প্রতিজ্ঞা
সুমন দাস
#আমি তখন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। দুর্গা পুজোর দিনকয়েক আগে কাকু নতুন সাইকেল কিনে দিয়েছেন। সুতরাং সাইকেলে চড়ে পুজো দেখার জন্য মন চঞ্চল ছিল। সপ্তমী অষ্টমী দুদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা হলো। সঙ্গে সাইকেল তো আছেই। নবমীর দিনের একটি ঘটনা আমার জীবনে পুজোর আনন্দের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সকাল গড়িয়ে দুপুর স্নান সেরে নতুন কাপড় পড়ে মন্ডপে যাওয়ার জন্য সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। আমাদের বাড়ির পিছনে রয়েছে পাথুরে নদী গুমড়া। এর পাড়ে চা বাগান সম্প্রদায়ের জনগনের বসবাস। একই গ্রামে থাকার ফলে ওদের সঙ্গে হৃদ্যতা ছিল। নদীর পাড়ের রাস্তা ধরে পূজা মন্ডপে যাব বলে সাইকেল নিয়ে এগোচ্ছি। হঠাৎ কানে এলো কান্নার শব্দ। শব্দকে অনুসরণ করে এগিয়ে গিয়ে দেখি আমার থেকে বছর খানেকের ছোট ললিত নামের একটি কিশোর খুব কান্না কাটি করছে। পাশে দাঁড়িয়ে ওর মা ও চোখের জল ফেলছেন। ললিতের মাকে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান বাগানে বোনাস হয়নি তাই নতুন কাপড় কেনা সম্ভব হয়নি। নতুন কাপড়ের বায়না ধরে ললিত কাঁদছে। ঘটনাটি আমাকে খুবই পীড়া দেয়। সাইকেল ঘুরিয়ে বাড়িতে ফিরে এলাম। মাকে বলে আমার পুরনো একপ্রস্থ কাপড় নিয়ে ছুটলাম ললিতদের বাড়ি। আমার কাপড় সবসময়ই পরিপাটি করা থাকত। কাপড় গুলো ললিতের হাতে দিয়ে বললাম ওইগুলো পড়ে বিকেলে পুজোতে যাবে। সে গুলো হাতে নিয়ে যেন ললিতের আনন্দ আর ধরে না। বিকেলে পুজো মন্ডপে ওর সঙ্গে দেখা হলো। ললিতের গায়ে আমার দেওয়া পুরনো শার্ট পেন্ট। কিন্তু মুখে হাসির ঝিলিক। বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তুলে। মনকে প্রশ্ন করলাম পুরনো কাপড়ে যদি ললিতের এতো আনন্দ তা হলে নতুন কাপড়ের কি প্রয়োজন। কতো ললিত পুজোতে নতুন কাপড় পরতে পারছেনা টাকার অভাবে। সেই দিন প্রতিজ্ঞা নিলাম আমি কোনোদিন পুজোতে নতুন কাপড় পরবোনা। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। অবশ্য প্রতিবছর কোনো না কোনো লোককে নতুন কাপড় কিংবা যৎসামান্য আর্থিক সাহায্য করার চেষ্টা করি। নিজে পুজোতে নতুন কাপড় না পরে যেন এক অনন্য অনুভূতি পাই।
#আমি তখন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। দুর্গা পুজোর দিনকয়েক আগে কাকু নতুন সাইকেল কিনে দিয়েছেন। সুতরাং সাইকেলে চড়ে পুজো দেখার জন্য মন চঞ্চল ছিল। সপ্তমী অষ্টমী দুদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা হলো। সঙ্গে সাইকেল তো আছেই। নবমীর দিনের একটি ঘটনা আমার জীবনে পুজোর আনন্দের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সকাল গড়িয়ে দুপুর স্নান সেরে নতুন কাপড় পড়ে মন্ডপে যাওয়ার জন্য সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। আমাদের বাড়ির পিছনে রয়েছে পাথুরে নদী গুমড়া। এর পাড়ে চা বাগান সম্প্রদায়ের জনগনের বসবাস। একই গ্রামে থাকার ফলে ওদের সঙ্গে হৃদ্যতা ছিল। নদীর পাড়ের রাস্তা ধরে পূজা মন্ডপে যাব বলে সাইকেল নিয়ে এগোচ্ছি। হঠাৎ কানে এলো কান্নার শব্দ। শব্দকে অনুসরণ করে এগিয়ে গিয়ে দেখি আমার থেকে বছর খানেকের ছোট ললিত নামের একটি কিশোর খুব কান্না কাটি করছে। পাশে দাঁড়িয়ে ওর মা ও চোখের জল ফেলছেন। ললিতের মাকে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান বাগানে বোনাস হয়নি তাই নতুন কাপড় কেনা সম্ভব হয়নি। নতুন কাপড়ের বায়না ধরে ললিত কাঁদছে। ঘটনাটি আমাকে খুবই পীড়া দেয়। সাইকেল ঘুরিয়ে বাড়িতে ফিরে এলাম। মাকে বলে আমার পুরনো একপ্রস্থ কাপড় নিয়ে ছুটলাম ললিতদের বাড়ি। আমার কাপড় সবসময়ই পরিপাটি করা থাকত। কাপড় গুলো ললিতের হাতে দিয়ে বললাম ওইগুলো পড়ে বিকেলে পুজোতে যাবে। সে গুলো হাতে নিয়ে যেন ললিতের আনন্দ আর ধরে না। বিকেলে পুজো মন্ডপে ওর সঙ্গে দেখা হলো। ললিতের গায়ে আমার দেওয়া পুরনো শার্ট পেন্ট। কিন্তু মুখে হাসির ঝিলিক। বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তুলে। মনকে প্রশ্ন করলাম পুরনো কাপড়ে যদি ললিতের এতো আনন্দ তা হলে নতুন কাপড়ের কি প্রয়োজন। কতো ললিত পুজোতে নতুন কাপড় পরতে পারছেনা টাকার অভাবে। সেই দিন প্রতিজ্ঞা নিলাম আমি কোনোদিন পুজোতে নতুন কাপড় পরবোনা। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। অবশ্য প্রতিবছর কোনো না কোনো লোককে নতুন কাপড় কিংবা যৎসামান্য আর্থিক সাহায্য করার চেষ্টা করি। নিজে পুজোতে নতুন কাপড় না পরে যেন এক অনন্য অনুভূতি পাই।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সোলাইমান ২৬/১০/২০১৭সুপ্রিয় কবি,শুভেচ্ছা জানবেন। সুস্থ থাকুন।আমন্ত্রণ আমার পাতায়।।
-
পারভেজ এ রহমান ২৬/১০/২০১৭সুন্দর হয়েছে
-
রিজভী নাভিন ২৫/১০/২০১৭বাহ সুন্দর হয়েছে ।
-
কামরুজ্জামান সাদ ২৫/১০/২০১৭ভাল লিখেছেন লেখক
-
ফয়জুল মহী ২৪/১০/২০১৭মনোরম ভাবার্থ
-
আজাদ আলী ২৪/১০/২০১৭Valoito laglo
-
Mahbubur Rahman ২৪/১০/২০১৭ভালো
-
মধু মঙ্গল সিনহা ২৪/১০/২০১৭খুব ভালো লাগল।