মোহনা
ঘড়িতে যখন ঠিক পাঁচটা , অমনি মোবাইল ফোনে এলার্ম বেজে উঠলো, "জাগো হে, জাগো ও নগর বাসী" । অস্মিত হুর মুড়িয়ে ঘুম থেকে জেগে সোজা টয়লেটে গিয়ে বসলেন, এলার্ম বন্ধ করতে খেয়াল ছিল না বলে ঘুমন্ত স্ত্রী হয়ত হাত বাড়িয়ে থামালেন, বিরক্তির স্বর স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে অস্মিত, সেই মান্দাতার আমলের জাগো হে....রোজ রোজ আর ভাল্লাগে না । অস্মিত টয়লেট সেরে সোজা বাথরুমে আয়নার সামনে গালে ফোম মাখতে মাখতে লক্ষ্য করলেন চোখের নীচে কালি জমেছে । আয়নার দিকে তাকিয়েই আনমনে হঠাৎ কোথায় যেন হারিয়ে গেল সে । বাইড়ে সূর্য উদিত হয়নি এখনো, পুবাকাশে লালের আভা ছড়িয়ে রয়েছে, ডালে ডালে পাখিদের কলরব, দক্ষিনের বাড়িটার এক কোন থেকে ভেসে আসছে মোরগের ক্ কক্ শব্দ, দু-এক জন প্রতিবেশী ইতিমধ্যেই জেগে গেছেন, কেউ গোয়াল থেকে গরু বের করায় ব্যস্ত আবার কেউ কেউ বাড়ির চারপাশে গোবর জল ছিটাচ্ছে । হ্যাঁ, এমনি এক শহরতলী গ্রামে অস্মিতের বসবাস । বাড়ি ঘর বেশ গুছানো, ছিমছাম । গ্রামের মধ্যে আরো দালান ঘর থাকলেও একেবারে শহরের আদলে এটাচ্ বাথরুম সহ ছাদ দেওয়া আধুনিক ডিজাইনের পাকা ঘর দ্বিতীয়টি নেই এ গ্রামে । অস্মিত গত বছর দশেকের অক্লান্ত পরিশ্রমে স্বরোজগারে এই ঘরটি নির্মাণ করিয়েছে, বাবা - মা একে একে চলে গেছে , ছেলের সুদিন দেখার বাসনা অপূর্ণ রেখেই যেতে হয়েছে দুজনকে । তবুও মা কিছুটা দেখে গেছে বলা যায় , কিন্তু তার বাবা আরও বছর বার আগেই হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কিছু বুজে উঠার আগেই স্বর্গবাসী হলেন । ছোট ভাই সেই ছোট থেকেই অবাধ্য, গোল্লায় যেতে যেতে এই বড় ভাইয়ের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সুকৌশলে এখন দু-চার পয়সা রোজগার করার ভাল বন্দোবস্ত করিয়ে দিয়েছে, স্বভাবটার পরিবর্তন হবে না বুজতে পেরেই অস্মিত তার বিয়ের ছ'মাসের মধ্যে কোন তিক্ততা সৃষ্টি হওয়ের আগেই মাকে দিয়ে পৃথকান্নের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন । এখন অবশ্য ছোট ভাইটিও বিয়ে থা করে নিজে স্বয়ং সম্পুর্ণ ভাবেই বসবাস করছেন, শুধুমাত্র রাতের বেলায় তার নিয়মিত মদ খাওয়া চাই, এছাড়া বড় ভাই অন্ত প্রান-এক নজরে এ কথা বলা যায় । বছর তিনেক আগে যখন অস্মিতের ঘর তৈরীর কাজ শেষের পথে তখনি ছোট ভাইয়ের ঘরটাকেও সুন্দর করে আধাপাকা করে সাজিয়ে দিয়েছে নিজ খরচে । এখন দুই ভাই গ্রামের মানুষের মুখে মুখে । রোজগারে, ব্যবহারে, চাল চলনে ঈর্ষার পাত্র বটে এই অস্মিত ।
-------ক্রমশঃ ।
-------ক্রমশঃ ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
রুমিয়া দত্ত সিন্হা ২৩/১২/২০১৫ভাল লাগল। তবে পরের পার্ট এর জন্য আর একটু সাস্পেন্স থাকলে ভাল লাগত।
-
দেবব্রত সান্যাল ২২/১২/২০১৫লেখার পর একবার নিজে পড়ে দেখা খুব জরুরী। প্রচুর বানান ভুল আছে। ধারাবাহিক লেখা লিখতে গেলে পাঠকের উত্সাহ বজায় রাখার ব্যবস্থা করতে হয়।
-
শান্তনু ব্যানার্জ্জী ১৫/১২/২০১৫সুন্দর লেখা
-
জুনায়েদ বি রাহমান ১৫/১২/২০১৫দারুণ
-
দেবাশীষ দিপন ১২/১২/২০১৫দারুণ।
-
অভিষেক মিত্র ১২/১২/২০১৫অপেক্ষায় থাকলাম।
-
দীপঙ্কর বেরা ১১/১২/২০১৫প্যারা করে লিখলে ভাল হত ।