গল্প হলেও সত্যি ১
মুনিরের মা আজ সকাল থেকে খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত । এ বাড়ি ও বাড়ি, এ পাড়া ও পাড়া , এ গ্রাম ও গ্রাম সব করছে । এখন ভাবছে থানায় যাবে , কিন্তু সঙ্গে কাকে নিয়ে যাবে সেটাই চিন্তার বিষয় । চিন্তার বিষয় অবশ্য আরো অনেক কিছুই রয়েছে , মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে এক টার পর একটা । থানায় যাওয়া ঠিক হবে । বেয়ানটাতো এখনো এলো না । ঘরে মধ্যে ন'মাসের বাচ্চাটা ট্যাঁ ট্যাঁ করছে । একটু পরে পরে মিছরির পানি দিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা আর কাজ হচ্ছে না , এবার দুধের চিন্তা করতে হবে । মুনিরটা যে কোথায় ! তাকেও খুঁজে পাচ্ছে না ।
হ্যাঁ, মুনির হল বছর কুড়ির সরল সোজা, নাম সই করতে পারা দেখায় একেবারে হাট্টাগোট্টা যুবক । জন্মের পর থেকে জন্মদাতাকে দেখেনি । মায়ের আদর যত্নে , কখনো খেয়ে কখনো না খেয়ে কখনো বা মানুষের বাড়ির ফ্যান খেয়ে বড় হয়েছে । বয়স যখন দশ বছর তখন থেকেই একটা চায়ের দোকানে মজুরী খাটতে শুরু করেছে । এখন অবশ্য দিন মজুরী করে , গ্রামের মধ্যেই যখন যে কাজ পায় তাতেই সংসার চলে বলে মাঝ বয়সী মা'কে আর মানুষের বাড়ির ঝি এর কাজে যেতে দেয় না । সেই অবুজ বয়স থেকে মায়ের চোখের জল কম মুছেনি মুনির । কত আর বয়েস হবে মায়ের । এখন যদি তেতাল্লিশ হয়, ২০/২২ বছর বয়সে স্বামী গেছিল বিদেশে বেশী টাকা রোজগার করতে, আর ফিরে আসেনি । দু একজন দেবর ভাসুর ছিল বটে , ওরাও সম্পত্তির লোভে বাড়ি ছাড়া করেছে । এখন ভাইয়ের দেশে এসে একটা পরিত্যাক্ত বাড়িতে দেখাশোনা করার অছিলায় ভাড়া না দিয়ে ভাড়া থাকে । একমাত্র ছেলের দিকে তাকিয়ে সমাজের গতানুগতিক ধারার বাইড়ে গিয়ে মুনিরের মা মুনিরকে বড় করেছে । খুব একটা চালাক চতুর না হলেও সরল মনের সুন্দর মানুষ হিসাবে তাকে এই গ্রামে যেমন অনেকে ভালবাসে , আবার অনেকে সুযোগ নেওয়ারও চেষ্টা করেছে এমনকি এখনো যে করে না তেমনটা নয় , তবে কোন প্রতিকূলতা বা প্রলোভন কাবু করতে পারেনি মুনিরের মাকে । লক্ষ্যে অবিচল থেকে জীবন জীবিকার সংগ্রামে বিজয়ী সৈনিকের মতই আজ মুনিরের মা ছেলের রোজগারে সুন্দর ভাবে সংসার চালায়, পান দিয়ে ঠোঁট রাঙিয়ে পাড়া প্রতিবেশীর সঙ্গে যেমন গল্প করে বেড়ায় তেমনি আবার পরের উপকারে ব্যাস্ত থাকে সারাক্ষণ । সকলের আপদে বিপদে , আনন্দে অনুষ্ঠানে মুনিরের মাকে এক ডাকে পাওয়া যায় বলে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে তার ।
......চলবে ।
হ্যাঁ, মুনির হল বছর কুড়ির সরল সোজা, নাম সই করতে পারা দেখায় একেবারে হাট্টাগোট্টা যুবক । জন্মের পর থেকে জন্মদাতাকে দেখেনি । মায়ের আদর যত্নে , কখনো খেয়ে কখনো না খেয়ে কখনো বা মানুষের বাড়ির ফ্যান খেয়ে বড় হয়েছে । বয়স যখন দশ বছর তখন থেকেই একটা চায়ের দোকানে মজুরী খাটতে শুরু করেছে । এখন অবশ্য দিন মজুরী করে , গ্রামের মধ্যেই যখন যে কাজ পায় তাতেই সংসার চলে বলে মাঝ বয়সী মা'কে আর মানুষের বাড়ির ঝি এর কাজে যেতে দেয় না । সেই অবুজ বয়স থেকে মায়ের চোখের জল কম মুছেনি মুনির । কত আর বয়েস হবে মায়ের । এখন যদি তেতাল্লিশ হয়, ২০/২২ বছর বয়সে স্বামী গেছিল বিদেশে বেশী টাকা রোজগার করতে, আর ফিরে আসেনি । দু একজন দেবর ভাসুর ছিল বটে , ওরাও সম্পত্তির লোভে বাড়ি ছাড়া করেছে । এখন ভাইয়ের দেশে এসে একটা পরিত্যাক্ত বাড়িতে দেখাশোনা করার অছিলায় ভাড়া না দিয়ে ভাড়া থাকে । একমাত্র ছেলের দিকে তাকিয়ে সমাজের গতানুগতিক ধারার বাইড়ে গিয়ে মুনিরের মা মুনিরকে বড় করেছে । খুব একটা চালাক চতুর না হলেও সরল মনের সুন্দর মানুষ হিসাবে তাকে এই গ্রামে যেমন অনেকে ভালবাসে , আবার অনেকে সুযোগ নেওয়ারও চেষ্টা করেছে এমনকি এখনো যে করে না তেমনটা নয় , তবে কোন প্রতিকূলতা বা প্রলোভন কাবু করতে পারেনি মুনিরের মাকে । লক্ষ্যে অবিচল থেকে জীবন জীবিকার সংগ্রামে বিজয়ী সৈনিকের মতই আজ মুনিরের মা ছেলের রোজগারে সুন্দর ভাবে সংসার চালায়, পান দিয়ে ঠোঁট রাঙিয়ে পাড়া প্রতিবেশীর সঙ্গে যেমন গল্প করে বেড়ায় তেমনি আবার পরের উপকারে ব্যাস্ত থাকে সারাক্ষণ । সকলের আপদে বিপদে , আনন্দে অনুষ্ঠানে মুনিরের মাকে এক ডাকে পাওয়া যায় বলে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে তার ।
......চলবে ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সুপ্রিয় কুমার চক্রবর্তী ০৯/০৫/২০১৯অনিন্দ সুন্দর গল্প ! ভালো লেগেছে !
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৪/০৩/২০১৯লিখতে থাকুন।