পূর্নিমার রাত ও পরী
ভরা পূর্নিমা। শরতের রাত।
একটা চাঁদের পাশে অনেক তারা।
হাজার। লক্ষ। কোটি।
গ্রামের বাজার থেকে ফিরছিলাম।
চিরচেনা রাস্তা ধরে। ছোট
বেলা থেকেই জানতাম,
রাস্তাটা ভয়ংকর।
রেল লাইনের মত
সোজা রাস্তা,বিলের ধারে।
বামে উচু জায়গাটাতে শ্মশান ঘাট।
পাশে কাশবন।
সামনে কালীমন্দির।
সুপ্রাচীন পাকুর গাছ।
আর মাঝখানে বাশের সাঁকো।
এই রাস্তায় কত মানুষকে ভূত -
পেত্নী ধরেছে, তার হিসেব নেই।
কেউ মারা গেছে, কেউ আজীবন
অসুস্থ।
প্রচন্ড ভয় হচ্ছিল।বিশেষ করে বাজার
থেকে নিয়ে আসা গরুর মাংস
হাতে ছিল বলে।
শ্মশ্মান ঘাট পার হলাম।
তারপর বাশের সাকো।
হঠাৎ খিল খিল হাসির শব্দ।
ভড়কে গেলাম।
গা ছমছম করছিল।
সাঁকোটা দুলছিল।
আকাশ থেকে কেউ একজন নেমে এল।
টানা টানা চোখ, দুটি ডানা, অসম্ভব
সুন্দরী।
সম্ভবত পরী। আগে না দেখলেও অনুমান
করলাম। অনুমানটা সত্যি হল।
দুজনে কথা হল। সুমিষ্ট কন্ঠ,
গোছানো কথা।
কেমন
করে জানি ভয়টা কাটিয়ে দিল। আর
ভয় পেলাম না। বন্ধুত্ব হল।
মুহুর্তের মধ্যে আপন হয়ে গেলাম। সেও
বুঝি আপন করে নিল।
মানুষ আর পরীর মাঝে যে গভীর ভাব
হয় আমিই তার উদাহরন। জ্বলন্ত প্রমাণ।
অনেক কথা হল।
তৃতীয় আসমানে ওদের রাজ্য। চাঁদের
আলোয় স্নান করতে পৃথিবীতে আসে,
পূর্নিমার তিথীতে।
সাত বছর আগে থেকেই
আমাকে চিনতো সে। অসংখ্য বার
আমাদের গ্রামে এসেছিল। কখনও
একা পায়নি আমাকে।
অবশেষে এবার পেয়েছে। সময় কম, তাই
সোজা কথা।
আমাকে ও ভালোবাসে। আমার
অজান্তেই।
বলতে গিয়ে মুখটা লাল হয়ে গেল।
সম্ভবত লজ্জায়। পরীরাও লজ্জা করে।
আজব।
একটু প্রেমে পড়ে গেলাম।
হাটতে হাটতে অনেক কথা হল।
হঠাৎ,
ওর সময় ফুরিয়ে এল।
বলল, --"এবার চলি"
বুকটা ধক্ করে উঠল।
বললাম,--"আর কি দেখা হবে না??"
__"হবে। প্রতি পূর্নিমার
তিথীতে এখানে এসো।আমি আসবই।
অপেক্ষায় থাকব।"
এবার চলে গেল। মুখে কোন কথাই
আসলো না। দাড়িয়ে রইলাম।
তারপর......
প্রতিটি পূর্নিমার তিথীতে....
অনেকবার দেখা হল।
গল্প হল।
স্বপ্ন দেখলাম, একা না, দুজনেই।
পাশাপাশি থাকব। সারাজীবন।
ঠিক হল, সামনের
তিথীতে আমরা পরীর দেশে যাব। ও
আমাকে নিয়ে যাবে।
প্রহর গুনলাম।
অবশেষে সেই পূর্নিমার তিথী।
গভীর রাত। নিথর, নিস্তব্ধ।
আস্তে করে দরজা খুলে বের হলাম।
ছুটলাম সাকোর দিকে।
বাশঝাড় পার হলাম।
তারপর বটগাছ।
এবার মন্দির।
হয়তোবা এবার পরীর দেশ।
পরীকে খুজলাম।
_"বাবা, এত রাতেএখানে কেন?
কোথায় যাচ্ছ?"
হঠাৎ মানুষের কন্ঠ
শুনে ভড়কে গেলাম।
পিছনে তাকালাম।
দেখলাম, ধরণী কান্ত বাবু।
সম্পর্কে কাকা, পেশায় কবিরাজ।
কোন উত্তর দিলাম না।
সাঁই-সাঁই করে বাতাস বইল।
বটগাছটা দুমড়ে মুচড়ে গেল।
কয়েকটা বাঁশ মট-মট করে ভেঙে গেল।
বুঝলাম পরী চলে যাচ্ছে।
পরিবেশটা ধরণী কবিরাজও দেখলো।
আজব টাইপের একটা হাসি দিল।
__"আমি না থাকলে কি হত তোমার!!
দেখছ, কেমন করে সব
ভুতকে হটিয়ে দিলাম, কোন
দিশা না পেয়ে বাঁশ
ভেঙে পালালো। এত
রাতে তুমি এখানে কেন?? "
>>মেজাজটা বড্ড খারাপ হয়ে গেল,
তার চেয় মনটাই বেশি খারাপ হল।
উত্তর দিলাম না।
শুধু বললাম; --" আপনি এখানে কেন?"
বললেন, -"আমি তোমার
ব্যাপারটা.....।
মুখটা বন্ধ করে দিলেন। আর
কথা বললেন না।আমিও আর
জানতে চাইলাম না। ভাবলাম
স্বপ্নটা সত্যিই হতে দিলেন না।
অপদার্থ।
তারপর.........
পূর্নিমার তিথীতে, আবার আসলাম।
কিন্তু,পরী আসলো না।
অনেকগুলা তিথী গেল, মাসের পর
মাস, বছরের পর বছর।
দোষ তো কবিরাজের, আমার না।
আমি কেন শাস্তি পাব?
হয়তো পরী একদিন বুঝবে, আবার
আসবে।
আশায় ছিলাম।
আজও আছি।
আজও বাঁশের সাঁকোতে বসে আছি।
শ্মশানটা খাঁ-খাঁ করছে,
বটগাছটা দাড়িয়ে আছে।
শরতের রাত, ভরা পূর্নিমা।
আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি,
আমার পরী আসবেই, এই বিশ্বাসে।
রাত বাড়ে,
__ একটা চাঁদ,
অসংখ্য তারা।
হাজার।
লক্ষ।
কোটি........
একটা চাঁদের পাশে অনেক তারা।
হাজার। লক্ষ। কোটি।
গ্রামের বাজার থেকে ফিরছিলাম।
চিরচেনা রাস্তা ধরে। ছোট
বেলা থেকেই জানতাম,
রাস্তাটা ভয়ংকর।
রেল লাইনের মত
সোজা রাস্তা,বিলের ধারে।
বামে উচু জায়গাটাতে শ্মশান ঘাট।
পাশে কাশবন।
সামনে কালীমন্দির।
সুপ্রাচীন পাকুর গাছ।
আর মাঝখানে বাশের সাঁকো।
এই রাস্তায় কত মানুষকে ভূত -
পেত্নী ধরেছে, তার হিসেব নেই।
কেউ মারা গেছে, কেউ আজীবন
অসুস্থ।
প্রচন্ড ভয় হচ্ছিল।বিশেষ করে বাজার
থেকে নিয়ে আসা গরুর মাংস
হাতে ছিল বলে।
শ্মশ্মান ঘাট পার হলাম।
তারপর বাশের সাকো।
হঠাৎ খিল খিল হাসির শব্দ।
ভড়কে গেলাম।
গা ছমছম করছিল।
সাঁকোটা দুলছিল।
আকাশ থেকে কেউ একজন নেমে এল।
টানা টানা চোখ, দুটি ডানা, অসম্ভব
সুন্দরী।
সম্ভবত পরী। আগে না দেখলেও অনুমান
করলাম। অনুমানটা সত্যি হল।
দুজনে কথা হল। সুমিষ্ট কন্ঠ,
গোছানো কথা।
কেমন
করে জানি ভয়টা কাটিয়ে দিল। আর
ভয় পেলাম না। বন্ধুত্ব হল।
মুহুর্তের মধ্যে আপন হয়ে গেলাম। সেও
বুঝি আপন করে নিল।
মানুষ আর পরীর মাঝে যে গভীর ভাব
হয় আমিই তার উদাহরন। জ্বলন্ত প্রমাণ।
অনেক কথা হল।
তৃতীয় আসমানে ওদের রাজ্য। চাঁদের
আলোয় স্নান করতে পৃথিবীতে আসে,
পূর্নিমার তিথীতে।
সাত বছর আগে থেকেই
আমাকে চিনতো সে। অসংখ্য বার
আমাদের গ্রামে এসেছিল। কখনও
একা পায়নি আমাকে।
অবশেষে এবার পেয়েছে। সময় কম, তাই
সোজা কথা।
আমাকে ও ভালোবাসে। আমার
অজান্তেই।
বলতে গিয়ে মুখটা লাল হয়ে গেল।
সম্ভবত লজ্জায়। পরীরাও লজ্জা করে।
আজব।
একটু প্রেমে পড়ে গেলাম।
হাটতে হাটতে অনেক কথা হল।
হঠাৎ,
ওর সময় ফুরিয়ে এল।
বলল, --"এবার চলি"
বুকটা ধক্ করে উঠল।
বললাম,--"আর কি দেখা হবে না??"
__"হবে। প্রতি পূর্নিমার
তিথীতে এখানে এসো।আমি আসবই।
অপেক্ষায় থাকব।"
এবার চলে গেল। মুখে কোন কথাই
আসলো না। দাড়িয়ে রইলাম।
তারপর......
প্রতিটি পূর্নিমার তিথীতে....
অনেকবার দেখা হল।
গল্প হল।
স্বপ্ন দেখলাম, একা না, দুজনেই।
পাশাপাশি থাকব। সারাজীবন।
ঠিক হল, সামনের
তিথীতে আমরা পরীর দেশে যাব। ও
আমাকে নিয়ে যাবে।
প্রহর গুনলাম।
অবশেষে সেই পূর্নিমার তিথী।
গভীর রাত। নিথর, নিস্তব্ধ।
আস্তে করে দরজা খুলে বের হলাম।
ছুটলাম সাকোর দিকে।
বাশঝাড় পার হলাম।
তারপর বটগাছ।
এবার মন্দির।
হয়তোবা এবার পরীর দেশ।
পরীকে খুজলাম।
_"বাবা, এত রাতেএখানে কেন?
কোথায় যাচ্ছ?"
হঠাৎ মানুষের কন্ঠ
শুনে ভড়কে গেলাম।
পিছনে তাকালাম।
দেখলাম, ধরণী কান্ত বাবু।
সম্পর্কে কাকা, পেশায় কবিরাজ।
কোন উত্তর দিলাম না।
সাঁই-সাঁই করে বাতাস বইল।
বটগাছটা দুমড়ে মুচড়ে গেল।
কয়েকটা বাঁশ মট-মট করে ভেঙে গেল।
বুঝলাম পরী চলে যাচ্ছে।
পরিবেশটা ধরণী কবিরাজও দেখলো।
আজব টাইপের একটা হাসি দিল।
__"আমি না থাকলে কি হত তোমার!!
দেখছ, কেমন করে সব
ভুতকে হটিয়ে দিলাম, কোন
দিশা না পেয়ে বাঁশ
ভেঙে পালালো। এত
রাতে তুমি এখানে কেন?? "
>>মেজাজটা বড্ড খারাপ হয়ে গেল,
তার চেয় মনটাই বেশি খারাপ হল।
উত্তর দিলাম না।
শুধু বললাম; --" আপনি এখানে কেন?"
বললেন, -"আমি তোমার
ব্যাপারটা.....।
মুখটা বন্ধ করে দিলেন। আর
কথা বললেন না।আমিও আর
জানতে চাইলাম না। ভাবলাম
স্বপ্নটা সত্যিই হতে দিলেন না।
অপদার্থ।
তারপর.........
পূর্নিমার তিথীতে, আবার আসলাম।
কিন্তু,পরী আসলো না।
অনেকগুলা তিথী গেল, মাসের পর
মাস, বছরের পর বছর।
দোষ তো কবিরাজের, আমার না।
আমি কেন শাস্তি পাব?
হয়তো পরী একদিন বুঝবে, আবার
আসবে।
আশায় ছিলাম।
আজও আছি।
আজও বাঁশের সাঁকোতে বসে আছি।
শ্মশানটা খাঁ-খাঁ করছে,
বটগাছটা দাড়িয়ে আছে।
শরতের রাত, ভরা পূর্নিমা।
আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি,
আমার পরী আসবেই, এই বিশ্বাসে।
রাত বাড়ে,
__ একটা চাঁদ,
অসংখ্য তারা।
হাজার।
লক্ষ।
কোটি........
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ডিবেটার সাদ্দাম হোসেন ০৩/১১/২০১৪ধন্যবাদ ইন্জিনিয়ার সাহেব.......
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ১৬/০৯/২০১৪এটা একটা সুন্দর গবিতা। গল্প আর কবিতার সংযুক্তি।
-
অ ০৯/০৯/২০১৪দারুণ লাগল গল্পটি ।
-
সুশান্ত মান্না ০৮/০৯/২০১৪আমার ভয় হছে খুব ওই ভুতকে
-
ডিবেটার সাদ্দাম হোসেন ০৮/০৯/২০১৪অবশেষে বেশ কনফিউজড হয়ে গেলাম।
আমি এটা কি লিখছি........
গল্প না গদ্য কবিতা......
লেখার সময়ও ভাবিনি।
যাই হোক, হয়তো সাহিত্যের কোন শাখা হবে.......... -
মঞ্জুর হোসেন মৃদুল ০৮/০৯/২০১৪ভিষন ভাল লাগল।
-
শূন্য ০৮/০৯/২০১৪সম্ভবত একটা গদ্য কবিতা পড়লাম।
-
আবু সাহেদ সরকার ০৮/০৯/২০১৪মনকারা একটি কবিতা পড়লাম কবি।
-
একনিষ্ঠ অনুগত ০৮/০৯/২০১৪এটা গল্প নয় ভাই... গদ্য কবিতা... তবে কবিতার ভেতরে একটা সুন্দর গল্প আছে।।
-
ডিবেটার সাদ্দাম হোসেন ০৭/০৯/২০১৪আসলে এটা গল্প।
কিন্ত মজার ব্যাপারটা হল আমি যখন
আপনার মন্তব্যটা দেখলাম তখন আরও
গভীর ভাবে ভাবলাম......
হ্যা, সত্যিই গল্পটা কবিতা টাইপের.....
আপনার বিচক্ষণতার
প্রশংসা না করে পারলাম না..@মি.
শিমুল শুভ্র সাহেব -
শিমুল শুভ্র ০৭/০৯/২০১৪অনেক বড় কবিতা , চমৎকার অনুভুতিময় । বেশ সুন্দর আবৃত্তি করার মত কবিতা ।