এক মুঠো স্নেহ - ২
চাকরি'টাই সবে দুই বছরের ; তার মধ্যে আর কয়টা শনিবার ! কিন্তু কাহিনীতে যখন শুধু শনিবারের উচ্ছলতার কথাই লেখা হয় তখন এই শত শনিবার অনেক , আর যদি মুখ্য চরিত্রে মাত্র দু-জন থাকে তাহলেতো প্রতিটা মুহুর্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে । আরোও একটা ব্যর্থ শনিবার পেড়িয়ে দ্বৈপায়নের মা ক্ষুসুদা দেবীর ভালোবাসা-স্নেহ-মায়া-মমতা-ত্যাগ-তিতিক্ষা-আশা-ভরসা ইত্যাদি সমস্তকিছুর সংযম ভুলে ছেলের জন্য বদ্ধ উন্মাদের মতো অস্থির হয়ে উঠলেন । হিতাহিত ভুলে পরের দিন সকালেই বালিশের নীচে রাখা পাঁচশো টাকার একটা নোট হাতে নিয়ে এক কাপড়ে বেড়িয়ে পরলেন । কোথায় যাবে ? ছেলেকে দেখতে ? কিন্তু ছেলে কোথায় চাকুরী করে সে কথাটাই তো জানে না ক্ষুসুদা দেবী ! কোন ডিপার্টমেন্ট (!) কি চাকরি , কিছুই জানে না । জানার প্রয়োজন বোধ করেনি এতদিন । কিন্তু আজকে যখন প্রয়োজন তখন কি করতে হবে, সে কথা ভাবতে ভাবতেই প্রথম গেলেন সেই হেমকাকার বাড়ি । হেমকাকা শিক্ষিত মানুষ, উনি যেহেতু ছেলের সাথে আলাপ করেছিল তাই নিশ্চয়ই জানবেন । সবকিছু একটা কাগজে লিখে দিয়েছেন তিনি । এই প্রথম ক্ষুসুদা দেবী উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটছেন । দুরপাল্লার গাড়ি ধরতে হবে তাকে , কিন্তু কোনদিন একা এতদুর যাওয়া হয়নি তার । তবুও আজকে শঙ্কা - ভয় কিছুই নেই তার । অনেকটা পথ হেঁটে যখন ক্লান্ত, তখন মনে হল গতকাল থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি তার ; এমনকি একগ্লাস জল খেয়েছিল কি না তাও মনে করতে পারছিল না । জলের তেষ্টাতে যখন বুক-গলা-মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে তখন রাস্তার পাশের একটা বাড়িতে গিয়ে উঠল ক্ষুসুদা দেবী । প্রথমে কোন লোকজন না পেলেও ক্ষানিক ডাকাডাকিতে একটা নতুন বউ বেড়িয়ে এসে বসার জায়গা দিল । আদর করে শ্রদ্ধা ভরে এক বাটি মুড়ি আর এক গ্লাস জল দিল । খেতে খেতে ক্ষুসুদা দেবী লক্ষীমন্ত বউটাকে দেখে দেখে ভাবছে , একদিন তার ঘরেও এমন টুকটুকে সুন্দর একটা বঊ থাকবে । তাকে মা বলে ডাকবে ।
------চলবে ।
------চলবে ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
অধিরাজ ২৭/০৬/২০২৪বেশ লিখেছেন। ধন্যবাদ।
-
মধু মঙ্গল সিনহা ২০/০৪/২০২৪খুব ভালো লাগলো প্রিয় লেখক।
-
সুসঙ্গ শাওন ১৯/০২/২০২৪সুন্দর লিখেছেন
-
ফয়জুল মহী ১৮/০২/২০২৪সুনির্মল অনুভুতি
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ১৮/০২/২০২৪সুন্দর নিবেদন