ঝাঁঝালো রোদের দিনে
ঝাঁঝালো রোদ । সাত সকালেই রোদের এত তেজ । আন্দাজ করা যায় দিনটা কেমন যাবে ৷ Morning shows the day. ইদানিং অবশ্য নিশ্চিত করে কিছুই বলা যায়না । গনগনে রোদ্দুরেও যখন-তখন ঝরঝরিয়ে বৃষ্টি আসে ৷ রোদ ঝরে বৃষ্টিও বর্ষে মাঝখানে মানুষগুলো কাক ভেজা হয় ৷ শরীর কিন্তু জুড়োয় না!
জলবায়ু কেমন যেন দুর্বোধ্য হয়ে যাচ্ছে ।
আসাদ গেট ।
সকাল বেলার তেজদীপ্ত রোদ মাথায় দাঁড়িয়ে আছি। সদরঘাট থেকে চিড়িয়াখানাগামী বাস আজ খুব কম ৷ কোন কোনটায় গেট পর্যন্ত মানুষ দাঁড়িয়ে ।
অনেকক্ষণ পর একটা বাসে কোনমতে উঠতে সক্ষম হলাম ৷ সিট নাই । পা রাখার জায়গা পর্যন্ত নাই । উইকেন্ডের পর রাস্তায় জ্যাম প্রকট রূপ নিয়েছে । গাড়ি চলছে মন্থর গতিতে । কলেজ গেট এসে পৌঁছাতে ভাগ্যবলে একটা সিট পেয়ে গেলাম । তাও আবার ফ্যানের নিতে ।
এ যেন সোনায় সোহাগা ব্যাপার! সদরঘাট থেকে ফেরত আসা বাসের বেশি যাত্রী সাথে বাক্স-প্যাটরা নিয়ে গাড়িতে উঠে । মাঝেমধ্যে হাঁস মুরগীও দেখা যায় !
গরুর গাড়ির গতিতে চলতে চলতে বাস শ্যামলী পর্যন্ত পৌঁছে গেছে । এখানেও হুড়মুড়িয়ে ঠেলেঠুলে কয়েকজন যাত্রী উঠলো । আমি ব্যাগ থেকে ইয়ারফোনটা বের করে প্রতিদিনকার মত কানে গুঁজে দিলাম । সবগুলো রেডিও চ্যানেলে সকাল সাতটার খবর প্রচারিত হচ্ছে ।
একজন মহিলা আমার গা ঘেঁষে অনেক কষ্টে দাঁড়িয়ে আছে । আর ঘেমেনেয়ে হাসপাস করছেন ।
আমি আমার সিটটা তার জন্যে ছেড়ে দিলাম । মহিলা মধ্য বয়স্কা । চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা । পরনে শাড়ী । গোলায় ঝুলানো আইডিকার্ড । চেহারায় ব্যাক্তিত্বের ছাপ।
কিছুক্ষণ যাওয়ার পর মনে হল--
ধ্যুর শালা, কি ভুলটাই না করলাম সিট ছেড়ে দিয়ে। আমার আরাম হারাম করে যাকে বসার জায়গা করে দিলাম সে তো আমাকে পাত্তাই দিল না !
একবার ধন্যবাদ বলা তো দূরের কথা, সৌজন্য দেখিয়ে একটু হাসালেনও না।
এই জন্য ঢাকা শহরে মানুষ বুঝি এত স্বার্থপর হয় । পরিবেশটায় বাধ্য করে আত্মা আর স্বার্থকেন্দ্রীক হতে ।
সারা রাস্তা নিজের বোকামীর জন্য আফসোস করে গেলাম ৷
মিরপুর আসতেই আমি বিরসবদনে গাড়ি থেকে নেমে গেলাম।
দুইটা ক্লাস পর ক্যান্টিনে গিয়ে পকেটে হাত দিয়ে দেখি স্মার্ট ফোনটা নাই । অর্ধেক খাওয়া সিঙ্গাড়াটা আর খেতে পারলামনা !
ক্লাসে ছুটে এসে এক বন্ধুর মোবাইল থেকে আমার নাম্বারে কল দিলাম। প্রথম বারেই কল গেল । মনে মনে কিছুটা আশ্বস্ত হলাম । দ্বিতীয় বার কল দেয়ার পর অপরপ্রান্তে একটা মহিলার কন্ঠ শুনতে পেলাম--
: ওয়ালাইকুম সালাম, কে বলছেন ?
: ইয়ে মানে আপনি যে ফোনে কথা বলছেন সেটা আমার ।
: ও হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি ফোনটা বাসে পেয়েছি । প্যাটার্ন লোক থাকায় আপনার বন্ধু বা আত্মীয়কে ফোন দিতে পারিনি । আপনি এখন কোথায় আছেন ?
: মিরপুর, রাইনখোলা ৷
: ওয়েল, আপনি কি একটু কষ্ট করে প্রশিকা ভবনের সামনে আসতে পারবেন ।
: জ্বি, আমি এখনি রওনা দিচ্ছি ।
তখনই ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে একটা রিকসা নেই ।
প্রশিকা ভবনের সামনে গিয়ে ফোন দিতেই
ওপাশ থেকে কেটে দিল। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর দেখি একজন মহিলা মধ্য বয়স্কা মহিলা আমার দিকে এগিয়ে আসছে । চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা । পরনে শাড়ী । গোলায় ঝুলানো আইডিকার্ড । চেহারায় ব্যাক্তিত্বের ছাপ । মুখে মৃদু হাসি। যে হাসিতে অভিমান আর বিবমিষার পারদ নিম্নগামী হয়ে যায়...।
জলবায়ু কেমন যেন দুর্বোধ্য হয়ে যাচ্ছে ।
আসাদ গেট ।
সকাল বেলার তেজদীপ্ত রোদ মাথায় দাঁড়িয়ে আছি। সদরঘাট থেকে চিড়িয়াখানাগামী বাস আজ খুব কম ৷ কোন কোনটায় গেট পর্যন্ত মানুষ দাঁড়িয়ে ।
অনেকক্ষণ পর একটা বাসে কোনমতে উঠতে সক্ষম হলাম ৷ সিট নাই । পা রাখার জায়গা পর্যন্ত নাই । উইকেন্ডের পর রাস্তায় জ্যাম প্রকট রূপ নিয়েছে । গাড়ি চলছে মন্থর গতিতে । কলেজ গেট এসে পৌঁছাতে ভাগ্যবলে একটা সিট পেয়ে গেলাম । তাও আবার ফ্যানের নিতে ।
এ যেন সোনায় সোহাগা ব্যাপার! সদরঘাট থেকে ফেরত আসা বাসের বেশি যাত্রী সাথে বাক্স-প্যাটরা নিয়ে গাড়িতে উঠে । মাঝেমধ্যে হাঁস মুরগীও দেখা যায় !
গরুর গাড়ির গতিতে চলতে চলতে বাস শ্যামলী পর্যন্ত পৌঁছে গেছে । এখানেও হুড়মুড়িয়ে ঠেলেঠুলে কয়েকজন যাত্রী উঠলো । আমি ব্যাগ থেকে ইয়ারফোনটা বের করে প্রতিদিনকার মত কানে গুঁজে দিলাম । সবগুলো রেডিও চ্যানেলে সকাল সাতটার খবর প্রচারিত হচ্ছে ।
একজন মহিলা আমার গা ঘেঁষে অনেক কষ্টে দাঁড়িয়ে আছে । আর ঘেমেনেয়ে হাসপাস করছেন ।
আমি আমার সিটটা তার জন্যে ছেড়ে দিলাম । মহিলা মধ্য বয়স্কা । চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা । পরনে শাড়ী । গোলায় ঝুলানো আইডিকার্ড । চেহারায় ব্যাক্তিত্বের ছাপ।
কিছুক্ষণ যাওয়ার পর মনে হল--
ধ্যুর শালা, কি ভুলটাই না করলাম সিট ছেড়ে দিয়ে। আমার আরাম হারাম করে যাকে বসার জায়গা করে দিলাম সে তো আমাকে পাত্তাই দিল না !
একবার ধন্যবাদ বলা তো দূরের কথা, সৌজন্য দেখিয়ে একটু হাসালেনও না।
এই জন্য ঢাকা শহরে মানুষ বুঝি এত স্বার্থপর হয় । পরিবেশটায় বাধ্য করে আত্মা আর স্বার্থকেন্দ্রীক হতে ।
সারা রাস্তা নিজের বোকামীর জন্য আফসোস করে গেলাম ৷
মিরপুর আসতেই আমি বিরসবদনে গাড়ি থেকে নেমে গেলাম।
দুইটা ক্লাস পর ক্যান্টিনে গিয়ে পকেটে হাত দিয়ে দেখি স্মার্ট ফোনটা নাই । অর্ধেক খাওয়া সিঙ্গাড়াটা আর খেতে পারলামনা !
ক্লাসে ছুটে এসে এক বন্ধুর মোবাইল থেকে আমার নাম্বারে কল দিলাম। প্রথম বারেই কল গেল । মনে মনে কিছুটা আশ্বস্ত হলাম । দ্বিতীয় বার কল দেয়ার পর অপরপ্রান্তে একটা মহিলার কন্ঠ শুনতে পেলাম--
: ওয়ালাইকুম সালাম, কে বলছেন ?
: ইয়ে মানে আপনি যে ফোনে কথা বলছেন সেটা আমার ।
: ও হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি ফোনটা বাসে পেয়েছি । প্যাটার্ন লোক থাকায় আপনার বন্ধু বা আত্মীয়কে ফোন দিতে পারিনি । আপনি এখন কোথায় আছেন ?
: মিরপুর, রাইনখোলা ৷
: ওয়েল, আপনি কি একটু কষ্ট করে প্রশিকা ভবনের সামনে আসতে পারবেন ।
: জ্বি, আমি এখনি রওনা দিচ্ছি ।
তখনই ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে একটা রিকসা নেই ।
প্রশিকা ভবনের সামনে গিয়ে ফোন দিতেই
ওপাশ থেকে কেটে দিল। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর দেখি একজন মহিলা মধ্য বয়স্কা মহিলা আমার দিকে এগিয়ে আসছে । চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা । পরনে শাড়ী । গোলায় ঝুলানো আইডিকার্ড । চেহারায় ব্যাক্তিত্বের ছাপ । মুখে মৃদু হাসি। যে হাসিতে অভিমান আর বিবমিষার পারদ নিম্নগামী হয়ে যায়...।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সুপ্রিয় কুমার চক্রবর্তী ২২/০৯/২০১৯গল্পের ভাষা যদি একদম হৃদয়ের কাছাকাছি না পৌঁছায় , তাহলে পড়তে ভালো লাগে না ! লেখককে ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা গল্পের প্লট তৈরির জন্য !
-
সাইদুর রহমান ০৫/০৮/২০১৯খুব ভালো লাগলো।
-
শাহানাজ সুলতানা (শাহানাজ) ০৭/০৭/২০১৯বেশ ভালো
-
ইবনে মিজান ০৬/০৭/২০১৯বেশ
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ০৬/০৭/২০১৯চমৎকার