়, কেন চায় নিজেও জানে না। সবাই জয় চায়। শুধু জয়।

আর আমি পরাজয় মেনে নিয়েই এগিয়ে চলি। এতেও কোথাও না কোথাও আমার জয় হয়তো এসে যেতেও পারে।

নাও যদি জয় হয়, আমি থাকব না হয় পরাজয়ের দলে। অথবা কেবল কর্মী সেনানী হয়ে। শুধু কাজ করে যাব। নিজের মনে, যা সঠিক মনে হয়। ভাল হবে ভেবেই তো করছি।

হোক ভাল। সে জয় অথবা পরাজয়। যাই হোক না কেন?


  (২)

পেছনে অনেকেই ডাকে। দাঁড়িয়ে পড়ি। ঘুরে দেখি কে? হ্যাঁ, চেনা মনে হচ্ছে। চিনতে পেরেই মনটা আনন্দে নেচে উঠল। বাহ, দুটো কথা বলা যেতেই পারে। কথা বলা শুরু করেই বুঝলাম ও মা, এ তো তার নিজের প্রয়োজনে আমাকে দাঁড়াতে বলল।

তবে প্রথমে শুরু করেছিল যেন আমার প্রয়োজনে আমাকে ডেকে অনেককিছু সুরাহা করে দেবে। তারপর ধীরে ধীরে বুঝলাম তাঁর নিজের প্রয়োজন তো আছে, সেই সাথে আমার কি মনোভাব তাও জেনে নেওয়ায় চেষ্টা করে আমাকে বোঝার চেষ্টা করছে।

প্রথমে বুঝতে পারি নি। তাই যা মনে এসেছে কথার পিঠে কথা বলে প্রাণ খুলে সব বলে দিয়েছি। প্রতিটি কাজের দোষগুণ আছে। কথা বলতে হলে দুটোই বলতে হয়। উনি যে কেবল দোষের কথায় আমার কি প্রতিক্রিয়া তাই বুঝে নিয়ে আলাদা করে ভেবে তার জন্য পরবর্তীতে নানান কার্যকলাপ দেখাবেন আর যাতে আমার এই সমালোচনার দায়ভার নিতে হয় সে ব্যবস্থা করছেন তা বুঝতে একটু সময় লাগল।

তবুও ডেকেছেন তাই আজও দাঁড়াতে হয়। মুখ ঘুরিয়ে কথাও বলতে হয়। ব্যাস এই পর্যন্ত। তারপর এসে গেছে মাপকাঠি। তেল দেওয়া তোষামোদ করতে পারি না তাই কথা কম বলার অভ্যাস করছি। শোনার চেষ্টা করছি বেশি। তাতেও বিপদ। কমছে বন্ধু। সবাই আমার চেনা রাস্তায় আকাশ হয়ে ধরা দিক, এই ভাবনাতে পেছনে কেউ ডাকলে সাড়া দেবই।

নিজের প্রতিষ্ঠা সবাই চায়। সবাই ভাল। শুধু মুখ কালো করে কি লাভ? ডেকেছেন যখন দাঁড়ালাম। কি বলবেন বলুন? শুনছি। আর আমিও আপনার বন্ধু।

   (৩)

সমাজে নানা রকম অবস্থান আছে । ভাবাদর্শ আছে । সব কিছুর সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে চলতে গেলে অনেক সময় তা পেরে ওঠা যায় না । আবার তাকে ফেলে দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বা এড়িয়ে অনেক সময় কিছুই করা যায় না । জানি ঠিক না মন বলছে এটা করা ঠিক না এভাবে করে ফেলা বোধহয় অন্যায় হচ্ছে তবুও সেই মন করে ফেলে ।
কিন্তু তাতে সমাজের ততখানি বা নিজের তেমনকিছু ক্ষতি হবে না সে দিকেই খেয়াল থাকাই মনুষ্যত্বের পরিচয় । যেমন যতজন সিগারেট খায় সবাই জানে এটা কখনই ভাল নয় – তবুও খায় । পাশের বাড়ির ভদ্রলোক গাড়িটা এমনভাবে রাখবে আমার অসুবিধা হয় তবুও তাঁর সাথে আমার বেশ দহরম মহরম । জানি বলে কোন লাভ নেই ।
এ ভাবে রাস্তার লোকটা আমার গা ঘেঁষে চলে গেল , যদি লেগে যেত ; ঘুরে জিজ্ঞেস করলে বলবে – লাগে নি তো । সরে হাঁটুন না । আর কোথায় সরব এবার তো আর রাস্তাই নেই ।
তাও আমাদের চলে যায় প্রবাহিত জীবন ।

                 (৪)

লেখকমাত্রেই জানে তার সব লেখাই সেরা তবুও তাকে বলবেই – আমাদের পত্রিকার জন্য আপনার সেরা লেখাটা দেবেন ?
এক্ষেত্রে লেখককে লেখক হিসেবে স্বীকৃতিতে দ্বিধা আছে । অথবা দয়া করে আপনাকে লেখক হিসেবে ভাবা হচ্ছে ।
এবার নিজে খুঁজে সেরা বলে ভেবে লেখা পাঠানো হল কিন্তু নির্বাচিত হল না ।
লেখক হিসেবে লেখকের মন খারাপ । কিন্তু আপনার কাছে লেখাটি খারাপ নয় ।
এর পরেও দেখা যায় লেখায় যদি পজেটিভ ভাবনা থাকে তাহলে অন্য জায়গায় সেটাই সহজে স্থান পেয়ে যায় ।
নতুন লেখকদের ক্ষেত্রে এ এক সমস্যা । অনেকেই তার নিজের নাম লেখক হিসেবে দেখতে চায় । ভাবনাকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেয়ে নিজের নাম প্রকাশের চেষ্টায় থাকে । তাতে সেই প্রকাশনায় যুক্ত থেকে অনায়াসে সফলও হয় ।
দেখা যায় , না চাইলেও তাকেই ভাল বলতেই হয় ।
এটা ঠিক কথা লেখার চর্চা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মান গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে ভাবনায় ভাবনায় লোকে লোকে পরিবর্তিত । না চাইলেও মেনে নিতে হয় ।
লেখকের কাছে তার সব লেখাই গুরুত্বপূর্ণ যদি সে নির্দিষ্ট পড়াশুনা ও অবাধ মনষ্কতায় দেশ দশ এবং নিজের কল্যানীয় ভাবানুবাদে ছড়িয়ে পড়তে পারে ।
যত গল্পই থাক ভাল সবসময় ভাল । সে লেখা হোক বা অন্যকিছু । সেরা যেন সবার সেরা হয় ।
-০-০-0-
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ৯৭৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৮/০২/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast