গল্প হলেও সত্যি ৫
(গল্প হলেও সত্যি ৪ এর ধারাবাহিক)
বেশ কিছুদিনের অপেক্ষা শেষে মুনিরের মায়ের দেখা না পেয়ে আমি বাধ্য হয়েই যেন মুনিরদের বাড়ির দিকে পা বাড়ালাম । বাস্তবে আমি মানুষটা এমন যে, কোন একটা বিষয় শোনতে পেলে তার শেষ না জেনে থাকতে পারি না আবার ভিত্তিহীন কথাকেও বেশী সহ্য করতে পারি না । এমন একটা কথা যখন শোনলাম, আর আমি মুনিরদের বিষয়ে যেহেতু একটু খোঁজ খবর রাখার চেষ্টা করি তাই বিষয় টা জানা কর্তব্য বলেই মনে করলাম তবে মনের কথা মনে রেখেই গেলাম, ঘুর্ণাক্ষরেও কেউ যেন টের না পায় সেদিকটা খেয়াল রাখছিলাম এই কারনে যে, নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়া এরকম সেন্সেটিভ বিষয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু বলা যেমন বিপদজনক তেমনি তথ্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রেও থাকতে হয় অত্যন্ত সতর্ক । কেননা একটু এদিক সেদিক হলেই উভয় পক্ষের বিপদ, অপর পক্ষ যেমন বদনামের ভয়ে যে কোন কিছু করে বসতে পারে আবার ঘটনার সত্যতা যাচাই না করে মুখ ফস্কে কিছু বেড়িয়ে গেলে সমাজে মান সম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচার জো থাকবে না । তাই আমি একদিন সকালে আর পাঁচটা কাজের দিনের মতো করেই মুনিরের মায়ের কাছে গেলাম, প্রাথমিক ভাবে যা আলাপ আলোচনা হয় সেরকম কথা বলতে বলতেই এক সময় মুনিরের মা আমাকে চা খাওয়ার আপ্যায়ন করল, আমি হালকা ভাবে না না করলেও আরেকটু সময় কাটানোর জন্য চা খেতে রাজী হলাম । মুনিরের মা মানে আছলাম বিবি আগে নিজ হাতে আমাকে চা খাওয়াতে পছন্দ করেন এমন কি ছেলের বিয়ের দিনে বাড়িতে ছিলাম না বলে বিয়ের কদিন পরে নতুন বউয়ের প্রাপ্য উপহারটা যেদিন দিতে গিয়েছিলাম সেদিনও বউ এসে সালাম করেছিল বটে চা কিন্তু মুনিরের মা নিজেই করে খাইয়েছিলেন আমাকে । তবে আজকে মনটা যেন একটু উদাস, আমার সঙ্গে কথা বলছে, পানটাও মুখে আছে ; তবে অন্য দিন যতটা সমীহ থাকতো আজ তা নেই, আজকে যেন আমি পাড়ার আর দশটা মানুষের মতোই একজন । যদিও আমি পাড়ার দশজনের বাইড়ের কেউ নই তবুও আমি ছিলাম আলাদা । আলাদা এই কারনে যে, মুনিরের মা যখন যখন আপদে বিপদে টাকার অভাবে পরেছে দু-চার টাকা কমবেশি হতে পারে কিন্তু নিত আমার কাছ থেকেই, কখনো শোধ দিত আবার কখনো ইচ্ছে হলে ঘরে-বাইড়ে কাজ করে দিত আবার কোন কোন সময় ভুলেও যেত । তবে এ নিয়ে আমার সঙ্গে কোনদিন কোন ঝামেলা হয়নি কারন আমি কোনদিন ফেরত চাইনি । এই সুন্দর সম্পর্ক নিয়ে চলার পথে আজকে যে হোঁচট খেয়েছি সেটা বলাই বাহুল্য । পার্টিশানের ওপারে যে মুনিরের শাশুড়ি রয়েছে সেটা শুরু থেকেই টের পেলেও কোন রকম আগ্রহ দেখাইনি । আমাকে চা খাওয়ার কথা বলেই মুনিরের মা একটু গলা উঁচিয়ে বলল,”এক কাপ চা দেওছেন” । কথাটা কাকে বলল সে সম্পর্কের রসায়নটা বুজা গেল না তবে ঘরে যেহেতু আর কেউ নেই আমার বুজতে আসুবিধা হলনা যে কথাটা পার্টিশানের ওপারে থাকা বেয়ানকেই বলেছে । যথারীতি চা আসল, আমি চা খেয়ে বিদেয় হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম । চা টাও বেশ ভাল হয়েছে বলতে হবে । মুনিরের মায়ের হাতের চা অতটা স্বাদের হয়না বটে । তবে যিনি চা দিলেন, রস করে তাকেও কিছু বলার ইচ্ছে হচ্ছিল কিন্তু চা দেওয়ার এবং আমার সামনে আসার সৌজন্যতা ও সঙ্কুচতা দেখে কিছু বলার আগ্রহ মিইয়ে গেছে । মুনিরের মা “হা আল্লাহ্” বলে একটা দীর্ঘ্য শ্বাস ছাড়লেন, আমার দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে বিরবির করছিলেন , আমার কপালে সুখ নাই বাবু, খোদা যা করেন ভালই করেন, আমার পোলাডা বেবুজ, তারে ক্ষমা কইরেন”। আমি আর কোন কথা বলার ভাষা খুঁজে পেলাম না, বাইড়ে এসে সোজা দ্বিচক্রযান ষ্টার্ট করে বেড়িয়ে এলাম । মুনিরের মা যে বাড়িতে ত্থাকেন, সেটি একটি অদ্ভুত পরিবেশ । তিন দিকে রাবার বাগানে ঘেরা আর একদিকে শুধু জঙ্গল , জঙ্গলটাতে প্রচুর পাখ পাখালি থাকে, সারাবেলা পাখিদের কলকাকলি শোনা যায় । আমার দ্বিচক্রযানের আওয়াজ একেবারে কম না তবুও শোনলাম একটা ঢুপি পাখি যাকে আমরা বলি ঘুঘু এক নাগারে বুক বুক করে ডাকছে । আস্তে আস্তে সেই ডাক পেছনে রেখে আমি এগিয়ে গেলাম সাম্নের দিকে মিলিয়ে গেলাম বড় রাস্তার ব্যস্ততায় । পাখিটা হয়ত তখনো ডাকছে ।
বেশ কিছুদিনের অপেক্ষা শেষে মুনিরের মায়ের দেখা না পেয়ে আমি বাধ্য হয়েই যেন মুনিরদের বাড়ির দিকে পা বাড়ালাম । বাস্তবে আমি মানুষটা এমন যে, কোন একটা বিষয় শোনতে পেলে তার শেষ না জেনে থাকতে পারি না আবার ভিত্তিহীন কথাকেও বেশী সহ্য করতে পারি না । এমন একটা কথা যখন শোনলাম, আর আমি মুনিরদের বিষয়ে যেহেতু একটু খোঁজ খবর রাখার চেষ্টা করি তাই বিষয় টা জানা কর্তব্য বলেই মনে করলাম তবে মনের কথা মনে রেখেই গেলাম, ঘুর্ণাক্ষরেও কেউ যেন টের না পায় সেদিকটা খেয়াল রাখছিলাম এই কারনে যে, নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়া এরকম সেন্সেটিভ বিষয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু বলা যেমন বিপদজনক তেমনি তথ্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রেও থাকতে হয় অত্যন্ত সতর্ক । কেননা একটু এদিক সেদিক হলেই উভয় পক্ষের বিপদ, অপর পক্ষ যেমন বদনামের ভয়ে যে কোন কিছু করে বসতে পারে আবার ঘটনার সত্যতা যাচাই না করে মুখ ফস্কে কিছু বেড়িয়ে গেলে সমাজে মান সম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচার জো থাকবে না । তাই আমি একদিন সকালে আর পাঁচটা কাজের দিনের মতো করেই মুনিরের মায়ের কাছে গেলাম, প্রাথমিক ভাবে যা আলাপ আলোচনা হয় সেরকম কথা বলতে বলতেই এক সময় মুনিরের মা আমাকে চা খাওয়ার আপ্যায়ন করল, আমি হালকা ভাবে না না করলেও আরেকটু সময় কাটানোর জন্য চা খেতে রাজী হলাম । মুনিরের মা মানে আছলাম বিবি আগে নিজ হাতে আমাকে চা খাওয়াতে পছন্দ করেন এমন কি ছেলের বিয়ের দিনে বাড়িতে ছিলাম না বলে বিয়ের কদিন পরে নতুন বউয়ের প্রাপ্য উপহারটা যেদিন দিতে গিয়েছিলাম সেদিনও বউ এসে সালাম করেছিল বটে চা কিন্তু মুনিরের মা নিজেই করে খাইয়েছিলেন আমাকে । তবে আজকে মনটা যেন একটু উদাস, আমার সঙ্গে কথা বলছে, পানটাও মুখে আছে ; তবে অন্য দিন যতটা সমীহ থাকতো আজ তা নেই, আজকে যেন আমি পাড়ার আর দশটা মানুষের মতোই একজন । যদিও আমি পাড়ার দশজনের বাইড়ের কেউ নই তবুও আমি ছিলাম আলাদা । আলাদা এই কারনে যে, মুনিরের মা যখন যখন আপদে বিপদে টাকার অভাবে পরেছে দু-চার টাকা কমবেশি হতে পারে কিন্তু নিত আমার কাছ থেকেই, কখনো শোধ দিত আবার কখনো ইচ্ছে হলে ঘরে-বাইড়ে কাজ করে দিত আবার কোন কোন সময় ভুলেও যেত । তবে এ নিয়ে আমার সঙ্গে কোনদিন কোন ঝামেলা হয়নি কারন আমি কোনদিন ফেরত চাইনি । এই সুন্দর সম্পর্ক নিয়ে চলার পথে আজকে যে হোঁচট খেয়েছি সেটা বলাই বাহুল্য । পার্টিশানের ওপারে যে মুনিরের শাশুড়ি রয়েছে সেটা শুরু থেকেই টের পেলেও কোন রকম আগ্রহ দেখাইনি । আমাকে চা খাওয়ার কথা বলেই মুনিরের মা একটু গলা উঁচিয়ে বলল,”এক কাপ চা দেওছেন” । কথাটা কাকে বলল সে সম্পর্কের রসায়নটা বুজা গেল না তবে ঘরে যেহেতু আর কেউ নেই আমার বুজতে আসুবিধা হলনা যে কথাটা পার্টিশানের ওপারে থাকা বেয়ানকেই বলেছে । যথারীতি চা আসল, আমি চা খেয়ে বিদেয় হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম । চা টাও বেশ ভাল হয়েছে বলতে হবে । মুনিরের মায়ের হাতের চা অতটা স্বাদের হয়না বটে । তবে যিনি চা দিলেন, রস করে তাকেও কিছু বলার ইচ্ছে হচ্ছিল কিন্তু চা দেওয়ার এবং আমার সামনে আসার সৌজন্যতা ও সঙ্কুচতা দেখে কিছু বলার আগ্রহ মিইয়ে গেছে । মুনিরের মা “হা আল্লাহ্” বলে একটা দীর্ঘ্য শ্বাস ছাড়লেন, আমার দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে বিরবির করছিলেন , আমার কপালে সুখ নাই বাবু, খোদা যা করেন ভালই করেন, আমার পোলাডা বেবুজ, তারে ক্ষমা কইরেন”। আমি আর কোন কথা বলার ভাষা খুঁজে পেলাম না, বাইড়ে এসে সোজা দ্বিচক্রযান ষ্টার্ট করে বেড়িয়ে এলাম । মুনিরের মা যে বাড়িতে ত্থাকেন, সেটি একটি অদ্ভুত পরিবেশ । তিন দিকে রাবার বাগানে ঘেরা আর একদিকে শুধু জঙ্গল , জঙ্গলটাতে প্রচুর পাখ পাখালি থাকে, সারাবেলা পাখিদের কলকাকলি শোনা যায় । আমার দ্বিচক্রযানের আওয়াজ একেবারে কম না তবুও শোনলাম একটা ঢুপি পাখি যাকে আমরা বলি ঘুঘু এক নাগারে বুক বুক করে ডাকছে । আস্তে আস্তে সেই ডাক পেছনে রেখে আমি এগিয়ে গেলাম সাম্নের দিকে মিলিয়ে গেলাম বড় রাস্তার ব্যস্ততায় । পাখিটা হয়ত তখনো ডাকছে ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
এইচ আর মুন্না ২৬/১০/২০১৯
-
তৈয়বা মনির ২২/১০/২০১৯লিখাটি বেশ ভালো লেগেছে... শুভকামনা
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ০৯/১০/২০১৯সুন্দর
-
প্রয়াস মাসুম ০৮/১০/২০১৯পাখিটা হয়ত তখনো ডাকছে......
-
এন এস এম মঈনুল হাসান সজল ০৭/১০/২০১৯চলতে থাকুক
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৬/১০/২০১৯পড়তে থাকি।
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ০৬/১০/২০১৯সুন্দর
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
শুভেচ্ছা রইল